প্রেয়সীর ছোঁয়া (পর্ব ৫)

0
917

প্রেয়সীর ছোঁয়া (পর্ব ৫)
জামিয়া পারভীন তানি

আফরা আদনানকে একটা হোটেলে নিয়ে আসে। বেডে বসতে বলে আদনান কে, এরপর একটা ওয়াইনের বোতল খুলে। গ্লাসে ঢালে ওয়াইন, আদনানের দিকে এগিয়ে দেয় ।
“ তুমি না আমায় কথা দিয়েছিলে, আর এসব খাবে না! ”
“ আমি বিদেশি কালচারে বড় হয়েছি, এসব স্বাভাবিক আমার কাছে। আজ স্পেশাল দিনে তোমার জন্য এইটুকু না করতে পারলে আমার ভালো লাগবেনা ।”
আফরার দুধে আলতা গায়ের রঙ, এতটা সাদা যে আস্তে করে থাপ্পড় দিলেও পাঁচ আঙুলের দাগ বসে যাবে। গোল গোল চোখ দুটো, ব্রাউন চোখের মনি। নাকটা একটু বোঁচা, দেখলে কেউ বলবেনা ও বাংলাদেশী মেয়ে। আসলে অনেকটা ওর বিদেশী মায়ের মতো হয়েছে। শুধু বাবার থেকে বাংলা শিখে নিয়েছে। মিহি পাতলা গোলাপি রঙের ঠোঁট, বাঁকা হাসি আফরার।

আদনানের সামনে আফরা হাত তুড়ি মারে। আদনানের ধ্যান ভাঙে।
“ কি দেখছিলে? ”
“ তুমি এতো সুন্দর! তার চেয়েও বড্ড মায়াবী। ”
“ এই রাত শুধু তোমার আমার। ওয়াইন শেষ করো প্লিজ। ”
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/



আফরার এমন কথায় আদনান দাঁড়িয়ে যায় ।
“ দেখো মাহিরা! যদি অবৈধ সম্পর্ক করার ইচ্ছে থাকতো! তাহলে আগেই করতে পারতাম। কিন্তু এসবে কোন আগ্রহ নেই আমার তা তুমি জানো। ”
“ তাহলে সেদিন কেনো মদ খেয়ে মাতাল হয়ে আমায় রেপ করলে আদনান? ”
আফরার হাত ধরে আদনান বললো,
“ বিশ্বাস করো মাহিরা! আমি আমার ভালোবাসা কে কখনো অপবিত্র করিনি! তাছাড়া সেদিন নাদিরা ওয়াইনের ব্যবস্থা করেছিলো আর তোমার জোরাজুরিতে খেয়েছি। সেদিন এমন অঘটনের পর আমি প্রতিজ্ঞা করেছি, যতই কিছু হয়ে যাক কখনো মদ খাবোনা!”

আফরার অবিশ্বাস করার কোনো উপায় নেই, যে আদনান নির্দোষ। তবুও আদনান কে পুরোপুরি বিশ্বাস করার জন্য নিচে নামে আফরা । আদনানের গলাতে, ঠোঁটে অনেকগুলো চুমু দিয়ে আদনানকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করে। আদনানের খুব ভালো লাগছে প্রেমিকার ছোঁয়া কিন্তু পাপ বোধ থেকে আফরাকে সরিয়ে দেয়।

আফরাকে এভাবে সরিয়ে দিবে আদনান সেটা বুঝতে পারেনি আফরা। খুব ইগো তে বাধে, রাগ করে হোটেল থেকে বের হয়ে আসে আফরা। কি করবে কিছুই বুঝতে পারছেনা সে। বোনের খুনী কে খুঁজতে গিয়ে নিজেই আদনানের প্রেমে পড়ে যাচ্ছে সে! কিছুক্ষণ পর আফরা নিজের হাতে কারো স্পর্শ পায়, তাকিয়ে দেখে আদনান মুচকি হাসছে ওর দিকে তাকিয়ে।
“ মাহিরা প্লিজ চলো, আমরা বিয়ে করে নিই। তোমার সব চাওয়া পূরণ করবো বিয়ের পর। ”
“ বিয়ে করা সম্ভব না আদনান। ”
“ কেনো এমন করছো মাহিরা? ”
“ কারণ, মাহিরা মরে গেছে। বেঁচে আছে আফরা। আফরার পক্ষে সম্ভব না বোনের প্রেমিক কে বিয়ে করা। ”

আদনান অবাক হয়ে আফরার দিকে তাকায়। বুঝতে পারেনা কিছুই! কি বলছে ওর ছোঁয়া, ওর মাহিরা! আদনান নিজের কান কে কিছুতেই বিশ্বাস করাতে পারছেনা। আফরার মুখে হাত দিয়ে ধরে একটু জোরেই,
“ মিথ্যা বলছো তুমি, বিয়ে করতে চাওনা তাই! বিশ্বাস করিনা তোমার কথা। ”
“ সব সত্যি। ”
“ দেখো আমি সম্পর্কে তোমার চাচাতো ভাই ও হচ্ছি। তোমরা দুই বোন হলে আমি জানবোনা!”
“ কতটা চিনো আমাদের? মাহিরা কে দেখেছো ই ৬ মাস আগে। তার আগে না চিনতে আমাদের, না চিনতে তোমার চাচ্চু কে!”
“ তার মানে মাহিরা সত্যিই আর নেই? ”
“ হ্যাঁ আমার বোন মরে গেছে, আর তাকে মেরেছো তুমি আর নাদিরা! বোন হত্যার প্রতিশোধ নিতে এসেছি আমি। তোমাদের সুখে থাকতে দিবো না আদনান। ”
“ পুলিশ ডাকো প্লিজ, মিথ্যা অপবাদ নিয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া ই ভালো। ”
“ নাদিরা পুলিশের কাছে, ওর নখ তুলে ফেলেছি আমি। আর তুমি যদি নির্দোষ হও তাহলে সাহায্য করো আমায়। কি কি ঘটেছিলো সব বলবে তুমি। ”
“ তুমি যদি মাহিরা না হও তাহলে তোমাদের দুজনের স্পর্শ একই কেনো? বলবে প্লিজ! ”
“ আমরা একই প্লাসেন্টার ছিলাম, তাই হুবহু একই দেখতে। আর মাহিরার সাথে পার্থক্য একটাই, ও শান্ত আর আমি রাগী। আর ছোঁয়ার কথা বলছো! তিন মাসের প্রেম ছিলো তোমাদের, তারপর তিন মাসের গ্যাপে তুমি মাহিরাকে অনেকটা ভুলে গেছো! ”

আদনান আর কথা না বলে বাসায় ফিরে যায়। খুব কষ্ট হচ্ছে ওর। প্রেয়সীকে হারিয়ে খুঁজে পেয়ে যখন কেউ জানতে পারে সেটা মরিচীকা, তখন বড্ড অসহায় লাগে নিজেকে। আদনানের কষ্ট শেয়ার করার মতো কেউ নেই। নিজেই নিজের বুকে কয়েকটা ঘুষি দেয়, এরপর মেঝেতে বসে পড়ে।

“ তুমি হীনা আকাশ টা আজ, ছেঁয়ে যায় কালো মেঘে।
কেনো ফিরে এলে তুমি, মরিচীকা হয়ে কাঁদাতে!
বৃষ্টি নামে অঝোর ধারায়, কান্নার রঙ যায় ধুয়ে।
বুকের ভিতর জ্বলছে আগুন, পারবো আর নেভাতে!

কষ্ট গুলো হাতছানি দিয়ে, আজ আমায় ডাকে।
নিঃস্ব আমি তোমায় ছাড়া, আছো শুধু অনুভবে।
মনের ভিতর বজ্রধ্বনি, আজ বড্ড ফিকে লাগে।
প্রেয়সী তুমি বড়ই নিঠুর, শুধু আমায় কাঁদাবে। ”

১২.
রাত্রে আফরা ঘরে পায়চারী করছে, আফরা ভালোই বুঝতে পেরেছে আদনানের গভীর কালো চোখে যাদু আছে। ওই চোখের দিকে যেই তাকাবে সেই ওই চোখের নেশায় পড়ে যাবে। আফরা এটাও বুঝতে পারছে, আদনান কে ও ভালোবেসে ফেলেছে! কিন্তু সব সত্য জেনে কি আদনান ওকে মেনে নিবে!
আফরার ধ্যান ভাঙে পুলিশ অফিসারের ফোনে। অফিসার আফরা কে ডেকেছে, নাদিরা কিছু কথা শেয়ার করেছে সেটা বলার জন্য। আফরা ফোন রাখতেই মেহরাব চৌধুরী ঘরে আসেন,
“ তুমি আর যাই করো, আমার শত্রুর ছেলেকে বিয়ে করার কথা ভুলেও ভাববে না! ”

আফরা হটাৎ ফোন রাখতেই ড্যাডের কথা শুনে চমকে উঠে। তাড়াহুড়ো করে বেড ছেড়ে উঠে পড়ে ।
“ এসব কি বলছো তুমি! সে তোমার শত্রু না ভাই। ”
“ তুমি আমার মেয়ে, তোমার মনে যা চলছে তা ভুলে যাও! যদি আমাকে বাবা মানো তো! ”

আফরা বেডের উপর বসে পড়ে, কাকে বেছে নিবে সে! বাবা নাকি আদনান! একবার প্রেম বেছে নিয়ে প্রিয়জনকে হারিয়েছে! কি করবে এখন সে!

চলবে…..

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

▶ লেখকদের জন্য পুরষ্কার-৪০০৳ থেকে ৫০০৳ মূল্যের একটি বই
▶ পাঠকদের জন্য পুরস্কার -২০০৳ থেকে ৩০০৳ মূল্যের একটি বই
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক:
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে