এর বেশি ভালবাসা যায় না পর্ব-০১

0
2884

::::এর বেশি ভালবাসা যায় না:::

পর্বঃ (০১)

Written:: Ar Limat

ঠাস ঠাস ঠাস ,,,,ও মা কি হলো মারলে কেন আমাকে ??(রাজ)

তোকে মারবো না তো পুজো দেব কি বললি তুই শয়তান।( রিয়া
ঠিক ই তো বললাম আই লাভ ইউ(রাজ)
আবার ,,,,,,,

হুম তো কি হইসে ??

লজ্জা করে না তোর বড় আপুকে আই লাভ ইউ বলতে ।।(রিয়া)

আররে ,,,
লজ্জা করবে কেন সত্যি টাই তো বললাম ।।
আর আপু”” তাই কি হইসে আরে তুমি টেনশন নিও না তুমি তো
আর আমার আপন বোন না ।।
আর মামাতো বোন কে বিয়া করা তো নিষেধ নাই ।।
আর তাছাড়া তুমি তো মাত্র ১ বছরের বড় নো প্রব্লেম( রাজ্ )

ওই শয়তান তোর ঘ্যানর ঘ্যানর বন্ধ করবি নাকি আরো
কয়টা লাগাবো।।(রিয়া)

আররে তোমার কানে প্রব্লেম তো ডাক্তার দেখাও না কেন( রাজ্ )

মানে??কেন কি হইসে ( রিয়া )

আমি বলতাছি তোমাকে ভালোবাসি আর তুমি বলতেছো ঘ্যানর ঘ্যানর করতাসি আজীব তো।।(রাজ)

ওহ মাই গড আমি কি যে করি ।।(রিয়া )

কেন কি করবা আবার,আমাকে ভালোবাসো
তাহলে তো সব সমস্যার সমাধান হইয়া যাই।।( রাজ)

ওই শয়তান তুই কি দিয়ে তৈরি রে ।।(রিয়া )

আরে,,,,, আমি না ^^
তুমিই আমার পাঁজরের হাড্ডি দিয়া তৈরী কারন আমি তোমার স্বামী হবো আর তুমি আমার বউ হবে ।।
আর বউ তো জামাইয়ের পাঁজরের হাড্ডি দিয়া তৈরি বুঝলা
মাই ডিয়ার পাগলী।। (রাজ)

ওহ কি যে করি এ তো আমাকে পাগল করে ছাড়বে।।(রিয়া )

হুম আমিও তো চাই তুমি পাগল হও শুধুই আমার জন্য।।( রাজ)

– ঠাটিয়ে চর দেবো একটা
– দাও.. না করলো কে ,,জানু..,,
– খবরদার, আমার নাম রিয়া। কতোদিন বলেছি এইসব উল্টা পাল্টা লকবে আমাকে ডাকবি না…
– আমি ওই ভালোবেসে যা ডাকবো তাই শুনতে হবে। পারলে ঠেকিয়ো হুহ..
– ঐ তুই আমাকে এতো জ্বালাতন করিস কেন রে?

– আরে আমার জন্ম হয়েছে তোমাকে জ্বালানোর জন্য, আর তোমার জন্ম হয়েছে আমার জ্বালাতন সহ্য করার জন্য সোনা..
– দেখ, তুই আমার কাজিন, কাজিনের মতোই থাকবি। ডিঙ্গাবার চেষ্টা করবি না। আমি তোর সিনিয়র কথাটা মনে রাখবি।
– সিনিয়র বলেই তো ভালোবাসি, জুনিয়র হলে তো স্নেহ করতাম। কথাটা বলেই হাসিতে মেতে উঠলো রাজ।
রিয়া রাগে ক্ষোভে আর কিছু না বলে সে ক্যাম্পাস ত্যাগ করলো।
রাজ হেসেই যাচ্ছে।
..
রিয়া আর রাজ মামাত ভাইবোন। দুজনের বাবাই শহরের নামকরা কোম্পানিতে চাকরি করে।।

আলাদা এপার্টমেন্টে থাকলেও একই ভার্সিটিতে পড়ে ওরা দুজন। যদিও রিয়া রাজের থেকে বয়সে আর ক্লাসের দিক থেকেও বড়। রাজ রিয়াকে অনেকদিন ধরেই ভালোবাসে। বেশ চঞ্চল স্বভাবের বলেই মনের কথাটা নির্দ্বিধায় বলতে পারে রাজ। কিন্তু রিয়ার কাছে যেনো রাজ চোখের বালি। ওর কাছ থেকে পালাতে পারলেই বাঁচে।
..
বিকেলে বাসায় এসে চেঁচামেচি শুরু করে দেয় রিয়া
– বাবা, বাবা…
– কিরে, কি হয়েছ? বাসায় এসেই চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছিস কেন? আঁচলে হাত মুচতে মুচতে বললেন রেহানা বেগম।
– মা, বাবা কোথায়?
– তোর বাবা তো এখনো অফিস থেকে ফিরেনি। কেন বলতো?
– মা, ওই রাজকে কিছু বলবা.. আমার লাইফটা হেল করে দিচ্ছে ছেলেটা। ওই ছেলের জন্য আমি ক্যাম্পাসে গিয়ে শান্তি পাইনা।
– এই পাগলী, ছেলে ছেলে করছিস কেন? ও না তোর কাজিন..
– হ্যাঁ, ,, কাজিনকে just কাজিনের মতোই থাকতে বলবা। ফোন করে বলে দিও ও যেনো ওর লিমিট ক্রস না করে।
বলেই হনহন করে নিজের রুমে চলে গেলো রিয়া।
পিছন থেকে রেহানা বেগম বলতে লাগলেন..
– যাক বাবা, এর আবার কি হলো… আর রাজই বা কি করলো…
..
রেহানা বেগম রাজের মায়ের নাম্বারে কল দিলেন..
– হ্যালো.. কে আপা, ,
– হ্যাঁ, কেমন আছিস আসমা? (আসমা বেগম রাজের মা)
– ভালোই আছি আপা.. আপনার কি অবস্থা? ভাইজানের শরীর টা ভালো আছে?
– হ্যাঁ রে, ভালোই আছে। রাজ কোথায়?
– রুমেই আছে। ডাকবো?
– ডাক তো দেখি..
রাজের মা রাজ কে ডেকে ফোন টা হাতে দিয়ে চলে গেলো..
– হ্যাঁ মামি, বলো…
– এই পাজি রিয়া র সাথে কি করেছিস তুই?
– রিয়া যেনো কে মামি?
– মাইর খাবি বলে দিলাম। কি করেছিস কি?
– মামি, তুমি কি আমার রিয়া জানুর কথা বলছো?
– নাহ, আমার বাপের মাথার কথা বলছি, রাখছি.. তোর সাথে কথা বলে পাগল হতে চাইনা।
– হ্যাঁ তাই করো… আমাদের স্বামী স্ত্রীর কথার মাঝে এসোনা। হুহ..
– কারা স্বামী স্ত্রী..?
– আমি আর আমার wife ..
– হায় হায়.. এ কি অলুক্ষনে কথা.. তুই আবার কবে বিয়ে করলি?
– করিনি, করবো..
– কাকে? ভ্রু কুঁচকে বললো রিয়ার মা।
– আমার রিয়া জানুকে .. বুঝলা? রাখি bye bye … টাটা ..
ফোনটা কেটে দিলো রাজ… রিয়ার মা ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে আর হাসছে।

পরের দিন ক্যাম্পাসে কয়েকজন বন্ধু নিয়ে বসে আছে রাজ.
এমন সময় রিয়া ঢুকলো ভার্সিটির প্রাঙ্গণে .. সানিকে দেখিয়ে বললো..
– এই দেখ, তোর ভাবি চলে এসছে।
– কে আমার ভাবি?
– ওই আমার রিয়া জানু..
– শোন.. ও কিন্তু তোকে পছন্দ করেনা। তাহলে তুই কেন বেহায়ার মত ওর পিছনে পরে আছিস? আমার কাছে কিন্তু তোর সবকিছুই বাড়াবাড়ি লাগছে।
– আরে থাম তো.. বকবক করিস না, দেখতে দে..
দেখ ওকে কি দেখতে লাগছে.. বেশ খুশিমনে বললো রাজ।
– সত্যিই রে, আজ রিয়া ভাবি কে সত্যিই অনেক কিউট লাগছে। (সানি)
– ওই সানির বাচ্চা, তুই রিয়াকে ভাবী বললি কেন? 😡
– যাক ভালই করেছিস।।

মানে??
মানে এবার তাকিয়ে দেখ মামা।।

..রিযা বান্ধবীদের সাথে ভার্সিটির বড় বটগাছটার নিচে বসে আড্ডা দিচ্ছিলো…
তখনই রাজ দৌড়ে সেখানে চলে আসলো..
– ও রিয়া রিয়া.. ওই সানির বাচ্চা আজ তোমাকে ভাবী ডেকেছে। আমিতো জানি তুমি রাগ করবা না, বরং খুশি হহইছ। ঠিক বলছি না?
– এই শয়তান সমস্যা কি তোর???
– হবু বরকে কেউ শয়তান বলে বোকা?
– কে আমার হবু বর?
– আমি..
– এইবার কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে। আমি কিন্তু ফুফাকে বলে দিবো.
– ভালোই হবে। আমাদের বিয়ের ডেইট টা তাহলে তারাতা‌ড়ি ফিক্সড করে নিবে তারা। আমরা তারাতা‌ড়ি একে অপরের কাছাকাছি আসতে পারবো। যাইহোক , কবে বলবা বাবাকে?
– এ কেরে ভাই? বলি এক, আর বুঝে আরেক?
– আমি ঠিকই বুঝি.. তুমিই বুঝতে চাও না, হুহ..
– যাবি এখান থেকে.. যদি না যাস.. তাহলে দিবো দুইটা চর..
– কোথায় দিবা?
– মানে?
– চরগুলি কোথায় দিবা জিজ্ঞাসা করলাম..
– আমার মাথায় (রেগে গিয়ে বললো রিয়া)
– তো দাও না, আমাকে বলছো কেন? মাথায় চর খেলে মাথার জট গুলো খোলবে। তাহলে আমার কথাগুলোও তোমার মাথায় তারাতা‌ড়ি ঢুকবে।
– যাবি এখান থেকে .. একটা জোরে ধমক দিলো রিয়া।
– যাচ্ছি.. হুহ , এভাবে মানুষ মানুষকে ধমক দেয়?
হনহন করে চলে গেলো রাজ। রিয়া কপাল কুঁচকে নিচের দিকে তাকিয়ে বসে আছে।
– যাই বল, ছেলেটা কিন্তু তোকে সত্যিই অনেক ভালোবাসে। (মিম)
– কি বললি? ভালোবাসে? এইসব ছ্যাচড়া ছেলের ছ্যাচড়া ভালোবাসার কোনো দরকার আমার নেই। বুঝলি তুই?..
– ছ্যাচড়া বলছিস কেন? ও তো তোর কাজিন তাইনা? আর ভালোবাসা কি কখনও ছ্যাচড়া হয়?
– কাজিন বলে কি আমার মাথা কিনে নিয়েছে? আর এই কাজিনের অজুহাতেই ওর বাড় বেড়েছে। আমিও কিছু বলতে পারছি না শুধু আমার কাজিন তাই। নাহলে ও যেভাবে আমার পিছনে ছ্যাচড়ার মতো পড়ে আছে, কবেই ওর শিক্ষা দিয়ে দিতাম।
– ধুর , তুই ভালোবাসার মানেই বুঝিস না (মিম)
– তুই তো খুব বুঝিস, এইবার চুপ থাক.. । দেখতে পাচ্ছিস না, ওই ছেলেরজ্বালায় বেচারা কি ডিপ্রেশনে আছে। (কেয়া)
– আচ্ছা, তোর কেমন ছেলে পছন্দ রিয়া?
– জানিনা দোস্ত, কিন্তু এইচ ছ্যাচড়া মার্কা ছেলে যে আমার পছন্দ না, সেটা জেনে রাখ…।
– বুঝলাম না, রাজ কেও তোর ভালো লাগেনা, আবার কেমন ছেলে পছন্দ সেটাও জানিস না, তাহলে কি জানিস তুই?
– বাদ দেনা ভাই.. কেমন ছেলে আমার পছন্দ সেটা সময়ই বলে দিবে।
– Okk .. তাহলে চল উঠি এইবার ..
– হুম..

রাতে বাসায় ডাইনিং এ খেতে বসলো রিয়া। সাথে মা, আর বাবা… । রিয়াখাচ্ছে এমন সময় কাশতে শুরু করলো রিয়া..
– মা পানি দাও.. তারাতা‌ড়ি ..
– এই নাও..
পানির গ্লাসটা হাতে নিয়ে ঢকঢক করে সবটা পানি খেয়ে নিলো রিয়া
আবারও ভাত খাওয়া শুরু করতেই কিছু মনে বাজলো তার। মাকে বললো..
– মা, তুমি তো আমাকে পানি দাও নি.. আর শিউলি ও (শিউলি কাজের মেয়ে) ছুটিতে গ্রামে গেছে। তাহলে আমাকে পানি দিলো কে?
– তোমার প্রেমিক দিয়েছে। রিয়ার
কানের কাছে চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো রাজ..
ওর কথা শুনে রিয়া সহ সবারই হার্ট এ্যাটাক করার মতো অবস্থা। সবার সামনে ইনফ্যাক্ট.. বাবার সামনে কি করে এই কথা বলতে পারে ও…
..
– মা, এ এই বাসায় কি করছে?

– এটা কোন ধরনের কথা রিয়া। এইটা রাজের মামার বাসা। যখন খুশি তখনই আসতে পারে, এতে এতো কথার কি আছে?
– ঠিকআছে মা, কিন্তু তখন বাবার সামনে ও এইসব বাজে কথা কেন বললো..?
– কোন বাজে কথা?
– বললো যে আমার প্রেমিক..
– ওহ! এই কথা.. তা ওর কথাকে এতো সিরিয়াসলি নিস কেন তুই? জানিস না ছেলেটা অনেক দুষ্ট। দুষ্টুমি করে এইসব বলে। ছোট্ট একটা ছেলে..
– ও এতোটাও ছোট না মা, ভার্সিটিতে পড়ে। আর ওর এইসব দুষ্টুমি ওর কাছেই রাখতে বলবা। আমার কাছে যেনো না আসে।
রাগে হনহন করতে করতে ছাদে গিয়ে বসলো রিয়া। রাগে ফুসছে সে। যাকে সে সহ্যই করতে পারেনা, আর সে কিনা ওর জীবনটা হেল করে দিচ্ছে। চোখ বন্ধ করে রাতের অপরুপ দৃশ্য অবলোকন করছে সে।
হটাৎ কেউ যেনো পিছন থেকে চোখ জাপটে ধরল ।।চোখ খুলে দেখলো সামনে রাজ দাঁড়ানো। । রাগে ফুশসে রিয়া।তবুও নিজের রাগটাকে কিছুটা কন্ট্রোল করে বললো..
– তুই এখানে কেন?
– এমনি, তুমি এখানে কি করছো? আর মেয়ে মানুষ রাতের বেলা ছাদে কি করো?
– এইটা আমার বাসা, আমি যখন খুশি এখানে আসবো, তাতে তোর কোনো প্রব্লেম?
এটা একান্তই আমার পার্সোনাল ম্যাটার। আর আমার পার্সোনাল কাজে নাক গলাতে আসবি না। ফল অনেক খারাপ হবে। বেশ কড়া কন্ঠে কথাগুলো বললো রিয়া
– সে যাইহোক, তুমি আজ থেকে ছাদে আসা কমিয়ে দেবে বলা যায় না কে কোন দিয়ে লাইন মারে।।
– কেন?

ঐ কি মনে করিস তুই নিজেকে? সালমান খান নাকি শাহরুখ খান? নাকি অন্যকিছু? কেন আমার পিছে পড়ে আছিস? আমি কোনোদিন বলেছি তোকে ভালোবাসি? জোর করে আদায় করতে চাস ভালোবাসা?
– প্রয়োজন হলে তাই করবো। আমার ভালোবাসা আমি জোর করেই আদায় করবো। বুঝলা জানু..
– তুই, তুই আসলেই একটা বাজে ছেলে..
– যা খুশি তা বলো.. এইসব কথা আমার এক কানে ঢুকে, আরেক কানে বের হয়।
– ধুর, পড়ে থাক তুই ছাদে,,,
রিয়া রাজকে ছাদে রেখেই নিচে চলে আসলো.. । রাজ রিয়ার যাওয়া দেখছে আর হাসছে। আসলে রিয়াকে রাগাতে রাজের ভালোই লাগে।
.
পরেরদিন সকালে ,,,,,,,,,,,,;,,,,;;;;

#লিমাত

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে