প্রেমের পাঁচফোড়ন? পর্ব_৩৭

0
1989

প্রেমের পাঁচফোড়ন?
পর্ব_৩৭
#Writer_Afnan_Lara
?
দুজনে আবার রিকসা নিয়ে অফিসে ফেরত আসলো,অফিসের সামনে মাইক্রো ২টা দাঁড়িয়ে আছে,কর্মচারীরা আর পি.এ রাফি স্যার মিলে যাবে
আহানা হাঁটতে গিয়ে শান্তর সাথে এক ধাক্কা খেলো,ব্যস লেগে গেলো মারামারি, ঝগড়া
পরে দুজনে চেয়ে দেখলো দুটো মাইক্রো ভর্তি হয়ে গেছে,শেষের ২টো সিট খালি আছে শুধু,সামনের সিটগুলো ভর্তি
দুজন মিলে একজন আরেকজনকে গালি দিতে দিতে সেখানে গিয়ে বসলো
ওয়ে টু কুমিল্লা!!!
সবাই গান শুরু করে দিলো
১৭জন কর্মচারী আর পি.এ রাফি স্যার যাচ্ছে কুমিল্লায়
সবার আগে বিল্ডিংটায় যাবে,আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ হবে,তারপর সবাই সন্ধ্যাই ম্যাজিক প্যারাডাইস যাবে,সেটা ঘুরে সবাই হোটেলে ফেরত আসবে
.
আহানার হাতে শান্তর জ্যাকেটের চেইন বার বার লেগে ওর অস্বস্তি লাগতেসে
.
কি সমস্যা? চেইন লাগাতে পারেন না?এমনিতেও চিকন দুটো সিট,তার উপর আপনি জ্যাকেটের চেইন খুলে বসে আছেন,আজব তো!গরম ও তো নেই তাহলে এমন চেইন খুলে রেখেছেন কেন?এখানে তো মেয়েরা সব সামনে আপনার দিকে তাকাতেও পারবে না
.
শুনো!গরম লাগছে না কে বললো তোমায়?আমার কপালের দিকে তাকাও,কত সোয়িটিং হচ্ছে চোখে দেখো না তুমি?ওকে দেখাচ্ছি
শান্ত আহানার ওড়না টান দিয়ে সেটা দিয়ে কপাল মুছে নিলো
See!কত ঘাম দেখসো.?
.
আপনি একটা বেয়াদব,আপনি আমার ওড়না দিয়ে মুখ মুছেসেন কেন??
.
তুমি বললা কেন যে গরম নেই?
শান্ত ব্যাগ থেকে ফাইল নিয়ে সেটা থেকে একটা শক্ত পেপার ছিঁড়ে আহানার হাতে ধরিয়ে দিলো
.
নাও বাতাস করো আমাকে
.
ইহহহ শখ কত!
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
তাহলে আমি যতবার ঘামবো ততবার তোমার ওড়না দিয়ে মুখ মুছবো
.
?কেন যে এই বান্দর টার সাথে সিট খালি পেলাম!
আহানা পেপারটা নিয়ে বাতাস করতে থাকলো
শান্ত পকেট থেকে সেন্টার ফ্রেশ একটা নিয়ে মুখে দিয়ে চিবাচ্ছে
শেষে হাত ব্যাথা হয়ে যাওয়ায় আহানা পেপারটা শান্তর গায়ে ছুঁড়ে মেরে আরেকদিকে ফিরে বসে গেলো
.
২মিনিট না বাতাস করেই হাত ব্যাথা হয়ে গেলো তোমার?
.
আপনি ১০সেকেন্ড বাতাস করে দেখুন না তাহলে বুঝবেন
.
শান্ত আহানার দিকে চেয়ে একটু ভেঁংচি কেটে বাতাস করতে লাগলো এত জোরে বাতাস করতেসে মনে হয় মাইক্রো উল্টায় ফেলবে
.
উফ, আপনি কি বাতাস করার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন?
.
হুহ,দেখলে?পুরো ১১সেকেন্ড বাতাস করলাম আমি?
.
উদ্ধার করসেন আমাকে,আমি ধন্য!
.
শান্ত চুইংগাম মুখ থেকে নিয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে
.
হাহাহাহাহহাহাহা?এবার চুইংগাম কোথায় ফেলবেন মিঃ অশান্ত?
.
শান্ত মুচকি হেসে পকেট থেকে ঐ চুইংগামের খোসাটা নিয়ে খোসার ভেতরে চুইংগাম রেখে ফেললো
আর বললো দেখো আর শিখো!এমনি এমনি চুইংগাম ফেলি নাই,খোসার ভিতরে করে ফেলেছি,এতে করে কারোর পায়ে লাগলে আটকাবে না
.
হুহ
.
ইটস কলড জিনিয়াস?
.
এখন বাতাস তো করবা না তাহলে জানালা খুলেতেসি, সরো!!
শান্ত এগিয়ে জানালা খুলে দিলো,তারপর ফোন বের করে গেমস খেলায় মনোযোগ দিলো
.
আহানা বাইরের দিকে চেয়ে আছে,বাতাসে আবারও তার চুল গিয়ে শান্তর নাকে মুখের উপর পড়া শুরু হয়ে গেলো
শান্ত এই নিয়ে দুবার গেমে হেরেছে তাও আহানার চুলের কারণে
রেগে আহানার চুলের মুঠি ধরে এক টান দিলো
.
আহানা ভয়ে চোখ বড় করে চেয়ে আছে
.
মাথায় ঘোমটা দাও,তোমার চুলের জ্বালায় গেমস খেলতে পারি না আমি
.
আহানা চুপচাপ ঘোমটা দিয়ে বসলো
প্রায়ই ২ঘন্টা ৩০মিনিট পর কুমিল্লায় এসে পড়লো সবাই
তখন সকাল ১১টা বাজে,বিল্ডিংটার সামনে এসে মাইক্রো থেমেছে,সবাই খাতা নিয়ে একজন এক তলার দিকে যাচ্ছে
১৬তলার বিল্ডিং
একজন ইঞ্জিনিয়ার দালানটি বানানোর নকশা সম্পর্কে বলে যাচ্ছে ফটরফটর করে
.
বিরক্তিকর একটা কাজ,কবে একটু ফ্রেশ হবো,গরমে সিদ্ধ হয়ে গেছি আমি
.
তো আজকের জন্য কাজ স্থগিত, সবাই দুপুরের খাবার খেয়ে আবার এখানে আসবে,সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করা শেষে তারপর হোটেলে ফিরবে
শান্ত খাবারের হোটেলে এসে গাল ফুলিয়ে বসে আছে
আহানা খাবার মুখে দিয়ে শান্তর দিকে তাকালো
.
শান্ত খাচ্ছে না দেখে বললো কি হইসে আপনার?
.
শান্ত মুখ গোমড়া করে বললো গরম লাগে,দেখো না কি রোদ,অসহ্য লাগতেসে
.
খাওয়া শেষে সবাই একটু এদিক ওদিক হাঁটতেসে
আহানা শান্তকে খোঁচা দিলো
.
শান্ত বিরক্তি নিয়ে বললো কি হয়েছে?
.
এই যে পুকুর একটা দেখেন,এখানে গোসল করবেন?
.
কিহ?এখন,?সম্ভব নাহ
.
আরে সম্ভব,গোসল করলে দেখবেন সব ক্লান্তি চলে গেছে করুন
.
শান্ত ব্রু কুঁচকে বললো তোমার মনে কোনো শয়তানি নেই তো?
.
এই জন্য মানুষের ভালো করতে নেই,থাক গোসল করিয়েন না আপনি,হাইহুতাশ করতে থাকেন,বাই
.
আচ্ছা আচ্ছা করবো,ধরো আমার ব্যাগ রাখো আমি এক ডুব দিয়ে আসি
শান্ত পুকুরে নেমে গেলো,আহানা শান্তর ব্যাগ থেকে তোয়ালে বের করে হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,পাশে একটা বাউন্ডারি দেওয়া,ওপারে বিরাট এক দালান,সম্ভবত কোনো হোস্টেল হবে,কি যেন নাম দেখা যাচ্ছে না,আহানা মাথা উঁচু করে দেখার চেষ্টা চালাচ্ছে
.
আহানা??
.
আহানা চমকে পাশে তাকালো,নিহাল দাঁড়িয়ে আছে
.
জানো এখানে নাকি একটা স্বর্নমন্দির আছে,বৌদ্ধদের,অনেক সুন্দর,দেখতে যাবা নাকি?
.
শান্ত ডুব দিয়ে মাথা তুলে দেখলো আহানা নিহালের সাথে কথা বলতেসে
মাথার চুল থেকে পানি টেনে ফেলে উঠে আসলো শান্ত
নিহাল আর আহানার মাঝখানে এসে দাঁড়িয়ে আহানার থেকে তোয়ালে নিয়ে মাথা মুছতে লাগলো সে
.
আরে শান্ত?এখন গোসল করলে?
.
হ্যাঁ শরীর খারাপ লাগতেসিলো
.
এখন তো তুমি চেঞ্জ করবে,তাহলে চলো আহানা আমরা ঐদিকটায় হেঁটে আসি
.
আরে চলো চলো আমিও যাই,হাঁটতে হাঁটতে চেঞ্জ করার অভ্যাস আছে আমার
নিহাল বিরক্ত হয়ে বললো আমার একটা কল করতে হবে আমি আসি
.
নিহাল চলে গেলো,শান্ত সেদিকে তাকিয়ে গা মুছতে মুছতে আহানার দিকে তাকালো তারপর ব্রু নাচিয়ে বললো কি সমস্যা তোমার,এত কিসের কথা ওর সাথে?
.
আমি কি বলসি,উনিই তো আসি বলা শুরু করে দেয়,আর আপনার কি?
.
কি?আবার বললে আমার কি?তোমাকে আমি!!
.
আহানা একটু পিছিয়ে গেলো ভয়ে
.
শান্ত গায়ের জামা খুলে আহানার হাতে ধরিয়ে দিয়ে ব্যাগ থেকে একটা টি-শার্ট নিয়ে পরে নিলো,তারপর তোয়ালে কোমড়ে পেঁচিয়ে প্যান্ট একটা নিলো পরার জন্য,প্যান্ট পরে হাতের তোয়ালের দিকে তাকিয়ে মনে শয়তানি আসলো তার
আহানা আরেকদিকে মুখ করে ফিরে আছে
.
এই আহানা!
.
কি?
.
আমার দিকে ফিরো তো
.
কেন?
.
তাকাও না
.
আহানা তাকাতেই শান্ত তোয়ালেটা আহানার মুখে মারলো
আহানা রেগে শান্তকে মারতে আসতেই ভিজা মাটিতে পা লেগে পিছলিয়ে শান্তর বুকে গিয়ে পড়লো সোজা
.
শান্ত আহানা যাতে পড়ে না যায় ওকে শক্ত করে ধরে ফেললো
.
দুজনেই চুপ,পরে আহানাই সরে গেলো,বাকিরা যেখানে রেস্ট নিচ্ছে সেখানে চলে গেলো সে
শান্ত ভিজা জামা কাপড় গুলো পলিথিনে মুড়িয়ে ব্যাগে নিয়ে নিলো,হোটেলে গিয়ে শুকাবে,গোসল করায় একটু শান্তি লাগতেসে এখন
.
ওকে সবাই গিয়ে আবার মাইক্রোতে উঠো আমরা কাজে ফিরবো এবার
.
আহানা গিয়ে একটা মেয়ের পাশে বসে গেলো,আহহহ শান্তি,মনে হয় বিশ্ব জয় করা হয়ে গেছে,বেয়াদবটার সাথে বসতে হবে না ভাবতেই মনে মনে লাড্ডু ফুটছে তার ?
.
দুইটা হাত পিছন থেকে এসে আহানার দুপাশে এলিয়ে গেলো,আহানা ভয় পেয়ে হাতের দিকে দেখে বুঝার চেষ্টা করলো এটা কার হাত,হাতে নীল ঘড়ি,ওহহ এটা তো শয়তানটার,আহানা রেগে হাত উঠিয়ে চিমটি কেটে দিলো,ওমা কোনো চিৎকার চেঁচামেচি করলো না,আহানা এবার আরও জোরো চিমটি কাটলো,এবারও নো রিয়েকশান!
আহানা এবার মাথা ঘুরিয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখলো শান্ত ড্যাবড্যাব করে ওর দিকে চেয়ে আছে,যেন কিছুই ঘটেনি
.
আপনাকে যে চিমটি কাটছি ফিল হচ্ছে না আপনার?
.
হচ্ছে তো,তবে চিৎকার করা জরুরি মনে করছি না আমি,গুনে গুনে এর শোধ আমি তুলবো পরে,আরও দাও
.
আহানা মুখ ফিরিয়ে নিলো,পুরো রাস্তায় শান্ত আহানার দুপাশে তার হাত দিয়ে রেখেছে,তার পাশে না বসার শাস্তি দিচ্ছে আহানাকে
সবাই আবার বিল্ডিং টায় ফিরে কাজ শুরু করে দিলো
আহানা ওয়াসরুমের পাশে এসে নকশাটা নোট করতেসে
দুম করে দরজা লাগানোর আওয়াজে চমকে পিছনে তাকালো সে
.
পিছনে তাকিয়ে দেখলো শান্ত আসতেসে,ওর দিকে না তাকিয়ে ভেসিনে গিয়ে কল অন করতেসে আবার অফ করতেসে
আহানা সেদিকে খেয়াল না করে আবারও নকশা নোট করতে লাগলো
.
আহানা নকশা শেষ করে ভেসিনের দিকে চেয়ে দেখলো শান্ত নেই,স্বস্তির একটা নিশ্বাস ফেলে চলে যেতে নিতেই কেউ একজন ওর হাত চেপে ওকে কাছে নিয়ে আসলো
.
আহানা শান্তকে দেখে চুপ করে আছে,সে জানে শান্তর এমন রাগের কারন কি,একে তো ওর সাথে বসেনি আরেক তো হাতে চিমটি দিয়ে দিয়ে লাল করে ফেলেছে
.
কি এমন করে চেয়ে আছেন ককককককেন?আর আমাকে এভাবে ধরররররসেন কেন?
.
কেন জানো না?তুমি তখন আমার পাশে বসো নাই কেন?
.
কেন আপনার সাথে বসবো আমি?আমি আপনার কি হই যে আপনার সাথে বসতেই হবে
.
শান্ত আহানার হাতে একটা চিমটি দিলো,আহানার মনে হলো কেউ কারেন্টের শক দিয়েছে
.
হাত নাড়িয়ে বললো লাগতেসে
আমার ১০টা চিমটির কাছে আপনার একটা চিমটি জঘন্য,হাত ছাড়ুন,ঠিক আছে আপনার সাথেই বসব সবসময়
.
হুমমমমম,চলো
শান্ত আহানাকে টেনে নিয়ে বেরিয়ে আসলো
নিহাল হেসে বললো আহানা কাজ তো শেষ,চলো স্বর্নমন্দির ঘুরে আসি
.
চলো আমিও যাব
.
শান্ত তোমার না কাজ আছে,নকশা তো কমপ্লিট করো নাই এখনও
.
শান্ত দাঁতে দাঁত চেপে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আহানা বলে উঠলো আমি যাব না
.
শান্ত তো মনে হয় আকাশ থেকে পড়েছে ইয়া বড় হা করে ওর দিকে চেয়ে আছে,নিহাল ঠিক আছে বলে চলে গেলো
.
কি ব্যাপার হঠাৎ মিঃ অশান্তের কথা শুনলেন?
.
আমি কোনো ছেলের কথায় তালে তাল মিলাই না,সেটা হোক আপনি বা নিহাল!
.
গুড!?
.
রাফি স্যার বললেন কাজ শেষ এবার সবাই বিকালের নাস্তা করে নাও তারপর আমরা ম্যাজিক প্যারাডাইসে যাবো

আরে আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন,হাত ছাড়ুন
.
শুনো আমি নিহাল না যে তুমি না বললে আমিও বলবো ইটস ওকে,আমি তোমাকে যেখানে নিতে চাইবো তোমাকে সেখানে যেতে হবেই হবে!!
শান্ত আহানাকে নিয়ে একটা মিষ্টির দোকানে আসলো মাতৃভান্ডারে
আমরা এখন রসমালাই খাব!
.
সেটা কি?
.
এই তুমি রসমালাই খাওনি কোনোদিন?
.
না
.
?ওহ,তাহলে এখন খাবা চলো,কুমিল্লার রসমালাই অনেক বিখ্যাত,জাস্ট ওয়াও খেতে
.
রসমালাই মুখে দিয়ে আহানা তো আর থেমে থাকলো না টপাটপ খেয়েই যাচ্ছে,শান্ত আহানার খাওয়া দেখে আরও অর্ডার করলো
আহানা বললো এটা সত্যি অনেক মজার,ধন্যবাদ আমাকে এটা খাওয়ানোর জন্য
.
হুহ,তাও তো কমু আমি তো ভালা না ভালা লইয়া থাইকো
.
চলুন,দেরি হয়ে যাবে তা নাহলে

সবাই এবার ম্যাজিক প্যারাডাইসে আসলো,বিকাল ৫টা বাজে তখন
যে যার পছন্দমত রাইডে উঠতেসে,আহানা উপরের দিকে চেয়ে আছে
একটা নাগরদোলা,এত সুন্দর!!
.
শান্ত হেসে বললো উচ্চতা ১১০ফুট,উঠবা নাকি?
.
নাহহ আমার ভয় করে
.
আমি থাকলে কাকে ভয় পাবা আমাকে নাকি উচ্চতাকে?
.
না দরকার নাই,ভয় লাগে
.
আরে চলো না,বেশ লাগবে দেখিও,দাঁড়াও আমি টিকেট আনতেসি
শান্ত জ্যাকেট পরতে পরতে গেলো টিকেট আনতে,আহানা ঢোক গিলে নাগরদোলার দিকে চেয়ে আছে
শান্ত টিকেট নিয়ে হাজির,সিঁড়ি বেয়ে নাগরদোলায় যেখানে বসতে হয় সেখানে উঠলো দুজন
টিকেট কালেক্টর টিকেট নিয়ে বললো তাড়াতাড়ি বসে যান এটা চলমান
আহানা ভয়ে চোখ বড় করে চেয়ে আছে,বসার সাহস যোগাতে পারছে না
শান্ত বসে গিয়ে আহানার হাত ধরে টেনে নিয়ে আসলো,লোকটা ভিতরে এসে জানালা একটা খুলে বেরিয়ে গেলেন
আহানার বুকের ভেতর টিকটিক করতেসে
শান্ত জানালা দিয়ে বাইরে দেখছে আর ইনজয় করতেসে
আহানা জানালার দিকে তাকাচ্ছেই না
না তাকালে ভয় করে না,মনেই হয় না যে নাগরদোলা চলছে
শান্ত জোর করে ধরে ওকে জানালার পাশে আনলো,বললো দেখতে
আহানা আল্লাহর নাম দিয়ে নিচে তাকালো,মানুষগুলোকে পিঁপড়ার সমান লাগতেসে,তার মানে আমরা এখন অনেক উপরে,আহানা ভয়ে শান্তর জ্যাকেট টেনে ওকে জড়িয়ে ধরে ফেললো
আপনাকে বলসিলাম উঠবো না ভয় করে,কেন জোর করলেন,আমি বাসায় যাব,আমার ভয় করতেসে,আমি মরে যাব?
.
আহানা?বাচ্চামি করো কেন,এটা অনেক স্ট্রং ভাবে বানানো,একেকটা পার্ট অনেক মজবুত,আমরা পড়লেও এটা পড়বে না বুঝছো
ফাইন আমি জানালা অফ করে দিয়েছি,এবার ঠিক আছে?
.
না ঠিক নাই,আমার মনে হয় বাঁচবো না,আমি বাসায় যাব,প্লিস উনাদের বলেন আমাকে নামাতে?
.
শান্ত হেসে দিয়ে চুপ করে আছে
আহানা ওর জ্যাকেটের ভিতর মুখ লুকিয়ে বসে রইলো
পাক্কা ১৫মিনিট ঘুরানোর পর নাগরদোলা থেকে নামলো সবাই,আহানা রোবটের মত দূরে বসে আছে,এখনও কলিজা কাঁপতেসে তার,ভেবে পাচ্ছে না সে আদৌ বেঁচে আছে কিনা
আহানার এমন হাল দেখে শান্ত হাসতে হাসতে শেষ
.
সব আপনার কারণে হয়েছে,আপনি আমাকে জোর করে উঠালেন,আমার এখনও কলিজা কাঁপতেসে?
.
আরে ডাইনাসোর ওয়াল্ডেও তো যাওয়া বাকি, কলিজা ঠিক করো,কাজে লাগবে সেখানে গেলে
.
কককককেন?
.
ডাইনাসোর তোমাকে চিবাই খাবে
.
আহানা পা উঠিয়ে বসে বললো না আমি যাব না
.
নিহাল এসে বললো শান্ত ওকে ভয় দেখাচ্ছো কেন?
আহানা শুনো ওগুলো পুতুলের মত,জাস্ট নড়বে আর সাউন্ড করবে
.
এই শুনো আহানাকে আমি ভয় দেখাচ্ছিলাম না
ওকে??আমি ওর সাথে মজা করছিলাম
.
শান্ত আহানার এপাশে আর ওপাশে নিহাল
বিরাট একটা কৃত্রিম ডাইনাসোর চোখ নাড়লো এটা দেখে আহানা ভয়ে শান্তর হাত চেপে ধরলো
নিহাল ব্রু কুঁচকে ওদের হাতের দিকে তাকিয়ে আছে
শান্ত মুচকি হেসে নিহালের দিকে চেয়ে বিশ্বজয়ের হাসি হাসলো
!!কে আপন কে পররররররররররর!
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে