বৈধ নাকি অবৈধ পর্ব ২

0
1570

বৈধ নাকি অবৈধ পর্ব ২
জামিয়া পারভীন তানি

নূরা নাইম কে ধমক দিয়ে বললো,
“ ওকে তুই মেইড বললি কেনো? ”
“ আমি ভালো করেই জানি ওর কাপড় ছিলো ওগুলো, ন্যাকামি করে তোমাকে কেনো ডাকতে হবে? আমি কি ওকে খেয়ে ছেড়ে দিবো!”

“ বড় বোনের সামনে কি যা তা বলছিস?”
“ আশ্চর্য তো, আমরা এই যুগেও যদি সামান্য কথা কে ফান হিসেবে না দেখতে পারি তো আধুনিক হয়ে লাভ কি হলো!”
“ আধুনিকতার নামে নোংরামি বন্ধ কর নাইম৷ ”
“ বিদেশে সব কিছু ওপেন, তাই দেশে এসে স্বভাব চেঞ্জ করি কিভাবে বলো?”
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



নূরা ভালো করে ই জানে, নাইমের সাথে তর্ক করা বৃথা। তাই চলে আসে তূবার ঘরে। এসে দেখে তূবা মুখ চেপে কান্না করছে। নূরা তূবার মাথায় হাত দেওয়ার সাথে সাথে ভয়ে কুঁকড়ে যায় তূবা, নূরা কে দেখে শান্ত হয়। নূরা তূবা কে বললো,
“ তুই কি পাগলি নাকি? ও তো তোর সাথে ফাজলামো করেছে। ”
“ আপু আমি কাল সকালে চলে যাবো। উনাকে আমার খুব ভয় করে। ”
“ কেনো?”

তূবা চুপ হয়ে যায়, পরে বললো,
“ উনি বিদেশী, বিদেশী দের আমার ভয় লাগে। ”
“ উফফফ, তোরা সব গুলি ঢংগী। আমাকে তো ভয় পাইয়ে দিয়েছিলি। কাল বিয়ে শেষ হবার পর চলে যাস ওকে। ”
“ তাইই হবে। ”

“ কিরে তূবা তুই কোথায় যাবি বলছিস?” তূবার মামী হটাৎ রুমে ঢুকে, তূবা ও চমকে যায় কথা শুনে।
“ ওহহ মামী, আপনি, আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম! ”
“ যেখানে যাবি যাস, পরশুর আগে যাবিনা কিন্তু। ”
“ কেনো মামী?”
“ নূরার বিয়ে ঘরোয়া ভাবে হবে বলে আত্মীয় ডাকিনি। ওকে একা পাঠাতে পারবোনা। আমি আর তোর মামা যাবো ও-বাড়ি তে। তোকে ঘর যোগাতে হবে আর কি।”
“ কিন্তু নাইম ভাইয়া আছে যে!” তূবার চোখেমুখে বিষ্ময়।
“ ও কাল থাকবেনা বলেছে, ওর বন্ধুর জন্মদিনের পার্টিতে যাবে।”
তূবা মনে মনে ভাবছে, “ জন্মদিন না ছাই, যাবে তো গার্লফ্রেন্ড এর সাথে ডেটে। হুহহহহ!”
মামী কে শান্তনা দিয়ে বললো,
“ আচ্ছা মামী থাকবো।”
“ এই না হলে ভালো মেয়ে, নূরার বিয়ের পর তোর জন্য পাত্র খুঁজবো থাম! ”

তূবা একটু লজ্জা পেয়ে উঠে চলে যায়।

নূরার বিয়ে খুব সিম্পল ভাবে সম্পন্ন হয়, কারণ নূরার বিয়ে বারবার ভেঙে যেত। কারণ টা আজও অজানা, বলেই গোপনে বিয়ে ঠিক করে বিয়ে দিয়ে দেয় নূরার পরিবার। বিয়ে শেষ হওয়া মাত্রই নাইম পার্টি তে যাবে বলে বেরিয়ে যায়। নূরা কে সহ তূবার মামা মামী ও যায়। তূবা আর একজন কাজের মেয়ে ঘর পাহাড়ায় থাকে । কাজের মেয়ের উপর তো আর পুরো ভরসা করা যায় না! সেজন্যই তূবা কে রেখে যাওয়া।

তূবা কি আর জানতো, একা থাকা তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে! রাত ১ টার দিকে কলিংবেলের শব্দে তূবা লাফিয়ে উঠে। লেহেঙ্গা খুলতে শুরু করেছিলো মাত্র, সব কিছু গুছাতে গিয়ে সময় হয়নি ড্রেস চেঞ্জ করার। ওড়নার সেফটিপিন খুলা মাত্রই কলিংবেল বাজে। তূবা ওড়না টা পেঁচিয়ে দরজার কাছে গিয়ে দেখার চেষ্টা করে কে এসেছে। দুটো ছেলে কে দেখে তূবা খুব ভয় পায়,দরজা না খুলে দাঁড়িয়ে থাকে হা হয়ে। বাইরে থেকে আওয়াজ আসে,
“ দরজা খুলেন প্লিজ, নাইমের অবস্থা ভালো না!”

তূবা ভয় কাটিয়ে দরজা খুলে দেয়, নাইম ঘরে ঢুকে টলমল ভাবে। ভিতরে এসেই তূবার গায়ের উপর ঢলে পড়ে। নাইমের বন্ধু বললো,
“ ভাবী, আমি গেলাম। ও আজ একটু বেশী ই গিলে ফেলেছে। সাবধানে থাকবেন। ”

তূবা অবাক হয়ে গেলো, ওকে ভাবী ডাকলো কেনো! আর এই ছেলেটা কে কিভাবে ঘরে নিয়ে যাবে সে, সে চিন্তা ও মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। কাজের মেয়ে রিনা এসে দরজা লক করে দেয়, আর তূবা কে বললো,
“ চলেন আপা, উনারে ঘরে রেখে আসি। ”

তূবা রিনা কে বললো,
“ একাই দিয়ে আসি উনাকে ।”

তূবা কষ্ট করে নাইম কে ঘর পর্যন্ত নিয়ে আসে। নাইম কে বেডে শুইয়ে দিতে গিয়ে নিজেও নাইমের উপর পড়ে যায়। নাইম থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে আসবে ভেবে ওঠতে যাবে তখন নাইম আরোও শক্ত করে তূবা কে জড়িয়ে ধরে। তূবা ভয়ে কান্না জুড়ে দেয়, করুণ কণ্ঠে বললো,
“ আমার সাথে প্লিজ কিছু করবেন না আপনি। ছাড়ুন না আমাকে, প্লিজ….”

নাইম আরোও শক্ত করে ধরে তূবা কে বললো,
“ প্লিজ রাইশা, আমাকে ছেড়ে যেও না। আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবোনা। ” বলে তূবাকে অসংখ্য চুমু দিতে শুরু করে নাইম। তূবা যতই ছাড়াতে চাচ্ছে, নাইম ততই তূবা কে রাইশা ডাকছে আর সারা শরীরে ছুঁয়ে দিচ্ছে। একটা সময় তূবার ওড়না সরিয়ে দেয় নাইম। তূবাকে অজস্র চুমু দিতে শুরু করে , তূবা ছাড়ানোর জন্য ছটফট করতে শুরু করে।

লেহেঙ্গা সরে গিয়ে পেট বেরিয়ে গেছে তূবার, পেটে হাত ঘুরাতে শুরু করে নাইম । তূবা নিজে বাঁচার জন্য নাইমের হাতে কামড় দেয়, নাইম হাত আলগা করলে তূবা ছুটে চলে আসে৷তবে ভাগ্য ভালো না থাকায় নাইম আবার ধরে ফেলে। তূবার চিৎকার শুনে রিনা ছুটে আসলেও রিনা কে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় নাইম। এতো জোরে ধাক্কা দেয় যে রিনা পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পায় প্রচণ্ড, সেন্স ও হারিয়ে ফেলে রিনা৷

তূবা ভয়ে কাঁদছে , নাইম যে এতো হিংস্র হয়ে যাবে বুঝতে পারেনি সে৷ নেশা করে এসে যা ইচ্ছে তাই করছে, কিছুতেই সরাতে পারছেনা তূবা। তূবা কে আবার নাইম বেডে ফেলে দিয়ে নিজেও তূবার উপর লাফ দেয়। তূবা ব্যথায় “ মা ” বলে চিৎকার করে। নাইম জোর করে সারা রাত নিজের পুরুষত্ব খাটায় তূবার উপরে। এতো অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে যায় তূবা।

বেলা ১০ টাই নাইমের ঘুম ভাঙে। নিজেকে তূবার সাথে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পড়ে। তূবা কে সব ড্রেস ঠিক করে পড়িয়ে দেয় নিজেও ট্রাউজার পরে নেয়। তূবা কে কয়েকবার ডাকার পর ও সেন্স ফিরে না তূবার। নাইম পাশে থাকা গ্লাস থেকে তূবার চোখেমুখে পানি ছিটা দেয়। তারপরও না উঠায় নাইম খুব চিন্তায় পড়ে যায়। গালে আস্তে করে থাপ্পড় দিতে শুরু করে। নিজের উপর নিজের রাগ লাগছে, কিভাবে এমন নীচ কাজ সে করতে পারলো!

তূবার কিছুক্ষণ পর সেন্স ফিরে আসে, নিজেকে নাইমের কোলে দেখতে পেয়ে নাইম কে ধাক্কা দিয়ে উঠে যেতে গিয়ে দূর্বলতার জন্য পড়ে যায়, খাটের কোনায় হালকা আঘাত পায় আবারো। নাইম তাড়াতাড়ি তূবার মাথা চেপে ধরে বললো,
“ বেশী লাগেনি তো!”

তুবার ঘৃণা হচ্ছে খুব, নাইমের গালে থাপ্পড় দিয়ে বসে। চেঁচিয়ে বললো,
“ জানুয়ার, কুত্তা ছাড় আমাকে।”
নাইমের ইগো তে খুব লাগে, তূবার মুখ চেপে ধরে বললো,
“ তোর মতো মেয়েদের সাথে এমন ই হওয়া উচিৎ। যা করেছি বেশ করেছি৷ ”

তূবা নাইমের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চাইলে নাইম আরোও শক্ত করে ধরে তূবা কে। আর বললো,
“ রাতে না হয় মাতাল ছিলাম, কিছুই মনে নেই, এখন আরেকবার হয়ে যাক তাহলে!”
“ তোর মা কে সব বলে দিবো ,তুই কতো জানুয়ার হয়ে গেছিস। লোকে ঠিকিই বলেছিলো তুই বিদেশে গিয়ে নারী খোর হয়ে গেছিস। ”

নাইম তূবার মুখ আরোও বেশী করে চেপে ধরে বললো,
“ আমার নামে বাজে কথা বলার আগে তুই নিজে যে শোভনের সাথে প্রেম শুরু করেছিস সেটা কে কি বেশ্যাগিরি হিসেবে দেখবো?”
“ শোভন আমার প্রেমিক না, ফ্রেন্ড ছিলো। ”

কথা টা শেষ না হবার আগেই নাইম থাপ্পড় দেয় তূবা কে। বেডের সাথে চেপে ধরে বললো,
“ একজনের স্ত্রী হয়ে আরেকজনের সঙ্গে রাত কাটাতে তোর খারাপ লাগে না, আমার বেডে শুয়ে তোর খারাপ লাগছে তাইনা!”

তূবা বুঝতে পারছেনা নাইম কি বলছে, তাই জিজ্ঞাসুক ভাবে বললো,
“ আমি কারোর স্ত্রী না, আমার নামে যা শুনেছেন সব মিথ্যা অপবাদ। ”
নাইম তূবার চুলের মুঠি ধরে বললো,
“ যদি প্রমাণ করতে পারি, তোকে সেদিন ই খুন করবো ।”

এদিকে নাইমের ফোনে বারবার রিংটোন বাজছে, নাইমের আম্মু বারবার ফোন দিচ্ছে নাইম ইচ্ছে করেই ধরছেনা এতক্ষণ। নাইম ভালো করে ই জানে রিনা সব বলে দিয়েছে, সেজন্যই বারবার ফোন আসছে। নাইম ফোন অফ করে দেয়, তূবা আস্তে করে উঠে দাঁড়ায়। নাইম উপরে গিয়ে তূবাকে পিছন থেকে জাপটে ধরে পেটে খামচিয়ে দেয়। আর বললো,
“ রাত টা তোর সারা জীবনের স্মৃতি, আঁচড় টা মনে করে তুই কাঁদবি আজীবন। ”
“ হিংস্র পশু আপনি, আগেও ঘৃণা করতাম। এখন থেকে আরোও বেশী ঘৃণা করবো।”

তূবা ব্যথায় হাটতে পারছেনা, তবুও টলমল ভাবে নিচের ঘরে নেমে আসে। বেডের উপর বসে কাঁদতে শুরু করে, “কেনো আমাকে এই বাসায় রেখে গেলে মা। এই পশুর সাথে কাটানো মুহুর্ত গুলো কিছুতেই ভুলতে পারছিনা। কিভাবে বেঁচে থাকবো আমি!”
হটাৎ মনে হয়, মরে যাওয়াই ভালো হবে। ভেবেই একটা ওড়না দিয়ে ফ্যানের সাথে ফাঁস তৈরী করে তূবা।

চলবে…

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে