Khatarnak Isq part-07

0
1902

#Khatarnak_Isq.[Impossible Love]
#Sumaiya_Moni.
#Part_07.
_______________________

ভ্যাম্পায়ার কিংডম……..

এলেন রাজ কোষাগার থেকে দ্রুত গতিতে ভেতরে যাওয়ার সময় সিংহাসনে বসা এবিল এলেনকে ডাক দেয়।

-“আরলেন,কি হয়েছে? তুমি এত রেগে আছো কেন?”

এলেন থেমে গিয়ে জোরে চিল্লিয়ে বলে,
-“ড্যাড,তুমি বলা শর্তেও স্যাম একটি মেয়ের ব্লাড খেতে চেয়েছিল। কিন্তু রক্ত পান করার আগেই শাহজাদী কায়রা চলে আসে। স্যামকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি গিয়ে বাঁধা দেই। শাহজাদী চলে যায়।”

এটুকু বলে এলেন থেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এবিল দাঁড়িয়ে গিয়ে হুংকার দিয়ে বলে,
-“এত বড় সাহস স্যামের! ফের আমার নির্দেশ ভঙ্গ করেছে। ওর মৃত্যু নিশ্চিত! স্যামকে ধরে নিয়ে এসো।” কথাটা শুনে কিছু ভ্যাম্পায়ার রাজ্য থেকে বের হয়ে যায়। এলেন রাগে হনহন করে কক্ষে চলে আসে। কিং এবিল নিজেকে সান্ত করে সিংহাসনে বসে।

এলেন কক্ষে এসে সোফায় গা এলিয়ে দেয়। চোখটা বন্ধ করতেই হঠাৎ হাতে কারো হাতের স্পর্শ পায়। চোখ মেলে তাকায়। লিসারকে ওর পাশে দেখতে পায়। হাত ওর হাতের উপর রাখা। এলেন ভীষন রেগে যায়। ওঠে দাঁড়িয়ে চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে বলে,
-“বিনা পারমিশনে আমার রুমে কেন এসেছো? বের হয়ে যাও রুম থেকে।”

লিসার আর দেরি করে না। এলেনের ধমক শুনে দ্রুত রুম ত্যাগ করে। এলেন আগের ন্যায় সোফায় গা এলিয়ে দেয়। লিসার এলেনকে লাইক করে। কিন্তু এলেন লিসারকে একদমই পছন্দ করে না।

এদিকে স্যাম ক্ষত-বিক্ষত শরীর নিয়ে জঙ্গলের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। রাত তখন অনেক গভীর। নিজের ঘাঁ ঠিক করতে পারছে না। ঠিক করতে হলে রক্তের প্রয়োজন। কিন্তু এখন রক্ত পাওয়া মুশকিল। দু,তিন কদম পা এগোতেই একটি কার দেখতে পায়। স্যাম ইচ্ছে করে রাস্তার পাশে শুয়ে পড়ে। এবং হেল্প বলে চিল্লাতে থাকে। গাড়ির ব্যাক্তি স্যামকে মানুষ মনে করে জখম অবস্থায় দেখে গাড়ি থামিয়ে দেয়। গাড়ি চালকটি ছিল একজন অর্ধবয়স্ক লোক। লোকটি দ্রুত গাড়ি থেকে বের হয়ে স্যামের কাছে আসে। স্যামকে ধরে কিভাবে তাঁর এমন অবস্থা হলো তা জিজ্ঞেস করছে। কিন্তু স্যামের সেদিকে লক্ষ ছিল না। লোকটির হাত ধরে টেনে গলায় কামড় বসিয়ে দেয়। লোকটি আর্তচিৎকার ভেসে যায় দূর বহু দূরে।
.
.
সকালে…

আলফি নাস্তা সেরে কলেজের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। কলেজে পৌঁছে ক্লাস রুমে আসতেই এনা দের সাথে দেখা হয়ে যায়। ওদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলার পর ক্লাসে টিচার আসে। সবাই ক্লাসে মন দেয়। কিন্তু হঠাৎ আলফির এলেনের কথা মনে পড়ে। আজকে কলেজে আসার সময় এলেনকে দেখেনি। এখন আশেপাশে আছে বলে মনে হচ্ছে না আলফির। এলেনের কথা মাথা থেকে ঝেরে ফেলতে চায়। কিন্তু যখনি কালকের কিসের কথা মনে পড়ে তখনি আলফি আনমনা হয়ে যায়। আলফি এগুলা নিয়ে মাথা খামাতে চায় না। ভ্যাম্পায়ার আর পরী! কখনো সম্ভব না। আলফি সব চিন্তাভাবনা পাশে রেখে ক্লাসে মন দেয়। কিছুক্ষণ পর ক্লাস শেষ হয়ে যায়। একে একে চারটি ক্লাস শেষ হয়। সবাই ক্লাস রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। আলফি একটি ম্যাথ নিয়ে বসে আছে। সেটা শেষ করে বের হবে শুনে এনা,ম্যারি,জন,লিনা,জি-তাও ক্লাস রুম থেকে বের হয়ে যায়।পাঁচ মিনিট পর আলফির ম্যাথ শেষ হয়ে যায়। ব্যাগে খাতা,কলম ঢুকিয়ে বের হতে নিলেই পিছন থেকে ওড়না টান পড়ে। ঘুরে তাকাতে গেলেই ঝড়ের বেগে দেয়ালের সাথে হালকা মিশিয়ে ধরে এলেন। আলফি আগে থেকেই যানত এটা এলেন ছাড়া আর কেউ না। তাই ঘাবড়ানোর কোনো কারণ ছিল না। এলেন আলফির দিকে মৃদু হেসে তাকায়।আলফির কেন জানি মনটা হালকা লাগছে। রাগ হীন নজরে এলেনের দিকে তাকায়।

এলেন আলফির নরম ভঙ্গিতে তাকানো দেখে বলে,
-“মনে হচ্ছে আমার জন্য এতক্ষণ ওয়েট করছিলে?”

-“হোয়াই?”

-“সেটা তো তুমি জানো?”

-“নো!”

-“ইয়েস!”

-“নো!”

-“ইয়েস!”

-“ন….!”

-“ওয়েট,ওয়েট…। প্রমান করার জন্য একটি গেম খেলি চলো।”

আলফি এলেনকে পাশে সরিয়ে বলে,
-“কোনো গেম গেলব না। আপনি আমার কাছ থেকে দূরে থাকুন প্লিজ!”

চলে যেতে নিলে এলেন আলফির সামনে এসে বলে,
-“হোয়াই?”

-“যথেষ্ট কারণ আছে। তাঁর মধ্যে একটি কারণ আপনি ভ্যাম্পায়ার। ”

-“তাতে কি?”

-“এটাই বড় কারণ।”

-“মোটেও না। অভয় রাজ যদি ভ্যাম্পায়ার হয়ে একটি মানুষের মেয়েকে বিয়ে করতে পারে তাহলে আমি কেন পারব না।”

-“আমি প্রিয়া নই! আর আপনিও…..।”

-“অভয় নই! তাই তো?”

-“জী।”

-“সমস্যা কী? ওদের কাহিনী আলাদা হবে। আমাদেরটাও আলাদা হবে।”

-“আমাদেরটা ওদের কাহিনী থেকে আরো বেশি ভয়ংকর হবে। যাকে এক কথায় বলা যায়……..।”

-“Khatarnak_Isq.” ভ্রু উঁচু করে বলে এলেন।

নামটা শুনে আলফি এলেনের দিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকায়। আসলেই ওদের ভালোবাসাটা শুধু অসম্ভব নয়। পুরোই খাতারনাক হবে। আলফি আর কথা না বাড়িয়ে চলে যেতে নেয়। কিন্তু এলেনের কথা শুনে থেমে যায়।

-“তুমি মানুষ নও আলফি। এটা আমার বিশ্বাস। তবে,তুমি যাই হও না কেন জাস্ট আমার।”

আলফি ঝাঁড়ি দিয়ে বলে,
-“নট পসিবল! দূরে থাকুন আমার কাছ থেকে।” আর দেরি না করে ক্লাস রুম থেকে দ্রুত বের হয়ে যায় আলফি।

এলেন আলফির কথা শুনে বাঁকা হাসে। আলফি দ্রুত গাড়িতে বসে বাসায় চলে আসে। এনাদের সাথে দেখা করে না। তোয়ালে নিয়ে ওয়াশরুমে আসে। শাওয়ার শেষ করার পর হঠাৎ পিঠে ব্যাথা অনুভব করে। যেখান থেকে পাখা বের হয় ঠিক সেই স্থানে ব্যাথা অনুভব করছে। আলফি জামা পড়ে বের হয়ে আসে। মাথার ভেজা চুল গুলো মুছতে মুছতে নিচে আসে। রান্না ঘর থেকে কিছু একটা পোঁড়া পোঁড়া গন্ধ আসছে। কী সেটা দেখার জন্য আলফি কিচেনে আসে।এসে দেখে কলা পাতায় মাছ ভাজছে ইয়ান। এখন কিচেন থেকে গন্ধ নয়,সুন্দর একটা স্মেইল আসছে। ইয়ান আলফির উপস্থিতি টের পেয়ে পিছনে তাকিয়ে বলে,
-“শাহজাদী আপনি এখানে?”

-“আচ্ছা আপনার সমস্যা কী?”

-“কোনো সমস্যা নেই তো? আমি একদম ঠিকঠাক আছি।”

-“ঠিক নেই! আপনি আমাকে শাহজাদী বলে ডাকবেন না। নাম ধরে ডাকবেন?”

-“যদি আপনি পারমিশন দেন তাহলে,কায়রা বলে ডাকতে পারি?”

-“অবশ্যই! ”

-“ঠিক আছে। সবার সামনে আলফি। আর আড়ালে কায়রা বলে ডাকব।”

-“আমার কোনো সমস্যা নেই।”

-“আপনি অনেক ভালো কায়রা।”

-“হাহ! হলো না।”

-“তুমি অনেক ভালো কায়রা।”

আলফি হেসে দিয়ে বলে,
-“এবার ঠিক আছে।”

ইয়ানও হেসে দেয়। আলফি ইয়ানের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে মনে মনে বলতে থাকে,”এলেনের দিকে তাকালে যেই ফিল আমি পাই। সেটা ইয়ানের দিকে তাকালে কেন পাই না? এটার মূল কারন কী?”

-“কী ভাবছো কায়রা?”

-“তেমন কিছু না। ভাবছি মাছ ভাজাটা খুব টেস্ট হবে।”

-“খেয়ে দেখতে পারো।”

-“অবশ্যই! দেখবো।”

আলফি ইয়ানের সাথে অনেকক্ষণ রান্নাঘরে সময় কাঁটায়। তারপর এক সাথে খাবার খায়। এই কয়েক ঘন্টায় ইয়ানের সাথে অনেকটা ফ্রী হয়ে গেছে আলফি। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আলফি ইয়ানের সাথে বসে কথা বলছিল। এদিকে এলেন আলফির ফোনে কল দিয়েই যাচ্ছে বার বার। কিন্তু আলফি ফোন ধরছে না। ধরবেই বা কী করে। ফোন ছিল রুমে। আর আলফি ড্রইংরুমে বসে ইয়ানের সাথে কথা বলছিল।
এলেনের রাগ হচ্ছে। এত বার কল দেওয়ার পরও ফোন ধরছে না। এলেন আলফিদের বাসায় আসতে নিলে এরোন পথ আটকে দাঁড়ায়। এলেনকে বলতে থাকে,
-“দোস্ত কিছু একটা কর! লিনা আমাকে দেখলেই খালি হাসে।”

-“কেন?” টেরা চোখে তাকিয়ে বলে এলেন।

-“সেটাই তো জানি না।”

-“কেন রে গাদা! তুই লিনার মাইন্ড পড়তে পারিস না?”

-“ধুর! আমার সরম করে।” লজ্জা ভঙ্গিতে বলে এরোন।

এরোনের লজ্জা ভঙ্গি দেখে খিলখিল করে হাসতে শুরু করে এলেন। এরোন এলেনের দিকে সরু চোখে তাকায়।

-“তুই যে কেন মানুষ হয়ে পয়দা হলি না।” হেসে হেসে বলে এলেন।

-“ভুলে ভ্যাম্পায়ার হয়ে গেছি!এটাই বলতে চাস তাই তো।” কিছুটা রেগে বলে এরোন।

-“ইয়াপ।” হেসে হেসে।

-“দোস্ত থাম! একটু আইডিয়া দে।”

-“ওকে থামলাম। আইডিয়া নিবি?”

এরোন খুশি মুডে বলে,
-“হুম,হুম।”

এলেন বড় একটা নিঃশ্বাস নিয়ে দ্রুত বলে,
-“লে,আইডিয়া।”

নিমিষেই এরোনের মুখ কালো হয়ে যায়। এটা দেখে এলেন আরো জোরে জোরে হাসতে শুরু করে।
এরোন রাগ নিয়ে বলে,
-“তোর আইডিয়ার দরকার নেই।” বলে চলে যেতে নিলে এলেন ওর কাঁধে হাত রেখে কথা বলতে বলতে বেরিয়ে আসে কক্ষ থেকে। তখনি একজন ভ্যাম্পায়ার এসে এলেন ও এরোনকে বলে যায় কিং তাঁদের ডাকছে। এলেন,এরোন ভ্যাম্পায়ার টির কথা শুনে তাড়াতাড়ি কিংয়ের কক্ষে আসে।
এবিল তাঁর কক্ষে চিন্তিত হয়ে পায়চারী করছিলেন।

-“কী হয়েছে ড্যাড?”

এবিল বলে,
-“স্যাম কাল রাত থেকে অনেক মানুষের রক্ত পান করেছে। এভাবে যদি মানুষের রক্ত পান করতে থাকে তাহলে স্যাম অনেক শক্তিশালী হয়ে যাবে। আর এই খবর যদি শাহাজাদী জানতে পারে। কী হবে বুঝতে পারছো তোমরা?”

-“এরোন চল,স্যামকে খুঁজে বের করতে হবে।”

-“হুম,যত তাড়াতাড়ি সম্ভব!”

-“ড্যাড তুমি টেনশন কোরো না।”

-“স্যামকে দেখা মাত্রই মেরে ফেলবে।” এবিল বলে।

-“হুম।”

এলেন,এরোন চলে আসে রাজ্যের বাহিরে। সারা এড়িয়া জুড়ে খুঁজতে থাকে। সাথে কিছু ভ্যাম্পায়ারদেরও লাগিয়ে দেয় স্যামকে খোঁজার জন্য।
.
.
.
.
.
.
.
Continue To……..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে