লুকানো অনুভূতি পর্ব-০৩

0
614

#লুকানো_অনুভূতি
#পর্বঃ৩
#নুসাইবা_ইসলাম_হুর

রুমে যেয়ে দেখি উনি আমার বেডে সুয়ে আছেন চোখ বুজে। আমিতো অবাকের চরম সিমানায় চলে গেলাম তার কান্ড দেখে।

রুমে যেয়ে তকে ডাক দিবো নাকি বুঝতে পারলাম না। অনেক সময় ভাবার পর আসতে করে ডাক দিলাম। ভাইয়া আপনার কফি ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।

উনি আসতে চোখ খুলে উঠে বসলেন। আমার হাত থেকে কফি টা নিলো। আমি কফি তার হাতে দিয়ে পিছন ঘুরে চলে আসতে নিয়েছিলাম তখন তিনি হাত টেনে ধরলেন। তার হাতের স্পর্শ পেয়ে চমকে কেপে উঠলাম আমি।

পায়ে ব্যথা কেমন আছ এখন? হাত ধরে তার পাসে বসিয়ে কথাটা জিজ্ঞেস করলো আমাকে।

ব্যথার কথা বলতেই তার তখনের বিহেবের জন্য মনের ভেতর আবার অভিমান হানা দিলো তাই মুখ ফুলিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলাম তার কথার উত্তর না দিয়ে।

আমাকে তার দিকে ঘুরিয়ে বললো রাগ করেছিস আমার উপর?

আমি তবুও কোনো উত্তর দিলাম না।

তোকে কি আমি শুধু শুধু বকা দেই বল? এইযে ছোটাছুটি করে পরে গেলি এতে ব্যথা কে পেয়েছে বল? তুই এতো কেয়ারলেস কেনো হুর, আমার গালে আলতো করে হাত দিয়ে ধরে বল্লেন তিনি।

কেঁপে উঠলাম ভাইয়ার স্পর্শে আমি, নিজেকে সাভাবিক করে ভেবে দেখলাম আসলেই ভুলটা আমার ছিলো।

সরি ভাইয়া, আর এমন করবো না।ছোট করে বল্লাম আমি মাথা নিচু করে।

তুই এখন বড় হয়েছিস, বাচ্চাদের মতো এভাবে ছোটাছুটি করলে হবে? একটু তো বড় হ।

ভাইয়ার কখা সুনে আমি মাথা নিচু করেই বসে রইলাম, বলার মতো কিছু পেলাম না।

নিযের যত্ন নিস এই বলে ভাইয়া চলে গেলো ড্রয়িংরুমের।

এর ভিতরেই আম্মু খাবারের জন্য ডাক দিলো। যেয়ে দেখি রোয়েন ভাই, দাদির, ইমা আপুরা একসাথে গল্প করছে আর খাচ্ছে। আমি যেতেই দাদি তার পাসে বসিয়ে দিলো। বললো ব্যখা পেয়েছিস নাকি, এখন কি অবস্থা পয়ের?

বেশি ব্যথা নেই, শেরে যবে কালকের ভিতোরেই।

এভাবে টুকটাক কথা বলে সবাই এক সাথে খাওয়া শেষ করলাম।

খাওয়া শেষ করে সবাই এক সাথে ড্রয়িংরুমের যেয়ে বসলাম তখন ইয়াদ ভাইয়া আসলো

ইয়াসমিন বেগম বললো কিরে ইয়াদ আজ এতো দেরি করলি কেনো?

আসলে মা একটা কাজে আটকে গেছিলাম তাই একটু দেরি হয়ে গেছে।

মিনা বেগম বললো যা বাবা ফ্রেশ হয়ে আয় তোকে খাবার দেই।

ছোট মা আমি বাহির থেকে খেয়ে এসেছি, এখন আর খাবো না, তোমরা রেস্ট করো। এই বলে রোয়েন ভাই কে নিয়ে নিযের রুমে চলে গেলো।

আমরা যে যার রুমে চলে গেলাম। আমার এখন ঘুম প্রয়োজন তাই রুমে এসে ঘুমিয়ে পরলাম।

ঐদিকে রোয়েন ইয়াদের দিকে সন্দেহোর চোখে তাকিয়ে আছে কতোখন থেকে।

ইয়াদ ভয়ে ভয়ে ডুক গিললো, ধরা পরে যাবে নাতো আজ।

তোর কি এমন কাজ ছিলো সুনি একটু আমি, আমার যানা মতেতো তোর কোনো কাজ ছিলো না।

ও.ই আ..আছি..লো একটা ক..কাজ। তুতলিয়ে বললো ইয়াদ।

তোতলাচ্ছিস কেনো তুই? তুই আবার প্রেম ট্রেম করছিস নাতো?

ভয়ে গলা সুকিয়ে গেলো ইয়াদের। তবু্ও নিজেকে সাভাবিক করে বললো, আরে কি বলিস ভাই আমি প্রেম করবো তা তোকে যানাবো না।

রোয়েন আর কথা বাড়ালো না, অন্য কথা বলা শুরু করলো

এইদিকে ইয়াদ যেনো হাফ ছেরে বাচলো, এটুর জন্য ধরা খায় নাই।
দুই বন্ধু মিলে কিছুখোন আড্ডা দিয়ে রোয়েন চলে গেলো বাসায়।

রোয়েন চলে যেতেই ইয়াদ রিহুকে ফোন করলো।

এই তোমার সময় হলো আমাকে ফোন করার? বাসায় গেছো সেই কখন।

রাখো তুমি ফোনের কথা, একটুর জন্য রোয়েনের হাত থেকে বেচে গেলাম আর নাহলে কি হয়ে যেতো ভাবতেই ভয় লাগে।

বলো কি, ভাইয়া কি করেছে?

আজকে বাসায় কাজের বাহানা দিয়ে দেরি করার জন্য রোয়েন আমাকে সন্দেহ করছিলো কারণ ও জানে তো আমার কনো কাজ ছিলো না, একটুর জন্য ধরা পরি নাই ওর কাছে।

ভাইয়া এখন কিছু না যানুক, একদিন তো যানবেই যে ওর বোনের সাথে তুমি রিলেশন করো তখন কি করবে?

যখন যানবে তখন দেখা যাবে কি করবো এবার চুপ করো। বাসায় গেছো ঠিক মতো?

হুম এসেছি, এভাবে টুকিটাকি কথা বলতে থাকলো ওরা।

এদিকে বিকেলের দিকে হুরের ঘুম ভেঙে গেলো।

ঘুম থেকে উঠে রোয়েনকে আর কোনো যায়গায় খুযে পলাম না, ভাবলাম চলে গেছে হয়তো। কোনো যেনো হালকা মন খারাপ হয়ে গেলো। হঠাৎ করে আমার চোখ গেলো আমার টেবিলের দিকে, গিয়ে দেখলাম সেখানে অনেকগুলো চকলেট রাখা। চকোলেট দেখে আমার ঠোঁট হাসি ফুটে উঠলো। পরক্ষনে মনে পরলো চকলেট গুলো রাখলো কে। ইয়াদ ভাইয়া? নাতো ইয়াদ ভাইয়াতো আমাকে সরাসরি এই চকলেট দেয়। তাহলে এটা কে রাখলো রোয়েন ভাই? হতে পারে, এই নিয়ে আর কিছু ভাবলাম না কারণ আগে পরে রোয়েন ভাই এভাবে অনেক চকলেট দিয়েছে। কিন্তু এবারের চকলেট টা পেয়ে আমার ভিতোর অন্য রকম অনুভূতি হলো। এই অনুভূতি মনে আমি বুঝলাম না।

কিছু চকলেট নিয়ে ইমা আপুর রুমে গেলাম এক সাথে খাবো বলে। কিন্তু আপু রুমে নেই, বুঝলাম যে ছাদে আছে তাই আমি ছাদের দিকে পা বাড়ালাম। ছাদে উঠে দেখলাম ইমা আপু কার সাথে যেন ফোনে কথা বলছে। পরে ভাবলাম হয়তো ফাহিম ভাইয়ার সাথে কথা বলছে। ফাহিম ভাইয়া আর ইমা আপুর রিলেশন ৩ বছরের। আপুর সাথে আমার সম্পর্কটা বন্ধুত্বসুলভ তাই আপুর সব কথা আমি জানি।

মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি চরে বসলো, পা টিপে টিপে আপুর পিছনে যেয়ে হটাৎ করে ভাও করে উঠলাম। ভয়ে আপুর হাত থেকে ফোনটা পরে গেলো।

পিছোন ফিরে আমাকে দেখে বলে হুর আমাকে ভয় পাইয়ে দিলি। দারা তোর আকজে খবর আছে। এই বলে আমার পিছে ছুটা শুরু করলো, আমিও ছুটতে লগলাম। ছোটছোটির এক পর্যায়ে দুইজনেই ক্লান্ত হয়ে ছাদে বসে পরলাম।

তখন শুনতে পেলাম ফাহিম ভাই হ্যালো হ্যালো করতেছে। আমি ফট করে ফোন টা হাতে নিয়ে বল্লাম আরে দুলাভাই এতো হাইপার হওয়া লাগবে না, আপনার ভিতু বউ ঠিক আছে শুধু একটু ভয় পেয়েছে।

তা আমার ভিতু বউকে ভয় দেখালো কে আমার দুষ্ট শালিকা নাকি।

ভাইয়ার কথা শুনে হেসে ফেল্লাম। ভাইয়ার সাথে কতোখন কথা বলে ফোন রেখে দিলাম।

পরে আপু আর আমি গল্প শুরু করলাম। গল্প করতে করতে আপুর দিকে চকলেট বারিয়ে দিলাম।

এতোগুলো চকলেট কে দিলো তোকে ব্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো আপু।

যানিনা আপু, ঘুম খেকে উঠে দেখি টেবিলের উপরে রাখা। বুঝলাম না কে রেখেছে, ইয়াদ ভাইয়া দিলে তো সরাসরি এই দেয়।

রোয়েন ভাই রেখে গেছে হয়তো, মুখ টিপে হেসে বললো আপু।

আমারও তাই মনে হয়।

আমার কি মনে হয় জানিস?

কি?

রোয়েন ভাই তোকে ভালোবাসে।

আপুর কথা শুনে চমকে আপুর দিকে তাকালাম আমি।
কিজে বলো না আপু, সেতো আমাকে দেখতেই পারে না, সব সমায় বকা দেয়, সে নাকি আবার ভালোবাসবে আমাকে।

বুঝলি মানুষ যাকে বেশি ভালোবাসে তাকে বেশি শাসন ও করে, আমার মনে হয় ভাইয়া তোকে সত্যি ভালোবাসে।

আপুর কথা শুনে ভবনায় পরে গেলাম, আসলেই কি ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে। না এটা হতেই পারে না, আপুর মাথা নষ্ট হয়ে গেছে, সেই সাথে আমার টাও করতেছে।

চলবে?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে