সম্পর্কের টানাপোড়েন

0
802

তুমি কি রাতে ভাত খাবে না রুটি?’

– ওজন যে হারে বাড়ছে, রুটিই দাও।

তোমার ওজন নিয়ে তো চিন্তায় যেন ঘুম হারাম। আমার যে ডানহাতে ব্যথা এতোবার বলেছি, রুটি খেতে চাও বলার আগে একবারও মনে হয়নি আমার কষ্ট হবে? অবশ্য মনে হবে কেন? আমাকে কি তুমি মানুষ মনে করো নাকি?

– তুমিই তো জানতে চাইলে রুটি না ভাত?

হুম না জিজ্ঞেস করলে বলতে কিছু না জানতে চেয়ে আমার খুশিমত খাবার দিয়েছি। আমি আমার নিজের মতো সংসার চালাই। তোমার মতামতের দাম দেইনা। তোমাকে আমার হাড়ে হাড়ে চেনা আছে।

– হেমা, তুমি কিন্তু শুধু শুধুই কথা প্যাঁচাচ্ছো। রুটি বা ভাত একটা কিছু হলেই হবে।

কি বললে, আমি কথা প্যাঁচাই? তোমার চোখে তো আমি আর আমার পরিবার আস্তাকুঁড়ে থেকে উঠে আসা মানুষ। শুধু তোমরা রাজবংশীয়। সুমিষ্ট ভাষায় মানুষের সাথে বাক্য বিনিময় করো। তোমার আর তোমার পরিবারের মতো কুটিল চিন্তার মানুষ বোধহয় আল্লাহ পৃথিবীতে পাঠায়নি আর। আমার জীবনটা পুরো নষ্ট করে দিয়েছো তুমি আর তোমার পরিবার মিলে।

– তোমার ভীষণ বাড় বেড়েছে আজকাল। কোন কথা মাটিতে পরতে দাওনা। খেলামনা তোমার রান্না করা ভাত।

সে ই ভালো। থাকো কয়েকদিন না খেয়ে বোঝো রান্না করে খাওয়া কত কষ্টের।

কি ভাবছেন পাঠক, সামান্য ভাত না রুটি থেকে এতো বিশাল ঝগড়া যারা করে তারা কিভাবে সংসার করছে? চলুন দেখে নেই আলাদা আলাদা রুমে চলে যাওয়া হেমা আর জুলফিকার নিজেরা কি ভাবছেন। আর এমনতর ঝগড়ার কারণই বা কি?

(হেমা)

জুলফিকারকে রুটি না ভাত খাবে, আমি ইচ্ছে করেই জিজ্ঞেস করেছি। ছোটবেলা থেকেই আমি মানুষটা চাপা ধরনের। কখনো নিজের সমস্যা কাউকে বুঝিয়ে বলতে পারিনা। স্বামীকে তো আরো না। কারণ বিশ বছরের সংসারে ওর সাথে আমার সম্পর্কটা কখনোই কেন যেন বন্ধুত্বের না হয়ে কেমন একটা প্রভু ভৃত্যের মতো হয়েছে। ওর কামাইয়ে সংসার চলে। কাজেই ওর ইচ্ছেতেই ঘরের প্রতিটা জিনিস এমনকি চাল, ডাল, আনাজপাতি থেকে শুরু করে আমার নিজের কাপড় চোপড়ও ওর পছন্দেই কিনতে হয়। গত কয়েকদিন ধরেই ডান হাতের কব্জিতে ব্যথা। না পেরে একবার বলেছিও আমার হাতে ব্যথা। শুনতেই পায়নি যেন। অবশ্য আদৌ কি কোনদিন শুনেছে আমার কোন কথা বা আমার কোন সুবিধা অসুবিধার কথা? যেন আমি তার ঘরের ব্যবহৃত কোন যন্ত্রের মতো। যন্ত্রের তবু বিগড়ে যাবার সুযোগ থাকে। আমার সে সুযোগও যেন নেই।

সেই যে কলেজ থেকে ফেরার পথে একবার এক সুবেশী বৃদ্ধ এসে আমাদের দরজায় কড়া নাড়লো তারপর থেকেই বদলে গেলো আমার জীবনের গল্প। সেই বৃদ্ধ ছিলেন আমার শ্বশুর। আমার বাবার বড় আদরের বড় মেয়ে ছিলাম আমি। অনেক অর্থবিত্তের মাঝে বড় না হলেও স্বচ্ছলতার মধ্যে দিন কেটেছে আমার বাবার সংসারে। বাবার ইচ্ছে ছিল আমি পড়াশোনা শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়াবো। সেই বৃদ্ধ, বাবাকে কিভাবে যে কি বোঝালেন বাবা মা দুজনেই রাজী হয়ে গেলেন বৃদ্ধের প্রবাসী বড় পুত্রের সাথে আমায় বিয়ে দিতে।

বিয়ের দুমাস পেরোতেই তাদের স্বরূপ বেরিয়ে পরে। তাদের ছেলে দূর প্রবাসে একাকী থাকে, কি না কি খায় তার জন্য স্ত্রী নামে একজন রাঁধুনী কাম সেবিকার দরকার। অন্দরমহলেই যার বাস হবে, হোকনা সেটা বিদেশ তার আর পড়ালেখার দরকার কি, সেই অজুহাতে চুকিয়ে দেয়া হয় পড়াশোনার পাট। তবু একবার জোর গলায় পড়ার কথা তুলতেই জুলফিকারের কাছে কি কানকথা যায় তা জানা হয়না আমার। শুধু জুলফিকার কথা বলা বন্ধ করে দেয় আমার সাথে। আজ থেকে বছর বিশেক আগে সমাজব্যবস্থা বা মানুষের মানসিকতা ততটা উন্নতমানের ছিলনা যে বিয়ে হয়ে যাওয়া মেয়েকে পড়াতে চাই এই অজুহাতে বাবামা ডিভোর্স করিয়ে নেবেন। বরং কেন জামাই কথা বলেনা, মাফ চেয়ে নে দোষ যারই হোক ইত্যাদি ইত্যাদি কথার মারপ্যাঁচে মেয়েটাকেই নাকে খত দিয়ে মাফ চেয়ে নিতে হয় কোন দোষ না করেও সব তার দোষ বলে।

বৌ কে একাকী এদেশে রেখে দিলে আর বিয়ে করিয়ে কি লাভ হলো, অতঃপর বিয়ের বছরখানেকের মাথায় এই আমেরিকা শহরে আসি আমি আমার নিজের সংসারে। কয়েকদিন না যেতেই বুঝি এ যেন উত্তপ্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত উনুনে এসে পরলাম। জুলফিকার নানা পদের খাবার খেতে পছন্দ করে, সব রোজদিনের ফ্রেশ রান্না হতে হবে। খুব বেশী রান্না করে ফ্রিজে রেখে দেয়া যাবেনা। আশেপাশের বাঙ্গালী কারো সাথে বেশী মেলামেশা করা যাবেনা। সারাক্ষণ সংসার নিয়ে থাকতে হবে। আগে তো চাইলে তাও মা বা বোনদের সাথে একটু মনের কথা বলা যেতো। বিদেশে এসে সে পথও বন্ধ হয়ে যায়। মাসে দুমাসে বাড়িতে কথা বলার সুযোগ মিললেও জুলফিকার সামনে বসে থাকতো। আর তাই কেমন আছো, ভালো আছির পরে কোন কথা আর খুঁজে পেতামনা।

তবু মেনে নিয়েছিলাম, থাক আমার স্বামী, আমার সংসার। কিন্তু স্বামীর কোন কারণ ছাড়া নিত্য অবহেলা আর সংসারের কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আমার প্রবেশের অনুমতি না থাকা, সর্বোপরি সবসময় জ্বি হুজুর করতে থাকা এই আমি একসময় ভুলেই যেতে বসি, আমিও একজন মানুষ। ছেলেটা হওয়ার পর থেকে তাও আমার একটা বন্ধু জোটে। মনের জমানো কথাগুলো ছেলের সামনে উগরে দিয়ে একটু কেঁদে নিজেকে বুঝ দিতাম। ছেলে বড় হয়ে বহুবার বাবার মুখোমুখি হতে চেয়েছে তার স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করতে। আমার কড়া নিষেধের কারণে নিজেকে সামলে নিয়েছে প্রতিবার। শুধু ইউনির হলে চলে যাবার আগে আমাকে বলে গেছে, আমি যেন নিজের প্রয়োজনের কথাটুকু অন্তত মুখ ফুঁটে জুলফিকারকে বলি।

অদ্ভুত ব্যাপার হলো ছেলের কথামত আমি নিজের প্রয়োজনীয় কিছুর কথা বললেও জুলফিকার এমনভাবে এড়িয়ে যায় যেন সে শুনতেই পায়নি। একদিন দুদিন তিনদিন পেরিয়ে একদিন আমি অবশেষে চিৎকার দিয়ে কথা বলে উঠি। জুলফিকারের চোখের বিস্ময়, ভয় আর হতবিহবল হওয়া দৃষ্টি যেন আমার সাহস বাড়িয়ে দেয়। যে কোন ছোটখাট ব্যাপার নিয়ে আমি এমনভাবে কথার বাক্যবাণে তাকে ঘায়েল করি যেন একজীবনের আমার জমে থাকা ক্ষোভের শব্দরা ধারালো অস্ত্র হয়ে তাকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দিতে পারে। নরম সরম বোকা সোকা ধরনের নির্বাক মানুষ বলে ধরে আসা এই আমার এই অগ্নিমূর্তি জুলফিকারকে যেন পুরোপুরি ভীতু বেড়াল বানিয়ে দেয়। আচ্ছা আমি কি খুব বাড়াবাড়ি করছি? আমি যে একটা মানুষ, আমার একটা সত্ত্বা আছে; তাকে বিশ বছরে পুরোপুরি ধুঁয়েমুছে এতোটা কাল যে জড়ভরত বানিয়ে রাখলো তাকে যদি দুটো কথা দিয়ে মাত্র কয়েকটা দিন আঘাত করি খুব কি বেশী অন্যায় হয়ে যাচ্ছে আমার?

(জুলফিকার)

বৌ কে বেশী লাই দিতে হয়না, বিয়ের প্রথম রাতেই বিড়াল মারতে হয়, বৌ হচ্ছে এমন চিজ সুযোগ পেলেই ভেড়ুয়া বানিয়ে ছাড়বে লোকের ইত্যাকার কথার চাপে বিয়ের পর থেকেই হেমাকে আমি এক প্রকার শাসনের মধ্যেই রাখার চেষ্টা করতাম। বেশী পড়াশোনা করালে স্বামীর কথা শুনবেনা এই ভাবনায় পড়ালেখার চাকাটাও হ্যাঁচকা টানে থামিয়ে দেই দেশে থাকতেই। এদেশে এসে এক আধবার পড়াশোনার কথা তুলেছিল। কিন্তু আমার উদাসীন দৃষ্টির সামনে আর কথা বাড়াবার সাহস বা সুযোগ কোনটাই পায়নি। মেয়েটা অবশ্য কখনোই মুখের ওপর তেমন কিছু বলতো না। একটু আধটু লুকিয়ে কাঁদতো মাঝে মধ্যে। তাতে আমার কি? নারী জাতির স্বভাবই তো ছিঁচকাদুনে টাইপ।

আমার সময়মত খাওয়া, গোসল, কাপড় চোপড় পরিপাটি করে রাখা, আমার ছেলের যত্ন নেয়া, সংসারের কোন অযত্ন তার হাতে হওয়ার জো ছিলনা। কিন্তু ছেলেটা ইউনির ডর্মে চলে যাবার পর থেকে হেমা কেমন বদলে যেতে শুরু করলো। কথায় কথায় মুখ ঝামটা, কিছু বললেই তার উল্টো একটা কিছু বলা। এ যেন এক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক সে দিচ্ছে আমার সংসারের প্রতি মতান্তরে আমার প্রতি। কি হয়েছে, কেন এমন করছে, আমি কি করলে সে এমন রেগে যাবেনা এসব প্রশ্ন বহুবার করতে যেয়েও থেমে গেছি। কারণ বুঝতে পেরেছি এসব প্রশ্ন করার জন্য যতটুকু আন্তরিকতা প্রয়োজন তার সামান্য পরিমাণও আমি কখনো তার প্রতি দেখাইনি। ছেলেটা থাকতে তাও দিনশেষে ঘরে ফিরে কথা বলার একটা মানুষ ছিল। হেমার সাথে এতো কথা না বললেও হতো। কিন্তু আজকাল আর কাজ শেষে বন্ধুদের আড্ডায় না যেয়ে ইচ্ছে করে ঘরে বসে কারো সাথে দুদন্ড মনের কথা বলি। একজীবনের হিসেব নিকেশের গল্প করি। কিন্তু কথা শুরু করলেই হেমা শুরু করে উল্টোপাল্টা কথা। আচ্ছা ও যদি পড়ালেখা করে চাকুরী করতো আমরা হয়তো স্বচ্ছল থাকতাম। কিন্তু আমার সংসারটা কি এতো সুষ্ঠুভাবে চলতো? আমার ছেলেটাকেও কি একা একা বড় হতে হতোনা? আর আমিতো এই সংসারের জন্যই সারাটা জীবন খেটে মরলাম। সংসারে একজনের নীতি মেনে চললে সবকিছু লাইনমত থাকে ভেবেই না আমিই আমার মতো করে সংসার চালানোর চেষ্টা করতাম। বুঝি তাতে হয়তো হেমার ওপর মাঝে মাঝে কিছু অতিরিক্ত চাপানো হয়ে গেছে তাই বলে এরকম ব্যবহার কি আমার প্রাপ্য? আমি কি তবে একটা জীবন সংসার না করে শুধু দুজন মানুষের বোঝা টেনে গেছি?

কিচেন থেকে টুংটাং শব্দ আসছে থেকে থেকে। সেই শব্দ যেন আমার ক্ষুধাটাকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। সেই দুপুরে কাজে একটা স্যান্ডউইচ খাওয়ার পর ভেবেছিলাম বাসায় এসে পেট ভরে কিছু খাব কিন্তু হেমা রেগে যাবার জন্য তাও বন্ধ হয়ে গেলো।

বয়স হলে পেটের ক্ষুধার কাছে বুঝি রাগ অভিমান হার মেনে যায়। আর তাই পায়ে পায়ে এসে দাঁড়াই রান্নাঘরে।

– আমি সরি হেমা। জানিনা তুমি কেন এতো রেগে আছো। আমার খুব খিদে পেয়েছে। তুমি যা দেবে তাই খাবো।

কোন কথা না বলে টেবিলে খাবার সাজিয়ে দিয়ে নিজেও খেতে বসে হেমা।

‘তোমাকে আমার কিছু কথা বলার ছিল।’

– প্লিজ বলো।

‘তোমাকে আমার সহ্য হয়না। কথায় বলেনা, যারে দেখতে না পারি তার চলন বাঁকা। অনেকটা সেরকম। তুমি হয়তো জানতে চাইতে পারো তবে তোমার সংসারে পরে আছি কেন? কারণ আমার যাবার কোন জায়গা নেই। আর আমার যেন কোনদিন কোন যাবার জায়গা না হতে পারে তার ব্যবস্থাও তুমি আর তোমার পরিবার করেছো সম্পর্কের শুরুতে আমার পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়ে। আমাকে অবিরত শাসনে রেখে রেখে এমন ভীতু করেছো যে ঘরে জোরে একটা শব্দ হলেও আমি আঁতকে উঠি। আমি জানি তুমি একা হাতে রোজগার করে সংসার টেনেছো। কিন্তু আমি যদি পড়াশোনা করতাম বা তুমি যদি আমায় বাইরের পৃথিবীতে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দিতে তবে আজ তোমাকে আমার ঐ কথাটুকু বলতে হতোনা যে তোমাকে আমার সহ্য হয়না কোনভাবেই। বরং আমরা একে অপরের সহযোগী হতাম, বন্ধু হতাম। বলতে পারো, উন্নত দেশ পারিবারিক নির্যাতনের শিকার এ কথা বলে সেফ হোমে জায়গা করে নিতে পারি। হুম খুব পারি। সব খোঁজ খবর আমি নিয়ে রেখেছি। কিন্তু আমি তা করতে চাইনা। আমি জীবনের বাকী দিনগুলো তোমার সাথেই কাটাতে চাই তবে সম্মান নিয়ে। আমাদের সম্পর্কের টানাপোড়েনের কষ্ট দোদুল তার ভবিষ্যত জীবনে যেন না পায়। আমি পড়ালেখা করতে চাই। আপাতত একটা ইংলিশ কোর্স তারপর না হয় রিটেইল এ কোন কোর্স। সপ্তাহে দুদিন কাজ করতে চাই। আমি এই চার দেয়ালের একাকীত্বের একঘেয়ে জীবন থেকে একটু মুক্তি চাই।

– তুমি যা চাও তাই হবে হেমা। আমি জানি আমি তোমাকে সেভাবে কখনোই সময় দেইনি, তোমার ইচ্ছে অনিচ্ছেগুলোকে সেভাবে কখনো প্রাধান্য দেইনি। কিন্তু আজ কথা দিচ্ছি আমি আমাকে বদলে নেয়ার চেষ্টা করবো। জীবনের এ বেলায় এসে আমি বুঝেছি তুমি আর দোদুল ছাড়া আমার আপন বলতে আর কেউ নেই। প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেওনা।

………….

আচ্ছা জুলফিকাররা কি হেমাদের শর্তগুলো এভাবে সবসময় মেনে নেয়? কিংবা সব হেমারাই কি তাদের জীবদ্দশায় একবার অন্তত প্রতিবাদী হতে পারে?

মানবজীবনের সম্পর্কগুলো মেনে নেয়া আর মানিয়ে নেয়া এই দুটো কথার ওপরেই টিকে থাকে। আমাদের সমাজব্যবস্থায় সংসারের চাকা সচল রাখতে ঐ শব্দদুটোর দায়িত্ব নারীজাতির ওপরই থাকে বেশীরভাগ সময়ে। আর সে সুযোগেই কোন কোন পুরুষ তখন হয়ে ওঠে অনেকটা শাসকের মতো। অথচ তারা ভুলে যায় সৃষ্টিকর্তা নারীকে তৈরী করেছেন পুরুষের সহযোগী হিসেবে তাদের অধীন করে নয়।

#ডা_জান্নাতুল_ফেরদৌস

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে