প্রেম পর্ব-১৫

0
1138

#প্রেম
#পর্বঃ১৫
#Tanisha Sultana

বসার ঘরে বসে মিষ্টি জীম মায়া ছায়া কৃশ রনি সবাই গল্প করছে। কৃশ মিষ্টির সামনে বসেছে আর জীম মিষ্টির পাশে। সবাই হাসাহাসি করছে কিন্তু কৃশ শুধু মিষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে। এতে মিষ্টির রাগ হচ্ছে কিন্তু কিছু বলতে পারছে না।
জীমেরও খুব রাগ হচ্ছে। জীম মিষ্টির কানে ফিসফিস করে বলে

“কৃশ এভাবে কেনো তাকিয়ে আছে?

” আমি কি জানি

“কিছু একটা বলে এখান থেকে চলে যাও

” কিন্তু

“বেশি কথা পছন্দ না

মিষ্টি ওয়াশরুমের কথা বলে চলে যায়। বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। কি করবে বুঝতে পারছে না। এভাবে এখানে দাঁড়িয়ে থাকবে না কি? আবার ওদের না বলে বাড়িও যাওয়া যাবে না। জীমের প্রতি খুব বিরক্ত হচ্ছে মিষ্টি। দাঁত দিয়ে নক কাটছে?

” চলো

জীমের কন্ঠ শুনে মুখ থেকে হাত বের করে

“কোথায় যাবো?

” গেলেই দেখতে পাবে

জীম মিষ্টিকে জীমদের ছাঁদে নিয়ে আসে

“ওখানে সবাই কতো মজা করছে আর আমি

জীম মিষ্টির দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকায়

” কৃশ তোকে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছিলো এটা তোর খুব ভালো লাগছিলো তাই না

মিষ্টি ভয় পেয়ে যায়

“তা না

” তাহলে কি?

“দেখেন আমি এখন কতোটুকু সময়ই বা আপনার সাথে থাকি। এটুকু সময়ে আপনি দু মিনিটও আমার সাথে ভালো করে কথা বলেন না সব সময় বকেন। ফিউচারে যখন আমি সব সময় আপনার সাথে থাকবো তখন তো উঠতে বসতে আমাকে মার খেতে হবে

” মার খাওয়ার মতো কাজ করো কেন?

“আমি কি ইচ্ছে করে করি না কি? পরিস্থিতির স্বীকার

” হুম সেটাই। এরপর তোমার বাবা তোমাকে ওই কৃশের সাথে বিয়ে দিয়ে দেবে দুবছর পরে একটা বেবি কোলে নিয়ে আমার সামনে দাড়িয়ে বলবে পরিস্থিতির স্বীকার

মিষ্টি একটু ভেবে বলে

“বাই চান্স যদি এমন হয় আপনি কি করবেন? এই এম শিওর আপনি তখন আমাকে দেখে হেসে বলবেন আমিও বিয়ে করেছি তোর থেকেও অনেক সুন্দরী

জীম মিষ্টিকে জড়িয়ে ধরে বলে

“এমন হবে না। আমি হতে দেবো না। হুম আমি বিয়ে করেছি? অন্য কেউ আমার লাইফে আসবে না। তোমাতেই শুরু আর তোমাতেই শেষ।

মিষ্টি একটু হেসে জীমকে জরিয়ে ধরে।

” এবার আমাদের যাওয়া উচিৎ তোমার বাবা যদি ছাঁদে আসে তো আমাদের দেখে ফেলবে

মিষ্টি জীমকে আরও একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে

“থাকিনা আর একটু। আপনার সাথেই থাকতে ভালো লাগছে।

সন্ধার সময় মিষ্টি হাসি হাসি মুখ করে বাসায় ঢোকে। সামনেই বাবাকে দেখে

” বাবা

“যাও পরতে বসো কাল এক্সাম মনে আছে

” হুম

মিষ্টি পড়তে বসে। এমনিতেও পড়তে ভালো লাগছে না তাও জোর করে বই নিয়ে বসে আছে। জীম ফোন দিছে রিসিভ করে পাশে রেখে দেয় পরি।

আজ মিষ্টির টেস্ট এক্সাম। মিষ্টি আর জীম এক রিকশার যাচ্ছে। মিষ্টি বইয়ের ভেতরে মুখ ডুবিয়ে আছে। জীম মিষ্টিকে রুমে পৌঁছে দিয়ে চলে যায়।

এভাবে মিষ্টির এক্সাম শেষ হয়। আজ রেজাল্ট দিছে মিষ্টি কোনো রকম টেনেটুনে পাশ করছে। এ নিয়ে মিষ্টির বাবা মা হাজারটা বকা দেয়। ছাঁদে দাঁড়িয়ে কাঁদছে মিষ্টি। এরকম রেজাল্ট ও জিবনেও করে নি

“জীম আমার লাইফে আসার পর থেকে সব পাল্টে যাচ্ছে। আমার রেজাল্ট খারাপ হলো বাবা মা বকলো। বাবা তো আমাকে কখনো বকে না। #প্রেম আমার লাইফ থেকে আমার প্রিয় জিনিস গুলো দুরে করে দিচ্ছে।

বাড়ি থেকে চেচামেচির আওয়াজ পেয়ে মিষ্টি নিচে যায়। দেখে কৃশ কৃশের বাবা মা আর রনি এসেছে। মিষ্টির বাবার সাথে কথা বলছে

” আমি এখন মিষ্টিকে বিয়ে দেবো না। ওর পড়ালেখা শেষ হবে তার পর। তবে কৃশ যদি অপেক্ষা করে তো আমি প্রমিজ করছি আমি কৃশের সাথেই মিষ্টির বিয়ে দেবো (মিষ্টির বাবা)

“আংকেল আমি ওয়েট করবো নো পবলেম। বাট আমি বলছিলাম যদি এখন আংটি পরিয়ে রাখা হয় তো ভালো হয়।

মিষ্টির বাবা রাজি হয়ে যায়। মিষ্টির বাবা কখনো কথার খেলাব করে না। জীবন দিয়ে হলেও কথা রাখবে। ভয়ে মিষ্টির হাত পা কাঁপছে। মিষ্টি দৌড়ে রুমে চলে আসে। কাল মিষ্টি আর কৃশের এংগ্রেসমেন্ট। রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়

” কি করে বাবা কে বলবে আমি জীমকে ভালোবাসি। বাবা খুব রাগ করবে। কৃশকে তো বাবা কথা দিয়ে ফেললো এখন কি হবে? জীম জানতে পারলে তো সব শেষ করে দেবে।

জীম ফোন দেয়

“হেলো

” কি করছে আমার জানটা

“মনে আছে আপনি আমাকে একটা নীল শারি দিয়েছিলেন

” হুম

“আপনি আজ একটা নীল পানজাবি পরে বাইক নিয়ে আমার জন্য ওয়েট করেন আজ লং ডাইভে যাবো

মিষ্টি ফোন কেটে দেয়। খুব কান্না পাচ্ছে মিষ্টির৷ কেনো জানি মিষ্টির মনে হচ্ছে জীমকে ও হারিয়ে ফেলবে। জীম আর বাবার মধ্যে মিষ্টি ওর বাবাকেই বেছে নেবে।

নীল শাড়ি চুরি পরে। চুল গুলে ছেড়ে দেয়। ঠোঁটে লিপস্টিক চোখে মোটা করে কাজল। মিষ্টি বার বার আয়নায় নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। বাবা মাকে বলে বেরিয়ে পরে। জীম সাথে করে গিটার ও নিয়ে এসেছে। জীম মিষ্টিকে দেখে হা করে তাকিয়ে আছে। মিষ্টি বাইকে উঠে বলে

” এখানে দাঁড়িয়ে থাকবো না কি

জীম মুচকি হেসে বাইক স্টার দেয়। নদীর পাড়ে একটা ফাকা যায়গায় বাইক থামায়। মিষ্টি জীমের হাত ধরে হাটছে। কিছু বলছে না। জীম মিষ্টিকে দেখতে ব্যস্ত।

মিষ্টি জীমের কাঁধে মাথা রেখে বসে

“জীম লাভ ইউ

” লাভ ইউ টু

“যাই হয়ে যাক আপনি আপনার রাগটা কন্ট্রোল করবেন।

” আমি তো চেষ্টা করি

“চেষ্টা না। রাগ কন্ট্রোল করতেই হবে তা না হলে আমাকে হারিয়ে ফেলবেন

জীম মিষ্টির মাথায় চুমু খেয়ে বলে

” ঠিক আছে

“একটা গান শোনান না

জীম গিটারে সুর তোলে

” তুমি আমার কাছে ফুটফুটে ওই রাতের সুখ তারা
তাই মনের সুখে রাত জাগিয়া দেই যে পাহারা

“তুৃমি আমার কাছে শিশির ভেজা সোনালী সকাল

তোমায় এক পলক দেখিয়া আমি হয়ে যাই মাতাল

” তুমি আমার কাছে যুদ্ধে জয়ী সাত রাজা ধন
শত বাধা ডিঙায় পাই ছি তোমায় মনের মতো মন

মিষ্টি মন দিয়ে গান শুনছে

“খুব ভালো গান আপনি। গান নিয়ে এগিয়ে যান সফলতা আসবেই

” হুম চেষ্টা করবো
তোমায় আজ কেমন কেমন লাগছে

“কেমন লাগছে

” মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়েছে

“কিছুই হয় নি

” আমার কাছ থেকে কেনো লুকচ্ছো

“সত্যি কিছু হয় নাই

” কিছু না হলেই ভালো

“হুম

” অনেকখন তো হলো সন্ধা হয়ে আসছে চলে বাসায় যাই

“থাকি না আর একটু। আপনার সাথে থাকতে ভালো লাগে

” তাহলে সবাইকে বলে দি আমরা বিবাহিত তাি আর আলাদা থাকতে হবে না

“আমাদের রেজিস্ট্রি পেপারটা আমাকে দিতে পারবেন

” থিক আছে রাতে দিয়ে আসবো

“শুনুন যাি হয়ে যাক আমাদের বিয়ের কথা কাউকে বলবেন না। যদি বলেন তো আমি সুইসাইড করবো

” ঠিক আছে বলবো না

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে