হৃদয়ে তুমি পর্ব-১৭+১৮

0
1007

#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ১৭

তরী সোহাগকে আবার জিজ্ঞাসা করলো- সত্যি

সোহাগ- হুম, কিন্তু তুই এতো খুশি হলি কেন??

তরী- তুই জানিস না তুই আমার মাথা থেকে কত
বড়ো একটা বোঝা নামালি,আমি তোকে কি বলেছে ধন্যবাদ দেবো আমি বুঝতে পারছি না।

সোহাগ- আরে কি বলছিস তুই তোর কথার কিছু আমি বুঝতে পারছি না।।
তরী- আমাকে হেল্প করতে পারবি তুই
সোহাগ – কি হেল্প বল
তরী- আগে বল করবি।
সোহাগ- ওকে করবো এবার বল কি

তরী- আমি একটা সার্চ করবো সেখানে তোকে থাকতে হবে আর আমাকে কিছু জনের সম্পর্কে সমস্ত ইনফরমেশন দিতে হবে।

সোহাগ- কেন??
তরী- পড়ে সবটা বলবো।
সোহাগ- তুই গোয়েন্দা গিরি করছিস নাকি।
তরী- হুম সেরকমই চল।
সোহাগ- ওকে কিন্তু দুটো গাড়ি নিয়ে যাবো।
তরী- তোর ড্রাইভার আছে তো।
সোহাগ- হুম।
তরী- ওনাকে গাড়ি নিয়ে চলে যেতে বল আর তুই আমার সাথে চলে আয়।
সোহাগ- ওকে।

সোহাগ ওর ড্রাইভারকে চলে যেতে বলে তরীর গাড়িতে বসে,তরী গাড়ি ড্রাইভ করছে।

তরী- কি রে কাউকে বিয়ে করেছিস।
সোহাগ- না‌
তরী- কারোর সাথে প্রেম করিস বা ভালোবাসিস।
সোহাগ- না।
তরী- সব না তাহলে কি আর করবো।
সোহাগ- কেন করলে কি করতি।
তরী- তোর বউকে বলতাম তোর ছেলেবেলার কথা।
সোহাগ- ওহ।
তরী- হা‌

তরী আর সোহাগ কথা বলতে বলতে তরুনদের বাড়ির সামনে আসে।

সোহাগ- এই বাড়িটা সার্চ করবি।
তরী- হুম।
সোহাগ- কিন্তু কেন বাড়িটা তো অনেক পুরানো মনে হচ্ছে।
তরী- এখানেই আমি কিছু না কিছু একটা তথ্য পাবো।
সোহাগ- দ্যাখ কি পাস আমার তো মনে হচ্ছে না কিছু পাবি।
তরী- চল গিয়ে দেখি।
সোহাগ- লোক ধরে পেটাবে চোর বলে।
তরী – ওই জন্যই তো তোকে আনা তুই থাকলে কেউ কিছু বলবে না কারন তুই একজন পুলিশ অফিসার।
সোহাগ- বাবা তোর মাথায় তো অনেক বুদ্ধি।
তরী- হুম অনেক এবার চল।

সোহাগ তরীর কথা মতো দরজার তালাটা ভেঙে ভেতরে ঢোকে।পুরো বাড়ি অন্ধকার চারিদিকে ধুলো বালি ভর্তি।

সোহাগ- এখানে কিছু খুজবি কিভাবে পুরো তো জঙ্গল হয়ে আছে।
তরী- আমি ওহ সেটাই ভাবছি।
সোহাগ- আমি একটা কথা বলি শোন ,আমি কয়েকজন কে বলে দিচ্ছি বাড়িটা পরিস্কার করে দিতে তারপর তুই খুজে দেখবি।
তরী- ওকে কিন্তু একটাও জিনিস এদিক ওদিক না হয়।
সোহাগ- ওকে আমি দাঁড়িয়ে থেকে বাড়িটা পরিস্কার করাবো।
তরী- আজকে করাতে পারলে খুব ভালো হয়।
সোহাগ- ঠিকাচ্ছে তুই ১ ঘন্টা ওয়েট কর আমি করিয়ে দিচ্ছি।
তরী- তাহলে তুই এখানে থাক আমি একটা কাজ সেরে আসি।
সোহাগ-কি কাজ।
তরী- পড়ে বলবো।
সোহাগ – আচ্ছা যা।

তরী চলে যায়।

সোহাগ- তুই কি এখনো বুঝবি না আমার মনের কথা।আমি যে তোকে আর আরুশকে একসাথে দেখতে পারবো না বলে চলে গিয়েছিলাম এতদূরে কিন্তু তাও তো তোকে ভুলতে পারিনি।এবার কি তুই বুঝবি আমার মনের কথা।

ওদিকে…

তরী আরুশের মায়ের বলা হসপিটালে আসে….

রিসেপশন রুম…

তরী- হ্যালো ম্যাম
মেয়েটা- বলুন
তরী- আমার একটা হেল্প লাগবে।
মেয়েটা- কি হেল্প বলুন
তরী- আমি কি এই হসপিটালের পুরানো ডকুমেন্টস দেখতে পারি।
মেয়েটা- সরি ম্যাম এটা তো আমরা আপনাকে দিতে পারবো না, এটা আমাদের আইনের বাইরে।
তরী- ওকে আপনি আমাকে এই হসপিটালের মালিকের ঠিকানাটা একটু দেবেন প্লিজ।
মেয়েটা- ওকে এই নিন……..
তরী- ধন্যবাদ
মেয়েটা- ওয়েলকাম।

তরী ঠিকানাটা নিয়ে ওখান থেকে তরুনদের বাড়িতে আবার আসে, ততক্ষণে বাড়ির অনেকটাই পরিস্কার করা হয়ে গেছে।

সোহাগ- তরী আজকেই দেখবি তো বাড়িটা
তরী- হুম
সোহাগ- চল তাহলে
তরী- হুম।

সোহাগ আর তরী একটা একটা করে সবকিছু দেখতে লাগলো।

সোহাগ- তরী এখানে তো কিছুই নেয়।
তরী- কিছু তো একটা না একটা থাকবে।
সোহাগ- আচ্ছা চল ভালো করে আরেকবার দেখি।

ওরা আবার খুঁজতে থাকে। কিন্তু কোনো কিছু পাইনা।

সোহাগ- এবার ওহ কিছু পেলাম না।
তরী- সেটাই তো দেখছি এখানে কিছু নেয় চল ওই রুমটাতে দেখি।
সোহাগ- চল।

ওরা একটা একটা করে রুম সার্চ করতে লাগলো।ওরা সার্চ করতে করতে তরুনের বাবার রুমে এসে পৌঁছায়।

তরী- এটা মনে হয় তরুনের বাবার রুম।
সোহাগ- মনে হচ্ছে তো তাই,চল দেখি।

ওরা খুঁজতে খুঁজতে অনেক গুলো ফাইল পাই।

তরী- এগুলো কিসের ফাইল
সোহাগ- দাঁড়া একটু দেখতে দে।

সোহাগ ফাইল গুলো ভালো করে দেখে বললো- তরী এগুলো সব বেআইনি কারবারের ফাইল,কখন কোন জায়গায় কি আসবে তারপর আরো অনেক কিছু।
তরী- এগুলো আমাদের দরকার লাগতে পারে এগুলো নিয়ে নে।।
সোহাগ- তোর লাগবে কিনা জানিনা তবে আমার লাগবে কারন এখান থেকে আমি অনেক বেআইনি কাজের সাথে যুক্ত লোকদের তথ্য পাবো।
তরী- ওহ ,চল বাকি আছে শুধু ওই রুমটা ওটা দেখি।

ওরা বাকি থাকা রুমটাই আসে রুমটাই আরুশ, আর্দ্র আর একজন তৃতীয় ব্যক্তির ছবি আছে।

তরী- ওটা মনে হয় তরুন।
সোহাগ- হতে পারে।

তরী আর সোহাগ গোটা রুম খোঁজে কিন্তু কিছু পাইনা।

তরী- এখানে তো কিছু নেয়।
সোহাগ- ওটাই তো।
তরী- কিছু না কিছু তো থাকার কথা কিন্তু কিছু তো পাচ্ছি না।।
সোহাগ- চল এখানে কিছু পাবো না।
তরী- হুম।

সোহাগ তরী কে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে আসে।

তরী- কিরে এখানে আনলি কেন।
সোহাগ- খাবো ক্ষিদে পাচ্ছে।
তরী- আচ্ছা চল।

ওরা ভেতরে গিয়ে খাবার অর্ডার করে।

তরী- আঙ্কেল,আন্টি কেমন আছেন।
সোহাগ- ভালো।
তরী- আচ্ছা তুই হঠাৎ পুলিশ হতে গেলি কেন।
সোহাগ- বাবা একজন পুলিশ সেখান থেকে ইচ্ছা হলো পুলিশ হবো,অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো।
তরী- ভালো।
সোহাগ- তা তুই এখন কি করছিস।
তরী- একটা কোম্পানিতে চাকরি করছি।।
সোহাগ- ওহ।।

তরী আর সোহাগ কথা বলছে হঠাৎ কেউ তরী বলে ডাকলো।

আর্দ্র- আরে তরী তুই এখানে।
তরী- হুম, তুমি এখানে কি ব্যাপার অফিস ফেলে রেস্টুরেন্টে।
আর্দ্র- আর বলিস না তোর বন্ধুর ইচ্ছা আজকে উনি রেস্টুরেন্টে খেতে আসবেন।
তরী- তা মহারানি কোথায়।
রিতা- এই তো আমি….

রিতা কিছু বলতে যাবে ওর চোখ পড়ে সোহাগের দিকে ওহ অবাক হয় সোহাগকে দেখে।

রিতা- সোহাগ তুই
সোহাগ- তাহলে চিনতে পারলি।
রিতা- তোকে কেন চিনতে পারবো না এতদিন কোথায় ছিলি।
সোহাগ-সব বলবো এখন বস তো।

রিতা আর আর্দ্র ওদের টেবিলেই বসে।

সোহাগ- উনি কে ??
তরী- ওটা হলো আমাদের রিতা রানির বর আর্দ্র আরুশের ভাই।
সোহাগ- হ্যালো।
আর্দ্র- হ্যালো।
রিতা- তরী তোর সাথে ওর দেখা হল কিভাবে।
তরী- সে অনেক কথা পড়ে সব বলবো।এখন বল তো দুজনের কি অবস্থা।
রিতা – মানে।
তরী- প্রেম করিছিস তো দুজনে।
রিতা- কে প্রেম করবে কার সাথে।
তরী- বাবা থাক আর নাটক করতে হবে না।
রিতা- ওই তুই চুপ করবি।
তরী- ওকে। আর্দ্রদা তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
আর্দ্র -বল
তরী- বলছি তরুনের কোনো প্রেমিকা ছিলো।
আর্দ্র – নারে ।
তরী- ওহ।।

ওরা আড্ডা দিয়ে যে যার বাড়ি চলে যায়।

রাত্রি বেলা…..

রিতা ওর ফোনে নিজের পুরানো ছবি গুলো দেখছিল আর্দ্র ওর পাশে এসে বসে পড়ে।

আর্দ্র- কি করছো।
রিতা- এই তো পুরানো ছবি দেখছি আগের দিন গুলো কত সুন্দর ছিল।
আর্দ্র – আমাকেও দেখাও।
রিতা- এই নিন।

আর্দ্র রিতার ছবি গুলো দেখতে থাকে বেশির ভাগ ছবিই তরীর সাথে, আর্দ্র ছবি গুলো দেখতে দেখতে একটা ছবিতে চোখ আটকে যায়,এটা তো সেই মেয়ে যাকে মেলায় দেখেছিলো কিন্তু ছবিটি তো……

#চলবে…..

#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ১৮

আর্দ্রকে ছবিটার দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে রিতা ওকে জিজ্ঞাসা করলো- কি হলো।

আর্দ্র রিতার কথা শুনে ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে বলে- এটা কার ছবি।
রিতা- এটা তো আমার ছবি।

আর্দ্র রিতার দিকে এক অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো যার কারন রিতার অজানা।

রিতা- কেন??
আর্দ্র- না এমনি তুমি ঘুমিয়ে পড়ো।

রিতা কে ফোনটা দিয়ে আর্দ্র বারান্দায় চলে যায়। রিতা আর্দ্রের হঠাৎ এমন পরিবর্তনে অবাক হয়, কিন্তু ব্যাপারটা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়ে।

ওদিকে বারান্দায়…

আর্দ্র- যাকে আমি এতদিন থেকে খুঁজে চলেছি সে আমার সামনেই ছিলো কিন্তু তাকে আমি চিনতে পারিনি।আমি আমার ভালোবাসার মানুষটাকে নিজের অজান্তেই এতগুলো দিন কস্ট দিয়েছি কিন্তু আর নয় ওকে এবার আমি ভালোবাসাই ভরিয়ে দেবো( মনে মনে)

আর্দ্র অনেকক্ষণ পর রুমে আসে ততক্ষণে রিতা ঘুমিয়ে পড়ছে। আর্দ্র রিতার ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকে।ওর আজকে অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে যার কারন ওর অজানা নয়।

আর্দ্র রিতার মুখের সামনে পড়ে থাকা চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে বলল- মিসেস আর্দ্র চৌধুরী রেডি হন রোমান্টিক অত্যাচারের জন্য।( বাঁকা হেসে)

আর্দ্র রিতার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ল।

পরেরদিন………

রিতা ঘুম থেকে উঠে দেখলো আর্দ্র চুপচাপ ওর পাশে শুয়ে আছে মাঝখানে কোনো বালিশ নেয়। রিতা আর্দ্রের দিকে একভাবে তাকিয়ে থেকে কিছু একটা মনে করে ওয়াশ রুমে চলে যায় কিছুক্ষন পর আবার ফিরে আসে হাতে একটা পানির জগ নিয়ে।রিতা আর্দ্রের গায়ে পানি ঢেলে দেয়।

আর্দ্র- কে ..কে? ( ভয়ে উঠে বসে)

আর্দ্রের এমন কান্ডে রিতা নিজেকে সামলাতে পারেনা ওহ হাসতে লাগলো। আর্দ্র কারোর হাসির শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখে রিতা হাসছে আর্দ্র একভাবে রিতার হাসির দিকে তাকিয়ে থাকে কিন্তু ওর যখন মনে পড়ে যায় যে রিতা ওর গায়ে পানি দিয়েছে ওর রাগ উঠে যায়।

আর্দ্র- রিতা এসব কি( ধমক দিয়ে)

আর্দ্রের ধমক শুনে রিতা চুপ করে যায়।

রিতা- কিছু না তো,আমি তো কিছু করিনি।
আর্দ্র- মানে কি তারমানে কে আমার গায়ে পানি দিলো ভূতে।
রিতা- হবে হয় তো।
আর্দ্র- ভূতে পানি দিয়েছে তাই না দাঁড়াও তোমার হচ্ছে।

আর্দ্র বিছানা থেকে উঠে রিতার পেছনে দৌড়াতে লাগলো রিতা ওহ দৌড়াতে লাগলো। দৌড়াতে দৌড়াতে রিতার পায়ের সাথে শাড়ি আটকে গিয়ে পড়ে যাচ্ছিল আর্দ্র রিতা কে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই রিতার গায়ের উপর পড়ে। আর্দ্র আর রিতার চোখে চোখ পড়ে দুজন দুজনের চাহনিতে হারিয়ে যায়।

আর্দ্রের ধ্যান ভাঙল ফোন বাজার শব্দে। আর্দ্র তাড়াতাড়ি ফোনটি নিয়ে বারান্দায় চলে যায় রিতা নিজের শাড়ি ঠিক করে নীচে চলে যায়।

রিতা নীচে গিয়ে দেখে আরু ডাইনিং এ বসে বসে কী যেন একটা ভাবছে।

রিতা- আরু কী হয়েছে?
আরু- কিছু না।
রিতা- কিছু তো একটা হয়েছে বলো।
আরু- আমি না তরীর কথা ভাবছি তরীটার কি হবে ওর জীবনটা তো এলোমেলো হয়ে গেছে।আবার দাদা ভাই এর মতো ছেলেটাকে দেখে তরী আরো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।
রিতা- আমার ওহ ওইটা নিয়ে চিন্তা হচ্ছে কিন্তু তরী কে তো চেনো ওহ কি কারোর কথা শোনার মতো মেয়ে।
আরু- হুম।
রিতা- কি করবে আর কী করছে কাউকে কিছু যদি বলে,কালকে আবার দেখলাম তো সোহাগের সাথে আবার কী করবে কে জানে।
আরু- সোহাগ কে??
রিতা- সোহাগ আমাদের ছোট বেলার বন্ধু।
আরু- ওহ।

ওদিকে……

নিরবের মাথা ব্যথা করছে,অতিরিক্ত যন্ত্রনা হচ্ছে নিরব সহ্য করতে পারছে না। হাতের কাছে থাকা গ্লাসটা নিরব কোনো রকমে নীচে ফেলে দেয়। গ্লাস ভাঙ্গার আওয়াজ পেয়ে ওর বাবা মা ছুটে আসে।

বাবা- কি হয়েছে নিরব বাবা তোর।
নিরব- প্রচুর পরিমাণে মাথা যন্ত্রনা করছে।
মা- ওগো দেখো না আমার ছেলেটার কি হলো।
বাবা- চিন্তা করো না আমি দেখছি।

নিরবের বাবা নিরবকে দেখতে লাগলেন,নিরবকে দেখে ওনার মুখটা কালো অন্ধকারে ঢেকে গেল উনি দৌড়ে গিয়ে একটা বাক্স নিয়ে এসে সেখান থেকে ওষুধ বার করে নিরবকে খাইয়ে দিলেন।

নিরবের যন্ত্রনাটি আস্তে আস্তে কমতে শুরু করলো। নিরবের বাবা নিরবকে একটা ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে দেয় আর নিরব ঘুমের দেশে চলে যায়।নিরবের বাবা একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস নেয়।

নিরবের মা নিরবের বাবার দিকে তাকিয়ে থাকে মানুষটাকে বড্ড বেশি ভালোবাসেন আর বিশ্বাস করেন কিন্তু সেদিন চৌধুরী বাড়ি যাবার পর থেকে মনটা যেন দোটানায় পড়েছে। কোনটা ঠিক কোনটা ভুল তার বিচার করতে পারছেন না তিনি।

তরী অফিসে গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে বসে আছে দুবার পিওন এসে ডেকে গেছে কিন্তু তরীর কোনো হেলদোল নেই। হঠাৎ তরীর কিছু একটা মনে পড়ায় তাড়াতাড়ি করে অফিস,থেকে বেরিয়ে পড়ে তরুনদের বাড়ির উদ্দেশ্যে …….

গাড়িতে বসে সোহাগকে ফোন করে- হ্যালো।

সোহাগ- হুম তরী বল।
তরী- তোকে যে ঠিকানাটার ব্যাপারে খোঁজ নিতে বলেছিলাম নিয়েছিস।
সোহাগ- হুম ঠিকানা একদম ঠিক আছে।
তরী- ওকে তাহলে ঠিক বিকাল ৫ টাই ওই ঠিকানায় দেখা হচ্ছে।
সোহাগ- ওকে।

তরুনদের বাড়ি…..

তরী আবার সারা বাড়ি খুঁজে দেখতে লাগলো খুঁজতে খুঁজতে ওর চোখ গেলো একটা আলমারির আড়ালে একটা দরজার মতো কিছু একটা দেখা যাচ্ছে।তরী তাড়াতাড়ি ওখানে গিয়ে দেখে ওহ যা ভেবেছিলো তাই ওটা একটা দরজা…

অন্যদিকে….

চাঁদনী – আমি ওই তরী কে চিনি কিন্তু কিভাবে আমার তো কিছু মনে পড়ছে না। আর আমার সাথে তো নিরবের বিয়ে হয়নি তাহলে তখন ওহ বললো কেন নিরবের বউ আমি আমার কিছু মনে পড়ছে না আমি কেন মনে করতে পারছি না কিছু।আমাকে ওই তরীর সাথে কথা বলতে হবে।

নিরবের বাবা চাঁদনির ঘরের পাশ থেকে যাবার সময় চাঁদনির কথা গুলো শুনতে পাই। নিরবের বাবা কথা গুলো শুনে চিন্তিত হয়ে পড়েন। তাড়াতাড়ি নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।

নিরবের বাবা- চাঁদনীকে কিছুতেই তরীর সাথে কথা বলতে দেওয়া যাবে না তরীকে আমি যেটুকু চিনেছি চাঁদনির কথায় গুলো শুনলে ওর মনে আরো সন্দেহের সৃষ্টি হবে আর সবটা খুঁজে বের করার জন্য উঠে পড়ে লাগবে।আর যদি সবটা জেনে যায় তখন কি হবে আমি কি করবো আমি যে নিরবের মাকে বাঁচাতে পারবো না না আমাকে কিছু একটা করতেই হবে যাতে তরী না এসব বিষয় নিয়ে মাথা ঘামায়।

ওদিকে…..

তরী অনেক কস্টে আলমারি টাকে সরিয়ে ভেতরে ঢোকে। অদ্ভুত ব্যাপার এটাই এই বাড়িটা পুরোটা অপরিস্কার ছিলো কিন্তু এই রুমটা যথেস্ট পরিস্কার করা এটা দেখে তরীর মতো আরো সন্দেহের সৃষ্টি হয়।তরী রুমটা খুঁজতে লাগলো ওহ খুঁজতে গিয়ে একটা লাভ লেটার পেলো……

প্রিয় তরুন,

আমি তোমাকে কথাটা কিভাবে বলবো বুঝতে পারছিলাম না তাই সিদ্ধান্ত নিলাম চিঠি দেবো।কেমন আছো তুমি, আমি জানি চিঠিটা পড়তে তুমি খুব উৎসাহী ।আমি তোমার কথার কি উওর দেবো সেটাই তুমি ভাবছ। তোমার ভয় করছে এটা ভেবে আমি তোমাকে যদি না বলি তাহলে তুমি কি করবে। সত্যি বলতে তোমাকে না বলার মতো ক্ষমতা আমার নেয় কারন আমিও যে তোমাকে বড্ড ভালোবাসি। তোমার সাথে দেখা হবার পর থেকেই আমি তোমার প্রতি দুর্বল তুমি যখন আমাকে তোমার মনের কথা জানালে আমি যে কতটা খুশি হয়েছিলাম বলে বোঝাতে পারবো না। আমি তখনি তোমাকে বলতে পারতাম কথাটা কিন্তু আমি ভাবলাম তোমাকে চিঠির মাধ্যমে কথাটা জানালে কেমন হয় তাই সেটাই করলাম। আমি আজ তোমার জন্য …… নদীর ধারে অপেক্ষা করবো ঠিক ৪ টের সময় এসো কিন্তু।

ইতি…
তোমার
পাগলি টা

তরী- এখানে তো কারোর নাম নেয় কীভাবে বুঝবো মেয়েটা কে??

তরী আবার ওহ খুঁজতে থাকে আর ওহ একটা ডাইরি পাই যার উপর তরুনের নাম লেখা আছে।তরী ডাইরি টা খোলে সেখানে তরুনের জীবনের অনেক কথা আছে। তরী ডাইরির পাতা উল্টিয়ে দেখতে গেলে একটা ছবি নিচে পড়ে যায় তরী ছবিটা তুলে নেয়।আর ছবিটাতে তরুনের সাথে মেয়েটাকে দেখে চরম থেকে চরমতম অবাক হয়……

#চলবে_

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে