হৃদয়ে তুমি পর্ব-৩৩+৩৪

0
1135

#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ৩৩

আরুশের মা- ওই তোরা সব চুপচাপ কেন
আরুশ- সব মন খারাপ করে আছে তো
আর্দ্রের মা- তোরা কোথাও থেকে ঘুরে আয় না।
আর্দ্র- ঘুরে আসলে হয় কিন্তু কোথায় যাবো
আরুশ- ওই আরু কিছু বল কোথায় গেলে ভালো হবে
আরু- দ্যাখ তোরা কোথায় যাবি,আমি আজকে যেতে পারবো না আমার একটা কাজ আছে
আরুশ- কি কাজ
আরু- একটা ইন্টারভিউ দিতে যাবো।
আর্দ্র- কিসের ইন্টারভিউ
আরু- একটা স্কুলে
আরুশের মা-তোর চাকরি করার কি দরকার
আরুশ- মা ওকে করতে দাও ওর যেটা করতে ইচ্ছা করতে দাও,ওহ পড়াশোনা করেছে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায় তখন কেন ওকে বাঁধা দিচ্ছো
আরু- থ্যাঙ্কস দাদাভাই
আরুশ- যা বোন ভালো করে ইন্টারভিউ দিস।
আরু- হুম

আরু সবাইকে বিদায় জানিয়ে চলে যায়।

আরুশের কাছে একটা ফোন আসে।

আরুশ- হ্যালো
……………

অপর প্রান্ত থেকে যেটা বললো তাতে আরুশ চমকে উঠলো।

আর্দ্র- কি হলো আরুশ
আরুশ- মিতালি সুইসাইড করেছে।

সবাই চমকে উঠলো আরুশের কথা শুনে।

রিতা- না

রিতা কাঁদতে চালু করলো,আরুশের মা, আর্দ্র এর মা গিয়ে ওকে সামলাতে থাকে।

আরুশের মা- রিতা নিজেকে সামলাও
রিতা- বড়মা আমি মিতালি নিজের বোন ভাবতাম ওর মৃত্যু টা আমি কিভাবে মেনে নেবো বলো।
আর্দ্রের মা- মেনে তো নিতেই হবে,তুমি নিজেকে সামলাও নাহলে বুঝতে পারছো তরী কি করবে,তরীকে তো সামলাতে পারা যাবে না।
রিতা- কিভাবে সামলাবো নিজেকে
আর্দ্রের মা- আর্দ্র রিতাকে নিয়ে রুমে যা
আর্দ্র- হুম

রিতাকে নিয়ে আর্দ্র চলে যায়।

আরুশের মা- আরুশ বাবা তরীকে কিভাবে বলবি কথাটা
আরুশ- মা কথাটা তো বলতেই হবে
আর্দ্রের মা-হুম বুঝতে পারছি।
আরুশ- আচ্ছা আমি এখন একটু হসপিটাল থেকে ঘুরে আসি তারপর না হয় এসে তরীকে বলবো
আরুশের মা-যা ভালো বুঝিস তাই কর
আরুশ-হুম

আরুশ উপড়ে নিজের রুমে যায় চেঞ্জ করতে।

তরী- কোথায় যাবে
আরুশ- একটু অফিসের কাজ আছে সেখানেই যাচ্ছি।

আরুশ কথাটা বলেই ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে,তরী আরুশের যাবার দিকে তাকিয়ে মেকি হাসি দেয়।

কিছুক্ষন পর আরুশ রেডি হয়ে বাইরে আসতে তরী বললো-হসপিটালে যাচ্ছো

তরীর এমন কথা শুনে আরুশ চমকে উঠে

আরুশ- মানে
তরী- মানেটা বুঝতে পারছো না চাইছো না
আরুশ- তরী তুমি কি সব বলছো
তরী- এটাই বলতে চাইছি যে,মিতালি যে সুইসাইড করেছে সেটা আমি জানি

আরুশ তরীর কথা শুনে চরমতম অবাক হয়।তরী কথাটা জানার পর ওহ এতটা স্বাভাবিক কিভাবে সেটাই ওহ বুঝে উঠতে পারছে না।

আরুশ- তরী তুমি জানো মানে
তরী- জানি মানে হলো,কালকে রাতে মিতালি আমাকে কল করেছিলো
আরুশ- কিভাবে
তরী- সোহাগের ফোন থেকে
আরুশ- তারপর
তরী- মিতালি ফোন করে আমাকে…

ফ্ল্যাশব্যাক…

তরী- হ্যালো সোহাগ বল
মিতালি- আমি মিতালি
তরী- তুই
মিতালি- হুম আমি
তরী- কেন ফোন করেছিস আমাকে
মিতালি- তোর কাছে ক্ষমা চাইতে

তরী কিছু বলে না।

মিতালি- আমি জানি আমি যেসব কাজগুলো করেছি সেগুলোর ক্ষমা হয়না কিন্তু প্রতিটা মানুষ তো ভুল করে বল
তরী- তোর উপর আমার কোনো রাগ নেয় তাই ক্ষমা করার ওহ কোনো কথা আসছে না।
মিতালি- রাগ নেয় মুখে বলছিস কিন্তু সত্যিই কি কোনো রাগ নেয়

তরী মিতালির কথা শুনে চুপ করে যায় কারন সত্যি মিতালিকে মুখে ক্ষমা করে দিলেও মন থেকে পুরোপুরি ক্ষমা করতে পারেনি,কোথাও একটা মনের মাঝে মিতালির উপর রাগ, অভিমান রয়ে গেছে।

মিতালি- কিরে চুপ করে গেলি।
তরী- কিছু না।
মিতালি- আমি জানি আমি তোর জীবনটা ছাড়খাড় করে দিয়েছি,তোর এতদিনে স্বামি- সন্তান নিয়ে থাকার কথা সেখানে তুই এই মাত্র আরুশকে পেয়েছিস তোর রাগ হওয়া স্বাভাবিক,তোর সুখের জীবনটা আমি শেষ করে দিয়েছি।
তরী- যা করার তো করে দিয়েছিস এখন কেন আবার পুরানো কথাগুলো তুলছিস
মিতালি- আমি না মানতে পারছি না,আমি আরুশকে বিনা দোষে শাস্তি দিতে চেয়েছি।
তরী- আচ্ছা মিতালি একটা কথা বল তো
মিতালি- কি কথা
তরী-তুই যখন জানলি যে, তরুনের বন্ধু আমার ভালোবাসার মানুষটা তখন তারপর ওহ তুই কিভাবে ওর প্রতি এতটা অন্যায় করলি তোর একবার ওহ মনে হয়নি আমার কি হবে,আমি কিভাবে বাঁচব।

মিতালি আমার কথা শুনে হাসলো। তরী সেটা বুঝতে পেরে বললো – হাসছিস কেন
মিতালি- জানিস প্রতিহিংসা মানুষকে শেষ করে দেয়,প্রতি মুহূর্তে তাকে তাড়া করে বেড়ায়,মানুষটার প্রতি আরো রাগ সৃষ্টি হয়। নিজে একটু কস্ট পেলে সেই মানুষটির প্রতি রাগ,ঘৃনা টা আরো বেড়ে যায় এতটাই বেড়ে যায় যে মানুষটাকে শেষ করে দিতে ওহ হাত কাঁপে না।

তরী মিতালির কথা শুনে চুপ করে থাকে।

মিতালি- আমি প্রতিহিংসায় একটা পশুতে পরিনত হয়ে ছিলাম।
তরী-হূম
মিতালি- আর রাগ করে থাকিস না আমার উপর
তরী- হুম
মিতালি- তাহলে রাখছি ভালো থাকিস আর সবাই কে ভালো রাখিস।
তরী- হুম

মিতালি ফোন কেটে দেয়।

আরুশ- তরী তারপর,
তরী- তারপর আমি কিছুতেই ঘুমাতে পারিনা মনটা কিরকম যেন করছে,আমি আবার সোহাগকে ফোন করি।

সোহাগ- হ্যালো( ঘুম কন্ঠে)
তরী- হ্যালো সোহাগ আমি তরী
সোহাগ- তুই এতরাতে কোনো সমস্যা
তরী- না কোনো সমস্যা নয় কিন্তু
সোহাগ -কি
তরী- আমার মিতালির জন্য খুব চিন্তা হচ্ছে
সোহাগ- কিসের চিন্তা
তরী- তুই একবার খবর নিয়ে বল মিতালি কি করছে
সোহাগ- ওকে।

সোহাগ আমাকে খোঁজ নিয়ে জানায় যে,মিতালি খাওয়া- দাওয়া করে ঘুমাচ্ছে এখন।

সোহাগ- এবার শান্ত হ
তরী- সোহাগ তুই এখনি একবার থানাতে গিয়ে দ্যাখ মিতালি কি করছে।
সোহাগ- খবর নিয়ে বললাম তো
তরী- প্লিজ যা একবার।

সোহাগ তরীর কথা শুনে থানাতে যায় গিয়ে দ্যাখে মিতালি ঘুমাচ্ছে।

সোহাগ- তরী মিতালি ঘুমাচ্ছে
তরী- ওই তুই একবার ওকে ডাক আমি কথা বলবো
সোহাগ -কি ছেলেমানুষী করছিস তুই
তরী- প্লিজ একবার
সোহাগ- ওকে

সোহাগ মিতালি কে ডাকতে থাকে কিন্তু মিতালি কোনো সাড়া শব্দ দেয় না।সোহাগ শেষে বাধ্যহয়ে ভেতরে গিয়ে মিতালি ডাকে।

সোহাগ – এই মিতালি

মিতালি কোনো সাড়া দেয়না,সোহাগ মিতালি কে ঘুরিয়ে দ্যাখে ওর মুখ থেকে গাঁজা বের হচ্ছে আর গোটা শরীর ঠান্ডা।সোহাগ মিতালি বলে চেচিয়ে উঠলো।

তরী- হ্যালো সোহাগ কি হয়েছে বল
সোহাগ- তোর সাথে পড়ে কথা বলছি
তরী- তুই বলবি না আমি এখনি ওখানে যাবো
সোহাগ- না বলছি
তরী-বল
সোহাগ-মিতালি সুইসাইড করার
তরী- ওহ এখন বেঁচে আছে না মরে গেছে
সোহাগ- নো।

তরী ফোনটা কেটে দিলো।আর কাঁদতে লাগলো।

আরুশ- তুমি আমাকে বলোনি কেন
তরী- তুমি কাল ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলে তাই খেয়াল নেয় আর আজকে একটু আগে আমি ঘুম থেকে উঠলাম কখন বলবো
আরুশ- হুম আমি হাসপাতাল থেকে দেখে আসি
তরী- ওকে যাও একটা কথা
আরুশ- কি

#চলবে…

#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ৩৪

আরুশ- কি বলো
তরী- মিতালির দাফন আমাদের বাড়ি থেকে করবে প্লিজ

আরুশ তরীর চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো- পাগলি এটা আবার বলতে হবে, তুমি চিন্তা করো না আমি সব টা চেস্টা করবো।আমি এখন যায়।
তরী- হুম

আরুশ হসপিটালে চলে যায়,সেখান থেকে সময় মতো মিতালির লাশ ওদের হাত তুলে দেয়,আরুশদের বাড়ি থেকেই মিতালির দাফন সম্পন্ন করা হয়।

কয়েকদিন পর,

মিতালির শোকটা তরী সামলাতে পারলেও রিতা একটু ভেঙ্গে পড়ে ছিলো। আর্দ্র রিতাকে সামলেছে।

একদিন সন্ধ্যাবেলা, আরুশের মায়ের কাছে তরী একা যায় আরুর আর সোহাগের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।

তরী- মা আসবো
মা- আয়
তরী- তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো
মা- কি বল
তরী- আরুর জন্য একটা পাত্র দেখেছি।
মা-কে সে
তরী- সোহাগ আমার বন্ধু
মা- সেই পুলিশ ছেলেটা
তরী- হুম
মা-আমার তো অসুবিধা নেয় দ্যাখ বাকিদের কি মত
তরী- মা তুমি বাপিকে বলো
মা- আমি বলবো তুই চিন্তা করিস না।

আরুশের মা ওনার স্বামীকে কথাটা জানায়

আরুশের মা- একটা কথা বলবো
বাবা- কি বলো
মা- আরুর জন্য একটা ছেলে দেখেছি
বাবা- কে ছেলে
মা- সোহাগ তরীর বন্ধু

ছেলে ভালো তাই আরুশের বাবা ওহ দ্বিমত করেনি,আরুশের বাবা তরীর বাবার সাথে কথা বলে ওনা কে দিয়ে সোহাগের বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন

তরীর বাবা- দাদা তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো
সোহাগের বাবা- কি বলো
তরীর বাবা- সোহাগের কি বিয়ে দেবে না কি
সোহাগের বাবা-দেবো তো কিন্তু ভালো মেয়ে পাচ্ছি না তো
তরীর বাবা- আমার কাছে একটা মেয়ের সন্ধান আছে বলো করবে বউমা
সোহাগের বাবা- কে মেয়ে
তরীর বাবা- তরীর ননদ আরুশী
সোহাগের বাবা-আরুশের ছোট বোন
তরীর বাবা-হুম
সোহাগের বাবা- ওনাদের পরিবারের সাথে সম্পর্ক করতে আমার কোনো অসুবিধা নেই,তুমি কথা বলো ওদের সাথে।

দুপক্ষ যখন রাজি তখন ওদের বিয়ের কথা টা এগিয়ে যায়।প্রথমে আরুশ প্রথমে একটু না করেছিলো।

আরুশ- তরী আমার এই বিয়েতে মত নেয়

তরী অবাক হয়ে যায়,

তরী- কেন
আরুশ- কেন এর উওর দিতে পারবো না আমার মত নেই প্লিজ কথাটা আগিয়ে ওহ না।
তরী- কেন এমন করছো সোহাগ কি খারাপ
আরুশ- খারাপ আমি একবার ওহ বলছি না কিন্তু আমার মত নেয়,প্লিজ বোঝার চেষ্টা করো
তরী- তুমি প্লিজ বোঝার চেষ্টা করো আরু সোহাগকে ভালোবাসে‌

আরুশ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো- কি বললে
তরী- হুম সোহাগকে আরু ভালোবাসে, সত্যি টা বললাম এবার তুমি দেখো কি করবে।

আরুশ ভাবতে লাগলো, তারপর বললো- আচ্ছা আমার কোনো আপত্তি নেই।
তরী- থ্যাঙ্কস

তরী আরুশকে জড়িয়ে ধরলো।

আরু আর সোহাগের বিয়ে খুব ধুমধাম করে হয়ে যায়।

বাসর রাতে…

সোহাগ- আরুশী আমি তোমাকে একটা কথা বলতে চাই
আরু- কি বলুন
সোহাগ- আমার এই বিয়েতে মত ছিলো না,তাই আমি তোমাকে স্ত্রী হিসাবে মানতে পারবো না।

আরু সোহাগের এমন কথা শুনে রাগে- দুঃখে কান্না করতে লাগলো। সোহাগ আচমকা আরুর এমন কান্ডে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়।

সোহাগ- কি হলো
আরু- আবার জিজ্ঞাসা করছে কি হয়েছে
সোহাগ- মানে
আরু- বিয়েতে রাজি না মানে কি
সোহাগ- রাজি ছিলাম পরিবারের মতে করেছি
আরু- যখন করেছিস তখন আমি তোর বউ আর সেটা তোকে মানতে হবে
সোহাগ- কি সব বলছো
আরু- আমি তোর বউ আর একটাও কথা বলবি না আমি ঘুমাবো
সোহাগ- আচ্ছা ঘুমাও
আরু- ওই কোথায় যাচ্ছিস
সোহাগ- সোফায়
আরু- চুপচাপ বিছানাতে শুয়ে পড়
সোহাগ- আমি বিছানায় ঘুমাবো না
আরু- এখানে শুবি না আমি মা বাবা কে ডাকবো
সোহাগ- না আমি ঘুমাবো ওখানেই
আরু- হুম

সোহাগ বিছানায় শুয়ে পড়ে আরুর থেকে অনেকটা ছেড়ে শুয়েছে।আরুর সোহাগকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ে সোহাগ আরুর কান্ডে শক কিন্তু কিছু বলতে পারছেনা ,এই মেয়েকে বিশ্বাস নেয়।সোহাগ প্রথমে উশখুশ করতে করতে ঘুমিয়ে যায়।

কয়েকমাস পর….

আরু সোহাগের মন জয় করে নিয়েছে,সোহাগ আর আরু এখন সুখে সংসার করছে।সবাই খুব খুশি।রিতা আর তরী দুজনেই প্রেগন্যান্ট। আরুশ-আর্দ্র দুজনেই ওদের খুব খেয়াল রেখেছে।আর মায়েরা তো ওদের বিছানা থেকে নামতে বারন করে দিয়েছে,সব সময় খেয়াল রেখেছে।

আর্দ্রের মা- রিতা তোমার খুব কস্ট হচ্ছে তাই না।
রিতা- হ্যা মা ( কাঁদতে কাঁদতে)
আরুশের মা- একটু ওয়েট কর।এখনি আর্দ্র চলে আসবে।
রিতা- খুব কস্ট হচ্ছে
আরুশের মা- একটু কস্ট সহ্য কর মা।
আর্দ্র- মা রিতার কি হয়েছে ( চিন্তিত গলায়)
আরুশের মা- পেন উঠেছে ওকে এখনি হসপিটালে ভর্তি করতে হবে।

রিতাকে তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করা হয়।

তরী- মা আমি ওহ ওর সাথে যাবো
আরুশের মা- পাগল হয়েছিস তুই,তোর ওহ শরীরের কি অবস্থা।
তরী- আমার কিছু হবে না আমি যাবো
মা- এরকম করিস না চুপচাপ থাক আরুশ রেগে যাবে।

তরী মুখ গোমড়া করে বসে থাকে।

আরুশের মা-কিরে এমনি মন খারাপ করে বসে পড়লি ভেবে দেখেছিস যদি কোনো বিপদ হয় তাহলে কি হবে।
তরী- হুম।

রিতাকে হসপিটালে ভর্তি করানো হয়।

কিছুক্ষন পর…

আর্দ্র- ডাক্তার কি হয়েছে
ডাক্তার – চিন্তার কিছু নেয় আপনার স্ত্রী এখন বিপদ মুক্ত,আর আপনার ছেলে হয়েছে।

আর্দ্র খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। সিস্টার আর্দ্র এর কোলে একটা ফুটফুটে ছেলেকে তুলে দেয়, আদ্র তার সন্তানকে বুকে আঁকড়ে ধরে।

আর্দ্র ওর ছেলেকে নিয়ে রিতার কাছে যায় রিতা বেডে শুয়ে ছিলো।

আর্দ্র- দ্যাখো আমাদের ছেলে হয়েছে।
রিতা- তুমি খুশি তো
আর্দ্র- হুম খুব।

রাত্রিবেলা…

তরী- রিতার ছেলে হলো আমাদের কি হবে
আরুশ- আমি চাই আমার প্রিন্সেস হোক
তরী- না ছেলে
আরুশ- না মেয়ে
তরী- কেন
আরুশ- আমি চাই আমার তরী রানির মতো একটা রাজকন্যা হোক
তরী- আর আমি চাই রাজকুমার
আরুশ- পরের বার রাজকুমার দেবো এবার রাজকন্যা
তরী- পাগল
আরুশ- হুম

আরুশ তরীকে বিছানায় বসিয়ে তরীর পেটে মুখ দিয়ে বল- রাজকন্যা আর কতদিন আমাদের অপেক্ষা করাবে তোমার পাপা- মা তোমার জন্য অনেক ওয়েট করছে তাড়াতাড়ি চলে এসো।

তরী আরুশের এমন কান্ড দেখে হাসতে থাকে।

পরেরদিন…

আরুশ অফিসে গেছে,আর বাড়ির সকলে রিতার ছেলেকে দেখতে যাবে।

আর্দ্রের মা- তরী আমি বাড়িতে থাকি না
তরী- তোমরা যাও আমি থাকতে পারবো না কোনো অসুবিধা নেয়
আর্দ্রের মা- আচ্ছা নিজের খেয়াল রাখবি
তরী- হুম আর রিতাকে বলো আমি ওর জন্য নাম ঠিক করেছি একটা
আরুশের মা-কি নাম রে
তরী- রিতা+ আর্দ্র=রিদ্র
আরুশের মা-বাবা খুব সুন্দর নাম তো
তরী- পছন্দ হয়েছে
আরুশের মা-হুম খুব।

সবাই হসপিটালে চলে যায়,গোটা বাড়িতে তরী একা।

হসপিটালে…

সবাই রিতার ছেলেকে দেখে।

রিতা- মা তরী কোথায়
আর্দ্রের মা- বাড়িতে
রিতা- একা
আরুশের মা-হুম একা
আর্দ্র- ওকে তোমরা একা রেখে আসলে কেন ওর ওহ তো শরীর টা ভালো নেয়।
আরুশের মা- কথা শুনলো কোথায় জানিস তো কেমন জেদি আমাদের জোড় করে পাঠিয়ে দিলো।
আর্দ্র- ওহ এই মেয়েটাও না,আচ্ছ আমি আরুশ ফোন করে বাড়ি যেতে বলছি।
আরুশের মা- ওটাই কর তো আমার ওহ চিন্তা হচ্ছে ওকে নিয়ে।

আর্দ্র আরুশকে ফোন করবে বলে ওখান থেকে চলে যায়।

রিতা- মা ওহ এখন কেমন আছে
আর্দ্রের মা-ভালো আছে তুমি এত চিন্তা করো না।
রিতা- না মা আমার কেন জানি ওকে নিয়ে খুব ভয় হচ্ছে।
আরুশের মা-ভয় করিস না কিছু হবে না।
রিতা- হুম
আরুশের মা-ওহ তোর ছেলের জন্য নাম ঠিক করেছে।
রিতা- কি নাম
আর্দ্রের মা-রিদ্র
রিতা- বাবা খুব সুন্দর নাম তো
আর্দ্রের মা- কে ঠিক করেছে দেখতে হবে না।
রিতা- হুম

ওদিকে,আরুশকে ফোনে না পেয়ে আর্দ্র মেসেজ করে দেয় বাড়িতে চলে যাবার জন্য তরী একা আছে বলে।

তরী একা একা বসে আছে,ওর কেন জানি কিছু ভালো লাগছে না।

তরী- আরুশ তুমি কোথায় তোমাকে খুব মিস করছি,কেন মনে হচ্ছে তোমার সাথে আমার আর দেখা হবে না।( মন খারাপ করে)

তরী এসব উল্টো পাল্টা চিন্তা করছে, হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠল…

#চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে