রৌদ্দুর তোমার নামে পর্ব-০৭

0
2401

#রৌদ্দুর_তোমার_নামে🍂
#কায়ানাত_আফরিন(মাইশা)
পর্ব:৭(বোনাস পার্ট)

মাইশার গলায় মুখ ডুবিয়ে ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলছে আয়াত। ৩ মিনিট , ৪ মিনিট , ৫ মিনিট পার হয়ে গেলো কিন্তু আয়াতের সেদিকে কোনো হুশ নেই। নেশাক্ত কন্ঠে বলে ওঠে সে; ” মাইশুপাখি ?”। মাইশার বুকে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে এরকম কন্ঠ পেয়ে। আয়াতের কথা বলার সময় তার ঠোঁটযুগল মাইশার গলা স্পর্শ করার জন্য অদ্ভুদ অনুভূতিতে ছেয়ে যাচ্ছে তার হৃদয়। কেমন যেন মাতাল করা অনুভূতি আছে আয়াতের কণ্ঠস্বরে।
.
”আজ তো মনে হয় আমাকে পাগল বানিয়েই ছাড়বে।”
.
” আয়াত…..”
.
”হুসসস(মাইশার মুখের কথা কেড়ে নেয় আয়াত) No more word my mystribird ! তোমাকে আমি অনেকবার বলেছি এভাবে ওড়না ছেড়ে ঘুরে না বেড়াতে। আমি চাই না আমি বা অন্যকেউ তোমায় এভাবে দেখুক।”
.
মাইশা নিশ্চুপ হয়ে চোখ বন্ধ করে আছে যাতে আয়াতের চোখে চোখ না পড়ে। এক অন্যরকম মাতালতা আছে তার চোখে । যা কিছুতেই মাইশা উপেক্ষা করতে পারবে না । আয়াত তা দেখে বাঁকা হাসে । তারপর ফিসফিস করে বলে ওঠে ,
.
” তোমার গলার নিচে মাঝ বরাবর যে লাল তিলটা আছে না সত্যি পাগল করে দেয় আমায় । তাই তোমায় বারবার বলি ছোট গলার জামা পড়তে যাতে ওই তিলটা কেউ না দেখতে পারে even আমিও না”
.
এ কথা বলেই দূরে সরে আসে আয়াত। মাইশা এখনো চোখ বন্ধ করে দেয়ালের সাথে মিশে দাঁড়িয়ে আছে। নিজের রুমে ছিলো বলে ওড়না পড়ে নি সে। কিন্ত হুট করে আয়াত আসাতেই এরূপ পরিস্থিতির স্বীকার হলো সে । চোখটা খুলে আয়াতের দিকে তাকাতেই দেখে আয়াত ঠোঁট কামড়ে নিজের হাসি আটকানোর চেস্টায় আছে।
কিছুক্ষণ আগে আয়াতের লাগামহীন কথাগুলোর কথা ভাবতেই লজ্জায় লাল, নীল , বেগুণি হয়ে যাচ্ছে সে। টেবিল থেকে ওড়না নিয়ে কটাক্ষ চোখে আয়াতকে বলতে থাকে,
.
” আমি তো আমার রুমেই ওড়না ছাড়া ছিলাম তো তুমি কি হিসেবে এমন করলা?”
.
” কি করলাম?”(অবুঝের মতো ভান ধরে)
.
”(চিল্লিয়ে) এই যে আমার গলায়……”
নিজের গলার স্বর মিহিয়ে ফেলে সে । আর ভাবতে থাকে ,” এই আয়াতটা আসলেই অনেক লুচু……”
মাইশার এমন অবস্থা দেখে ফিক করে হেসে দেয় আয়াত। মাইশা ভাবেশহীনভাবে তাকিয়ে আছে আয়াতের হাসির দিকে……এই হাসি বারবার তার সামনে আদ্রাফকে তুলে ধরে।
.
” ও হ্যালো ম্যাম……আমার মতো অবলা ছেলের দিকে এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?”
.
” তুমি…..অবলা?”(অবাক কন্ঠে বলে মাইশা)
.
” তো এখানে কি আর কোনো ছেলে আছে নাকি ?by the way এভাবে তাকিয়ে থেকো না গো ….বুকে লাগে!”
মাইশা ভাবছে যে এই আয়াত পাগল-টাগল হয়ে গেলো নাকি ? এভাবে react করছে কেনো?
,
ড‍্রয়িংরুমে সবাই বসে আছে মাইশার মেডিক্যাল রিপোর্টস দেখার জন্য। রহমান সাহেব (মাইশার বাবা) মনোযোগ দিয়ে রিপোর্টসগুলো চেক করছে। মাইশা চুপচাপ বসে তা দেখছে। এমনভাবে তার বাবা কখনো স্কুলের progress report টাও দেখেনি যেভাবে এখন ওর medical report দেখছে। আয়াতের দিকে তাকাতেই মাইশা দেখে আয়াতও same reaction দিয়ে বসে আছে ।
রিপোর্টটা রেখে রহমান সাহেব হতাশ চোখে তাকায় মাইশার দিকে…..

”এই অবস্থা কেন হেল্থের? ভিটামিন , প্রোটিন সব কিছুর অভাব ; প্রেশার লো….কেন? আম্মুকি বাসায় খেতে দেয় না?”
.
মাইশা কিছু বলে না।
.
” আমি তো সবসময়ই বলি মাইশার আব্বু তোমার মেয়ের অঘটনগুলো ,,… … তুমি তো কিছুই বলতে না। এখন দেখসো?”
,
রহমান সাহেব কিছু একটা ভাবেন । তারপর বলে ওঠে ,
” আয়াত?”
.
” জ্বী খালুজান?”
.
” এখন থেকে ওকে ভার্সিটিতে তুমি দিয়ে আসবে and তুমি নিয়ে আসবে । তোমার অফিস যেতে এখনো আরও ৩ মাস বাকি। তাই তোমাকে ওর দায়িত্বটা দিলাম। আড্ডাবাজি , friends এগুলো দিয়ে ওর পড়াশুনা তো লাটে উঠেছেই এখন আবার health নিয়েও খামখেয়ালি শুরু হয়েছে ! ওর পড়াশুনাটাও তোমার উপর ছাড়লাম…..”
.
মাইশা করুণ চোখে তার বাবার দিকে তাকিয়ে আছে। আয়াত সবার সামনে innocent থাকলেও ভিতর ভিতর যে লুঙ্গি ডান্স করছে তা ভালোকরেই জানে সে। মনে মনে একটা কথাই ভাবছে…..
.
” বাবা লুচু বাঘের সামনে একটা নিরীহ হরিণকে ফেলে দিলা তুমি।”
.
#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে