লুকোচুড়ি_ভালোবাস?পর্বঃ-৩৯

0
1714

লুকোচুড়ি_ভালোবাস?পর্বঃ-৩৯
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি

মিষ্টি রাগ দেখিয়ে না না কথা বলে যাচ্ছে কিন্তু শব্দ খুবই কম তার কষ্ট হচ্ছে রাজ এতো আঘাত পেয়েছে আর তা কিনা সে জানে না। এটা কোন কথা রাজ কেন তাকে বলল না একে তে লেখাপড়া নিয়ে বেশি বিজি ছিলো তাই বলেকি এটা বলা যেত না যেত ইচ্ছে করে বলেনি। কিন্তু মিষ্টি রাগ দেখিয়ে বকা দূরে কাদছে বেশি মনে হচ্ছে ব্যাথা রাজ না মিষ্টি পেয়েছে। মিষ্টির সব থেকে খারাপ এজন্য লাগছে খেতে বলাতে কেন সে খেতে চাইলো রাজর হাতে রাজ যেহেতু প্রথমে ইচ্ছে করে খাইয়ে দেয় নি তার মানে কোন প্রবলেম ছিলো আমি কেন বুঝলাম না সেটা। এতোটা আহাম্মক কি করে হলাম আমি। এতো কষ্ট সহ্য করে আমাকে খাইয়ে দিলো আর আমি হাসি মুখে খেলাম একটু বুঝতে পারলাম না রাজের কতো কষ্ট হচ্ছে ও যন্ত্রণায় মরে যাচ্ছে। আবার তার উপর কামড় কি করে সহ্য করলো এতো কষ্ট ভাবতেই নিজের কাছে নিজেকে অযোগ্য মনে হচ্ছে। আমি আদো কি রাজের জন্য পারফেক্ট একদম না রাজের মতো ভালো কখনো ভাসতে পারবো না আমি। রাজ সব সময় আমাকে সাপোর্ট করে আমি নিজে বোকামি করে ওকে কষ্ট দিয়ে ফেলি। এমন কেন আমি কেন আপন জনের কষ্ট বুঝতে পারলাম না। মিষ্টি হাতে ধরে রাজ যেভাবে খেতে নিয়ে এসেছিলো কিছু না বলে মিষ্টি ও রাজের হাত ধরে সেভাবেই রুমে এনে খাট বসায় রাজ কি বলবে ভাবছিলো কিন্তু তার বলার আগেই মিষ্টি তাকে টেনে রুমে এনে খাটে বসিয়ে দেয়।
তারপর শুরু হয় ডাক্তার গিরি করা মিষ্টি ফাস্ট ওয়াক্মের বক্ম এনে ব্যান্ডেজ করে দেয়। রাজ মুগ্ধ নয়নে তার প্রিয়তমাকে দেখছে। মিষ্টি ব্যান্ডেজ করছে আর কাদছে চোখ দিয়ে টুপটুপ করে পানি পরছে।
রাজ মিষ্টির ওর প্রতি এই ভালোবাসার জল দেখে খুব খুশি হচ্ছে। মিষ্টি ব্যান্ডেজ শেষ করে রাজের হাতে ব্যান্ডেজের উপরেই কয়েকটা চুমু খেলো। রাজ হা করে তাকিয়ে আছে।

–আমি আপনাকে খুব কষ্ট দেয় তাই না কখনো বুঝতে চাইনা অনেক খারাপ আমি।

কান্নার মাঝে বলে উঠে রাজ মিষ্টি কে জরিয়ে ধরে এভাবে কেউ কাদে কাদতে কাদতে নাকের পানি চোখের পানি এক করে ফেলেছে একেবারে। চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে কাদছে আর নাক টানছে রাজ মিষ্টি কে বুকে জরিয়ে ধরে,,

–স্টপ দিজ আর কাদবে না এভাবে কেউ কাদে এভাবে কেদে কি অবস্থা করেছো মুখের দেখো। আর কাল না তোমার এক্মাম তার চিন্তা আছে তো এখন কতো বাজে দেখো। ছারু আমাকে আমার তেমন কিছু হয়নি একটু কেটেছে আর এখন তো একদম ঠিক হয়ে গেছে তুমি যে সেবা যত্ন করলে। এতো দিনে আজ আমার মনে হচ্ছে আমি বিয়ে করেছি বউ আমার সেবা করছে।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
বলেই রাজ হেসে উঠে মিষ্টি রেগে তাকায় কি বলথে যাবে রাজ মিষ্টি কে ছেড়ে দিয়ে উঠে দাড়িয়ে পরে,,
–যাও শুয়ে পর।
বলেই রাজ চলে আসতে যায়। কিন্তু আসতে পারে না মিষ্টি হাত ধরে নেয় রাজ অবাক হয়ে পেছনে তাকায়, ভ্রু নাড়িয়ে কি বলে?
মিষ্টি মাথা নেড়ে না জানিয়ে হাত ছেড়ে দেয় রাজ লাইট অফ করে মিষ্টি সাথে সাথে শুয়ে পরে রাজ হালকা হাসি দিয়ে দরজা চাপিয়ে চলে আসে।
মিষ্টি রাজের হাত ধরেছিল কারণে এ বলতে চেয়েছিল রাজকে এখানেই থাকতে কিন্তু রাজের থাকার আগ্রহ নাই তাই নিজে ও আর বলল না ওর চাওয়া সব সময় কিছু ঘটে। মিষ্টি কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে রাখতেই ঘুমিয়ে পরে।

কানের কাছে কেউ অনবরত চেচিয়ে যাচ্ছে যেটা আসতেই মিষ্টি বালিশ চেপে ধরে আছে উঠছে না এবার কেউ বালিশ টা টান মেরে নিয়ে নিলো সাথে সাথে চোখ মেলে তাকালো তাকিয়ে রাজের মুখ দেখলো রাজ দাড়িয়ে আছে ও বুঝতে পারছে না এখন আবার উনি এখানে কেন একটুআগেই না ঘুমালাম আবার বিরক্ত করছে কেন ঘুমে। তখন তো বলে গেল ঠিক মতো ঘুমাতে। এখন কেন ডাকছে চোখ মুখ কুচকে তাকিয়ে আছে রাজের দিকে রাজ আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো আমি তাকাতে বলল,,

— মিষ্টি উঠো তোমাকে কখন থেকে ডাকছি আমি উঠছ না কেন?
–উঠবো কেন? একটু তো ঘুমালাম আপনি ও বলেছেন আমি যাতে ঠিক মতো ঘুমাই তাহলে এখন আবার ডাকছেন কেন? সকাল হয়ে যাবে তো যান এখন আর উঠছি না।
বলেই মিষ্টি চোখ বন্ধ করে ফেলল, রাজ হা হয়ে তাকিয়ে আছে তার মানে মিষ্টি ভেবেছে এখন ও সকাল ই হয় নি গড সাতটা বেজে গেছে ইনি বলছে সকাল হয়নি।
–মিষ্টি ওপেন ইউর আইস । তুমি কি সব বলছো তুমি জানো এখন কতো বাজে এই দেখো সাতটা পনেরো বেজে গেছে।
মিষ্টি চোখ কেবলি অফ করেছিল সাথে সাথে রাজের কথা কানে যেতেই ধরফরিয়ে উঠে বসে।
—কি
–জি তারাতারি উঠো।
—এতো বেজে গেছে আর আপনি আমায় এখন ডাকছেন ছয়টায় সে ডাকবেন। এই জন্য রাতেই শেষ করতে চেয়েছিলাম সকালে বলে এখন লেট হয়ে গেল।
মনে মনে বিরবির করতে করতে ওরনা নিয়ে বাথরুমে ঢুকে গেল। রাজ হা ও তো আগেই এসেছিল কিন্তু মিষ্টির উঠে নি তাই তো লেট হয়েছে এখন আমার দোষ হয়ে গেল।
মিষ্টি পনেরো মিনিটের মাঝে ফ্রেশ হয়ে এলো তারপর আর কোন দিক না তাকিয়ে পরায় মন বসালো। টেবিলে বসে পরেছে আর রাজ খাটে বসে আছে মিষ্টি এখন পড়া নিয়ে ব্যস্ত রাজ যে এখন ও রুমে আছে ওর খেয়াল ই নেই। মিষ্টি জোরে পরে না আস্তে পরে তাই মুখে শব্দ হয় না শুধু পিষ্ঠা উল্টাচ্ছে রাজ মুখের দিকে তাকিয়ে আছে এক সারা কিছু বলে যাচ্ছে। হঠাৎ কি ভেবে যেন নিচে চলে এলো। মিষ্টি গভীর মনোযোগ দিয়ে পরছে হঠাৎ কেউ ওর সামনে কিছু ধরলো মিষ্টি পড়া বাদ দিয়ে তাকিয়ে আছে ডিম রাজ এনেছে সিদ্ধ ডিম আমি খেতে চাইনা ডিম আমার পছন্দ কিন্তু এই সকালে সিদ্ধ ডিম তাও প্রতিদিন এটা খেতে একদম ভালো লাগে না আমি কি করবো রাজে ব্যান্ডেজ হাত দিয়েই ধরে রেখেছে সকালে উঠে দেখাও হয় নি হাতটা উঠেই পড়া নিয়ে বেশি বিজি হয়ে পরেছি।
আমি ডিম না খেয়ে হাত নিজের হাতে নিয়ে দেখলাম জায়গা টা কাটা দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু ব্যান্ডেজ দেখা যাচ্ছে ওই ভাবেই একটা চুমু খেলো মিষ্টি তারপর রাজের দিকে তাকিয়ে
–হাতের ব্যাথা কি কমেছে?
–তা না কমে যাবে কোথায় যে সেবা করছে বউ। বিশেষ করে তার নরম ঠোঁটে ছোঁয়া দিয়ে দিচ্ছে যাতে আমার সমস্ত ব্যাথা দূর করার জন্য,,
–হয়েছে আমার বলতে হবে না আমি কি বলি আর আপনি কি উওর দেন। আমি ডিম খাবো না এটা নিয়ে যান।
রাজ উক্তিতে কিছু বলল না,,
মিষ্টি পড়ার মন দেয় একটু এর মাঝেই রাজ কান্ড ঘটিয়ে ফেলে মিষ্টির মুখে ডিম ঢুকিয়ে দেয় পুরো দেওয়ায় মিষ্টি ঘটনা আকর্ষমিক হা হয়ে যায় কি বলবে ডিম মুখে থেকে বের করে রাগি চোখে রাজের দিকে তাকায়।
–এটা কি হলো এভাবে কেউ ডিম মুখে ঢুকিয়ে দেয়।
–হ্যা দেয় এইযে আমি দিলাম। ভালো কথায় তুমি কিছু তে রাজি হওনা ওই জন্য এভাবে দিলাম খাও।
মিষ্টি কটমট চোখে তাকিয়ে রইল ,,,,
তারপর আর কি মুখে দিয়েছিলো এখন এটা না খেলে ফালানো যাবে তাই বাধ্য হয়ে খেলো।

কিছু ক্ষণ পর

মিষ্টি ফোন বেজে যাচ্ছে মিষ্টি পরছে তাই দেখেনি। মামুনি ওকে ডাকতে এসে দেখে ফোন বাজছে উনি ফোন হাতে নিয়ে মিষ্টির পাশে গেল।
— মিষ্টি মামুনি তুমি এখন ও পরছো খাবে না। আর এই যে তোর ফোন বেজে যাচ্ছে শুনতে পাসনি নে দর।
মিষ্টি মামুনির কথায় পড়া অফ করে ফোন হাতে নিলো তিথি কল করেছে। মিষ্টি হ্যালো বলতে ও জিগ্গেস করলো কখন বের হবে। মিষ্টি ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখে সারে আটটা বাজে বলল, নয়টা পনেরো তে। তিথি ও ওই সময় ই বের হবে বলল মিষ্টি বলল কার সাথে আসবি, ও বলল, ওর উডবি নাকি নিয়ে আসবে। মিষ্টি ফোন রাখতেই মামুনি নিচে গিয়ে খেতে বলল,
মিষ্টি আসছি বলে মামুনি কে যেথে বলল, মামুনি চলে গেল ও আর একটু পরেই বই অফ করে উঠে খেতে চলে গেল। বেশি না করলে রাজ আমায় আজ মেরেঈ ফেলবে তাই আর সেই রিক্স নেয় নি।
৯:২০ এ রওনা হলো পাচঁ মিনিট লেট মিষ্টির জন্যই হয়েছে। গাড়িতে উঠে মিষ্টির রাগ সাত আসমানে উঠে গেল।
–এই আপনি ড্রাইভ করবেন?
–হ্যা তো আর কে করবে তুমি।
–আমি কি তাই বলেছি আপনি ড্রাইভ করবেন কেন একে তে হাতের এই অবস্থা একদম না আপনি করবেন না।
–আমি করবো না কে করবে তুমি কি পাগল হলে নাকি। আর আমার তেমন কিছু হয় নি যে আমি ড্রাইভ করতে পারবো। কিছু প্রবরেম হবে না অযথা হাইপায় হয়ে লেট করে ফেলছো কিন্তু তোমার ১০ এক্মাম ভুলে গেলে নাকি।
–না আমি কিছু শুনতে চাইনা আপনি ড্রাইভ করবেনা না। ড্রাইভার কাকা কে নিয়ে চলেন তাহলেই তো হয়।
–ড্রাইভার কাকা গ্রামে গেছে তাকে কোথায় পাবো।
–তাহলে নামেন রিক্সা চলে যাবো।
–আমি রিক্মাত যাবো লাইক সিরিয়ালি মিষ্টি। তুমি চুপ করে বসো আমার কিছু হবে না।
মিষ্টি কিছু বলবে রাজ তার কথার তোয়াক্কা না করে গাড়ি ছেড়ে দিলো। মিষ্টি চেচামেচি শুরু করে লাভ হয় না তাই অভিমান নিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে রাজ বুঝতে পেরেছে মিষ্টি রাগ করেছে কিন্তু এখন যাওয়া টা বেশি ইম্পটেন্ট তাই আর কিছু করে রাগ ভাঙাতে।

?

মারিয়া একটা গুন্ডার সাথে কথা বলছে ফোন এ তাকে বলছে।

–মেয়েটাকে যে করেই হোক আমি মৃত দেখতে চাই। আজ ওর পরিক্ষা তাই আজ ও বির হবে আজকেই ওকে লাশ হতে দেখতে ও আমার ভালোবাসা কেরে নেবে ওকে আমি এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেব।
–মেডাম এতো হাইপায় হয়েন না আমি ওদের ফলো করছি মেয়েটা নামলেই মেরে দেব।
–গুড আর একটা কথা ছেলেটার যেন কিছু না হয় বি কেয়ার ফুল ওকে।
–ওকে ম্যাম।
বলেই কল কেটে দিলো লোকটি। তারপর ছোটলো রাজের গাড়ির পেছনে। একদম ভার্সিটিতে এসে থামলো রাজের গাড়ি রাজ আগে নেমে মিষ্টির পাশের দরজা খংলে দিলো মিষ্টি নেমে পরল।
–সাবধানে এক্মাম দিও আর একদম চিন্তা করবে না তোমার এক্মাম খুব ভালো হবে দেখো।
রাজ মিষ্টির সামনে দাঁড়িয়ে বলছে মিষ্টি তাকাচ্ছে না কিছু বলছে ওনা ওর কথা শুনলো না এটার জন্য অভিমান হয়েছে। রাজ বুঝতে পেরেছে কিছু বলবে তার মাঝেই তিথির আগমন রাজ মিষ্টির সামনে থেকে সরে দাড়ায়।

তিথি মিষ্টি সাথে কথা না বলে রাজের সাথে বলতে লাগে দুজন কথা বলছে তিথি এনগেজমেন্ট নিয়ে রাছের সাথে তর্ক করছে। তাকে ট্রিট দিতে হবে আজকেই। রাজ রাজি হয়ে গেছে বিয়ের ব্যাপারটা তিথি জানে না এখন ও বলে নি মিষ্টি। মিষ্টি ওদের কথা বলতে দেখে আর ও রেগে গেছে অসভ্য ফ্রেন্ড আমার কই এতো দিন পর দেখা হলো আমার সাথে কথা বলবে মিস করেছে বলবে তা না ট্রিট চাইছো কি হেসে হেসে কথা বলছে আমি যে পাশে আছি দুজনের কারো কি সেই খেয়াল আসে। রেগে সামনে এগিয়ে গেল এবার সেই লোকটা সুযোগ পেলে গাড়ি থেকে এই সুযোগ টাই খুজছিলো সে সবার রাজের পাশে ছিলো বলে কিছু করে নি কারণে মেডাম ছেলেটার কিছু করতে না করেছে। দুই কদম এগিয়ে গেছে একবার পেছনে ফিরে ওদের দিকে তাকালো না একই ভাবে গল্প করছে আবার হাটা ধরলো,,

যেইগুলি করবে ওই সময় ই রাজ হঠাৎ মিষ্টির হাত ধরে কাছে টেনে আনে। তারাতারি গুলি করা একে বিরত থাকে লোকটা। একটুর জন্য অপেক্ষা করতে থাকে কিন্তু আর সুযোগ হয়না।
ছুটির পর মিষ্টি আর তিথি একসাথেই বের হয়।
দেখে রাজ দাড়িয়ে আছে গাড়ি নিয়ে তিথি বলেই গিয়েছিল ট্রিট দিতে তাই রাজ মিষ্টি আর তিথি রেস্টুরেন্টে যায় মিষ্টি অবশ্য রাজের সাথে একটা কথা ও বলে নি।

চলবে❤

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে