লাভ টর্চার❤ Part-6

0
3907

#লাভ_টর্চার❤
#Part-6
#Nusrat_Jahan_Abida
.
.
সকাল হতেই কাজে লেগে পড়লাম। প্রথম কাজ শান্ত ভাইয়াকে ঘুম থেকে টেনে উঠানো। ঢিং ঢিং করতে করতে চলে গেলাম শান্ত ভাইয়ার রুমে। ঢুম করে দরজা খুলতেই দেখি শান্ত ভাইয়া আর শুভ্র ভাইয়া গলাগলি ধরে ঘুমিয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে কতো পুরানো দোস্ত! যাক গে! আমার কাজ হলো এদের মধ্যে জেলাসি নামক বস্তু সৃষ্টি করা! মন তো চাচ্ছে শুভ্র ভাইয়াকে দিয়ে শান্ত ভাইয়াকে দুই তিনটা মার খাইয়েই দিই! আমার নাকে নিচ দিয়ে আমার বেস্টুর উপর লাইন মারা! দাড়াও, বাচ্চু! মার তো তোমাকে খেতেই হবে। শুভ্র ভাইয়া না মারলে আমি মারবো। আর তার শুরু হবে এখন থেকে! কথাটা ভেবেই শান্ত ভাইয়ার কাছে গেলাম। নরম কন্ঠে বললাম,
– শান্ত ভাইয়া!
.
.
শান্ত ভাইয়া ঘুমে বিভোর! আবার নরম গলায় বললাম,
– শান্ত ভাইয়া!
.
.
এবার একটু নড়েচড়ে উঠলো। মন তো চাচ্ছে পানি ঢেলে দিই, কিন্তু ঘুমের মধ্যে হঠাৎ কিছু করলে যদি হার্ট এর্টাক করে তবে পরে আমার দোষ হবে! না, বাবা। এসব কেস ফেসে পড়তে চাই না! তাই আবার ডাকলাম,
– শান্ত ভাইয়া!
.
.
শান্ত ভাইয়া এবার ঘুমুঘুমু কন্ঠে বলল,
– বেবি, পরে! অনেক ঘুম আসছে!
.
.
বেবি! কার বেবি! কিসের বেবি! মন তো চাচ্ছে গরম পানিতে চুবাই! না, না, ঠান্ডার দিনে গরম পানিতে আরাম পাবে। একে বরং বরফ পানিতে চুবাবো! হ্যাঁ, তাই করবো! কথাটা ভাবছি দেখলাম শুভ্র ভাইয়া চোখ খুলেছে! আমি তাকাতেই সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে নিলো। ওহ, তাহলে আমাদের কথা শুনা হচ্ছে! দাঁড়াও, মনু! এখন বুঝাবে ঝাড়ুর সাথে ঘোরার সাইড এফেক্ট! কোমল কন্ঠে বললাম,
– বেবি, সকাল হয়ে গেছে! উঠে পড়ো!
.
.
আমার কথা শান্ত ভাইয়ার কানে যেতেই তিনি ধড়ফড়িয়ে উঠলেন! দেখে মনে হচ্ছে খুব বাজে স্বপ্ন দেখেছে! বসে বড় বড় নিঃশ্বাস নিয়ে আমার দিকে তাকালো। আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললাম,
– কি হয়েছে, ভাইয়া?
.
.
শান্ত ভাইয়া ভ্রু কুঁচকে বলল,
– তুই আমাকে কিছুক্ষণ আগে কি বলেছিলি!
.
.
আমি না জানার ভান করে বললাম,
– কি বলেছি!
.
.
শান্ত ভাইয়া কুঁচকানো ভ্রু আরো কুঁচকে বলল,
– তুই আমাকে বেবি বলেছিলি!
.
.
আমি মুখে দীর্ঘ হাসি এঁকে বললাম,
– তাই নাকি!
.
.
শান্ত ভাইয়া তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন,
– হ্যাঁ!
.
.
আমি হাসিটা বজায় রেখে বললাম,
– আমি তো বেবি শুভ্র ভাইয়াকে বলেছিলাম!
.
.
আমার কথা শেষ হতেই শুভ্র ভাইয়া ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো। চোখ বড় বড় করে বললো,
– কি বললি!
.
.
এবার আমি হাসিটা একটু কমিয়ে বললাম,
– এমন কিছুই না! শান্ত ভাইয়া ঘুমে আবোল তাবোল বকছিল তাই একটু জব্দ করলাম আর কি!
.
.
আমার কথায় শুভ্র ভাইয়া ভ্রু কুঁচকালো। কিন্তু তাতে আমার কি! শান্ত ভাইয়াকে নিচে আসতে বলে হেলেদুলে সেখান থেকে চলে আসলাম।
.
.
কিচেনে দাঁড়িয়ে ডিম ভাঁজছি আই মিন অমলেট করছি। আমার সহকারী হিসেবে আছে শান্ত ভাইয়া। ভালো জিএফ পেতে হলে রান্না জানা অবশ্যক, কেননা প্রতিটা মেয়ে চায় অফডে টে হলেও তার জামাই তার জন্য রান্না করুক। শান্ত ভাইয়া যদিও রান্নার নামে কিছু রছে না তবে এখানে থাকলেই আমার কাজ চলে যাবে! কেননা বাইরে ডাইনিংয়ে বসে আছে শুভ্র ভাইয়া!
.
.
ডিম ভেঙ্গে চুলায় দিয়ে শান্ত ভাইয়াকে বললাম এটাকে উল্টাতে! শান্ত ভাইয়া বেশ কিছুক্ষণ গবেষণা করে বললো,
– দুনিয়াতে এতো সহজ সহজ রান্না থাকতে এতো কষ্ট করে ডিম ভাঁজার প্রয়োজনটা কি!
.
.
ডিম ভাঁজার চেয়ে সহজ রান্নাও আছে তা আমার জানা ছিলো না। শান্ত ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বললাম,
– সহজ রান্নাগুলোর নাম শুনি একটু!
.
.
শান্ত ভাইয়া ভাবসাব নিয়ে বলল,
– লাইক পিজ্জা! ওভেনে দাও আর হয়ে গেলো! আবার দেখো বার্গার! দুই বানের মাঝে দাও আর হয়ে গেলো! কতো সিম্পল দেখলি!
.
.
পিজ্জা, বার্গার বানানো এতো সহজ! দাও আর হয়ে গেলো! ভ্রু কুঁচকে বললাম, দিবো আর হয়ে যাবে তাতো বুঝলাম। কিন্তু দিবোটা কি! তোমার মাথা!
.
.
শান্ত ভাইয়া কিছু বলার আগে শুভ্র ভাইয়া কিচেনে এসে ডিম উল্টিয়ে দিলো! শান্ত ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে রাগী গলায় বলল,
– যখন পারিস না তখন কিচেনে এসেছিস কেন! আর তুই! (আমার দিকে তাকিয়ে) তোর কিছু লাগলে আমাকে বলবি! অন্যদের জ্বালানোর প্রয়োজন নেই!
.
.
আমি না বুঝার ভাব করে বললাম,
– আপনাকে বলা আর শান্ত ভাইয়াকে বলা একই তো হলো! দুজনেই তো আমার ভাই, তাই নয় কি!
.
.
শুভ্র ভাইয়া রাগী গলায় বলল,
– আমি তোর কোন মার পেটের ভাই যে খালি ভাই ভাই করিস!
.
.
– কার আবার! আমার!
.
.
পিছন থেকে মামিমণি এগিয়ে এসে বললো! শুভ্র ভাইয়া মামিমণির দিকে তাকাতেই মামিমণি বলল,
– আমিও তো ওর মা, তাই না?
.
.
আমি খুশিতে গদগদ হয়ে বললাম,
– একদম!
.
.
শুভ্র ভাইয়া কিচেন থেকে যেতে যেতে বলল,
– মা হতে মন চাইলে অন্য ভাবে হোন! কিন্তু এই ভাবে আমি কিছুতেই মেনে নিবো না!
.
.
মামিমণি গলা উঁচু করে বলল,
– তুই রাজি হলে সব ভাবেই হতে পারি! আমার সমস্যা নেই!
.
.
শুভ্র ভাইয়া কিচেনের বাইরে থেকে বলল,
– আমি কি মানা করেছি নাকি! হতে চাইলে হোন!
.
.
মামিমণি একটা রহস্যময় হাসি দিলো! যা আমাকে জানান দিচ্ছে সামনে কিছু একটা হতে চলছে!
.
.
জরুরি তলবে বসে আছি। জরুরি তলবের বক্তা হলেন আমার মা। শ্রোতা হিসেবে থাকছি আমি, শান্ত ভাইয়া, শুভ্র ভাইয়া, মামিমণি, ফুপ্পি আর নিধিপি! সোফায় বসে বসে ঝিমুচ্ছি আর ভাবছি কি হতে পারে! কিছুক্ষণ নিরবতা পালন করার পর আম্মু বলল,
– আপনাদের সবাইকে এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার জন্য ডাকানো হয়েছে।
.
.
সবাই মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনছে! এতোই মনোযোগ দিয়ে শুনছে যে কেউ যে প্রশ্ন করবে যে কি কারণ তা আর করা হলো না। কেউ প্রশ্ন করছে না দেখে আম্মু নিজেই বলল,
– আর কথাটা হলো আরোহীর বিয়ে!
.
.
কথাটা কানে যেতেই চোখ বড় করে তাকালাম। বিয়ে! তাও আবার আমার! কিন্তু কিভাবে কি!!
.
.
Continue………………….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে