মেঘের আড়ালে পর্ব-০৭

0
2118

#মেঘের আড়ালে 💞
#পর্ব__০৭
#লেখিকাঃফাতেমা জোহরা নাভিলা

১৬.
আসলেই সময় চলমান কাউর জন্য অপেহ্মা করে থাকে না, তাইতো কিভাবে এতোগুলো দিন চলে গেলো বুঝতেই পারিনি। দেখতে দেখতে আজ দুই মাস হয়ে গেলো বিয়ে নামক পিরিতে বসেছি। এই দুই মাসে এমন একদিন ও যাইনি ইয়াদ আমার উপরে পড়া নামক অত্যাচার থেকে একচুল রেহাই দিয়েছে। জীবনটাই এখন আমার ত্যানা ত্যানা যবে থেকে এই ইয়াদ নামক সাইকোর বেটার আগমন রটেছে এই ছোট জীবনটায়। এই সব আকাশ কুসুম গম্ভীর চিন্তা করছি কোচিং সেন্টার এর বাহিয়ে দাঁড়িয়ে। মূলত ইয়াদ এর জন্য অপেহ্মা করছি কোচিং সেন্টার বাহিরে মিনিট বিশ তো হবে দাঁড়িয়ে আছি কিন্তু এই মহাশয় আসার কোনো নামই নেই। এখন খুব বিরক্ত লাগছে লাগলেও কিছু করার নেই(দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে)। যতোই দেরি হোক মহাশয় পারমিশন ছাড়া এক চুল ও নড়া নিশেধ আমার আর লড়তে ও চাই না (গালে হাত দিয়ে)। এই তো সেইদিন এর কথা ইয়াদ এর আসতে লেট হচ্ছিলো তাই ভাবলাম আজ হয়তো কাজ এর চাপ বেশী। তাই হয়তো আসবে না আমাকে নিতে এই ভেবে খুশি মনে সামনে হাটা দিলাম কতোদিন হবে এভাবে খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় হাটি না,,,,,,,,, দোস্ত দোস্ত।।।।।।

“পিছে তাকিয়ে দেখি তাসফিন আর আয়াত দাঁড়িয়ে আছে কমোরে দুই হাত দিয়ে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছে আমার দিকে তাকিয়ে।”কি হইচ্ছে।। এভাবে কাকের মতো রাস্তায় তোদের সুরিলা কাকের গলা দিয়া চিল্লাইতাসোস কেন বেয়াদব বদ এর হাড্ডি গুলা, মানুষগো শুনাইতাসোস তোদের দুইটার গলা যে কাকের মতো সুন্দর ।। বাই দ্যা ওয়ে কিছু বলবি?? এভাবে দৌড়িয়ে আসলি যে?

আয়াতঃ আজ তোর ভাইয়া আসেনি নিতে!!(সামনে এসে)

নূরঃ আসলেই তো দেখতেই পারতি,,,, আজ হয়তো কাজের চাপ বেশী তাই আসেনি। তাইতো একা মনের সুখে হেটে হেটে যাচ্ছিলাম বাসায়।

আয়াতঃ গ্রেট,,, তাহলে আমাদের সাথে চল।। কাল তাসফিন এর ব্রেকআপ হইসে সেই সুখে ফুচকা পার্টি দিবো আমাগো ।। এই কিপ্টুসসস শালায়।।(শয়তানি হাসি দিয়ে)

নূরঃ আরেয় বাহহ,,,, তোর দেহি বড় সড় উন্নতি হইসে তাসফিন আমাগো সাথে থেকে।। আর যাই হোক ফুচকারে কি আর না করা যায়, প্রথম ভালোবাসা বলে একটা কথা আছেনা। এখন চল তো এখানে এই তারা খাম্বার মতো না দাঁড়িয়ে থেকে সামনে লেকে পারে জামিল মামার দোকানে গিয়ে বসে জমে খাই আর আড্ডা দেই।।

তাসফিনঃ সেই তো,,,, তোগো লগে থেকে যে আর কি কি দেখতে আর করতে হইবো আমার আল্লা মালুম জানে বইন।(চিন্তিতো সুরে)

নূরঃ এতো টাকা ব্যাংক ব্যালেন্স জমিয়ে করবিটা কি??? যদি সময় থাকতে বেস্টিদের একতু ট্রিট স্রিট না দিতে পারিস। (কাধে চাপট দিয়ে)

“লেকের এসে ফুচকা অডার দিয়ে তিন ফ্রেন্ড মিলে লেকে পারে পা ডুবিয়ে বসে জমে আড্ডা দিচ্ছি। কখন যে বিকেল গিয়ে সন্ধ্যায় নেমে এসেছে বুঝতেই পারিনি। আযানের শব্দে চারপাশে চোখ বুলিয়ে দেখি অন্ধকার নেমে পরেছে। এইইইমা অনেক দেড়ি হয়ে গিয়েছে দোস্ত এখন বাসায় যেতে হবে।।।(উঠতে উঠতে)

তাসফিনঃএই ধারা তোরা এখানে, আমি তোদের রিক্সা করে দিচ্ছি।

নূরঃ হ্যা,দোস্ত জলদি করে একটা রিক্সা কিরে দেয় তো এতো যে লেট হয়ে যাবে বুঝতেই পারিনি।(চিন্তিতো হয়ে)

“বাসায় এসে মামনি আর দাদিমার সাথে কিছুহ্মন কথা বলে রুমে আসলাম ফ্রেশ হতে। ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এসে দেখি নিচে ফ্লোরে আমার ফোন ভেঙে পরে আছে।। এইইইই কি আমার বাচ্চা আমার ফোন ভাঙল কি করে।।চিল্লিয়ে।।।।

“ঝড়ের গতিতে গালে সাথে সাথেই সোজোরে এক থাপ্পড় পরল,,,,,,,,,,,,, আমি কাঁদোকাঁদো হয়ে গালে হাত দিয়ে সামনে তাকিয়ে দেখি ইয়াদ রুক্ষচোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে এই চোখ দিয়ে আমাকে জেনো উনি বর্স্য করে দিবেন খুব ভয়ংকর দেখাচ্ছে উনাকে আমি উনার এই রুপ পরিচিত নয় ,ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে,উনার শার্টে দুইটো বোতাম খুলা চুলগুলো আলোমেলো খুব অস্থির দেখাচ্ছে উনাকে এই অবস্তা কেন উনার। কাঁদোকাঁদো হয়ে আপনি আমাকে মারলেন,,,,,,,,,,,,,,

” এই মেয়ে এইইইই কোথায় ছিলে তুমি, তোমার সমস্যা কি,,,, এতো তিড়িংতিড়িং করো কেন???? এক জায়গায় স্থির থাকতে পারোনা!!!! আর ফোন তোমারে কোন ছাগলে দিসে যদি ফোন এর সঠিক ব্যবহার করতে না জানো।।।।। কতোবার কতোবার তোমাকে ফোন দিসি রিসিভ করোনি কেন????ঝাঁকিয়ে।।।

“গাড়ির হর্নে কল্পনা জল্পনা থেকে দুনিয়াতে ফিরে আসলাম” তাকিয়ে দেখি ইয়াদ কপাল কুঁচকে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।।।

“দিনে জেগে জেগে কি সপ্ন দেখা শুরু করসো??
কতোবার গাড়ির হর্ন দিচ্ছি শুনতে পাওনা।।।। চিল্লিয়ে।। রিডিকুলাস।।।।উঠো। (ধমক এর শুরে)

.

আমি উনার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে চোখ নামিয়ে ঝট করে গাড়িতে উঠে পরলাম। কেন জানি সেইদিন এর পর থেকে উনাকে খুব ভয় করে।

১৭.
রাত ১২টার বেশি বাজতে চললো কিন্তু আমার ম্রিস্টার সাইকো জামাইর কোনো খবর নাই গেলো কই। খুব চিন্তা হচ্ছে এখন, সেই বিকাল পাঁচটাই আমাকে রুমে রেখে গেসে তারপর থেকেই লাপাতা কোনো খবর নেই। এমন তো উনি কখনো করেনি, উনিতো সব সময় বিকালেই বাসায় এসে পরে তাহলে আজ কোথায় গেলো। ড্রয়িংরুমে কমোরে দুই হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে আছি চিন্তায় আমার হাত ঠান্ডা হয়ে আসছে এই শীতে ঘাম ঘাম দিচ্ছে চেহারাতে , পুরো বাড়িতে খুঁজে চললাম উনাকে কোথাও উনি নেই। মনের মধ্যে কেমন জেনো কুঢাক আসছে খুব ভয় করছে উনিকি ঠিক আছে।।।। নাহ এভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে চলবে না,,,, মামনিকে জানাতে হবে সবটা।। যেই ভাবা সেই কাজ মামনির রুমে বড় বড় কদমে দৌড় লাগালাম রুমে কাছে এসেই আমি থ ইয়াদ মামনি কোলে শুয়ে কান্না করছে সাথে মামনিও । উনাকে খুব অস্থির দেখাচ্ছে উনার চোখে পানি কেন!! উনাকে এইভাবে দেখে হঠাৎ বুকে পিনপিন ব্যাথা অনুভব হলো।

“মামনি সত্যি গুলো এতো তিত্ত হয় কেন?? বলতে পারবে!! কান্নামিশিতো সুরে।।।।
চলবে,,,,,,,,
[ভুল গুলো ক্ষমার চোখে দেখবেন আসা করি]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে