মেঘের আড়ালে পর্ব-০৮

0
2166

#মেঘের আড়ালে💞
#পর্ব___০৮
#লেখিকাঃফাতেমা জোহরা নাভিলা

“মামনি সত্যি গুলো এতো তিত্ত হয় কেন?? বলতে পারবে”!!! কান্নামিশিতো সুরে।।।।।।

বাবু তুই কি পারবিনা পুড়ানো ক্ষত গুলো ভুলে সামনে আগাতে!!(নিরবে কান্না করে)পারবি না নূরকে ভালোবাসতে?? নূরের মায়ায় পরে কি নতুন করে কি বাচাঁ যায় না।। (দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে)

.

চুপ করে আছিস কেন??(মাথায় হাত বুলিয়ে) দেখ বাবু আমি তোকে বলছিনা,,,,,, তুই সব ভুলে যা,,কিছু কিছু ক্ষত জীবনে এমন গম্ভীর দাগ কেটে যায় যা চাইলেও ভুলা অাদৌ সম্ভব না।। তাই বলে কি পুরো জীবন তুই আধারে ধুয়াসা কাটিয়ে দিবি এভাবে?? নূরকে কি মানা যায় না,,,, যায় না অর সাথে নতুন করে পথ চলা নতুন করে বাচাঁ।।।আমি বলছিনা তুই সাদিয়াকে ভুলে যায়,, সাদিয়ার যায়গা নূরকে দেয়,,,,,, নূরকে নূর এর মতো করে যায়গা দেয়। জানিস তো!! আল্লা যা করে কোনো ভালো কারন বুঝেই করে হয়তো সাদিয়া তোর কপালে লিখা ছিলো না,,,তোর কপালে নূরই ছিলো।। কিস্মাত যার সাথে লিখা থাকে যেতোই ঝড় বাধা আসুক না কেনো তার সাথেই এসে জুড়ে যায়। (মাথায় হাত বুলিয়ে) একটা কথা জিজ্ঞাস করবো বলবি??? তুই কি নূর নিয়ে কিছু অনুভব করিস??চুপ করে থাকিসনা।।।

.

হয়তো,,, হয়তো না!!!

.

হয়তো!!! এই হয়তো ঘোরে আটকে রাখিস না নিজেকে ।।। ওকে নিয়ে যদি কিছু নাইই ভাবতি কিছু নাই অনুভব করতি, তাহলে সেইদিন অর সামান্য দুই ঘন্টায় গায়ের হওয়া তুই এতো ঘাবড়ে গিয়েছিলিস কেন???

.

ভয়,,,,একজনকে হারিয়েছি ভেঙছি গুরো গুরো হয়েছি।আবার কাউকে নতুন করে হারার সাহস নেই আমার!!! (ঘুমো ঘুমো জড়িতো কণ্ঠে)

.

দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে।।।।।। ন নননূর মা মমমনি তুই এখানেয় কিই করছিস!! কিছুটা ভয়ে অবাক চাহনিতে।।।

.

হুসসস আ আ আস্তে উনি ঘুমাচ্ছেন মামনি।। কাপা কাপা আওয়াজে।।।।

১৮.
ড্রয়িংরুমে বসে আছি আমি মাথা গুরছে আমার শত শত প্রশ্ন যার উত্তর আদৌ জানা নেই, জানতে পারবো কিনা তাও জানা নেই।।।পাশে বসে আছে মামনি।।। নিরবে চোখের জল ফেলছে।।।।পুরো রুম ঝুরে পিনপিন নিরবতা ।।।। হঠাৎ নিরবতা ভেঙে….

.

সত্যি গুলো বড্ড তিত্ত হয় জানিস মামনি??নিচের দিকে তাকিয়ে।। সেই সব সত্যি জোড়ে আমাদের জীবনে রঙ হারিয়ে কলো কুটকুট আধার হয়ে যায়।। বদলে যায় অনেক কিছু,,, অনেক সময় কিছু সেইই সত্যি জোড়ে সম্পর্ক ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়,,,, সত্যি যে সচ্ছল আয়নার মতো।।।কান্নামিশিতো কাতর সুরে।।।।

.

মামনির কথা শুনে কিছুক্ষণ থ হয়ে বসে থেকে, চট করে সোফা থেকে উঠে মামনি পায়ের সামনে এসে বসে হাত মুঠো শক্ত করে ধরে।।।(মিনতির সুরে) মামনি উনার এমন কি হয়েছে আজ অতন্ত্য আমাকে সবটা বলো???কিছু লুকিয় ও না!! কি এমন সত্যি আছে যেটা সম্পর্ক ভাঙার ক্ষমতা রাখে??? আর উনার মধ্যে এতো কিসের অস্থিরতা উদাসীনতা,,,, (থেমে থেমে)কালকের ইয়াদ এর সাথে আজকে ইয়াদের এতো কিসের পার্থক্য??? উনার সাথে এমন কি হয়েছিলো যে উনি এতো পরিবর্তন হয়েছে আজ অতন্ত্য সবটা আমাকে বলো।।।।। প্লিজ্জজ।।।।

.
দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে।।।।।


সময়টা ছিলো ২০১৫ ইয়াদ অস্ট্রেলিয়া থেকে সবে মাএরো গ্রেজুয়েশন কমপিলিট করে এসেছে।।। দিনগুলো খুব ভালো কাটছিলো আমাদের হাসি মজায় । ইয়াদ আগে খুব চঞ্চল ছিলো জানিস মামনি , ইয়াদ এর দুষ্টু মিতে পুরো বাড়ি তখন গমগম হয়ে থাকতো অর দ্বারা চুপ থাকা স্থির থাকা সম্ভব ছিলোনা (মলিন হেসে)। দেশে আসার দুইদিন পরই ছেলে বাবা কোম্পানি জয়েনিং করে, সবে মাএরো একা হাতে সব সামলাতে শুরু করেছিলো। খুব ব্যস্তায় অর দিনগুলো যাচ্ছিলো। এর মধ্যে হঠাৎ একদিন ইরা কোচিং থেকে এসে জিদ করে বসে গ্রীষ্মের ছুটি চলছে ওর সব ফ্রেন্ডরা তাদের গ্রামের বাড়ি ঘুরতে গিয়েছে আমাদের তো গ্রামের এর বাড়ি নেই। তাই ও যাবে আমার ছোটবোন নয়ন এর গ্রামের বাড়ি ঘুরতে খুলনা। এক প্রকার বাধ্য হয়ে ইরার জিদে রাজি হতে হয় আমাদের তারপর কিহ রওনা দেই খুলনার উদ্দেশ্য। এর মধ্যে ইয়াদ আবার কন্ডিশন দেই আমরা যে যাব নয়ন যাতে চুল পরিমান জানতে না পারে।নয়ন এর খুব আদরের ছিলো ইয়াদ ও অর খালামনিকে খুব ভোরে গিয়ে চমকিয়ে দিবে একদম তাই। অর কথা অনুযায়ী নয়ন কে আমি কিছু বলিনা। সেইদিন রাত এর বাসে রওনা দেই আমরা খুলনার উদ্দেশ্য ভোর পাঁচটাই গিয়ে পৌছাঁয়। ইয়াদকে এতো বছর পর দেখে নয়ন খুব অবাক হয়ে যায়। ইয়াদকে জড়িয়ে ধরে ও হাউমাউ করে কান্না করে দেয়,,,,,,,,,,

.

আমরা বাহিরে দাঁড়িয়ে ইয়াদ আর নয়ন এর কান্না দেখছিলাম।।।। আমাদের চোখের কোণায় ও পানি ছিলো।।।

.

“এই কি আম্মু তুমি কান্না করছো কেনো??? (চিন্তিতো হয়ে)আর এই যে আপনি ম্রিস্টার হোয়াট ইভার( মুখ ভেঙে) এসেই আমার আম্মুকে এভাবে ইমোশনাল ব্লাকমেইল করছেন কেনো?? এমন কি বলছেন যে আম্মু কান্না করছে???? আর জড়িয়ে ধরার দূর সাহস কেই দিলো আপনাকে??? রাগিতো সুরে।।। সাদু,,,,,,পিছে গুরে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে কেরে,,,,,

.

আরে মামনি তোমরা যে হোয়াট এ প্রেজেন্ট সারপ্রাইজ (অবাক হয়ে)।

.
আবে ডাক্কান মুখতো বান্দ কার।।।। (৩২ বাতি দেখিয়ে) মশা, মাশি, গরু ছাগল, হাতি সবই ঢুকবো তো।।।

.

ইরফাইন্না তুই আর এই জীবনে ভালা আর হইলিনা শালা বদ এর নানা যখনই মুখ খুলবি বাজে বকবি।

.

ইয়াদঃ খালামনি এই গোবরচাকায় পদ্মফুল আসলো কোথায় থেকে। (কাধে হাত দিয়ে ভাবার ভঙিতে)

খালামনিঃ এইইই ইয়াদ একদম না ও কিন্তু রেগে যাবে তারপর শান্ত করার খুব দ্বায় (কান টেনে)। ও সাদিয়া তোর সেই সাদু বুড়ি।

ইয়াদঃ ও ও আমাদের পুচকি আই মিন সাদু বুড়ি অবাক হয়ে।।

“সাদিয়া ইয়াদ এর কথা কিছুটা রাগ হলো কিন্তু সজনে মুখে হাসি রেখা টেনে।।খালামনি তোমরা রেস্ট নেও এখন কতোটা পথ জার্নি করে আসছো।। আমার এখন স্কুলে যেতে হবে না হলে তোমাদের সাথে বসে গল্প করতাম।কি আর করা বলো মেরি আম্মিজান তো আর মিসটিস করতে দিবোনা।।।(অসহায় ফেস করে)

ইয়াদ মাঃ আহারে আমার বাচ্চাঁটা কপালে চুমো দিয়ে।তো কি হইসে তুই আসলেই আমরা সবায় আড্ডা দিবো মামনি।তোকে ছাড়া কি আর আমাদের আড্ডা জমবে।(মুচকি হাসি দিয়ে)

“সাদিয়া ইয়াদ এর দিকে আড়চোখে তাকিয়ে দেখে ইয়াদ অর দিকে কেমন করে জেনো ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। অর চাহনিতে কিছু অস্থির লাগে তাই সেই অইখান থেকে চলে যায়।

.

“সাদিয়া স্কুল যাওয়ার পড়ই বাধে সমস্যা”।।।।ইয়াদ অর খালামনি কে বলে ও সাদিয়াকে বিয়ে করতে চায় আজ এখনি। সবায় ইয়াদ কথা বিষম খায়।।।ইয়াদ এই সব কি বলছে?? সাদিয়া সবে মাএ ক্লাস দশম শ্রেণিতে পড়ে আর বয়স মাএরো ষোল। এখনই বিয়ে কিভাবে,,,,,,,,,

চলবে……….

[ভুলগুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন আসা করি।]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে