ফিরে এসো ভালবাসা পর্ব-০১

0
2385

#ফিরে এসো ভালবাসা❤
#লেখিকাঃ নাবিলা আহমেদ রোজ
#পর্ব- ১

ভার্সিটির মাঠ ভর্তি লোকের সামনে। রোজের গালে ঠাটিয়ে চর বসিয়ে দিলো শুভ্র। রোজ তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো। কারন ভার্সিটিতে কারোই এত সাহস নেই। যে কি না নাবিলা আহমেদ রোজের গায়ে হাত তুলবে। রোজ পাল্টা থাপ্পর দিতে হাত ওঠালো। কিন্তুু সামনের ব্যক্তিকে দেখে থমকে গেলো। নিজের হাতটা আস্তে করে নামিয়ে নিলো। সামনের ব্যক্তিটি দাতে দাত চেপে বললো।”

—-” তোর সাহস কি করে হলো রোজ?তুই রাহির গায়ে হাত তুলিস?”

রোজ ছলছল চোখে তাকিয়ে বললো,

—-” ও আমাকে ফেলে দিয়েছিলো শুভ্র।”

শুভ্র অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,

—-” সাট আপ ইডিয়ট। তোকে বলেছি না?আমার নাম ধরে বলবি না। ৬বছরের বড় আমি তোর।”

রোজ মাথা নিচু করে ফেললো,

—-” খবরদার রোজ তোকে সাবধান করছি। রাহির থেকে তুই দুরে থাকবি একদম দুরে। আদারওয়াইস পরিনাম খুব খারাপ হবে। রাহি আমার জিএফ আমি কিন্তুু এসব টলারেট করবো না।”

তখনি সেখানে রাহি এসে রোজকে বললো,

—-” কি হলো?সব হাওয়া ফুস হয়ে গেলো?আমার গায়ে হাত তোলা তাইনা?শোন এরপর থেকে আমার সাথে লাগতে আসিস না। শুভ্র বেবি দাড়িয়ে না থেকে চলো।”

বলে শুভ্রর হাত ধরে নিয়ে গেলো। রোজ এক দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে। চোখের পানি মুছতে মুছতে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো। সবাই অবাক হলো না কারন এটা হয়েই থাকে। সবাই রোজকে ভয় পেলেও শুভ্রর সামনে রোজ উইক। বিকজ রোজ শুভ্রকে ভালবাসে সেটাও ৩বছর ধরে। শুভ্র নিজেও সেটা জানে বাট পাত্তা দেয় না। শুভ্র ভালবাসে নেকা মেয়ে রাহিকে। কিন্তুু রাহি ভালবাসে শুভ্রর টাকা পয়সাকে। রোজ গাড়ি নিয়ে সোজা মেইন রোডে চলে এলো। ফুল স্পিডে গাড়ি ড্রাইভ করে লেকের পাড়ে চলে এলো। মন খারাপ হলেই রোজ এখানে আসে। গাড়ি থেকে নেমে রোজ লেকের পাড়ে গিয়ে দাড়ালো। ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করতে করতে বললো,

—-” আমিতো এমনি রাহিকে থাপ্পর মারিনি। ওতো আমাকে ফেলে দিয়েছিলো। সেটাও ইচ্ছে করে তাহলে তুমি আমাকে কেন মারলে?আমি তোমাকে ভালবাসি তুমি কি বোঝোনা?৩টা বছর ধরে তোমাকে ভালবাসি। কিন্তুু আফসোস তুমি বুঝেও চুপ থাকো। না বোঝার ভান করে থাকো তুমি। তোমার লাইফে রাহি এসেছে মাএ ৩মাস। তুমি ওকে ভালবাসতে পারলে অথচ আমাকে ভালবাসতে পারলে না। আমি কি অপরাধ করেছিলাম?”

কাঁদতে কাঁদতে রোজ ওখানে বসে পড়লো। হঠাৎ রোজের কাঁধে কেউ হাত রাখলো। রোজ জানে মানুষটা কে তাই তাকে জড়িয়ে ধরে। হাউমাউ করে কান্না করতে করতে বললো।”

—-” মিম আমি কি করবো বল?আমি শুভ্রকে অনেক ভালবাসি। আমি ওকে ছাড়া বাঁচবো না রে। আমি মরে যাবো মিম মরে যাবো আমি,

মিমের চোখ থেকেও পানি পড়ছে। মিম রোজকে অনেক বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিলো।”

“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন

রোজ আহমেদ শহরের নামকরা বিজনেসম্যান আহাদ আহমেদের একমাএ মেয়ে। তবে রোজের একজন বড় ভাইয়া আছে। নাম রোদ্দুর আহমেদ রোদ ডাকনাম রোদ। রোদ রোজের ৭বছরের বড়। পড়াশোনা শেষ করে নিজের বাবার বিজনেস দেখছে। রোজ লম্বা ৫.৪” দুধে আলতা গায়ের রং। বড় বড় মায়াবী এক জোড়া চোখ।।লিপস্টিক ছাড়াই হালকা গোলাপি ঠোট। ঠোটের নিচে ডান দিকে কালো তিল। শুভ্র রোজের আপন খালাতো ভাই। শুভ্রর বাবা সাহেল চৌধুরীও একজন নামকরা বিজনেসম্যান। শুভ্র দেখতে জাস্ট ওয়াও লম্বা ৬.২”। গায়ের রং ফর্সা, চোখের মনি হালকা নীল। মাথায় এক বোঝা সিল্কি চুল। ডার্ক রেড ঠোট, ঠোটের নিচে কালো তিল। সব মেয়েদের ক্রাশ বয় শুভ্র চৌধুরী,

__________________

সবার সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে শুভ্র। শুভ্রর ফ্রেন্ড রাহাত, রিক, আশিকের সাথে। আশিক হঠাৎ মুখ ফসকে বললো।”

—-” শুভ্র তুই এটা ঠিক করলি না,

শুভ্র ভ্র কুঁচকে বললো।”

—-” কোনটা ঠিক করিনি?”

আশিক বনিতা না করে বললো,

—-” রোজকে মারা ঠিক হয়নি তোর।”

শুভ্র রোজের নাম শুনেই রেগে বললো,

—-” ওর সাহস হয় কি করে রাহিকে মারার?”

আশিক একটু রেগে বললো।”

—-” কারন রাহির দোষ ছিলো,

শুভ্র অবাক হয়ে বললো।”

—-” হোয়াট?

পাশ থেকে রিক বললো,

—-” তুই কি রোজের হয়ে কথা বলছিস আশিক?”

শুভ্রর ফ্রেন্ড রাহাত বললো।”

—-” আরে রিক ওকে বলতে দে,

রিক চুপ করে রইলো। আশিক তখন বললো।”

—-” আমি তখন আমাদের ক্লাসে যাচ্ছিলাম। আমাদের ক্লাস আর রোজদের ক্লাস তো ৪তলায়,

___ফ্লাশব্যাক___

রোজ উপরে নিজের ক্লাসে যাচ্ছে। মিম লাইব্রেরীতে গিয়েছে বই আনতে। রোজ হাটতে হাটতে নিজের ক্লাসের দিকে যাচ্ছে। সেখান দিয়েই রাহিও নিজের ক্লাসে যাচ্ছে। কারন রাহির ক্লাসও ৪তলায়। রাহি জানে রোজ শুভ্রকে ভালবাসে। যেটা রাহির পছন্দ না রাহি শয়তানি বুদ্ধি করলো। ইচ্ছে করেই রোজকে ল্যাং দিয়ে ফেলে দিলো। রোজ উঠে রেগে বললো।”

—-” এটা কি করলে?”

রাহি মুখটা বাঁকিয়ে বললো,

—-” আমার শুভ্রর দিকে নজর দাও তাই ফেলে দিলাম।”

রোজ দাত কিড়মিড় করে বললো,

—-” যদি আমার পা ভাঙতো?”

রাহি ভাব নিয়ে বললো।”

—-” তোর মতো মেয়ের পা ভাঙলে আমার কি?যত্তসব ফালতু মেয়ে কোথাকার,

রোজের মাথা গরম হয়ে গেলো। ঠাটিয়ে রাহির গালে এক থাপ্পর বসিয়ে নিজের ক্লাসে চলে গেলো। এটা আশিক দেখলো।”

___এখন___

শুভ্র সহ সবাই থ মেরে বসে আছে,

আশিক রেগে বললো।”

—-” এবার বুঝলি?”

তখনি রাহি এসে নেকামি করে বললো,

—-” আগে ও আমাকে বকেছে বেবি। আমি কি করতাম বলো?তোমাকে হারাতে পারবো না আমি। ও বললো ও তোমাকে কেড়ে নেবে। আমি নাকি বাজারের মেয়ে তাইতো আমি।”

শুভ্র ফোস ফোস করতে করতে বললো,

—-” ওর এত বড় সাহস?ও আসুক কাল ওকে আমি যে কি করবো।”

আশিক শুভ্রকে বললো,

—-” শুভ্র আমার কথা শোন,

শুভ্র রাহির হাত ধরে বললো।”

—-” আর কিছুই শুনবো না আসি,

বলে রাহিকে নিয়ে চলে গেলো। রাহি মনে মনে শয়তানি হাসি দিলো।”

____________________

রোজ বাড়িতে এসে মনমরা হয়ে বসে আছে। রোদ রোজকে নানাভাবে খোচাচ্ছে ঝগড়া করতে। কিন্তুু রোজ চুপচাপ বসে আছে। রোদ বুঝলো রোজের মন খারাপ তাই বললো,

—-” ব্লাক রোজ কি হয়েছে?”

রোজ মাথা নিচু করে বললো।”

—-” কিছু হয়নি ভাইয়া,

রোদ ভ্রু কুঁচকে বললো।”

—-” কিছু না হলে তুই তো চুপ থাকার মেয়ে না। আই মিন তুই যেই লেভেলের ডাইনি। আমি তোকে খোচাচ্ছি আর তুই কিছুই বলছিস না স্ট্রেঞ্জ,

রোজ এবার রাগী লুক নিয়ে বললো।”

—-” কি বললি তুই? আমি ডাইনি? আমি ডাইনি হলে তুই কি? তুই হচ্ছিস আজাজীল শয়তান,

রোদ হা করে থেকে বললো।”

—-” কি আমি আজাজীল শয়তান? তোর কোনদিক দিয়ে আমাকে আজাজীল লাগে?”

রোজ মুখ বাঁকিয়ে বললো,

—-” সবদিক দিয়েই লাগে।”

রোদও দাত কেলিয়ে বললো,

—-” তোকেও সবদিক দিয়ে ডাইন লাগে।”

রোজ চেঁচিয়ে বললো,

—-” আম্মু তোমার ছেলেকে থামতে বলো। কেবল এসেছি ভার্সিটি থেকে। আর ও আমাকে এভাবে জ্বালাচ্ছে। ও তো আজকে অফিসেও যায়নি। এমনিতেও উনি যেভাবে অফিসে যায়। ২দিন গেলে ৫দিনই যায় না।”

রোজের আম্মু কিচেন থেকেই বললো,

—-” রোদ রোজকে জ্বালাস না।”

রোজ ভেংচি কেটে চলে গেলো। রোদ মুচকি হেসে বসে রইলো। রোজ জানে রোদ ইচ্ছে করেই ওকে রাগিয়েছে। রোজ হালকা হেসে রুমে চলে এলো,

#চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে