প্রজাপতির রং পর্ব-০১

0
2502

#প্রজাপতির_রং🦋
#Part_01
#Writer_NOVA

এক মণ ওজনের বিয়ের লেহেঙ্গা এক হাতে ধরে, অন্য হাতে শক্ত করে নিজের ২ বছরের ছেলেটাকে কোলে নিয়ে প্রাণপণে দৌড়াচ্ছি।আমাকে থেমে গেলে হবে না।নিজেকে বাঁচাতে হবে,সাথে ওকেও রক্ষা করতে হবে।আমার কলিজার টুকরোর জন্য হলেও নিজের প্রাণ বাঁচাতে হবে। আশেপাশটা পুরো নির্জন। পেছনে একদল কালো পোশাক পরিহিত লোক আমাদের ধাওয়া করেছে।সামনে একটা বিশাল বড় মেহগনি গাছ দেখতে পেয়ে তার আড়ালে লুকিয়ে পরলাম।লোকগুলো ততক্ষণে আমাদের পিছনে চলে এসেছে। গাছের সামনে দাঁড়িয়ে এদিক সেদিক খুঁজতে লাগলো।আমি আমার ছেলেকে বুকের মধ্যে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে যতটা সম্ভব গাছের সাথে লেপ্টে আছি।

—- মেয়েটা গেলো কোথায়? এদিকেই তো আসতে দেখলাম।

একজন হুংকার ছেড়ে তার সাথের লোকদের কে উপরোক্ত কথাগুলো বললো।আমি থরথর করে কাঁপছি। এই বোধহয় ধরা পরে গেলাম।

—- রাস্তাতো একটাই।মেইন রোডের দিকে গেলে তো দেখাই যাইতো।যেহেতু তারে দেখা যায় নাই তার মানে মাইয়া এদিকেই পলাইছে।

—– চারিদিকে খুজতে থাক।মাইয়া এই আশেপাশেই আছে।যদি বাই চান্স, ঐ বাচ্চা আর বাচ্চার মা আমগো হাতের থিকা পালায় যায় তাহলে আমগো বড় স্যার ঘার থিকা মাথা আলাদা কইরা ফালাইবো।

—- স্যার রে কি বিষয়টা জানাইবেন?

—- আরে ধূর, পাগল হইয়া গেছত।আগে মাইয়াডারে খুইজা নেই। তারপর না পাইলে জানামু।

—- ঐ রফিক,অারাফাত, তমাল কথা কম কো।মাইয়াডারে খোঁজ। নয়তো নিজের জীবন হারাবি।একদম জ্যন্ত কবর দিবো।

—- জলদী খোঁজ। কহন থিকা বকর বকর লাগাইছোত।প্রত্যেকটা গাছের পেছনে দেখ।

আমি জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছি।শরীরটা অসাড় হয়ে আসছে।ছেলেটার দিকে তাকিয়ে বুকফাটা চিৎকার আসছে।লোকগুলোকে অন্য দিকে সরে যেতে দেখে আমি হাফ ছারলাম।হঠাৎ আমার মনে হলো আমার ছেলে কোন রেসপন্স করছে না।আমি ওকে বেশ কয়েকবার গালে আলতো করে চড় মেরে ডাকলাম।

আমিঃ নাভান, নাভান। বাবা কি হয়েছে তোর?তুই কথা বলছিস না কেন? এই নাভান, নাভান। বাবা,চোখ খুলো।আম্মু ডাকছে তো তোমায়।তুমি না আমার গুড বয়।তুমি চোখ খুলবে না বলো।

চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। আমার ছেলে কোন রেসপন্স নেই। আমি আশেপাশে তাকিয়ে ওকে নিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। চোখ দিয়ে অলরেডি আমার টপটপ করে পানি পরছে। বর্তমানে ছেলেটা ছাড়া আমার জীবনে কেউ নেই। ওর কিছু হলে আমি বাঁচবো না। শরীরে বিন্দুমাত্র শক্তি নেই। তারপরও উঠে দাঁড়িয়ে উল্টো দিকে দৌড় দিলাম।শুকনো পাতায় মড়মড় শব্দ হতেই লোকগুলো চেচিয়ে বলে উঠলো।

—- জলদী খোঁজ, মেয়ে এখানেই আছে।

–ঐদিক থেকে পাতার শব্দ আসছে।তার মানে মেয়েটা দক্ষিণ দিকেই আছে।জলদী চল।

দৌড়ে দক্ষিণ দিকে গিয়েও লাভ হলো না তাদের। কারণ তার আগেই নোভা অন্য দিকে ওদের দৃষ্টির আড়ালে চলে গেছে ।তমাল এবার রাগী চোখই আরাফাতের দিকে তাকিয়ে বললো।

তমালঃ তুই সিউর আরাফাত,মেয়েটা এদিক এসেছে।

আরাফাতঃ আমি মেয়েটাকে এদিকেই দৌড়ে আসতে দেখেছি।

রফিকঃ সিট, মেয়েটা পালিয়ে গেলো।

তমালঃ পালিয়ে যাবে কোথায়? পুরাটা এলাকা তন্নতন্ন করে চিড়ে ফেল।মেয়েটাকে আমাদের চাই।নয়তো লাখ টাকার চাকরীটা তো যাবেই, সাথে প্রাণপ্রিয় জীবন।

নাঈমঃ এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গোল মিটিং না করে স্যারকে একটা কল করে সব বল।যদি অন্য কারো থেকে স্যার এসব জানতে পারে তাহলে আমরা শেষ।

নাঈমের কথা শেষ হতে না হতেই তমাল তাদের বস রোশানকে কল করলো।দুই বার রিং হতেই অপরপাশ থেকে রোশান খুব বিরক্ত সহকারে কলটা রিসিভ করলো।

রোশানঃ ড্যাম ইট।তোমাদের কি কান দিয়ে কথা ঢুকে না।আমি কতবার বলছি বিজি থাকলে কল করবে না।একটা কথাও কি তোমরা মনে রাখো না?

তমালঃ স্যার, একটা সমস্যা হয়ে গেছে। তাই আপনাকে কল করছি।অনেক বড় সর্বনাশ হয়ে গেছে।

রোশানঃ যদি নোভা তোমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ডেরা থেকে পালায়,তাহলে একটাকেও আস্ত রাখবো না আমি।আই উইল কিল এভরিওয়ান।(রেগে)

তমালঃ স্যার, মেয়েটা সত্যি পালিয়েছে।বাচ্চাটাকে সাথে নিয়ে পালিয়েছে। ওকে আমরা প্রায় একটুর জন্য ধরতে পারিনি।ও এখন এলাকার মধ্যেই আছে।আপনি টেনশন করেন না।আমরা ঠিক খুঁজে নিবো।

রোশানঃ তোমাদের কি আমি এর জন্য টাকা দিয়ে পুষছি? ইচ্ছে করছে মুখ খারাপ করে গালি-গালাজ করি।কিন্তু আমি এখন পাবলিক প্লেসে আছি বলে বেঁচে গেলে।নয়তো খাস বাংলা ছারতাম।এতগুলো লোকের চোখে ধুলো দিয়ে আমার পাখি পালালো আর তোমরা এখনো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আঙ্গুল চুষছো? এতবড় ঘটনা ঘটেছে আমি টেনশন করবো না? আমি এক্ষুণি আসছি। একটাকেও জীবিত রাখবো না। জানে মেরে ফেলবো।আমার এতদিনের আশা-ভরসায় পানি ঢেলে দিয়েছো তোমরা।আর কিছু সময়ের মধ্যে নোভা আমার হতো।কিন্তু তোদের কারণে হলো না। এই দিনটার জন্য আমি কবের থেকে অপেক্ষা করছি।কিন্তু সব শেষ করে দিলি তোরা? একটাকেও ছারবো না আমি,একটাকেও না।আসছি আমি।

সামনে থাকা কাচের টেবিলটাকে লাথি মেরে রুম থেকে বের হয়ে গেলো রোশান।সেখানে থাকা উপস্থিত সব লোক হা করে রোশানের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো। কিন্তু কিছুই বুঝলো না। অন্যদিকে তমালদের ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।রোশান আজ ওদের জ্যন্ত ছারবে তো?

🦋🦋🦋

নাভান এখনো কোন সাড়াশব্দ করছে না।আমার বুকে হাতুড়ি পেটা করছে।বারবার আল্লাহর নাম নিচ্ছি। আমার ছেলেটার যেনো কিছু না হয়।ওর কিছু হলে আমার এই জীবনযুদ্ধ করে কোন লাভ নেই। একবার পেছনের দিকে তাকাচ্ছি আরেকবার ছেলের মুখের দিকে তাকাচ্ছি। দৌড়াতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। ছেলেটার পুরো শরীর নিস্তেজ হয়ে আসছে।ছেলেটার দিকে তাকালেই বুকটা মোচড় দিয়ে উঠছে।লোকগুলোকে আর দেখা যাচ্ছে না।তবুও আরেকবার তাকাতে গিয়ে গাছের শেকড়ের সাথে বেজে ধপ করে পরে গেলাম।উল্টো হয়ে পরায় নাভান কোন ব্যাথা পায়নি।কিন্তু আমার কুনই ছিলে গেছে অনেকখানি।খুব কষ্টে নিজেকে তুলে সামনের দিকে হাঁটতে লাগলাম।আর দৌড়াতে পারবো না।নরম ঘাস হওয়ায় হাঁটতে ওতটা কষ্ট হচ্ছে না।

আমিঃ নাভান বাবা,আরেকটু অপেক্ষা করো।তোমার আম্মু তোমার কিছু হতে দিবে না। বাবা চোখটা খোল না?কোথায় যাবো,কি করবো আমি কিছু জানি না। এদিকে বিকেল গড়িয়ে পুরোপুরি সন্ধ্যা নেমে আসছে। কোথায় গিয়ে একটু আশ্রয় নিবো।আল্লাহ তুমি আমার প্রতি এত পাষাণ হয়ো না।সবই তো তুমি নিয়ে গেলে।আমার ছেলেটাকে না হয় ভিক্ষে দিয়ে দাও।আমার জন্য একটা রাস্তা দেখাও।আমি আর পারছি না।

মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে নাভানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগলাম।হঠাৎ কাঁধে কিছুর স্পর্শ পেয়ে অনেকটা চমকে উঠলাম।একটা প্রজাপতি আমার কাঁধ ছুঁয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিছু না ভেবে আমি প্রজাপতির পিছু নিলাম।একসময় সেটা অন্ধকারে মিলিয়ে গেলো।কিন্তু আমি সামনে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম।দোচালা বিশিষ্ট দুটো টিনের ঘর।আল্লাহ কি তাহলে আমার কথা শুনেছে। আমাকে সাহায্য করার জন্য ঐ প্রজাপতিটাকে পাঠিয়েছে? কিছু না ভেবে টিনের গেট ঠেলে ভেতরে ঢুকে গেলাম।

আমিঃ কেউ আছেন বাড়িতে? কেউ আছেন?থাকলে প্লিজ একটু বের হোন।আমি অনেক বড় বিপদে পরে এখানে এসেছি। আমায় একটু সাহায্য করবেন। আমার বাচ্চাটার জন্য একটু সাহায্য করুন।

ভাঙা ভাঙা গলায় ডাক দিতেই টর্চ লাইট নিয়ে একজন মধ্য বয়স্ক মহিলা বের হলো।তাকে দেখে আমার চোখ খুশিতে চকচক করে উঠলো।আমি দৌড়ে তার দিকে এগিয়ে গেলাম।

আমিঃ চাচী,চাচী আমি খুব বিপদে পরে আপনার বাড়িতে এসেছি। প্লিজ আমার বাচ্চাটাকে বাঁচান।ওর কিছু হলে আমি মরে যাবো।

আলেয়া বেগম সবে মাত্র মাগরিবের নামাজ শেষ করে মোনাজাত ধরেছিলেন।এর মধ্যে একটা মেয়ালি কণ্ঠ পেয়ে তিনি টর্চ হাতে বের হয়ে এলেন।সচারাচর এদিকে বিপদে না পরলে কেউ আসে না।বিকেলের আগে বিদ্যুৎ চলে গেছে এখনো আসার নাম নেই। টর্চ নিয়ে বের হতেই ভারী লেহেঙ্গা সাজে এক মেয়েকে দেখতে পেলেন সে।চোখ মুখে তার ভয় আর বিষন্নতায় ঘেরা।কোলে বছর দুয়েকের একটা বাচ্চাকে দুই হাতে আঁকড়ে ধরে তার পানে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

আলেয়াঃ কেডা তুমি?

মহিলার মুখে কথা শুনে আমি এগিয়ে এসে বললাম।

আমিঃ আমার নাম নোভা।এ আমার ছেলে নাভান।আজ অনেক বড় বিপদে পরে আপনার দ্বারে এসেছি চাচী।আমায় ফিরিয়ে দিয়েন না প্লিজ।

আলেয়াঃ ছি,ছি সে কি কথা। কালী সন্ধ্যা বেলা ছোট বাচ্চা পোলাপাইন নিয়া বাইরে দাঁড়ায় থাকতে হয় না।তইলে বদ জ্বীনেরা বাচ্চার ওপর কুনজর দেয়।ভেতরে আহো।

আমি উনার পেছনে পেছনে ঘরের ভেতরে ঢুকলাম।উনি আমার দিকে একটা বেতের মোরা এগিয়ে দিলেন।

আলেয়াঃ নেও এইখানে বহো।

আমিঃ চাচী এক গ্লাস পানি দিবেন।বড্ড তেষ্টা পেয়েছে।

আলেয়াঃ তুমি বহো আমি নিয়া আইতাছি।

উনি পানি আনতে চলে গেল।আমি ততক্ষণে নাভানের জ্ঞান ফিরানোর চেষ্টা করছি।চাচী আমার দিকে পানির গ্লাস এগিয়ে দিলেন।আমি প্রথমে পানি না খেয়ে নাভানের চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে দিলাম।কিন্তু নাভান চোখ খুলছে না। আমার ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।আমি নাভান বলে একটা চিৎকার দিলাম।

আলেয়াঃ ভয় পাইস না মা।ওর কিছু হয় নাই।দে আমার কাছে দে।বাচ্চা মানুষ হয়তো ভয় পাইছে।নিশ্বাস তো নিতাছে।

চাচী আমার কাছ থেকে নাভানকে নিয়ে খাটে শুইয়ে দিলেন।আমিও তার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম।আমার কাছ থেকে পানির গ্লাস নিয়ে একটু বেশি করে পানির ছিটা মারলেন।এবার পানির স্পর্শ পেতেই নাভান পিটপিট করে চোখ খুললো।আমি ওকে কোলে নিয়ে জাপটে ধরে কান্না করে দিলাম।তখন আধো আধো ভাঙা কণ্ঠে নাভান বললো।

নাভানঃ আআআমমু তুমি আমাকে এথান থেকে নিয়ে চলো।ঐ চাচ্চুগুলো অনেক পতা।তোমার কাছে আসতে দেয় না।

আমিঃ নিয়ে যাবো বাবা।আমি আর কখনো তোমায় একা ছেড়ে কোথাও যাবো না।

আলেয়াঃ দেখে তো ভদ্র ঘরের মেয়ে মনে হয়। তা ছেলে রেখে কি আরেকটা বিয়া বইতাছিলা নাকি?

আমি তার কথার উত্তর না দিয়ে ভাঙা গলায় বললাম।

আমিঃ চাচী, আরেক গ্লাস পানি দিবেন।

উনি আমার কথায় জলদী করে এক গ্লাস পানি নিয়ে এলেন।আমি তার হাত থেকে গ্লাসটা নিয়ে ঢকঢক করে এক নিশ্বাসে পুরো গ্লাস পানি শেষ করে দিলাম।দুদিন থেকে পেটে কিছু না থাকায় ঠান্ডা পানি গলা বেয়ে পেটে পরতেই পেট মোচড় দিয়ে উঠলো।

আমিঃ যদি কিছু মনে না করেন,আজকের রাতটা আমাদের মা-ছেলেকে থাকতে দিবেন আপনার বাসায়।আমি এই ঋণ সারাজীবন মনে রাখবো।

আলেয়াঃ তোমায় দেখে বাপু ভালোই মনে হইতাছে। আমি কাউরে এই অবেলায় বিশ্বাস করি না।কিন্তু তোমার এই সোনার টুকরা পোলারে দেইখা মনডা মোচড় দিছে।তাই তোমগো সাহায্য না কইরা পারলাম না।তোমরা খুশিমনে এইহানে থাকতে পারো।

আমিঃ কি বলে যে আপনাকে ধন্যবাদ দিবো,তা আমার জানা নেই চাচী।তবে এর ঋণ আমি সারাজীবন মনে রাখবো।

আলেয়াঃ তা এমন চান্দের লাহান পোলার এমন দোসা কে?তুমিই বা বউয়ের সাজে কে?তোমার জামাই কই?এর তোমারে তো এই এলাকার মাইয়া মনে হইতাছে না।বাড়ি কই তোমার?

আমি একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে ছেলেকে আরো জোরে বুকে জড়িয়ে ধরে তার দিকে মিথ্যা হাসি দিয়ে বললাম।

আমিঃ আমি ঢাকা থাকি।ভাগ্য দোষে আজ এখানে।সবই আমার কপাল চাচী।যাকে বলে পোড়া কপাল।আমি সত্যিই অলুক্ষ্মিনী। সবাই ঠিকই বলে।নয়তো বাচ্চাটা ছয় মাসের পেটে থাকতে সব হরাতাম না।আর এই দিনও দেখতে হতো না।

আমি জানি উনি আমার কথা কিছু বুঝেনি। বিস্ময় চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি কিছুটা ইতস্তত করেই অসহায় কন্ঠে বললাম।

আমিঃ চাচী এক মুঠ ভাত দিবেন?দুদিন ধরে আমার পেটে কিছু পরেনি।ছেলেটা এখনো বুকের দুধ ছাড়েনি।এখন কিছু না খেলে একফোঁটা দুধও পাবে না।

উনি ভাতের জোগাড় করতে চলে গেলেন।অচেনা একটা মেয়ের জন্য কতকিছু করছে।শহরের মানুষ হলে জীবনেও করতো না। কিন্তু গ্রামের সহজ সরল গৃহবধূ হওয়ায় উনি বিন্দুমাত্র বিরক্ত হননি।বেশ কিছু সময় পর আলুভর্তা, ডাল দিয়ে এক প্লেট ভর্তি ভাত নিয়ে আসলেন।পানির জগটা পাশে রেখে আমার দিকে প্লেটটা এগিয়ে দিলেন।আমি মগে পানি নিয়ে বাইরে থেকে হাত ধুয়ে এলাম। উনি আমার ছেলেকে কোলে নিয়ে নানা কথা বলছে।আমার ছেলে অনেক মিশুক। সবার কোলে যায়।তাই কোন অসুবিধা হয়নি।প্লেট হাতে নিয়ে গপগপিয়ে খেতে লাগলাম। খুব খিদে পেয়েছে। কয়েক লােকমা ভাত মুখে দিতেই বাইরে মানুষের পায়ের আওয়াজ পেলাম।আমার ভয়ে আত্মা শুকিয়ে আসছে।যেই মুহুর্তে চাচী জিজ্ঞেস করলো কে তখুনি____________

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে