আমি শুধুই তোমার সিজন০২ পর্বঃ০৫

0
1608

#আমি_শুধুই_তোমার?
#সিজন০২
#পর্বঃ০৫
#Arshi_Ayat

ইনশিরা’রা রাত ১২ টায় পৌঁছালো কক্সবাজার।তারপর হোটেলে উঠে আয়াশ আর ইনান এক রুমে আদ্রি আর ইনশিরা একরুমে শুয়ে পড়লো।

কিছুক্ষণ পর ইনশিরা ঘুম থেকে জেগে গেলো।তারপর কি মনে করে যেনো দরজা খুলে করিডোরে চলে গেলো।তখন রাত ৩.০০ টা।করিডোরে কেউ নেই।দু কোণায় দুটো বাতি জ্বলছে।ইনশিরা করিডোরের এ মাথা থেকে ও মাথা একবার চক্কর দিতেই খেয়াল করলো মেঝেতে রক্তের দাগ।ইনশিরা একটু ঝুকে খেয়াল করলো দাগ গুলো কাঁচা।তারমানে একটু আগে এখানে কেউ ছিলো।ইনশিরা আর দেরি না করে বেরিয়ে পড়লো।মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে হাটছে আর রাস্তায় তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছে এই রক্তের দাগ কোন দিকে গেলো তা বোঝার জন্য।ইনশিরা হাটতে হাটতে একটা দোতলা বাড়ির সামনে পৌঁছে গেলো।রক্তের দাগটা এ পর্যন্তই।ও দোতলা বাড়িটায় টর্চ ফেলে বোঝার চেষ্টা করলো বাড়িটায় কেউ আছে কি না।কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলো না।পুরো বাড়ি অন্ধকার।ইনশিরা ইনানকে কল করলো।মাঝরাতে কারো ফোন পেয়ে ইনান স্ক্রিনে তাকাতেই দেখলো ইনশিরা লিখা।ইনান দ্রুত ফোন রিসিভ করলো।ইনান ফোন রিসিভ করতেই ইনশিরা বলল”ইনান তাড়াতাড়ি বের হয়ে তিন রাস্তার মাথায় আসো।ইমিডিয়েট।”

ইনান আচ্ছা বলে রেখে দিলো।তারপর আয়াশ আর আদ্রিকেও জাগিয়ে তুলে সাথে নিয়ে বের হলো।

ইনশিরা ইনানের সাথে কথা বলে গেট ঠেলে বাড়িটায় ঢুকলো।পুরো অন্ধকারে ছেয়ে আছে।টর্চ জ্বালিয়ে ইনশিরা সামনে এগুতে থাকলো।মেইন দরজার সামনে গিয়ে দেখলো দরজা বন্ধ।ইনশিরা বাড়িটার পিছন দিকে গেলো।পিছনে একটা কাচের গ্লাস লাগানো।ভেতরের রুমে বোধহয় লাইট জ্বলছে।বাইরে অস্পষ্ট আলো আসছে।সাথে একটা মেয়ের চিৎকার।ভেতরে কি হচ্ছে কিছুই ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছে না।ভেতরে ঢোকার জন্য এই কাচের দরজাটা ভাঙতেই হবে।ইনশিরা আর কিছু না ভেবে পাশ থেকে একটা ইট নিয়ে দরজাটায় ঠাস করে মেরে দিলো।সাথে সাথেই কাচটা ভেঙে গেলো।ইনশিরা ভেতরে ঢুকতেই ওই দুই জানোয়ারকে দেখতে পেলো যারা সেদিন ওর ওপর আক্রমণ করেছিলো।দু’জন এদিকেই আসছে।ইনশিরা কি করবে ভেবে পেলো না।একজন কাছে এসে ওকে ধরতে নিলেই ও আচমকা পাশ থেকে একটা চেয়ার নিয়ে ওর মাথায় মেরে দিলো তারপর পাশেটাকেও একইভাবে মাথায় মারলো।খুব জোরে মারার ফলে দুজনই জ্ঞান হারালো।ইনশিরা ভেতরে যাওয়ার পর দেখলো একটা লোক একটা মেয়ের সাথে জোরাজুরি করছে।ইনশিরা একটা ফুল দানি দিয়ে লোকটার পিছনে মারে।লোকটা মেয়েটাকে ছেড়ে দিয়ে পিছনে ফিরে তাকাতেই।ইনশিরা চমকে অস্ফুটে স্বরে বলে উঠলো”মামা।”

লোকটাও ইনশিরাকে দেখে চমকালো।ইনশিরা স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে।মেয়েটা কাঁদছে আর ইনশিরার মামা কি করবে দিশা পাচ্ছে না।ইনশিরা ওর মামার কাছে এগিয়ে এসে বলল”মামা আপনি এগুলো..ছিঃ আমি এটা সবাইকে বলে দেবো।”

“তার সুযোগ তুই পাবি না।” এটা বলেই ইনশিরার মামা ওর গলা চেপে ধরলো।ইনশিরা ছাড়াতে পারছে না।ওর দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।হঠাৎ ওর মামা ছেড়ে দিলো ইনশিরা তাকিয়ে দেখলো ইনান আর আয়াশ ওর মামাকে ইচ্ছা মতো মারছে।আর আদ্রি ওর কাছ এসে বলল”ঠিকাছিস তুই?”

“হ্যাঁ আগে ওই মেয়েটার চল।” ইনশিরা নিজেকে সামলে বলল।

আদ্রি আর ইনশিরা মেয়েটার কাছ এসে ওকে শান্ত করলো।তবুও মেয়েটা কেঁদে যাচ্ছে।

ইনশিরা উঠে এসে ইনান আর আয়াশকে থামতে বলল।তারপর ও লোকটার চুল টেনে ধরে বলল”তুই কেনো এমন করলি?আমি তোর কি ক্ষতি করেছিলাম।ছোটোবেলায় কু মতলবে আমাকে টাচ করতি।আমি কিছু বলতে পারতাম না।মাকে বললে মা বলতো আমি মিথ্যে বলছি।ছোটবেলায় তো তোর শখ তুই পূরণ করতে পারিস নি তাই এখন করলি।তাহলে আজ আমার ইচ্ছাটাও আমি পূরণ করবো।এই বলে ইনশিরা আদ্রিকে বলল”দোস্ত এনেছিস?”

আদ্রি ইনশিরার হাতে ওর ইনজেকশনটা দিলো।ইনান আর আয়াশ ওকে চেপে ধরে রাখলো।আর ইনশিরা ওর রগে ফাকা ইনজেকশনটা পুশ করলো।তারপর বাইরের ঘরে এসে ওই দুটোকেও একই ভাবে মেরে মেয়েটাকে নিয়ে হোটেলে ফিরলো।ইনশিরা মেয়েটাকে ওর একটা থ্রি পিছ দিয়ে শাওয়ার নিতে পাঠালো।ও বেরিয়ে আসলে ইনশিরা, আদ্রি,ইনান,আয়াশ ওর সাথে কথা বলে জানতে পারলো মেয়েটা ইন্টারমিডিয়েটে পড়ে।বাড়ি এখান থেকে একটু দূর।

পরেরদিন সকালে ওরা মেয়েটাকে ওর বাড়ি পৌঁছে দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে চলে গেলো।কিন্তু গাড়িতে একটা জিনিস ইনান লক্ষ করলো ইনশিরা খুব চুপচাপ হয়ে আছে।ইনান কিছুই জিগ্যেস করলো না।ঢাকায় পৌছে যে যার যার বাসায় চলে গেলো।ইনশিরা বাসায় পৌঁছাতেই ওর মা কান্না করতে করতে বলল”জানিস তোর ছোট মামাকে পাওয়া যাচ্ছে না।”

ইনশিরার মধ্যে কোনো ভাবান্তর লক্ষ হলো না সে রুমে যেতে যেতে বলল”হয়তো কোথাও গেছে চিন্তা করো না পাওয়া যাবে।”বলেই ইনশিরা ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দিলো।তারপর শাওয়ার নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।বিকেলে ইনানকে কল দিলো।

“হ্যালো ইনান।আমার সাথে একটু দেখা করতে পারবে?”

“বাহ!আজকে সূর্য কোনদিক দিয়ে উঠলো?তুমি আমাকে দেখা করতে বলছো!আমি কি স্বপ্ন দেখতেছি নাকি?”

“ঢং কম করো।একটু আসো তো লেকের পাড়ে।”

“আচ্ছা আসছি।”

ইনশিরা প্রস্তুতি নিয়ে বের হলো।আজ সব ক্লিয়ার করে দেবে।ইনশিরা কোনো পিছুটান রাখতে চায় না।নিঃসন্দেহে ইনান ভালো ছেলে তবে ইনশিরা চায় না সে তার জীবনের সাথে জড়াক।তাই আজ সারাদিন ভেবে ইনশিরা ফাইনাল সিদ্ধান্ত নিয়েই নিলো।এছাড়া ওর হাতে কিছুই নেই।

ইনশিরা লেকের পাড়ে এসে দেখে ইনান আগেই হাজির ওকে দেখে হাত নেড়ে পাশে বসতে বলে।ইনশিরা গিয়ে পাশে বসে বলল”যাও ঝালমুড়ি কিনে নিয়ে আসো।”

“এখন?”

“হুম এখনই।কথা শুরু করার আগে খাওয়া দাওয়া করা উচিত।”

“ও আচ্ছা কি এমন কথা যে শুরু করার আগে খেতে হবে।”

“বলবো তো।আগে যাও নিয়ে আসো।”

ইনান যো হুকুম বলে চলে গেলো।ইনশিরা লেকের পানির দিকে একদৃষ্টে চেয়ে আছে।

চলবে….

(ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।আর গল্পটা বেশি বড় হবে না।)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে