বেলাশেষে part_6

0
696

বেলাশেষে part_6
#adrin_anisha
.
মেঘা ক্লাস রুমে এসে একা একা বইয়ে মুখ গুজে বসে আছে। সুভা গিয়ে মেঘাকে দেখে অবাক হয়ে যায়।
“পুরো কলেজ খুঁজে ফেলেছি অথচ নিজেদের ক্লাসরুমটাকেই খুঁজতে ভুলে গেছি। ” নিজের মাথায় নিজেই হালকা একটা থাপ্পড় দিয়ে মেঘার কাছে গিয়ে বসলো সুভা।

“কি রে রাগ করেছিস”

“নাতো”

“রাগ করিসনি মানে, এতোকিছু বললাম আমি তোকে। ”

“ভুল কিছু তো আর বলিসনি, যা বলেছিস ঠিকই বলেছিস”

সুভা আর কিছু বলতে যাবে তখনই ক্লাস শুরু হওয়ার বেল বাজলো। একটু পর শুভ্র এলো এবং মেঘার দিকে লক্ষ্য করে জিজ্ঞেস করল,

” আচ্ছা আমি কি এখানে বসতে পারি”

সুভা হ্যাঁ বলতে যাব তার আগেই, মেঘা বলল,

” নাহ, কিছুতেই না। আমাদের মাঝে কারোর জায়গা নেই”

সুভার হাতে নিজের হাত ঢুকিয়ে বলল মেঘা। শুভ্র একটা মুচকি হাসি দিয়ে মেঘার পাশের ব্যাঞ্চে বসে পড়ল। আর সারা ক্লাস বসে বসে মেঘাকে দেখতে লাগল। মাঝে মাঝে সুভাও শুভ্রর দিকে তাকালো। তখন শুভ্র ও সুভাকে দেখে মুচকি হাসি দিলো।
কথায় বলে, মেয়েরা ১ কি.মি দূর থেকেও বুঝতে পারে তাকে কোন ছেলেটা দেখছে আর কোন ছেলেটা তাকে পছন্দ করে।
কিন্তু ছেলেদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঠিক এরকম কিনা জানা নেই। তাই তো সুভা যে মনে মনে শুভ্রকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে তা শুভ্র টেরই পায়নি।

ছুটির পর শুভ্র প্রতিদিনের মত আজও চলে গেল সেই বাচ্চাদের খাওয়াতে। সুভাও দেখলো সেটা, কিন্তু মেঘা দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেল আর সাথে সুভাকেও টেনে নিয়ে চলে গেল।
.

মেঘা আর সুভা পড়তে বসেছে এমন সময় মেঘার মা ফোন করেছে। ফোনটা হাতে নিয়েই হাসি ফুটে উঠল মেঘার মুখে। হাসি দেখেই সুভা বুঝে গেল কার ফোন এসেছে।

” আসসালামু আলাইকুম আম্মু”
” ওয়ালাইকুম আসসালাম, কেমন আছো মা?
” এইতো আলহামদুলিল্লাহ ভালই আম্মু, তুমি কেমন আছো?”
” আমিও ভালো। কি করছো?
” আমি আর সুভা মাত্রই পড়তে বসলাম”
” বাহ, ভালো কথা। মনোযোগ দিয়ে পড়। ভালো রেজাল্ট করতে হবে তো”
” হুম আম্মু, দোয়া করবে কেমন?”
” ধুর পাগলি মায়ের কাছে কি দোয়া চাইতে হয় নাকি, মায়ের দোয়া এমনিতেই সন্তানের পাশে থাকে। আচ্ছাহ শোন, তোকে একটা কথা বলার ছিলো”
” জি মা বলো”
” তোর জন্য একটা বিয়ের প্রস্তাব এসেছে”
” তুমি না বলে দাও”.
” আরে আগে শুনে তো নে, ছেলে খুব ভালো, মাস্টার্স পাশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কিন্তু এখনো চাকরি পায়নি। তাই আমিও এতোটা জোর দিচ্ছি না। তবে ছেলেটা খুবই টেলেন্টেড”
” আমি কি কম নাকি। বাদ দাও তো। এসব নিয়ে এখন ভাবতে পারব না। পড়তে দাও। ”
” আচ্ছাহ আচ্ছাহ ঠিক আছে। সুভা কেমন আছে। ”
“সবাই ভালো আছে আম্মু, এখন রাখি, আল্লাহ হাফেজ”
” আচ্ছাহ, আল্লাহ হাফেজ ”
” আসসালামু আলাইকুম ”

ফোনটা রেখেই একটা মুখ ভেংচি দিল মেঘা। তারপর সুভার দিকে তাকাতেই দেখলো সুভা মুচকি হাসছে ওকে দেখে। মেঘা বালিশ দিয়ে সুভার পিঠে একটা মেরে জিজ্ঞেস করল,
” কি হয়েছে শুনি এভাবে হাসছিস কেনো?
” কি করব বল, যেই হারে তোর জন্য পাত্র আসছে তাতে তো মনে হচ্ছে ফাইনাল পরীক্ষার হলে শুধু আমিই থাকব আর তুই থাকবি শশুড় বাড়িতে?”
” চুপ, এমন টা মোটেও হবে না। পড় এখন”

সুভা হাসতে হাসতে বইয়ে মুখ গুজলো, আর মেঘাও বইয়ে মুখ গুজে ভাবতে লাগল কে হতে পারে ছেলেটা….

.
পরদিন কলেজে….

“এই সুভা আজকে নাকি একটা নতুন স্যার আমাদের ক্লাস নেবেন”
” কার কাছে শুনলি?”
” ওই তো মিতু বলছিলো”.
” তাই নাকি? তো কোন সাবজেক্ট এর?”
” ইংরেজি, আমার প্রিয় বিষয়☺”
” হুম দেখা যাক কেমন পড়াবে”
কথা বলতে বলতে সামনে যেতেই সুভা শুভ্রকে দেখতে পেল। আর শুভ্রও ওদের দিকেই আসছে।
আজকে মেঘাকে যেন অপরূপ লাগছে। লাল লম্বা একটা গাউন। গায়ে লাল ওড়না। কানের দুপাশ থেকে একটু একটু চুল নিয়ে পেছনে একটা ক্লিপ দিয়ে আটকে রেখেছে তার রেশমি লম্বা চুল। কানে এন্টিক এর কানের দুল। আর ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক।

মেঘাকে মুগ্ধ হয়ে দেখছে শুভ্র।
” এই ছেলে এখানে কি?”
কেও একজন রাগি চোখ নিয়ে শুভ্রকে জিজ্ঞেস করল।
.
.
.
চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে