প্রেয়সীর ছোঁয়া ( পর্ব ৬)

0
991

প্রেয়সীর ছোঁয়া ( পর্ব ৬)
লিখা : জামিয়া পারভীন তানি

১৩.
“ আদনানকে প্রথম দেখেই ওর প্রেমে পড়ে যাই, সেদিন ই প্লান করে নিয়েছিলাম যেভাবেই হোক মাহিরাকে সরিয়ে আদনানের বউ হবো!”
নাদিরা সবার সামনে কথাটা বলে বাধ্য হয়ে । পুলিশ অফিসার জিজ্ঞেস করেন,
“ মাহিরা তো বিদেশী ছিলো, ওর সাথে বন্ধুত্ব হলো কিভাবে! ”
“ মেহরাব চৌধুরীর বাসার নিচ তলায় একটা রুম ভাড়া নিয়েছিলাম। পাশের অফিসে চাকুরী করতাম সেই সুবাদে মেহরাব চৌধুরী কে থাকার অসুবিধার কথা জানাই। ”

মেহরাব চৌধুরী বললেন,
“ আমি আর আমার মেয়ে মাহিরা এই বাসায় থাকি। চাইলে তুমি আমাদের বাসার নিচতলায় থাকতে পারো!”
নাদিরা প্রথমে ইতঃস্তত বোধ করলেও পরে নিজের সুবিধার্থে রাজি হয়ে যায়। রুম আর অফিস পাশাপাশি হওয়ায় মাহিরার সাথে প্রায়ই দেখা হতো কিন্তু কথা তেমন হয়নি।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



মাহিরার এনগেজমেন্ট এর দিনে মেহরাব চৌধুরী নাদিরা কেও ইনভাইট করে। সেদিন আদনানের উপর নাদিরা ক্রাশ খায়। আদনানের ডেসআপ, লুকিং, স্মার্টনেস, কথা বলার স্টাইল সব কিছুই অন্যরকম। দেখতেও যেমন সুন্দর তেমন ব্যবহার। যে কোনো মেয়ে আদনানের উপর ক্রাশ খাবে এটাই স্বাভাবিক। অনুষ্ঠান শেষে মাহিরা আদনান কে নিয়ে সুখের সংসার সাজাতে বিভোর আর নাদিরা বিভোর হয়েছে কিভাবে মাহিরাকে সরিয়ে আদনান কে বিয়ে করে নিজের করে পাবে!

পরেরদিন মাহিরাকে দেখলেই হাই হ্যালো সম্ভাষণ দেয় নাদিরা । মাহিরা ও বাসায় একা থাকতো! নিঃসঙ্গতা কাটাতে নাদিরার সাথে কথা বলা শুরু করে। এক কথায় নিজের মৃত্যু দুত কে সাদর সম্ভাষণ জানিয়ে আমন্ত্রণ করে এই আর কি!

“ মাহিরা কি বোকা তাইনা ড্যাড! ”
নাদিরার কথার মাঝে বলে বসে আফরা।
“ আহহ! চুপ করো আফরা, নাদিরা কে ওর অপরাধ স্বীকার করতে দাও! ” মেহরাব চৌধুরী রাগী স্বরে ধমক দেন আফরা কে।

নাদিরা আবারোও বলা শুরু করে মেহরাব চৌধুরীর ধমকে।
“ সেদিন মাহিরার রুমে ছিলাম আমি, আর মাহিরা শাওয়ার নিচ্ছিলো। আদনান হটাৎ আমাকে মাহিরা ভেবে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। আমি নিজেও ভয়ে চিৎকার দিই, পরে দেখি আদনান। আদনান আমাকে দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খায়। মাহিরা কি হলো ভেবে ভেজা অবস্থায় বেরিয়ে আসে। মাহিরা শুধুমাত্র ভেজা টপস পড়ে ছিলো। মাহিরাকে ওভাবে দেখে আদনান হয়তো উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলো। মাহিরার ঠোঁট যুগল নিজের আয়ত্বে নিয়ে নেয়। মাহিরার ভেজা ড্রেসে, নগ্ন পা দেখে পুরো আবেদনময়ী লাগছিলো। সুযোগ বারবার আসেনা বলে মাহিরার ওই অবস্থায় আদনানের সাথে চুমু খাওয়ার দৃশ্য গোপনে ভিডিও করে নিই। আর সাবধানে মাহিরার ঘর থেকে বেরিয়ে যাই। ”

মেহরাব চৌধুরী রাগের বশে নাদিরা কে থাপ্পড় দিয়ে বসে। “ তোকে আমি মেয়ের চোখে দেখেছিলাম। আর তুই কিনা জঘন্য মেয়ে! ”

নাদিরা এবার চিৎকার করে বলে,
“ হ্যাঁ আমি জঘন্য মেয়ে, জন্মের পর অনাথ আশ্রমে বড় হয়েছি। শুনেছি বাবার কুকীর্তি তে আমার মা অবিবাহিত অবস্থায় আমাকে পেটে ধারণ করে। অসৎ পিতা আমার জন্মের দায়ভার নিতে পারবেনা বলে মা কে পতিতা বলে ছেড়ে পালিয়ে যায় বিদেশ। আর মা আমার জন্মের পর অনাথ আশ্রমে দিয়ে নিজেও মরে যায়। ছোট থেকে সব হারিয়েছি, ঠোকর খেয়ে বড় হয়েছি । আর যাকে প্রথম দেখাতে ভালোবেসে ফেললাম সেও অন্যের হবে কিভাবে মানতাম! ”

মেহরাব চৌধুরী খুব চিন্তায় পড়ে যায়, তার অতীতের করা পাপ কি তার মেয়েকে কেড়ে নিলো। ভুলের কারণে দেশ ছেড়েছিলেন অনেক আগে, প্রাণপ্রিয় স্ত্রী কে হারিয়ে দেশে এসেও চোখের মনি কন্যা কে হারালেন। অতীতের অপরাধের সাজা পাচ্ছেন মনে করে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন মেহরাব চৌধুরী ।

“ তোর মায়ের নাম কি?” মেহরাব চৌধুরী প্রশ্ন করে বসে।

আফরা এবার ড্যাডের প্রতি রেগে যায়। বলে,
“ আহহ ড্যাড! উদ্দেশ্যের বাইরে প্রশ্ন করছো কেনো? ওর বাপ মা জাহান্নামে যাক, তাতে আমাদের কি! এরপর কি হয়েছিলো সেটা জানার প্রয়োজন। ”

নাদিরা এবার বলে,
“ আদনান পরে আমায় জড়িয়ে ধরার জন্য সরি বলে। আমিও তার সাথে ভালো বিহেভ করি। তখন থেকেই তিনজনের মধ্যে ভালো বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। ”
“ আমার বোন কে মারলি কিভাবে! সেটা বল? ” আফরা জিজ্ঞেস করে নাদিরা কে।

১৪.
আদনানের শরীর জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে। গতরাত থেকে জ্বর ছিলো আফরোজা চৌধুরী সেটা বুঝতে পারেনি। হটাৎ করে জ্বর আসার কারণ এখনো বুঝতে পারছে না আফরোজা চৌধুরী। এদিকে অতিরিক্ত জ্বরের সাথে বমি করছে আদনান। সাথে সমানে মাহিরার নাম নিচ্ছে।

পারিবারিক ডক্টর কে ডাকেন সোহরাব চৌধুরী। আদনান অজ্ঞান বলে মুখে ওষুধ না দিয়ে ইঞ্জেকশন এর মাধ্যমে পুশ করেন। ডক্টর বললেন, অতিরিক্ত স্ট্রেস নেওয়ার জন্য, অথবা অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনার জন্য আদনান অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
আফরোজা চৌধুরী ভালো করেই বুঝতে পারছে মাহিরা কে হারিয়ে আদনান এমন করছে। তখনও ওরা কেউ জানতো না যে মাহিরা মৃত। আফরা মাহিরা সেজে ওদের সামনে আসছে। আফরোজা চৌধুরী সোহরাব চৌধুরী কে বললেন,
“এইবার দুই ভাইয়ে দ্বন্দ্ব বন্ধ করো। মাহিরা ছাড়া আদনান বাঁচবে না! ”
“ বাঁচবে! ওর বিয়ে দিবো অন্য জায়গায়। তবুও মেহরাবের সাথে কোনো সম্পর্ক হবেনা। ”
“ তোমাদের ঝগড়া তে ছেলে মেয়ে দুটো বেশী কষ্ট পাচ্ছে। ”
“ মাহিরা বেঁচে থাকলেও ওকে নিয়ে নাটক করলো কেনো মেহরাব। ও একটা ভণ্ড ছেলে। ও বহু বছর পর দেশে আসায় ওকে মাফ করে দিয়ে ভাই হিসেবে বুকে টেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু ও! আস্ত একটা জানুয়ার বলেই এমন করতে পেরেছে! ”
“ আবার পুরনো কথা নিয়ে রাগ পুষে রেখোনা! হয় মাহিরা কে বউ করে আনবে। না হয় মা ছেলে মিলে বিষ খেয়ে নিবো। ”
“ তুমি পাগল হয়ে গেছো নাকি আফ্রু! ”
“ হ্যাঁ হয়ে গেছি! তোমাদের দুই ভাইয়ের জন্য ছেলেকে হারাতে পারবোনা! ”

চলবে….

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে