লাভ টর্চার❤ Part-02 | Bangla Romantic love story

0
6812

#লাভ_টর্চার❤
#Part-2
#Nusrat_Jahan_Abida
.
.
ডাইনিং টেবিলে বসে শুভ্র ভাইয়াকে লক্ষ্য করে যাচ্ছি। তিনি যে বেশ রেগে আছে তা ভালোই বুঝতে পারছি। এই মুহুর্তে মুরগীর হাড়ের জায়গায় যদি আমি থাকতাম তাহলে তিনি বেশ মজা করেই চাবিয়ে চলতেন তা বেশ ভালোভাবেই টের পাচ্ছি। এসব অদ্ভুত ধরনের চিন্তা ভাবনা চালাচ্ছি এমন সময় আম্মু এসে বলল,
– কাজ কাম তো করিস না, একটু পানিটা যে ঢেলে দিবি টাও করিস না।
.
.
আম্মুর কথায় শুভ্র ভাইয়া চোখ তুলে তাকালো। কথাটা হয়তো তার বেশ পছন্দ হয়েছে। সে এখন অপেক্ষা করছে কবে আমি তার গ্লাসে পানি ঢেলে দিবো। কিন্তু আমি তো আমিই! তার মাথায় পানি ঢালার কথা হলে তাও মানা যেত, কিন্তু গ্লাসে পানি ঢালার বিষয়ে আমার বেশ অনীহা। তাই শুভ্র ভাইয়ার চিন্তা ভাবনায় পানি ঢেলে বললাম,
– জামাই বাসায় গেলে তো কাজ করতেই হবে! শুধু শুধু ভাইয়ের পিছনে কষ্ট করে কি লাভ!
.
.
আমার কথা শুনে শুভ্র ভাইয়া কাশতে লাগলো। আম্মু পানি এগিয়ে দিতেই এক ঢোকে পুরো গ্লাস শেষ করে আমার দিকে তাকালো। আম্মুও আমার কথায় ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছে। নিজেকে সামলে বললেন,
– তোর মাথায় বিয়ে করার ভূত কবে থেকে আসলো!
.
.
আমি একটু নড়েচড়ে বসলাম। এরকম কিছু হবে তা আগে থেকেই জানতাম। তাই স্বাভাবিক ভাবেই বললাম,
– প্রতিবার তো আপনিই বলেন তাই ভাবলাম, লেটস ট্রাই সামথিং নিউ!
.
.
কথাটা বলে ডাইনিং থেকে উঠে নিজের রুমের দিকে হাঁটা ধরলাম। পিছনে না তাকিয়েও বুঝতে পারছি যে কেউ আটশ আশি ভোল্টের ঝাটকা খেয়েছে। এখন তো কেবল শুরু আগে দেখো হোতা হে কেয়া! মুচকি হেসে নিজের রুমে ঢুকে দরজা দিয়ে উঁকি দিলাম। শুভ্র ভাইয়া এদিকে তাকাতেই মাথা ভিতরে নিয়ে নিলাম। আল্লাহ! একটুর জন্য বেঁচে গেছি!
.
.
শুভ্র ভাইয়া যেতেই রুমে থেকে বেরিয়ে এলাম। ড্রয়িং রুমে বসতেই আম্মু বলল,
– তুই এলওয়েজ ছেলেটার সাথে এমন করিস কেন বল তো! কবে ওর সাথে ভালো বিহেভ করবি!
.
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

– উনি যখন আমার সাথে ভালো বিহেভ করবেন তখন আমিও উনার সাথে ভালো বিহেভ করবো।
.
.
বসে বসে মোবাইল টিপতে টিপতে আনমনে কথাটা বললাম। আম্মু ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করলেন,
– ঐ তোর সাথে কি এমন খারাপ বিহেভ করলো!
.
.
আম্মুর কথায় টনক নড়লো। কি থেকে কি বলে ফেলি নিজেও বুঝি না! নিজেকে স্বাভাবিক করে বললাম,
– আপনি তো উনার কোন দোষ দেখবেনই না! সব দোষ শুধু আমার আর আমার বাপের, তাই না?
.
.
আমার কথাকে আম্মু পাত্তা না দিয়ে নিজের সাথে লেগে পড়লো। আমিও আমার কাজ মানে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। দুজনেই যখন নিজেদের কাজে ব্যস্ত তখন হঠাৎ করে কল বেজে উঠল।যদিওআমার মোবাইলে কল এসেছে, তবুও কিছুটা হরর হরর ফিল দিতে হয়, কারণ কলটা আমার বেস্টু, মেধার! আড়চোখে আম্মুর দিকে তাকালাম। আম্মুও আড়চোখে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। না, এই মুহুর্তে উঠে নিজের রুমে যাওয়া সম্ভব না! কল না ধরলেও সন্দেহ করবে! তাই না পেরে কলটা রিসিভ করলাম। কলটা কানে নিতে মেধা গদগদ কন্ঠে বলল,
– দোস্ত, তোর ক্রাশের খবর কি!
.
.
আমার খবর না জিজ্ঞেস করে আমার ক্রাশের খবর নেয়! বাহ! কি বেস্টু বানিয়েছি! সাব্বাস, আরোহী!
.
.
আম্মুর দিকে তাকিয়ে দেখলাম আম্মু কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমার দিকেই তাকিয়ে আছেন। আল্লাহ! এতো সন্দেহ তো কেউ খুন করলেও করে না!
.
.
হালকা কেশে গলা পরিষ্কার করে বললাম,
– ওহ, ক্লাস আছে!
– ঐ কানে বেশ শুনিস নাকি! আর ভূতের মুখে রাম রাম কিভাবে! পাশে কি কেউ আছে নাকি! (মেধা)
.
.
আমি আম্মুর দিকে তাকালাম। আড়চোখে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে। চোখে চোখ পড়তেই বললাম,
– আম্মু, কালকে মফিজ স্যারের এক্সট্রা ক্লাস আছে, যাবো?
.
.
আসলে মফিজ স্যার নামে কোন স্যারই নেই! ঢোপ মারলাম! আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
– তোর মর্জি! গেলে যাবি না গেলে নাই!
– আমার আম্মুটা কতো ভালো!
– যা, মাখন মারতে হবে না!
.
.
মোবাইল কানে নিতেই মেধা বলল,
– তো আন্টি ছিলো পাশে!! (মেধা)
– কোনটা পারিস না এটা তো বল!
– আবার কি হলো! (মেধা)
– কতো অধ্যায়ের? আচ্ছা, রুমে গিয়ে দেখে কল দিচ্ছি, কেমন?
– তুই-ও পারিস! যা, রুমে গিয়ে কল করিস! (মেধা)
.
.
কল কেটে আম্মুকে বললাম,
– আম্মু, আমি রুমে যাচ্ছি!
.
.
কথাটা বলে আর অপেক্ষা করলাম না। দ্রুত পায়ে নিজের রুমে গিয়ে দরজা লক করে দিলাম। মেধাকে কল করতেই ও রিসিভ করলো। ওকে কিছু বলতে না দিয়েই বললাম,
– ঐ ছেমড়ি! এখন যদি অন্য কেউ কল রিসিভ করতো তাহলে কি হতো জানিস!
.
.
আমি রাগী স্বরে কথাটা বললেও মেধা শান্তভাবে বলল,
– কিছু তো না! কারণ, আমি নিঃশ্বাস শুনেই বুঝে ফেলি যে এটা তুই।
.
.
আমি ভ্রু কুচকে বললাম,
– কেন রে! আমি কি স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে আলাদা ভাবে নিঃশ্বাস নিই নাকি!
.
.
মেধা আবেগাপ্লুত কন্ঠে বলল,
– এটা ভালবাসা, দোস্ত! ভালবাসা!
.
.
এভাবেই রেগে আছি ওর কথায় রাগ আরো বেড়ে যাচ্ছে। রাগী ভাটা বজায় রেখে বললাম,
– দেখ, দোস্ত! তোর আজিরা কথা শুনার জন্য আমার টাইম নেই! রাখি!
.
.
মেধা বাধা দেওয়ার কন্ঠে বলল,
– আরে! আরে! কথাটা তো শোন! তোর ক্রাশকে তোর সাথে মেলানোর প্লান করেছি!
.
.
আমি ভ্রু কুচকে বললাম,
– কি প্লান!
– হ্যাঁ, হ্যাঁ, এখন তো আমার কথা তোর মনে পড়বে! (মেধা)
– বলবি নাকি কল কাটবো!
– বলছি তো! এমন করিস কেন! (মেধা)
– বল!
– কালকে তোদের বাসায় শান্ত ভাইয়া আসবে, তাই না?
.
.
শান্ত ভাইয়া সম্পর্কে আমার ফুফাতো ভাই। নাম শান্ত হলেও প্রাণিটা একদম অশান্ত। বলে না, কেমন একটা চেহারা নাম রাখছে পেয়ারা। তার ক্ষেত্রেও তাই। অজানা কারণে আমার সাথে তার সাপে নেউলে সম্পর্ক, যাকে সবাই ভাব মনে করার ভুল করে।
.
.
আমি ভ্রু কুচকে বললাম,
– হ্যাঁ, তো!
.
.
মেধা উৎসাহের জোয়ারে ভেসে বলল, তাহলে তো হলোই কাজ। শুভ্র ভাইয়ার সামনে শান্ত ভাইয়ার সাথে ভাব জমাবি!
.
.
ভাব, তাও শান্ত ভাইয়ার সাথে! ভ্রু কুচকে বললাম,
– দুনিয়াতে আর মানুষ পেলি না!
– দেখ, তোর কিছু করতে হবে না। তোদের দেখলেই মনে হয় বেশ ভালোই ভাব আছে! (মেধা)
– নাইস জোকস!
– দেখ, এদিকে তুই ভাব জমাবি আর ঐদিকে শুভ্র ভাইয়া জ্বলে পুড়ে কালা ভুনা হবে (মেধা)
– বুঝলাম!
– দোস্ত, শোন না! (মেধা)
– বল!
– ঐদিন রিভিউ দেখলাম কালা ভুনা পিজ্জা কিন্তু অনেক ইয়াম্মি! (মেধা)
– তো?
– তোর বিয়েতে কালা ভুনা পিজ্জা ট্রিট চাই (মেধা)
– গাও আভি বাসা নেহি, ওর লুটনে ওয়ালা হাজির!
– এভাবে বলতে পারলি! (মেধা)
– যা ভাগ! ফোন রাখ!
.
.
জীবনে আর কত কি যে করতে হবে আল্লাহ মালুম! শেষমেশ শান্ত ভাইয়ার সাথে ভাব! যাই হোক, এখন কথা হচ্ছে, কাল থেকে শুরু হবে #লাভ_টর্চারের প্রথম অধ্যায়….. #Jealousy_Game!
.
.
Continue…………………

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে