আমি শুধুই তোমার সিজন০২ পর্বঃ০৪

0
1634

#আমি_শুধুই_তোমার?
#সিজন০২
#পর্বঃ০৪
#Arshi_Ayat

ইনশিরা ভেতরে ঢুকে লোকটাকে বলল”আমনে হুইয়ে পড়েন মুই আমনের ঠ্যাং টিপ্পে দেতে আছি।”

লোকটা টানটান হয়ে শুয়ে পড়তেই ইনশিরা ওর হাত পা টিপতে শুরু করলো।কিছুক্ষণ পর দেখলো লোকটা চোখ বন্ধ করে গুনগুন করছে।ইনশিরা এই সুযোগে রুমালে ক্লোরফম স্প্রে করে ওর নাকে মুখে চেপে ধরলো।লোকটা সামলাতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে গেলো।এবার ইনশিরা দড়ি দিয়ে ওর হাত পা বেধে ফেললো।প্রায় একঘন্টা পর লোকটার জ্ঞান আসতেই ও ছটফট করছে কিন্তু উঠতে পারছে না হাত পা বাধা বলে।আর মুখ বাধা তাই চিল্লাতেও পারছে না।ইনশিরা একটা লোকটার পেন্ট থেকে বেল নিয়ে শপাং করে একটা বাড়ি মেরে বলল”আজ তোর শেষ দিন।”

তারপর নেকাবটা সরিয়ে বলল”দেখতো চিনতে পারিস কি না?আমিই সেই মেয়ে যাকে তোরা সেদিন…”

ইনশিরা আর কিছু বলতে পারলো না বেল্ট দিয়ে শপাং শপাং করে মারছে আর কাঁদছে।তারপর ওর মুখ থেকে কাপড় খুলে গলার কাছে চাকু এনে বলল”বল তোর সাথে যে আরো দুজন ছিলো ওরা কারা।আর তুই কেনো এমন করলি তোকে পাঠিয়েছে কে?চিৎকার করলে গলা নামিয়ে দেবো।”

জানোয়ারটা কাপতে কাপতে বলল”আমি জানি না।”

“তুই জানিস না তাই না!”

এটা বলে ইনশিরা আবার ওর মুখটা আটকে দিলো।তারপর ব্লেড দিয়ে সারা শরীর পোঁচ দিয়ে লবণ আর হলুদ ছিটিয়ে দিলো।লোকটা অনেক কষ্ট পাচ্ছে কিন্তু চিৎকার করতে পারছে না।ইনশিরা তারপর ওর মুখটা খুলে বলল”এখনও বলবি তুই কিছু জানিস না।”

লোকটা কাঁপতে কাঁপতে বলল”ব বলছি।ওরা দুজন এখন কক্সবাজার আছে।আর আমাদের বসের জন্য আমরা এটা করেছি।”

“তোদের বস কে?”

“জানি না।”

জানি না শুনে ইনশিরার আবার মেজাজ গরম হয়ে গেলো।ও লোকটার অন্ডকোষে এসিড ঢেলে দিলো।তারপর ফাকা সিরিন্জ দিয়ে ওর হাতের রগে বাতাস পুশ করলো।সাথে সাথেই লোকটা মারা গেলো।ইনশিরা একটা পৈশাচিক হাসি দিয়ে জানোয়ারটার পিঠে লিখে দিলো’রেপিস্ট’।

তারপর নিজের ব্যাগ গুছিয়ে। আস্তে বেরিয়ে পড়লো।তখন রাত ১১ টা।ওর বাড়ি থেকে বের হতেই কে যেনো বলল”কে কে ওখানে।” ইনশিরা ওই আওয়াজ শুনে দৌড় দিলো কেউ একজন ওর পিছনে ধাওয়া করছে।হঠাৎ ওর সামনে একটা হুন্ডা এসে পড়ে।হেলমেট পড়ে থাকায় চেহারা বোঝা গেলো না।হুন্ডাটা ওর সামনে থেমে ওকে ছো মেরে হুন্ডায় বসিয়ে ফুল স্প্রিডে বাইক ছেড়ে দিলো।অনেকদূর আসার পর ইনশিরা ব্যাগ থেকে চাকুটা বের করে ওর পিঠে ধরে বলল”কে তুই?বাইক থামা এক্ষুনি নাহলে পিঠে ঢুকিয়ে দেবো।”

ইনশিরার কথা শুনে বাইকটা সাইড করে রেখে হেলমেট খুললো ইনান।ইনশিরা ইনানকে দেখে বলল”তুমি?”

“হ্যাঁ আমি।ভণিতা না করেই বলি আমি সব জানি।একটু আগে তুমি একজনকে মার্ডার করেছো। এখন আরো দুজন বাকি।তারা কক্সবাজার এখন তাই না?”

“হ্যাঁ কিন্তু তুমি কিভাবে….. ”

“ফলো করেছি।আর ঘটনাটা আদ্রির ফোনে সরাসরি তোমার মুখ থেকে শুনেছি।প্লিজ তুমি একা আর কিছু করো না।আমরা আছি। আমরা একসাথে সব করবো।”

“না এটা আমার একার লড়াই।”

“যদি তোমার কিছু হয়ে যায় তাহলে আমার কি হবে?”

“তোমার কিছুই হবে না।আমি তোমাকে ভালোবাসি না।ইনফেক্ট এখন আমি কারোই যোগ্য না।”

ইনান ওর বাহু ধরে বলল”কে বলেছে তুমি কারো যোগ্য না?এতে তো তোমার দোষ নেই তাহলে নিজেকে কেনো অপরাধী বানাচ্ছো?”

“তবুও সমাজ আমাকেই দোষ দিবে আমার ওপরই কলঙ্কের কালি লাগবে।আমাকেই বলবে যে মেয়েটার পোশাক ঠিক ছিলো না।মেয়েটার বয়ফ্রেন্ড ছিলো।মেয়েটা হেন মেয়েটা তেন।এমন অনেক কিছু বলবে।কিন্তু কেউ মেয়েটার মন বুঝবে না।আমি চাইও না কেউ বুঝুক।আমি শুধু প্রতিশোধটা নেবো তারপর হারিয়ে যাবো দৃষ্টির অতলে।ভালো থাকুক এই সমাজ।এই সমাজের ধর্ষকরা।ভালো থাকুক সবাই আমার মতো একজন ধর্ষিতা না থাকলে কিছুই হবে না।”

“ইনশিরা আমাদের নিয়েই সমাজ গঠিত।এখন যদি তোমার মতো একজন এডুকেটেড মেয়ে এগুলো বলে তাহলে সমাজ কখনোই পরিবর্তিত হবে না।আগে নিজেকে পরিবর্তন করো।সমাজ ইনশাআল্লাহ পরিবর্তন হবেই।শুধু নিজের প্রতিশোধ নিয়েই চলে যাবে তোমার মতো হাজার ধর্ষিতা আছে তাদের কথা ভাববে না?তারা কি মুখ বুজে সহ্য করবে?না ইনশিরা।তুমি আমার ইমশিরা। আমার ভালোবাসা তুমি এভাবে হারবে না তুমি সমাজে মাথা উচু করে বাচবে।মাথা নিচু তো করবে সমাজের ওই কীট গুলো।”

ইনশিরা আর কিছুই বলল না শক্ত করে ইনানকে জড়িয়ে ধরলো। ইনান ও ওকে জড়িয়ে ধরলো।

————-

পরেরদিন ইনান,ইনশিরা,আয়াশ,আদ্রি একসাথে বসে আছে।আদ্রি আয়াশকে বলল”কি রে তোকে এতো খুশী খুশী লাগছে কেনো?”

“ব্রেকাপ হয়ে গেছে মামা।”

“এইজন্য এতো খুশী।” ইনশিরা বলল।

“হুম প্যারা নিতে ভাল্লাগে না।আর প্রেম টেম না যারে ভাল্লাগবো ডাইরেক্ট বিয়া কইরা ফালামু।”

“হ করিস।কিন্তু শোন আমরা আজ কক্সবাজার যাবো।বিকেলে রওনা দিবো।হোটেল বুক করে ফেলেছি।”

ইনানের কথায় সবাই হ্যাঁ সুচক মাথা নাড়ালো।তারপর উঠে গেলো।আজ বিকেলে আরেকটা মিশন।তবে এই মিশনে ইনশিরা একা নয় সাথে ওরাও আছে।দেখা যাক কি হয়।

বিকেলে সবাই রেডি হয়ে চলে আসলো।ইনশিরা আর ইনান সামনে বসলো।আয়াশ আর আদ্রি বসলো পিছনে।বসতে বসতে ইনশিরা বলল”সব ঠিকঠাক তো?”

“হ্যাঁ।ওরা কোথায় আছে জানতে পেরেছিস?”আয়াশ পিছন থেকে বলল।

” হ্যাঁ আমরা যে হোটেলে উঠেছি সেটায় ওরা ও উঠেছে।”

“ও তাহলে তো খেলা জমে যাবে।শুধু এখন অপেক্ষা।” ইনান গাড়ি ড্রাইভ করতে করতে লাগলো।

চলবে…….

(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে