এর বেশি ভালবাসা যায় না পর্ব-২+৩

0
1607

::::.এর বেশি ভালবাসা যায় না::::

পর্ব ::(২)

Written::Ar Ar Limat

পরেরদিন সকালে ব্রেকফাস্ট সেরে রিয়া বাসার সামনে থেকে একটা রিক্সা নিয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা হলো.. । রাজ ও দৌড়ে গিয়ে ওই রিক্সাটাই চেপে বসলো।
– এই তুই এখানে বসলি কেন? নাম,, নাম বলছি..
– কেন নামবো? তুমিও ভার্সিটি যাইবা আমি ও ভার্সিটি যাবো। একসাথে যাই। সমস্যা কি? তাছাড়া আমি তো তোমার কাজিন ।।
– অনেক সমস্যা। নাম তুই?
– মামাআআআআ, মামীইইইইইইইই
– ওই, তুই এভাবে ষাড়ের মতো চেচাচ্ছিস কেন?
– তুমি আমাকে না নিয়ে গেলে মামাকে বলে দিবো তোমার বয়ফ্রেন্ড রাগ করবে বলে আমাকে তোমার সাথে রিক্সায় নিচ্ছো না…
– মানে?
– ব্ল্যাকমেইল ..
– দেখে নিবো তোকে..
– অনেক সময় পাইবা দেখার.. এখন ভার্সিটি যাই। সময় কম।
– ভার্সিটির গেটে কোনোমতে গিয়েই বাইক টা থামিয়ে দিলো সে।
– নাম এখন..
– okk পাগলী সোনা..
– বাজে কথা রাখ। যা এখান থেকে…
– যাচ্ছি.. কিন্তু আমি চলে যাওয়ার পর যেনো কোনো ছেলের সাথে তোমাকে না দেখি। ঘাড় মটকে দিবো একদম।
– 😡😡😡
– 😃
রাজ চলে গেলো নিজের ক্লাসরুমে। রাজের যাওয়াতে রিয়া যেনো হাফ ছেড়ে বাচলো।
..
অনেক দিন কেটে গেলো। রিয়ার উপর রাজের করা রোমান্টিক অত্যাচার গুলো যেনো আরও বেড়ে গেলো। রিয়া পদে পদে ওকে অপমান করছে, কিন্তু সেগুলো যেনো রাজের গায়েই লাগছে না। একদিন সকালে ভার্সিটি যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলো রাজ । এমন সময় রাজের মা এসে রাজের সামনে এসে দাড়ালো। হাবভাবে মনে হচ্ছে খুব রেগে আছেন তিনি। সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে মাকে জিজ্ঞাসা করলো রাজ …
– কি ব্যপার? কিছু বলবে মা?
-.তুই কি এখনো বাচ্চা আছিস রাজ ?
– হটাৎ এইসব বলছো কেন?
– তুই রিয়ার সাথে এমন কেন করিস? তুই এখন বড় হয়েছিস সেটা তোর বুঝা দরকার।
– কি করি আমি আমার জানুর সাথে?
– খবরদার, একদম আজেবাজে নাম বলবি না। রিয়া আমাকে ফোন করে সব বলেছে। তুই কেন ওর সাথে সারাক্ষণ ঝামেলা করিস?
– ওহ, ওই পাগলী আমার নামে তোমার কাছে নালিশ করেছে? দাড়াও দেখাচ্ছি মজা..
– খবরদার, আর কোনো উল্টা পাল্টা কিছু করবি না।
– দেখোই না কি হয়।
মায়ের কাছ থেকে নিজের রুমে চলে এলো রাজ .. রিয়া কে ফোন দিলো সে। কয়েকবার রিং বেজে কেটে গেলো। কিন্তু রিসিভ হলোনা আরেকবার কল দিতেই ফোনটা রিসিভ হলো..
– হ্যালো ..
– জানু .. তুমি কোথায়?
– সেটা যেনে তুই কি করবি?
– প্লিজ বলো.. দরকার আছে।
– ফোন রাখ। বিরক্ত করবি না।
– বলোনা কোথায় আছো?আছ কত দূরে আমার এ মনের ,,,,,,,,,,,,,,,
– রিয়া ইচ্ছার বিরুদ্ধেই নিজের অবস্থান জানালো রাজকে । অনেক জেদ করছিলো তাই।
রাজ ১৫ মিনিটে সে স্থানে পৌঁছে গেলো। রিয়া সহ আরো কয়েকজন বান্ধবী মিলে সামনে একটা স্টলের বেঞ্চে বসে ছিলো। রাজ সেখানে গিয়েই কাউকে কল দিলো।
কিছুক্ষন পর একটা ছেলে আসলো সেখানে। ছেলেটা কিছু একটার সাথে পা লেগে পরে যাওয়ার অভিনয় করে রিয়ার গায়ের উপর গিয়ে পড়ে রিয়া তারাতা‌ড়ি ছেলেটাকে দুহাতে ধরে ফেলে। আর রাজ সাথে সাথে সেটা ক্যামেরাবন্দী করে নেই। রাজ মুচকি হাসতে থাকে। আসলে প্ল্যানটা রাজের ই ছিলো। আর ছেলেটাও রাজের ই একটা বন্ধু নাম লিমাত । রাজই ওকে রিয়ার সামনে এসে পড়ে যাওয়ার অভিনয় করতে বলেছিলো।
রাজ একটা শয়তানি হাস দিয়ে সেখান থেকে কেটে পরলো কেউ দেখার আগেই।
..
বিকেলে সবেমাত্র রিয়া বাসায় ফিরেছে, এমন সময় রিয়ার বাবা বেশ কড়া চোখে মেয়ের পথ আগলে দাড়ালো। রিয়া বেশ অবাক হলো বাবার বিহেভিয়ার এ।
– কি হয়েছে বাবা?.
– কি হয়েছে? এটা তুই জিজ্ঞাসা করছিস? জানিস না কি হয়েছে?
– না তো? কি হয়েছে? মা বলোতো কি হয়েছে? বাবা এমন করছে কেন?
– ভাবতেও আমার ঘৃণা লাগছে তুই আমার মেয়ে । প্রেম করেছিস ভালো কথা, তাই বলে নিজের মান সম্মান,. আমার মান সম্মানের মাথা খেয়ে রাস্তা ঘাটে যা ইচ্ছে তাই করবি?
– মানে? বুঝলাম না কিছু। কি করেছি আমি?
– এগুলো কি?. ছবিগুলো রিয়ার সামনে ধরলো রিয়ার বাবা। ছবিগুলো দেখে রিয়া বেশ অবাক। এইটা তো সেই ছেলেটা , যার সাথে সকালে পরে ধাক্কা খেয়েছে রিয়া। এইসব ছবি কে তুললো? আর বাবার কাছেই বা আসলো কিভাবে?
– কি বলছি উত্তর দাও। রোমান্স করার জায়গার কি অভাব পরেছে যে পাবলিক স্পেসে তোমাকে যা খুশি তাই করতে হবে?
– বাবা এইটা তো আমি..
– থাক আর বলতে হবে না। এখন থেকে ক্যারেক্টার ঠিক করার চেষ্টা করো। তোমার সম্মানের ভয় না থাকলেও আমার আছে। কথাগুলো বলে রিয়ার সামনে থেকে চলে গেলো বাবা। রিয়ার মাথায় কিছু ঢুকছে না। মাথা হ্যাং হয়ে আসছে। এমন সময় একটা হাসির আওয়াজ এলো তার কানে। পাশে তাকিয়ে দেখলো কিছুটা দুরে রাজ দাড়িয়ে তার দিকে তাকিয়ে হাসছে। রিয়ার আর বুঝতে বাকি নেই এটা কার কাজ। তবুও কিছু বললো না সে। নিজের রুমে চলে গেলো।
নিজেকে শান্ত করতে পারছে না রিয়া। ছাদে চলে গেলো সে। গিয়ে দেখলো ছাদের কর্নারে দুলনায় রাজ বসে আছে। রিয়া আস্তে আস্তে রাজের পাশে গিয়ে দাড়ালো। রাজ এক পলক রিয়ার দিকে তাকিয়ে আবারও চোখ নামিয়ে নিলো।
– কেন করছিস এমন?
– কি করেছি?
– আমি ভালো করেই জানি কাজটা তোর। আর ওই ছেলেটা যে তোর বান্ধবী সেটাও জানি। আমি তো ওর ধাক্কাটা সামলালাম । আর তুই এইটাই ইউস করলি
আসলে এ টা আমার প্ল্যান ছিল তোমাকে শায়েস্তা করার জন্য ।।
মানে ??
মানে একবারে পানির মতো পরিষ্কার ।।
তুমি আমার মায়ের কাছে নালিশ করে বকা শুনিয়েছো তাই আমিও তোমাকে বোকা শুনলাম ।।ব্যস ফিফটি ফিফটি ।।

রিয়া রাগে আগুন কিছু বলতে পারছে না ।।।

রিয়া ::শুধু এতটুকুই বলছি শোন ,, ,,আজ থেকে থেকে তোর প্রতি আমার ঘৃণা আরো বেড়ে গেলো বলেই ছাদ থেকে চলে গেলো।।

রাজ ছলছল দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে থাকলো ।।
এই প্রথম রাজের মনে রিয়ার কথা গুলা দাগ কাটলো তার অপমানে অপমানিত বোধ করলো।।
..
সেদিন রাজ মামার বাসায় আর থাকলো না। নিজের বাসায় চলে এলো। কেন যেনো রিয়ার বলা ঘৃণা কথাটা সে মেনে নিতে পারছেনা। বাসায় এসে নিজের রুমে ঢুকে দরজা লক করে দিলো সে।
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে গেছে।
রাজের মা আসমা বেগম কিছুক্ষন পর পর ছেলেকে ডাকছে। কিন্তু কোনো সাড়া পাচ্ছে না। কিছুটা চিন্তায় পরে গেলেন তিনি। তার এই চঞ্চল ছেলে তো কখনো এইরকম করেনা।
আজ হটাৎ কি হলো। কিছুক্ষন পর রাজের বাবাও চলে এলো। আসমা বেগমকে ছেলের রুমের সামনে পায়চারি করতে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন..
– কি ব্যাপার? এখানে এভাবে পায়চারি করছো কেন? কি হয়েছে?
– তুমি কখন এলে?
– এইতো মাত্রই এলাম। কি হয়েছে? অন্য্ প্রব্লেম
হুম দেখতো ছেলেটা বাড়িতে আসার পর থেকে সারাদিন দরজা বন্ধ করে বসে আছে খাওয়া দাওয়াও কিচু করলো না ।।ডাকতেছি দরোজাও খুলতেছে না ।।

আচ্ছা সরতো আমি দেখতাছি
ওই বাবু ,,,রাজ বাবু,,, ছেলেকে অনেক ভালোবাসেন মনির সাহেব।। এখনো ওকে সেই ছোট্ট খোকাটি ভাবে ।।
কি হয়েছে তোমার কে কি বলেছে অন্তত আমাকে বলো ।।
রাজের ও একটাই দুর্বলতা । বাবার কথা ও না শুনা পারেনা সে। কারণ বাবাকে অনেক বেশি ভালোবাসে সে।।

– কেউ কিছু বলেনি আব্বু।
– তাহলে মন খারাপ করে আছো কেন?
– এই এমনি.. মাথা ব্যাথা করছিলো তাই।
– মাথা ব্যাথা.. আমাকে ফোন করে বলোনি কেন? তোমার মাকে বলতে পারতে..
চলো..
– কোথায় যাবো আব্বু?
.. তোমাকে নিয়ে ডক্টরের কাছে যাবো।
– আহ আব্বু, সামান্য ব্যাথা.. এখন ঠিক হয়ে গেছে।
– ঠিক তো?
– হুম..
– ঠিক আছে, ফ্রেশ হয়ে এসো.. একসাথে বসে ডিনার করবো।
– okk আব্বু..
– বাবার জন্য কত দরদ.. একটু বলতেই বেরিএ সব আবদার পুরন করা হচ্ছে, আমিযে এতোক্ষন চেচিয়ে গলা ফাটালাম সেটাই কোনো ভ্যালুই নেই দেখছি … অভিমানের সুরে কথাগুলো বললো আসমা বেগম।
মায়ের কথায় রাজ আর রাজের বাবা দুজনেই হেসে দিলো।
..
দিন যেতে লাগলো..
রাজ এখনো আগের মতোই চঞ্চল রয়ে গেছে। যদিও সেদিন রাতে মন খারাপ করেছিলো। কিন্তু পরেরদিন সকাল থেকেই সবকিছু মাথার মেমরি থেকে ডিলিট করে দিয়েছে সে। এইটাই তার স্বভাব। কারো দেওয়া কষ্ট মনে গেঁথে রাখতে পারেনা সে। সব ভুলে যায়।
.
রাজের এক্সাম শুরু হয়ে গেলো। এক্সামের কারণে দিনরাত বেশ পড়তে হচ্ছে তাকে। যার জন্য রিয়ার সাথে আগের মতো দেখা হচ্ছে না তার। রিয়াও বেশ খুশি এতে। মনে মনে দোয়া করে, যেনো সারাবছরই রাজের এক্সাম লেগে থাকে।
শেষ এক্সামের আগের দিন রাতে রাজ টেবিলে বসে পড়ছিলো। হটাৎ রিয়ার চিন্তা মাথায় ঢুকলো তার। সঙ্গে সঙ্গে কল দিলো তাকে। প্রথমবার রিং হতেই রিসিভ হয়ে গেলো। বেশ অবাক হয়ে রাজ বললো..
– কি ব্যাপার আমার রিয়া জানু ? আমার ফোনেরই অপেক্ষায় ছিলে মনে হচ্ছে?
– আমার তো খেয়ে দেয়ে কোনো কাজ নেই যে, তোর মতো একটা শয়তানের ফোনের অপেক্ষায় থাকবো। ফোনে গেইম খেলছিলাম তাই কল আসতেই রিসিভ হয়ে গেছে।
– সে যাইহোক .. কি করছো এখন?
– আজাইরা সময় নষ্ট করছি আরকি..
– মানে?
– মানে তোর মতো একটা আজাইরার সাথে ফোনে কথা বলছি। এইটা তো কোনো কাজ না তাইনা? আর কাজ না করে সময় লস মানেই আজাইরা সময় নষ্ট করা।
– দেখো রিয়া জানু .. আজাইরা বলো আর যাই বলো.. সবটা কিন্তু তোমারই.. So, তোমার নিজের জিনিসকে সম্মান দিতে শিখো।
– Just Shut Up … কতোবার বলেছি আমাকে এইসব বাজে নামে ডাকবি না। আর তুই আমার হবি কোন দুঃখে রে?
– কোন দুঃখে আমি তোমার হবো না। তোমাকে ভালোবাসি তো তাই সেই সুখেই আমি তোমার হবো।
– বাজে কথা রাখ, এতো রাতে কেন ফোন দিয়েছিস সেটা বল..
– ভালোবাসি কথাটা বলতে..
– বলা হয়েছে?
– নাহ.. হয়নি..
– আবার কি?
– তুমিও বলো…
– কি বলবো আমি? ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করলো রিয়া।
– ভালোবাসি কথাটা বলো..
– মাথায় গন্ডগোল হয়েছে তোর? বাসায় জানে?
– প্লিজ বলোনা জানু …
– ফোন রাখ..
– একবার বলো… প্লিজ…
– এইবার কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে। তোকে কিন্তু এইবার আমি সত্যি সত্যি ব্লকলিস্টে রেখে দিবো।
– আচ্ছা.. বেশি বলতে হবে না..
শুধু একবার বলো… প্লিজ …
– ধুররররর..
ফোনটা কেটে দিলো রিয়া। দিশা ছলছল চোখে ফোনের স্কীনের দিকে তাকিয়ে আছে। ইদানীং রিয়া তাকে অনেক বেশি এভোয়েড করছে। যেটা মানতে পারছে না রাজ । তাও রিয়ার পিছনে আঠার মতো লেগে আছে।
..
পরেরদিন এক্সাম শেষে ভার্সিটির গেইট দিয়ে বের হতে যাবে এমন সময় দেখলো রিয়া একটা রিক্সা থেকে নামছে। হয়তো মাত্রই এসেছে। রাজ দৌড়ে রিয়ার সামনে হাসিমাখা মুখ নিয়ে দাড়ালো..
– রিয়া জানু .. কখন এলে? আমাকে দেখতে এসেছো বুঝি? আমি জানতাম তো আজ আমার লাস্ট এক্সাম, তুমি আসবেই ..
– এই শোন, ফুফাকে গিয়ে বল.. তোকে হেমায়েতপুর নিয়ে যেতে। গিয়ে মাথার ট্রীটমেন্ট করা বুঝলি.. অসভ্য কোথাকার
কথাটা বলেই রিয়া রাজের পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। দিশা আর কিছু বললো না। এই প্রথম সে বুঝতে পারলো.. আসলে সে রিয়াকে টর্চার করছে। খুব জ্বালাচ্ছে। যেটা মোটেও ঠিক না। কিন্তু কি করবে সে, খুব ভালোবাসে যে সে তার পাগলী কে। তাকে পাওয়ার জন্য সে সব করতে পারে।
.
এক্সাম শেষ হওয়ায় কিছুটা ফ্রী হলো রাজ । তাই পরেরদিন ব্রেকফাস্ট করে রিয়াদের বাসায় চলে এলো সে। কয়েকদিন থাকবে এখানে সে। রিয়াকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করবে তার বাসায় থেকেই।
বাসায় ঢুকেই সে রিয়ার মাকে জড়িয়ে ধরলো..
– ও মামী … কি করো..?
– কি আর করবো? এতোদিনে মনে হলো আমার কথা? আসতে পারিস না?
– কি করবো বলো.. আমিতো আসতেই চাই.. তোমার মেয়েই তো সব নষ্টের মুল..
– কেন, ও আবার কি করলো?
– জানোনা? তোমার মেয়ের তো বিয়ের বয়স হয়েছেই। আমারও হয়েছে। আমাদের ২ জনকে একসাথে বিয়ে দিলেই তো পারো। আমি তোমার বাড়ি ঘর জামাই থাকতাম ।।
– পাজি ছেলে একটা । এইসব কথা কেউ বলে? আর রিয়া তো তোর কাজিন তাছাড়া সে তোর থেকে বড় এ টা কি করে সম্ভব
আর তুই এখনো কোনো চাকরি করিস না ।
বিয়ে করে ওকে খাওয়াবি কি?
– কেন? ও কি সর্বস্তরের খাদক নাকি? কত মানুষ চাকরির আগে বিয়া করে বউ কে খাওয়াইতেছে ,.আমি কেন পারবো না ?
– খুব পেকে গেছিস তাইনা?
– সেটা জন্মের পর থেকেই। যাইহোক, শশুর মশাই কই ..
– কে শশুর মশাই …?
– কে আবার, তোমার স্বামী … আমার রিয়া জানুর বাবা, আর আমার বড় মামা … বলো কোথায়..?
– কি পাজী ছেলেরে বাব। যা ফ্রেশ হয়ে আয়। আরেকটা উল্টা পাল্টা কথা বলবি তো মাইর খাবি। যা এখন।
– যাচ্ছি যাচ্ছি, সৎ শাশুড়ির মতো ব্যাবহার শুরু করে দিছো এখনি। হুহ..
একটু জামাই আদর করতে পারো না।
রাজ চলে গেলো ওয়াসরুমে ফ্রেশ হতে । রিয়ার মা রাজের এইসব কথা শুনে একা একাই হাসছে। ছেলেটার বয়স হলেও বুদ্ধি বাড়েনি সেটা তিনি বেশ বুঝতে পেরেছেন।
..
রাজ ফ্রেশ হয়ে এসে মামীর কাছে জিগালো ..
– মামী , রিয়া জানু কোথায়?
– তোর বকা শুনতে খুব ভালোলাগে তাইনা?
– বোকার মতো কথা বলো কেন? বকা শুনতে কারো ভালো লাগে নাকি?
– তাহলে অপছন্দ করে জেনেও এই নামে কেন ওকে ডাকিস বার বার?
– ভালোবেসে ডাকি তো তাই ভালো লাগেনা, ভালোবাসা না থাকলেই বুঝতা এইটার মাঝে যে কি মধু আছে।
– থাক, তোর মধুর আর দরকার নাই। দুটোতে সবসময় সাপে নেউলে লেগে থাকে, আসছে ভালোবাসা দেখাতে।
– তোমার হিংসে হয়?
– কিহ?
– বুঝো না? বাদ দাও.. কিচেনে যাও ..
– কেন?
– কিচেনে মানুষ কেন যায়?
– কেন যায় সেটা তো বুঝলাম, কিন্তু এই সময় কিচেনে গিয়ে আমি কি করবো..?
কেন আমার জন্য রান্না করবে। এখন থেকে আমাকে জামাইয়ের মতো আদর করবে ওকে ,,,,,,,,
-আমাকে ভালো মন্দ খাওয়াও। আর দ্রুত বিয়ার ব্যবস্থা করো ।তাহলে তুমি দ্রুতই দাদু ডাক শুনতে পারবে তাই না।।
রাজের কথা শুনে উনি হাসবেন না কাদবেন বুঝতে পারছেন না। কি বদ ছেলেরে রে বাবা…

::::এর বেশি ভালবাসা যায় না::::
পর্ব::(৩)
২য় পর্বের পর থেকে

Written:: Ar Limat

সেদিন দুপুর বেলা জোরপূর্বক রিয়ার মাকে ওই সব খাবার গুলা রান্না করতে বাধ্য করে যেগুলা সে ডিজলাইক করে । এবং সেই খাবার গুলা নিজেই টেবিলের উপরে সাজিয়েছে রাজ .. । আজকে রিয়া কে নিয়ে সে অন্য রকম মজা করতে চলেছে । ভাবতেই অনেক খুশি লাগছে তার।
১:৩০ এ রিয়া বাসায় ফিরলো। বাসায় এসে কারো কোনো সাড়া পেলোনা সে। পরে ওয়াসরুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে 20 মিনিট পর ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে এলো সে। তখনও চারিদিকে নিস্তব্ধতা.. । নিরবতা ভেঙ্গে সেই বলে উঠলো..
– মা, খিদে পেয়েছে। খাবার দাও..
– খাবার টেবিলেই রাখা আছে দেখ.. পাশের রুম থেকে মা বলে উঠলো.. রিয়া আপন মনেই টেবিলে গিয়ে বসলো। টেবিলে অনেকগুলি বাটি ঢাকনা দিয়ে ঢাকা আছে। রিয়া একটা প্লেটে ভাত নিলো। তারপর একটা বাটি নিয়ে ঢাকনা সরাতেই দেখতে পেলো তাতে আলুর ভর্তা রাখা, মেজাজ হালকা খারাপ হলো তার, এটা রেখে আরেকটা বাটি থেকে ঢাকনা সরাতেই দেখলো ওতে ডাল ভাজি আছে। ততোক্ষনে রাগ চুড়ান্ত সীমায় পৌঁছে গেছে তার। কোনো মতে রাগটা কন্ট্রোল করে আরেকটা বাটি নিয়ে দেখলো তাতে ডিম ভাজি।
চিৎকার শুরু করে দিলো রিয়া..
এই বাড়িতে কি আমাকে ফেলনা মনে হচ্ছে নাকি? কে করেছে এগুলো? মা, মা..
– কি ব্যাপার, এতো চিৎকার করছিস কেন? বাসায় কি ডাকাত পরেছে নাকি? পাশের রুম থেকে বের হতে হতে মা বললো..
– এগুলো কি?
– কোনগুলো?
– আমি খেতে এসেছি, আর তোমরা আমার সাথে মজা করছো? টেবিলে আলু ভর্তা, ডাল, ডিম.. জানোনা আমি এগুলো ডিজলাইক করি.. ?
– জানিতো..
– জেনেও এগুলো কেন করেছো? আমি এখন কি দিয়ে খাবো?
– এগুলো আমি করিনি। রাজ জোর করে আমাকে করতে বাধ্য
করেছে।।
– রাজ ?
– হ্যাঁ আমি করিয়েছি , কেন তোমার পছন্দ হয়নি? । এতোক্ষনে রিয়ার সামনে এসে দাড়ালো সে।
– অপছন্দের জিনিস আমার সামনে দিয়ে বলছিস পছন্দ হয়েছে কিনা.. আর তুই এইসব কেন করেছিস আসতে না আসতেই তোর বাঁদরামি শুরু করে দিয়েছিস ?
– আরে সমস্যা টা কি তোমার ??
– এগুলো আমার প্রিয় খাবার? ?
– এগুলো প্রিয় না হলেও প্রিয় করে নাও, এর চেয়ে ভালো রেসিপি আমি তোমাকে প্রতিদিন খাওয়াতে পারবো না ।।
কারণ আমি এখনো আয় করতে শিখি নাই ।।
তাই ভাবলাম বিয়ার আগেই এ খাবার গুলাও খাওয়া শিখে নাও । একটু আধটু টাকা বাঁচাতে শিখো
– গাছে কাঠাল, গোফে তেল..
আমার জন্য তোর এতো চিন্তা করতে হবেনা, যা এখান থেকে.. ।
রিয়ার কথায় রাজ বেসুরো গলায় একটা গান ধরলো… ” কোনো একদিন আমায় তুমি খুজবে, সেইদিন ওগো প্রিয়, আমার ভালোবাসা বুঝবে… ”
বুঝলা রিয়া জানু ….
– যাবি এখান থেকে … প্রচন্ড জোরে হুংকার করে উঠলো রিয়া। রাজ একটা অট্ট হাসি দিয়া সেখান থেকে কেটে পরলো।
রাজ যেতেই রিয়া মাকে বলতে লাগলো..
– ও তো একটা পাগল, তাই এমন করেছে। তুমিও কি পাগল মা? তুমিতো জানো আমি এগুলো খাইনা, তাও ওর সাথে মিলে এমন করলে? এখন যে আমার খিদে পেয়েছে, খাবো কি?
– চেঁচামেচি করবি না, তুই বস.. আমি খাবার আনছি।
– হুহ…
..
আজ দুইদিন হলো রাজ রিয়াদের বাসায় এসেছে। এই দুইদিনে রাজ নানান ভাবে রিয়াকে ইম্প্রেস করার চেষ্টা করছে। কিন্তু সবগুলো উপায়ই নেগেটিভ ।।
বিকালে রিয়া বেলকনিতে বসে কফি খাচ্ছিলো। রাজ একটা গিটার নিয়ে রিয়ার খুব কাছাকাছি গিয়া দাঁড়ায় ।।
রিয়াও খেয়াল করিনাই
পরে চোখ বন্ধ করে গিটারের সুর তুলতে গিয়ে কফির কাপটাই
লেগে রিয়ার হাতের কফি রিয়ার গায়ে পড়ে যায়।
ধড়ফড়িয়ে উঠে রিয়া। রাজ তখনও চোখ বুঝে আছে। রিয়া চিৎকার দিয়ে উঠলো..
– এই শয়তান , তোর সমস্যা কি?
রিয়ার আকস্মিক চিৎকারে আঁতকে উঠলো রাজ ..
বলতে লাগলো..
– ম মানে, কি হয়েছে?
– বুঝিস না? চোখে দেখিস না কি হয়েছে? আর কতো জ্বালাবি আমাকে? আমাকে ভালোবাসিস? এই তোর ভালোবাসা? ভালোবাসার নামে আমাকে মানুষিক ভাবে টর্চার করছিস কেবল. । কি ক্ষতি করেছি আমি তোর? কেন করছিস আমার সাথে এমন? আমি তোর কোন জন্মের শত্রু যে এই জন্মে তার শোধ নিচ্ছিস? কেন এখানে পরে আছিস? আমার রাতের ঘুম হারাম করতে? তুই আসার পর থেকে ঠিকমতো খেতেও পারছি না, এখন কি শান্তিতে একটু কফি ও খেতে দিবি না ?
বেহায়া কোথাকার। প্রচন্ড ঘৃণা নিয়ে কথাগুলো বললো রিয়া। রাজ হতভম্ব হয়ে রিয়ার কথাগুলো শুনছে। চোখে নোনা জল আসতে চাইসে তবুও আটকে রাখছে।
আসলে আ::: মি:::::
– ন্যাকা সাজতে যাবিনা একদম বলে দিলাম। আমার লাইফ টা হেল করে দিয়েছিস তুই ? ঘৃণা করি তোর মতো ছেলেকে ।
রিয়া রাগে গজগজ করতে করতে ছাদে চলে গেলো। রাজ সেখানে ঠায় দাড়িয়ে আছে।
..আজ রাজ রিয়ার কথায় অনেক কষ্ট পেলো
তাই আর একমুহূর্ত ও এখানে থাকলো না
– আজই চলে যাবি? আর কিছুদিন থেকে গেলে পারতি ,
– আরেকদিন আসবো মামী .. আব্বুর জন্য মনটা বড্ড টানছে। তুমি যেও একদিন।
– সময় পেলে নিশ্চয়ই যাবো। তুই আসিস কিন্তু। ।
– আচ্ছা, এখন আসি তাহলে।
– সাবধানে যাস..
রাজ চলে এলো নিজের বাসায়। আসলে রিয়ার বলা কথাগুলো রাজের মনকে শান্তি দিচ্ছিলো না। বার বারই মনে হচ্ছিলো সে অন্যায় করছে। থাকলে হয়তো অন্যায়ের বোঝা বাড়তেই থাকতো। তাই তখনই ব্যাগপ্যাক গুছিয়ে নিজের বাসায় চলে আসলো রাজ । ..
..
ছাদে দোলনাতে বসে আছে রিয়া । মাথায় চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে তার। আসলে তখন রাজের সাথে এতোটা বাজে বিহেভ না করলেই হতো। শুধু শুধু এতোগুলো কথা শুনালো তাকে। আচমকা কেন যে এতোটা রাগ উঠে গেছিলো বুঝতে পারছে না সে।ছেলেটা তো তখন ইচ্ছে করে এমন করেনি। মনের ভুলে একটু কফি না হয় তার গায়ে পরেই গেছিলো, তাই বলে এতোটা কটু কথা বলা উচিৎ হয়নি তার। sorry বলা উচিৎ।
এইসব কথা ভাবতে ভাবতেই মায়ের রুমে গেলো রিয়া। চারপাশে চোখ বুলিয়ে দেখলো মা একাই বেডে শুয়ে আছে। রাজ ওর রুমে নেই। কিন্তু এইসময় রাজের তো এখানেই থাকার কথা। এইসব ভাবছিলো আরিয়ান। তখনই মা বললো..
– কিছু বলবি রিয়া?
– হ্যাঁ, না মানে..
– কি মানে মানে করছিস, বলে ফেল কি হয়েছে?
– মা, রাজ কোথায়?
– ও তো বাসায় চলে গেছে?
মনের মধ্যে ধুক করে উঠলো রিয়ার।
– কখন গেলো মা, তখন তো দেখে গেলাম বাসায় আছে।
– বিকেলেই গেছে। দেখলাম ছেলেটার মনটা খারাপ , জিজ্ঞাসা করতেই বললো, ওর বাবার জন্য নাকি মনটা টানছে, তাই চলে গেলো।
– কিন্তু ওর তো কয়েকদিন থাকার কথা ছিলো মা..
– হ্যাঁ .. কিন্তু হটাৎ যে কি হলো..
আচ্ছা, বাদ দে.-

হুম ,,,
রিয়া রুমে চলে গেল নিজের কাছে খুব খারাপ লাগছে ।।
ছেলেটাকে sorry বলতে হবে।।
– আচ্ছা আকাশ .. বলতো.. ভালোবাসা মানে কি শুধুই কষ্ট?
– কেন, কি হয়েছে রে রাজ ?
– কিছু হয়নি, বলনা.
– জানিনা তো। আমিতো কখনো কাউকে ভালোবাসিনি, তাই এর মানেও বলতে পারিনা। তুই রনি কে জিজ্ঞাসা কর..
– এই হারামী, তুই জানিস না, তাহলে আমি জানবো কিভাবে? আমিও তো কখনো ভালোবাসিনি কাউকে.. পাশ থেকে রনি বলে উঠলো..
– থাক.. তোদের কাউকে কিছু বলতে হবেনা। খামোখা টেনশন করে মাথা খারাপ করতে পারবো না। ফুচকা খাবো চল.. একটু আড্ডাবাজি করে আসি
– হুম তাই চল..
তিন বন্ধু মিলে ক্যাম্পাসে গিয়ে ফুচকা কিনে খেলো। মনের মধ্যে অনেক কষ্ট থাকলেও সবার সামনে স্বাভাবিক থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করে চলেছে রাজ । ফুচকা খাওয়া শেষ হলেই ক্লাসে যেতে নিলেই কোথা থেকে রাজের সামনে এসে রিয়া দাঁড়ায়।
রাজ অবাক হয়ে রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
– তুই চলে এলি কেন কাল?
– আব্বুর কথা মনে পরছিলো, তাই..
– আমার কথায় কষ্ট পেয়েছিস তুই?
– নিজের খেয়ে নিজের পরে শুধু শুধু অন্যের কথায় কষ্ট পেতে যাবো কেন?
– Sorry …
– কেন..?
– এমনি..
– ওহ, আচ্ছা.. আমার ক্লাসের দেরি হয়ে যাচ্ছে। পরে কথা হবে।
– হুম..
রাজ চলে গেলো ক্লাসে। রিয়া ও নিজের গন্তব্য স্থলে গেলো। Sorry বলাটা যেনো তার কর্তব্য ছিলো। সেটা বলতে পেরেই তার শান্তি.. ।..
দিন যেতে লাগলো…
রাজ এখনও আগের মতোই চঞ্চল আছে। যদিও সেদিন অনেক অভিমান ছিলো রিয়ার উপর। কিন্তু Sorry বলার পর তা গলে পানি হয়ে গেলো। এখনো রিয়াকে সামনে পেলে তার ভালোবাসার ঝুড়ি নিয়ে হাজির হয় তার সামনে। রিয়া এতো বিরক্ত হয় তাও সেটা আমলে নেয়না রাজ ।।
তার বিশ্বাস .. Sorry যেহেতু বলেছে, তাহলে নিশ্চয়ই সেও রাজ কে ভালোবাসে। ভালো না বাসলে অযথা Sorry বলতে আসবে কেন…
..
সেদিন.. রিয়া তার কয়েকজন বন্ধু বান্ধবী নিয়ে ক্যম্পাসে বসে আড্ডা দিচ্ছিলো। তাদের মধ্যে একটা ছেলেছিলো.. যে রিয়ার সাথে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে বসে ছিলো। রাজের নজর থেকে সেটা এড়ায় নি। রাগে ফুসতে ফুসতে রিয়া সহ বাকিদের সামনে গিয়ে হাজির হলো সে….
..

ঘনিষ্ঠভাবে বসে ছিলো। রাজের নজর থেকে সেটা এড়ায় নি। রাগে ফুসতে ফুসতে রিয়া সহ বাকিদের সামনে গিয়ে হাজির হলো সে….

..
রিয়া সহ বাকিরা রাজের দিকে তাকালো.. রাজ বেশ রাগী লুকে তার দিকে তাকিয়ে আছে..
– ও রিয়া , এই ছেলেটা কে? আর তোমার সাথে এভাবে লেগে আছে কেন?
– What do you meen by লেগে থাকা?? রাগী কন্ঠে রিয়া উত্তর দিলো..
– বুঝো না? এই ছেলে , তুই আমার জানুর সাথে লেপ্টে আছিন কেন? সরে বলছি এখন থেকে ..
– Just Shut Up .. কি বাজে কথা বলছো? রিয়া.. কি বলছে এই ছেলেটা ?
– ও কি বলবে, ও কি বলবে? আমার কথা শুন..
লজ্জা নেই তোর, একটা ছেলে হয়ে আরেকটা পর নারীর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে বসে আছিস.. বেয়াদব কোথাকার …
– রিয়া.. ও কিন্তু ওর সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ওকে কিছু বলবা নাকি আমি এখান থেকে চলে যাবো.. রিয়ার হাত ধরে রেখেই কথাগুলো বললো
ছেলেটা ..
– যানা, না কে করেছে কে তোকে.. ? হাত ছাড় বলছি, আমার জানুর হাত ছাড়.. বলেই এক ঝটকায় রিয়ার হাত থেকে মেয়েটির হাত ছাড়িয়ে ধাক্কা দিলো রাজ ।
ধাক্কায় কিছুটা দুরে ছিটকে পরলো ছেলেটা।
রিয়া এইবার আর নিজের রাগকে কন্ট্রোল করতে পারলো না। এক ঝটকায় রাজের সামনে গিয়ে ওর গালে দিলো ঠাটিয়ে চর..
.. আরেকটা চর দিতে যাবে তখনই তমা ওর হাত ধরে ফেলে.
– বাদ দে নারে ভাই, তুই তো জানিসই ও সহজ সরল একটা ছেলে । তোকে ভালোবাসে, তাই নেহাল কে তোর পাশে মানতে পারছেনা ছেলেটা । চল আমার সাথে।
– রাজ গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে এক দৃষ্টিতে রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। রিয়ার চোখে মুখে আজ আগুন জ্বলছে। রিয়া ধীর পায়ে রাজের দিকে এগিয়ে গেলো.. রাজের হাতটা ধরলো সে। রাজ ছলছল চোখে অবাক হয়ে রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। রিয়া বলতে লাগলো..
– এই হাত দিয়ে তুই নেহাল কে আঘাত করেছিস তাইনা? তোর এতো সাহস? তুই কি জানিস আমি রিয়া এখানে তোর কি করতে পারি ? আমি চাইলে অনেক আগেই তোর শায়েস্তা করতে পারতাম। কিন্তু তুই আমার কাজিন, শুধু মাত্র এটা ভেবেই তোকে আমি ছাড় দিয়েছি।
কি মনে করিস তুই নিজেকে? আমার বয়ফ্রেন্ড ? আরে তোর মতো ছ্যাচড়া ছেলেকে আমি বানাবো আমার বয়ফ্রেন্ড ?
– আমি ছ্যাচড়া ? অবাক চোখে রিয়াকে জিজ্ঞাসা করলো রাজ ..
– হ্যাঁ ছ্যাচড়াই তো.. যে ছেলে নিজের বয়সে বোরো কাজিন কে বার বার তার ছ্যাচড়া ভালোবাসার কথা বলতে আসে, আমার কাছে সে ছ্যাচড়া ছাড়া আর কিছুই না। খুব কঠিন গলায় কথাগুলো বলছে রিয়া। রাজ শুধু অবাক দৃষ্টিতে রিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে আর তার কথাগুলো শুনছে।
রিয়া আবারও বলতে লাগলো..
– কি বলেছিস তুই নেহাল কে, ও বাজে ছেলে ও বেয়াদব ?
আরে ও তোর চাইতে অনেক অনেক ভালো.. বাজে তো তুই.. নির্লজ্জ তো তুই.. যে কিনা বার বার মানা করা স্বত্বেও নির্লজ্জের মতো আমার পিছনে পড়ে থাকে।
নেহাল কোনো বেয়াদব ছেলে না । বেয়াদব তো তুই..
আরেকটা কথা .. কি যেনো বলেছিলি তুই? ও আমার কে? তাহলে শুনে রাখ..
ওই নেহাল ই আমার বয়ফ্রেন্ড। ওকে আমি ভালোবাসি। আর ওকেই বিয়ে করবো।
কানে গেছে কথাটা? এইবার যা আমার সামনে থেকে.. কখনো আমার সামনে আসবি না।
থার্ড ক্লাস ছেলে কোথাকার ..
..
রিয়ার শেষ কথাটা শুনে যতোটা রাজ অবাক হয়েছে, তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছে নেহাল আর বাকিরা..
নেহাল অবশ্য রিয়াকে আগে থেকেই পছন্দ করে, কিন্তু কখনো বলা হয়নি। আর রিয়ান ও নেহাল কে just friend হিসেবেই মানে.. কিন্তু আজ ওকে নিজের বয়ফ্রেন্ড .. ভাবতেই খুশির রেখা বয়ে যাচ্ছে নেহালের শরীরে।
রাজ কিছুক্ষন রিয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে তারপর নেহালের দিকে তাকালো। নেহালের সামনে গিয়ে মাথা নিচু করে ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

To be Continue

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে