কিশোরী কন্যার প্রেমে পর্ব-২১+২২

0
731

#কিশোরী_কন্যার_প্রেমে
#সুমাইয়া_সিদ্দিকা_আদ্রিতা
#পর্ব_২১
.
ছাদের একপাশে উদাসীন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে অর্ঘমা। মনটা তার ভীষণ খারাপ। গত দুই দিন যাবৎ নীরদের কোনো খোঁজ নেই। সেদিনের পর থেকে নীরদ তার সাথে যোগাযোগ করেনি। এমন কি অর্ঘমা যোগাযোগ করতে চাইলেও কোনো রিপ্লাই দেয়নি। হুট করে এভাবে নিখোঁজ হয়ে গেল কেন ছেলেটা? অর্ঘমা চিন্তায় শেষ। অভ্রকে জিজ্ঞেস করেও মন মতো কোনো উত্তর পায়নি। কারণ নীরদ অভ্রর সাথেও যোগাযোগ করছে না। একদিকে যেমন নীরদের প্রতি অভিমান হচ্ছে অন্যদিকে চিন্তাও হচ্ছে। ঠিক আছে তো ছেলেটা?

অর্ঘমার ভাবনায় ব্যাঘাত ঘটাল অভ্র। বোনের এমন উদাসীনতা তার ঠিক পছন্দ হচ্ছে না। কোথায় তার সাথে মারামারি করবে, এটা-সেটা বায়না করবে, তা না করে ছ্যাঁকা খাওয়া পাবলিকের মতো বসে আছে। আজ শুক্রবার, বন্ধের দিন। অভ্র বাসাতেই ছিল। অর্ঘমার পাশে দাঁড়িয়ে বলল,
-“আজ তো আমার বন্ধ আছে। চল কোথাও গিয়ে ঘুরে আসি। নিধিকেও সাথে নিয়ে যাব। মেয়েটার গায়ে একটু হাওয়া-বাতাস লাগলে যদি চঞ্চল হয় তাহলে তো ভালোই।”
-“আমার ভালো লাগছে না ভাইয়া।”
-“গেলেই ভালো লাগবে। যা গিয়ে রেডি হয়ে আয়। তোর বান্ধবীকে বলে এসেছি। ও রেডি হচ্ছে। এখন তুই না গেলে ও বেচারির মন খারাপ হবে।”
অভ্র আরও বিভিন্ন ভাবে বুঝিয়ে অর্ঘমাকে রেডি হতে পাঠিয়ে দিল। নিজেও গেল রেডি হতে। রেডি হয়ে অর্ঘমা আর নিধিকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। আজ সারাদিন ঘুরে বেড়াবে তারা।
___
কয়েক জায়গায় ঘুরাঘুরি করে একটা কফিশপে এসে বসল অভ্র, অর্ঘমা আর নিধি। ছোট্ট একটা কফিশপ। চারটা টেবিল বসানো। প্রতিটা টেবিলে দু’টো করে চেয়ার পাতা। অভ্র পাশের খালি টেবিল থেকে একটা চেয়ার টেনে এনে বসেছে। পুরো কফিশপটায় তারা ছাড়া আর কোনো কাস্টমার নেই আপাতত। অর্ঘমা ঘাড় ঘুরিয়ে কফিশপটা দেখতে লাগল। জায়গাটা পছন্দ হয়েছে তার। কফিশপের মালিক যে বড্ড সৌখিন মানুষ তা সাজানো দেখেই বোঝা যাচ্ছে। একপাশে ছোট্ট একটা বেতের দোলনা ঝোলানো। এছাড়াও শপের সব ফার্নিচারই বেতের তৈরি। মেন্যু কার্ডটা হাতে নিল অর্ঘমা। কার্ডের ডিজাইনটা সুন্দর।

অর্ডার দিয়ে অভ্র আর নিধির সাথে টুকটাক কথা বলছিল অর্ঘমা। এমন সময় নীরদের বন্ধুদের ঢুকতে দেখা গেল কফিশপে। এদের দেখে অর্ঘমা চমকাল। এরা এখানে কী করছে? তার মানে কী নীরদও এসেছে? নীরদের বন্ধু আসিফ এগিয়ে এলো অভ্র আর অর্ঘমাকে দেখে।
-“আরে ভাইয়া, আপনারা এখানে?”
অভ্র ফোন থেকে চোখ সরিয়ে পাশে তাকিয়ে আসিফকে দেখে হেসে হাত মিলিয়ে কোলাকুলি করল।
-“আমি এইত অর্ঘমা আর নিধিকে নিয়ে ঘুরতে এসেছিলাম। তোদের কী খবর? তোরা এখানে?”
-“নতুন কফিশপ। ভাবলাম এখান থেকে ঘুরে যাই।”
-“ওহ আচ্ছা। সবাই এসেছিস দেখছি।”
-“হ্যাঁ।”
-“আচ্ছা, বসে পড় তোরা।”
আসিফ চলে গেল বন্ধুদের কাছে। অভ্র বসে আবারও ফোন দেখা শুরু করল। নিধিও ফোন টিপছে। অর্ঘমা আর কী করবে? সে-ও ফোনের দিকে মনোযোগ দিল।

অভ্রর গলা শুনে অর্ঘমা সামনে তাকাল। ততক্ষণে অভ্র উঠে অর্ঘমার পেছনে চলে গেছে। অর্ঘমা পেছন ঘুরে তাকাল। নীরদ এসেছে। চোখাচোখি হলো দু’জনের। অভিমানী কিশোরী মনের নির্দেশে চোখ সরিয়ে আবারও ফোনের দিকে তাকাল। কিন্তু তার পূর্ণ মনোযোগ নীরদের দিকেই পড়ে রইল। মনে মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল নীরদকে সুস্থ স্বাভাবিক দেখে। নীরদের বন্ধুরা সকলে উঠে এসেছে নীরদকে দেখে। বেশ খোশগল্প করছে অর্ঘমার পেছনে দাঁড়িয়ে। অর্ঘমা নিধির দিকে তাকাল। মেয়েটা মিটমিট করে হাসছে তার দিকে তাকিয়ে। ভ্রু কুঁচকে অর্ঘমা জিজ্ঞেস করল,
-“কী হয়েছে?”
-“কোথায় কী হয়েছে? কিছুই হয়নি।”
-“তাহলে হাসছিস কেন?”
-“ওই, ফোনে একটা ফানি মিম দেখে হাসছিলাম।”
-“আমি তো দেখলাম তুই আমার দিকে তাকিয়ে হাসছিস।”
-“ভুল দেখেছিস তুই।”
কথা বাড়াল না অর্ঘমা। হতেও পারে সে ভুল দেখেছে। নীরদের চিন্তায় তার মন মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল একপ্রকার। এই অবস্থায় ভুলভাল দেখাটা তার জন্য অস্বাভাবিক কিছু না।

পাশে একজোড়া পায়ের উপস্থিতি টের পেয়ে অর্ঘমা সেদিকে তাকাল। নীরদ এসে দাঁড়িয়েছে। পেছনে তাকিয়ে দেখল অভ্র আর নীরদের বন্ধুরা একে অপরের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত। অর্ঘমা আবারও ফোনের দিকে তাকাল। কিন্তু ফোন স্ক্রোল করার জন্য তার হাত চলছে না। ঠোঁট দু’টো তিরতির করে কাঁপছে। যেন যেকোন মুহূর্তে কেঁদে ফেলবে। অভিমানে চোখ দু’টো ভিজে আসছে।
-“তোমার সাথে একটু কথা ছিল।”
নিজেকে কিছুটা সময় দিয়ে সামলে নিল অর্ঘমা। মাথানিচু করে বলল,
-“বলুন।”
গলা ঝেড়ে অভ্র আর বন্ধুদের দিকে তাকাল। তারা সকলে তাকিয়ে আছে তার দিকে। মিটমিট করে হাসছে একেকজন। আমতা আমতা করে বলল,
-“আসলে…”
এতটুকু বলেই উশখুশ করতে লাগল। গলা দিয়ে আওয়াজ বের হতে চাইছে না। নীরদের এমন অবস্থা দেখে অর্ঘমার এতক্ষণের আটকে রাখা কান্নাটা পুরোপুরি গায়েব হয়ে গেল। এমন কী বলবে এই ছেলে যে এত ভাবতে হচ্ছে? এবার অর্ঘমা সরাসরি তাকাল নীরদের দিকে। থতমত খেয়ে গেল নীরদ। চুলে হাত বুলিয়ে আবারও তাকাল অভ্র আর বন্ধুদের দিকে।
-“এমন আমতা আমতা করছেন কেন?”
-“না মানে… কিছু না।”
উলটো ঘুরে চলে আসতে গেলে অভ্র আর বন্ধুদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দেখে থেমে গেল। জোর করে হাসার চেষ্টা করে ধীর পায়ে আবারও ফিরে এলো অর্ঘমার কাছে। অর্ঘমা প্রশ্ন করল,
-“আবার কী?”
-“আমার আসলে কিছু বলার ছিল।”
-“বলুন, শুনছি।
-“আসলে বলছিলাম কী…”
-“আপনি কবে থেকে কথা বলতে গেলে এমন আমতা আমতা করেন?”
-“আজকেই এমন হচ্ছে।”
-“কেন?”
-“এসব ছাড়ো। যা বলতে চাচ্ছি তা শোনো।”
-“তার আগে বলুন এই দুইদিন কোথায় ছিলেন?”
-“তুমিই বুঝে যাবে। আগে শোনো আমার কথা।”
এবার আর কিছু বলল না অর্ঘমা। বুকের সামনে হাত ভাজ করে বসে তাকিয়ে রইল নীরদের দিকে তার কথা শোনার অপেক্ষায়। নীরদ লম্বা শ্বাস নিয়ে বলল,
-“আমি যে তোমাকে পপ..পছন্দ করি তা তো জানো?”
এই কথা শুনে অর্ঘমা প্রচণ্ড অবাক হলো। হাত ঢিলে হয়ে ঢলে পড়ল কোলের মাঝে। জিহ্ব দ্বারা ঠোঁট ভিজিয়ে নিল। কী জবাব দিবে প্রথমে বুঝতে পারল না। কিছুটা সময় নিয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল।
-“তু..তুমিও আমাকে পছন্দ করো আই থিংক।”
-“ইউ থিংক?”
অর্ঘমার প্রশ্নে থতমত খেয়ে গেল নীরদ। বলল,
-“না মানে আমি শিওর পছন্দ করো।”
এর বিপরীতে কিছু বলল না অর্ঘমা। মাথানিচু করে বসে আছে সে। নীরদ অনেকক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে মিনমিন করে বলল,
-“আ..আই লাভ ইউ।”
-“কী?”
অর্ঘমা চমকে উঠে প্রশ্ন করল। বিস্ময়ে কিঞ্চিৎ ফাঁক হয়ে গেল তার অধরজোড়া। নীরদ তৎক্ষনাৎ দু’দিকে মাথা নাড়িয়ে বলল,
-“কিছু না। আমি কিছু বলিনি।”
অর্ঘমা সামলে নিল নিজেকে। কানের পিঠে চুল গুঁজে মিনমিন করে বলল,
-“কিন্তু আমি যে শুনলাম।”
আসিফ এসে নীরদের পিঠে দুম করে একটা কিল মেরে চলে গেল। নীরদ পিঠে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে ব্যথা সহ্য করল। অভ্রও চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে আছে। নীরদ এবার চোখ বন্ধ অবস্থাতেই বলল,
-“আই লাভ ইউ অর্ঘমা।”
অর্ঘমা বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকাল। পেছন থেকে নীরদের বন্ধুরা ‘ওহো’ বলে চেঁচিয়ে উঠল তৎক্ষনাৎ। লজ্জায় গাল দু’টো রক্তিম বর্ণ ধারণ করল অর্ঘমার। চোখের পলক নামিয়ে নিল মুহূর্তেই। একরাশ লজ্জা এসে ভর করল তার ভেতরে। এভাবে সকলের সামনে প্রপোজ! নিশ্চয়ই বন্ধুরা বাধ্য করেছে? তার ওপর অভ্রও আছে এখানে। তার মানে সে-ও জানত এই বিষয়ে। এসব তাদের প্ল্যান ছিল? অর্ঘমা চোখ বন্ধ করে ফেলল। লজ্জায় তার কান দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে।

নীরদের সব বন্ধুরা এবার সামনে চলে এসেছে। আসিফ হেসে নীরদের গলা জড়িয়ে ধরে বলল,
-“কী অর্ঘমা? আমার বন্ধুটাকে পছন্দ হয় না? অবশ্য পছন্দ হওয়ার কোনো কারণ নেই। ও তো একটা গাধা। আমি বলি কি তুমি ওর প্রপোজাল রিজেক্ট করে দাও।”
নীরদ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আসিফের পিঠে দুমদাম করে পর পর দু’টো কিল বসিয়ে দিল। অর্ঘমার এই মুহূর্তে মন চাচ্ছে এখান থেকে পালিয়ে বাসায় গিয়ে কম্বল জড়িয়ে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে। এত লজ্জায় সে এর আগে কখনো পড়েনি। অভ্র বলল,
-“তাহলে তোর জবাব কী আমরা নেগেটিভ ধরে নিব? যদি তাই হয় তাহলে তো..”
-“না।”
-“কী না?”
আসিফ হেসে বলল,
-“আরে বুঝো না কেন? ওর লাজে রাঙা চেহারাই বলে দিচ্ছে রিপ্লাই পজিটিভ।”
অভ্র ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল,
-“সত্যি?”
লাজুক হেসে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি প্রকাশ করল অর্ঘমা। সবাই আরও একবার চিল্লিয়ে নিজেদের উল্লাস প্রকাশ করল। অর্ঘমা চোখ বন্ধ করে মুখ ঢেকে বসে রইল।
নীরদ ভ্রু কুঁচকে বলল,
-“এটা কী হলো?”
-“কী?”
-“আমাকে আই লাভ ইউ বলানোর জন্য তোরা যে অত্যাচার করলি, ওর বেলায় তাহলে উলটো কেন? ওকেও মুখে বলতে হবে।”
-“এটা তোদের ব্যাপার। আমাদের কাজ এতটুকুই ছিল। তাছাড়া বেচারি লজ্জায় এমনিতেই গড়াগড়ি খাচ্ছে। এখন আই লাভ ইউ টু বলাতে গেলে ওকে আর খুঁজেই পাওয়া যাবে না।”
-“এটা ঠিক না।”
-“এটাই ঠিক। তুই যা বলবি সেটা বেঠিক।”
অভ্র নীরদের গলা জড়িয়ে ধরে বলল,
-“ও কিন্তু আমার কলিজা। ওর খেয়াল রাখিস। কোনো কষ্ট দিবি না ওকে। নাহলে কিন্তু তোর একদিন কী আমার একদিন।”
নীরদ চোখের ইশারায় আশ্বস্ত করল অভ্রকে। অর্ঘমা চোখ রাঙিয়ে অভ্রকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-“তার মানে এই দু’দিন তোমার সাথে ওনার যোগাযোগ ছিল না কথাটা তুমি আমায় মিথ্যে বলেছিলে?”
অভ্র জিহ্বে কামড় দিয়ে নীরদের পেছনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,
-“আমার কোনো দোষ নেই। ও চাচ্ছিল তোকে প্রপোজ করতে। কিন্তু সাহসে কুলিয়ে উঠতে পারছিল না। নার্ভাস ছিল প্রচণ্ড। তাই সাহস যোগাতে তোর সাথে দু’দিন যোগাযোগ বন্ধ রেখেছিল। আর প্র্যাকটিস করছিল কীভাবে প্রপোজ করা যায়। আমাকে বলেছিল তোকে মিথ্যে বলতে।”
অর্ঘমা আড়চোখে তাকাল নীরদের দিকে। নীরদ তার দিকেই তাকিয়ে ছিল। আসিফ অভ্রকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-“তোমার মতো ভাই প্রথম দেখলাম। যে কিনা বোনের প্রেমিককে আইডিয়া দেয় কীভাবে বোনকে প্রপোজ করা যায়। ভাই, তোমার মতো ভাই প্রতিটা বোনের থাকা উচিত। তাহলে আমাদের মতো অসহায় নিষ্পাপ ছেলেদেরও একটা করে গার্লফ্রেন্ড থাকত।”
হেসে ফেলল সকলে। অর্ঘমা তখন লাজুক হেসে বারবার আড়চোখে নীরদকে দেখছিল। আসিফ উচ্ছসিত গলায় আবারও বলল,
-“এই অর্ঘমা, তুমি শুনেছ তোমার ভাই আর তোমার প্রেমিক মিলে যে একটা কাণ্ড ঘটিয়েছে?”
অর্ঘমা আসিফের দিকে তাকিয়ে বলল,
-“কী?”
-“যে কফিশপে তুমি বসে আছ এটা তোমার ভাই আর প্রেমিক দু’জনে মিলে দিয়েছে।”
বিস্ময়ে হতভম্ব অর্ঘমা তার ভাই আর নীরদের পানে চোখ বড় বড় করে তাকাল। অভ্র, নীরদ দু’জনেই দাঁত বের করে হাসল। অর্ঘমা বিস্মিত সুরে প্রশ্ন করল,
-“আসলেই?”
-“হ্যাঁ, মাস দুয়েক হয়েছে। সামান্য কিছু টাকা জমিয়ে ছিলাম দু’জনে। তা দিয়েই এই শপটা করেছি। পরিচিত কয়েকজনকে দায়িত্বে রেখেছি।”
অভ্রর কথায় অর্ঘমা খুশি হয়ে বলল,
-“জায়গাটা ভীষণ সুন্দর। সবাই পছন্দ করবে। শুভকামনা রইল।”

সবাই যার যার মতো চেয়ার টেনে বসল। অভ্র আর নীরদ গেল দায়িত্বরত কর্মীদের সাথে কথা বলতে। অর্ঘমা নিধিকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-“তুই আগে থেকেই জানতি নীরদ ভাই আজ আমায় প্রপোজ করবে?”
-“হ্যাঁ। অভ্র ভাই আর নীরদ ভাই বলেছে। কীভাবে প্রপোজ করবে তা আমার সামনেই ডিসকাস করেছে। কিন্তু নীরদ ভাই সেসব শোনেন নি। তিনি বলেছেন অতো ফিল্মিভাবে তিনি কিছু করতে পারবেন না। যা বলবেন সরাসরি বলার চেষ্টা করবেন। কারণ তার প্রচণ্ড নার্ভাস ফিল হচ্ছিল।”
-“এতটা রসকষহীন প্রপোজ মনে হয় এই পৃথিবীতে আমিই পেলাম একমাত্র। তবুও আমার আফসোস নেই। যাকে চেয়েছি তাকেই পেয়েছি। ইট’স এনাফ।”
-“তোদের দু’জনকে পাশাপাশি মানায় ভালো। একদম পারফেক্ট মনে হয়। যেন একে অপরের জন্যই তৈরি। তার ওপর আবার ভাইয়া মানুষটা ভীষণ ভালো। তুই না বলতেই অনেক কথা বুঝে যায়। তোর কত কেয়ার করে। এমন মানুষ পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। তুই খুব লাকি অর্ঘ। সঠিক মানুষটাকে পেয়েছিস জীবনে। খেয়াল রাখিস একে অপরের।”
মৃদু হাসল অর্ঘমা। কিছু বলল না। তাকাল কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নীরদের দিকে। যে এখন দায়িত্বরত কর্মীদের সাথে কথা বলতে ব্যস্ত। এভাবে এত সহজে নিজের পছন্দের মানুষটাকে সে পেয়ে যাবে ভাবতেই পারেনি। বুকের ভেতরে অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে।

চলবে…
#কিশোরী_কন্যার_প্রেমে
#সুমাইয়া_সিদ্দিকা_আদ্রিতা
#পর্ব_২২
.
সোডিয়াম আলোয় আলোকিত রাস্তা। মোটামুটি নির্জন পরিবেশ। আকাশে থেমে থেমে মেঘের গর্জন ভেসে আসছে। রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে চলেছে নীরদ ও অর্ঘমা। কফিশপ থেকে তারা একা বেরিয়েছে। বাকিরা সবাই যার যার মতো চলে গেছে। নিধি অভ্রর সাথে বাসায় চলে গেছে। মূলত তাদের কিছুটা একান্ত সময় কাটাতে দেওয়ার জন্যই সকলের চলে যাওয়া। দু’জনই বেশ চুপচাপ। একে অপরের ভেতরে চলা অনুভূতি নীরবে অনুভব করার চেষ্টায় আছে দু’জনে। অর্ঘমার হাতের সাথে বারবার নীরদের হাতের ছোঁয়া লাগছে। মৃদু হাসি লেপ্টে আছে তার ঠোঁটে। নীরদ কিছুক্ষণ ইতস্তত করে ধীর গতিতে অর্ঘমার হাতের আঙুলের ফাঁকে নিজের হাতের আঙুল গুঁজে দিল। চমকে হাতের দিকে একপলক তাকিয়ে নীরদের দিকে তাকাল অর্ঘমা। অপর হাতে কপালের সামনে আসা চুলগুলো কানের পিঠে গুঁজে দিয়ে লাজুক হেসে রাস্তার দিকে তাকাল। প্রশ্রয় পেয়ে শক্ত হলো নীরদের হাতের ভাজ। অন্য হাতে মাথার চুলগুলো এলোমেলো করে আবারও ঠিক করল।

মেঘের গর্জনের পাশাপাশি ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামল। নীরদ আশেপাশে তাকিয়ে কিছুটা দূরে টং দোকান দেখে অর্ঘমার হাত ধরে সেদিকে দৌড় দিল। ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে নিজের জামা ঝেড়ে নিল অর্ঘমা। নীরদ পকেট থেকে রুমাল বের করে কিছু না বলে চুপচাপ অর্ঘমার চুলে লেগে থাকা পানি মুছে দিল। মুগ্ধ চোখে তাকে দেখল অর্ঘমা। নিজের জামাকাপড়ে লেগে থাকা পানি ঝাড়তে ঝাড়তে নীরদ দোকানের ভেতরে তাকিয়ে অর্ঘমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-“চা খাবে?”
-“হ্যাঁ, খাওয়া যায়।”
-“বৃষ্টি দেখতে দেখতে চা খাওয়ার মজাই আলাদা।”
দোকানিকে দু’কাপ চা দিতে বলে প্যান্টের পকেটে হাত রেখে দাঁড়াতেই কিছু একটা মনে পড়ল নীরদের। পকেট হাতরে আড়চোখে অর্ঘমার দিকে তাকাল। অর্ঘমা তখন গলার স্কার্ফ ঠিক করতে ব্যস্ত।
-“অর্ঘ!”
নীরদের ডাকে থেমে গেল অর্ঘমার হাত। পাশে তাকিয়ে দেখল নীরদ দ্বিধান্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
-“কিছু বলবেন?”
প্যান্টের পকেট থেকে হাত বের করে অর্ঘমার সামনে এনে হাতের মুঠ খুলল। চেইনের খুব সুন্দর একটা ব্রেসলেট তার হাতে। অর্ঘমা এবার সরাসরি তাকাল নীরদের দিকে।
-“প্রথম বেতন পেয়ে সবার জন্যই কিছু না কিছু নিয়েছিলাম। এটা নিয়েছিলাম তোমার জন্য। কিন্তু দিতে সাহস পাইনি। কারণ এটা আলাদা। তোমার ফ্যামিলি স্বাভাবিকভাবে নিত না এই ব্যাপারটা। আর আসল কথা হলো আগে দিলে তুমিই নিতে না এটা। কিন্তু এখন তো নিতে সমস্যা নেই। আর তোমার বাবা-মা কিছু জিজ্ঞেস করলেও অভ্র ভাই সামলে নিতে পারবে।”
অর্ঘমা কিছু না বলে মৃদু হেসে নিজের হাত এগিয়ে দিল। নীরদের চোখজোড়া খুশিতে চকচক করে উঠল। ব্রেসলেটটা দ্রুত অর্ঘমার হাতে পরিয়ে দিল। ব্রেসলেটটা ভীষণ পছন্দ হলো অর্ঘমার।
-“আমার আসলে মেয়েদের জিনিসপত্রের ব্যাপারে তেমন কোনো আইডিয়া নেই। তাই কী নিব বুঝতে পারছিলাম না। অনেক খোঁজার পর এটা এক দেখাতেই পছন্দ হয়ে গিয়েছিল বলে নিয়েছি। তোমার পছন্দ হয়েছে?”
-“খুব পছন্দ হয়েছে। থ্যাংক ইউ।”
ঠোঁট কামড়ে হাসল নীরদ। দোকানদারের ডাকে এগিয়ে গিয়ে চা নিয়ে এসে একটা কাপ অর্ঘমার দিকে এগিয়ে দিল। অর্ঘমা সেটা নিতেই নীরদ পকেট থেকে রুমাল বের করে অর্ঘমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,
-“রুমাল দিয়ে কাপটা পেঁচিয়ে ধরো। তাহলে আর হাতে গরম লাগবে না।”
মুচকি হাসল অর্ঘমা। এতগুলো বছরে এসবে সে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। ছেলেটা বড্ড কেয়ারিং। নুসরাতের কাছে শুনেছে, যে মেয়ে নীরদের লাইফ পার্টনার হবে সে নাকি ভীষণ ভাগ্যবতী হবে। তখন অর্ঘমা মনে মনে হাসত। কারণ ইতোমধ্যে সে নীরদের সকল কেয়ারিং উপভোগ করেছে। নীরদের লাইফ পার্টনার হিসেবে নিজেকে কল্পনা করত প্রায় সময়। আজ সে অফিশিয়ালি নীরদের গার্লফ্রেন্ড হয়েছে। স্ত্রী হতেও সময় লাগবে না এখন।
নীরদের কথা মতো রুমাল দিয়ে কাপটা পেঁচিয়ে ধরে বৃষ্টি দেখতে দেখতে চা পান করতে লাগল। এর মধ্যে অভ্রর কল এসেছিল। নীরদ তার সাথে কথা বলে নিয়েছে। বৃষ্টি কিছুটা কমতেই অর্ঘমাকে দাঁড় করিয়ে রেখে রিকশা খুঁজতে গেল। রিকশা পেতেই দু’জনে রিকশায় উঠল। প্রত্যেকবারের মতো এবারও অর্ঘমা রিকশায় ওঠার পর তার জামা, ওড়না ঠিক করে দিয়ে তারপর রিকশায় উঠল নীরদ। রিকশা চলতে আরম্ভ করলে এবার অর্ঘমা নিজে থেকেই নীরদের হাত ধরল। অবাক হয়ে তার দিকে তাকাল নীরদ। অর্ঘমা মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে দেখে মৃদু হাসল। হাতের বাঁধন আরও শক্ত করে আশেপাশে ভালো করে দেখে নিয়ে অর্ঘমার হাতের উপর চুমু খেল। কেঁপে উঠে বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকাল অর্ঘমা। এবার নীরদ অন্যদিকে তাকাল। অর্ঘমার বিস্ময় ভাব তখনো কাটেনি। রিকশার বেলের শব্দ শুনে বিস্ময়ের ঘোর থেকে বেরিয়ে এলো। লজ্জায় গাল গরম হয়ে কান দিয়ে ধোঁয়া বের হতে লাগল। কিন্তু অধর জুড়ে ছেয়ে গেল হাসির রেখা। বিরবির করে বলল,
-“আমিও আপনাকে ভালোবাসি। ভীষণ ভালোবাসি নীরদ ভাই।”
___
বাসার সকল জিনিসপত্র গোছগাছ করা হয়ে গেছে। প্রয়োজনীয় অল্প কিছু জিনিস বাইরে আছে। চারদিন পর অর্ঘমারা এই বাসা ছেড়ে নিজেদের বাসায় উঠবে। এখান থেকে প্রায় দুই ঘন্টার পথ অতিক্রম করে তাদের বাসায় যেতে হয়। তবে একটা জিনিস ভালো হয়েছে। ভার্সিটি একদম কাছে তাদের বাসা থেকে। দশ মিনিটের মতো লাগে যেতে। এসবের মাঝেও নীরদের জন্য তার মন খারাপ করছে। এখন তো প্রতিদিন দেখা করা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এই বাসা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর কী করবে? তখন তো আর প্রতিদিন দেখা হবে না। আর নীরদের পক্ষেও প্রতিদিন অফিস শেষে ক্লান্ত শরীরে উলটো ঘুরে এসে তার সাথে দেখা করা সম্ভব নয়। অবশ্য যদি অর্ঘমা বলে তাহলে নীরদ প্রতিদিন অবশ্যই আসবে। কিন্তু এটা ঠিক হবে না ভেবে বলার কথা মাথাতেও আনেনি।

বিকালে অর্ঘমা বেলকনিতে বসে ফোন টিপছিল। বেলের আওয়াজ শুনে রুমের দিকে তাকাতেই দেখল নিধি ইতোমধ্যে রুম ছেড়ে বের হচ্ছে দরজা খোলার জন্য। তাই আর সেদিকে গেল না। কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে ফোনে ভিডিও দেখতে লাগল। নীরদের সাথে সকালে কথা হয়েছিল। আজ অভ্রর ছুটি থাকায় সে বাসায় পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে। ইয়ারফোনে টান লাগায় সামনে তাকিয়ে নিধিকে দেখে জিজ্ঞেস করল,
-“কী হয়েছে?”
-“নীরদ ভাইয়ের বাবা-মা আর বোন এসেছে।”
-“হঠাৎ?”
-“তা তো জানি না। তুই ভাইয়াকে কল দিয়ে জিজ্ঞেস করে দেখ।”
নিধির বলতে দেরি অর্ঘমার কল লিস্টে ঢুকতে দেরি হয়নি। নীরদের নাম্বারে কল দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে নিরাশ হতে হলো। কারণ ওপাশ থেকে কল রিসিভ হলো না। পর পর বেশ কয়েকবার কল দেওয়ার পরও হদিস মিলল না নীরদের। বিরক্ত হয়ে ফোনটা ছুঁড়ে ফেলল বিছানায়। ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে নিজেকে কিছুটা পরিপাটি করে বের হলো রুম থেকে। অর্ঘমাদের পারিবারিক ব্যাপারে যাওয়াটা ঠিক হবে না ভেবে নিধি রুমেই রইল।

ড্রয়িংরুমে গিয়ে দেখল অভ্র আর তার বাবা কথা বলছে নীরদের বাবা-মা আর বোনের সাথে। অর্ঘমা গিয়ে তাদের সালাম দিল। নুসরাত তার পাশে জায়গা করে দিল বসার জন্য। অর্ঘমা মুচকি হেসে নুসরাতের পাশে বসে তার সাথে গল্প করা শুরু করল। মিনিট পাঁচেক পর সদর দরজা দিয়ে প্রবেশ করল নীরদ। তার দু’হাত ভরতি মিষ্টি ও ফল। অভ্রর সাহায্যে সেগুলো টেবিলে রেখে এসে সোফায় বসল সবার সাথে। চোখাচোখি হলো দু’জনার। অর্ঘমা চোখের ইশারায় এসবের মানে জিজ্ঞেস করলে নীরদ কিছু বলল না। শুধু রহস্যময় ভাবে হাসল। পাশ থেকে নুসরাত অর্ঘমাকে ধাক্কা দিয়ে ফিসফিস করে বলল,
-“তলে তলে তোমাদের কাহিনী এতদূর গড়িয়ে গেল। আর আমরা জানতেও পারলাম না?”
-“কিসের কাহিনী? কিসের কথা বলছ আপু?”
-“তোমার আর আমার ভাইয়ের প্রেম কাহিনীর কথা।”
চোখ বড় বড় করে বিস্ময় নিয়ে তাকাল অর্ঘমা। নুসরাত কীভাবে জানল? অর্ঘমার অবস্থা দেখে নুসরাত হেসে বলল,
-“নীরদ জানিয়েছে কালকে রাতে। বাবা-মা তো তোমার কথা শুনে এক পায়ে রাজি। তবে আমরা সবাই এই ভেবে বিস্মিত হয়েছি যে এতগুলো বছরে আমাদের কারও চোখে পড়েনি বিষয়টা।”
-“কী বলেছেন নীরদ ভাই?”
-“ভাই? তুমি নীরদকে ওর সামনেও ভাই বলে ডাকো নাকি?”
থতমত খেয়ে গেল অর্ঘমা। আমতা আমতা করে বলল,
-“হ্যাঁ, ওই আরকি!”
-“নীরদ তোমায় কিছু বলে না এই নিয়ে?”
-“না। আসলে অভ্যাস হয়ে গেছে।”
-“তোমরা রিলেশনে আছ কবে থেকে? কয় বছর হলো? আগে কে কনফেস করেছে?”
-“রিলেশনে আছি সপ্তাহ তিনেক হলো। কনফেস আগে নীরদ ভাই করেছে।”
-“তুমি রাজি হলে কীভাবে?”
-“আমিও পছন্দ করতাম তাকে। তাই না করার কোনো অপশন ছিল না।”
লাজুক হেসে আড়চোখে নীরদকে একবার দেখে নিল। অভ্রর সাথে কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে বারবার তার দিকে তাকাচ্ছে ছেলেটা। নুসরাত তা খেয়াল করে বলল,
-“ভাই আমার একেবারে ডুবে গেছে প্রেমের সাগরে।”
অর্ঘমার গাল দু’টো লাজে রাঙা হয়ে উঠল।
___
নীরদের বাবা কথা বলার এক পর্যায়ে বললেন,
-“এতক্ষণ তো অনেক কথাবার্তা হলো। তাহলে এখন আসল কথায় আসি।”
অর্ঘমার বাবা সিরিয়াস হয়ে বসলেন। বললেন,
-“জি, বলুন।”
-“নীরদকে তো চিনেনই। অভ্রর সাথে বেশ ভালো খাতির আছে ওর। আমার ছেলে বলে বলছি না। নীরদ আসলেই ছেলে হিসেবে খুব ভালো।”
-“হ্যাঁ, আমরাও জানি ও খুব ভালো ছেলে। তাই তো অল্প সময়ে আমাদের এত প্রিয় হয়ে উঠেছে।”
-“নীরদের জীবনসঙ্গী যে হবে তাকে সে মাথায় তুলে রাখবে।”
-“যে মেয়ে আপনার ছেলের বউ হবে, সে নিঃসন্দেহে ভাগ্যবতী।”
-“বলছেন?”
-“জি।”
-“আপনার কী মনে হয়, যেকোন মেয়ে চাইলেই পাবো আমার ছেলের জন্য?”
-“যদি মেয়ের পরিবার বিচক্ষণ হয়, খাঁটি হীরে চিনতে পারে তাহলে অবশ্যই রাজি হবে।”
ছেলের দিকে তাকিয়ে গর্বিত ভঙ্গিতে হাসলেন নীরদের বাবা। নীরদও মৃদু হাসল। নীরদের বাবা অর্ঘমার বাবাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
-“তাহলে আপনার মেয়েটাকে আমাদের দিয়ে দিন।”
-“জি!”
বিস্ময় সুরে প্রশ্ন করলেন। নীরদের বাবা সহাস্যে হেসে বললেন,
-“আমরা নীরদের জীবনসঙ্গী হিসেবে আপনার মেয়েকে চাই। অর্ঘমার মতো লক্ষ্মী আর আদুরে মেয়ে থাকতে আমরা আর অন্য কোনো মেয়েকে দেখতে চাচ্ছি না। আমাদের অর্ঘমাকে পছন্দ। তাছাড়া নীরদ, অর্ঘমাও একে অপরকে পছন্দ করে।”
অভ্রর বাবা নিজেকে স্বাভাবিক করে একবার নীরদের দিকে তাকিয়ে পরে অর্ঘমার দিকে তাকালেন।

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে