মেঘের আড়ালে ২ পর্ব-০৩

0
1086

#মেঘের_আড়ালে২(ফিরে আসা)
#পর্ব_০৩
#লেখিকাঃফাতেমা_জোহরা_নাভিলা

০৫.
রাতে আর কোন ভাবেই আমার চোখে ঘুম দেখা মিললো না ঠিক করে, বলি হবে কি করে,,,,, এতো অতিরিক্ত মাএরায় হাই বোল্ড এর মাথায় চাপ নিয়ে কি শান্তিতে ঘুমের সমুদ্র পারি দেওয়া যায় অাদৌ।।

একে তো উগন্ডারিয়ান বদ প্রেসিডেন্ট এর অতি হাই লেভেল এর টেনশনের গরম গরম চাপ উড়ি উড়ি করে রটে চলছে মনে। দ্বিতীয় তো যমের আলতা প্রো মেক্স বাপের বাপ অতি সম্মানী ভদ্র লোক হাই প্রেশার এর নানা আইসিটি বাবাজিকা এক্সাম। ,,,,একদিনেই যদি এমন দেড় ইঞ্চি ফুটা কপালে গুরুদশা রেডিমেড দুই বাশঁ শনি,,, রাহু এক্কেবারে হক্কাল হক্কাল গরম গরম রেডি হয়ে থাকে এই মাসুম বাচ্চার জন্য,,,,তাহলে কি এই জীবনে আর সুস্থ থাকা সম্ভব ।।।।

অলস ভঙিতে সামনে দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাতটা পাঁচ বাজে। এক্সাম সাড়ে নয়টায় মানে হাতে এখনো ঠিক ঠাক চিন্তা করার জন্য আড়াই ঘন্টা বাকী আছে। নূররেএএ (খাট থেকে উঠে হাটতে হাটতে) এই ছোট জীবনে নাতি পুতিদের বিয়া সাদি তে উড়াধুরা ভাবে লুঙ্গি কাপাল ডান্সে নাচতে মন চাইলে,,,,আর নিজের ওয়য় কি লুতুপুতু কিউট ক্রিকেট টিম করতে চাইলে, আর তাদের বাবাকে প্রান মন দিয়ে দেখতে চাইলে,,, সুস্থসবল ভাবে বাসায় বসে বসে আমার গুনোধর টাকলু বাবা আম্মাজানের দ্যা গ্রেট আমাজন বাসিন্দার ঝগড়াফসাদ দেখতে হলে ও তোকে আজ যে করে হোক বাচঁতে হবেই।।। এই অভিযান নূরের অভিযান।।।।। মাথা ঠিক রাখার জন্য আর ঘুমন্ত আইডিয়া জাগ্রত করার জন্য এখন এইমূহুতে প্রয়োজন এক কাপ গরম গরম কড়া চা,,,,

ব্যালকনি দাঁড়িয়ে মিনি জগিং করছি আর চা খাচ্ছি সাথে ভাবছি,,, আজ যদি কলেজে পিটেস্ট নামক পরীহ্মা না থাকতো কপালে, তাহলে মাথা এতো হিটার না করে কলেজ অনায়াসে মিস করা যেতো, কি আর করা নসিব বলে কথা আমার,,, কিন্তু এখন যেহেতু,,,,

আরে আরে রফিক ভাই যে,,,

আরে আরফাজ,, ,কেমন আছো।।

ভালো, আপনি কেমন আছেন,এতো সকাল সকাল যে জগিং এ গিয়ে ছিলেন নিশ্চয় ভাইজান ।।মুচকি হেসে।।।

দূর মিয়া কি যে বলো না তুমি, এই জগিং ফগিং আমার দ্বারা হবে না।বউ আমার বাড়িতে নাই, চ্রটগ্রাম গ্রামে বোনের বাড়ি থেকে আজ ফিরছে, সেই সুযোগে সৎ ব্যবহার করে আক্কাঁস এর দোকান থেকে সকাল সকাল গিয়ে এক্কেবারে গরম গরম রুচি আর আলুর দোম নিয়ে আসলাম। জীবন যেহেতু একটাই এতো বেঁচে সেঁচে অখাদ্য খাবার খেয়ে কি লাভ বলো।।।চলো এক সাথে জমে আজ আমার সাথে নাস্তা করবা।।। লুচি আর আলুদোম দিয়া।।।। আহহহহ

আরেএএ ভাহহহ হোয়াট এ টেনে টুনে আইডিয়া,আব্বু।।। মাথা হাত দিয়ে।।।।।।।।

অরে আমার আব্বুরে আমি যে তোমার আসল মেয়ে তা কোনো সন্দেহ নেই।।। কি চিন্তা শক্তি আমাদের দুইজনের আহহহ( ব্যালকনি গ্রিল ধরে নিচে তাকিয়ে বলল নূর)

০৬.
সবেমাত্র এক্সাম দিয়ে কলেজে মাঠে পেরিয়ে বের হচ্ছে নূর মুখে তার এক রহস্যময় হাসি ঝিলিক । তার পাশে আয়াত নূরের সাথে হাটছে আর কিছুক্ষন পর পর নূরের মেখের দিকে তাকিয়ে হাবভাব বুঝার চেষ্টা করছে আজ অশান্ত মাইয়া এতো শান্ত যে।।।

তাহলে কি সংকেত বুঝলি।।।নূর।

কিসের!!!

আমার মুখের (আয়াত এর দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞাস করল)

বলি,তোর কি ভয় ডয় নাই বইন।

কিসের!!! চিন্তিতো সুরে।।

তোর শনির,রাহু থাকতে আর কিছু লাগে তোর।।।

“নূর কিছু বলতে নিবে তখনই তাসফি টনেডো গতিতে দৌড়ে আসলো ওদের সামনে”।।।

দোস্ত।।।হাপিয়ে।।। জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিয়ে।।

কিরে ছেঁকা খাওয়া বেকা হওয়া ১০২ নম্বর প্রেত্নির বীর পুরুষ হাপানি রোগীদের মতো হাপাচ্ছিস কেন।।(নূর)

আবার কি ছেঁকা টেকা খাইয়া আইলি তাসফি,,, মানইজ্জত কি আর কিছু বাকী রাখবিনা আমাগো শালা।। (আয়াত)

অই শাঁকচুন্নিরা চুপ থাকবি তোরা,, যাদের জন্য করি চোর তারাই কই আমায় চোর চোর।। আল্লাহ কি কপাল আমার।।।(তাসফি)

ছি তাসফি ছিহ তুই শেষমেস চুরি ডাকাতি ভয়াংকর কাজে নেমে পরলি।। আল্লা কি সাংঘাতিক ব্যাপার স্যাপার, ছেঁকা খাইয়া মার্কেট পাসনা বলে শেষমেস ।।। মুখে দুইহাত দিয়ে তোবা কেটে বলল নূর।।

অই চুপ,,,, ফাজিল মাইয়া।।।বলি মুখে যে এতো ভলি ফুটছে তা বাহিরে গেলে অাদৌ মুখে থাকবো তো।। আসার সময় দেখে আসলাম,,, তোর যমরাজ,,,,,, কলেজের বাহিরে মামা টং এর দোকানে বসে চা খাচ্ছে আর তোর জন্য কোনো খাড়া বাশ টাশ মনে রেডি করছে।।।

কি বলছিস তাসফি ঢোক গিলে।। দোস্ত এখন কি করবি তুই,,,(আয়াত)

কি আর করবো,এখানে সারাদিন তো আর থাকা যাবে না বাহিরে তো যেতেই হবে,,, চল কিছু হবে না,,,আজ এর একটা বিহিত আমাকে করতেই হবে।।।। রেগে।।।

কক ক ক কি তা ককরবি শুনি,,,, তোঁতলি বলল আয়াত।।।

জানি না কিছু একটা তো করবো। তুই ভয় পাচ্ছিস কেন বেকুব।। ফোনে কাউকে ফোন করতে করতে।।।

দোস্ত কারে ফোন দেস।।।তাসফি।

হুসসসসসস,,,,,কই তুমি,,, আর কতোক্ষন,,,,আচ্ছা ঠিক আছে আমি রাখছি। আল্লা হাফেজ।

চল দাঁড়িয়ে আছিস কেন। বলে নূর হাটা ধরলো সামনে।।।

০৭.

বুঝিস তাসফি,,, এইই পড়া শুনা করে কি লাভ,,আর ক্লাসে এক সময় টপার হয়ে ও কি লাভ, হুদাই টাইপ পাস যতসব।।।। কিছুটা উচ্চশুরে বলল নূর।।।

নূরের কথায় ইয়াদ চায়ের দোকানে বেঞ্চি থেকে গুরে তাকালো তার দিকে কিছুটা কপাল কুঁচকে,,,তার কথা বুঝার চেষ্টা করছে,,,।।।

কি বলছিস এইসব,,, অতি চাপে মাথা গেসে তোর। ফিসফিস করে বলল তাসফি।।

ঠিকই তো বলছি,,ভুল কি বললাম বল, যদি এতো পড়া শুনা করে শেষমেস আবারা অল্লি গল্লি টাইপ পোলাপাইন দের মতো চাল্লা ফাল্লা নিয়ে গুরে ফিরবি, আর মামার দোকানে আজ থেকে ঠিক পাঁচ বছর পর এসে বেঞ্চিতে বসে পায়ের উপর পা তুলে চা খাইবি, তাইলে এতো কষ্ট করে ডিগ্রি অর্জন করে কি লাভ তোর। পড়ালেখা বাদ দিয়া দোস্ত,,, মামা ঠিক পাশের অই দোকানটা ভাড়া নেয়,,,,(হাত দিয়ে ইশারা দিয়ে) আর চায়ের দোকান দে নিজের, যদি পরে খালি না পাস।।। ইয়াদ এর দিকে তাকিয়ে তিক্ষো নজরে কথাগুলো বলল নূর ,,,,,

সেকেন্ড এর মধ্যে ইয়াদ এর হাতে থাকা চায়ের কাচের ছোট গ্লাস হাত মুঠো দ্বারা ঠুসসসসস করে ভেঙে গেলো। তার আওয়াজে ইয়াদ পাশে থাকা দুই ফ্রেন্ড আর তাসফি আয়াত এর জান যায় যায় অবস্তা। কিন্তু নূর খুব রিলাক্স ভাবে দাঁড়িয়ে আছে।। তার হাবভাব যাহা বলিছি এক্কেবারে ঠিক কইসি,,হুহ।।।

রাগে ইয়াদ এর মুখে লাল লাভা ধারন করেছে ইতিমধ্যে ।। হাত মুঠো করে চোখ বুঝে রাগ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে কোবরার মতো অতি ফুসঁফুসঁ করে,,,

ইয়াদকে রাগতে দেখে নূর এক গাল প্রশান্তি হাসি দিলো,,,, ইয়াদ নূরের হাসি দেখে আরো চোয়াল শক্ত করে রেগে বেঞ্চিতে হাথি দিয়ে সামনে আসতেই,,,,,,
চলবে,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে