LOVE part:11+12

0
2452

#LOVE❤
part:11+12
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)

নিজের মা যে এমন কথা বলবে ভাবতে পারিনি ।আমার বিদায় এর সময় বাবা আর আমার আপু নিশিতা অনেক কেদেছিল ।মার চোখে কোন পানি দেখিনি আমি।মা তো আরো কষ্ট পাচ্ছিল এটা ভেবে যে নিশিতা আপুর চেয়েও বড়লোক এর ঘরে আমার বিয়ে হচ্ছে

তারপর পৌছালাম আবেগ এর বাড়িতে।গাড়ি তে আমি আর আবেগ আর ড্রাইভার ছিল।বাকিরা অন্য গাড়ি তে।আমার কষ্ট হচ্ছিল নিজের আপনজনদের ছেড়ে দিতে

হঠাত্ আবেগ ওর রুমাল এগিয়ে দিল

-চোখের পানি মুছে নাও ।নাহলে সামনের বাকি জীবনটা ঝাপসা লাগবে
-আপনার কাছে টিস্যু হবে
-কেনো
-না মানে রুমাল টা নষ্ট করবো
-টিস্যু আছে।কিন্তু দেব না
-কেনো
-কারণ চোখের পানিটা আমার কাছে খুব দামি।আর কাজল সেটা মোছার দায়িত্ব ও আমার।এখানে ড্রাইভার আছে নাহলে দেখিয়ে দিতাম কাজল কেমন করে মুছতে হয়

সেদিন আবেগের দিকে তাকিয়ে খুব লজ্জা পেয়েছিলাম ।আবেগ এর কাছ থেকে রুমাল নেওয়া র পর ও বাইরের দিকে তাকিয়ে আমার এক হাত খুব শক্ত করে ধরে।আমি ছাড়া তে চেষ্টা করি কিন্তু পারিনি

আবেগ এর মাকে দেখে মনে হয় এ ছিল উনি বিয়ে টা যেন হজম করতে পারেনি।কিন্তু হাসি মুখে আমাকে বরন করেছেন

বাসর ঘরে বসে আছি রাত একটা বাজে আবেগ এর আসার নাম নেই।হঠাত্ আমার ফোনে মেসেজ আসে
–ঘর থেকে বেরিয়ে বা দিকে সিঁড়ি ।সবাই ঘুমিয়ে আছে কেউ দেখবে না।ছাদে এসো আমি অপেক্ষায় আছি।নিজের স্বামীকে আর অপেক্ষা তে রেখো না

বুঝতে বাকি ছিলো না যে মেসেজটা আবেগের ।খুব সাবধানে আমি ছাদে গিয়ে দাঁড়াই ।দেখি আবেগ বুকে হাতজোড়া বেধে পিছে ফিরে দাঁড়িয়ে আছে

-আপনি এখানে
-জানো আমি কানাডা পরতে গেছি।অনেক হাই লাইফ স্টাইল এ চলেছি।কিন্তু মনের মধ্যে সবসময় একটা আপন লোক খুঁজতাম ।আমার ফ্রেন্ড রাত যখন প্রেম নামক জিনিস নিয়ে মেতে থাকতো আমি তখন প্রতিনিয়ত আল্লাহ্ র কাছে প্রার্থনা করতাম আল্লাহ্ যেন আমাকে শুধু তার কাছেই ধরা দিয়ে দেয় যাকে আমার জন্য আল্লাহ্ পাঠিয়েছে।অবশেষে আজ সেই দিন।তোমাকে প্রথম দেখেই ভালোবেসে ফেলি।কারণ আমার মন বলছিল তুমিই সে যে আল্লাহ্ র পক্ষ থেকে আমার জন্য নির্ধারিত

এই বলে আবেগ আমার সামনে এসে একটা আংটি নিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে

-আমি তোমাকে আমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পাশে চাই রিদি।তুমি কি হবে আমার অনুভূতি আমার হৃদস্পন্দন

সেদিন খুশিতে আমার চোখে পানি চলে আসে।আমি মাথা নাড়িয়ে সায় দিলে আবেগ আমাকে আংটি পরিয়ে জরিয়ে ধরে।সেদিন নিজের লজ্জা ভেঙে আমিও আবেগকে জরিয়ে নেই।তারপর রাতের গভীরে পূর্ণতা পায় আমাদের ভালোবাসা।ডুবে যায় দুজন দুজনাতে

এইভাবে শুরু হয় আমাদের ভালোবাসা।আসতে আসতে আমিও আবেগ এর সাথে ফ্রি হয়ে যাই আপনি থেকে তুমিতে ।আমার শশুর আমাকে খুব ভালোবাসাতেন ।কিন্তু আবেগের মা তিনি ও অনেক ভালোবাসাতেন ।আমাকে মায়ের মতো হাতে ধরে সব শিখাতেন ।কিন্তু কে জানতো উনার এই ভালো মানুষি আমার জীবনের কাল

আমাদের বিয়ে র দুবছর পর আবেগকে বিজনেস এর কাজে থাইল্যান্ড যাওয়ার কথা থাকে

-কি হলো মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে আছো কেন
-আবেগ তুমি কবে আসবে।আমি তোমাকে ছেড়ে থাকবো কি করে একদিন

বলেই আমি আবেগকে জরিয়ে কেঁদে দেই

-আরে পাগলি কাদছো কেন।আমিতো চলে আসবো তাড়াতাড়ি
-তবুও
-এই রিদি শোন না
-হুম
-আমার না খুব ইচ্ছে হচ্ছে
-কি
-ছোট ছোট হাত পা ধরে খেলব।আমি অফিস থেকে আসলে আমার টাই ধরে টানবে।আমার চুল ধরে টানবে
-মানে
-মানে বোঝ না
-না
-আচ্ছা আমি বোঝাচ্ছি

বলেই আবেগ আমাকে কোলে নিয়ে বিছানায় চলে যায়

-আবেগ কি করছো
-মানে একটা বেবি।আমার তোমার ভালোবাসা।
-তুমি,,,
-এই রিদি দেবে বলো
-,,,,,
-কি হলো বলো
-হুম
-আচ্ছা শোন আমাদের বেবির নাম রাখবো #LOVE❤
-এটা কোন নাম হলো
-হু।কারণ ও আমাদের ভালোবাসা।বুঝলে।দেবে বলো আমাকে আমার #LOVE❤
-হুম

সেদিন শেষ বারের মতো আবেগ এর সাথে ডুবে যাই ভালোবাসাতে

তারপর ঘনিয়ে আসে সেই রাত।আমার জীবনটাকে পুরো তচনচ করে দেয়

চলবে—-

#LOVE❤

part:12
Writer:Suvhan Årag(ছদ্মনাম)

আবেগ পরের দিন সকালে চায়।কেটে যায় এক সপ্তাহ

এ কদিন ধরেই আমার শরীরটা কেমন লাগছিল।বারবার বমি মাথা ঘুরানো ।আমি ও তো বুঝতে পারিনি।আমার শাশুড়ি কে বলি।উনি আমাকে তিনটা প্রেগন্যান্সি কিট এনে দেন।আমার শশুর তখন চট্টগ্রাম ছিলেন ওনার এক বন্ধুর বাড়িতে ।কিট তিনটিতেই রেজাল্ট পজিটিভ

আমার আনন্দ এ চোখে পানি এসেছিল।কারণ আবেগ আর আমার ভালোবাসা আমার গর্ভ এ।আমার শাশুড়ি কে বললে তিনি যেন কিছুটা দমে গেছিলেন।উনি বলেন যে আবেগ দেশে ফিরলে আমার শশুর আর আবেগকে একসাথে খবর দিতে তাহলে সারপ্রাইজ পাবে।আমিও বোকার মতো ওনার কথা শুনলাম।আবেগের সাথে কথা বলতাম কিন্তু খবরটা দেই নি ।আমার মা বাবা কেও জানাইনি ।শুধু নিশিতা আপু জানতো।ওকে বলেছিলাম কাউকে না বলতে।কারণ আবেগ আসলে একটা পার্ট ইর আয়োজন করার কথা।সেদিন সবাইকে সব জানাব ভেবেছিলাম ।নিশিতা আপু বলেছিল যে আবেগ বাদে আর সবাই কে জানাতে।কিন্তু আমি শাশুড়ি র কথা শুনলাম ।তখন যদি নিশিতা আপুর কথা শুনতাম তাহলে আজ এতো কিছু হতো না

এর মধ্যে একদিন নোভা আসে বাড়িতে ।আবেগের মুখে ওর কথা শুনি।ও আবেগের ফুফাতো বোন।আবেগের থেকে দুবছর এর ছোট।কিন্তু বন্ধু র মতো সম্পর্ক ।নোভা এসে আমাকে দেখে কেমন চোখমুখ লাল করে আমার শাশুড়ি র কাছে যায় ।ওদের মধ্যে কি কথা হয় তা জানতাম না

ততক্ষণে নোভা আমার সাথে একটা কথাও বলেনি।আর আমার শাশুড়ি ও এ নিয়ে মাথা ঘামাননি।তবে যাওয়ার আগে নোভা আমাকে বলে

-ভালো করে খেয়ে পরে নাও।বলা তো যায় না কখন কি হয়ে যায় কুয়াশার মতো সব ঝাপসা হয়ে যায়

বলেই নোভা চলে যায় ।আমি সেদিন ওর কথার অর্থ সেদিন বুঝিনি।আজ বুঝি

তার পরের দিন আমার শাশুড়ি খুশিতে লাফাতে লাফাতে আমার কাছে আসে

-বৌমা শোন
-হ্যাঁ মা
-শোন আজ রাতে আবেগ ফিরছে।ও অলরেডি এয়ারপোর্ট এ
-কিন্তু আমাকে যে বললো,,,
-হুম।ও নাকি চায় তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে।আমাকে বলতে নিষেধ করেছে।কিন্তু আমি তো জানি তুমি ওকে তার থেকেও বড় সারপ্রাইজ দিতে চাও।তাই তোমাকে বললাম ।শোন আজ সন্ধ্যা তে আমি ও চট্টগ্রাম যাব তোমার শশুর মশাই যেতে বললেন
-কিন্তু আমি
-আরে ভালো হলো।তুমি রাতে তৈরী থেকো।আরে এমন বয়স আমরাও পার করেছি।আর পুরো বাড়িতে তো সিসি টিভি আছে।আবেগ চলে আসবে

সেদিন শাশুড়ি মা সত্যি কথা বলেছিলেন ।কিন্তু মিথ্যা ছিল উনার চট্টগ্রাম যাওয়া।কারণ ঐদিন আবেগ এর বাবা চট্টগ্রাম থেকে ফিরবেন আর শাশুড়ি মা তাকেই আনতে যাই।সব ছিল প্ল্যান কিন্তু আমি কিছু বুঝতে পারিনি

সন্ধ্যা তে শাশুড়ি যাওয়ার পর আমি আবেগের প্রিয় মেরুন কালারের একটা শাড়ি পরে খুব সুন্দর করে সাজি ।আবেগের মনের মতো করে।পুরো ঘর নিজে সাজাই।আর দরজার ছিটকিনি খোলা রাখি যাতে আবেগ এসে সরাসরি রুমে আসে।কারণ আমি জানতাম আবেগ ছাড়া কেউ আসবে না ।আর ড্রয়িং রুমে একটা বড় চিরকুট এ লিখি– অপেক্ষায় আছি উপরে এসো

আমি রুম অন্ধকার করে বসে থাকি।হঠাত্ দরজা খোলার আওয়াজ পাই।আমি মনে করি যে আবেগ এসেছে হয়তো।আমি উঠে দাঁড়িয়ে থাকি ।কিন্তু পেছন ঘুরি না।আর ঘুরলে ও কিছু দেখতাম না।কারণ রুমে র লাইট কেউ এসে বন্ধ করে দিয়ে ছে।আমি ভাবি যে আবেগ করেছে।

হঠাত্ কারোর পায়ের শব্দ আসতে আসতে আমার কাছে আসে সে এসে আমার পিঠ ঘেষে দাঁড়ায় ।আমি মনে করি আবেগ

হঠাত্ ই সে আমার উল্টা দিক থেকেই শাড়ির আঁচলের পিন খুলে আঁচল ফেলে আমাকে ঘুরিয়ে জরিয়ে ধরে ।আমি আবেগ মনে করে তাকে জরিয়ে ধরি।কিন্তু পরে মনে পরে আবেগ আসলে সবসময় আমাকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে আর একাজ আবেগ করবে না ।যখন ই লোকটাকে সরাতে যাই তখন কেউ লাইট অন করে লোকটিও আমাকে ছেড়ে দেয়।আমি তাড়াতাড়ি আঁচল ঠিক করে তাকিয়ে দেখি আশফি ভাই।আবেগের বন্ধ উ।আর আবেগ দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে।পেছনে আমার শাশুড়ি তার পেছন থেকে শশুর এগিয়ে আসছে

আশফি কে দেখে আমি পুরো অবাক হয়ে যাই

-আবেগ তুমি ওখানে আর আশফি
-কেনো ভাবি আবেগ না থাকলে তো আমাকে ডাকো।এখন কেন না জানার ভান করছো
-আবেগ আমি,,,,,,
-ব্যস আর কিছু দেখার নেই আমার
-আবেগ শোন আমার কথা

আমার শাশুড়ি বলতে শুরু করেন

-ছিহহ ।আবেগের বাবা এই মেয়ে কে তুমি বৌ করে এনেছো ।ছিহহহ
-আমি ওকে কতো ভালো ভাবতাম নিজের মেয়ে র মতো দেখেছি।আর তুমি
-বাবা আমি,,,
-চুপ করো।বাজে মেয়ে এই মুহূর্তে তুমি আমার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাও

আমি আবেগের কাছে যাই

-আবেগ আমার কথাটা শুনো।তুমি অন্তত আমাকে,,,,

আবেগ আমাকে চড় মারে

-আবেগগগ

চলবে——

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে