চন্দ্ররঙা প্রেম পর্ব-০৭

0
1710

#চন্দ্ররঙা_প্রেম
#পর্ব-৭
#আর্শিয়া_সেহের

আজ খুব তাড়াতাড়িই ভার্সিটিতে এসেছে রুমঝুম আর মেঘা। কোনোমতেই যেন ডিপজল স্যার তাদেরকে বের করে দিতে না পারে সেজন্য। ক্লাস শুরু হওয়ার দশ মিনিট আগে ক্লাসে পৌঁছেছে দুইজন।

রুমঝুমকে ভার্সিটিতে ঢুকতে দেখেই আরাফাতের কাছে কল করলো তার এক শিষ্য । আরাফাত বললো,
-“নজর রাখ। কোথায় যায় আমাকে বলিস। আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই আসছি।”
-“ওকে ভাই। আমি মেয়েটার দিকে নজর রাখছি।”
-“ওই ওই,মেয়ে কি? ভাবি বল, বেয়াদপ।”
ছেলেটা কাঁচুমাচু মুখে জবাব দিলো,
-“সরি ভাই। আমি ভাবির দিকে খেয়াল রাখতেছি।”
-“আচ্ছা।”

আরাফাত কল কেটে কোলবালিশটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। মনে মনে সেখানে রুমঝুমকে কল্পনা করলো। চোখ বন্ধ করে কোলবালিশেই এলোপাথাড়ি চুমু খেতে শুরু করলো।
আরাফাতের মা আরাফাতকে ডাকতে এসে দেখলো দরজা লক করা নেই। দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে ওর এমন‌ কান্ডে হতভম্ব হয়ে গেলেন তিনি। সেকেন্ড কয়েক বাদে চিৎকার করে বললেন,
-“আরাফাতের বাবা,তোমার ছেলে পাগল হয়ে গেছে। দেখে যাও কি করছে।”

মায়ের চিৎকারে চোখ মেললো আরাফাত। কাল রাতে মদ গিলে এসে শুয়ে পড়েছিলো সে। দরজা লক করতে মনে ছিলো না। ইশশ!কি লজ্জার ব্যাপার।আরাফাত একলাফে উঠে বাথরুমে চলে গেলো। মায়ের সামনে আর থাকা যাবে না।

যথাসময়ে ক্লাস শুরু হয়ে গেলো মেঘা আর রুমঝুমের। মেঘা মন দিয়ে ক্লাস করলেও রুমঝুমের মন ক্লাসে নেই। সে আনমনে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। মন পরে আছে হারিয়ে যাওয়া নূপুরটায়।

ক্লাস শেষ হলো দশটার দিকে। এরপরের ক্লাসটা একটা বোরিং ম্যামের। উনার ক্লাসে অর্ধেকের বেশি স্টুডেন্টই অনুপস্থিত থাকে। আজও তার ব্যতিক্রম হলো না। রুমঝুমকে নিয়ে মেঘাও বেরিয়ে গেলো ম্যাম আসার আগেই।

ক্লাস থেকে বেরিয়ে মেঘা বললো,
-“এখন‌ কোথায় যাবি?”
-“কৃষ্ণচূড়া তলায় চল। ”
মেঘা মুখ ভার করে বললো,
-“সিনিয়রদের সাথে সময় কাটাতে আমার ভাল্লাগে না।”
-“আরে অল্প কিছুক্ষণ থেকে চলে আসবো। তাছাড়া গতকালকে যেতে বলেছে। এখন না‌ গেলে কেমন দেখায় না?”
মেঘা মুখ লটকে বললো,
-“চল‌ তাহলে।”

দুজন মিলে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে যাওয়ার জন্য হাঁটা শুরু করলো। মেঘা আশেপাশে তাকালেও রুমঝুম নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। এই পথেই তো কাল হেঁটেছিলো। যদি এখানেই পেয়ে যায় তার হারিয়ে যাওয়া নূপুরটা সেই আশায়।

কাঙ্ক্ষিত স্থানে পৌঁছে দেখলো ওরা এখনো আসে নি। অন্যান্য যায়গার তুলনায় এই জায়গাটা বেশ নির্জন। এতো গরমেও এই জায়গাটা অনেকটা শীতল। রুমঝুম আর মেঘা মোটা একটা শিকড়ের উপর বসলো।

-“হাই সুন্দরীরা।”
অপরিচিত এক কন্ঠ শুনে রুমঝুম আর মেঘা দুজনই পাশ ফিরে তাকালো। মেঘা ছেলেটাকে দেখে চমকে উঠলো। আরাফাতের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বেশ ধারনা আছে তার।
রুমঝুম শক্ত গলায় বললো,
-“কি চাই?”
আরাফাত বাজে ভাবে ইঙ্গিত করে বললো,
-“তোমাকে, সুন্দরী।”

রুমঝুম রাগী চোখে তাকালো আরাফাতের দিকে। তেজী গলায় বললো,
-“ভদ্রভাবে কথা বলুন। অসভ্য ছেলে।”
মেঘা রুমঝুমের বাম হাত চেপে ধরলো। ফিসফিস করে বললো,
-“এই ছেলের সাথে তর্কে যাস না। বখাটে একটা। ওঠ,এখান‌ থেকে চল।”

রুমঝুম আর মেঘা দুজনই উঠে পড়লো। ওখান থেকে চলে যেতে নিলেই পথ আগলে দাঁড়ালো আরাফাত। মেঘার দিকে তাকিয়ে বললো,
-“তোমার যেতে ইচ্ছে করলে তুমি যাও, সোনা। আমার লায়লা যাবে না। আমরা এখন প্রেম করবো।”
রুমঝুমের ঘৃনা লাগছে এই ছেলের দিকে তাকাতেও। মেঘার হাত চেপে ধরে আরাফাত কে পাশ কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যেতেই পেছন দিয়ে রুমঝুমের হাত টেনে ধরলো আরাফাত। রুমঝুম সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেললো। ঘৃনায় গা গুলিয়ে উঠলো। আরাফাতের দিকে না ফিরেই হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে বললো,
-“আমার হাত ছাড়ুন । আমি কিন্তু চিৎকার করে লোক জড়ো করবো।”
-“করো চিৎকার। দেখি কে আসে।”

রুমঝুম আশেপাশে তাকালো। সবাই তাদেরকে দেখছে কিন্তু কেউ এগিয়ে আসছে না। মেঘা তাচ্ছিল্যের হাসি হেঁসে বললো,
-“এরা কেউই এগিয়ে আসবে না রুমঝুম। এই পিশাচের ক্ষমতার দাপটে সবাই চুপসে থাকে।”

মেঘার কথার বিপরীতে দাঁত বের করে হাঁসলো আরাফাত। বিশ্রী ভঙ্গিতে বললো,
-“এবার এই পিশাচকে কে প্রেম করার সুযোগ দাও, শালিকা।”
মেঘা কোনো কথা বললো না। আলোয় ঝলমল করা দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আরাফাতের পেছনে।

-“তোকে প্রেম করাচ্ছি আমি কুত্ত** বাচ্চা।”
বলেই আরাফাতের ডান গালে ঘুসি মারলো প্রান্ত । আরাফাত হঠাৎ আক্রমণে টাল সামলাতে না পেরে মাটিতে পরে গেলো। রুমঝুমের হাত ধরে থাকায় রুমঝুমও টান খেয়ে পরে যেতে নিলে একজোড়া শক্তপোক্ত হাত তাকে আগলে নিলো। রুমঝুম তড়িৎ গতিতে মাথা ঘুরিয়ে দেখলো শান ধরে রেখেছে তাকে। তবে শান রুমঝুমের দিকে তাকিয়ে নেই। তার আগুনঝরা দৃষ্টি তখন আরাফাতকে ভষ্ম করতে ব্যাস্ত।

রুমঝুমকে সোজা করে দাঁড় করিয়ে দিয়ে শান এগিয়ে গেলো মাটিতে পড়ে থাকা আরাফাতের দিকে। কোনো‌ কথা না বলেই এলোপাথাড়ি লাথি দেওয়া শুরু করলো। প্রান্ত হা করে তাকিয়ে রইলো‌ সেদিকে। যে ছেলে কোনোদিন কারো সাথে তর্ক পর্যন্ত করেনি সে আজ মারপিট করছে। এটাও দেখা লাগলো তার? সিন্থিয়া ,বিথী, তিহান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। এ যেন এক নতুন শানকে দেখছে তারা। মেঘা রুমঝুমকে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। দুই জনই হতভম্ব হয়ে গেছে। আশেপাশে ভীড় জমে গেছে ভালোই।

প্রান্ত এগিয়ে এসে শানকে পেছন থেকে ধরে থামানোর চেষ্টা করছে। ততক্ষণে আরাফাতের চ্যালারাও চলে এসেছে। প্রান্ত আর তিহান অনেক কষ্টে শানকে সরিয়ে নিলো। শানের চোখমুখ লাল হয়ে গেছে। সে হাপাচ্ছে। দম টেনে টেনে বললো,
-“ওর চোখ উপড়ে নিবো আমি। ছাড় আমাকে। ও কার সাথে প্রেম করতে চায়? ওকে তো আমি…”
শান ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করছে । আরাফাতকে নিয়ে ওর শিষ্যরা হসপিটালের উদ্দেশ্যে চলে গেছে। চারপাশের ভীরও কমে এসেছে ধীরে ধীরে।

হঠাৎ করেই মেহেদী এসে হাজির হলো সেখানে। মেঘাকে বললো,
-“এখানে কি হয়েছিলো মেঘা? ওদিকে একজন বললো এখানে তুই আছিস। এনিথিং সিরিয়াস?”
মেঘা সবটা বললো মেহেদীকে। সবটা শুনে মেহেদীর চোয়াল শক্ত হয়ে এলো। রুমঝুমের দিকে তাকিয়ে দেখলো ও নিচের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
মেহেদী শান্ত কন্ঠে বললো,
-“মেঘা,ঝুম দু’জনই বাড়িতে চলো।”

সবার দিকে একবার তাকানোর দরুন সিন্থিয়ার সাথে চোখাচোখি হয়ে গেলো মেহেদীর। মেহেদী আসা থেকেই তার দিকে তাকিয়ে ছিলো সিন্থিয়া। মেহেদী ওদের পাঁচজনের দিকে তাকিয়ে বললো,
-“তোমাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ ওদেরকে সাহায্য করার জন্য।”

মেহেদী রুমঝুম আর মেঘাকে নিয়ে বাড়ির পথ ধরলো। রুমঝুম একবার পেছনে তাকিয়ে দেখলো শান তার দিকেই তাকিয়ে আছে। বুকটা ধুক করে উঠলো তার। কি বিদ্ধস্থ চাহনি‌ শানের। রুমঝুম আর পেছনে তাকালো না। শান বুকপকেটে হাত দিয়ে শীতল চোখে রুমঝুমের চলে যাওয়া দেখলো।

-“শান?”
বিথীর ডাক শান শুনতে পেলো কিনা বোঝা গেলো না। কারন সে একদম চুপচাপ বসে আছে।
-” রুমঝুমকে ভালোবাসিস ,শান?”
প্রান্তর সরাসরি প্রশ্নে শান তাকালো প্রান্তের দিকে।
প্রান্তর আর শানের উত্তরের প্রয়োজন হয়নি। বন্ধু তো তাই শানের চোখের ভাষাতেই সবটা বুঝে গেলো প্রান্ত। মুচকি হেঁসে আস্তে আস্তে বললো,
-“তাহলে দেরি করছিস কেন? জানিয়ে দে ওকে।”

সিন্থিয়া এতোক্ষণ অন্য দুনিয়ায় ছিলো। শান-প্রান্তর কথা শুনে ও এগিয়ে এলো। শান্তভাবে বললো,
-“শান ,তুই রুমঝুমের সম্পর্কে কিছু না জেনেই ওকে ভালোবেসে ফেলেছিস?”
-“ভালোবাসার জন্য তার সম্পর্কে জানাটা খুব দরকার,সিন্থু? ভালোবাসার জন্য তো মানুষটাই যথেষ্ট।”

সিন্থিয়া হালকা হাসলো। বললো,
-“রুমঝুম কিন্তু বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে, শান। বিয়ের আগের রাতে পালিয়ে এসেছে।”

উপস্থিত সবাই চমকে উঠলো। চমকালো শান নিজেও। সিন্থিয়াকে কিছু জিজ্ঞাসা করবে তার আগেই সিন্থিয়া বললো,
-“আমি এটুকুই জানি। সেদিন বাসে অনেক জোরাজুরি করার পর ও এটুকুই বলেছিলো। এর বেশি আমি জানিনা। ”
-“আমার মনে হয় ওর পালিয়ে আসার ব্যাপারে বাকিটা ওর ঝগড়ুটে বান্ধবী মেঘা আমাদের বলতে পারবে।”

তিহানের কথা শুনে প্রান্ত বললো ,
-“রাইট। মেঘা চাইলে আমাদেরকে সাহায্য করতে পারে।”
-“মেঘা ঝগড়ুটে এটা তোকে কে বললো ,তিহান?”
বিথী বেশ গম্ভীর সুরে বললো কথাটা।
তিহান কোনো মেয়ের সাথে কথা বললে বা কোনো মেয়ের ব্যাপারে কথা বললেই বিথীর অসহ্য লাগে। কেন লাগে সেটা ও জানে না। বাকিদের ক্ষেত্রে তো এমন লাগে না ওর। তিহানও এ ব্যাপারে অবগত। সে আমতা আমতা করে বললো,
-“ওই তো গতকাল ক্যান্টিনে আমার সাথে ঝগড়া করছিলো শুধু শুধু। এজন্য বললাম।”
বিথী নির্জীব ভাবে বললো,
-“ওহ আচ্ছা।”

….

-“আম্মু আমি তোমাকে একটা কথা বলতে চাই।”
ছেলের কথা শুনে শাফিয়া আক্তার খানিকটা অবাক হলেন। এর আগে শান কখনো এভাবে কথা বলেনি। শাফিয়া আক্তার শানের পাশে বসলেন। শান সাথে সাথেই মায়ের কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো। এটা নতুন না। শাফিয়া আক্তার পাশে বসলে শান সবসময়ই তার কোলে শুয়ে পড়ে এভাবে। শাফিয়া আক্তার মৃদু হেঁসে ছেলের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো,
-“কি কথা বলবি? বল।”
-“একটু অপেক্ষা করো। বলছি।”

শাফিয়া আক্তার চুপচাপ ছেলের মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন আর একদৃষ্টিতে ছেলেকে পরখ করছিলেন। শানের ডান ভ্রু এর উপরে আর থুতনির নিচে কাঁটা দাগ আছে। ছোটবেলায় কেটে গিয়ে হয়েছিলো এই দাগ দুটো। সময়ের সাথে সাথে ক্ষত সারলেও দাগ দুটো জীবন্ত। এই কাঁটা দাগ দুটোর জন্য শানকে আরো বেশি ভালো লাগে দেখতে।

-“ইয়েস, মাই সন। আমি চলে এসেছি। বলো তুমি কি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলবে।”
ইমতিয়াজ মাহমুদের কথায় শাফিয়া আক্তার দরজার দিকে তাকালেন। খানিকটা বিষ্মিত হলেন সে। ছেলের এমন কি কথা যা বাবা-মা দুজনকে ডেকে বলতে হচ্ছে।

শিরীন পা টিপে টিপে এসে শানের দরজার বাইরে দাঁড়ালো। সে ও শুনবে ভাইয়া কি বলার জন্য বাবা-মা দু’জনকেই ডেকেছে।

শান শাফিয়া আক্তারের কোল থেকে মাথা উঠালো। দু’জনকে বিছানায় বসিয়ে তাদের সামনে মাথা নিচু করে বসলো।
-“আসলে আমি একটা মেয়েকে ভালবাসি আম্মু।”
শাফিয়া আক্তার কথাটা শুনেই বিস্ফোরিত নয়নে তাকালেন ছেলের দিকে। দরজার বাইরে দাঁড়ানো শিরীনও চোখ বড় বড় করে ফেললো বিষ্ময়ে। শান একবার মাথা উঁচু করে তার বাবা-মা দুজনের দিকে তাকালো। ইমতিয়াজ মাহমুদ নির্বিকার ভঙ্গিতে বসে আছে। শান আবারও বললো,

-“আব্বু, আমি যে মেয়েটাকে ভালোবাসি এ কথা মেয়েটা এখনো জানেনা। আমার মনে হলো‌ প্রথমে তোমাদের সাথে কিছু বিষয়ে ক্লিয়ার হওয়া দরকার।
দেখো আমি ওকে ভালোবাসি তাই ওর সব কিছু আমি মেনে নিলেও তোমরা হয়তো মানতে পারবে না। তাই তোমাদের মতামত নিয়েই আমার সামনে আগানো দরকার।
আম্মু,মেইন ব্যাপারটা হচ্ছে, মেয়েটা বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে। বিয়ের আগের দিন রাতে পালিয়েছিলো। তারপর এখানে বান্ধবীর বাড়িতে এসে থাকছে। আমার ভার্সিটিতেই পড়াশোনা করছে।
আম্মু ওকে দেখলেও বোঝা যায়, ও ভালো পরিবারের মেয়ে। ও কেন পালিয়েছে সেটা আমি জানিনা। তোমরা যদি এটুকু শুনে রাজি হও তবেই আমি সবটা জানবো এবং ওকে ভালোবাসার কথা জানাবো।
আর ওকে ভালোবেসে বিয়ে করবো। তখন তোমরা যদি ওকে ইঙ্গিত করে বলো ,’এই মেয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিলো,এই মেয়ে ভালো না, এর চরিত্রে সমস্যা আছে’ এসব আমি মেনে নিতে পারবো‌ না। কারন ও তখন আমার অর্ধাঙ্গিনী হয়ে থাকবে। ওর অপমান আমি সহ্য করতে পারবো‌ না আম্মু। তাই আমি আগে তোমাদের মতামত চাইছি।

শান এক নিঃশ্বাসে কথা গুলো বলে চুপ হয়ে আছে।তার বুকের মধ্যে ঢিপঢিপ আওয়াজ হচ্ছে। বাবা-মা যদি‌ রাজি না হয় তবে কি হবে? সে তো তার চন্দ্রকন্যাকে ভুলতে পারবে না। পাগল হয়ে যাবে সে। শান‌ সেই‌ মুহূর্তে মনে মনে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলো, যে কোনো কিছুর বিনিময়ে হলেও সে যেন তার চন্দ্রকন্যাকে পায়।
শাফিয়া আক্তার-ইমতিয়াজ মাহমুদ চুপ করে বসে আছে। শিরীন দেয়ালে কান পেতে উদগ্রীব হয়ে আছে তার বাবা-মা কি বলে সেটা শোনার জন্য।

বেশ কিছুক্ষণ নিরবতায় কাটার পর ইমতিয়াজ মাহমুদ ধমকের স্বরে বললেন,
-“ও ও করছিস কেন? ও টা‌ কে? আমার হবু বউমার নাম নেই নাকি?”

শান তড়িৎ গতিতে মাথা তুলে তাকালো। শাফিয়া বেগম আর ইমতিয়াজ মাহমুদ দুজনই ঠোঁট চেপে চেপে হাসছে। তাদের হাসতে দেখে শান‌ও হেঁসে দিলো। সঙ্গে সঙ্গেই তার চোখের কার্নিশ বেয়ে এক ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো। মিনমিন করে বললো,

-” আছে তো নাম। তোমাদের জন্য ওর নাম রুমঝুম আর আমার জন্য চন্দ্রকন্যা।”

চলবে………

(রি-চেক দেওয়া হয়নি।)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে