প্রতারক part 4

0
1534

প্রতারক part 4
#Roja_islam

আমার বিল্ডিং এর প্রায় অর্ধেক ব্যক্তি আমার সামনে উপস্থিত। এর মধ্যে সবাই পরিচিত কারণ অনেল দিন ধরেই থাকি সবাই এক বাড়ীতে কিন্তু। অবাক হলাম বাড়ীর মালকিন কে দেখে এই মহিলা বজ্জাত টাইপ। মানে বুঝাচ্ছি। ক্লাসে যেমন শিক্ষক রা স্টুডেন্ট দের ধমকির উপর রাখে। যে সবাই চুপ কথা বললে ক্লাস থেকে বের করে দিবো হেন তেন!! এই মহিলাও তেমনি আমাদের হুমকি ধমকি দিতেই থাকি হুহ। একদম পছন্দ না আমার। সবাই আমাকে নানান কিছু নিয়ে দেখতে এসেছে।এটা ওটা জিজ্ঞেস করছে। আমি শুধু মাথা দুলাচ্ছি। কিন্তু আমার মাথা অন্য চিন্তার ভর সেই ছেলে সবাইকে বলে দেয়নি তো লনি আমাকে তুলে নিয়ে….! যদি সব বলে দেয় তাহলে তো কিছু ভালো কিছু গুণী আন্টি আছে ওরা পুড়ো শহর আউলিয়ে দিবে। তখন আর এই শহরে থাকতে পারবোনা আমরা এমন অবস্থা হবে। কিছু না হলেও হয়ে যাবো আমি তাদের গায়না বাজনার জন্য ধর্ষিতা। না না আর কিছু ভাবতে পারছিনা আল্লাহ বাঁচাও আমাকে। অটোমেটিক আমার হাত আমার মাথায় চলে গেলো। আর কিছু চিন্তা করতে পারছিনা। গুনি আন্টিদের কথা ভেবে। ভালোকিছু না পারুক খারাপ কিছু পেলেই তারা ভাইরাল করে দেয়। আমি ভাইরাল হতে চাইনা। আমি মাথা নিচু করে আছি। মার কান্নাকাটি কানে আসছে।ভাইয়া শান্ত করার চেষ্টা করছে মাকে। আমার খুব খারাপ লাগছে নিশ্চয় ছেলেটা আমায় বদনাম করে দিয়েছে তাই তো মা মরা কান্না করছে। কি হবে আমার এখন। আমি আবার কেঁদে দিলাম।
.
এর মধ্যে সেই ছেলেটা হঠাৎ এসে সবাই কে উদ্দেশ্য করে বললো।
— ওহ মাই গড আপনারা সবাই কেবিন কি করছে। প্লিজ রোগী কে স্পেস দিন। দেখুন মেয়েটা কাঁদছে!!
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন


সবাই চলে গেলো শুধু বাড়ীওয়ালা আন্টি বাদে। হঠাৎ ছেলেটার কথায় আমি থমকে গেলাম।
— মম তোমায় কি আলাদা করে ইনভাট দিতে হবে। বাইরে যাওয়ার জন্য??
— আই এম গোয়িং রাহুল!! বিহেভিয়ার ঠিক করো তুমি।আর তুমি কিন্তু এখনো বলোনি তুমি হীরকে কোথায় পেলে??
— কাম অন মম। তোমায় বলি আর তুমি পৃথিবীসহ সবাই কে তা জানাও?? তাও ঢোল পিটিয়ে??
— রাহুল!!
— মিথ্যে কি? বললাম মম। মেয়েটা অসুস্থ বলায় তুমি বিল্ডিং এর সবাইকে নিয়ে হাজির। আর… উফফ আর নাই বলি। বাসায় যাও ড্রাইভার ওয়েট করছে।
— যাচ্ছি। তুমিও চলো!!
— আমি বাচ্চা না। আমি বাইক নিয়ে আসছি লেইট ও হতে পারে। ইউ গোঁ!!
.
মহিলা আমার দিকে রক্ত চক্ষুনিয়ে একবার তাকিয়ে রেগে গজগজ করতে করতে চলে গেলো। আর আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি ছেলেটার দিকে!! কি অসভ্য ছেলে কোনো মেনার্স নেই বড়দের সাথে মানে নিজের মার সাথে কি করে কথা বলতে হয়?? কিন্তু বড়সড় ধাক্কাটা কিছুক্ষণ পড় খেলাম যখন মাথায় এলো। বাড়ীওয়ালা আন্টিকে ছেলেটা মা ডাকছিলো। তার মানে এই মহিলার ছেলে। আল্লাহ গজব পুড়াই!! তাই তো বলি বিল্ডিং এ এই পুলা আসলো কই থেকে। মহিলাও বজ্জাত ছেলে তো তার থেকে বেশী। আমি ৪৪০ এর ঝটকা হজম করে শেষ করতেই। ছেলেটা আমার পাশের চেয়ারে বসে পড়লো।
.
— আমাকে লাইক করো না তার কারণ আমি জানি বাট মম কি করছে তোমার সাথে?? মম কে কেনো পছন্দ করো না??হোয়ায়??
— হয়তো আপনার মা বলে!!
.
কথা বলেই আমি মুখ চেপে ধরলা দু হাতে। যতক্ষণে বুঝলাম আমি কোন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি ততক্ষণে অনেক লেইট হয়ে গেলো। আমি ভয়ে ভয়ে ছেলেটার দিকে তাকালাম। বাঁকা হাসছে ছেলেটা!!
— আমি খারাপ আমার আম্মু ও। আর সেই জন্যই তোমাকে…..!
.
এইটুকু বলেই চুপ করে রইলো সে।
আমি বুঝলাম না আমার মনের কথা বুঝলো কেমনে। ঐ সময় মা ভাইয়া। আর বিল্ডিং এর এক বান্ধবী রাইসা এলো। মা আমাকে দেখেই কান্না জুরে দিলো। ভাইয়া ধমক দিয়ে উঠলো।
— মা প্লিজ স্টপ আর কত কাঁদবে। বোন কে দেখবো নাকি তোমাকে বলোতো??
.
আমি ভাইয়াকে থামিয়ে মাকে এক হাতে টেনে পাশে বসালাম। আমার এক হাতে সেলাইন পুশ করা বেশী কথা বলা নিষেধ। তাই এক হাতে মাকে শুধু জরিয়ে ধরলাম। মা শান্ত হলো। এবার ভাইয়া ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করলো।
.
— তুমি ফোন করেছিলে??আমাকে??
— ইয়াহহ!!
— তুমি কই পেলে হীরকে ও কই ছিলো।
.
আমার ভয় করছে বলে দিবেনা তো। তাহলে শুধু শুধু মা ভাইয়া টেনশন করবে। আমি ভয়ার্থ চেহারা নিয়ে ছেলেটার দিকে তাকালাম। কিন্তু সে আমায় অবাক করে দিয়ে বললো।
— বাইরে এসো বলছি!!
— শিয়র!! মা থাকো আসছি!!
.
এই কথা শুনে আমার ভয় বেড়ে গেলো।আল্লাহ নিশ্চয় বলে দিবে। ইশ কি করি কি করি এর মধ্যে মা ওয়াশরুমে গেলেই।রাইসা এসে পাশে বসে বলে।
— কত্ত হ্যান্ডছাম না ছেলে টা?? ইশ সো হ….
.
লাগাম ছাড়া কথা শুনে বললাম!!
— এই এই থাম! কার কথা বলছিস??
— আরে এখন যে বাইরে গেলো হিরা ভাইয়ার সাথে। কত্ত কিউট দেখছিস। আমি তো প্রেমে পড়ে গেছি। এই এক্টু নাম্বার টা নিয়ে দে না।তোর এই অভাগা single বান্ধবী কে এক্টু হেল্প কর আর কত বয় ফ্রেন্ড ছাড়া থাকবো বল তো??
.
আমার রাগ উঠে গেলো। মনে হচ্ছে রেগে বেহুস হয়ে যাই এক দেখায় প্রেম সিরিয়াসলি??
— এই তুই ছ্যাঁচড়ামি থামাবি নাকি কানের নিচে দিবো?? কান খুলে শুনে রাখ আমি না আমার শত্রুকেও এই ছেলের পাশে দেখতে পারবোনা সেই যায়গায় তুই আমার ফ্রেন্ড। হুহ।
— কেনো এই ছেলের সাথে কি প্রবলেম??
— কারণ….! আমি বলতে পারবোনা। তুই বুঝেনে ছেলেটা ভালোনা একদম না।
— তুই মিথ্যে বলছি বুঝেছি তুই ছেলেটার উপর ক্রাশ খেয়েছিস। তাই না। তুই নিজেই…
— থাম থাম আর একটা কথা না। জাস্ট শুনে রাখ পৃথিবীতে সব ছেলে মরে গেলেও এই ছেলের উপর আমি ক্রাশ তো পড়ে বাঁশ ও খাবো না।
— আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ বাঁচাইছে রাস্তা ক্লিয়ার। তুই যাই বল আমি তো প্রেম করমু এই হটির সাথে হোয়াটা পারসোনালিটি, এট্যটিউট উফফ জাস্ট কিলার বয়।
.
কিলার বয় কথাটা শুনে লনিকে মারার দৃশ্যটা স্পট ভেসে উঠলো চোখে। কি জঘন্য ভাবেই মেড়েছে। ভাবতেই বুক কেঁপে উঠলো।
— কি রে কই হারিয়ে গেলী।
— না ভাবছি!!
— কি সত্যি ছেলেটা কিলার বয়!!
— ইয়াহ আমার কিলার বয়।?
.
আমি রাইসার দিকে চোখ বড়বড় করে তাকায় রইলাম কি মেয়েরে বাবা।এর মধ্যে মা চলে এলো। তারপর এক্টু রাইসার বকবকানি কমলো। আল্লাহ বাঁচাইছে। ভাইয়া আর ছেলেটাও চলে এলো। কিন্তু সব ঠিকঠাক ই মনে হলো তাই চিন্তা মক্ত হলাম। সকালে বাসায় চলে এলাম রাতেও ছেলেটা ওখানেই ছিলো। ভাইয়াকে অনেক হেল্প করেছে রাইসাও ছিলো আমার সাথে। মেয়েটা অনেক কথা বলতে চেষ্টা করেছে ঐ অসভ্য ছেলেটার সাথে। কিন্তু ছেলের যেই ভাব জেনো এই জীবনে কোনো মেয়ের সাথে সে কথা বলবে না ভাব দেখলে বাঁচি না।
.
.
বাসায় আসার পড় দুদিন পার হয়ে যায় সব নরমাল আমি ও সুস্থই আছি কিন্তু মন কেমন আছে জানা নেই। দু দিনে অনেক বার ফোন দিতে ইচ্ছে করছিলো শিহাব কে কিন্তু দেই নি থাক না সে ভালো শুধু তাকে ডিস্টার্ব করে কি লাভ সেই ভেবেই আর দেই নি। সন্ধ্যের এক্টু আগে বেলকুনিতে গিয়ে দাঁড়ালাম। আশপাশ দেখতে লাগলাম। বাড়ীর এক্টু সামনেই চায়ের দোকানে চোখ আটকে গেলো। সেই ছেলেটা চার পাঁচ জন ছেলের সাথে দাঁড়িয়ে হাসছে। হাসি দেখে রাইসার বলা প্রশংসা গুলা মনে পড়লো। সত্যি ছেলেটার কোয়ালিটি আছে বলতে হবে অসম্ভব হ্যান্ডছাম। হাসিটাও বাধিয়ে রাখার মতো। ওদের এক্টু পিছনে তাকাতেই আমার চোখ ছানাবড়া। শিহাব তার বাইক এ বসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে রক্তচক্ষু নিয়ে। হ্যাঁ এখনো আমি দূর থেকেই বুঝতে পারি শিহাব এর মুড কেমন। আমার চোখে পানি চলে এলো। নিশ্চয় কালকে ব্যাপার টা জানাইনি বলে রেগে আছে আমার উপর!! মম চাইছিলো। দৌড়ে জরিয়ে ধরে ইচ্ছে মতো কাঁদি। শিহাব আমাকে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে সে বাইক নিয়ে এগিয়ে আমাদের গেইট এর সামনে এলো আমি দৌড়ে নিচে গেলাম। নিচে যেতেই আমাকে অবাক করে দিয়ে শিহাব একটা কাগজ আমার মুখে ছুঁড়ে ফেলে বাইক নিয়ে চলে যায়। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি খুব কষ্ট পাই। তাও চিঠিটা নিচ থেকে তুলে পিছন ঘুরলেও দেখি সেই ছেলে তাকিয়ে আছে তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে। আমি কোনো রকম পাশ কেটে ভেতরে গিয়ে লিফট এর অপেক্ষা করি চিঠিটা হাতে বারবার তাকাচ্ছি। লিফট খুলতেই আমি ভতরে দাঁড়ালাম। আমার পিছনে ছেলেটাও লিফট চলতে শুরু করলেই। ছেলেটা তার ব্লেক শার্ট এর হাতা ফোল্ড করতে শুরু করে। আমি ভয়ে ঢোগ গিলি দু চার টা আমাকে পেটাতে শুরু করবে না তো এই অসভ্য ছেলে। কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে……
.
চলবে?
[ছোট করে দেই? তাহলে একদিন পরপর দিবো বড় করে!! রাজী??]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে