Love At 1st Sight-Season 3 Part – 70 [ Ending part ]

0
9727

♥Love At 1st Sight♥
~~~Season 3~~~

Part – 70 Ending part

Writter : Jubaida Sobti

সময় ঘনাতে লাগলো, মান-অভিমান সব ভুলে এই রাতটিতেই রাহুল তার স্নেহাকে নিজের করে নিচ্ছিলো,

তবে স্নেহাকে তো অনেক আগেই রাহুল তার নিজের করে নিয়েছে, কিন্তু তাও যেনো কোনো একদিকের ভালোবাসার ঘাটতি রয়েই গিয়েছিলো, আজ সেই ভালোবাসার ঘাটতিটুকুও যেনো পরিপূর্ণতা লাভ করছে দুজনের!

____পরদিনের ভোর হলো,

সাদা পর্দার আড়ালে জানালার সরু পথ দিয়ে সূর্যাস্তের আলো ছুয়ে আসছে রুমে, আবছা আবছা চোখ খুললো স্নেহাও, স্নিগ্ধ হলদেটে সূর্যের কিরণটুকু চোখের উপর পড়তেই চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলে মিষ্টি একটি হাসি দিলো স্নেহা!

এতো মধুর সকাল এর আগে কখনোই অনুভব করা হয়নি স্নেহার, ভালোবাসাময় রাতের সৃতিটুকু ভেসে যাচ্ছিলো চোখের আমেষে, তবে অনেকটা বেশিই শান্তি লাগছিলো স্নেহার সৃতিগুলো মনে করে করে ভেবে যেতে,ঘুমন্ত রাহুলকে দেখবে বলে কম্বলের ভেতর থেকে হাতটা উঠিয়ে পাশ মুড়ে তাকাতেই হঠাৎ চমকে গেলো স্নেহা,
হাতে মাথা ভর করে রেখে, মুখে সেই পুরনো তেডি স্মাইল দিয়ে ড্যাবড্যাবিয়ে একধ্যানে তার দিকই তাকিয়ে আছে রাহুল, চোখ দুটোর চাহনিতে এখনো সেই নেশাচ্ছন্ন অবস্থা, সামনের খাড়া চুল গুলো কপালের উপরে এক ভাজ হয়ে নেমে আছে, বাহ! সকাল সকাল এই মিষ্টার হ্যান্ডসামকে দেখতে স্নেহার বেশ দারুণই লাগছিলো, ইচ্ছে হচ্ছিলো এইভাবে যদি সে সারাজীবনই তাকিয়ে থাকতে পারতো, তবে তা কিভাবে সম্ভব সেটা তো তার দুষ্টু রাহুল বলে কথা,স্নেহার চোখাচোখি হতেই ভ্রু দুটো নাচিয়ে চোখ টিপ মেরে বলে উঠলো…

রাহুল : কি ভাবছিলে স্নেহা?

দু-সেকেন্ডের ও বেশী সময় তাকিয়ে থাকা সম্ভব হলো না স্নেহার,লজ্জিত একটি হাসি দিয়ে কম্বল টেনে তাড়াতাড়ি আবারো ওপাশ ফিরে গেলো, কি ভাবছিলো তা কিভাবে বলবে রাহুলকে, তাই চুপটি করেই রইলো স্নেহা, রাহুল ও স্নেহার লজ্জিত কান্ড দেখে মুচকি হেসে কম্বলের ভেতর থেকে স্নেহার পেটে হাত বুলিয়ে জড়িয়ে ধরে স্নেহার ঘাড়ের উপর মাথা লাগিয়ে শুয়ে পড়লো,

স্নেহা : আপনি ঘুমাননি?

রাহুল : নাহ! তোমার ঘুমন্ত চেহেরাটা দেখছিলাম, মাশাল্লাহ স্নেহা এতো সুন্দর করে কিভাবে ঘুমাও বলো তো? নিশ্বাসটাও কি আলতো করে করে নাও, উফফফ! ইচ্ছে তো করছিলো যেনো তোমায় একদম খেয়েই ফেলি,

স্নেহা : তাই?

রাহুল : হুম, হুম তাই! [ বলেই রাহুল তার দাড়ি দিয়ে স্নেহার গলায় স্লাইড করতে লাগলো ]

রাহুল : স্নেহা! তোমার কি মনে হচ্ছে না, আজ সকালটা কেমন যেনো অন্যরকম অনুভূতিপ্রবণ! [ মৃদু হেসে পাশ মুড়ে রাহুলের দুগালে আলতো করে হাত বুলিয়ে বলে উঠলো ]

স্নেহা : জানিনা কেনো, কিন্তু তাও বলবো,আমার লাইফের সবচেয়ে স্পেশাল সকালই মনে হচ্ছে আমার! [ কিছু বললো না রাহুল, ব্লাশিং হয়ে হেসে স্নেহার ঠোটে আলতো একটি চুমু দিয়ে, নাক দিয়ে স্নেহার গলায় স্লাইড করে সেই মিষ্টি ঘ্রাণ উপভোগ করতে লাগলো ]

স্নেহা : রাহুল!

[ মাথা উঠিয়ে স্নেহার নাকে নাক ঘষে চোখের দিক তাকালো রাহুল ]

স্নেহা : উঠতে হবে আমায়!

রাহুল : ছ’টা বাজে মাত্র স্নেহা, উঠতে হবে মানে?

স্নেহা : হোহ! আর নয়তো কি, এমনিতেও আমার উচিত সবার আগে উঠা, সবার জন্য নিজ হাতে ব্রেকফাস্ট রেডি করা,

রাহুল : শাট-আপ ওকে? তোমাকে না ঐ যে স্টারপ্লাসের সিরিয়ালগুলোর বউদের মতো হতে হবে না, যেমন আছো তেমনই পার্ফেক্ট! [ স্নেহা কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো রাহুলের কথা শুনে ]

– আমি জোকস্ বলিনি স্নেহা!

স্নেহা : জোকস্ এর চেয়েও ফানি ছিলো রাহুল!

রাহুল : অহ রিয়েলি!

স্নেহা : ইয়াহ!

রাহুল : [ হেসে ] ইয়াহ তাই না? দেখাচ্ছি তোমার ইয়াহ…

স্নেহা : রাহুল! স্টপ ইট!

শুনলো না রাহুল স্নেহার বারণ, স্নেহাকে জড়িয়ে তুলে এপাশ থেকে অন্যপাশে এনে শুয়ালো,নিজের শরীরের ভারটুকু স্নেহার শরীরের উপরই ছেড়ে দিলো, মুখের উপর চলে আসা স্নেহার চুল গুলো আংগুল দিয়ে সরিয়ে কানে গুজে দিলো, কপালে একটি আলতো করে চুমু বর্ষণ করলো, এর মাঝে স্নেহা ও রাহুলের গালে তার ঠোটের মিষ্টি একটি স্পর্শ ছোয়ালো, নিমিষেই চোখ বন্ধে মুচকি হাসলো রাহুলও, হঠাৎ স্নেহার হাতের ধাক্ষায় ব্যালেন্স হারিয়ে পাশে শুয়ে পড়লো, আর সাথে সাথে স্নেহাও কিটকিটিয়ে হেসে তাড়াহুড়ো করে উঠে পালাচ্ছিলো, অমনিই রাহুল ও স্নেহার হাত টেনে ধরে ফেলে,

স্নেহা : আরেহ! ছাড়ুন রাহুল!

রাহুল : কই যাও স্নেহা আরেকটু আদর করবো তো,

স্নেহা : আরেকটু আদর করার ও দরকার নেই! ছাড়ুন,

রাহুল : এক চুটকি আদরকি কিমাত, তুম কিয়া জানো স্নেহা বেবী, ঈশ্বরকা আশীর্বাদ হতি হে এক চুটকি আদর,

স্নেহা : [ হেসে ] হোয়াট রাহুল? ইটস্ নট এক চুটকি আদর, ইটস্ এক চুটকি সি্ন্দুর!

রাহুল : আই নোও মাই মিসেস! বাট এই মুহূর্তের জন্য আমি যেটা বলেছি ঐটাই পার্ফেক্ট, আর তোমাকে আমার ডায়লগ ঠিক করতে বলিনি কাছে আসতে বললাম! [ স্নেহা মুচকি হেসে রাহুলের হাত থেকে তার হাত টেনে ছুটিয়ে ওয়াসরুমের দিক দৌড় দিলো ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] হাজবেন্ড এর কথা না শুনলে,গুনাহ হবে!

– স্নেহাআআআ!

ওয়াসরুমের দরজা লক করে মিটমিট করে হাসতে লাগলো স্নেহা ও, ফ্রেশ হয়ে শাওয়ার শেষ করে ওয়াসরুমের দরজা খুলে মাথাটা হালকা একটু বের করতেই খাটের দিক লক্ষ্য করলো, কিন্তু রাহুল নেই খাটে, এদিক-ওদিক চোখ বুলিয়ে উকি দিতেই দেখে ওয়াসরুমের দরজা বরাবর সোজাসোজি দূরত্বে, আলমিরার দিক, হাতে-হাত বটে, এক পা তুলে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, গায়ের পরনে একটা থ্রি-কুয়াটার প্যান্ট ছাড়া আর কিছুই নেই মিষ্টার তেডি স্মাইলের, সামান্য শকড হলেও হাসিটা বেশ পেলো স্নেহার, এইভাবে উদ্ভট ভাবে কেউ তাকিয়ে থাকে নাকি! নাজানি মাথার মধ্যে কি পাকিয়ে রেখেছে! তবে তাও কি আর করার স্নেহার, জামা আনতে তো ভুলে গিয়েছে, রাহুলই এখন এক মাত্র উপায়!

রাহুল : এইভাবে চোরের মতো উকি দিচ্ছো কেনো বলো তো?

স্নেহা : এক্সুলি আমি জামা আনতে ভু..ভুলে গিয়েছি! একটু কষ্ট করে আলমিরা থেকে যদি দিতেন!

রাহুল : হুহ! আমি কেনো দেবো তোমার জামা! তুমিই এসে নিয়ে যাও!

স্নেহা : হোহহ!

রাহুল : হোহহ! আমি এই অবস্থায় রাহুল কেমনি? আপনার মাথা ঠিকাছে, আমার লজ্জা করেনা বুঝি?

– এটাই বলতে ছিলা রাইট? [ মিটিমিটি হাসতে লাগলো স্নেহা ]

রাহুল : বাট! ইউ অলোওয়েজ ফরগেট ইট স্নেহা! নাও আম ইয়র হাজবেন্ড!

– [ with tedi smile ] আর এমনিতেই আমি তো গতকাল রাতে সব… [ বলতেই স্নেহা ধুম করে ওয়াসরুমের দরজাটা বন্ধ করে দেই, রাহুল ও মুচকি হেসে দেই স্নেহার কান্ড দেখে, পাঁচ-দশ সেকেন্ড পর স্নেহা আবারো ধীরেধীরে দরজাটা খুলে লজ্জিত ভাব নিয়ে উকি দিলো রাহুলের দিক, এখনো তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে রাহুলটা, লজ্জায় যেনো মরেই যেতে মন চাচ্ছিলো স্নেহার, তাড়াতাড়ি পলক সরিয়ে নিলো ]

রাহুল : কোন জামাটা দিবো?

স্নেহা : সা..সামনেই আছে সব শাড়ী, যে কোনো একটা দিলেই হবে! [ মৃদু হেসে রাহুল আলমীরা খুলে, কয়েকটা বেছে, কালো রঙেরই একটি শাড়ী এগিয়ে এনে দিলো স্নেহাকে ]

স্নেহা : [ বিরবির করে ] কালো রঙ যেনো ওনার শিরায় শিরায়,

রাহুল : কি বললে?

স্নেহা : নানাহ, কিক..কিছুনা! এইদিকে দিন! [ বলেই হাত এগিয়ে দিলো, রাহুল ও মুচকি হেসে স্নেহার হাতে শাড়ীটি না দিয়ে আলতো করে একটি চুমু বসালো, শকড হয়ে স্নেহা তাড়াতাড়ি হাতটা ভেতরে ঢুকিয়ে নিলো ]

রাহুল : রুমে এসেই পড়তে পারবে স্নেহা!

স্নেহা : প্রয়োজন নেই! আ..আপনি এইখানেই দিন!

রাহুল : হাজবেন্ড এর কথা না শুনলে গুনাহ হবে স্নেহা!

স্নেহা : তাই নাকি? আগে তো জানতাম না!

রাহুল : [ হেসে ] দেখো স্নেহা! তুমি বেড়িয়ে না আসলে কিন্তু, আমি ভেতরে আসবো!

– অব্যশই আসতেই পারি, কজ আমি এখন তোমার হাজবেন্ড হই, জামাই হই, স্বামী হই সো্! [ বলতেই স্নেহা তাড়াতাড়ি ওয়াসরুমের দরজা লাগাতে যাবে, তখনিই খেয়াল করে দরজা আর লাগানো যাচ্ছে না, তারমানে রাহুল ওপাশ থেকে আটকে রেখেছে ]

রাহুল : মিসেস্ রাহুল! আপনার শক্তি কি আমার চেয়েও বেশী?

স্নেহা : দে..দেখেন আপনি..

আর কিছু বলতে পারলো না স্নেহা, হুট করেই রাহুল ঢুকে এলো ওয়াসরুমের ভেতর,মুগ্ধকর চোখে তাকালো স্নেহার দিক, সাদা টাওয়েলটা গায়ে পেছিয়ে রেখেছে স্নেহা, ভেজা চুল গুলো থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে, সব মিলিয়ে স্নেহাকে অনেক হটি লাগছিলো রাহুলের, এদিকওদিক তাকিয়ে ঢোগ গিলছে স্নেহা বারবার, তা দেখে মৃদু হাসলো রাহুল, শাড়ীটা এগিয়ে দিয়ে বলে উঠলো

রাহুল : ভয় পাওয়ার দরকার নেই, কিছু করবো না আমি, এই নাও শাড়ী! রুমে গিয়ে পড়ে নিও!

স্নেহা মাথা ঝুকিয়ে শাড়ীটা হাতে করে নিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছিলো, তখনি কানের দিক মাথা এগিয়ে ফিসফিস করে বলে উঠলো,

রাহুল : বাট! স্নেহা, ইয় লুকিং সো্ওওওও হট!

তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে ওয়াসরুমের দরজাটি ধুম করে বেধে দিলো স্নেহা, হেসে উঠলো রাহুল ও, শাড়ী পড়তে পড়তেই অর্ধেক সময় পার করিয়ে দিলো স্নেহা, যেভাবে পেরেছে মোটামুটি সেভাবেই পড়ে নিলো, ড্রেসিং এর দিক এগিয়ে গিয়ে কাজল আর হালকা একটু লিপস্টিক লাগিয়ে মাথা আচড়ে নিচ্ছিলো, ততোক্ষণে রাহুল ও ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে পড়লো, আড়চোখে একবার তাকালেই দেখে কালো একটি প্যান্ট পড়ে গলায় টাওয়েলটা ঝুলিয়ে চুল গুলো হাত দিয়ে ঝেড়ে ঝেড়েই আলমীরার দিক এগুচ্ছে রাহুল, চোখাচোখি হতেই স্নেহা তাড়াতাড়ি নজরটা সরিয়ে নিলো রাহুলের দিক থেকে, রাহুল ও বুঝতে পেরে কিছু বললো না, তেডি স্মাইল দিয়ে আলমীরা থেকে কাপড় বের করে তৈরী হতে লাগলো,

কানের ঝুমকা গুলো লাগাতে লাগাতে হঠাৎ পেছনে কারো উপস্থিত ঠের পেলো স্নেহা,আয়নার দিক তাকাতেই দেখে রাহুল, কালো জ্যাকেট, ভেতরে কালো টি-শার্ট, কালো হ্যান্ড-ওয়াচ, মুখে সেই তেডি স্মাইল দিয়ে পকেটে হাত রেখে দাড়িয়ে আছে, ও হ্যাঁ বুকের মাঝে কালো সানগ্লাসটাও ঝুলিয়ে রাখতে কিন্তু ভুলেনি, নিজের অজান্তেই হঠাৎ মুখটা হা হয়ে গেলো স্নেহার, থুতনিতে হাত দিয়ে স্নেহার হা হয়ে থাকা মুখটা লাগিয়ে দিয়ে বলে উঠলো,

রাহুল : উইন্টারে মশা বেশী হয়, যেকোনো মুহূর্তেই ঢুকে যেতে পারে,

লজ্জা অনুভব করে তাড়াতাড়ি লাগানো কানের ঝুমকা গুলো নিয়ে আবারো ঘাটাঘাটি করতে লাগলো স্নেহা,নাকে সেই অস্থিরতা মেশানো স্মেলটি ভেসে এলো, আড়চোখে পাশে রাহুলের দিক তাকাতেই দেখে পার্ফিউম লাগাচ্ছে, স্নেহা তাকিয়েছে ঠের পেতেই রাহুল ও চোখ টিপ মেরে উঠলো স্নেহাকে, নাহ আর এইদিকে দাড়িয়ে থাকা সম্ভব না স্নেহার পক্ষে, দীর্ঘ একটি শ্বাস ফেলে চলে যাচ্ছিলো, অমনিই রাহুলও স্নেহার কোমোড়ে হাত রেখে নিজের দিক ফিরিয়ে কাছে টেনে নিলো,

রাহুল : হোয়াই সো্ কিউউউট? [ ব্লাশিং হতে লাগলো স্নেহা ]

– সো্ এডোরেবল চিকস্ [ বলেই স্নেহার গালে হাত বুলিয়ে দিলো ]

স্নেহা : [ রাহুলের নাকটা টেনে দিয়ে ] বাই দ্যা ওয়ে, রাহুল!

রাহুল : হুমম?

স্নেহা : হোয়াই ডো ইউ অলোয়েজ ওয়ার ব্লাক?

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] জাষ্ট ইন কেজ ইউ ডাই!

মুচকি হাসলো স্নেহা,

রাহুল : [ দীর্ঘশ্বাস ফেলে ] আই কান্ট এক্সপ্লেইন হাউ আই এম ফিলিং রাইট নাও স্নেহা, এক্সুলি আই কান্ট থিংকিং এবাউট ইউ!

– সো্

স্নেহা : হুমম সো্….?

রাহুল : আই এম ইয়ারনিং ফর ইউর কিস্! [ বলেই কপালে কপাল লাগিয়ে স্নেহার ঠোটের দিক তাকিয়ে, দু-হাত দিয়ে স্নেহার কোমোড়ের দু-পাশে স্লাইড করে জড়িয়ে ধরে নিলো ]

স্নেহা : ই…ইয়াহ শিয়র! বাট নট নাও!

বলেই দৌড়ে চলে যাচ্ছিলো, রাহুল ও আর কিছু না বলে পাশ ফিরে হুট করে স্নেহাকে কাছে টেনে নিয়ে ঠোটের স্পর্শ ছুয়ে দিলো, হাতের মুঠোতে রাহুলের জ্যাকেট মুচড়ে ধরে ফেললো স্নেহা! গভীর
চুম্বনের প্রতীক্ষার উত্তাপে ডুবে যাচ্ছিলো দুজন! তুমুল আহতের ঠোটজোড়া খাণিক্ষণ পরই ছাড়িয়ে নিলো স্নেহা রাহুলের কাছ থেকে,

রাহুল : ইউ ওকে?

স্নেহা : হ্যা! [ বলেই মৃদু হেসে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে, নিচে নামলে দেখে দাদী সোফায় বসে আছে, গীতালি টেবিলে ব্রেকফাস্ট সাজাচ্ছে ]

স্নেহা : গুড মর্নিং দাদী!

দাদী : গুড মর্নিং! তা এতো সকাল সকাল উঠে এলে কেনো স্নেহা? আরো কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নিতে!

স্নেহা : আরেকটু পরই ৯’টা বাজবে দাদী! আর আমার এমনিতেও সকাল সকাল উঠতে পছন্দ!

দাদী : বাহ! মহারাজ ওতো দেখি আজ সকাল সকাল উঠে তৈরী! [ বলতেই স্নেহা পেছন তাকিয়ে দেখে রাহুলও আসছে ]

রাহুল : গুড মর্নিং! দাদী

দাদী : আরেহ! কপালে কি হয়েছে তোর রাহুল?

রাহুল : অহ! ওটা তেমন কিছুনা, ছোট-খাটো একটু এক্সিডেন্ট করেছিলাম!

দাদী : এক্সিডেন্ট, কিভাবে? কখন হয়েছে? আমাকে কিছু বলিসনি কেনো?

রাহুল : ওহো! দাদী! সামান্য একটুই! এতো টেনশন করো নাতো! চলো ব্রেকফাস্ট করবে আমার তো অনেক ক্ষিধে পেয়েছে!

দাদী : পাবেই তো ক্ষিধে, গতকাল রাতের ডিনারগুলো তো সব ঐরকমই পড়েছিলো! একটু ও নড়েনি কোনো খাবার! কেনো করিসনি তোরা ডিনার বলতো?

রাহুল : ডি..ডিনার! হ্যাঁ.. আরে স্নেহা বলোনা? কেনো করোনি ডিনার? [ স্নেহা আড়চোখে তাকালেই দেখে চোখ টিপ মেরে, জিহ্বা কামড়ে রেখে হাসছে রাহুল ]

স্নেহা : আ..আমি বলবো ?

দাদী : বেচারিটাও কেমনি করবে ডিনার তোর জ্বালায়? টেনশনে তো গতকাল মেয়েটার জানই বেড়িয়ে যাচ্ছিলো, তারমধ্যে তুই তো এসেছিস মাথাটাও ফাটিয়ে, নিশ্চয়ই টেনশন করতে করতে…

রাহুল : ওকে ওকে দাদী! ডিনার এর কথা ছাড়ো এবার ব্রেকফাস্টটা তো অন্তত করতে দাও!

বলেই দাদীকে টেনে নিয়ে চলে গেলো টেবিলের দিক, স্নেহা ও মৃদু হেসে এগিয়ে গেলো, দাদী আর রাহুলকে ব্রেকফাস্ট সার্ভ করে দিয়ে নিজেও প্লেট এগিয়ে নিয়ে বসলো, রাহুল মুচকি মুচকি হেসে ইচ্ছামত যা যা খাবার পারছে সবই স্নেহার প্লেটে তুলে দিচ্ছে, হা করে তাকিয়ে আছে স্নেহা রাহুলের দিক, দুজনেই ফিসফিস করে বলতে লাগলো,

রাহুল : কি হলো?

স্নেহা : মাথা ঠিক আছে আপনার? এতোকিছু কিভাবে খাবো আমি?

রাহুল : ধীরেধীরে খাও স্নেহা! পারবা, আর না পারলে চারদিক হেটে হেটে খাও খাওয়া হয়ে যাবে, ও হ্যাঁ! আর নয়তো দৌড়ে দৌড়ে ও খেতে পারো, দুটো লাভ, একদিকে হজম হবে আরেকদিকে পেটও ভরবে! [ জোড়ে একটি চিমটি দিলো স্নেহা! রাহুলের কথা শুনে ]

দাদী : [ রাহুলের কান মুচড়ে ধরে ] তুই ওকে বিরক্ত করছিস কেনো বলতো?

রাহুল : আরেহ দাদী একটু ও শক্তি নেই, তাই বললাম খেতে!

স্নেহা : বলেছে আপনাকে আমার শক্তি নেই! আই হেভ বেটার এনার্জি মোর দেন ইউ!

রাহুল : অহ রিয়েলি? তাইতো ওয়াসরুমের দরজা বন্ধ করতে পারছিলে না?

স্নেহা : ও..ওটা তো আমি ইচ্ছে করেই ছেড়ে দিয়েছিলাম, কারণ আপনি নিজেকে আমার কাছ থেকে হেরে যেতে দেখলে কষ্ট পাবেন!

রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] তাই?

– আরো কিছু বলবো নাকি?

আড়চোখে একবার রাহুলের দিক তাকিয়ে ঢোগ গিললো স্নেহা, দাদীর দিক তাকালে দেখে দাদীও মৃদু হাসছে! কিছু করার নেই আর স্নেহার, মুখে আর পারা যাবে না রাহুলের, লজ্জার তো মোটেও লাগাম নেই এই মিষ্টার তেডি স্মাইলের, কি বলতে কি বলে ফেলে, তাই চুপচাপ ব্রেকফাস্ট খাওটাই বেটার ভেবে খাবার খাওয়া শুরু করে দিলো, হাসছে রাহুল ও স্নেহার চেহেরার হাল দেখে,ব্রেকফাস্ট শেষ করতে না করতেই ফোনটা বেজে উঠলো রাহুলের! পকেট থেকে ফোন হাতে নিয়ে এক্সকিউজ মি! বলে একপাশ সরে গেলো, কিছুক্ষণ কথা বলেই আবার টেবিলের দিক ফিরে এলো,

রাহুল : স্নেহা! তোমার ব্রেকফাস্ট করা শেষ?

স্নেহা : হ্যাঁ! শেষ…

রাহুল : তাহলে চলো,

স্নেহা : কোথায়?

রাহুল : দাদী! আমি স্নেহাকে নিয়ে একটু বেরুচ্ছি! লাঞ্চের টেনশন করোনা বাইরেই করে নিবো!

দাদী : আচ্ছা! সাবধানে যাস

[ রাহুল স্নেহার হাত ধরে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ]

স্নেহা : কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন রাহুল ?

রাহুল : শিসসস! স্নেহা নো কুয়েশ্চন!

স্নেহা : কিন্তু…

বলতেই রাহুল স্নেহার মুখে আংগুল রেখে চুপ করিয়ে দেই, গাড়ির দরজা খুলে দিলে আড়চোখে একবার রাহুলের দিক তাকিয়ে চুপচাপ উঠে বসে পড়লো স্নেহা, মিটিমিটি হাসছে রাহুল, গন্তব্যে পৌছাতেই দেখে খোলামেলা মনমুগ্ধকর একটি জায়গা, যেখানে রয়েছে সবুজ গাছপালার সারি, এবং প্রত্যেকটি গাছের নিছেই চেয়ার এবং টেবিল দেওয়া আছে! দরজা খুলে নেমে দাড়ালো স্নেহা! রাহুল ও নেমে স্নেহার পাশে এসে দাড়ালো,

স্নেহা : ওয়ায়াওও!

রাহুল : ইউ লাইক ইট?

স্নেহা : অফকোর্স আই লাইক ইট, আই লাভ দিস্ ম্যাজিকেল এয়ার! [ বলেই দু-হাত দুদিকে ছড়িয়ে চোখ বন্ধ করে শীতল হাওয়া উপভোগ করতে লাগলো, মুচকি হাসলো রাহুল স্নেহার কান্ডে, আশেপাশে একবার তাকিয়ে হুট করেই স্নেহার গালে একটি চুমু খেলো, চমকে উঠে চোখ খুলে ফেললো স্নেহা ]

রাহুল : কাম! [ বলেই হাত ধরে টেনে নিয়ে এগুতে লাগলো স্নেহাকে ]

স্নেহা : অমনিই হ্যাঁ? যেখানে সেখানেই শুরু হয়ে যান?

রাহুল : হোয়াট ডো ইউ মিন যেখানে সেখানে মানে? আমার মন যখনই চাইবে তখনই কিস করবো ব্যাস!

স্নেহা আরো কিছু বলতে যাবে তখনি রাহুল স্নেহার কাধে ধরে ঘুরিয়ে আংগুলের ইশারায় সামনের দিক দেখিয়ে দিলো, সারপ্রাইজড হলো স্নেহা, মার্জান, জারিফা, এবং শায়লা দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো একত্রে! রিদোয়ান এবং আসিফও এগিয়ে আসলো, হাই/হ্যালো করলো সবাই সবাইকে,

জারিফা : ইউ কান্ট ইমাজিন স্নেহা, হাউ মাচ আই মিসড ইউ! [ বলেই কাদো কাদো ভাব নিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো স্নেহাকে ]

স্নেহা : আই অলসো মিসড ইউ!

জারিফা : [ ফিসফিসিয়ে ] লাষ্ট নাইট কি কি করেছিস স্নেহা?

স্নেহা : জারিফাআ!

জারিফা : হিহি! রিলেক্স রিলেক্স!

রাহুল : হোয়াট হ্যাপেন গাইস্?

জারিফা : নো নো নাথিং নাথিং! [ মার্জান বুঝতে পেরে মুখ লুকিয়ে হেসে উঠলো ]

আসিফ : ওকে গাইস্! কাম এন্ড সিট [ সবাই এগিয়ে গিয়ে এক এক করে চেয়ারে বসলো, এদিক ওদিক উকি দিচ্ছিলো শায়লা ]

মার্জান : ও হ্যালো কাকে খুজছিস?

শায়লা : কক..কই নাতো কাউকেই না! [ বলেই সে ও এগিয়ে এসে বসে পড়লো, বাকিরা বুঝতে পেরে হাসতে লাগলো ]

রাহুল : কারো অপেক্ষা করছিলা নাকি?

শায়লা : আরেহ না নাহ! এঞ্জয় ইউর কফি গাইস্! [ মৃদু হেসে কফির গ্লাসে চুমুক দিলো রাহুল ]

শায়লা : আ..আর কেউ আসেনি তোমাদের সাথে, আই মিন নে..নেহাল? ও হ্যাআয়া ও তো অষ্ট্রেলিয়া চলে গেছে, ও কিভাবে আসবে? আমিও কিসব বলছি! খাও খাও সবাই কফি! বেষ্ট ফর ইউর হ্যালথ হুম হুম!

– সত্যিইই চলে গেছে? নেহাল?

– আ…যাবেই তো যাবেই না? অষ্ট্রেলিয়ায় তো যাবে!

মার্জান : শায়লা! মাই ডিয়ার আমার হাতের কফি গুলা কিন্তু এখনো তরতাজা গরম, কখন যে তোর মুখে ছুরে মারি গ্যারান্টি নেই!

শায়লা : রিলেক্স! রিলেক্স!

রাহুল জারিফাকে ইশারা করলো শায়লার পাশ থেকে উঠে স্নেহার পাশের সিটে এসে বসতে,রাহুল উঠে শায়লার পাশে এসে বসলো,

শায়লা : আ..হোয়াট হ্যাপেন গাইস্! ইউ ওকে?

রাহুল : [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ] উই আর ডেফিনিটলি ওকে! [ শায়লার হাত থেকে কফির গ্লাসটা নিয়ে টেবিলে রেখে ]

– লিসেন্ট! কষ্টকে মনের মধ্যে চাপিয়ে রেখে দিলে মনটাও তেতো হয়ে যায়, কষ্টটা মনের মধ্যে বাস করতে করতে আরো বড় হতে থাকবে,

– শায়লা! ইউ কেন শেয়ার উইথ আস্

শায়লা : উহু! এখন আর শেয়ার করে কি লাভ, চলেই তো গেছে!

– অনেক তো বকবক করেছিলো, এই করবে সেই করবে, হুহ কচুটা করেছে!

রাহুল : তুমিও তো ওকে যেতে বাধা দাওনি!

শায়লা : আরে আমি কিভাবে ওকে যেতে বাধা দিবো, কোথায় ও কোথায় আমি? আমাদের স্ট্যাটাস একদমই যায় না, তারমধ্যে ওর মা ও কখনো মেনে নেবে না এটা!

রাহুল : ইডিয়ট! ভালোবাসায় সবার কথা চিন্তা করে পারা যায় না, সবার সবাইকে ভালো লাগবে এমনটাও তো জরুরী না,

– তুমি বাকিদের কথা নয়, নিজের মনের কথা শুনো, তোমার মন কি চাই? [ চোখে জল এসে জমে গেছে শায়লার ]

– দেখো শায়লা, এখনো কিছু বিগ্রে যায়নি, তুমি চাইলে সবই সম্ভব!

শায়লা : [ কাদো কন্ঠে ] আরে কিভাবে যায়নি বিগ্রে? আমিতো ভেবেছি ও যাবেনা অপেক্ষা করবে! কিন্তু হলোটা কি?

– ভালোবাসা হয়তো আমার জন্য আসেইনি, তাইতো বারবার হারাতে হয়!

রাহুল : সো্ তুমি ওকে ভালোবাসো তো তাই না?

শায়লা : আ..আমার মনে হয় আমাদের টপিকটা চেঞ্জ করা উচিৎ রাহুল! কামঅন লেটস্ এঞ্জয় আওয়ার কফি!

রাহুল : কফি ঠান্ডা হয়ে গেছে,আরেকটা অর্ডার করি!

শায়লা : ও..ওকে! হুমম!

রাহুল : আমি কিন্তু আন্সার পাইনি শায়লা এখনো!

শায়লা : আরেহ! রাহুল, জানটায় নিয়ে নিবা নাকি আমার? এমনিতেই শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে!

রাহুল : দরকার পড়লে নিবো আরকি!

শায়লা : হোয়াট?

রাহুল : কিডিং সুইটহার্ট! কামঅন বলে দাও না,

জারিফা : ♪ যাব পিয়ার কিয়া তো, ডারনা কিয়া, যাব পিয়ার কিয়া তো ডারনা কিয়াআআ ♪

মার্জান : ওয়েদারটা অনেক ভালো, বেসূরা গান করে এইখানের মহল নষ্ট করিস না জারিফা!

জারিফা : আরে আমি তো জাষ্ট ওকে সাহস প্রদান করছিলাম! হুহহ! [ সবাই মিটিমিটি হাসতে লাগলো ]

রাহুল : ভালোবাসতে পারবা কিন্তু বলতে পারবা না, নিজেও কষ্ট পাবা ওকে ও কষ্ট দিবা! দিস ইজ নট ফেয়ার শায়লা,

– তোমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসলে, তোমাদের দুজনের বন্ডিং স্ট্রং থাকলে, কারো রাইট নেই তোমাদের স্ট্যাটাস জাডজ্ করার ওকে!

শায়লা : [ কাদো কন্ঠে ] এখন তো কিছু করার নেই রাহুল, ও তো চলে গেছে!

রাহুল : পেতে চাও ওকে?

শায়লা : উহ! নিজের চেয়েও বেশি!

– জানিনা কখন কিভাবে এই কদিনের মধ্যেই এতো ভালোবেসে ফেললাম! [ চোখ মুছে বাকিদের দিক তাকাতেই দেখে মিটিমিটি হাসছে সবাই, রিয়েলাইজ করলো শায়লা সে কি বলে ফেললো, লজ্জাটাও বেশ পাচ্ছিলো এইবার ]

মার্জান : শায়লা! মাই ডিয়ার, মাই জানেমান, একটু পিছে মুড়েই তো দেখো!

শায়লা : পিপ..পিছে? [ বলেই পাশে রাহুলের দিক তাকালো, রাহুল ও মৃদু হেসে মাথা নাড়ালো, তাড়াতাড়ি উঠে দাড়িয়ে পিছন ফিরলো শায়লা, পকেটে হাত রেখে মুখে ব্লাশ করা হাসি মেখে দাঁড়িয়ে আছে নেহাল ]

শায়লা : আ..আপনি অ..অষ্ট্রেলিয়া? [ নেহাল মাথা নাড়ালো যায়নি বলে, এইবার চোখের জল গড়িয়ে পড়তে লাগলো শায়লার, এগিয়ে এসে চোখের জল মুছে দিলো নেহাল ]

– আ..আমি যা বলেছি এতোক্ষণ, আপনি শু..শুনেছেন? [ মুচকি হেসে শুনেছে বলে মাথা নাড়ালো নেহাল, লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেললো শায়লা ]

নেহাল : লিসেন্ট! ডোন্ট বি এফ্রেইড, আম অলোয়েজ উইদ ইউ!

[ রাহুল ভ্রু নেড়ে ইশারা করছে নেহালকে জড়িয়ে ধরার জন্য ]

নেহাল : নাও?

শায়লা : হ্যা?

নেহাল : না না,তোত..তোমাকে না! হুমম! সো্ নার্ভাস্ ইয়াহ!

– কেক..কেন আই হা..হাগ ইউ শায়লা?

রাহুল : স্টুপিড!

নেহাল : ও…ওকে ওকে! হুম! [ বলেই হুট করে আই লাভ ইউ শায়লা বলে জড়িয়ে ধরে ফেললো, হাসতে লাগলো বাকিরা নেহালের কান্ড দেখে ]

মার্জান : আয়ে হায়ে, আরেকটি লাভ বার্ড ক্রেট হয়ে গেছে!

আসিফ : [ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ] তকদির আমারটাই খুলছে না শুধু!

মার্জান : হুমমম! আমাদের পক্ষ থেকে এক বালতি সমবেদনা গ্রহন করবেন প্লিজ [ মৃদু হাসলো আসিফ ]

রিদোয়ান : গাইস্ আজকের খুশি সেলেব্রেট করার জন্য হলেও তো অন্তত একটা ড্রিংক্স হয়ে যাওয়া উচিৎ!

জারিফা : আচ্ছা তাইইইই?

রিদোয়ান : আরে নাহ! আমি তো মজা করছিলাম!

মার্জান : আমার তরফ থেকে আপনার জন্য অনেক আফসোস গ্রহণ করবেন রিদ! [ হেসে উঠলো সবাই ]

নেহাল : কামঅন গাইস্! আজকের একটা দিনটাই তো! বেশি না অল্প একটু! শুধুমাত্র সেলেব্রেট করার জন্য! [ আসিফ হেসে মার্জানের দিক তাকিয়ে চোখ মারলো, মার্জানের ও মনে পড়ে গেলো ড্রিংক্স খেয়ে সে কি কি না কান্ডই করেছিলো সেদিন, হঠাৎ চেচিয়ে বলে উঠলো ]

মার্জান : আ..আমি না! আই মিন তোমরা খাও আমার জন্য একটা জুস হলেই চলবে! [ বলেই নাক-ফুলিয়ে তাকালো আসিফের দিক ]

জারিফা : আ.. আমিও প্লিজ!

স্নেহা : আমারও চাই না! পানি হলেও চলবে!

জারিফা : বাট স্নেহা! তোর আর রাহুলের জন্য দুধ অর্ডার করলেই বেষ্ট হবে হিহি! আ…আই মিন শক্তি,পাওয়ার!

স্নেহা : [ চিমটি দিয়ে ] স্টপ জারিফাআ! [ হাসতে লাগলো সবাই, রাহুলের দিক তাকাতেই চোখ মেরে উঠলো রাহুল স্নেহাকে ]

নেহাল : শায়লা ইউ?

শায়লা : আমার তো ড্রিংক্স এর নাম শুনতেই মাথা ঘুর ঘুর করে, এখনো করছে…

নেহাল : ওকে ওকে রিলেক্স! কামঅন সি্ট সি্ট!

রিদোয়ান : আচ্ছা আমরা যায় অর্ডার করে আসি তোমরা বসো! কাম রাহুল!

আসিফ : [ মার্জানের দিক ফিসফিসিয়ে ] একটা রেড ওয়াইন অর্ডার করবো নাকি আপনার জন্য?

মার্জান : [ নাকফুলিয়ে ] জি থেংক ইউ![ হেসে হেসে উঠে দাড়ালো আসিফ ]

স্নেহা : নেহাল!

নেহাল : ইয়েস্! মাই বিউটিফুল ভাবী!

স্নেহা : একটু কথা ছিলো! যদি আপনার সময় হয়?

নেহাল : আরে ভাবী! কি যে বলো, তুমি বললে পুরো দিনটাই তোমার নামে করে দিবো!

[ রিদোয়ান, আসিফ, রাহুল তিনজনই হেসে রেসোর্ট এর ভেতর চলে গেলো, মার্জান, জারিফা, শায়লা ঐদিকটাই বসে রইলো, স্নেহা নেহালের সাথে হাটতে হাটতে একপাশ চলে এলো ]

স্নেহা : নেহাল! আমি জানি কথাটা আমার বলা ঠিক হবে না, কিন্তু তাও বলছি..

নেহাল : রিলেক্স! ভাবী, আমি জানি তুমি কি বলবা!

– মা কে হ্যান্ডেল করার পুরো দায়িত্ব আমার! ডোন্ট ওয়ারি, আমি শায়লার গায়ে একটা আচ ও লাগতে দেবো না, আই প্রমিজ! অলটাইম ওর সাপোর্ট হিসেবে থাকবো!

স্নেহা : [ মৃদু হেসে ] আমার অনেক খুশি লাগছে, শায়লা আপনার মতোই কাউকে লাইফ পার্টনার হিসেবে পাচ্ছে!

নেহাল : থেংক ইউউ! [ হঠাৎ পেছন থেকে কেউ হেই বিউটি বলে ডাক দিলো, ফিরে তাকাতেই স্নেহা সামিরকে দেখে শকড হলো ]

নেহাল : এক্সকিউজ মি! হু আর ইউ?

স্নেহা : আই থিংক আমাদের এখন যাওয়া উচিৎ, চ..চলেন!

সামির : নতুন মাল নাকি স্নেহা? কতো প্রেমেন্ট দিয়েছে? রাহুল কম দিয়েছিলো নাকি?

নেহাল : হোয়াট দ্যা হেল! হোয়াট আর ইউ সেয়িং ননসেন্স? ভাবী হয় আমার! [ বলেই রেগেমেগে গিয়ে সামিরের সাথে লড়াই বেজে গেলো ]

স্নেহা : লিভ ইট! নেহাল, প্লিইজজ! [ বলেই নেহালকে টেনে ছুটিয়ে নিলো, নাকফুলিয়ে হেসে হেসে সামির তার গাড়িতে উঠে চলে গেলো, ফুফাতে লাগলো নেহাল ]

স্নেহা : রিলেক্স নেহাল! ও এমনই! ওর সাথে মারামারি করে কোনো লাভ নেই!

নেহাল : মারামারি করে লাভ না হলে এসব জানোয়ারকে এক্কেবারেই মেরে ফেলা উচিৎ!

– হোয়াই ইউ স্টপিং মি?

হঠাৎ, রিদোয়ান, আসিফ, রাহুল ও বেড়িয়ে এলো রেসোর্ট থেকে, স্নেহা আর নেহালকে দেখে ঐদিক টায় এগিয়ে এলো রাহুলরাও,

স্নেহা : আ..আপনাদের অর্ডার করা শেষ?

রাহুল : ইয়াহ! তোমাদের কথা শেষ হয়েছে তো?

স্নেহা : হ্যাঁ! শেষ,

রিদোয়ান : ইউ ওকে নেহাল?

নেহাল : নো আই আম নট ওকে!

রাহুল : হোয়াট হ্যাপেন নেহাল ফুফাচ্ছিস কেনো?

স্নেহা : চ..চলেন ওখানেই বসি আমরা ঐদিকটা অনেক বাতাস! নেহালের হয়তো গরম লাগছে!

রাহুল : কিছু হাইড করছো স্নেহা? কি হয়েছে?

নেহাল : আরেহ, কি জানি কোথায় থেকে ছেলে একটি এসে স্নেহাকে যা তা উল্টো-পাল্টা বলছে, লাইক রাহুল কম প্রেমেন্ট করেছে নাকি? এখন নতুন মাল নাকি?

– নামটাও তো জানলাম না ধ্যাত!

[ চোখ রাঙিয়ে তাকালো রাহুল স্নেহার দিক ]

স্নেহা : রা…রাহুল! ঐদিকে যায় চলেন…

রাহুল : [ চেচিয়ে ] জাষ্ট শাট-আপ স্নেহা! কে ছিলো?

স্নেহা : [ কেপে বলে উঠে ] সামির!

রাহুল : ওকেই গেস্ করেছিলাম! [ বলেই দৌড়ে যাচ্ছিলো গাড়ির দিক ]

আসিফ : [ রাহুলের পথ আটকে ] কোথায় যাচ্ছিস রাহুল?

রাহুল : নান অফ ইউর বিজনেস!

আসিফ : রিলেক্স রাহুল! মাথা ঠান্ডা কর আগে..

রাহুল : অউউ রিয়েলি আমাকে মাথা ঠান্ডা করাতে আসছিস? ঐদিনও ঠিক তোর কারণে ওকে মারতে পারিনি!

আসিফ : রাহুল! তুই শুধু তোর রাগের দিকটা দেখছিস, নাও ইউ আর ম্যারেড! তুই একা না এখন তোর সাথে স্নেহার লাইফ ও জুড়ে আছে! তোর কিছু হয়ে গেলে ওর কি হবে?

রাহুল : দেখ আসিফ! আমাকে আটকাস না, নয়তো ওর আগে কখন তোকে মেরে দিবো আমি নিজেও বলতে পারিনা,

আসিফ : ও সিরিয়াসলি? মারবি আমাকে? তো মার, দাঁড়িয়ে আছিস কেনো মার মারনা… [ বলতে না বলতে মেরে দিলো রাহুল, আসিফও দিলো মেরে, বেজে গেলো দুজন মারামারি, মার্জান, শায়লা, জারিফাও দৌড়ে এলো ]

মার্জান : আরেহ! হা করে দাঁড়িয়ে কি দেখছেন আপনারা? থামান ওদের?

কেউ কিছু করছে না দেখে মার্জান নিজেই যাচ্ছিলো ওদের থামাতে,

নেহাল : [ মার্জানের হাত ধরে আটকে ফেলে ] ওদের রাগ বের করতে দাও একটু পরই থেমে যাবে!

মার্জান : কিন্তু!

নেহাল : রিলেক্স! ডোন্ট ওয়ারি!

[ এইদিকে রাহুল লোহার একটি চেয়ার তুলে নিলো আসিফকে মারার জন্য, হতভম্ব হয়ে গেলো সবাই, চোখ যেনো সবার বেড়িয়ে পড়বে এখনই, রিদোয়ান তাড়াতাড়ি দৌড়ে গিয়ে কেড়ে নিলো রাহুল থেকে চেয়ারটি ]

রিদোয়ান : [ চেচিয়ে ] স্টপ ইট গাইস্ জাস্ট স্টপ ইট! এতোই যখন মরার ইচ্ছে আমাকে বল ছুড়ি এনেদি দ্যান দুজন দুজনকে মেরে মরে যা!

– হোয়াট আর ইউ ডুয়িং গাইস্ ঐ জানোয়ারের জন্য তোরা কেনো লড়াই করছিস?

– রাহুল! আসিফ যা বলেছে ঠিকই বলছে! সামিরকে মারবি ঠিকাছে, দেন কি হবে? কেইজ হবে, পুলিশ আসবে, পারবি স্নেহাকে ছাড়া জেল এ থাকতে?

রাহুল : ঐ জানোয়ারকে মেরে জীবন এর অর্ধেক বছর জেল এ কাটিয়ে দেওয়া ও সার্থক!

রিদোয়ান : আচ্ছা রিলেক্স! ওকে কখন মারতে হবে না হবে ঐ প্লানটা না হয় পরেই করি আমরা! হুমম!

রাহুল : ফাকিং হেল! [ মৃদু হাসলো রিদোয়ান, রাহুল গিয়ে জড়িয়ে ধরলো আসিফকে, আসিফও জড়িয়ে ধরলো ]

জারিফা : [ ফিসফিসিয়ে ] ইয়া আল্লাহ! সব তো আমার মাথার উপর দিয়েই যাচ্ছে! এখন মারামারি, এখন আবার জড়াজড়ি!

শায়লা : আল্লাহর ওয়াস্তে মুখটা বন্ধ রাখ জারিফা!

জারিফা : ইয়াহ! শিয়র শিয়র!

রাহুল : সরি গাইস্! এঞ্জয় ইউর ডে!

– আরে শায়লা? তুমি ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেনো? নেহালের সাথে যাও! কামঅন গো নেহাল! [ সবাই চুপচাপ তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক ]

রাহুল : হোয়াটটট?

নেহাল : না..নাথিং! কাম শায়লা! [ বলেই শায়লাকে নিয়ে রেসোর্ট এর একপাশ চলে গেলো! রাহুল ও হেটে গিয়ে নির্জন একপাশের একটি টেবিলে গিয়ে বসলো, স্নেহাও রাহুলের পিছু পিছু গিয়ে বসলো ]

________চুপ হয়ে আছে রাহুল,

স্নেহা : কি দরকার ছিলো এসব মারামারি করার? কাপড়ের কিনা হাল করেছেন [ বলেই জ্যাকেট আর শার্টের কলার ঠিক করে দিলো স্নেহা ]

– রাহুল! আপনি রেগে আছেন আমার উপর?

________ এইদিকে জারিফা আর রিদোয়ান এসে আরেকটি টেবিলে হেলান দিয়ে দাড়ালো,

জারিফা : সবই ঠিক যাচ্ছিলো! এই সামিরের বাচ্চা সামির কাবাব মে হাড্ডি হয়ে সব বরবাদ করে দিয়েছে! মনটা তো চাচ্ছে আমিই গিয়ে ওকে খুন করে আসি!

রিদোয়ান : আচ্ছা? যত কেজির কথা বললে ততো কেজির মাংস আছে তোমার শরীরে?

জারিফা : না নেই! আমার কাছে মাংস ও নেই শক্তিও নেই! সব শক্তি আর মাংস তো আপনার কাছেই আছে তাই না? [ হাত ধরে কাছে টেনে নিলো রিদোয়ান জারিফাকে ]

জারিফা : আরেহ! কি করছেন পাগল নাকি?

রিদোয়ান : জারিফা! আমার মনে হয় আমাদের রিলেশন নিয়ে আমাদের আরেকটু সিরিয়াস হোওয়া উচিৎ!

জারিফা : তা কেমন সিরিয়াস?

রিদোয়ান : আই মিন ফিউচার…

জারিফা : হ্যাঁ! ফিউচার নিয়ে তো আমি অনেক কিছুই ভেবেছি! সারারাতই ভাবি, ভাবতে ভাবতে তো ঘুমই হয়না,

রিদোয়ান : উইল ইউ ম্যারি মি জারিফা ? [ অবাক হয়ে তাকালো জারিফা ]

– চলো বিয়ে করেনি!

জারিফা : সিরিয়াসলি?

রিদোয়ান : হ্যা বাবা! সিরিয়াসলি!

– কি? করবে তো আমায় বিয়ে!

জারিফা : করবো মানে? অফকোর্স করবো! [ বলেই জোড়ে ঝাপিয়ে জড়িয়ে ধরলো রিদোয়ানকে ] আই কান্ট স্টপ মাই টিয়ারস্ রিদ! আই লাভ ইউ!

রিদোয়ান : লাভ ইউ টু!

_________ গাছের নিচের চৌকাটে একা বসে রইলো আসিফ, অন্য গাছের সাথে হেলান দিয়ে দূর থেকে তাকিয়ে আছে মার্জান, কিছুক্ষণ পরেই নিজ থেকে আসিফের পাশে এসে বসলো,

আসিফ : জানতাম তুমি আসবা!

মার্জান : হ্যাঁ! আপনি তো সব জানবেনই! আপনি গড ফাদার, আপনি মহান! [ হাসলো আসিফ মার্জানের কথা শুনে, মার্জান কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আসিফ এর ঠোটের নিচে ক্ষত হয়ে যাওয়া স্থানে আংগুল বুলিয়ে দিলো ]

আসিফ : ডোন্ট ওয়ারি ইটস্ আ নরমাল ইঞ্জুরি!

মার্জান : হ্যা নরমাল! নরমালই তো সবই নরমাল আপনাদের জন্য! মারামারি করাটাও নরমাল!

আসিফ : মিস্ এংড়ি বার্ড! হাইপার হচ্ছো কেনো এতো? আম ওকে ডোন্ট ওয়ারি!

মার্জান : হ্যাঁ! এখন তো এটাই বলবেন! কথা তো আর নেই বলার,

– আপনার মায়ের নাম্বারটা দিন তো, আমিই বলেদি ওনাকে, কিভাবে শায়েস্তা করে ঠিক করা যায় আপনাকে!

আসিফ : হুমম! মা নেই!

মার্জান : মানে?

আসিফ : মারা গিয়েছে দু-বছর অলরেডি!

মার্জান : ওও…আম সরি!

আসিফ : ইটস্ ওকে!

মার্জান : আপনি একাই থাকেন? আর কেউ নেই?

আসিফ : বাবা কানাডায় থাকে, আমি এইখানে একাই থাকি!

মার্জান : হোহ! একা থাকেন? কষ্ট হয় না? একটা বিয়ে করে নিলেই তো পারেন!

আসিফ : কে করবে আমাকে বিয়ে? [ বলেই উঠে দাড়িয়ে হাটা শুরু করলো ]

মার্জান : ও হ্যালো! এক্সকিউজ মি! [ বলেই উঠে দৌড়ে এসে সে ও হাটতে লাগলো ] কে করবে মানে? আ..আই মিন ড্যাসিং হ্যান্ডসাম সবই তো আছেন, মেয়ের লাইন লেগে যাবে বিয়ে করবেন বললে!

আসিফ : আচ্ছা? তো তোমার কি ধারণা আমাকে নিয়ে?

মার্জান : আ…আমার কি ধারণা মানে?

আসিফ : [ থেমে গিয়ে ] তুমি কি ভাবো আমায় নিয়ে?

মার্জান : কি..কিছুনা! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো, তখনিই আসিফ হাত ধরে কাছে টেনে নিলো মার্জানকে ]

আসিফ : একদমই কিছু না?

মার্জান : হ্যাঁ.. এ একদমই কিছু না! ছা..ছাড়েন কেউ দেখবে!

আসিফ : আমার চোখের দিক তাকিয়ে বলো দেখি!

মার্জান : আরেহ! কিসব বলছেন! আপনার চোখের দিক তাকিয়ে বলতে যাবো কেনো? চোখে চোখ রেখে কেউ মিথ্যা বলে নাকি? [ মুচকি হাসলো আসিফ, মৃদু হাসছে মার্জান ও, ছুড়াছুড়ি করে হাত ছুটিয়ে দৌড় মারলো মার্জান, অর্ধেকে গিয়েই থেমে গেলো, পিছন ফিরে তাকালেই দেখে আসিফ এখনো চেয়ে আছে, মুখে সেই মিষ্টি মাখা হাসি, পা মুড়িয়ে হেটে আবারও ধীরেধীরে এগিয়ে এলো আসিফের দিক ]

মার্জান : আমি সবসময় ডিরেক্ট কথা বলতে পছন্দ করি মিষ্টার আসিফ, [ চোখ টিপ মেরে ] আর কিছু কথা বলতে হয় না যদি বুঝা যায়! কিছু কথা বুঝতে হয়না শুধু ফিল করে নিতে হয় [ এদিক ওদিক তাকিয়ে হুট করেই আসিফের গালে একটি চুমু খেয়ে মুচকি হেসে চলে যাচ্ছিলো, তখনিই আসিফ ও হাত ধরে কাছে টেনে নিয়ে ঠোটে একটি চুমু খেলো ]

মার্জান : ইয়া আল্লাহহহ! [ আসিফ কাম বলেই হাত ধরে টেনে নিয়ে এগুতে লাগলো ]

– আরেহহ কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?

________ অন্যদিকে,

নেহাল : তোমায় প্রথমবার দেখার পরই আমার মনে হলো কিছু তো আছে আমাদের মাঝে,

শায়লা : হুম!

নেহাল : যেখানেই যাচ্ছিলাম শুধু তোমাকেই দেখছিলাম শায়লা, যেখানেই যাচ্ছি শুধু তোমাকেই ফিল করছিলাম

শায়লা : হুম!

নেহাল : হোয়াট হুম হুম? তুমি টেনশন করছো তাই না?

শায়লা : কই না তো!

নেহাল : [ শায়লার দু-হাত নিজের হাতের মুঠোই নিয়ে ] ইউ লাভ মি? [ হুম বলে মাথা নাড়ালো শায়লা ]

নেহাল : তাহলে ভয়ের কি আছে? আই লাভ ইউ, ইউ লাভ মি দ্যাটস্ ইনাফ! [ সস্তির এক নিশ্বাস ফেলে মুচকি হাসলো শায়লা, নেহাল ও হেসে শায়লার মাথা আগলে নিয়ে কপালে একটি চুমু খেলো ]

______ এইদিকে,

স্নেহা : কি হলো রাহুল! কখন থেকেই চুপ করে আছেন কিছুই বলছেন না?

[ দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ফিরে তাকালো রাহুল, স্নেহার চেয়ারটা টেনে তার একদম নিকটে এনে থামালো, সামনে চলে আসা চুল গুলো কানে গুজে দিলো স্নেহার ]

স্নেহা : আম সরি রাহুল ইফ আই হার্ট ইউ!

রাহুল : শিসস! স্নেহা! তুমি কেনো সরি বলছো?

– আমি তো জাষ্ট এটাই ভাবছিলাম, যখনি তোমার জন্য ভালো কিছু করতে যায় সবই বিগ্রে বসে, এখানে এনেছি সবার সাথে মিলে গুড টাইম স্পেন্ড করবে, কিন্তু সেটাও হলো না,

স্নেহা : আরেহ রাহুল! আপনার এতো আফসোস করতে হচ্ছে কেনো? কে বলেছে গুড টাইম স্পেন্ড করা বিগ্রে গেছে, আমার জন্য আপনি পাশে থাকাটাই গুড টাইম! সিচুয়েশন যতই দুঃখ্যের অথবা সুখের হোক, রাহুল মিন্স গুড টাইম ফর মি, রাহুল মিন্স এভ্রিথিং! [ কপালে কপাল লাগিয়ে মুচকি হেসে উঠলো রাহুল, স্নেহা ও হাসলো ]

রাহুল : লাভ ইউ স্নেহা! [ বলেই চুমু খেলো একটি স্নেহার ঠোটে ]

__________

ভালোলোবাসা অবিরাম, ভালোবাসা চিরস্থায়ী, দুটো মনের মিলন উপর থেকেই সেট করা থাকলে পৃথিবীতে আর কারোরই ক্ষমতা থাকেনা সেই মিলনে বাধা দেওয়ার, রাহুলের এলোমেলো জীবনের মাঝে বিষ্ময়কর ফুল হিসেবেই এসেছিলো স্নেহা, হাজারো বাধা পেরিয়ে রাহুল তার স্নেহাকে জয় করেই নিলো, ঠিক তেমনি আসিফের একাকিত্ব জীবনের প্রতিচ্ছায়া নিয়ে এলো মার্জান, জারিফা কি জানতো তার র‍্যাগিং এর মাঝেই লুকিয়ে ছিলো সেই ভালাবাসা নামের রিদোয়ান, প্রথম ভালোবাসার অপেক্ষায় রয়ে শায়লা ও বা কবে জানতো নেহাল নামের দীত্বিয় ভালোবাসাটিও কোনো এক প্রান্তে তার অপেক্ষায় ছিলো
___________

After 6 years / ৬ বছর পর!

নিউইয়র্ক সিটি, আমেরিকার উত্তর পূর্বে, ডুপ্লেক্স বাড়ীর দু-তলার কর্ণারের একটি বেডরুমের বেলকনিতে আনমনা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্নেহা! ঘড়িতে রাত ১২টা বেজে যাওয়ার এলার্ম বাজছে,

হঠাৎ বিছানায় পড়ে থাকা লেপটপটিতে ভিডিও কলের রিং বেজে উঠলো, স্নেহা রুমের ভেতর ঢুকে বিছানায় বসে কল রিসিভ করতেই, একটি গ্রুপ ভিডিও কল ওপেন হলো, যেখানে ছিলো, মার্জান-আসিফ, রিদোয়ান-জারিফা, শায়লা-নেহাল! সবাই একত্রে বলে উঠলো হ্যাপি এনাভার্সারি রাস্নেহাআআ,

স্নেহা : [ হেসে উঠে ] থেংক ইউ সো্ মাচ গাইস্!

মার্জান : আরে স্নেহা! রাহুল কোথায়? সরি স্নেহা ডোন্ট টেল মি, কি রাহুল এখনো বাসায় আসেনি!

স্নেহা : এসেই যাবে এখন হয়তো গাড়িতেই!

রিদোয়ান : আরে গাড়ীতে হয়েছে তো কি হয়েছে, ফোন করেওতো উইশ করতে পার‍তো!

জারিফা : হ্যাঁ সবার আগে তো রাহুলেরই উইশ করা দরকার ছিলো তাই না!

মার্জান : হ্যাহ! করবে সবার আগে উইশ! মহারাজ নিউইয়র্ক গিয়ে বিজনেস করে ফাটিয়ে দিচ্ছে একদম গোটা নিউইয়র্কই কিনে নিবে হুহ!

আসিফ : আরে এতো হাইপার হচ্ছো কেনো? এইবার হয়তো একটু ভুলে গিয়েছে আরকি!

মার্জান : আপনি চুপ করেন বন্ধুর দিক টানা বন্ধ করেন! আমার বান্ধুবিটা এনাভার্সারির দিনও একা একা বসে আছে!

নেহাল : আরে গাইস্ তোমাদের ঝগড়া দেখতে দেখতে বেচারি কে কেমন আছেটা জিজ্ঞেস করতেও ভুলে গিয়েছি!

– সো্ কেমন আছেন মাই ডিয়ার ভাবী হোয়াটস্ দ্যা প্লান? হুম হুম? কি কি সারপ্রাইজ দিবা রাহুলকে আমাদের ও শেয়ার করোনা

শায়লা : আচ্ছা ওয়েট! স্নেহা হোয়ার ইজ আওয়ার লিটল রাহুললল?

স্নেহা : এইখানেই তো ছিলো হয়তো নিচে গিয়েছে!

জারিফা : অওওও আই মিসড মাই লিটল চার্মিং, ইউ, এন্ড রাহুল অলসো্!

স্নেহা : আই অলসো মিসড ইউ টু গাইস্!

মার্জান : বাই দ্যা ওয়ে গাইস্! আমি না একটা গুড নিউজ বলবো! [ সবাই কিউরিয়াস ফেইস নিয়ে তাকালো মার্জানের দিক ]

– এক্সুলি! আই এম প্রেগন্যান্ট! [ বলেই লজ্জায় মুখে হাত দিয়ে দিলো ]

স্নেহা : কনগ্রেচুলেশন গাইস্!

রিদোয়ান : ওহো পার্টি হবে কিন্তু আসিফফফ!

আসিফ : শিয়র শিয়র!

জারিফা : ইয়া আল্লাহহ! মার্জান তোর গুড নিউজ শুনে তো খুশিতে আমার ডেলিভারি এখনোই হয়ে যাবে মনে হচ্ছে! [ সবাই অবাক হয়ে উঠলো ]

মার্জান : শিটট! জারিফা, ডোন্ট ডু দিজ! জানেমান, তোর ডেলিভারির তো আরো দু-মাস বাকি তাই না? রিলেক্স রিলেক্স!

রিদোয়ান : রিলেক্স জারিফা! ধীরেধীরে শ্বাস নাও!

জারিফা : ইয়াহ! আম ওকে ডোন্ট ওয়ারি গাইস্!

আসিফ : নেহাল! নাও ইউর ট্রান! [ সবাই কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো ]

শায়লা : ওকে গাইস্! আপাতত নাও বাই বলার ট্রান! স্নেহা হয়তো রাহুলের জন্য সারপ্রাইজ প্লান করতে পারে, আমাদের এখন ওদের একা ছেড়ে দেওয়া দরকার!

মার্জান : আরে হ্যাঁ হ্যাঁ! স্নেহা নাও বাই ওকে! মর্নিং এ আবার কল দিবো রাহুল সহ একসাথে আসলে ওকে বাইইইই!

[ সবাই বাই দিয়ে কল কেটে দিলো, স্নেহা মনে মনে ভাবতে লাগলো কোনো সারপ্রাইজই দিবে না রাহুলকে, অন্তত ফোন করেও তো একবার উইশ করতে পারতো রাহুল তাকে, এমন কি কাজে বিজি হয়ে গেলো যে একটা ফোন করার টাইম ও পাচ্ছে না, নিশ্চয়ই ভুলেই গিয়েছে আজকে তাদের এনাভার্সারি, স্নেহা ও আর মনে করিয়ে দিবে না বলে রুম থেকে বেরুতেই যাচ্ছে তখনি একটা বিরাট বড় বেলুন এগিয়ে এলো,

স্নেহা : [ মৃদু হেসে ] রোহান! হোয়াট আর ইউ ডুয়িং?

[ বেলুনের সাইড থেকে পিচ্ছি একটি হাত এগিয়ে স্নেহাকে ছোট্ট একটি পিন এগিয়ে দিলো, হাটু গেড়ে বসে পিনটি এগিয়ে নিয়ে বেলুনটি টুস করে ফুটিয়ে দিতেই, হ্যাপি এনাভার্সারি মম বলে চেচিয়ে উঠলো রোহান, স্নেহাও হেসে রোহানকে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরে চুমু খেলো, পাশ ফিরতেই দেখে আরো একটি বেলুন, এইবার আর স্নেহার বুঝার বাকি রইলো না এগুলো কার কান্ডনামা, দীর্ঘ একটি শ্বাস ফেলে বাকি বেলুনটাও ফুটিয়ে দিলো স্নেহা, জোড়ে হাত তালি দিয়ে লাফিয়ে উঠলো রোহান বেলুন ফুটতেই কেক হাতে রাহুলকে দেখতে পেলো স্নেহা সাথে সাথে রাহুল ও হ্যাপি এনাভার্সারি মাই লাভ বলে উইশ করলো, মুখ ভেংগিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলো স্নেহা, তখনিই রাহুল হাত চেপে ধরে বসিয়ে নিলো আবার স্নেহাকে ]

রাহুল : সরি স্নেহা! আমি জানি ঐ নটি কোম্পানির দল আমার আগেই তোমাকে উইশ করে দিয়েছে, এই দেখো মোবাইলের ব্যাটারি লো তাই আমি আগে উইশ করতে পারিনি, প্রত্যেকবার তো আমিই আগে করি এইবার নাহয় সরি!

মুখ ভেংগিয়ে উঠে চলে যাচ্ছিলো স্নেহা হঠাৎ ওড়না টান খাওয়ায় পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে, রাহুল এবং রোহান দুজনই ওড়নার দুদিকের দু-আচল টেনে ধরে আছে, এইবার আর না হেসে পারলো না স্নেহা! হাটু গেড়ে বসে দুজনকেই কাছে টেনে জড়িয়ে নিলো! রাহুল ও হেসে স্নেহার কপালে একটি এবং রোহানের কপালে একটি চুমু খেলো! কেক কেটে এনাভার্সারি সেলেব্রেট করলো তারা!

রাত ২ টা বেজে ১০মিনিট,

রাহুল ফ্রেশ হয়ে ওয়াসরুম থেকে রুমে ঢুকে মুখ মুছে সোফার উপর রাখলো টাওয়েলটা, বিছানার দিক তাকাতেই দেখে, স্নেহা রোহানকে জড়িয়ে নিয়ে দুজনই ঘুমিয়ে আছে, মৃদু হেসে রাহুল লাইট অফ করে পাশে এসে দুজনকেই কম্বল টেনে দিলো ভালো করে, ঘুমন্ত রোহানের গালে একটি চুমু দিয়ে স্নেহার ঠোটে একটি চুম্বন করলো, বালিশে মাথা রাখতেই রাহুল! ড্রিম লাইটের হলদেটে আলোর মাঝে ভেসে উঠলো স্নেহার মৃদু হাসির চেহেরাটি! তা দেখে রাহুল ও মুচকি হাসলো, রোহানের গায়ে জড়িয়ে রাখা স্নেহার হাতটির মুঠো মেলে দিয়ে রাহুলের হাতটি দেওয়ার জন্য ইশারা করতেই রাহুল ও তার হাতটি স্নেহার হাতের মুঠোয় শক্ত করে ধরে নিলো,

স্নেহা : [ ঘুমন্ত কন্ঠে ] লাভ ইউ রাহুল!

[ রাহুল ও মৃদু হেসে ধীরো কন্ঠে লাভ ইউ টু! বলে উঠলো স্নেহাকে ]

_________________সমাপ্ত________________