Gangstar In Love Part-36+37+38

0
2819

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#part__ 36

🧡🍂..
..
..
..
..
..

আব্রাহাম আইরাতের হাত পিছনে মুড়িয়ে নিজের সাথে চেপে ধরে। আইরাতের চোখে চোখ রেখে চোয়াল শক্ত করে বলে..

আব্রাহাম;; “ভালোবাসি” কথা কি কানে যায় না। ভালোবাসাতে সব থাকে অধিকার, রাগ, অভিমান, মায়া সব। কিন্তু এই সবকিছু পারি দিয়ে সেই ভালোবাসার মানুষ টার কাছেই থেকে যেতে হয়। হ্যাঁ, মানছি তোমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তোমাকে তুলে এনে নিজের কাছে রেখে দিয়েছি, জোর করে বিয়ে করেছি ইভেন তোমার বাবা মার কাছ থেকেও দূরে রেখেছি। আমি ভুল করেছি, তোমার ওপর অন্যায় করেছি। কিন্তু যখন কেউ ভুল কিছু করে তখন অন্যজনের এটা দায়িত্ব থাকে যে তার ভুল ঠিক করে তাকে শুদরিয়ে দেওয়া। কিন্তু না তুমি কি করেছ বলো ক্ষণে ক্ষণে সবসময় আমাকে শুধু ভুলই বুঝে এসেছো। কখনোই আমার ভিতর টা ঝুকে দেখতে চাও নি। আমার ভিতরে কি চলছে তা জানতে চাও নি। কখনো আমাকে ভালো পর্যন্ত বাসো নি। কিন্তু তবুও, তবুও আমি তোমাকে সেই পাগলের মতো করে ভালোবেসেই গেছি। (রক্তচক্ষু নিয়ে)

আজ আব্রাহামের কথায় বেশ কষ্ট হচ্ছে আইরাতের। আইরাতের আর সাধ্যি নেই আব্রাহামের সেই চোখের সাথে চোখ মেলানোর তাই সে তার চোখ নিচে নামিয়ে ফেললো।

আব্রাহাম;; আর কতো আর কতো শত বার বলে বুঝাবো যে খুন করিনি আমি চাচ্চু-চাচিমা কে। মারি নি আমি তাদের। তুমি কি ভেবেছ তারা শুধুই তোমার বাবা মা হয় আমার কিছুই হয় না। তারা আমার চাচ্চু-চাচিমা এবং আমার শশুড়-শাশুড়ি। হ্যাঁ, এমন একসময় গিয়েছে যখন আমি তোমার বাবা কে প্রাণে মারতে চেয়েছিলাম। কেন চেয়েছিলাম তা তো বেশ ভালো করেই জানা আছে তোমার। কারণ তোমার বাবা লোভে পরে আমার পুরো পরিবার কে চোখের পলকে তছনছ করে দিয়েছিল। আমার ওপর তখন কি যাচ্ছিলো তা কি ভাবতে পারো তুমি। একটাবার আমার জায়গায় তুমি নিজেকে কল্পনা করে দেখো তো। কিন্তু তোমাকে পাওয়ার পর আমি কেমন যেন পালটে গেলাম। জীবনের মানে বুঝতে শিখেছিলাম আমি। যেই আমি কিনা ঘৃণা করতাম ভালোবাসা নামক শব্দ থেকে সেই ভালোবাসাতেই আমি পরে গেলাম শুধু মাত্র তোমাকে পেয়ে। আর তুমি এই আমাকেই ভুল বুঝে বারবার আমার থেকে দূরে সরে যাও। এখনো আমারকে ভুল বুঝেই যাচ্ছো। আমার থেকে পালিয়ে বেড়াও। কেন আইরাত? (চোখের কোনায় পানি জমে গেছে)

আব্রাহাম আইরাতের মুখের কাছে মুখ এনে কথা গুলো বলছিলো। আব্রাহামের প্রতিটি নিঃশ্বাস আইরাতের ওপর পরছে। আইরাত কিছু বলছে না মুখ ঘুড়িয়ে রেখেছে। আইরাতের এমন নিশ্চুপ থাকাটা আব্রাহাম যেন মেনে নিতে পারছে না। তাই আব্রাহাম আইরাতের বাহু ধরে চেপে ঝাকিয়ে বলল…

আব্রাহাম;; Speak up damn it!! (কিছুটা রেগে)

আইরাত মনে মনে;; কি করে বলি, কি করে বলি যে আমি আপনাকে কতোটুকু ভালোবাসি, কিন্তু আপনি নিজেই সেই ভালোবাসাকে ঘৃণায় পরিনত করিয়ে দিতে আমাকে বাধ্য করেছেন।

আইরাত;; প্লিপ্লিজ ছাছাড়ুন আআমাককে…

আব্রাহাম;; তা আর হচ্ছে না বেবি। ঠিক ১ বছর ৯ মাস ২২দিন পর তোমাকে খুঁজে পেয়েছি। এতো তাড়াতাড়ি করে কিভাবে ছেড়ে দিই বলো।

আইরাত;; (আইরাত কিছু না বলে অবাক চোখে আব্রাহামের দিকে তাকায়,, এই লোকটা সবকিছু খুটে খুটে হিসাব করে রেখেছে)

আব্রাহাম;; ওমন করে তাকিয়ে লাভ নেই, এখন যদি দুনিয়া এদিক থেকে ওদিক ও হয়ে যায় তবুও আমি আব্রাহাম তোমাকে আর ছাড়ছি না। খুব না বলতে যে আমি একটা সাইকো, পাগল, ডেভিল। তো মিসেস. আইরাত আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী তুমি এবার দেখবে যে এই সাইকো ঠিক কি কি করে। আর পাগলের পাগলামি তো সবেমাত্র শুরু জান। (এক চোখ মেরে)

আইরাত;; আপনি আসলেই একটা অসভ্য লোক।

এই বলে আইরাত এক ঝটকায় আব্রাহামের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেই। রাগি চোখে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আবার ঘুড়ে ওপরে বাসায় চলে যায়। আব্রাহামের আইরাতের এই লুক গুলো অনেক বেশি মিস করছিল। এই যে কথায় কথায় রেগে যাওয়া, চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে থাকা, ঝগড়া করা, তার বাচ্চামো স্বভাবগুলো খুব বেশিই মিস করছিলো সে। এখন আইরাতকে তার জীবনে ফিরে পেয়ে সে যেন তার হাতে আকাশের সেই চাঁদ পেয়ে গেছে। আইরাত রেগে মেগে ওপরে চলে গেতেই আব্রাহাম তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে দেয়। তারপর কাকে যেন ফোন করে…

আব্রাহাম;; Hlw..

___________;; জ্বি স্যার

আব্রাহাম;; এই ফ্লাট এর কোণায় কোণায় সিকিউরিটি লাগিয়ে দাও। আইরাতের ওপর থেকে বিপদ এখনো চিরতরে যায় নি। আর আমার আইরাতের দিকে কেউ তার চোখ তুলেও তাকায় তা আমি কোন ভাবেই মেনে নিবো না। এক একটাকে জেন্ত মেরে ফেলবো।

__________;; স্যার, আপনি একদম চিন্তা করবেন না। আমি এখনই তাদের বলে ফ্লাট এর চারপাশে লাগিয়ে দিচ্ছি।

আব্রাহাম ফোনে কথা বলে কেটে দেয়। আব্রাহাম আইরাতের আশেপাশে সিকিউরিটি গার্ড লাগিয়ে দিতে বলে তার কারণ হচ্ছে দুলাল। দুলাল এখনো আইরাতের পিছু ছাড়েনি। আশরাফুল আহমেদ এবং আতিয়া আহমেদ কে মেরে ফেলার পর দুলাল পাগলের মতো করে আইরাতের পিছু লেগে গিয়েছিলো। জানে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো আইরাতকে। এতো দিন সে অনেক চেষ্টাও করেছে আইরাতের কাছে পৌঁছানোর জন্য। কিন্তু ভাগ্য এবং আল্লাহ তায়ালা দুটোই আইরাতের ওপর সহায় ছিলো যার জন্য সে পারে নি। কিন্তু যখন সে শুনে যে আইরাত মারা গিয়েছে তখন সে খোঁজ করা ছেড়ে দিয়ে এক শয়তানি হাসি হাসে কারণ সে যা চেয়েছিলো তা তো হয়েই গিয়েছে। আর আইরাতের কাল্পনিক মৃতুতে আব্রাহাম পুরো ভেংে পরেছিলো তাই সে আর বাকি কোন কিছুতে খেয়ালই করেনি। কিন্তু আব্রাহামের একজন যাসুস যখন আব্রাহামের কে খবর দেয় যে দুলাল আইরাতকে মেরে ফেলতে চেয়েছে এবং হন্ন হয়ে তার খোজও করেছে তখন আব্রাহামের মাথায় আগুন ধরে যায়। তাই তার কাছে এখন আইরাতের সুরক্ষাই প্রথমে।



দুলাল আরামে বসে বসে মদ পান করছিলো। তখন তার এক গুপ্তচর হুমড়ি খেয়ে এলো তার সামনে।

তমাল;; বস, বস ববস। (হাপাতে হাপাতে)

দুলাল;; হয়েছি কি, দৌড়িয়ে আসছিস কেন। কোন
পাগলা কুকুর কি পিছে পরেছে নাকি?

তমাল;; বস, তার থেকেও বেশি কিছু।

দুলাল;; খুলে বল..

তমাল;; বস, আমরা এতোদিন এক ভুল ধারণার ওপর ভরসা করে চলছিলাম।

দুলাল;; মানে? (কপাল কুচকে)

তমাল;; বস, আশরাফুল আহমেদ চৌধুরীর মেয়ে আইরাত বেচে আছে।

ব্যাস এইটুকুই যথেষ্ট ছিলো দুলালের মাথায় বাজ পরার জন্য। দুলাল সাথে সাথে দাড়িয়ে পড়লো। চোখ গুলো তার বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম। দুলাল রাগে গর্জে ওঠে বলল…

দুলাল;; কিহহহ,, কি বলছিস তুই (হাত থাকা মদের বোতল জোড়ে ঢিল দিয়ে)। মাথা ঠিক আছে তোর?

তমাল;; বস মাথা আমার একদমই ঠিক আছে আর আমি যা বলছি তা একদম সত্য।

দুলাল;; কিভাবে সম্ভব এটা, একটা মরা মানুষ আবার জেন্ত হয়ে কি করে ফিরে আসতে পারে।

তমাল;; বস মরেছিলোই কবে, আইরাত তো মরেই নি। এক্সিডেন্ট হওয়ার পর তাকে দুটো মেয়ে বাচিঁয়ে নেয়। আর বস আমাদের এক লোক আইরাতকে বাইরে দেখেছেও।

দুলাল;; (দুলাল ছুটে গিয়ে তমালের গালে এক কোষে চড় বসিয়ে দিলো) কতো বার বলেছি না যে আইরাতের নামও মুখে আনবি না। মেডাম বলে ডাকবি তাকে। ওর নাম মুখে আনার যোগ্যতা আছে তোর হ্যাঁ। নিজের লিমিটে থাক।

তমাল;; সরি বস, মাফ করে দিন (মাথা নিচু করে গালে হাত দিয়ে)

দুলাল;; আইরাত তাহলে বেচে আছে। আমি এতোদিন ওকে না পেয়ে শুধু খুঁজেই গিয়েছি। তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছি কারণ, কারণ ও আমার হয়নি। কিন্তু এখন, এখন আমি ওকে আবার খুঁজবো শুধুই ওকে পাওয়ার জন্য। ও আমার হবে না তো কারোরই হবে না। ও যদি বেচে থাকে তাহলে ওকে আমার কেবল আমারই হতে হবে। সেই প্রথম থেকেই আইরাতের ওপর আমার নজর ছিলো। ও বেচে আছে এখন ও আমার হবে।

এই বলেই দুলাল শয়তানি অট্টহাসি তে ফেটে পরে।



আইরাত রেগে বোম হয়ে বাসার ভিতরে চলে যায়। গিয়েই ব্যাগটা কাধের ওপর থেকে নামিয়ে বিছানাতে ছুড়ে মারে। নিপা ফোনে গেমস্ খেলছিলো আর রাত্রি টিভি দেখছিলো, আইরাতকে এভাবে রেগে তেড়ে আসতে দেখে তারা বেশ অবাক। আইরাতকে আজ পর্যন্ত কেউ এভাবে রাগ করতে দেখেনি। নিপা ফোন থেকে তার নজর সরিয়ে আহাম্মকের মতো আইরাতের দিকে তাকিয়ে থাকে। আইরাত সোফার ওপর দুহাত ভাজ করে ঠোঁট উল্টিয়ে বসে থাকে। রাত্রি আড়চোখে আইরাতকে দেখে যাচ্ছে। রাত্রি ভেবেছে যে একা একা বাইরে যাওয়াতে এতো রেগে আছে। তাই রাত্রি কিছুটা ভয়ে ভয়ে আইরাতকে বলে ওঠে।

রাত্রি;; কি হয়েছে আমার বেবিজানের?! (আইরাতের মুখের সামনে গিয়ে বেবি ফেইস বানিয়ে)

আইরাত এখনো কিছু না বলে সেই একই ভাবে বসে রয়েছে।

নিপা;; আসলে আমি না, আমি আর কি এইতো যাচ্ছিলামই নিচে। শুনলাম লিফট নাকি কাজ করছে না। তাই ভাবলাম যে জিনিসপত্র নিয়ে সিড়ি দিয়ে একা একা আসতে গেলে তো তোর সমস্যা হবে তাই আমি যাই ওই আরকি একটু হেল্প করতে। (কাচুমাচু করে)

আইরাত;; নিকুচি করেছে তোর হেল্পের। লাগবে না আমার কাউকে। তোরাই যা, তোরাই খা। (রেগে)

রাত্রি;; আচ্ছা বেবিজান হয়েছে টা কি বলবি তো। এভাবে রেগে এটম বোম হয়ে আছিস কেন!

আইরাত;; আব্রা…….. (আইরাত কিছুটা একটা বলতে যেয়েও বলে না, কেননা রাত্রি & নিপা কেউই জানে না যে আব্রাহামের সাথে আইরাতের কি সম্পর্ক। তারা ভেবেছে যে আইরাতের কেউ নেই। আর না ই আইরাত এই বেপারে তাদের কখনো কিছু বলেছে)

নিপা;; কি রে বল…

আইরাত;; আব.. মানে ওইতো লিফট, লিফট আরকি তাতেই মেজাজ পুরো খারাপ হয়ে গেছে। না তুই বল এই পাচঁ তালা থেকে সিড়ি বেয়ে নিচে নামা কি সম্ভব। এখন নয় আমি গেলাম কিন্তু আপনারা দুই মহারাণি যে আমাকে বাজারের এতো বড়ো একটা লিস্ট ধরিয়ে দিয়েছেন সেই জিনিসগুলো নিয়ে আমি আবার উপরে কি করে উঠবো শুনি।

রাত্রি;; যা ভেবেছিলাম যে এই লিফট নিয়েই রেগে আছে। দেখলি নিপু! (নিপার দিকে তাকিয়ে)

নিপা;; আচ্ছা হয়েছে চল এখন তিনজন একসাথেই যাই তাহলে সুবিধে হবে চল।

রাত্রি;; হ্যাঁ চল।

আইরাত;; ননা আরে দাঁড়া। (নিপার হাত ধরে আটকিয়ে)

নিপা;; আবার কি হলো!

আইরাত মনে মনে;; আব্রাহাম মনে হয় এখনো নিচে ঠাই দাঁড়িয়ে আছে। যে পরিমান ঘাড় বাকা লোক তিনি। এতো সহজে যাবে না।

আইরাত;; আসলে নিপু বলছিলাম কি যে একটু পর যাই। এখনতো লিফট বন্ধ, আর আমি দেখে এলাম যে কাজ চলছে তো খানিক বাদেই যাই। সিড়ি বেয়ে ওঠা-নামা চারটে খানিক কথা না কিন্তু।

নিপা;; কিন্তু দারোয়ান মামা না বললো যে লিফটের কাজ দুইদিন ভর চলবে।

আইরাত;; আরে না না আমি দেখে এলাম কাজ চলছে।

রাত্রি;; এটাও ঠিক আচ্ছা থাক তাহলে একটু পরেই যাই।

আইরাত যেন হাফ ছেড়ে বাচঁলো। এই সময় টুকু তে আব্রাহামও নিচ থেকে সরে পরবে আর লিফটও ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু আইরাতের মনে শান্তি নেই। বার বার আব্রাহামের বলা কথাগুলো মাথায় ঘুড়পাক খাচ্ছে। যে ডেঞ্জারাস লোক উনি,, একবার যা বলে তা যেকোনো মূল্যে করেই ছাড়ে। আইরাত সারা ঘর পায়চারি করে যাচ্ছে। আইরাতের এতো অস্থিরতা দেখে রাত্রি বলে ওঠলো…

রাত্রি;; কিরে তুই এভাবে পায়চারি করছিস কেন? কোন কিছু নিয়ে টেনশনে আছিস নাকি?

আইরাত;; আরে কোথায় না, তেমন কিছুই না।

রাত্রি;; আমার তো মনে হয় না। আচ্ছা কয়েকদিন ধরে তোর হয়েছে টা কি বল তো বেবিজান..!

আইরাত রাত্রির পাশে বসে তাকে জড়িয়ে ধরলো।

আইরাত;; তোরা থাকতে আমার কি কিছু হতে পারে বল। একদম ঠিক আছি আমি যাকে বলে ফিট এন্ড ফাইন। (একগাল হেসে দিয়ে)

রাত্রি;; হিহিহি।

রাত্রিও আইরাতকে জড়িয়ে ধরে। সেই সময় নিপা আসে এবং জলদি করে তাদের রেডি হতে বলে বাইরে যাবে। আইরাত উঠে গিয়ে জানালার কাছে যায়। জানালা দিয়ে হালকা উকি দিয়ে নিচে দেখলো। আশেপাশে ভালোভাবে তাকিয়ে দেখলো। নাহ, আব্রাহামকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। আইরাত যেন প্রাণে বাচলো। তারপর তারা তিনজনেই তৈরি হয়ে বাইরে চলে গেলো।

কিন্তু বাইরে এক কালো গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিলো আর গাড়ির ভিতর থেকেই আইরাতের ওপর কড়া নজর রাখছে আব্রাহাম। আইরাতকে দেখে মুখে এক প্রশান্তির হাসি ফুটে ওঠে তার। বহুদিন পর আব্রাহাম এভাবে হাসলো। যেন জলজ্যান্ত একটা দেহ তার প্রাণ ফিরে পেয়েছে।

তখন তার ফোনে call আসে।

আব্রাহাম;; বলো

রাশেদ;; স্যার, দুলালের একটা চেলা কে ধরে এনেছি কিন্তু মুখ দিয়ে এখনো কিছুই উগলাতে পারলাম না। আপনাকে ছাড়া কাজ হবে না।

আব্রাহাম;; আমিও দেখছি কিভাবে কিছু না বলে থাকতে পারে। আর আইরাতের ওপর নজর রাখো।

রাশেদ;; জ্বি স্যার।

আব্রাহাম ফোনে কথা বলা শেষ করে গাড়ি ঘুরিয়ে এক পুরনো গোডাউনের দিকে যেতে লাগলো।










🥀🥀চলবে~~~~~

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#part__ 37

🤎🦋..
..
..
..
..
..

আব্রাহাম ফোনে কথা বলা শেষ করে গাড়ি ঘুড়িয়ে এক পুরনো গোডাউনের দিকে যেতে লাগলো।

ব্লেক Rip প্যান্ট, হুয়াইট কালার টি-শার্ট, ডার্ক ব্লেক কালার জেকেট, হুয়াইট-ব্লেক কালারের কম্বিনেশনে সুজ, হাতে ওয়াচ, চাপ দাড়ি এবং কিছুটা লম্বা কপালের ওপরে পরে থাকা চুল আর হাতে থাকা রিভলবার❤️,, মাফিয়া যে মাফিয়াই।

আব্রাহাম গোডাউনের সাটার ওপরে তুলে হাতে রিভলবার ঘুড়াতে ঘুড়াতে ভিতরে প্রবেশ করলো। ভিতরে যেতেই দেখতে পেলো একজন যাকে চেয়ারের সাথে খুবই শক্ত করে বেধে রাখা হয়েছে। চোখে-মুখে তার ভয় স্পষ্ট। কপালের শিরা দিয়ে বিন্দু বিন্দু ঘাম বেয়ে পরছে,, এবং তার চোখের পাশে বেশ কিছু অংশ কাটা যা থেকে রক্ত বেয়ে পরছে। আব্রাহাম খুব শান্তভাবে লোকটির সামনে থাকা চেয়ারে গিয়ে বসে পরলো। আব্রাহাম কিছু না বলে একধ্যানে রিভলবারের দিকে তাকিয়ে আছে এবং তা ডান হাতের আঙুল গুলোর মাঝে ঘুড়াচ্ছে। আব্রাহামের এমন শান্ত স্বভাব যেন লোকটার ভয় আরো দ্বীগুন করে দিচ্ছে। লোকটা একবার আব্রাহামের দিকে আর একবার রিভলবারের দিকে তাকাচ্ছে। আব্রাহাম এবার হুট করেই রিভলবার ঘুড়ানো বাদ দিয়ে রক্তচক্ষু নিয়ে লোকটির দিকে তাকালো। আব্রাহামের চোখ দেখে যেন তার আত্মা যায় যায় অবস্থা। আব্রাহামের চোখ দিয়ে যেন আগুনের ফুল্কি বের হচ্ছে। আব্রাহাম তবুও খুবই শান্ত কন্ঠে লোকটিকে জিজ্ঞেস করলো…

আব্রাহাম;; নাম কি তোর?

লোকটি;; ইক.. ইকবাল।

আব্রাহাম;; দুলালের জন্য কাজ করিস?

ইকবাল;; ননা না, কে এই দুলাল (ভয় পেয়ে)

আব্রাহাম;; হাহাহা,, খুব বিশস্ত লোক তো তোরা। সহজে নিজের মালিকের নাম স্বীকার করতে চাস না। বিশস্ত হো ভালো কথা কিন্তু ভালোর দিক দিয়ে হো। এগুলো অসৎ কাজের ক্ষেত্রে কেনোই বা হোস বলতো।

আব্রাহামের এমন হাসি তে লোকটির শরীরে যেন কাটা দিয়ে উঠলো। সবকিছু কেমন যেন শান্ত, ঠিক ঝড় আসার আগ মূহুর্তে যেমন থাকে তেমন। পিনপতন নীরবতা।

আব্রাহাম;; দেখ আমি মানুষ মারি, খুন খারাবা করি মানলাম কিন্তু আমি এতো টাও নির্দয় না যে কাউকে কোন কিছু বলার সুযোগ অব্দি দিবো না। প্রথমে বুঝাবো ভালোভাবে বলে দিলে ভালো আর তা না হলে..

আব্রাহাম এই টুকু বলে থেমে যায় তারপর লোকটির দিকে তাকায়, তাকিয়ে এক মেকি হাসি দেয়।

আব্রাহাম;; তুই যে দুলালের চামচা তা আমি জানি তো অযথা আমার টাইম ওয়েস্ট না করে শুরু কর।

ইকবাল;; সত্যি, দেখুন আমি সত্যি বলছি চিনি না আমি দুলাল নামে কাউকে।

আব্রাহাম আর কিছু না বলে তার হাতে একটা ছুরি নিলো, তা সামনে নিয়ে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে দেখতে লাগলো। লোকটা কে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই আব্রাহাম সোজা তার বাম হাতের আঙুলের নখের ওপর ছুরি বসিয়ে দিলো। সাথে সাথে রক্ত ছিটে এলো, লোকটা চিল্লিয়ে উঠলো। আব্রাহাম লোকটির দিকে তাকিয়ে ছুরি দিয়ে তার আঙুলে মোচড় দিতে থাকলো। ছুরির সাথে আস্ত নখ উঠে এলো।

আব্রাহাম;; দেখ কোন তাল-বাহানা না করে বলে দে এতে তোরই ভালো। আর আগেই যদি বলে দিতি তাহলে এই কষ্ট টা তোকে আর ভোগ করতে হতো না। নে এবার জলদি মুখ খোল।

ইকবাল;; প্লপ্লিজ, আমাকে ছেড়ে দিন আমি কিছুই জানি না প্লিজ যেতে দিন আমাকে আমি আপনার কাছে হাত জোড় করছি।

আব্রাহাম;; আরে না না থাম, দেখ তোর সাথে আমার কোন শত্রুতা নেই। আমার শত্রুতা তোদের বস দুলালের সাথে তো কেন মিথ্যে বলে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনছিস বলতো। নে এবার বলা শুরু কর।

ইকবাল;; আমি জানি নাহ।

আব্রাহাম;; রাশেদ.. (চিল্লিয়ে)

রাশেদকে ডাক দিতেই রাশেদ বড় এক পেকেট মরিচের গুঁড়ো আর লবণ নিয়ে এলো। তা দেখে লোকটার চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেলো।

আব্রাহাম আবার ছুরি টা হাতে নিলো। এবার আব্রাহাম লোকটির একদম হাতের মাঝ বরাবর ঘা বসিয়ে দিলো। এতে লোকটির হাত কেটে একদম ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেলো। লোকটির হাত এতোটাই বিচ্ছিরি ভাবে কেটেছে যে মাঝখানের দু আঙুল কেটে একদম পরেই গেছে। আব্রাহাম ছুরি টা হাত থেকে দূরে ছুড়ে ফেলে দিলো এবং সেই মরিচের পেকেট পুরো টা ধরে সবগুলো গুঁড়ো তার হাতের ওপর ঢেলে দিলো। লোকটি গগন বিদারি চিৎকার দিয়ে উঠলো। লোকটা একে তো আগে থেকেই আধা মরা ছিলো রক্তাক্ত অবস্থায় তার ওপর এগুলো। এসব দেখে আব্রাহামের পাশে থাকা গার্ডগুলো মাথা নিচু করে রেখেছে। আব্রাহামের ইশারা তে রাশেদ এসে লোকটির মুখ অনেক শক্ত করে বেধে দিলো। আব্রাহাম এবার লোকটির হাটুর সই করে শুট করে দিলো। জলধারার মতো করে রক্ত গড়িয়ে পরতে লাগলো। লোকটি এখন চিল্লাতেও পারছে না কারণ মুখ বাধা। ব্যাথা আর অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে লোকটি। এভাবে বেশকিছুক্ষন থাকার পর তার মুখ খুলে দেওয়া হলো।

আব্রাহাম;; মরেই তো গিয়েছিস আর বাদ বাকি টুকু মরতে না চাইলে ফটাফট বলে দে।

ইকবাল;; আমি বলছি, বলছি আমি।

আব্রাহাম;; বল।

ইকবাল;; আমিহ, আমি দুলালের জন্যই কাজ করি। আমি চুরি ডাকাতি করতাম। কিন্তু বস একদিন, বস একদিন একটা মেয়ের ওপর নজর রাখতে বলে, মেয়েটার ছবি আমাকে একবার দেখেয়েছিলো কিন্তু আমি ওই মেয়েকে কোথাও এতোদিন দেখতে পারিনি। কিন্তু গতকাল, গতকাল হুট করেই ওই মেয়েটিকে আমি দেখি। আমিও উনার কথা মতো মেয়েটার পিছু করতে থাকি। মেয়েটির নাম আইরাত, আশরাফুল আহমেদ চৌধুরীর মেয়ে। বস আশরাফুল আহমেদের সাথে উনার মেয়েকেও মেরে ফেলতে চেয়েছিলো কিন্তু পারেনি। এর জন্য খুব করে তাকে খুজছিলো। আমরা জানতাম তিনি মারা গেছেন কিন্তু বস যখন জানতে পেরেছে যে তিনি বেচে আছেন তখন বস আবারও তার পিছু পরে যায়।

আব্রাহাম;; (কথা গুলো শুনে আব্রাহামের পা থেকে একদম মাথায় রক্ত উঠে যায়। হাত মুঠি বদ্ধ করে ফেলে) তাহলে এখন তোর বস কেন খুজছে, ওকে মেরে ফেলতে?!

ইকবাল;; না না মেরে ফেলতে নয় বস খুজছে কারণ বস তাকে ভালোবাসে,, যে করেই হোক উনাকে তার বানাতে চ……

লোকটি আর তার কথা শেষ করে উঠতে পারলো না তার আগেই আব্রাহাম আবার হাতে ছুরি নিয়ে লোকটার গলাতে একটানে চালিয়ে দিলো। রক্ত ফিনকি দিয়ে বের হচ্ছে। গলা কাটা মুরগির মতো ছটফট করছে লোকটি। আব্রাহাম হাতে ছুরি নিয়ে রাগে ফুসছে। এতো কিছু করার পরও যেন আব্রাহামের রাগ থামলো না পুনরায় হাতে রিভলবার টা নিয়ে তাতে যতগুলো বুলেট ছিলো সবকটা লোকটির বুকে এবং পেটে ঢুকিয়ে দিলো। একদম ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেলো লোকটি। আব্রাহাম আবার শূন্য রিভলবারটা নিয়ে লোকটার মাথায় শরীরের সমস্ত শক্তি নিয়ে আঘাত করলো। এক নিমিষেই তার মাথা ফেটে রক্তে চারিপাশ ভেসে যেতে লাগলো। আব্রাহামকে এখন কোন এক হিংস্র বাঘের থেকে কোন দিক দিয়ে কম লাগছে না। চেয়ার গুলো তুলে নিচে জোরে আছাড় দিলো। সাথে সাথেই তা টুকরো টুকরো হয়ে গেলো। রাগে থরথর করে কাপছে সে।

আব্রাহাম;; বেইমান, বিশ্বাসঘাতকের মুখে “ভালোবাসা” নামক শব্দ একদম বেমানান।

আব্রাহাম লোকটার কাছ থেকে দূরে সরে আসে। একহাত কোমড়ে ধরে অন্যহাতে নিজের মাথায় চুল শক্ত করে ধরে চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে থাকে। কোনভাবে রাগটাকে ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে সে। তার বডিগার্ড রা আজ ভয়ে কাপছে কেননা এর আগে তারা আব্রাহামকে এমন করে কখনোই রাগতে দেখেনি।

আব্রাহাম;; যা জানার তা আমি জেনে ফেলছি। রাশেদ..

রাশেদ;; জ্বি, জ্বি স্যার (ভয় পেয়ে)

আব্রাহাম;; এই নর্দমার কীটকে এখান থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দূরে ছুরে ফেলে আসো।

রাশেস;; জ্বি স্যার।

এই বলে আব্রাহাম হনহন করে গোডাউন থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে।








নিপা-আইরাত-রাত্রি বসে আছে এক কফিক্যাফের ভিতরে। তিনজন তিন কাজে ব্যাস্ত। নিপা তার কিছু ডিজাইন দেখছে, রাত্রি ফোন গুতাচ্ছে আর ছবি তুলতে ব্যাস্ত আর আইরাত আইসক্রিম খেতে।

তখনই আব্রাহাম এলো। যেহেতু আব্রাহামের লোকেরা আইরাতের ওপর কড়া নজরদারি রেখেছে তো আইরাত কোথায় কখন যাচ্ছে তা আব্রাহাম ক্ষণে ক্ষণে টের পায়। আব্রাহাম গাড়ি থেকে নেমে চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে ফেললো। সামনে তাকাতেই দেখলো আইরাতকে। কাচের দরজা ভেদ করে তাকে খুবই স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে। একদম বাচ্চাদের মতো করে আইসক্রিম খাচ্ছে,, তার এলোমেলো চুলগুলো তাকে খুবই জ্বালাচ্ছে আর সে খানিক বিরক্তি নিয়ে তা সামলে নিয়ে আবার খাওয়াতে মনযোগ দিচ্ছে। আব্রাহাম তা দেখে এক মুগ্ধ হাসি হেসে দেয়।

নিপা;; এই তোরা শোন…

রাত্রি-আইরাত;;_______________

নিপা;; ওও হ্যালো,

কে শুনে কার কথা নিপা এই দিকে ডেকে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই কিন্তু রাত্রি ওর মন মতো একাধারে ছবি তুলেই যাচ্ছে আর আইরাত তো আইরাতই। নিপা এবার রেগে গেলো…

নিপা;; এই গাধার দল…

নিপার এমনভাবে ডাকাতে রাত্রি আইরাত দুজনই চমকে উঠলো। রাত্রি এতোটাই চমকে উঠেছে যে তার হাত থেকে ফোন সোজা নিচে পরে গেছে। আইরাতের মুখের আশেপাশে অনেক আইসক্রিম লেগে আছে। তা দেখে নিপা হেসে দিলো।

আইরাত;; কি হলো চিল্লালি কেন এভাবে?

নিপা;; হাহাহাহাহাহা😅…

রাত্রি;; এর মাথার তাড় গেছে, এই পাগল হয়ে গেছে।

নিপা;; আইরু তোর মুখ দেখ।

আইরাত তার ফোন বের করে ফোনের স্ক্রিনে তার ফেইস দেখলো। নিজে দেখে নিজেই বোকা বনে গেলো। আইরাত নিপার দিকে তাকিয়ে সবগুলো দাঁত বের করে দিলো এক হাসি। তারপর মুখ পরিষ্কার করে নিলো।

নিপা;; আচ্ছা শোন তোরা থাক আমার কিছু ডিজাইন সাবমিট করার আছে তো আমি যাই।

আইরাত;; আচ্ছা, Bye

নিপা;; Bye…

এই বলেই নিপা তাদের বিদায় জানিয়ে চলে গেলো। আইরাত তার আইসক্রিম শেষ করে ক্যাফে তে বিল মিটিয়ে আবার এসে বসে পরে। তখনই রাত্রি চিল্লিয়ে ওঠে..

রাত্রি;; হায়য়য়য়য়য়য় মে মারজাবা🥰

রাত্রির এমন করাতে আইরাত কপাল কুকচে রাত্রির দিকে তাকায়।

আইরাত;; হয়েছে টা কি!

রাত্রি;; এই দেখ এটা হচ্ছে “আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী” কি পরিমাণ যে হ্যান্ডসাম উনি। দেখ দেখ ডিপি তে পিক আপ্লোড দিয়েছে কি যে সুন্দর লাগছে। আমি মনে হয় এবার ক্রাশ খেতে খেতেই মরে যাবো রে।

রাত্রির কথা শুনে আইরাতের মেজাজ চটে গেলো

আইরাত;; হুমম তো মরে যা না, কে বারণ করেছে।

রাত্রি তার ফোন ঘাটাঘাটি করছিলো তখন আব্রাহামের অফিসিয়াল পেজে তার ছবি দেখে এমন চিল্লিয়ে ওঠে। আর আইরাত একগাদা বিরক্তি নিয়ে রাত্রির এসবকিছু সহ্য করে যাচ্ছে। ঠিক তখনই কোথা থেকে যেন আব্রাহাম দুম করে এসে আইরাতের পাশের সিটে বসে পরে।

আব্রাহাম;; এতোই যখন ক্রাশ তাহলে শুধু ফোনে কেন সামনাসামনিই দেখে নাও।

আব্রাহামকে দেখে আইরাতের চোখজোড়া যেন তার কোটর থেকে বের হয়ে আসবে। ফাটা চোখে আইরাত তার দিকে তাকিয়ে আছে। আর রাত্রি,, ও তো পারছে না এখানেই একদফা অজ্ঞান হয়ে পরে যেতে। আব্রাহাম আইরাতের এমন লুক দেখে ঠোঁট চেপে হাসছে। আব্রাহাম আইরাতের দিকে হালকা হাত তুলে বলল..

আব্রাহাম;; হে হাই

আইরাত;;___________

রাত্রি;; “আব্রাহায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়াম আহমেদ চৌধুরী”।

আব্রাহাম;; হ্যাঁ আমি (বাকা হেসে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে)

আব্রাহামকে দেখে আইরাত এক ঝটকায় বসা থেকে ওঠে পরে এবং রাগি চোখে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে থাকে।

আইরাত;; এই সাইকো টা এখানে আবার কি করে এলো আর কেনোই বা এলো (মনে মনে)

আইরাতকে এভাবে উঠে দাঁড়িয়ে যেতে দেখে রাত্রি তার হাত ধরে টান দিয়ে আবার বসিয়ে দেয়।

রাত্রি;; বেবি ববেবিজান আআমাকে প্লিপ্লিজ একটু চিমটি কাট তো আসলে, আসলে আমি না বিশ্বাসই করতে পারছি না যে আমার সামনে দি গ্রেট আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী বসে আছে। বেবিজান আমি কোন স্বপ্ন দেখছি না তো!!

আইরাত রাগ+বিরক্তি দুটোই নিয়ে রাত্রির দিকে তাকালো। রাত্রি ঘোর লাগা দৃষ্টিতে আব্রাহামের দিকে তাকিয়েই আছে। আইরাত তা দেখে রাত্রির হাতে বেশ জোরেই একটা চিমটি কেটে দিলো। ব্যাথা পেয়ে রাত্রি চিল্লিয়ে উঠলো।

রাত্রি;; আআয়ায়াউউউচচচচচচ,, ইশশশশ এভাবে কেউ কাউকে মারে।

আইরাত;; তুই তো বললি।

রাত্রি;; হ্যহ্যহ্যালো, আমি আমি রাত্রি খান আর ও হচ্ছে আমার দিল কা টুকরা আইরাত। (অনেক বেশি এক্সসাইটেড হয়ে)

আব্রাহাম;; হেই বিউটিফুল লেডি ( রাত্রির দিকে তাকিয়ে)

রাত্রি;; oowww how cute!!

আব্রাহাম;; আমাকে চিনো?

রাত্রি;; আরেহহহ আপনাকে কেই বা না চিনবে। আপনি তো আমার পূর্ব জনমের ক্রাশ।

আব্রাহাম;; মনে হচ্ছে এখন আমিও ক্রাশ খাবো।

রাত্রি;; হাহাহা কি যে বলেন না (নেকামি)

আইরাত;; এহহহহহহ, ঢং দেখলে বাচি না (মনে মনে)

রাত্রি আর আব্রাহামের এমন ফ্লাট করা দেখে আইরাত মুখ ভেংচি দিয়ে অন্যদিকে ঘুড়ে গেলো। আব্রাহাম শুধু আড় চোখে আইরাতের এমন কান্ড দেখছে আর মুখ চেপে হাসছে।

আব্রাহাম;; হেই গার্ল, আমরা এতো কথা বলছি কিন্তু তুমি এতো চুপচাপ কেন! (আইরাতের দিকে তাকিয়ে)

আইরাত;; কারণ আমার আলতু ফালতু মানুষের সাথে কথা বলার মোটেও ইচ্ছে নেই।

রাত্রি;; যাহহ বাবা গেলো মান-সম্মান সব। আইরু বেবি প্লিজ তোর মুখ টা এখন একটু অফ রাখ প্লিজ আমার ক্রাশের সামনে আজ অন্তত আমার ইজ্জতের কাবাব বানাস না প্লিজ। (আইরাতের হাত ধরে টেনে নিয়ে কানে কানে বলে উঠলো)

রাত্রি;; আরে নাহ আব.. আসলে ও এমনই আর কি। কারো সাথে বেশি একটা কথা বলে না। আপনি ওর এমন আজগুবি কথায় কিছু মনে করবেন না (কথা কাটিয়ে দেওয়ার জন্য মুখে জোরপূর্বক হাসি হেসে)

আব্রাহাম;; আরে না না কি বলো, কি মনে করবো। যে জিনিস গুলো নিজের নামে লেখা সেগুলো কথায় কিছু মনে করতে হয় না। (আইরাতের দিকে এক চোখে তাকিয়ে)

আইরাত বেশ করে বুঝতে পারলো যে আব্রাহাম কথাটা তার উদ্দেশ্যেই বলেছে। সে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে। আর রাত্রি আব্রাহামের কথার আগা-মাথা কিছু না বুঝলেও তার দিকে তাকিয়ে হেসে দেয়। রাত্রি আর আব্রাহাম সেই কখন থেকে লাগাতার বকবক করেই যাচ্ছে। আইরাতের মাথা ধরে গেছে এই দুই পাগলের পাল্লায় পরে। তারা তাদের মতো করে কথা বলেই যাচ্ছে হেসে হেসে আর তাদের মাঝখানে আইরাত নিরব দর্শকের মতো বসে আছে। কিন্তু আব্রাহাম রাত্রির সাথে কথা বললেও সারাক্ষণ আইরাতের দিকেই তাকিয়ে ছিলো। আর রাত্রি তো পারছে না আব্রাহামের গায়ে ঢলে পরতে যাতে করে আইরাত কিছুটা হলেও জ্বলছে। আইরাত আর সহ্য করতে না পেরে কাউকে কিছু না বলেই সোজা কফিশপ থেকে বেরিয়ে আসে। রাত্রি আইরাতকে পিছন থেকে অনেকবার ডেকেও তার কোন সাড়া পায় না। অবশেষে আব্রাহাম বলে ওঠে…

আব্রাহাম;; তো রাত্রি, আজ আমি আসি কেমন। অন্যদিক আবার দেখা হবে, ভালো থেকো আর হ্যাঁ তোমার ওই আধা পাগল কলিজার টুকরাটা কে দেখে রেখো ওকে।।

রাত্রি;; হ্যাঁ হ্যাঁ অবশ্যই (আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে একগাল হেসে)

আব্রাহাম রাত্রির সাথে কথা বলে চোখে আবারও সানগ্লাস পরে সেখান থেকে চলে আসে। আর রাত্রিও দৌড়ে আইরাতের পিছু পিছু চলে যায়।










💞💞চলবে~~~~~

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#part__ 38

🤍🌸..
..
..
..
..
..

মেয়েরা আর যাই করুক না কেন নিজের হাসবেন্ডের ভাগ কাউকেই দেয় না। আর না ই তার ওপর কারো নজর দেওয়া সহ্য করতে পারে। আর কথায় আছে না যে “” Jealousy is the first sign of true love “”… তো এখন আমি শুধু তোমাকে জ্বলাবো। আমি বেশ ভালো করেই জানি যে তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসো কিন্তু শুধু কিছু রাগ অভিমানের কারণে মুখ ফুটে বলছো না। কিন্তু সেই দিনও বেশি দূরে নেই যখন তুমি নিজে আমাকে ভালোবাসি বলবে জানপাখি। খুব তো বলতে যে ভালোবাসি না ভালোবাসি না। এখন আমি দেখবো যে তুমি কিভাবে না ভালোবেসে থাকতে পারো।

আব্রাহাম ড্রাইভ করছে আর আনমনেই কথা গুলো ভেবে যাচ্ছে। ড্রাইভ করে সে চৌধুরী ভবনের দিকে গেলো।

অন্যদিকে রাত্রি দৌড়ে দৌড়ে আইরাতের পিছু ছুটছে আর আইরাত একরাশ রাগ নিয়ে সোজা হেটেই যাচ্ছে।

রাত্রি;; আইরু আইরু বেবিজান একটু দাড়া না আরেএএএ শোন।

আইরাত;;______________

রাত্রি;; আরে আমার পুরো কথা টা তো শোন আইরু বেবিজান প্লিজ দাড়া, আমি আর পারছি না দাড়া আইরুউউউউ

আইরাত আরো জোড়ে হাটতে লাগলে রাত্রি দৌড়ে গিয়ে খোপ করে আইরাতের হাত ধরে ফেলে…

রাত্রি;; উউউফফফফ এভাবে যাচ্ছিস কোথায়, কথা তো শুনে যাবি আমার নাকি (হাপাতে হাপাতে)

আইরাত;; কি করবো আমি দাঁড়িয়ে শুনি। তুই যা তোর ওই আব্রাহামের কাছে যা।

রাত্রি;; আরে বাবা আমি তো..

আইরাত;; ফ্লাট করছিলাম তাই না!!

রাত্রি;; হে আল্লাহহহ। আচ্ছা ওসব কথা এখন ছাড় তো।

আইরাত;; আমি বাড়ি যাবো এখনই।

রাত্রি;; আচ্ছা চল।

রাত্রি আইরাতের মুড অফ দেখে আর কিছু বললো না একদম বাড়ি চলে গেলো।

চৌধুরী ভবন………………….!!

আব্রাহাম;; বাপি (বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে)

আবির আহমেদ;; কিরে বাবা এসে পরেছিস!

আব্রাহাম;; হ্যাঁ।

আবির আহমেদ;; কিন্তু তুই যে একা, একা কেন তুই আইরাত মামনি কোথায়?

আব্রাহাম;; বাপিইইই (গলা জড়িয়ে ধরে)… বাপি আর মাত্র কিছুটা দিন খুব তাড়াতাড়িই আইরাত আমাদের সাথে থাকবে।

আবির আহমেদ;; তাই যেন হয় বাবা।

আব্রাহাম;; হতেই হবে। বাপি খিদে পেয়েছে আমার খুব আর আজকে আমি রাধবো।

হলরুমে আবির আহমেদ আর সাথে অয়নও বসে ছিলো কিন্তু আব্রাহামের এমন কথায় অয়নের যেন চোখ এখনই বেড়িয়ে আসবে। আবির আহমেদও কিছুটা কেশে আব্রাহামের দিকে তাকালো। কেননা আব্রাহাম এতোটা দিন রাতের বেলার কিছুই খেত না। বলতে গেলে তার জন্য রাতের খাওয়া এক প্রকার হারামই ছিলো। এলকোহল & সিগারেটই ছিলো তার রাতের আহার। কিন্তু আজ আব্রাহাম বললো খাবে তাও নিজে রেধে। এটা কিছুটা হলেও তার বাপি আর ভাইয়ের জন্য আশ্চর্যজনক।

আবির আহমেদ;; তুই আর রাতের খাবার…!

আব্রাহাম;; হ্যাঁ আমিই বলছি যে আমি রাতের খাবার খাবো। এতে এতো অবাক হওয়ার কি আছে?!

অয়ন;; মানে কিভাবে সম্ভব?

আব্রাহাম;; তুই চুপ কর, নিজে তো সারাদিনই খাস পেটুক কোথাকার।

আব্রাহামের কথায় অয়ন কিছু বললো না উল্টো হেসে দিলো। অন্যান্য দিন থাকলে অবশ্য দুজনের মধ্যে যুদ্ধ বেজে যেত। কিন্তু এতো বছর পর আজ আব্রাহাম তাকে এই নাম ধরে ডাকলো।
আব্রাহাম নাকি রাধবে আর কিছু না বলে তার বাপি কে বলে ওপরে চলে গেলো।

আবির আহমেদ;; অয়ন দেখেছিস আমার আব্রাহাম কতোটা পরিবর্তন হয়ে গেছে,, সেই আগের আব্রাহাম।

অয়ন;; সবকিছুই বউমনির কান্ড। বউমনি যদি না থাকতো তাহলে আমরা আর ভাইকে তার আগের রুপে দেখতে পারতাম না। বাপি, তুমি দেখো কালোর আধার এখন খুব তাড়াতাড়িই আমাদের পরিবার থেকে দূরে সরে যাবে আর বউমনি নিজেই সেই আলোর কিরণ হয়ে আসবে।

আবির;; হ্যাঁ।

আব্রাহাম ফ্রেশ হয়ে এসে আবার সোজা রান্নাঘরে চলে যায়। তার বাপি হাতে হাতে কাজ করে দিলে সোজা নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দেয়। অয়ন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সবকিছুই দেখছে এবং আব্রাহামের লেগ পুল করছে। আব্রাহামের এমন ফুরফুরে মেজাজ দেখে আজ শুধু আবির আহমেদ-অয়ন না এমনকি বাসার সব স্টাফরাও চরম অবাক। কারণ রাগ যার নাকের ডগায় বসবাস করতো, মানুষ কিনা কথা টা পর্যন্ত বলতে ভয় পেত। আজ তাকে চাইলেও রাগানো যাচ্ছে না। আব্রাহাম অনেক হেসে হেসে কথা বলছে। বহুদিন পর এমন হাসি আব্রাহামের মুখে দেখা গেলো। মনে হচ্ছে ধীরে ধীরে আব্রাহামের ভাংগা মন টা জোড়া লাগছে। আর তা সম্পূর্ণই আইরাতের জন্য। অবশেষে রান্না বান্না শেষ হলে আব্রাহাম সবকিছু টেবিলে নিয়ে সাজিয়ে দিলো। তারা সবাই খেতে থাকলো। খাওয়ার মাঝখানেই আবির আহমেদ বলে উঠলেন…

আবির আহমেদ;; আব্রাহাম..

আব্রাহাম;; বলো বাপি।

আবির আহমেদ;; সবসময় এভাবেই হাসিখুশি থাকবি। তোকে হাসিই মানায়। গোমড়া মুখ তোর ওপর একদমই বেমানান। আমার ডেসিং ছেলের চেহারাতে হাসিই ফুটে অন্য কিছু না।

আব্রাহাম;; 😊



দুলাল তার ঘরে শুধু একাধারে পায়চারি করেই যাচ্ছে। মুখে তার চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। হাতে ফোন নিয়ে কার কাছে যেন বারবার ফোন করেই যাচ্ছে কিন্তু ওপরপাশে ফোন না ধরাতে বিরক্তি নিয়ে আবার হেটেই যাচ্ছে।

দুলাল;; এই শালার বেটা ইকবাল ওর ফোন কেন ধরছে না!!

এই বলে দুলাল পুনরায় ফোন করে কিন্তু ফোন আবার সুইচ অফ বলছে। তখনই দুলালের ফোনে তমাল ফোন দিলো। দুলাল কপাল কুচকে ফোন ধরে বলে ওঠে..

দুলাল;; কিরে তুই এই সময়ে, কোন খবর আছে নাকি?

তমাল;; বস আপনি দ্রুত টিভি অন করুন।

দুলাল;; হয়েছে কি!

তমাল;; বস আপনি টিভি অন করুন তারপরই বুঝতে পারবেন।

দুলাল কিছুটা চিন্তা নিয়েই টিভি অন করলো। টিভি অন করার সাথে সাথেই খবরে ব্রেকিং নিউজে বলা হচ্ছে।
” ব্রেকিং নিউজ, নদীর ধারে পাওয়া গেছে এক বেওয়ারিস লাশ, যার কোন ঠিকানা বা পরিচয় পত্র কিছুই নেই”।

দুলালের খবর দেখে যেন তার মাথায় আগুন ধরে গেলো। কেননা লাশটা ইকবালেরই। লাশ টা বিচ্ছিরি অবস্থায় পরে আছে। যে কেউ দেখলে তার গা গুলিয়ে উঠবে। দুলাল অবাক চোখে টিভির দিকে তাকিয়ে ছিলো এবং ভাবছিলো যে এই রকম কাজ কে করতে পারে। ঠিক তখনই দুলালের ফোনে ফোন এলো। দুলাল ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখলো আননোন নাম্বার। ফোন রিসিভ করলে ওপর পাশ থেকে কন্ঠ ভেসে আসে..

দুলাল;; হ্যালো..

আব্রাহাম;; কিরে, কি ভাবছিস যে তোর এতো বিশ্বাসী একজন কে কেউ কিভাবে এমন করে মারলো! হাহাহা আমি মেরেছি।

দুলাল;; এইইইই কে তুই। এভাবে আমার লোকজন কে কেন মারছিস। কি চাস তুই? (রেগে)

আব্রাহাম;; তোর জান নিতে চাই আমার। তোকে নিজ হাতে খুন করতে চাই। এটা তো কেবল ট্রেইলার ছিলো ফুল পিকচার এখনো বাকি। তোর সাথে আমার কোন শত্রুতাই ছিলো না কিন্তু এর শুরু তুই নিজেই করেছিস। কিন্ত এর শেষটা করবো আমি। কি ভেবেছিস তুই! আমার জান আমার আইরাতের দিকে তোর নজর দিয়ে এতো সহজেই পার পেয়ে যাবি তুই। না, অনেক বড়ো ভুল করেছিস তুই দুলাল অনেক বড়ো। এর শোধ তোকে তোর জীবন দিয়ে পরিশোধ করতে হবে।

দুলাল;; এইই কেরে তুই, এভাবে ফোন করে আমাকে থ্রেট দিচ্ছিস কেন, সাহস থাকলে আমার সামনে আয় তারপর নিজের ক্ষমতা দেখাস।

আব্রাহাম;; সামনে তো আমি আসবোই তাও খুব তাড়াতাড়ি। আর নিজের মৃত্যুকে তুই নিজে আমন্ত্রণ জানিয়েছিস আসতে তো হবেই। এতোদিন যতোটুকু শান্তিতে থাকার থেকে নে কারণ এর পর তোর মরণের কাউন্ডাউন শুরু।

দুলাল;; তোকে তো আমি হ্যালো,, হ্যালো হ্যালো…

আব্রাহাম দুলালের কথা বলার আগেই ফোন কেটে দেয়। দুলালের রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। রাগের বসে হাতে থাকা ফোন জোড়ে নিচে আছাড় মারে। খানখান হয়ে যায় ফোন মুহুর্তেই। ধপ করে সোফার ওপর বসে মাথা চেপে ধরলো সে।

আব্রাহাম তার ঘরে বসে থেকে এতোক্ষন দুলালকে হুমকি দিচ্ছিলো। তারপর ওয়াইনের এক আধো খাওয়া বোতল নিয়ে আবারও চুমুক দেওয়া শুরু করলো। খুব করে আইরাতের কথা মনে পরছে তার। খুব করে আইরাতকে কাছে পেতে ইচ্ছে করছে তার। কিন্তু এখন চেয়েও কিছুই করতে পারবে না সে। আব্রাহাম এক চুমুকে তার পুরো ওয়াইন শেষ করে উঠে পরে। কালো এক হুডি পরে বের হয়ে পরে সে।



আইরাত নিপা রাত্রি তারা সবাই রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে শুয়ে পরে। আইরাতের ঘুম না আসায় একটা বই সামনে নিয়ে পরা শুরু করে। পরতে পরতেই কখন যে ঘুমের ঘরে চলে যায় তা আইরাতের নিজেরও খেয়াল নেই।

কিন্তু ঘুমের মাঝেই আইরাত অনুভব করছে যে মুখের কাছেই কেউ ঝুকে বসে আছে। সে তার কপালে হাতের হালকা ছোয়া অনুভব করে। তাতে আইরাত কিছুটা নড়েচড়ে উঠে। সে আর কেউ না আব্রাহাম নিজেই। আব্রাহাম আইরাতকে ছাড়া আর থাকতে না পেরে ছুটে আইরাতের ফ্লেটে চলে যায়। তারপর করিডর ডিংিয়ে সোজা আইরাতের রুমে ঢুকে পরে। গিয়েই দেখে আইরাত বিভর ঘুমে ঘুমন্ত। দেখেই আব্রাহামের কেমন জেন মায়া লাগতে শুরু করে। নিজের চোখের পিপাসা মিটাচ্ছে সে আইরাতের এই মায়াময় মুখখানা দেখে দেখে। আব্রাহাম একদম ধীর পায়ে আইরাতের পাশে গিয়ে বসে পরলো। আইরাতের মুখের দিকে ঝুকে গভীরভাবে তাকে দেখতে লাগে। আব্রাহাম আইরাতের সারামুখে তার চোখ বুলাচ্ছে। আইরাতের ঠোঁটগুলো কেমন যেন কাপছে যা আব্রাহাম কে আরো দৃঢ় ভাবে কাছে টানছে। আব্রাহাম আলতো করে তার সারা মুখে ফু দিয়ে দেয়। ঘুমের ঘোরেই আইরাত বুঝতে পারছে যে কেউ তাকে এক পলকে দেখেই যাচ্ছে। আইরাত হঠাৎ নিজের গলাতে কারো শীতল স্পর্শ পেয়ে কেপে উঠে। আব্রাহাম সাথে সাথে তার হাত সরিয়ে ফেলে এবং মুচকি হেসে ওঠে। আইরাতের হাত তার হাতে নিয়ে চুপ করে বসে থাকে সে। সারারাত এভাবেই কাটিয়ে দেয় আব্রাহাম। এভাবেই আরো বেশ কিছুক্ষন আইরাতের পাশে থাকার পর যখন বাইরে প্রায় ভোরের আলো ফুটে ওঠে তখন আব্রাহাম আইরাতের কপালে এক গভীর চুমু দিয়ে আবার সেই করিডর দিয়েই চলে আসে।



সূর্যের কিরণ চোখে পররেই আইরাত তার চোখ-মুখ কুচকে ফেলে। মুখের ওপর হাত দিয়ে আলো আসতে বাধা দেওয়ার ব্যার্থ চেষ্টা করতে থাকে সে। তারপর তার পাশে তাকাতেই দেখে রাত্রি আর নিপা বেঘোড়ে ঘুমোচ্ছে। আইরাত সেদিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে উঠে পরে। বিছানাতে বসে দুহাত দিয়ে চোখ কচলাতে থাকে। আড়মোড়া ভেংে গায়ের ওপর থেকে চাদর সরিয়ে ঢুলতে ঢুলতে রান্নাঘরে চলে যায় সে। নিজের জন্য এককাপ কড়া করে কফি বানিয়ে করিডরে চলে যায়। উস্কোখুস্কো চুলগুলোতে হাত দিয়ে কোন রকমে ঠিকঠাক করছে সে। মুখে কফির গরম চুমুক পরতেই চোখজোড়া বন্ধ করে ফেললো সে। কিন্তু নিচ থেকে গাড়ির কান ফাটানো হর্নের শব্দে আইরাত কপাল কুচকে ফেলে। পুনরায় শব্দ কানে ভেসে এলে আইরাত নিচে রাস্তার দিকে তাকায়। তাকিয়েই তার চোখ ছানাবাড়া। ফিক করে মুখের সব কফি বের হয়ে পরে। কাশি উঠে যায় একদম। কেননা নিচে আব্রাহাম তার গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হাতে একটা এয়ায়য়ায়া বড়ো টেডিবিয়ার এবং অনেক গুলো লাভ সেপের বেলুন। আইরাত তীক্ষ্ণ চোখের আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আছে। আব্রাহাম বেশ বুঝতে পারছে যে আইরাত রেগে গেছে। আর আইরাতের এমন ফেইস দেখে আব্রাহামের বেশ মজা লাগছে। আইরাতের রাগ আরো দ্বীগুন করার জন্য আব্রাহাম সেখান থেকেই তাকে হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে হাই বলছে কিন্তু এবার আব্রাহাম চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে বলতে লাগে…

আব্রাহাম;; Hay Babygirl,, Good Morning..!

আইরাত;; (শুধু রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আর আশেপাশে তাকাতাকি করছে)

আব্রাহাম;; আরে এভাবে আশেপাশে কি দেখছো এখানে আমি ছাড়া কেউ নেই। এখন শুনো তুমি জলদি করে নিচে নেমে এসো।

আইরাত;; কিহহহহহ, আপনার কি মাথা খারাপ নাকি। আমি যাবো নিচে তাও আপনার সাথে দেখা করতে লোকে কি বলবে!!

আব্রাহাম;; ওও মেলোড্রামা কুইন,, আমি বর হই তোমার। এতে লোকে কি বলবে আমি কেন শুনবো আজব তো। লিসেন, আমি আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী কারো ধার ধারি না ওকে। সো জলদি নিচে নামো,Fast।

আইরাত;; না না একদম না আমি কোন মতেই নিচে যেতে পারবো না।

আব্রাহাম;; ঠিক আছে না আসলে আমিই ওপরে আসছি।

এই বলে আব্রাহাম ওপরে আসতে ধরে। তখন আইরাত জোড়ে চিল্লিয়ে আব্রাহামকে সেখানেই থামিয়ে দেয়।

আইরাত;; এই না না না কি করছেন কি থামুন থামুন।

আব্রাহাম;; কি হলো তুমি তো বেবি নিচে নামতে পারবে না তাই আমিই আসছি।

আইরাত;; না না আপনার আসার কোন দরকার নেই প্লিজ আপনি আসবেন না তা না হলে কেলেংকারী বেধে যাবে প্লিজ।

আব্রাহাম;; তাহলে তুমি নিচে নামো এখনই জলদি।

আইরাত;; আচ্ছা আমি আসছি, আসছি।

আইরাত নিপা এবং রাত্রির দিকে ভালোভাবে তাকিয়ে দেখে তারা এখনো ঘুম। এই সুযোগে আইরাত ঘর থেকে খুব সাবধানে ধীর পায়ে বেড়িয়ে পরে।










🌺🌼চলবে~~~~~

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে