হ্যাকারের_লুকোচুরি সিজন_২ পর্ব-৭

0
1197

হ্যাকারের_লুকোচুরি সিজন_২ পর্ব-৭

কিছুক্ষনের ভেতর পিকাচু তার সেন্সরে বড়সড় মুভভমেন্ট আইডেন্টিফাই করলো।
পিকাচু – They are moving. Marking the red zone. Prepare to fire.
রাফি – Okay Dark world, you want me? Then Come and get me.
সন্ত্রাসীরা রাতে দেখতে পাওয়া যায় এমন চশমা পড়ে অন্ধকারের ভেতর নিজেদের পজিশন নিয়ে নিয়েছে আক্রমনের জন্য। মাফিয়া গার্ল নেটওয়ার্ক জ্যাম করে দেয়ার কারনে কেউ কারো সাথে কমিউনিকেশন করতে পারছে না, তাই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সন্ত্রাসীরা সামনে এগোতে থাকলো।
পিকাচু – most of them are in my red zone. I can kill them now. Waiting for your command.
রাফি – পিকাচু, standby. মাফিয়া গার্ল, তোমাকে একটা কাজ করতে হবে।
– আমাকে? কি কাজ?
রাফি – আর্মড ট্রাকগুলো রেডি করো। সময় হয়েছে ওগুলোকে কাজে লাগাবার। ড্রোনগুলোকে যেখান থেকে আনা হয়েছিলো সেখানে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করো।
– এখন! এই অবস্থায়?
রাফি – হ্যাঁ এখনই, এই অবস্থায়ই।
– রাফি? ঠিক কি করতে চাইছো তুমি? এখন এসব করার সময় নয়, শত্রুরা ঘিরে নিয়েছে পুরো বাড়িটা। আর্মড ট্রাকের প্লানটা হীতে বিপরীত হয়েছে।
রাফি – ধন্যবাদ তোমাকে যে এমন একটা আইডিয়া এসেছিলো তোমার মাথায়। তখন হয়তো সফল হয় নি। তবে এবার হবে। পিকাচু, বাউন্ডারিতে মেইন গেট বাদে আর কয়টি প্রবেশদ্বার রয়েছে?
পিকাচু – পকেট গেট একটি, ব্যাকডোর দুইটি।
রাফি – পিকাচু, এনালাইসিস করো সন্ত্রাসীরা কিভাবে ভেতরে প্রবেশ করার প্লান করছে।
পিকাচু – Feeding satellite images, analyzing motion sensors activity. ৮১% চান্স রয়েছে সন্ত্রাসীর কোন ব্রেক এন্ট্রি করবে না। তারা জানে আনঅথরাইজড এন্ট্রি করলে পরিনাম কি হতে পারে।
রাফি – মাফিয়া গার্ল? আর্মার্ড ট্রাক তিনটিকে তিনটি দরজা বরাবর নিয়ে দাঁড় করাও। পিকাচু, মেইন গেট এবং ব্যাকডোর খোলার প্রস্তুতি নাও, wait for my signal.
পিকাচু – Main gate control standby, weapons system standby.
মাফিয়া গার্ল ট্রাকগুলোকে তিনটি দরজার সামনে দাড় করালো।
– তোমার এই সন্ত্রাসীদের গুলি করে মারার কোন প্লান নেই, ঠিক বলছি?
রাফি – আছে আবার নেইই আর থাকলেও এখানে এই পরিস্থিতিতা নয়। পিকাচু, তুমি কি এই ড্রোন কন্ট্রোল করতে পারবে?
পিকাচু – Affirmative but I don’t have permission to engage.
রাফি – মাফিয়া গার্ল? এই পার্মিশন তো দেয়া যায়, না কি?
– ঠিক কি বোঝাতে চাইছো আমি কিছুই বুঝছি না। পিকাচুকে কেন ড্রোন কন্ট্রোল করতে হবে? ট্রাকগুলোর অটোপাইলট মোড রয়েছে। তারা নিজেরাই জিপিএস লোকেশন পর্যন্ত পৌছাতে পারবে।
রাফি – পৌছাতে পারতো যদি না এটা হাইস্পিড চেসিং না হতো, ড্রোনগুলোকে আমি সন্ত্রাসীদের সামনে দিয়ে বের করে নিয়ে যাবো এগ্রেসিভ ভাবে। অটোপাইলট কখনই এগ্রেসিভ ড্রাইভিং সাপোর্ট করে না। আশা করি সন্ত্রাসীরা এই টোপ গিলে নেবে। ভাববে ট্রাকগুলোর যে কোন একটাতে আমি রয়েছি, তাই আশা করা যায় তারা ট্রাকগুলোর পিছু নেবে। মাফিয়া গার্ল? তুমি কি এখনো সন্ত্রাসীদের চ্যানেল জ্যাম করে রেখেছো?
– হ্যাঁ। এখনো জ্যাম করাই আছে। আমি পিকাচু কে ড্রোন কন্ট্রোলের পার্মিশন দিয়ে দিয়েছি। এখন পিকাচু ড্রোন চালাতে পারবে ।
রাফি – পিকাচু? Take over those drones, have some aggressive exhaust.
পিকাচু – পিকা পিকাআআআ। Taking over the control system. Safety protocol override. System is 100% go.
পিকাচু ট্রাকগুলোর ইন্জিন অন করে সবগুলো গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে দিলো এবং ইন্জিন দিয়ে ভয়ংকর আওয়াজ করতে লাগলো। ২ হাজার হর্সপাওয়ারের V16 ইন্জিনের সাথে সুপারচার্জার এক হয়ে এক ভয়ংকর দানব এই আর্মড ট্রাকগুলো। ১৬ চাকার এই দানবগুলো দেখলে যে কেউ ভয় পাবে, একপ্রকার ট্যাংক ই বলা যায়। আর এমন ট্রাকের কন্ট্রোল যদি পিকাচুর মত স্কিলড ড্রাইভারের হাতে পড়ে তাহলে তো কথাই নেই।
পিকাচু – ভ্রুম ভ্রুউউউউউম। গাড়ির ইন্জিনের আওয়াজ এবং হেডলাইটের আলো সন্ত্রাসীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।
রাফি – Ready to have some fun Pikachu?
পিকাচু – পিকা পিকা।
রাফি – ওকে পিকাচু, গেট খুলে গাড়িগুলো বের করো, ১……..২……..৩.Go।
পিকাচু – ( এগ্রেসিভ) পিকা পিকা পিকাআআআআ।
পিকাচু মেইইন গেট এবং ব্যাকডোরগুলো খুলে দিলো এবং খুবই এগ্রেসিভ ও রেকলেসভাবে গাড়িগুলোকে চালিয়ে বের হয়ে গেলো। সন্ত্রাসীরা হতভম্ব হয়ে গেল কিন্তু কারো সাথে কারো যোগাযোগ না থাকায় যে যার মত করে গাড়ি তিনটিকে ফলো করতে শুরু করলো। তিনটি গাড়ি শহরের তিন দিকে চলতে থাকলো। আর গাড়িগুলোর পেছনে মাইক্রো, মোটরসাইকেল, পিকআপ যার যা আছে তাই নিয়ে সন্ত্রাসীরা পিছু করতে লাগলো।
কিছুক্ষণ ধরে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করলো রাফি। মনিটরে তিনটি গাড়ির ফ্রন্ট ক্যামেরা শো করছে, পিকাচু কখনো ৬০ আর কখনো ১০০ কিলো/ঘন্টা গতিতে ট্রাকগুলো চালাচ্ছে।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/


রাফি – পিকাচু, আর্মড ট্রাকগুলোর ওয়েপন সিস্টেম কি রিমোটলী কন্ট্রোল করা যাবে?
পিকাচু – ফ্লাশব্যাং এবং টিয়ার শেল ছাড়া অন্যসব অস্ত্র ম্যানুয়াল।
রাফি – আপাততঃ লাগছে না অন্য অস্ত্রগুলো। পিকাচু, প্রয়োজনে টিয়ার সেল এবং ফ্লাশব্যাং ব্যবহার করো। ওরা যেন কিছুতেই সন্দেহ করতে না পারে।
পিকাচু – পিকা পিকা।
রাফি – পিকাচু? স্ক্যান করো বাড়ির আসপাশ। কতজন আছে এখনো আশেপাশে।
পিকাচু তার সব সিকিউরিটি মেজার্স দিয়ে আসপাশ স্ক্যান করলো।
পিকাচু – মেইন গেটের সামনে ১২ জন রয়েছে যারা সন্ত্রাসীদের যানবাহনে উঠতে পারে নি, তাদেরকে রেখেই চলে গেছে বাদবাকি সবাই!
রাফি – বাদবাকি সবাই! বাহ।
পিকাচু – তাদের নিজেদের মধ্যে কমিউনিকেশন না থাকায় একজনের পেছনে আর একজন করতে করতে সবাই আর্মড ট্রাকের পেছন পেছন বের হয়ে গিয়েছে।
রাফি – মানে পেছনের দুই গেটে এখন কেউ নেই?
পিকাচু – Negative.
রাফি – পিকাচু, আর্মড ট্রাকগুলোকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো?
পিকাচু – আপাতত যারা ফলো করছে তাদেরকে বিশ্বাস করাচ্ছি যে ট্রাকে রাফি রয়েছে। তারপর আর্মি বেসে নিয়ে যাবো।
রাফি – মাফিয়া গার্ল? আর্মি বেসে অথরাইজড সিগন্যাল পাঠাও। যেন এই মেহমানদের ঠিকঠাক স্বাগতম জানানো হয়।
– you are taking the war to the real warriors. Cleaver move. অথোরাইজড সিগন্যাল পাঠানো হচ্ছে আর্মি বেসে, সম্ভাব্য আক্রমনের সতর্কীকরণ হিসেবে। কিন্তু সন্ত্রাসীরা কি আর্মি বেস পর্যন্ত যাবে!
রাফি – যতদূর যাবে ততটুকুই যথেষ্ট। বাকীটা আর্মি বেসের সাইরেন ই করে দেবে। Now Lets get out of here. যদি কোনভাবে ওরা টের পায় যে আর্মড ট্রাকগুলো খালি তাহলে আবারও ফিরে আসবে।
পিকাচু – সন্ত্রাসীরা এখনো ট্রাকটির পেছনেই লেগে আছে। ইনেসপেক্টর G আর্মড ট্রাকে করে পালানোর বিষয়টি জানতে পেরেছেন এবং আর্মি বেসে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন।
রাফি বের হওয়ার জন্য তৈরী কিন্তু একটা জিনিস রাফিকে টেনে ধরে, পিকাচু। পিকাচুর মত একটা ইফিসিয়েন্ট আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে এই বাংকারে বন্দি দেখতে মোটেই ভালো লাগছে না রাফির। কিন্তু চুরি জিনিসটা পচ্ছন্দ নয় রাফির।
রাফি – পিকাচু, I’ll miss you.
পিকাচু – (স্যাড) পিকা পিকা।
– পিকাচু ও তোমাকে মিস করবে। এখন বাংকারের শুরুতে যে রুমে তোমাকে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছিলাম, সেই রুমে যাও।
রাফির কপালে ভাঁজ পড়ে। এতোকিছুতে মাথা খাটানোর কারনে রাফি ভুলেই গিয়েছিলো এই বাংকারের একটি রুমে সে এখনো প্রবেশ করে নি।
রাফি রুমটির দরজার সামনে এসে দাঁড়ালো।
– দরজা খোলো।
রাফি দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলো। ভেতরে ঢুকে রাফি বুঝতে পারলো কেন মাফিয়া গার্ল রাফিকে এই রুমে আসতে বারন করেছিলো। সমস্ত রুম ভর্তি টাকা, কয়েকশো হাজার কোটি টাকা হবে। পুরো রুম জুড়েই টাকার পাহাড়। অন্যান্য রুমগুলো থেকে এই রুমটা আকারেও বড়।
রাফি – ওয়াও। এত্তো টাকা!
– পৃথিবীর স্বনামধন্য অস্ত্র ব্যবসায়ী হিসেবে এটা কিছুই না। তবে এই টাকার জন্য আমি তোমাকে এই রুমে আসতে বলি নি। রুমের পেছনে যাও।
রাফি রুমের শেষ মাথায় পৌছালো।
– একটা লকার দেখতে পাচ্ছো? লকারটি ওপেন করো। কম্বিনেশন ১২-৩৪-৫৬-৭৮, আবার বলছি ১২-৩৪-৫৬-৭৮.
রাফি লকারটা দেখতে পায়। মাঝারী সাইজের লকারটিকে কম্বিনেশন দিয়ে ওপেন করে রাফি, লকার খুলে আরো বেশী অবাক হয়। দুইটি তঁাক একটিতে একটা মাঝারী আকারের ব্যাগ, এবং অন্যটিতে একটি হার্ড ড্রাইভ।
– ব্যাগ এবং হার্ডড্রাইভটা নাও আর দ্রুত বের হও এখান থেকে। আমি তোমার জন্য রাইডের ব্যবস্থা করেছি।
রাফি চটজলদি হার্ডড্রাইভ এবং ব্যাগটা নিয়ে বাংকারের গেটে চলে আসলো। কাঁচের বাক্সটি দেখে রাফির বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো। মনে পড়ে গেল সেই শ্বাসরুদ্ধকর অভর্থনা। ঢোক গিলতে গিলতে,
রাফি – আবার কি কাঁচের বাক্সে ঢুকতে হবে!
– ঢুকতে ত হবে কিন্তু কোন গ্যাস স্প্রে হবে না। এখন চটজলদি বের হও।
রাফি চোখ বন্ধ করে দ্রুত গতিতে কাঁচের বাক্সে র ভেতর দিয়ে চলে আসলো। ততক্ষণে টাইটেনিয়ামের মোটা দরজা খুলে গেলো। রাফি কাঁচের দরজা দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে আর সামনে পায় সেই মাসল কার লিফট যেটাতে করে সে এই বাংকারে প্রবেশ করেছিলো।
– সময় নষ্ট করার সময় নেই রাফি, তুমি জানো তোমাকে কি করতে হবে So do it fast.
রাফি কথা না বাড়িয়ে গাড়িতে বসে ব্রেক চেপে ধরে। গাড়িটি একটু দ্রুতই রাফিকে টেনে উপরে নিয়ে আসে। উপরে এসে রাফি বুঝতে পারে পুরো বাড়িকে অন্ধকার করে রেখেছে মাফিয়া গার্ল এবং পিকাচু। মনিটরে Night vision আর infrared ক্যামেরার কারনে বাড়ির আঙ্গিনা দিনের আলোর মত চকচক করছিলো।
– অন্ধকারের জন্য দুঃখিত, কিন্তু আলো জ্বালালে অবশিষ্ট সন্ত্রাসীরা বাড়ির ভেতর চলে আসতে পারে।
হঠাৎ করে একটা গাড়ির সিগন্যাল লাইট জ্বলতে নিভতে শুরু করলো। রাফি চমকে ওঠে কিন্তু কোন আওয়াজ ছাড়া শুধুমাত্র সিগন্যাল লাইট জ্বলে ওঠায় রাফি কিছুটা স্বস্তি পায়।
– সিগন্যাল জ্বলা গাড়িটার কাছে যাও। দরজা খোলাই আছে, চুপচাপ ভেতরে গিয়ে বসো।
রাফি যতটা সম্ভব অন্ধকারে হাতড়াতে হাতড়াতে গাড়িটা পর্যন্ত পৌছায়। দরজা খুলে ভেতরে বসে।
রাফি – এখন কি?
– সিটবেল্ট বাধো আর অপেক্ষা করো।
রাফি সিটবেল্ট বাঁধতে বাঁধতে খেয়াল করে গ্যারেজের শাটার খুবই সন্তর্পণে খুলছে।
গাড়ির ইন্জিনটা অটোমেটিক স্টার্ট হয়ে গেল। এতক্ষণে রাফি বুঝতে পারলো এটি একটি ইলেকট্রিক গাড়ি, কোন তেল পোড়ানো গাড়ী এতটা নিঃশব্দে চালু হতে পারে না।
– আমি তোমাকে ব্যাকডোর পর্যন্ত পৌছে দিচ্ছি কোনরকম হেডলাইট ছাড়া। ব্যাকডোর থেকে বের হয়ে জিপিএস লোকেশন পর্যন্ত পৌছাও।
রাফি গাড়ির ভেতর ছোট্ট জিপিএস মনিটরে ডেষ্টিনেশন দেখতে পায় সাথে মডিফাইড রুট।
রাফি – আমি ত অনেক কম পথ ব্যবহার করে এই লোকেশনে পৌছাতে পারি। এতো ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে যেতে হবে কেন?
– পিকাচু কে তো ট্রাফিক সার্ভেইল্যান্স দিয়ে দিয়েছো, সে ই তোমার জন্য এই রুট বানিয়ে দিয়েছে যেটা তোমার ডেষ্টিনেশন পর্যন্ত পৌছানোর ট্রাফিক সার্ভেইল্যান্স ব্লাইন্ড স্পট। এই রুট ফলো করলে তোমাকে একটি ট্রাফিক সার্ভেইল্যান্স ক্যামেরাতেও দেখা যাবে না।
রাফি – বাহ, আমার হয়ে পিকাচুকে থ্যাংকস জানিয়ে দাও,
– পিকা পিকাআআ, পিকাচু তোমাকে ওয়েলকাম জানিয়েছে।
এইসব কথাবার্তা চলতে চলতে গাড়ি একটা ব্যাকডোরের সামনে চলে এলো। ব্যাকডোরটি খুলে গেল এবং গাড়িটিও সন্তর্পণে রাস্তায় নেমে এলো।
– আমি তোমাকে গলির মাথায় এনে ছেড়ে দিচ্ছি। এরপর তুমি জিপিএস এ দেখানো পথ ধরে চলে যাও ডেষ্টিনেশনে। I’ll be in touch.
রাফি গাড়ির স্টেয়ারিং এ হাত দেয়। গলির মাথায় চলে আসার পর গাড়ির হেডলাইট জ্বলে ওঠে।রাফি বুঝতে পারে এখান থেকেই তাকে তার মত সামনে এগোতে হবে। রাফি যথেষ্ট সাবধানে এবং ট্রাফিক নিয়ম মেনে গাড়ি চালিয়ে ডেষ্টিনেশনের দিকে এগোতে লাগলো।
রাফি ডেষ্টিনেশনের কাছাকাছি পৌঁছায়। শুনশান নীরব রাস্তা। কতক্ষণ আগে যে শেষ গাড়িটা রাফিকে ক্রস করেছে সেটা রাফি মনে করতে পারে না। গাড়ির হেডলাইটের আলোয় রাফি দেখতে পায় সামনেই নিউক্লিয়ার টেষ্ট ফিল্ড এবং রেডিয়েশন জোন।
রাফি গাড়ি থামাতে থামাতে মাফিয়া গার্লের ফোন আসে।
– সাইনবোর্ডগুলো দিয়ে জনসাধারণকে এই এলাকা থেকে দূরে রাখা হয়। এটা একটি সিক্রেট মিলিটারি ফ্যাসিলিটি। শুধুমাত্র লেভেল ৫ ক্লিয়ারেন্সপ্রাপ্ত অফিসারগনই এই ফ্যাসিলিটিতে প্রবেশ করতে পারে। লকার থেকে আনা ব্যাগটার উপরের পকেটে একটা কার্ড পাবে। ওটা বের করে হাতের কাছে রাখো। রাফি ব্যাগ থেকে কার্ডটি বের করে হাতে নেয়।
কোন ছবি নেই, শুধু লোকাল ভাষায় কি যেন লেখা।
কিছুক্ষনের মধ্যেই রাফি একটা চেকপোস্ট দেখতে পায়, গ্যাসমাস্ক এবং রেডিয়েশন প্রোটেক্টিভ ড্রেস পরিহিত কয়েকজন সৈন্য। প্রত্যেকের হাতেই স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র রয়েছে।
– ওরা গাড়ি থামানোর সিগন্যাল দিলে ওদের কার্ডটি শো করবে। গাড়ির ড্যাশবোর্ডের নীচে গ্যাসমাস্ক আছে। Do not let them see your face.
রাফি ড্যাশবোর্ডের নীচে হাত দিয়ে গ্যাসমাস্ক খুজে পায়। গাড়ি তাদের কাছে আসার আগেই রাফি গ্যাসমাস্ক পড়ে নেয়।
সৈন্যরা সিগন্যাল দিয়ে দাড় করায় রাফি কে। রাফিকে গ্লাস নামিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করে।
– কার্ডটা দেখাও ওদের,
রাফি কার্ড শো করে। সৈনিকটি কার্ডটা নিয়ে মেশিনে পাঞ্চ করে এরপর কার্ডটা রাফির হাতে দিয়ে সবাই একসাথে সেলুট করে রাফিকে। আর সামনের গেট খুলে দেয় ভেতরে যাওয়ার জন্য।
রাফি স্যালুটের জবাব দিয়ে গাড়ি চালিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। মোটামুটি গতিতে গাড়ি চালাতে চালাতে,
রাফি – কার্ড পাঞ্চের পর গেটের সবাই আমাকে স্যালুট দিলো কেন!
– কার্ডটি ওই অস্ত্র ব্যবসায়ীর যে এই ফ্যাসিলিটিতে অস্ত্র সরবরাহ করে থাকে। স্পেশাল পাশ ছিলো কার্ডটিতে তাই সবাই স্যালুট জানিয়েছে।
রাফি – এখানে আমার কাজটা কি? আমি এখানেই বা কেন!
– ১৫ মিনিটের ভেতর একটা কার্গো প্লেন এই ফ্যাসিলিটি ছেড়ে যাবে, কার্ডটি শো করলে ওরা তোমাকে বিমানে তুলে নেবে।
রাফি – পাসপোর্ট লাগবে না? কোথায় যাবে এই বিমান, আমাকে আবার কোথায় নিয়ে যাচ্ছো?
– এখন পর্যন্ত যখন বেঁচে আছো তখন বিমানে তুলে তোমাকে মারার কোন প্লান নেই আমার। দ্রুত কার্গো প্লেনের কাছে পৌছাও।
রাফি গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেয়। ৮ মিনিটের মাথায় রাফি ফ্যাসিলিটির বিল্ডিং দেখতে পায়। আরো দুইটি চেকপোস্ট পার করে রাফি গাড়িসহ পৌছে যায় রানওয়েতে।
– দ্রুত গাড়ি থেকে বের হয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে কার্ডটি দেখাও। সময় নেই একদমই।
রাফি দ্রুত গাড়ি থেকে বের হয়ে কার্গোহোল্ডের কাছে অফিসারের কাছে গিয়ে কার্ড শো করে।
অফিসার কার্ডটি দেখে আংগুল তুলে একজন অফিসারকে দেখিয়ে দেয়। রাফি সেই অফিসারের কাছে গিয়ে কার্ডটি দেখালে তিনি রাফিকে কার্গোপ্লেনের শিড়ি দেখিয়ে দেন বিমানে ওঠার জন্য। রাফি কথা না বাড়িয়ে উঠে পড়ে বিমানে। একটা সিটে বসে নিজের সিটবেল্ট টা বেঁধে নিয়ে বসে থাকে।
– এখন চুপচাপ বসে থাকো। কার্গো প্লেনে ৪ ঘন্টার পথ। নামার আগেই আমি যোগাযোগ করে নেবো।
রাফি – কিন্তু যাচ্ছি কোথায়? আমার বাড়ি ফিরতে হবে। বাড়িতে সবাই টেনশন করছে। তাছাড়া আমাকে না পেয়ে সন্ত্রাসীরা যদি আমার পরিবারের ক্ষতি করতে চায়? না, না, আমাকে বাড়ি ফিরতে হবে।
– তোমার বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা ই করা হচ্ছে। বাংকারে থাকা অবস্থায় অনেককিছুই ঘটে গেছে যা তোমার জানা নেই। আগে শান্ত হয়ে বসো। বিমান এখনই টেকঅফ করবে। ফোন এরোপ্লেন মোডে দেয়ার সময় হয়েছে।
রাফি – আরে কি হয়েছে সেটা তো বলে যাও? অনেক কিছু কি ঘটেছে? সবাই ঠিকঠাক আছে তো?
ততক্ষণে মাফিয়া গার্ল কল কেটে দিয়েছে। রাফি সাথে সাথে *6666# এ ডায়াল করতে যাবে এমন সময় একজন রাফির সামনে দাড়িয়ে লোকাল ভাষায় কি যেন বললো। রাফি মানুষটার অঙ্গভঙ্গি দেখে বুঝলো যে তিনি ফোন অফ করতে বলছেন।
বাধ্য হয়ে রাফিকে ফোন বন্ধ করতে হলো। কিছুক্ষণের ভেতর কার্গো বিমানটি দ্রুতগতিতে ছুটতে শুরু করলো রানওয়ে বরাবর। রাফি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখছে আর আতংকে তার বুক ধুকপুক করছে, কি ঘটে যাওয়ার কথা বললো মাফিয়া গার্ল! কোন অশুভ কিছু নয় তো?

টিপস : কেউ কারো ফেসবুক, ইমেইল, ইনস্টাগ্রাম বা অন্য কোন আইডি হ্যাক করলে নিন্মোক্ত ধারায় মামলা করে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। শাস্তিসহ ধারা:
#ডিজিটাল_নিরাপত্তা_আইন_২০১৮_এর_৩৪_ধারা_অনুযায়ী
(১) যদি কোনো ব্যক্তি হ্যাকিং করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১৪ (চৌদ্দ) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
(২) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অপরাধ দ্বিতীয় বার বা পুনঃপুন সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) কোটি টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।

বিঃদ্রঃ গঠন মূলক মন্তব্য করবেন। দয়া করিয়া। অন্যথায় মন্তব্যের প্রয়োজন নেই। ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে