প্রিয় অভিমান পর্ব ৯

0
1280

#প্রিয়_অভিমান

পার্ট : ৯

লেখা : নিশাত সিদ্দিকা

.
সন্ধ্যা হয়ে গেছে আমি ফ্রেশ হয়ে একটা ব্লু কালারের জামদানী শাড়ী পরে আপু রুমে বসে রইলাম,শাড়ী টারি পরার কোনো ইচ্ছাই ছিল না কিন্তু আপুর নির্দেশে পরতে হলো ।
বসে বসে ভাবছি মা আসলে আজই আমি মায়ের সাথে এখান থেকে চলে যাবো কিছুতেই এখানে থাকবো না।
এত বড় মিথ্যেবাদী শুধু মিথ্যেবাদী নয় মহা মিথ্যাবাদী লোকের সাথে আমি কিছুতেই থাকবো না।
মানুষ এতোটা খারাপ হতে পারে সেটা উনাকে না দেখলে বুঝতে পারতাম না।
নিজের বোকামীর জন্য এইভাবে ফেঁসে যাবো বুঝতেই পারিনি ভীষন রাগ লাগছে নিজের উপর ।কি থেকে কি ঘটে গেল আমার জীবনে।মাকে কিভাবে সব সত্যি কথা বুঝাবো সেটাই ভাবতে লাগলাম,মা নিশ্চই আমার কথা বিশ্বাস করবেন।
হঠাৎ দরজা লাগানোর শব্দে আমার সম্মতি ফিরল,
সামনে তাকাতেই দেখি কাব্য ভাইয়া দরজা লাগিয়ে বাঁকা হেসে আমার দিকে এগোচ্ছেন,
উনার পরনে ছাই রংয়ে টাউজার আর ব্লু রংয়ে টি শার্ট চুলো গুলো ভেজা কিছু কপালের সাথে লেপ্টে আছে,বোধহয় এই মাএ গোসল করে এসেছেন।
উনাকে এভাবে এগোতে দেখে ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেল,
এই পাজি অসভ্য ছেলেটা এখানে কি চায় ,একি আমায় একটুও শান্তি দেবে না।
এর সাথে দেখা হবার পর থেকে আমার জীবনে শান্তি নামক জিনিসটা ডিলিট হয়ে গেছে।
এখন আবার কি করবে কে জানে এই ছেলেকে একদম বিশ্বাস নেই।এর প্রতিটা কাজে আমাকে ফাঁসানোর প্লান থাকে।নিশ্চই কোনো কুমতলবে এসেছে।
আমি উনার দিকে ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে একটা শুকনো ঢোক গিলে বলে উঠলাম,
দরজা বন্ধ করলে কেন ?আর তুমি এখানে কেন এসেছো এক্ষুনি বেরিয়ে যাও,
উনি আমার কাছে এসে বসে বলে উঠলেন,
বারে দরজা বন্ধ করবো না স্বামী স্ত্রী মাঝে প্রাইবেসি বলে একটা ব্যাপার আছে না , আর আমি আসবো না তো কে আসবে সদ্য নতুন বিয়ে করেছি বৌকে ছাড়া কি করে থাকি ,
ভীষন মিস করছিলাম তোমাকে,
তুমিও নিশ্চই আমাকে মিস করছিলে তাই না ,দেরি করে এসেছি বলে রাগ করে বের করে দিচ্ছো,বলেই আমার দিকে তাকিয়ে চোঁখ মারলেন,তারপর হাত দিয়ে চুল
ঠিক করতে করতে আবার বলে উঠলেন ,ইশ! কি অভিমানী আমার বৌ টা,এজন্য তো এত্তগুলা ভালবাসি,
ব্লু শাড়িতে তোমায় কি মিষ্টি দেখাচ্ছে একদম পার্ফেক্ট নতুন বৌ,আজকের পর থেকে তুমি বাড়ি সবসময় শাড়ী পরে থাকবে কিন্তু বাইরে বেরোলে কখনই শাড়ী পরে যাবে না,কথাটা যেন মাথায় থাকে ।বলেই আমার আরো কাছে চলে আসলেন ,
উনি আমার কাছে আসায় আমি পিছন দিকে পিছিয়ে একটু সরে বসলাম,আমার কান্ড দেখে উনি মিটমিটিয়ে হাসতে লাগলেন ,
উনার হাসি আর উনার বলা কথাগুলো শুনে রাগে আমার সমস্ত কাঁপতে লাগল,
তাকে আমি দুই চোঁখে সহ্য করতে পারিনা আর সে বলে কিনা তাকে আমি মিস করছিলাম,আর মামার বাড়ীর আবদার সবসময় শাড়ী পরে থাকবে ,আমাকে হুকুম করা হচ্ছে ,রাগে মন চাইছিল উানার সিল্কি চুলগুলোতে আগুন লাগিয়ে দেই চুলগুলোর সাথে সাথে শয়তানের কারখানায়টাও পুরে ছাই হয়ে যাক,
আমি রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে বলে উঠালাম,
তুমি এমটা কেন করলে নিজে আমাকে ফাঁসিয়ে বিয়ে করে আবার সব দোষ আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিলে,
আমাকে বোকা বানিয়ে সব এমন ভাবে সাজালে এখন সবাইকে সব সত্যিটা বলেও কাউকে কিছু বিশ্বাস করাতে পারছি না,
তুমি খুব খারাপ,তুমি খুব খারাপ একজন মানুষ ,
কিছুতেই আমি তোমার সাথে থাকবো না মা আসলেই আমি মায়ের সাথে এখান থেকে চলে যাবো।
আমার কথাগুলো শুনে কাব্য ভাইয়া একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বলে উঠলেন,
তোমার ফ্যামেলি যদি সত্যি জানে যে আমি তোমাকে জোর করে বিয়ে করেছি তাহলে তারা কখনই এই বিয়ে মেনে নিবে না,আর তোমাকে আমার সাথে থাকতে দিবে না।তার জন্যই তো এতোটা নাটক করতে হলো,তুমি কি জানো সুহাপাখি এই বিয়ের প্লানিং করতে আমার কতটা কষ্ট হয়েছে আমার কত বুদ্ধি খরচ করতে হয়েছে।
কাল সারা রাত জেগে জেগে এই প্লানিংগুলো করেছি।একটুও ঘুমাই নি ।এন্ড ফাইনাললি আম সাকসেসফুল ।
আর তুমি কিনা বলছো আমাকে ছেড়ে চলে যাবে,
আমার শাশুড়ী মা তোমাকে সাথে নিয়ে গেলে তো তুমি যাবো,তোমার চলে যাওয়ার কোনো পথই আমি খোলা রাখবো না,
বলেই উনি আমার কোলে মাথা রেখে ,আমার কোমড় শক্ত করে ধরে পেটে মুখ গুঁজে দিলেন,উনার আচমকা এমন কান্ডে আমার চোঁখ কপালে উঠে গেল ,উনি আস্তে আস্তে আমার পেট থেকে শাড়ী সরাতে লাগলেন আমি উনাকে বাঁধা দেওয়ার জন্য উনার হাত ধরতেই উনি একবার আমার দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে উনার একটা হাত দিয়ে আমার হাত ধরে অন্য হাত দিয়ে শাড়ী সরিয়ে আমার উন্মুক্ত পেটে কিস করে বসলেন,সাথে সাথে আমার সমস্ত শরীর কাটা দিয়ে উঠলো ,পিটের শিড় দ্বারা বেয়ে এক শীতল স্রোত বয়ে গেল,হৃদপিন্ড ছুটলো ট্রেনের গতিতে,উনি আমার হাত ছাড়তেই আমি দু হাত দিয়ে উনাকে ধাক্কাতে লাগলাম,উনাকে যতই আমি ছাড়াবার চেষ্টা করছি ততই উনি আমাকে আরে শক্ত করে ধরতে লাগলেন ,
কিছুক্ষন পর উনি আমার পেট ছেড়ে দিয়ে গলায় মুখ গুঁজলেন,
উনার দু হাত এলোমেলো ভাবে আমার সমস্ত শরীরে বয়ে বেরাতে লাগলো,উনার এমন কান্ডে
আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হলো,আমি চোঁখ বন্ধ করে বড় বড় নি:শ্বাস নিতে লাগলাম ,আর প্রানপণে চেষ্টা করতে লাগলাম উানাকে ছাড়ানোর ,
কিন্তু উনাকে কিছুতে সরাতে পারছিনা,আমি যতই উনাকে সরাবার চেষ্টা করছি উনি ততই আরো শক্ত করে আমাকে আকড়ে ধরতে লাগলেন,
হঠাৎ দরজায় নক হওয়ার শব্দে কাব্য ভাইয়া আমাকে ছেড়ে দাঁড়িয়ে গেলেন , উনি আমাকে ছাড়তেই যেন আমি দেহে প্রান ফিরে ফেলাম,
উনি হাত দিয়ে চুল ঠিক করতে করতে দরজা খুলতে চলে গেলেন,
আমি দড়ফড়ি উঠে অপ্রস্তুত অবস্তায় শাড়ী ঠিক করতে লাগলাম ।
কিন্তু আমি সম্পূর্ন ঠিক হওয়ার আগেই কাব্য ভাইয়া দরজা খুলে দিলেন,
আমি সামনে তাকিয়ে দেখি দরজার ওপারে মা দাড়িয়ে আছেন,
আমি এলোমেলো চুল আর এলোমেলো শাড়ী নিয়ে এক লজ্জাজনক অবস্তায় পরলাম মায়ের সামনে,
অপ্রস্তুত ভাবে সব কিছু ঠিক করতে লাগলাম ,কোনো মতে নিজেকে সামলিয়ে কাব্য ভাইয়ার দিকে আড় চোখে তাকালাম ,
আমি তাকাতেই উনি একটা রহস্যময়ি হাসি দিয়ে বাইরে চলে গেলেন,
উনার এভাবে হাসার কোনো মানেই আমি বুঝতে পারলাম না,
কাব্য ভাইয়া বেরিয়ে যেতেই মা রুমে ঢুকলেন,
মায়ের সামনে এমন অপ্রীতিকর অবস্থায় পরে আমি লজ্জায় ভয়ে ঘামতে লাগলাম,যা যা ভেবে রেখেছিলাম মাকে বলবো সব কিছু গুলিয়ে গেল,কি থেকে কি বলবো ভেবে পরাচ্ছিলাম না ,এমন একটা অবস্থায় দেখার পর মা আদো আমার কথা বিশ্বাস করবেন কি না কে জানে,কোথা থেকে কি শুরু করবো বুঝতে পারছিলাম না,
আমি কিছু না বলে মায়ের সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম।(চলবে )

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে