স্বচ্ছ প্রণয়াসক্ত পর্ব-১২

0
809

#স্বচ্ছ_প্রণয়াসক্ত
#পর্ব_১২
#মুসফিরাত_জান্নাত

শেষ প্রহরের গোধুলী বেলায় সূর্যের গায়ে ক্লান্তি নেমেছে।নিজের প্রখর তাপদাহের সমাপ্তি টেনে হেলে পড়েছে পশ্চিম আকাশের গহীনে।ধরার বুকে নেমেছে আঁধারের পূর্বাভাস।আর গুটি কয়েক মিনিট।তার পরেই এ ধরার বুকে নামবে কালো রাত।শহরের বুকে অবশ্য রাতকে কালো দেখা যায় না।স্থানে স্থানে দাঁড়ানো সোডিয়াম বাল্প কৃত্রিম আলোয় আলোকিত করে দেয় প্রত্যেক শহরকে।এখানে তো দেখা মেলে বিশেষ বিশেষ স্থানে জড়ো হওয়া ঝাঁক ঝাঁক প্রেমিক প্রেমিকার দল।তেমনি এক প্রেমিক যুগলের সাক্ষাৎ মিলেছে নামকরা এক রেঁস্তোরার কোনো এক টেবিলে।তাদের আজকের আলোচনা গতানুগতিক থেকে ভিন্নতা পেয়েছে।একত্রে কাটানো সময়কে উপভোগ করার চেয়ে একে অপরের পরিস্থিতির বর্ণনা চলছে বেশি।চলবেই না কেনো?দীর্ঘ দুই বছর পর যে রাসেলের সাক্ষাৎ পেলো তাবাসসুম।রাসেলের বিদেশে কাটানোর এই দুই বছরে কম ধকল গিয়েছে তাবাসসুমের উপর?অথচ পড়াশোনার প্রেসারের জন্য রাসেলকে কিচ্ছুটি বুঝতে দেয় নি সে।আজ হড়বড় করে বলে যাচ্ছে কতো ঝামেলা করে নিজের বিয়েগুলো আটকে রেখেছে সে।গভীর মনোযোগ দিয়ে তার এই কথাগুলো শুনে যাচ্ছে রাসেল।তার প্রতিক্রিয়া অবশ্য দ্বিধা যুক্ত।সে প্রকৃতপক্ষে কথাগুলো শুনছে নাকি প্রেয়সীকে সামনা সামনি এক পলক দেখার তৃষ্ণা মেটাচ্ছে তা অবশ্য বোঝা দায়।কথার ফাঁকে এক বারের জন্য হ্যাঁ বা হু কিছুই বলছে না।বিরক্ত হয় তাবাসসুম।কণ্ঠে তিক্ততা আনতে বাধ্য হয়।

“তোমাকে আমি কিছু বলছি রাসেল।শুনতে পাচ্ছো তুমি?”

নিজের ধ্যান ভাঙ্গে না তার।ওভাবেই তাকিয়ে থেকে উত্তরে বলে,

“হুম,বলো।”

রুষ্ট হয় তাবাসসুম।

“তারমানে তুমি কিছু শুনোনি তাই না?বিয়ের কথা উঠলেই তোমার কানে সমস্যা হয়,অন্য ধ্যান জাগে।”

তাবাসসুমের তীক্ষ্ণ কথার বিপরীতে নিস্পৃহ কণ্ঠে রাসেল বলে,

“আমার কি দোষ বলো?তোমাকে দেখার তৃষ্ণা আমাকে বধির করে ফেলে।”

“রাখো তোমার এসব স্বস্তা প্রেমের বুলি।আমার ছোট বোনটারও বিয়ে হয়ে গিয়েছে।তার বৈবাহিক সম্পর্ক এখন অনিশ্চিত।আর এই সবকিছুর জন্য তুমি দ্বায়ী।এখনও আমাদের বিয়ের কথা ভাববে না?সত্যি করে বলো তো,আমাদের সম্পর্ক নিয়ে তুমি সিরিয়াস কি না?”

প্রেয়সীর রাগত স্বরে একটু নড়েচড়ে ওঠে রাসেল।আহত কণ্ঠে বলে,

“তোমার কেনো মনে হলো আমি এই সম্পর্ক নিয়ে সিরিয়াস না?আমার প্রতি তোমার এইটুকু বিশ্বাস?”

“তোমার এমন হেঁয়ালিপনার পরও কি করে অগাধ বিশ্বাস করবো?এবার ক্লিয়ার কথা বলো তুমি।আমাকে বিয়ে করবে কি না?”

ঝাঁঝালো গলায় আওয়াজ তোলে তাবাসসুম।রাসেলের এবার সত্যি মনে হয় মেয়েটা ভীষণ চটেছে।হেঁয়ালিপনা ছেড়ে ঐকান্তিক হয় সে।নড়েচড়ে বলে,

“আমি তো অনেক আগেই বিয়েটা করতে চেয়েছিলাম।আমার ক্যারিয়ার গোছানো ছিলো না বলে তুমি দ্বিমত করলে।এখন সময় হয়েছে।বিয়েটা করব নিশ্চয়ই।সব কিছুর জন্যই তো সময়ের প্রয়োজন।”

“তা তোমার সেই সময়টা কবে হবে?আমার অন্যত্র বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর?”

তাবাসসুমের জেদী অবস্থার বিপরীতে লম্বা শ্বাস টেনে সে বলে,

“আগামী সাত দিনের ভিতর তোমার বাসায় প্রস্তাব নিয়ে যাবো।এটা আমার ওয়াদা।”

“আগামী সাতদিন।মনে থাকে যেনো।”

“থাকবে ম্যাডাম।এবার তো একটু হাসেন।কতদিন সামনা সামনি হাসতে দেখি না আপনাকে।”

তাবাসসুমের এক হাত নিজের হাতে পুরে নিয়ে জবাব দেয় রাসেল।শান্ত হয় তাবাসসুম।চেহারার কাঠিন্যতা রুপান্তরিত হয় স্মিত হাস্যে।এই অবস্থাটা ক্যামেরা বন্দী করে কেও।বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে এখানটায় এসেছিলো তুষার।পূর্বের ভিতরে জ্বলা আগুনে ঘি ঢালে এই দৃশ্যটা।বড় বোনের এই অবস্থা দেখে রাগে ফোঁস ফোঁস করে বাড়ি ফেরে সে।সোজা বাবার কাছে ফোনটা সপর্দ করে বলে,

“আমার কথা তো সেদিন শুনলে না আব্বু।এখন দেখো,তোমার মেয়ের কীর্তি।রেস্টুরেন্টে বসে বসে প্রেম করছে সে।এইজন্য এতোগুলো বিয়ে ভেঙেছে তোমার মেয়ে।আমার বন্ধুদের সামনে এই অবস্থায় দেখে কতোটা লজ্জিত হতে হয়েছে বোঝো তুমি?”

তেঁতে ওঠেন আনোয়ার খাঁন।নিজ বংশের সুনাম যেন ধুলায় গড়াগড়ি খাচ্ছে।গম্ভীর কন্ঠে বলেন,

“ওকে বাড়িতে আসতে দেও আগে।গতবার নতুন আত্মীয়রা উপস্থিত ছিলো বলে ছাড় পেয়েছে।কিন্তু এবার আর ছাড় পাবে না।”

বিষয়টা এখানেই থেমে থাকলে পারতো।রাগে ফুঁসতে থাকে তুষার।ঠিক এই মুহুর্তেই গুনগুন করতে করতে বাড়ি ফেরে তাবাসসুম। মনে তার অগাধ রঙ।যা বাবার সামনে উপস্থিত হতেই ধুলোয় মিশে যায়।মেয়ের মুখ দেখতেই উত্তেজিত হন আনোয়ার খাঁন।কড়া কয়েকটা কথা বলতে নিতেই দেহে কাঁপন ধরে ওনার।পূর্বে থেকেই হৃৎপিণ্ডের ব্যাধি থাকায় একটু উত্তেজিত হতে না হতেই বুকে ব্যাথা অনুভুত হয়।ঘটনাস্থলেই বুকে হাত দিয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েন।আকষ্মিক ঘটনায় দিশেহারা হয়ে যায় সবাই।কি করবে বুঝে আসে না।এই সবকিছুর জন্য দ্বায়ী করে প্রথম বারের মতো বড় বোনের উপর চড়া গলায় কয়টা কটু কথা বলে তুষার।করুন সুরে কান্না করেন সালেহা খাঁন।মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তাবাসসুমের।কি থেকে কি হয়ে গেলো কিছুই বুঝতে পারে না সে।

________
দোলনাটা কিনে সাদাতের সাথে বাড়ি অব্দি পৌছেছে ঐশী।গেইটের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ফিরে যায় সাদাত।সিড়ি মাড়িয়ে তিন তলায় উঠতেই শোড়গোলের আওয়াজ কানে আসে তার।দ্রুত পা ফেলে নিজ ফ্লাটে যায় সে।মুল দরজা খোলা দেখে চিন্তিত হয়।তড়িঘরি করে ড্রয়িং রুমে চলে আসে।বাবাকে মেঝেতে লুটিয়ে থাকতে দেখে থমকে যায় ঐশী।মাথা ফাঁকা হয়ে থাকে কিয়ৎক্ষনের জন্য।গায়ের জোর কমে আসে।পড়ে যায় হাতে থাকা দোলনার ব্যাগ।দৌড়ে গিয়ে জাপ্টে ধরে বাবাকে।কান্নায় ফে’টে পড়ে সে।কি করবে বুঝতে না পেরে সাদাতকে কল দেয়।এতো অল্প সময়ে নিশ্চয়ই বেশি দূরে যায় নি সে।

মুঠোফোন বাজতেই ভড়কে যায় সাদাত।স্ক্রিনে জ্বলজ্বল করছে ঐশীর নাম্বার।এতো অল্প সময়ের ব্যবধানে কল দিতে দেখে চিন্তিত হয় সে।তড়িৎ কল রিসিভ করে।ও পাশ থেকে ভাসে কান্নার আওয়াজ।বিচলিত হয় সাদাত।

“ঐশী কি হয়েছে তোমার?ঠিক আছো তুমি?”

জড়িয়ে আসা গলায় ঐশীর উত্তর,

“আব্বু….।”

আর কিছু বলতে পারে না মেয়েটি।পরিস্থিতি বেসামাল বুঝে দ্রুত গাড়ি ঘুরায় সাদাত।ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতবাক সে।ফ্লোরে সেন্সলেস হয়ে আছে আনোয়ার খাঁন।পানির ছিটা দিয়েও জ্ঞান ফিরানো যায় না।সবাইকে কোনো মতো থামিয়ে ওনাকে নিয়ে দ্রুত হসপিটালের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায় সাদাত।পিছু নেয় অন্য সকলে।সাথে নিয়ে আসা দোলনাটা অযত্নেই পড়ে রয় চকচকে টাইলস পাড়া মেঝেতে।তা কারো নজরেই আসে না।
___________
হসপিটালের বারান্দায় পায়চারি করছে তুষার।চিন্তায় স্থির থাকতে পারছে না সে।বাইরে পাতা চেয়ারে বসে রয়েছে অন্য সকলে।গুনগুন করে কান্না করছে সালেহা খাঁন।মায়ের পাশে ঘাপটি মে”রে বসে রয়েছে তাবাসসুম।ভয় ও দুঃখে মুখ এতোটুকু হয়ে আছে তার।অপরদিকে শূন্য নয়নে মেঝের দিকে চেয়ে আছে ঐশী।মা’কে সান্তনা দেয়ার ভাষা খোঁজা তো দূরে থাক নিজেকেই বুঝ দিতে পারছে না সে।ক্ষনিকের ব্যবধানে তাদের মাঝে বিশাল ঝড় উথলে ওঠেছে।তছনছ করে দিয়েছে সব।নিমিষেই যেনো পুরো আকাশ ভেঙে পড়েছে মাথার উপর।তাদের পাশে ছায়া হয়ে রয়ে গিয়েছে সাদাত।যথা সাধ্য সান্ত্বনা দিয়ে চলেছে সবাইকে।একটু পরে ইমার্জেন্সি বিভাগ থেকে একজন ডাক্তার বেড়িয়ে আসেন।এগিয়ে যায় সাদাত সহ সকলে।রোগীর অবস্থা কেমন জিজ্ঞেস করতেই লোকটি বলে,

“মিস্টার আনোয়ার খাঁনের ক্রিটিক্যাল অবস্থা।হার্টে ব্লক ধরা পড়েছে।খুব দ্রুত অপারেশন করা দরকার।সকালে কার্ডিওলজিস্ট আসলে তার সাথে পরামর্শ করে অবস্থা জানানো যাবে।”

নিজের বক্তব্য শেষ করে প্রস্থান করে লোকটি।হু হু করে ওঠে সবার মন।কান্নায় ভেঙে পড়েন সালেহা খাঁন।ডুঁকরে ওঠে ঐশী ও তাবাসসুব।বিচলিত হয় তুষার।আহত দৃষ্টি মেলে সেদিকে তাকিয়ে থাকে সাদাত।এবার কি দিয়ে এদের বুঝ দিবে সে?

___________
আনোয়ার খাঁনের জ্ঞান ফিরেছে অনেক সময় হলো।একে একে তার সাথে দেখা করলো সকলে।শুধু বাবার কাছে যাওয়ার সাহস পেলো না তাবাসসুম।কেবিনের দরজার কাচ দিয়ে বাবাকে দেখে গেলো সে।সালেহা খাঁন সবার উদ্দেশ্যে বললেন,

“অনেক রাত বেড়েছে।এবার তোমরা বাড়ি যাও।আমি এখানে থাকছি।”

বাধ সাধলো সাদাত।এখানে একটা ছেলে মানুষ থাকার প্রয়োজন।রাত বিরাতে কখন কি দরকার হয় না হয় তার ঠিক আছে?তুষার ও বাচ্চা ছেলে।ডাক্তারের সাথে আলাপ আলোচনা সহ সার্বিক বিষয় সে সামলে উঠতে পারবে না।স্বামী হওয়ার পাশাপাশি সে একজন জামাতা।সেই খাতিরেও এসব দেখাশোনার দ্বায়িত্ব বর্তায় তার উপর।হাসপাতালেই থেকে যাওয়াটা যুক্তিযুক্ত মনে করলো সে।অন্যদের বাড়ি যেতে বললে কেওই রাজি হলো না।তারা বাবার সাথে এখানেই থাকবে ঠিক করলো।কিন্তু রোগীর কেবিনে তো আর এতো ঝামেলা দেওয়া সম্ভব নয়।এদিকে কাওকে বোঝানোও যাচ্ছে না।একমাত্র সাদাতকে দেখে ইতস্তত করবে সবাই।তাই বাড়ি ফেরার অনুরোধ করে সাদাতকে কাছে ডেকে সালেহা খাঁন বলেন,

“তাবাসসুমের তো আর একা বাড়ি ফেরা ও থাকা সম্ভব না বাবা।আবার ওর এখানে থাকাও ভালো মনে করছি না।ওকে দেখে যদি উনি আবারও উত্তেজিত হয়ে যান ব্যাপারটা ভালো হবে না।তুমি ঐশী ও তাবাসসুমকে নিয়ে ফিরে যাও।আজকের রাতটা তুষার আমার সাথে থাকুক।বাড়ি থেকে তো হসপিটাল খুব দূরে নয়।দরকার পড়লেই তোমাকে কল দিয়ে জানাবো।”

শাশুড়ির কথায় যুক্তি খুঁজে পেলো সাদাত।তাবাসসুমের দিকে তাকিয়ে দেখলো মেয়েটা কেমন নিঃস্বঙ্গ পড়ে রয়েছে।অগত্যা তাবাসসুম ও ঐশীকে নিয়ে ফিরতি পথ ধরতে হলো তাকে।যাওয়ার আগে বার বার বলে গেলো যেকোনো প্রয়োজনেই যেনো কল করেন তাকে।কোনোরুপ ইতস্ততা করতে মানা করে গেলো সে।

ফেরার পূর্বে বাহির থেকে কিছু খাবার কিনে দিয়ে গেলো সাদাত।আর নিজেদের জন্যও নিলো কিছু।আজকের রাতটা ঐশীদের বাড়িতেই কাটিয়ে দিলো সে।

সাথ নিয়ে আসা খাবারটা নিয়ে ঐশীর পাশে বসে সাদাত।মেয়েটি কিছু মুখে তুলতে চাচ্ছিলো না।নাকচ করে বললো তার খিদে নেই।অথচ সেই দুপুর থেকে পেটে কিছু পড়ে নি তার।নিজ হাতে খাবার মুখে তুলে ধরলো সাদাত।নরম কণ্ঠে বললো,

“আমি খাইয়ে দিচ্ছি।মুখে তোলা খাবার ফিরিয়ে দিতে নেই।এবার তো একটু খাও।”

তবুও নাকচ করলো ঐশী।ছোট করে বললো,

“খিদে নেই।”

ভ্রু কুটি করলো সাদাত।মেয়েটির মন খারাপের মাঝে তার উপর কঠোর হতে ইচ্ছে জাগলো না।অথচ তাকে অভুক্তও রাখা যায় না।গম্ভীর স্বরে সে বললো,

“তোমার খিদে না পেলেও আমার প্রচুর খিদে পেয়েছে।অথচ তুমি না খেলে আমার খিদে মিটবে না।”

এতো কষ্টের মাঝেও অবাক হতে ভুললো না ঐশী।
ভ্রু কুঁচকে বললো,

“আপনি খান।আমার খাওয়ার সাথে আপনার খাওয়ার সম্পর্ক কি?”

“অবশ্যই সম্পর্ক আছে।তুমি আমার অর্ধাঙ্গিনী।নিজের অর্ধেক অংশকে অভুক্ত রেখে বাকি অর্ধেক অংশ পূর্ণ হয় কি করে বলো?তাই তুমি না খেলে আমিও খাবো না।আমার খিদে মিটানোর জন্য হলেও তো কিছু খাও।”

শব্দগুলো তরঙ্গিত হলো ঐশীর অশান্ত হৃদয়ে।সাদাত তার অর্ধেক অংশ ভাবতেই শিউরে উঠলো মন।নত হলো সে।লোকটি যে তাকে না খাইয়ে ক্ষ্যান্ত হবে না বুঝে গেলো যেনো।সাদাত আবারও ঐশীর মুখে খাবারের লোকমা তুলে দিলো।নিজের মুখে পুরে নিলো ঐশী।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলো সাদাতের পাণে।কতো কেয়ারিং লোকটা।
_____
দুটো অনুভূতি কখনো একসাথে একই মুহূর্তে অনুভব হয়না।রাগান্বিত মনে কখনো আনন্দ লাগে না, ব্যাথিত মন কখনো অশরীরী ভয় পাই না, ঘৃণিত মনে কখনো ভালোবাসার অনুভূত হয় না। মন জিনিস টাই বড্ড অদ্ভুত, এখানে একটা অনুভুতির উপস্থিতিতে আরেকটি অনুভূতিকে তার জায়গা ছাড়তে হয়।ঐশীও একটাকে ছেড়ে দিলো।মুহুর্তেই দুঃখগুলো সড়ে যেতে লাগলো।তার স্থানে হানা দিলো শুদ্ধতম ভালোলাগা।তার যত্নের খাতিরে অন্যের বিচলিত ভাব দেখে ভালো লাগায় মন না ছেয়ে কষ্টে ডুবে থাকবে তা তো হতে পারে না।নিভৃতেই দেখে গেলো সে লোকটিকে।খেয়ালই হলো না কখন খাবারের প্লেটটা শূন্য হয়ে গেলো।এতো খিদে ছিলো মেয়েটির পেটে!অথচ দুঃখে ডুবে অনুভব করছিলো না সে।ছোট একটা নিশ্বাস ফেলে সাদাত।ঐশীকে বলে,

“এবার তোমার পালা।তোমার বড় বোনও না খেয়ে আছে ভুললে চলবে না।ওনাকে খাওয়ার ব্যবস্থা করো যাও।”

“হুম।”

আনমনেই জবাব দিলো সে।প্লেটে খাবার সাজিয়ে তাবাসসুমের জন্য ঐশীর হাতে ধরিয়ে দিলো সাদাত।একমনে সবটা দেখলো ঐশী।মনে মনে ভাবলো বেশ অন্যরকম লোকটা।এই পরিস্থিতিতেও কেমন সবার খেয়াল রেখে চলেছে।ব্যাপারটা বেশ ভালো লাগার উদ্রেক জাগালো হৃদয়ে।লম্বা শ্বাস টেনে তাবাসসুমের ঘরে পা বাড়ালো সে।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে