?ভোর? পর্বঃ ২২।

0
1389

?ভোর? পর্বঃ ২২।
লেখিকাঃ আয়sHa?
|
|
আলোর মাঃঃ তুই এভাবে কেন নিয়ে এলি আমাদের? নার্সের কাছে আমার নাতনিকে রেখে..ভোরকে কিছু না জানিয়ে কেন করলি এমন তুই আলো বল?
|
আলোঃঃ মা ভালো লাগছে না। তুমি একটু যাবে?
|
আলোর বাবাঃঃ আহ তুমি একটু চিল্লাও কম। এভাবে কথা বলো না ওর সাথে। নিশ্চয়ই ওদের ভিতর কোন কিছু ঘটেছে। মা আলো কি হয়েছে বল মা।
|
আলোঃঃ বাবা আমি একটু একা থাকতে চাই…. ((ছলছল নয়নে))
|
আলোর বাবাঃঃ মা আমি তোকে কখনো কিছু নিয়ে প্রেসার দেইনি কিন্তু আজকের বিষয়টা আমারও মনের ভিতর চিন্তার বাসা বাঁধালো। কি হয়েছে বল মা?
|
আলোঃঃ বাবা বলবো সব কিন্তু পরে। এখন আমি একটু একা থাকতে চাই। প্লিজ বাবা…
|
আলোর বাবাঃঃ হুম। চলো আলোর মা। ওকে একটু একা থাকতে দেই।
|
আলোর বাবা-মা বের হয়ে গেলো রুম থেকে। আর আলো বুক ভাসাতে লাগলো। নিজের সাথেই বলতে লাগলো…….
★★★ আজ খুব শূণ্য লাগছে। খুব কান্নাও পাচ্ছে.. খুব ইচ্ছা করছে বুক ফাটিয়ে চিৎকার করে কাঁদি। কিন্তু নিরুপায় আমি। চাই না বাবা-মা জানুক সব কিছু। জানলে যে তারা সহ্য করতে পারবে না। তবে ভালোও লাগছে আজ আপনি অনেক খুশি আর সুখী। আমার নাড়িছেঁড়া ধন টাকেও আপনাকে দিয়ে এসেছি। কি করবো বলুন? আপনি তো সন্তানের জন্যই আমাকে এতদিন আপনার কাছে রেখেছেন। আমার একটা ভুলের জন্য আপনি আমাকে আর গ্রহনই করলেন না মন থেকে। কিন্তু আপনি একটাবারও ভাবলেন না আপনি কত অপরাধ আর কত ভুল করেছেন আমার সাথে। আমাকে রিহামের ব্যাপারে সবকিছু প্রথম দেখাতে বললে কি হতো? কিন্তু আপনি বলেননি। আমার একটা ভুলকেই আপনি বড় করে দেখলেন ভোর। আচ্ছা আপনি তো আমাকে ভালোবাসতেন তাহলে কেন একটা ভুলকে ক্ষমা করতে পারলেন না?। আজ আর আপনার জন্য আমার বুকটা তেমন হাহাকার করছে না.. করছে আমার মেয়ের জন্য। আমার মেয়ের জন্য বুকটা যে ফেঁটে যাচ্ছে। আমি মা হয়েও মায়ের ডাক থেকে আজ বঞ্চিত। আমার মেয়ে আমাকে কোনদিন মা ডাকবে না। আমি কেন বেঁচে আছি?যে মা হয়েও মা ডাক শুনবে না..কোনদিন না। কোনদিন না।★★★
|
বলেই আলো কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
|
রাত ১০টা। আলো একলাফ দিয়ে উঠে..
আলোঃঃ প্রভাতী??? ((চিৎকার দিয়ে))
|
ঃঃ পানি…..
|
আলো সামনে তাঁকিয়ে দেখে ভোর পানির গ্লাস হাতে নিয়ে বলছে..পানি।
|
আলোঃঃ আ—আপনি?? ((অবাক হয়ে))
|

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


ভোরঃঃ পানি…
|
আলো ভোরের হাত থেকে পানি নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে নিয়ে…
|
আলোঃঃ আমার প্রভাতী??
|
ভোর চোখের ইশারা দিয়ে পাশে তাকাতে বললো.. আলো পাশে তাঁকিয়ে দেখে ওদের বেবি। আলো বেবিকে কোলে নিয়ে এলোমেলো ভাবে চুমু খাচ্ছে আর কান্না করছে তারপর বেবিকে খাওয়াতে শুরু করলো। ভোর আলোর এমন হুট করে বেবিকে খাওয়ানোর কাজ দেখে উঠে পিছন ঘুরে দাঁড়ালো। আলো এক মাতৃত্বের তৃপ্তি পাচ্ছে। বেবিকে খাইয়ে আলো বেবিকে পাশে শুয়েই দিয়ে….
|
আলোঃঃ আমি আমার বেবিকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না। আপনি আমাকে সন্তান হারা করবেন না দয়া করে। আমি মরে যাবো। তিলে তিলে শেষ হয়ে যাবো। আমাকে আপনি দয়া করুন প্লিজ দয়া করুন.. দয়া করুন.. (কেঁদে কেঁদে)
|
ভোরঃঃ শুধু বেবি নিয়ে থাকার চিন্তা করলে? নিজের শূণ্যতা দেখলে?একবার আমার কথা চিন্তা করলে না? আমি কি নিয়ে বাঁচবো? আমি কি নিয়ে থাকবো? আমার কি হবে? তুমি তো বেবি নিয়ে তোমার শূণ্যতা পূরণ করবে আর আমি? আমি কি দিয়ে আমার শূণ্যতা পূরণ করবো? আমিও তো তিলে তিলে শেষ হয়ে যাবো। মরে যাবো আমি আলো.. শেষ হয়ে যাবো তুমিহীনা। ভেবেছিলাম তুমি হয়তো আমার ভালোবাসা উপলব্ধি করো কিন্তু না তুমি আমার মুখের কথাগুলোকেই বিশ্বাস করে এসেছো। কখনও আমার মনকে বুঝতে পারলে না। কখনো না। হুম তোমাকে পূর্ণতায় পরিপূর্ণ করে দিলাম। বেবিকে রেখে যাবো আমি। তুমি সুখে থাকলেই আমার সুখ।
((আলোর বিপরীত পিছন চোখ মুছতে মুছতে।))
|
আলোঃঃ আপনি কখনই আমাকে ভালোবাসেন বলেননি। বলেছেন সব বেবির জন্য। আপনি প্রথম দেখাতে আমাকে সব বলতে পারতেন কিন্তু আপনি তা না করে আমাকে নানাভাবে মিথ্যে বলেছেন। আমি তারপরও আপনাকে ভালোবেসেছি কিন্তু আপনি? আপনি আমার একটা ভুলকে ক্ষমা করে আমাকে নিজের করে নেননি। আমার কি কষ্ট হয় না? হয়। কিন্তু আপনি বুঝেননা। বুঝলে কষ্ট দিতেন না।
|
ভোরঃঃ হুম। তোমার কষ্ট হয়। সবার কষ্ট হয়। হয় না শুধু আমার। আমিতো পাথর। আমার কষ্ট বলতে কিছু নেই। আমার কারনে তোমার এতো কষ্ট? ওকে তোমার জীবন থেকে চলে যাচ্ছি তাহলে তো আর কষ্ট হবে না। তাই না?
|
আলোঃঃ চলে তো আপনি আগে থেকেই যেতে চাচ্ছেন.. এটা নতুন কি? আমার প্রভাতীকে হয়তো আপনার নিউ গফ মেনে নিবে না তাই নিয়ে এসেছেন আমার কাছে। এখন একটা অজুহাত দেখিয়ে চলে যেতে চাচ্ছেন নিউ সংসার বাঁধবেন নিউ মানুষের সাথে। এটা বললেই তো হয়! আমি আর বেবি এখন আপনার পথের কাঁটা।
|
ভোর আলোর কথা শুনে দেয়ালে একটা পাঞ্চ দিয়ে হাঁটা দিয়ে চলে যাচ্ছিলো তখন…
আলোঃঃ আহহহ… (পেটে হাত দিয়ে)
|
ভোর আলোর **আহ** শুনে দৌড়ে আলোর কাছে এসে…
ভোরঃঃ আলো তুমি ঠিক আছো? পেইন করছে? (উত্তেজিত হয়ে)
|
আলোঃঃ হুম.. (ভোরের দিকে তাঁকিয়ে)
|
ভোরঃঃ কো—কোথায়? (একধাপ বেশি উত্তেজিত হয়ে)
|
আলোঃঃ এখানে… (বুকে হাত দিয়ে)
|
ভোরঃঃ বুকে পেইন হচ্ছে? চলো ডক্টরের কাছে দ্রুত.. (আরও বেশি উত্তেজিত হয়ে)
|
আলোঃঃ ডক্টরের কাছে যেতে হবে না। আপনি মাথা দিন বুকে ঠিক হয়ে যাবে..
|
ভোরঃঃ না.. (গম্ভীর কন্ঠে)
|
আলোঃঃ ভালোবাসি.. (মৃদু কন্ঠে)
|
ভোরঃঃ———
|
আলোঃঃ আমার ভালোবাসা তাহলে সবসময় মূল্যহীনই আপনার কাছে। (ছলছল নয়নে)
|
ভোরঃঃ চুপপপপ… একদম চুপপপপ.. একদ——-
|
আর বলতে পারলো না… কাঁদতে কাঁদতে আলোকে জড়িয়ে ধরলো। আলোকে জড়িয়ে ধরে কান্নার গতি আরও বারিয়ে দিলো। আলোর বুকটা ধুক করে উঠছে ভোরের কান্না শুনে। আলোও কেঁদে দিলো ভোরকে জড়িয়ে ধরে…
|
ভোরঃঃ এই মেয়ে তোকে যে ভালোবাসি তুই বুঝিস না? সব মুখে বলতে হবে? বুঝতে পারিস না? আমাকে একটুও বুঝিস না। একটুও না।
|
আলোঃঃ হুমমমম.. ভালোবাসলে কি তুই তুই বলতে পারতেন। ভালোবাসেন না বলেই তুই তুই বলেন।(চোখ মুছতে মুছতে)
|
ভোর আলোকে ছেড়ে ভোর উঠে চলে গেলো জানালার কাছে। চোখ মুছে একহাতে গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে রইলো। আলো আস্তে করে নেমে ভোরের হাতের নিচ থেকে গিয়ে ভোরের সামনে দাঁড়ালো।
|
আলোঃঃ ছেড়ে দিয়ে চলে এলেন কেন?
|
ভোরঃঃ ভালোবাসি না আপনাকে তাই..
|
আলোঃঃ সত্যি? (ছলছল নয়নে)
|
ভোরঃঃ হুমমমম… সত্যি।
|
আলোঃঃ ওহ… স—-সরি (কথা গলায় আটকে এলো)
|
বলে হাত দুটো পাগলের মতো নিজের মাথায় দিচ্ছে আর নামাচ্ছে। ভোর আলোর এমন বিহেভ দেখে বুঝতে পারল আলো খুব কষ্ট পেয়েছে… সাথে সাথে ভোর জড়িয়ে ধরে….
|
ভোরঃঃ এই পাগলি এই.. ভালোবাসিতো। অনেক ভালোবাসি। খুব ভালোবাসি।
|
আলোঃঃ ছা—-ছাড়ুন.. (শব্দ ছাড়া চোখ দিয়ে পানি ঝড়ছে)
|
ভোরঃঃ সরি আর ভালোবাসি না বলবো না। সরি..সরি।
|
আলোঃঃ আহ ছাড়ুন… ছাড়ছেন না কেন? (পাগলের মতো বিহেভ করছে ভোরকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে)
|
ভোরঃঃ ছাড়বো না। I love you আলো… I love you so much আলো।
|
আলোঃঃ আমার ঘুম পাচ্ছে ছাড়ুন।
|
ভোরঃঃ I love you too… বলো তারপর..
|
আলোঃঃ নাহ। আপনি সত্যি বলছেন ভালোবাসি না। তারপর আর এসব আসে না.. ছাড়ুন..
|
ভোরঃঃ তুমি i love you too বলবে না?
|
আলোঃঃ নাহ…
|
ভোরঃঃ বলবে না সত্যি?? (রাগীমুডে)
|
আলোঃঃ না। আমি ঘুমাবো ছাড়ুন।
|
ভোরঃঃ তুই বলবি না?? (অগ্নিচোখে)
|
আলো ভোরের চোখ দেখে ভয়ে ঢোক গিলে…
আলোঃঃ I love you too… 3 4 5 6 7 8 9 সব i love you..
|
ভোর আলোকে কোলে নিয়ে বেডে শুয়ে দিলো।
|
ভোরঃঃ ঘুমাও.. আমি সোফাতে শুয়ে পড়বো।
|
আলোঃঃ সোফাতে কেন? বেডে আসুন..
|
ভোরঃঃ বেডে আমার প্রিন্সেস আছে। আমি চাই না আপনারা দুজনের আমার জন্য বিরক্ত হোক। ওকে?
|
আলোঃঃ আমি ঘুমাবো আসুন তাড়াতাড়ি.. (ঝারি দিয়ে)
|
ভোর বেডে এসে শুয়ে পড়লো আর আলো ভোরের বুকের উপর শুয়ে রইল চুপটি করে। কিছুক্ষণ পর….
|
ভোরঃঃ আলো?
|
আলোঃঃ হুম…
|
ভোরঃঃ একটা কথা বলি?
|
আলোঃঃ হুম..
|
ভোরঃঃ ছেড়ে যাবে না তো আমাকে?
|
আলোঃঃ এজীবনে না।
|
ভোরঃঃ উহহ আলো দেখো তো আমার কপালে কিছু কামড় দিলো মনে হয়।
|
আলো সাথে সাথে মাথা উঁচু করে দেখতে গেলো আর ভোর আলোর মাথা ধরে আলোর ঠোঁটজোড়া দখল করলো। আলো অনেকগুলো মাইর দিলো কিন্তু পরবর্তিতে রেসপন্স করলো।
|
৫ মিনিট পর…
ভোরঃঃ মারলে কেন?
|
আলোঃঃ এমন করলেন কেন তাই…
|
ভোরঃঃ আমার বৌ.. আমার যখন ইচ্ছা চুমু খাবো.. তুমি বলার কে? হুহ
|
আলোঃঃ আমার বর.. আমি যখন ইচ্ছা মারবো আপনি বলার কে? হুহহ
|
ভোরঃঃ পাগলি…
|
আলো কিছু না বলে ভোরকে আঁকড়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো আর ভোরও। আর ওদের বেবিও….
|
|
|
চলবে…………
((ভুল-ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ? ))

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে