প্রেম পর্ব-১৬

0
1160

#প্রেম
#পর্বঃ১৬
#Tanisha Sultana

এক ঘন্টা ধরে ভেবে যাচ্ছে কিভাবে বাবার কাছে জীমের বেপারটা বলবে।
“যা হবার হবে। এবার আমার বলে দেওয়ায় ভলো

রেজিস্ট্রি পেপারটা একটু আগেই জীম দিয়ে গেছে মিষ্টিকে। মিষ্টি রেজিস্ট্রি পেপারের দিকে একবার তাকিয়েই বাবার রুমে চলে যায়।

মিষ্টির বাবা মা প্লেন করছিলো কাল কি কি করবে। মিষ্টিকে দেখে মিষ্টির বাবা বলে

” কিছু বলবে

মিষ্টি ধীর পায়ে বাবার পাশে দাঁড়ায়।

“বাবা

” হুম

মিষ্টি চোখ বন্ধ করে জোরে একটা শ্বাস নিয়ে বলে

“আমি জীমকে ভালোবাসি। আর ওকে বিয়ে করতে চাই

মিষ্টি চোখ খুলে দেখে ওর বাবা মা ওর দিকে তাকিয়ে আছে। মিষ্টির বাবা আগেই এরকম কিছু আচ করেছিলো। সেদিন ছাঁদে মিষ্টি আর জীমকে দেখেছিলো।

” তুমি তো দেখি সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছো

খুব শান্ত গলায় বলে মিষ্টির বাবা

“বাবা আমি সিদ্ধান্ত নেই নি। জাস্ট আমার ইচ্ছে টা তোমাকে বললাম। বাকিটা তোমার ইচ্ছা।

” মিষ্টি তুমি খুব ভালো করেই জানো আমি একবার কথা দিলে কখনো কথার খেলাপ করি না

“কিন্তু বাবা

” আমি তোমার ওপর কিছু চাপিয়ে দিচ্ছি না। তোমার আমার সিদ্ধান্ত ভালো নাও লাগতে পারে। আমার বাড়ির দরজা খোলা আছে তুমি যেতে পারো

“আমি কখনোই এমনটা করবো না

” আমিও আমার সিদ্ধান্ত বদলাতে পারবো না

“তুমি কি চাও না আমি ভালো থাকি?

” তুমি কি শিওর তুমি জীমের সাথে ভালো থাকবে

মিষ্টি মাথা নিচু করে ফেলে

“জীম একটা বাজে ছেলে। লেখাপড়া করে না। কোনো কাজ করে না। কোনো কেরিয়ার নাই। মদ খায় সিগারেট খায়। বাবা মায়ের কথা শুনে না। ওর মধ্যে ভালো কোনো দিকই নেই। ওকে তো ওর বাবাই পছন্দ করে না

” ওকে আমি বদলে দেবো

“এতো দিনে কি পেরেছে? পারো নি। আর ফিউচারেও পারবে না। কারণ ও কখনো ভালো হতে পারবেই না। ওর মতো একটা ছেলের হাতে আমি বেচে থাকতে থাকতে তোমাকে তুলে দেবো না। তোমাকে জীম আর আমার মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হবে।

মিষ্টি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে। কি করবে এখন?

” যাও গিয়ে পারতে বসো। জীমের পাল্লায় পারে তো রেজাল্ট টাও খারাপ করলে এবার অন্তত বাবার সম্মানটাও নষ্ট করো না।

মাথা নিচু করে বেরিয়ে যায় মিষ্টি। নিজের রুমে এসে দরজা বন্ধ করে কান্না করে। বাবা আর জীমের মধ্যে মিষ্টি ওর বাবাকেই বেছে নেবে কিন্তু জীম। ও তো মিষ্টির নিশ্বাস হয়ে গেছে ওকে কি করে ছাড়বে। দোটানায় পারে গেছে মিষ্টি। #প্রেম মিষ্টিকে এক অদ্ভুত যায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে। যেখান থেকে বেরোনোর কোনো পথ নেই।

মিষ্টি চোখ মুছে উঠে দাড়ায়

“নাহহ আমি কৃশকে বিয়ে করতে পারবো না। আমি জীমকে ভালোবাসি। জীম আমার স্বামী। আমি জীমকে ছাড়তে পারবো না। আমি আমার স্বামীর সাথে চলে যাবো।

মিষ্টি ব্যাগ গোছানো শুরু করে।

জীমের চিৎকার শুনে মিষ্টি চমকে ওঠে। দৌড়ে ড্রয়িং রুমে যায়। দেখে জীম পিস্তল হাতে মিষ্টি কে ডাকছে। মিষ্টির বাবা মা ভাইও আছে। মিষ্টি ওখানে যেতেই জীম মিষ্টির গলা চেপে ধরে

” খুব শক না ওই কৃশকে বিয়ে করার খুব শক। আমার সাথে নাটক করে এখন অন্য জনের সাথে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখছিস। আজ তোকে আমি মেরেই ফেলবো

মিষ্টি বাবা মা জীনকে ছাড়ায়। মিষ্টি কাশতে থাকে। চেচামেচির শব্দে জীমের বাবা মাও চলে আসে। জীমের বাবা জীমকে বলে

“এতো খারাপ তুই। একটা মেয়েকে মারতে এসেছিস ছি

” তোমার সাহস হয় কি করে আমার মেয়ের গায়ে হাত দেওয়ার

“আপনার সাহস হয় কি করে ওকে বিয়ে দেওয়ার কথা চিন্তা করার

” ও আমার মেয়ে আমার অধিকার আছে

“আমি আপনার মেয়েকে ভালোবাসি। আমি বিয়ে করবো ওকে

” আমি বেচে থাকতে আমার মেয়েকে তোমার সাথে বিয়ে দেবো না। বেয়াদব একটা ছেলে। মাস্তানী করে বেরাও। তুমি তো আমার মেয়ের নখেরও যোগ্য না। বেরিয়ে যাও আমার বাড়ি থেকে

“আমি গেলে মিষ্টিকে নিয়েই যাবো

জীম মিষ্টির হাত ধরে টানে। মিষ্টির বাবা বাধা দেয়। জীমের যে হাতে পিস্তল সেই হাত দিয়ে মিষ্টির বাবাকে ছাড়াতে যায়। আর চাপ লেগে মিষ্টির বাবার হাতে গুলি লাগে।

গুলির শব্দে সবাই স্তব্ধ হয়ে যায়। মিষ্টির বাবা পরে যায়। মিষ্টি চিৎকার দিয়ে বাবার কাছে যায়।

হাসপাতালের করিডোরে বসে মিষ্টি অনবরত কান্না করে যাচ্ছে। মিষ্টি জীমকে পুলিশে দিয়েছে। মিষ্টির মা ভাই সবাই বসে আছে। মিষ্টির দাদা দাদিমাও চলে এসেছে।

একটু পরে ডাক্তার বেবিয়ে আসে। মিষ্টি দৌড়ে ডাক্তারের কাছে যায়

” আমার বাবা

“ভালো আছে। দেখা করতে পারো

সবাই মিষ্টির বাবার কেবিনে যায়। মিষ্টি যায় না। ওর বাবার সামনে যাওয়ার মুখ নেই।

মিষ্টির বাবা আসেপাশে তাকাচ্ছে। সবাই থাকলেও মিষ্টি নেই

” আমার মিষ্টি চলে গেলো। আমি থাকবো কি করে?? আমার ছোট্ট মেয়েটা যে আমাকে ছাড়া কিচ্ছু বুঝতো না সে আজ একটা ছেলের জন্য বাবাকে ছেড়ে গেলো

মিষ্টির বাবা কথাগুলো বলে কান্না করে দেয়। মিষ্টি আড়াল থেকে শুনে আর থাকতে পারলো না। দৌড়ে বাবার কাছে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে

“আমি কোথাও যায় নি বাবা। আর যাবোও

সবাই কাঁদছে। মিষ্টির একটা ভুল আজ সবার কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আজ তিনদিন পরে মিষ্টির বাবাকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। এই তিনদিনে মিষ্টি বাবার থেকে একটুও দুরে যায় নি।
বাড়ির সামনে গাড়ি থামে। মিষ্টি গাড়ি থেকে নামতেই জীমের মুখোমুখি হয়। জীমের থেকে চোখ ফিরিয়ে যেতে নেবে তখন…..

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে