বৈধ নাকি অবৈধ পর্ব ১

0
2112

বৈধ নাকি অবৈধ পর্ব ১

সজোরে একটা থাপ্পড় পড়ে তূবার গালে , তূবা ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে থাপ্পড় দাতা আর কেউ নয়, তার সদ্য বিয়ে করা স্বামী মি. নাইম। তূবা কিছু বুঝে উঠার আগেই নাইম বললো,
“ শরীর দেখিয়ে ইমপ্রেস করার চেষ্টা ও করবেনা কখনো। এখন ওড়না গায়ে দিয়ে চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে যাও।”

তূবা তাড়াতাড়ি নিজের দিকে তাকালো, আর লজ্জায় পড়ে গেল, শরীরের কিছু অংশ বোঝা যাচ্ছে। ড্রেস চেঞ্জ মাত্রই করেছে, ওড়না নেওয়ার আগেই নাইম ঘরে ঢুকে গেছে। আর এসেই চড় দিয়ে দিলো৷ তূবা কিছুক্ষণ লজ্জায় লাল হয়ে থাকার পর বললো,
“ আমি বাজারের মেয়ে না যে টাকার জন্য ইমপ্রেস করবো। তাছাড়া আপনার মতো লুচ্চা না যে মানুষের গোপন অঙ্গের দিকে তাকাবো। আর ঘর টা আপনার না যে আমি বেরিয়ে যাবো। বেরোনোর হলে আপনি যান। ”
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



নাইম তূবার কথায় প্রচণ্ড ক্ষেপে যায়, তূবা কে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় মেঝেতে। তূবা উহহহ শব্দ করে, নাইম খেয়াল করে তূবার পেট দেখা যাচ্ছে। দ্রুত গিয়ে তূবার বাহু চেপে ধরে, অন্য হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে বললো,
“ যার শরীরের প্রতিটি পার্ট উপভোগ করে রেখেছি, তাকে নতুন করে কি ভোগ করবো।”

তূবা চোখ বন্ধ করে ফেলে ঘৃণা তে , মুখে শুধু বললো,
“ জানুয়ার একটা। ”
নাইম এতে আরোও রাগ করে, পাঁচ আঙ্গুলের নখ তূবার বাহুতে গেঁথে দেয়। আর রাগে ফোসফাস করতে করতে বললো,
“ জানুয়ার ই তো, সেজন্যেই প্রমাণ রেখে যাচ্ছি শরীর টা তে।”
তূবা ব্যথায় অস্থির হয়ে যাচ্ছে সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই নাইমের। শুধু দাঁত দিয়ে তুবার গলার কয়েক জায়গায় কামড় বসিয়ে দেয়। এমনভাবে কামড় দিছে যেনো রক্ত পড়ে যাবে যেকোনো মুহুর্তে। এরপর তূবা কে আবারো ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়। চুপচাপ উঠে বেডে শুয়ে পড়ে নাইম। আর তূবা ব্যথা যন্ত্রণাতে সারাটা রাত কতরাতে থাকে।
সারা রাত নাইম কে অমানুষ জানুয়ার বলে গালি দিতে থাকে।

তূবার সাথে নাইমের বিয়ে হবার কোনো কথা ছিলো না, তবুও হয়েছে। বিয়ের জন্য সম্পুর্ণ ভাবে দায়ী নাইম৷ অথচ এই নাইম কিনা তূবার সাথে রাফ বিহেভিয়ার করছে!

তূবা মাত্রই অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে উঠেছে, বাবা মা আর বড় বোনের সাথে একসাথে থাকতো। তূবার বাবার ট্রান্সফার হয়ে যাওয়ায় তূবা কে ওর মামার বাসায় রাখতে বাধ্য হয় তূবার আম্মু। এক মাস থাকার পর হোস্টেল ঠিক করে দেয়, এরপর থেকে তূবা হোস্টেলেই থাকতো। তূবা কখনো ওর মামাতো ভাই কে দেখেনি, কারণ নাইমকে ছোট বেলায় বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছিলো তূবার মামী। তূবার সাথে তূবার মামীর সম্পর্ক খুব ভালো না হলেও একেবারে খারাপ ছিলো না বিধায় তূবার মামাতো বোন নূরার বিয়েতে তূবা কে দাওয়াত দেয়। তূবা ও বেড়াতে চলে আসে মামার বাসায়। এটাই ছিলো তূবার জীবনের সব চাইতে বড় ভুল।

নূরার বিয়েতে তূবা বেশ আনন্দ করলেও আনন্দ মাটি হয়ে যায় নাইম কে দেখে, কারণ বিয়েটা একদম ঘরোয়া ভাবে হওয়ার কথা ছিলো। নাইম যে ছুটি পাবে, আর চলেও আসবে জানলে তূবা কখনো ই আসতোনা বিয়েতে। নাইমের রুমে তূবা কে থাকতে দিয়েছিলো, কারণ নাইম যে আসবে এটা কেউ জানতো না। আর নাইম দেশে ফিরে আগেই নিজের রুমে চলে আসে। তখন বিকেল বেলায় তূবা বেঘোরে ঘুমাচ্ছে, স্কার্টটা হাটু পর্যন্ত উঠে গেছে আর টপ্স টা দিয়ে পেট দেখা যাচ্ছে। নাইমের অবাক লাগে ওর রুমে একটা মেয়ে কিভাবে আসলো এটা ভেবে।

নাইমের কান টেনে ধরে নূরা, আর বলে,
“ তুই বড় হয়ে গেছিস কিন্তু কখন কি করতে হয় সেটা জানিস না।”
“ সরি আপু, আমি বুঝতে পারিনি। ”
“ এখন তো বুঝেছিস, তাও কেনো ওর দিক থেকে চোখ সরাচ্ছিস না?”

নাইম চোখ ঘুরিয়ে নিয়ে আস্তে করে দরজা লাগিয়ে দেয়। আর বোন কে জিজ্ঞেস করে,
“ কে ও, আমার ঘরে কিসের জন্য? ”
“ ছোট ফুপির ছোট মেয়ে, মা দাওয়াত দিয়েছে তাই এসেছে। ”
“ ওরে উঠা, আর নিচের ঘরে পাঠিয়ে দাও।”
“ ঠিক আছে, তুই আপাতত আমার ঘরে যা।”

নাইম চলে আসলেও তূবার চেহেরা টা বারবার নাইমের চোখে ভাসছে। কেনো জানি মনে হচ্ছে অনেক দিনের পরিচয়, কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছেনা।
নাইমের ফোনের স্ক্রিনে প্রিতমার নাম্বার ভেসে ওঠে, নাইম তূবার চিন্তা দূর করে প্রেমিকার সাথে কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

সন্ধ্যায় নূরা ঘরে ঢুকে, তূবা তখনও ঘুমে। নূরা তূবার মাথায় টোকা দেয়, তূবা উঠে বসে। নূরা তখন বলে,
“ ঘুমানোর সময় স্কার্ট পড়ে ঘুমাস কেনো? আর গায়ে চাদর টেনে ঘুমালে তোর প্রবলেম কি?”
“ কেনো আপু কি হয়েছে?” আহ্লাদী গলায় তূবা জিজ্ঞেস করে।
“ কি আবার হবে! নাইম এসেছিলো। ”
তূবা চমকে উঠে, নাইম তো আসার কথা ছিলো না! তাহলে হটাৎ আসলো কেনো! তাড়াতাড়ি ওড়না টেনে নিয়ে নিজেকে ঢেকে ফেলে। আর নূরা কে বলে,
“ আপু আমি তাহলে হোস্টেলে চলে যাই, আমার এখানে থাকতে ভয় করবে। ”
“ নাইম কি বাঘ ভাল্লুক নাকি! আশ্চর্য তো! তুই নিচের ঘরে থাকবি দুই দিন। ”

তূবা মাথা নাড়ায়, আর উঠে পড়ে। সব কিছু ঠিকঠাক করে গুছিয়ে নেয়। তাড়াতাড়ি করে নিচের রুমে চলে আসে।
রাত আট টার দিকে মনে পড়ে, গোসলের কাপড় গুলো বারান্দায় শুকাতে দেওয়া ছিলো। ওগুলো আনতে ভুলে গেছে তূবা। তাড়াতাড়ি করে কাপড় আনতে চলে যায়। দরজা তে যে নক করে ঢুকতে হয় সেটা ভুলে গেছে, দরজা খুলে অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে যায় তূবা। নাইম শুধুমাত্র হাফপ্যান্ট পড়ে কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে নাচছে। তূবা নাইমের এমন অবস্থা দেখে পিছু ফিরে চলে আসার সময় নাইম জিজ্ঞেস করে,

“ কি আপু কিছু বলবা?” হটাৎ নাইম পিছনের দিকে ঘুরে দেখে তূবা দাঁড়িয়ে। নাইম কে দেখে তূবা দৌড়ে নিচে নেমে যায়। আর হাঁপাতে হাঁপাতে নূরার সামনে গিয়ে বলে,

“ আপু সর্বনাশ হয়ে গেছে, আমার কাপড় গুলো তো ভাইয়ার ঘরের বারান্দায়। ”
“ আরে ধুর, ওগুলো আমি তোর ঘরে দিয়ে আসলাম না!”
“ সব দিছো, একটা ছোট কাপড় পড়ে গেছে মনে হয়। ”
“ কি বলিস, ঠিক আছে। চল আমার সাথে, নিয়ে আসতে হবে। ”

নাইম ঘরে শুয়ে আছে, তখন নূরা ঢুকে বলে,
“ অলওয়েজ শুয়েই থাকবি? নাকি বাইরে কিছুক্ষণ করে হলেও বেড়াবি?”
“ তোমাদের শহর কি ঘুরার মতো শহর? ”
“ হ্যাঁ, বাইরে থাকতে থাকতে দেশ তো ভালো লাগবেইনা।”
“ বাইরে পাঠিয়েছিলা কিসের জন্য, এখন মেনে নিতেই হবে। ”
“ এই তূবা, বারান্দায় আমার কিছু জিনিস আছে নিয়ে আই তো!” বলে তূবা কে ডাক দেয় নূরা।

তূবা সংকোচ করে ঘরে ঢুকলেও তাড়াহুড়ো করে বারান্দায় গিয়ে কাপড় নিয়ে নূরার সামনে আসে। নূরা কে তখন নাইম বলে,
“ ওহহ আচ্ছা, ও তাহলে মেইড?”

নূরা চোখ দুটো বড়ো করে নাইমের দিকে তাকালো। ততক্ষণে তূবা বেরিয়ে গেছে, তূবার খুব খারাপ হয়ে যায়। কেউ কখনো ওকে মেইড বলবে ও ভাবতেও পারেনি।

বৈধ নাকি অবৈধ পর্ব ১
জামিয়া পারভীন তানি
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে