তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব-৫

0
1870

তুমিই_আমার_প্রথম_এবং_শেষ_ভালোবাসা পর্ব-৫
#মেঘ_বালিকা
.
.
Ho-Ho-Ho
Hm-Hm-Hm
Bechainiyon mein raatein kateen
Khwaabo mein doobein hai din
Khamoshiyan chup ho gayi
Baatein adhoori tere bin
.
kye meri (bahoon se)
challi in (rahoon mein)
kaise bhulo yaadein haseen
.
.
হঠাৎ গানের শব্দে ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো…ব্যালকনি থেকে উঠে রুমে দিকে পা বাড়াতে গিয়েও বাড়ালাম না থেমে গেলাম..তাসিন গান গাইছে!!!হ্যা তাসিন গিটার বাজিয়ে গান গাইছে… কতো দিন পর ওর কন্ঠে গান শুনলাম..বরাবরই ও গানটা ভালো গায়..যখন ওর মনটা ভিষন খারাপ থাকে তখনই ওকে আমি গান গাইতে দেখেছি..তাহলে কি আজ ওর মন খারাপ!!কিন্তু কেনো!!!
.
I’m sorry, I’m sorry
I will do whatever it takes at all
Forgive me,Forgive me
Baby no matter what did say
.
I can act feel strong
Truth is with a
Truth is no living at all
Don’t leave this is eating me your life
This is so much as giving me inside
.
You don’t know what you got
until this scar
Love is strong than my pride
Baby I can stand the pain
I’m feeling life in me
.
আচ্ছা ওকি গানটা আমাকে ডেডিকেট করে গাইলো!!কেনো যেনো ওর গলায় গানটা শুনে মনটা ভালো হয়ে গেলো..ওর উপর যতো রাগ ছিলো সব পানি হয়ে গেলো… ওর গান গাওয়া শেষ হলে আমি রুমে প্রবেশ করলাম…আমাকে রুমে প্রবেশ করতে দেখে আমার দিকে একপলক তাকিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো তাসিন…আমাকে কিছু বলার সুযোগটুকুও দিলো না…ওকি কী আমায় কখনো ক্ষমা করবে না!!আমাকে কী কখনো আপন করে নিবে না!!জানি ওর জায়গায় ও একদম ঠিক আছে ওর জায়গায় আমি থাকলে আমিও একই কাজই করতাম তাও যদি আমাকে একটাবার সুযোগ দিতো…ভেবেই মনটা আবার খারাপ হয়ে গেলো…
.
.
আজ অনেকদিন পর ভার্সিটিতে এসেছি..বিয়ের ঝামেলায় আসতে পারিনি এতোদিন..বিয়ের এক সপ্তাহ কেটে গেছে..এর মাঝে বাসায়ও গিয়েছিলাম একবার একদিন থেকে চলে এসেছি…ভার্সিটি আসা নিয়েও নানা রকম কাহিনী হয়েছে আমার গুনোধর স্বামী আমাকে কিছুতেই ভার্সিটিতে আসতে দিবে না..সে চায় আমি বাসায় বসে পড়বো আর পরীক্ষার সময় গিয়ে পরীক্ষা দিয়ে আসবো..কিন্তু আমার শ্বশুর মশাই তাকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সে চায় আমি ভার্সিটি আসি বাসায় বসে বসে বোর হবো তাই তার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া…বিষয়টায় আমি বেজায় খুশি..আমিও মনে মনে এটাই চাইছিলাম…তাসিন অবশ্য ব্যাপারটায় একদম খুশি না কিন্তু বাবার উপর কিছু বলতেও পারেনি..
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
.
ফারিয়া আমার পাশে মুখ ফুলিয়ে বসে আছে..কারন আজ তাকে দেখতে আসবে..সে এই মুহুর্তে বিয়ে করতে চায় না..এই মুহুর্ত বললে ভুল হবে সে আসলে বিয়েই করতে চায় না…তার ধারনা শ্বাশুরিরা খুব দজ্জাল হয় আর তারা তাদের ছেলের বউদের উপর খুব অত্যাচার করে..ছোট বেলায় ‘দজ্জাল শ্বাশুরি’ নামক একটা সিনেমা দেখার পর থেকে সে পণ করেছে সে জীবনে বিয়ে করবে না…
.
বেশ বিরক্ত লাগছে আমার ফারিয়াকে..এতোদিন পর এসেছি ভার্সিটিতে কই একটু গল্প করবে তা না এসেই ন্যাকা কান্না শুরু করেছে..
একটু রেগেই আমি বলে উঠলাম,,,
-তুই যদি এই মুহুর্তে তোর এই ন্যাকা কান্না না থামাস তাহলে তোকে আমি ড্রেনের পানিতে চুবাবো…
-আমার কথা শুনে ফারিয়া চুপ হয়ে গেলো..
কিন্তু ফেস দেখে বুঝা যাচ্ছে খুব কষ্টে কান্নাটা আটকে রেখেছে…
.
.
শুক্রবার ছুটির দিন সবাই বাসায়…সকাল থেকে তাসিনের কোনো পাত্তা নেই..কই আছে কে জানে…এই বাসায় আসার পর আমার সারাদিন শুয়ে বসেই কাটাতে হয়..মাঝে মাঝে জোর করে একটু মাকে রান্নার সময় সাহায্য করি এই যা..রান্নাও ঠিক মতো পারি না তাই সাহায্য ছাড়া আর বেশি কিছু করতেও পারিনা…
.
অনেকক্ষন ধরে বসে আছি তাই ভাবলাম একটু নিচে গিয়ে টিভি দেখি..
নিচে নামার সময় খেয়াল করলাম ড্রইং রুমে একটা ছেলে বসে আছে সাথে তাসিনও আছে..দুজনেই খুব হেসে হেসে কথা বলছে..পাশ থেকে দেখে ছেলেটাকে কেমন যেনো চিনা মনে হলো…হঠাৎই ছেলেটা আমার দিকে ঘুরে তাকালো…এইবার চিনতে পারছি এই সেই নাটের গুরু যার জন্যে আমার আর তাসিনের সম্পর্কটা হয়েছিলো…নিরব ভাইয়া..তাসিনের কলিজার বন্ধু বলতে গেলে..কিন্তু একে তো বিয়ে সময় দেখিনি..তখন কই ছিলো!!
.
আমাকে দেখেই নিরব ভাইয়া মুচকি হেসে সালাম দিলো,,,
-আসসালামু আলাইকুম তনু থুক্কু ভাবী…কেমন আছো আর আমাকে চিনতে পারছো তো??
তোরে আবার চিনবো না…তোর জন্যেই তো আমার এই অবস্থা,,শালা মিচকা শয়তান(মনে মনে)
তারপর একটু হেসে সালাম এর উওর নিলাম,,,
-ওয়ালাইকুমস সালাম…জ্বী ভাইয়া ভালো আছি আর আপনাকেও ভুলিনি…আপনি কেমন আছেন?
-জ্বী আমিও আছি ভালো..তোমাদের বিয়ের কথা শুনে আমি খুব খুশি হয়েছিলাম কিন্তু আসতে পারিনি কাজে আটকে গিয়েছিলাম..তাই আজকে তোমাদের সাথে দেখা করতে আসলাম আরকি…
-উদ্ধার করছোস(মনে মনে)
-জ্বী ভালো করছেন এসে আমি খুব খুশি হয়েছি…(জোর পূর্বক একটু হেসে)
তারপর আরও কিছুক্ষন কথা বলে আবার উপরে চলে আসলাম…ওখানে থাকার থেকে নিজের রুমে চুপচাপ বসে থাকা ভালো…হুহহ….
.
.
ছাদে দাড়িয়ে পুরোনো দিনগুলার কথা ভাবছি আর একা একাই হাসছি..নিরব ভাইয়া যে কিনা তার বন্ধুর প্রপোজাল নিয়ে আমার পিছে প্রায় ১মাস এর মতো ঘুরঘুর করেছে..কলেজের বাইরে দাড়িয়ে থাকা,কলেজ ছুটির পর ফলো করা,বাসার সামনে বাইক নিয়ে দাড়িয়ে থাকা…তার এইসব কান্ড কারখানায় প্রথমে আমি ভেবেছিলাম সে আমাকে পছন্দ করে কিন্তু পরে আমার ধারনা ভুল প্রমানিত হয়…সে তার বন্ধুর হয়ে আমার পিছ পিছ ঘুরঘুর করেছে…এও দেখার ছিলো
প্রথম প্রথম ব্যাপারটায় বেশ বিরক্ত হলেও পরে বেশ মজাই পেতাম..তার ফেস দেখলে খুবই ভদ্র মন হয়..চোখে চশমা,গোলগাল ফেস,চেহারার মধ্যে একটা কিইটনেস ভাব আছে…আমিও তাই ভেবেছিলাম কিন্তু পরে বুঝি ও আসলে একটা মিচকা শয়তান..আমাকে ১মাস একদম জ্বালিয়ে মেরেছে..শেষমেষ একপ্রকার বাধ্য হয়েই রাজি হয়ে যাই…
.
এসব ভাবনার মধ্যেই হঠাৎ রাস্তার দিকে চোখ যায়..ফুসকা…ফুসকা দেখেই জিভে পানি এসে গেলো..দৌড়ে নিচে নামতে যাবো আর তখনই মনে পরলো আমি তো আর এখন নিজের বাড়ি নেই যে যখন ইচ্ছে হলো ছুটে চলে গেলাম বাইরে..শ্বশুর বাড়িতে বউদের এভাবে হুটহাট বাইরে যাওয়া সাজে না..যতোই তারা ভালোবাসুক আমাকে তাও এভাবে যাওয়া তারা মতেও পছন্দ করবেন না..
তাহলে কিভাবে খাবো!!!আমার যে খুব ফুসকা খেতে ইচ্ছে করছে…তাসিনকে বলে দেখবো যদি ও এনে দেয়…
.
.
তাসিনকে অনেকক্ষন ধরে বলে যাচ্ছি কিন্তু সে কিছুতেই আমার কথা শুনছে না..আমি প্রায় ন্যাকা কান্না জুড়ে দিয়েছি কিন্তু তাতেও তার মন গলছে না..এবার আমার সত্যি সত্যিই কান্না পাচ্ছে….
-প্লিজ তাসিন এনে দেও না আমার খুব খেতে ইচ্ছে করছে প্লিজ ও তাসিন প্লিজ(কান্নার ভাব ধরে)
-তনু আমি এখন বিজি আছি বিরক্ত করো না যাও এখান থেকে(চোখ মুখ শক্ত করে)
-না আমি যাবো না তুমি আমাকে ফুসকা এনে দেও না হলে আমি যাবো না প্লিজ তাসিন (হাত ধরে টানতে টানতে)
এবার তাসিন বেশ রেগে গেলো তারপর এক ধমক দিয়ে বলে উঠলো,,,
-স্টপ তনু…দেখছো না আমি একটা কাজ করছি আর এখনই তোমার ঘ্যানঘ্যানানি শুরু হলো!তুমি এই মুহুর্তে এখান থেকে না গেলে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না…
.
ওর কথাগুলো আমার বুকে তীরের মতো বিধলো..সামান্য একটু ফুসকাই তো খেতে চেয়েছিলাম তার জন্যে আমাকে এভাবে বললো ও..খুব কষ্ট লাগছে..বুক ফেটে কান্না আসছে..চোখ থেকে দুফোটা পানিও বেরিয়ে এলো..তারপর দৌড়ে ব্যালকনিতে চলে গেলাম..এই মুহুর্তে তাসিনকে আমার খুবই নিষ্ঠুর মনে হচ্ছে….
.
.
চলবে…..
.
.
(গল্পটা আপনাদের কেমন লাগছে??প্লিজ কমেন্টে
জানাবেন..প্রথম প্রথম গল্প লিখছি তাই অনেক ভুল হতে পারে লেখায়..তাই ভুল-ক্রটি ক্ষমার চোখে দেখবেন…আর দোয়া করবেন এবং আমার পাশে থাকবেন…ধন্যবাদ)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে