সুখ সন্ধানী পর্ব-১৬

0
492

#সুখ_সন্ধানী
পর্ব-১৬
#জাকিয়া_সুলতানা_ঝুমুর
★★★

রাত দুইটা!রাফি এখনো বাসায় ফেরেনি।নোহা বারবার বারান্দা দিয়ে বাইরে দেখছে।নোহা জানে রাফি আসবে,রাফি কখনো বন্ধুর বাসায় থাকে না।দুশ্চিন্তায় মাথা ব্যাথা করছে।সন্ধ্যায় রাফি তার গাড়ি নিয়ে চলে যাওয়ার পরে নোহা ব্যাথাতুর চেহারা নিয়ে রাসেলের দিকে তাকায় কাদোকাদো মুখ নিয়ে বলল,
—“রাসেল ভাই আমার প্রচুর পেট ব্যাথা করছে।”

রাসেল চিন্তিত হয়ে বলল,
—“কি বল?বেশী ব্যাথা?ডাক্তারের কাছে যাবে?”

নোহা হাফসাফ করে বলল,
—“না না ডাক্তার লাগবে না।একটু রেস্ট নিলেই ঠিক হয়ে যাবে।”

রাসেল চুপ করে থেকে বলল,
—“আচ্ছা তুমি বাসায় চলে যাও।অন্যদিন না হয় যাব।”

নোহা মনে মনে ড্যান্স দিয়ে চেহারা মলিন করে বলল,”আচ্ছা।” এটা বলে আস্তে-ধীরে বাসায় চলে এসেছিল।
মূলত রাফিকে জেলাসি ফিল করানোই ছিল নোহার মূল লক্ষ।ঘড়ির দিকে আবার তাকিয়ে দেখল দুইটা দশ নোহা চুপচাপ বিছানায় বসে,তখনি কলিংবেল বেজে উঠে,নোহা ছুটে মেইন ডোরের কাছে যায়।কেউ জেগে যাবার আগে দরজা খুলে দেয়।বিধস্ত অবস্থায় রাফিকে দেখে নোহার বুকে মোচড় দেয়।রাফি নোহাকে একপলক দেখে হনহনিয়ে বাসায় ঢোকে।নোহা নিশ্চিন্ত মনে দরজা লাগিয়ে তার রুমে চলে যায়।রুমে ঢুকার সাথে সাথেই ক্যাচক্যাচ আওয়াজে দরজা বন্ধ হয়ে যায়।নোহা মাথা ঘুরিয়ে দেখল রাফি নিজের রুমে না গিয়ে তার রুমে।তাও খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে আছে।রাফিকে দেখে মনে হচ্ছে সে নিজের অবস্থায় নেই।আচ্ছা রাফি কি ড্রিংক করেছে?নোহা আর ভাবতে পারল না।বুকে সাহস যুগিয়ে বলল,
—“এটা আপনার রুম না।”

রাফি কিছু না বলে গভীর চোখে নোহাকে দেখল।নোহার ভেতরটা কেঁপে উঠল রাফি কখনোই সামিনা-সামনি নোহাকে এভাবে দেখে না,আজকে দেখছে তাও গভীর চোখে।নোহা দরজা খুলার জন্য হাত বাড়াতেই রাফি ভ্রু কুচকে নোহার হাত খাবলে ধরে,নোহাকে ধাক্কা দিয়ে সামনের দেয়ালে চেপে ধরে।নোহা ভয়ে কুকড়ে যায়।আজকে এই প্রথম রাফি নিজের ইচ্ছায় তার কাছে এসেছে,তাকে স্পর্শ করেছে।
রাফি নিজেকে খুব সামলানোর চেষ্টা করছে কিন্তু ভেতরের সত্বা জেগে গেছে।বুকে পুষে রাখা সব রাগ,বিতৃষ্ণা,ভালোবাসা উগলে দিতে চাইছে।সব দোষ ওই আশিকের সালা মন ভালো হবে বলে কি আবল তাবল খাওয়াতে নিয়ে গেল।রাফি গিয়েই বুঝেছিল ড্রিংক করাতে এনেছে তাইতো অনেক জোড়াজুড়ি করার পরেও মাত্র একগ্লাস খেয়েছে আর তাতেই কখনো এসব না খাওয়া রাফির কেমন নেশা ধরে গেছে।রাফি নিজেকে সামলাতে পারল না নিজের বলিষ্ঠ দু’হাত দিয়ে নোহার নরম তুলতুলে হাত দু’টো চেপে ধরল।নোহা ব্যাথায় চোখ খিচে নিল কিন্তু কোন শব্দ করল না।রাফির থেকে কেমন উদ্ভট গন্ধ আসছে।
রাফি নোহার দিকে তাকিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
—“রাসেলের সাথে এত কথা কিসের?”

নোহা মনে মনে হাসল তার কাজটা আজকে সফল হবে।রাসেলের কথা তাহলে ভালোমতোই মাথায় ঢোকেছে।
নোহা কপট রাগ দেখিয়ে বলল,
—“আমার মুখ আমার ইচ্ছা। আমি যার সাথে মন চায় তার সাথেই কথা বলব।তাতে আপনার কি?”

রাফি রেগে গেল।চোখ লাল হয়ে নোহাকে নিজের শরীর দিয়ে চেপে নিল।নোহার তুলতুলে শরীর রাফির বলিষ্ঠ দেহের চাপে পড়ে কেঁপে ওঠে।রাফি অস্থির গলায় বলল,
—“তাই না!”

নোহা হাফসাফ করে হাত ছুটাল।রাফির বুকে ধাক্কা দিয়ে রাফিকে সরানোর চেষ্টা করে বলল,
—“হ্যাঁ।”

রাফি আগের মতোই চেপে দাঁড়িয়ে বলল,
—“শরীরে এত জ্বালা যে একজনে হচ্ছে না তোর?আরো চাই?”

নোহার চোখ কেঁপে উঠে।কাঁপা গলায় বলে,
—“আমার কেউ নেই।তাইতো নতুন কাউকে খুজে নিচ্ছি।”

রাফি গম্ভীর সুরে বলে,
—“থাপ্পড় দিয়ে গাল লাল করে দিব অসভ্য মেয়ে।”
নোহা মাথা বাড়িয়ে গাল এগিয়ে বলল,
—“নেন দিন।আপনার থাপ্পড় খেয়েই আপাতত প্রাপ্তির খাতাটা পূর্ণ করি।”

রাফি বুঝল নোহা রেগে গেছে তাই গম্ভীর গলায় বলল,
—“ঘুরতে যেতে হবে কেন ওই স্কাউন্ডেলটার সাথে?”

নোহা আগের মতই রাগ দেখিয়ে বলল,
—“আমার ইচ্ছা আমি যেখানে খুশী সেখানে যাব।”
রাফি আগের চেয়ে দ্বিগুণ শক্তিতে চেপে ধরল,
—“হাত পা ভেঙ্গে ঘরে বসিয়ে রাখব।”

রাফির থেকে ছুটে যাওয়ার জন্য নোহা হাত-পা ছুড়ল।রাফিকে শাসিয়ে বলল,
—“আমাকে ছাড়ুন না হলে আব্বু আম্মুকে ডাকব।”

রাফি ভাবলেশহীন ভাবে বলল,
—“ডাক।”
নোহা ডাকল না।রাফি কিছুক্ষণ পরে বুঝল এই নোহাকে সে চিনতে পারছেনা।নোহা তার আছে আসার জন্য সবসময় উতলা হয়ে থাকে। কিন্তু এই’মেয়ে দূরে যাওয়ার জন্য এমন করছে কেন?তাহলে কি রাফিকে ভুলে রাসেলে’ই মজে গেছে?রাফির গলা কেঁপে ওঠে চোখের তারায় পানি জমে।কাঁপা গলায়ই বলল,
—“তুই কি রাসেলকে ভালোবাসিস?”

রাফির কাঁপা গলা শুনে নোহার ছটফটানি মূহুর্তেই থেমে যায়।চোখ তুলে তাকিয়ে দেখে রাফির চোখে পানির আনাগোনা।প্রিয় মানুষটাকে আর কষ্ট দিতে ইচ্ছে হল না।বলল,
—“আমি আজকে ঘুরতে যাইনি।সারাক্ষণ বাসায়ই ছিলাম।রাসেল ভাইকে আমি পছন্দই করি না।আর না কাউকে ভালোবাসি।”

রাফি বলল,
—“সত্যি রাসেলকে ভালোবাসিস না?”

—“না।”

রাফির মনে সুখের বাতাস বয়ে গেল।আনন্দে চোখের পানি শুকাল।ভ্রু উপরে তুলে বলল,
—“কাউকেই ভালোবাসিস না?”

নোহার চোখে পানি এল।
নোহা কিছু না বলে চোখের পানি মুছে নিল।
—“আমার কেউ নেই।কেউ না।”

রফি মাথা নাড়িয়ে বলল
—“কেউ নেই মানে আমি কি? ”

নোহা চোখে চোখ রেখেই বলল,
—“আপনিও কেউ না। ”

নোহাকে বুকে নিয়েই গালে হাত চেপে তার দিকে মুখ করল,
—“তাহলে এতদিন আমাকে পাগলের মতো ভালোবেসে আমার মনে আগুন জ্বালানোর মানে কি?”

নোহা আজকে অবাক হয়ে যাচ্ছে এই বেপরোয়া রাফিকে সে কখনোই দেখেনি।আপনা-আপনি গলার স্বর নরম হয়ে এলো,
—“আপনিতো আমাকে ভালোবাসেন না।”

রাফি নোহার দিকেই অপলক তাকিয়ে বলল,
—“কে বলেছে?”

নোহা রেগে বলল,
—“আপনিই তো বলেন।কখনোই আমাকে ভালোবাসেন না সবসময় ঘৃণা করেন।”

রাফি নোহাকে হাত দিয়ে টেনে নিজের কাছে নিল।ফিসফিস করে বলল,
—“তোকে কতটা ভালোবাসি তুই কখনো বুঝতে পারিসনি আর পারবিও না।”

রাফি স্বীকার করে নিয়েছে।এত সুখ নোহা কই রাখবে।আবেশে গলায় কথা আটকে এলো।তবুও মুখে বলল,
—“সবসময় আপনার পিছনে কুকুরের মতো ঘুরি,কিন্তু আপনি আমাকে ঘৃনা করেন।”

রাফি চোখে চোখ রেখে বলল,
—“ঘৃণাটাই দেখলি ভালোবাসাটা দেখলি না?”

নোহা মনের সুখের প্রজাপ্রতি নেচে উঠল।এই কঠিন মনের মানুষ কতো সাবলীল সহয ভাষায় বলে দিয়েছে মনের কথা।
—“কিভাবে দেখব কখনো দেখতে দিয়েছেন?”

রাফি হাসল চোখে চোখ রেখে বলল,
—“এই যে আমি।এখন দেখ।”

নোহা তেতে উঠল।রাফিকে সরিয়ে দেয়ার বৃথা চেষ্টা করে বলল,
—“আপনি না জিনিয়াকে ভালোবাসেন তাহলে কিভাবে দেখব?”

রাফি হাসল।নোহা সে হাসি দেখে মনে মনে খুন হলো।
—“আমি জিনিয়াকে ভালোবাসিনা।তুই যেমন রাসেলকে ভালোবাসিস না আমিও জিনিয়াকে ভালোবাসি না।”

নোহা এটা আগেই আন্দাজ করেছিল।কিন্তু মুখে বলল,
—“তাহলে শাড়ীটা কার জন্য ছিল।”

রাফি হেসে বলল,
—“আমার বউয়ের জন্য।”

নোহা চমকে বলল,
—“আপনি বিয়ে করে ফেলেছেন? ”

রাফির সহয স্বীকারোক্তি,
—“হ্যাঁ। ”

নোহা অকপটে বলল,
—“আপনার বউ কই?”

রাফি নোহাকে নিজের বুকে টেনে নিল একহাতে পিঠে আরেকহাত কোমড়ে রেখে কপালে চুমু খেল তারপর খুব মিষ্টি করে বলল,
—“এই যে আমার বুকে।আমার বউ।”
নোহার নরম মন আনন্দে নেচে উঠল।রাফি তার!শুধুই তার।কিন্তু মুখের এই খারাপ গন্ধটা কেমন লাগছে।নোহা পাত্তা দিল না।রাফির এই সহয শিকারোক্তি করার এই কারনটা আগেই বুঝেছিল।
নোহা মুখ কুচকে বলল,
—“আপনি মদ খেয়ে মাতাল হয়ে এসেছেন?”

রাফি বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টে বলল,
–“আশিক্কা খাওয়ালো।”
তারপর হাত দিয়ে দেখিয়ে বলল,
—“আমি মাত্র এই এট্টুকু খেয়েছি।”
নোহা আবারো রাফির থেকে নিজেকে ছাড়াতে চাইল।সমসময় সে নিজেই রাফির সাথে লেপ্টে থেকেছে,রাফি কখনো সারা দেয়নি আজকে প্রথম রাফির সারা পেয়ে লজ্জায় শরীর ঠান্ডা হয়ে এলো।
রাফি ঘন হয়ে আসা গলায় ফিসফিস করে বলল,
—“এত জোড়াজুড়ি করেনা সোনা।ব্যাথা লাগবে।”

নোহা থমকে গেল।প্রিয় পুরুষের আদরের আহব্বান।মোমের মত গলে রাফির বুকে নেতিয়ে পড়ল।রাফি সযত্নে বুকে চেপে নিয়ে আগের মতোই আদুরে গলায় বলল,
—“আমি আর নিজেকে আটকাতে চাই না।এখন থেকে এই রাফিটা তোর।আর তুই আমার।মনে থাকবে? ”

নোহা রাফির বুকে মাথা রেখে কেঁদে দিল।এত ভালোবাসে রাফি।দু’হাত দিয়ে রাফির শার্ট খামচে ধরল।রাফিও সমানতালে বুকে নেয়।ঘোরলাগা গলায় বলল,
—“আমাকে ভালোবাসিস তো নোহা!”

নোহা আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরল যেন বুজাতে চাইল খুব ভালোবাসে।রাফি বুঝে নিল,
কাতর গলায় বলল,
—“আজকে একটু ভালোবাসবি জান?”

নোহার সারা শরীরে ভূমিকম্প হয়ে গেল।সে কিছু বলার আগেই রাফি নোহার উন্মুক্ত গলায় ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে নিল।নোহার নিজেকে দিশেহারা লাগল।রাফি না হয় মাতাল সে তো মাতাল না।সারাশরীরে অদ্ভুত ভালোলাগায় নেচে উঠল।হাত দিয়ে রাফির ঘাড় ধরে নিল।মুখ দিয়ে অস্ফুট স্বরে গুঙ্গিয়ে উঠল।রাফি ঘাড় থেকে মুখ তুলে অস্ফুট স্বরে বলল,
—“এমন শব্দ করেনা সোনা।চাচ্চুরা পাশের রুমে শুনতে পাবে।”
নোহা লজ্জায় আবারো রাফির বুকে মুখ লুকায়।রাফি আবারো নোহাকে ঠেলে দিল,সুখের রাজ্যে চোখে চোখ রেখে বলল,
—“আমি এই পাগলীটাকে খুব ভালোবাসি।”
নোহা প্রতিউত্তরে বলল,
—“আমিও খুব ভালোবাসি রাফি।”

রাফি বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে রইল অনেকক্ষণ।তারপর আবারো নোহার দিকে তাকাল ঘন গলায় বলল,
—“তোকে আরেকটু আদর করি?”
নোহা কিছু বলল না।আদর পাওয়ার জন্য সারা দেহ মন মুখীয়ে আছে।রাফি নোহাকে নিরব দেখে হাসল।
আলতো করে সারা মুখে চুমু দিল।ঠোটের কাছে গিয়ে থেমে গেল। বৃদ্ধাজ্ঞুলি দিয়ে ঠোঁট ধরল।কাঁপা গলায় বলল,
—“জান তুই যখন ঠোঁট ফুলিয়ে কাঁদিস তখন ইচ্ছা করে ঠোঁট কামড়ে খেয়ে ফেলি।”
নোহা রাফির এমন খোলা খোলা কথায় লজ্জা পেল।নেশা করে মনের সব গোপন কথা বলে দিচ্ছে।রাফি আর কিছু না ভেবে নোহার ঠোঁট নিজের ঠোঁটের মাঝে টেনে নিল পরম আবেশে নোহাকে দুলিয়ে অন্য রাজ্যে নিয়ে গেল।নোহা লজ্জায় প্রথমে সাড়া না দিলেও রাফির এই উচ্ছল পাগলামিতে নিজেকে আর আটকাতে পারল না।দু’হাতে রাফির ঘাড় খামচে কাছে টেনে নিল।দুজন দুজনা’কে এত কাছে টানছে যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে যেতে চাইছে।রাফির আদুরে কামড়ে নোহা পাগলের মত রাফিকে কাছে টেনে নিল।একটি দীর্ঘ চুম্বন শেষে দুজন যখন দুজনের চোখে তাকাল, দুজনেই খুশীতে তৃপ্তিতে হেসে দিল।নোহা এই পাগল রাফিকে চিনে না।রাফির আদুরে কামড়েই নোহার গোলাপি ঠোঁট মূহুর্তেই লাল বর্ন ধারন করে।কামড়ের ফলে ঠোঁটে রক্ত জমাটের মতো হয়ে গেছে।রাফি সেখানটায় কয়েকটা চুমু খেল।নোহার কোমড়ে দু’হাতে জড়িয়ে বলল,
—“আমি যদি কাল সকালে সব ভূলে যাই।তুই ভুলিস না।ওকে?”

নোহা ভয়ে মুখ চুপসে গেল।মাত্র পাওয়া সুখের তরী নড়ে উঠে।
—“ভুলে যাবেন সব?”

—“ভুলে যেতেও পারি।কিন্তু তুই ভুল করেও ভালাবাসা কমাবি না।রাসেলের কাছে যাবি না।”

নোহা মাথা নেড়ে সায় দিল।
আচমকা রাফি নোহাকে পাজকোলা করে উঠিয়ে নেয়।আলতো করে বিছানায় শুয়িয়ে নিজের অর্ধেক ভার নোহার উপর দিয়ে বলে,
—“আমি ভুলে গেলেও তুই কিন্তু ভুলে যাবি না।রাফি তোর!ঠিক আছে?”

নোহা রাফির চুলে হাত ভুলিয়ে চোখে চোখ রেখে বলল,
—“এই রাফিটা কি সবটাই আমার?”

রাফি ঘোর লাগা গলায় বল,
—“সবটা তোর।”
এই বলে আবারো বিছানায় চেপে ধরে।নোহার ঠোঁটের অমৃত আজকে রাফি ছাড়তে পারছেনা।মাতাল হয়ে ভুল করে ফেলল।রাফির ত্রিশ বছরের বেধে রাখা পোরুষ আজকে নারীর নেশা পাগল করতে চিছে নিজেকে।পুরুষালী পুরু ঠোঁটের ঘর্ষনে,চাপে,কামড়ে নোহার নরম ঠোঁট ছিলে একাকার অবস্থা।রাফি হঠাৎ থেমে গেল,নোহার জামা টেনে নিচে নামিয়ে বুকের বামপাশের কালো তিলটা দেখল।নোহা অবাক হয়ে বলল,
—“এই কি করেন?”

রাফি শান্ত গলায় বলল,
—“তিল দেখি।”

—“আপনি কি করে জানলেন এখানে তিল আছে।”

রাফি তিলটায় তার গরম ঠোঁট ছুঁয়ে দিলে নোহার সর্বাঙ্গ কেঁপে ওঠে।রাফির মুখ ঠেলে সরাতে চাইলে রাফি বলে,
—“অনেক আগে থেকেই জানি।তুই তো গাধা নিজের তিলের খবর নাই জিনিয়ার তিল নিয়ে গবেষণা শুরু করে দিয়েছিলি।”
নোহা অবাক হয়ে বলল,
—“গিফট বক্সেটার চিরকুট আমাকে নিয়ে লেখা?”

রাফি কোন উত্তর দিল না।আবারো ঠোঁট নামিয়ে বুকে নিল।তিলটা তাকে নেশার মতো টানছে।নাহ! নোহা আর নিজেকে শেষ রক্ষা করতে পারলনা তার আগেই রাফি তার শক্ত দাত দিয়ে সজোড়ে তিলের উপরে কামড়ে ধরে।নোহার ব্যাথা পাওয়ার কথা থাকলেও কেমন সুখ সুখ লাগছে।সুখে রাফির বাম হাত খামচে ধরে।কিন্তু রাফি ছাড়ে না।তাই সুখের আবেশে রাফির মাথা চেপে ধরে।এই রাফিটা ভিষন অচেনা।নোহার ভয় হচ্ছে নেশা কেটে গেলে কাল সকালেই যদি ভুলে যায়?এই নেশায় পাগল রাফিটাই যে নোহার চাই।

-চলবে–
জাকিয়া সুলতানা ঝুমুর

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে