পিশাচ পুরুষ পর্ব-০৫

0
781

#পিশাচ_পুরুষ
৫ম পর্ব

সকিনা হতভম্ব হয়ে বিবস্ত্র যুবকটির দিকে ঝুঁকে আছে। যুবকের পুরো শরীর রক্তে চুপসে আছে। শরীরের নানান অংশে আঘাতের চিহ্নও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। লোকটার বুক ওঠা-নামা করতে দেখে বুঝলো এখনো বেঁচে আছে। আশেপাশে তাকিয়ে দেখল কেউ নেই। সে কী লোকজনকে ডাকবে! হঠাৎ যুবকের মুখের দিকে তাকিয়ে কেমন একটা মায়া অনুভব করলো সে। এমন রূপের মোহে সে তার এই বয়সে আর কারো উপর মোহিত হয়নি। সেদিন ভোরে যুবকটিকে দেখার পর কয় রাত স্বপ্নে , কল্পনায় শুধু এই মুখটাই দেখেছে সে। এখন তাই কাছে পেয়ে ইচ্ছা করছে নিজেই সেবা করে ওকে সুস্থ করে তুলবে। হয়তো ছেলেটা বাকি জীবন তার উপর কৃতজ্ঞ হয়ে থাকবে। আরো কত কী ঘটতে পারে! কিন্তু তার তুলনায় লোকটা এত বিশাল যে তার পক্ষে ওকে ঘরে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব। তবুও সে একহাত লোকটার মাথার পিছু নিয়ে মাথাটা উঁচু করার চেষ্টা করল। যুবক হঠাৎ করেই নড়ে উঠলো, মিটিমিটি করে তাকালো। সকিনার হৃদকম্পন বেড়ে যাচ্ছে। লোকটা এবার তার হাতে ভর দিয়ে দাঁড়াতে চাইছে বুঝতে পেরে শক্ত করে পেছন দিয়ে তার কাধটা চেপে ধরলো সে। যুবক এবং তার দুজনের চেষ্টায় দুজনেই দাঁড়াতে পারলো। লোকটার অর্ধেক ভর সকিনার শরীরে পড়ায় সকিনার পা অবশ হয়ে রইলো, চলতে পারছে না। লোকটার পুরোপুরি জ্ঞান নেই। তবুও ধীরে ধীরে যেন যুবকের শরীরে শক্তি ফিরে আসতে লাগলো। সে সকিনার গায়ে সামান্য ভর রেখে নিজ শক্তিতেই হাটতে লাগলো তন্দ্রাচ্ছন্নের মতো।

সকিনা বুঝতে পারলো ওর ঘরে লোকটাকে নিয়ে গেলে বাবা নানান প্রশ্ন করবেন। ছোট ছেলে-মেয়েরা কোনো মূল্যবান খেলনা কুড়িয়ে পেলে যেমন কাউকে না জানিয়ে আপন কোনো বাক্সে লুকিয়ে রাখে, ভাবে ওটা দেখলেই কেউ নিজের বলে দাবি করে নিয়ে যেতে পারে , তেমন ভাবেই যুবকটাকে নিজের একান্ত জিনিস বলে মনে হচ্ছে সকিনার কাছে। সে ছাড়া একজনও এই লোকটার কথা জানতে পারলেও যেন যুবকটা তার থেকে আলাদা হয়ে যাবে। কেড়ে নেবে কেউ। এমন অচেনা এক যুবকের জন্য এত টান অনূভব করা যে স্বাভাবিক কিছু নয় সেই বোধটাও তার নেই।

তাদের বাড়ির উল্টোপাশে একটা পরিত্যাক্ত ঘর আছে। বাবার চোখ যখন ভালো ছিল তখন কৃষির নানান সরঞ্জাম সেই ঘরটায় থাকতো। লোকটাকে সেই ঘরে নিয়ে গিয়েই মেঝেতে শুইয়ে দিল সে। দ্রুত ওখান থেকে বেরিয়ে বাবার ঘরে গেল, বাবা তখনো উদগ্রীব হয়ে আছেন কিসের শব্দ ছিল ওটা জানতে।সকিনা আমতা আমতা করে বলল, গাছই ভেঙে পড়েছিল। বাবা ঘুমিয়ে পড়লে বাবার একটা লুঙ্গি নিয়ে আবার লোকটার ঘরে পৌঁছল। বালতি আর মগ এনে একটা গামছায় ভিজিয়ে লোকটার সমস্ত শরীর মুছে দিল সে, রক্ত মুছতে গিয়ে বমি বমি লাগলো তার, তবুও পরিস্কার করতে লাগলো। এরপর পরিয়ে দিল লুঙ্গিটা। হতভম্ব হয়ে লক্ষ করলো লোকটার শরীরের ক্ষতগুলো আপনা-আপনিই সেরে উঠছে। নিজের ঘর থেকে চাদর বালিশ এনে সাধ্যমত লোকটার শোয়ার ব্যবস্থা সারলো। আর কী করবে বুঝতে পারছে না। লোকটার জ্ঞান এখনো ফেরেনি। সারারাত লোকটার পাশে থাকা তার পক্ষে সম্ভব নয়। বাবার চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর থেকেই সকিনার তার বাবার কাছ থেকে ফুরসৎ মেলে না। একটু পর পর ঘুম থেকে উঠে সকিনার কণ্ঠ শোনার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেন তিনি। কিছুটা দ্বিধা নিয়েই সে ঘরটা বাইরে থেকে তালা দিয়ে নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়লো। অনেকক্ষণ ছটফট করতে করতে এক পর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়লো।

যখন ঘুম ভাঙলো তখন চমকে উঠে বিছানা থেকে নামলো সে। মনে পড়ে গেল গত রাতের লোকটার কথা। পুরোটাই কী স্বপ্নে ঘটেছে! নিজের জামার দিকে তাকিয়ে সংকুচিত হয়ে গেল। জায়গায় জায়গায় রক্ত লেগে রয়েছে। পাশের ঘরে গিয়ে দেখল বাবা ঘুমাচ্ছে এখনো। জামা পাল্টে বাইরে বেরিয়ে সেই তালাবদ্ধ ঘরের বাইরে এসে দাড়ালো। তালা খুলে ভেতরে যেতে যেতে বারবার মনে হচ্ছিলো ভেতরে গিয়ে দেখবে কিছুই নেই। কিন্তু না, ঐতো চাদরের উপর শুয়ে আছে সুদর্শন মানব মূর্তিটা। দিনের আলোয় তার সৌন্দর্য্য যেন হাজারগুণ বেড়ে গেছে। এত সুন্দর কোনো পুরুষ মানুষ হয়! ভাবে সে, ছোটবেলায় যেমন রূপকথা শুনতো ওসব কী সত্যি! ছেলেটা কী কোনো রাজপুত্র, পথ হারিয়ে এখানে চলে এসেছে!

লোকটাকে দেখে এখন পুরোপুরি সুস্থ মনে হচ্ছে। মিটিমিটি করে চোখ খুলে চাইলো লোকটা। সকিনার বুক ধক ধক করছে। যুবকের কণ্ঠ থেকে মিষ্টি মিহি আওয়াজ বেরিয়ে এলো, ‘কে তুমি? আমি এখানে কেন?’

কিছুটা শান্ত হয়ে সকিনা উত্তর দিল, ‘গতরাতে তুমি আমার ঘরের পেছনে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলে। আমি তোমার শরীর পরিস্কার করিয়ে এখানে নিয়ে আসি। তুমি কে? তোমার বাড়ি কোথায়?’

ছেলেটার মাথা ব্যাথায় কেঁপে উঠল যেন। দুই হাতে মাথা চেপে ধরলো নিজের, ‘ হ্যা আমার মনে পড়ছে সব। আমি জঙ্গলের ওপাশের একটা গ্রামে বাস করি। কাঠ কাটতে জঙ্গলে গিয়েছিলাম। কিন্তু একসময় ভেতরে চলতে চলতে পথ হারিয়ে ফেলি। সন্ধ্যা নেমে আসে, হঠাৎ মুখোমুখি হয়ে যাই একটা অদ্ভুত সাদা জন্তুর। ওটা আমার উপর আক্রমণ চালায়। আমি কুড়াল দিয়ে কোপ মারি। এরপর ছুটতে থাকি পাগলের মতো। ওটা তবুও পিছু নেয় আমার। ছুটতে ছুটতেই বোধহয় এখানে চলে এসেছিলাম।’

‘কিন্তু তোমাকে আমি এর আগে এক ভোরে দেখেছিলাম যে!’

‘আমাকে! আমি এই প্রথম এখানে আসলাম!’

‘হতে পারে! কিন্তু…. যাই হোক!’

সকিনার লজ্জায় মুখ লাল হয়ে এলো। সে যেন রূপকথার গরিব কাঠুরের এক রূপসী কন্যা, সত্যিই পথ হারিয়ে এক রাজপুত্র তার কাছে এসে হাজির হয়েছে। যুবকটা হঠাৎ বলল, ‘আমার না, খুব ক্ষুধা পেয়েছে!’

বাবার কথাও মনে পড়লো সকিনার। বাবাওতো খাবার চাইবেন একটু পরে। লজ্জা মাখানো মিষ্টি কণ্ঠে যুবকটিকে সে বলল, সে যাতে কোনো শব্দ না করে আর বাইরে না যায়। লোকজন তাকে এখানে দেখলে বিপদ হবে। একটু পরেই সে এসে খাবার দিয়ে যাব। যুবকটি বাচ্চার মতো সরল ভাবে জানালো সে যা বলবে তাই হবে, সে কোথাও যাবে না। এরপর খাবার তৈরি করতে ঘর থেকে বের হয়ে গেল সে।

গ্রামবাসীরা সারারাত আতংক নিয়ে ঘরে লুকিয়ে থাকলেন। গতরাতে হিংস্র জন্তুটির সাথে কুকুরগুলোর লড়াইয়ের বীভৎস দৃশ্য মাথা থেকে বের করতে পারছে না কেউই। কিন্তু এরপর যা ঘটলো! যে ভূমিকম্পের নজির তারা দেখেছিলেন ভেবেছিলেন পুরো গ্রাম মাটি ফুঁড়ে তলিয়ে নিয়ে যাবে তা। জঙ্গল থেকে ছুটে আসবে অমন আরো ভয়ানক কিছু জন্তু। তেমন কিছুই যখন ঘটল না , তারা হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। সকাল বেলা ভয়ে ভয়ে গ্রামের শেষ মাথায় এসে পৌঁছুলেন কয়েকজন। অবাক হয়ে দেখলেন গত রাতের তাণ্ডবের বিন্দুমাত্র চিহ্নও নেই প্রান্তরের কোথাও। পুরো জায়গাটা থমথমে নীরবতা দিয়ে মেখে রয়েছে। একবিন্দু রক্ত কিংবা, মৃত কুকুরগুলোর কোনো অস্তিত্বই নেই এখানে। বড় জন্তুটার পরিণতি কী হয়েছে তাও তারা জানেন না। উত্তেজনা আর আতংক তাদের গিলে খাচ্ছে এখন অজানা ভয়ে। সব কিছু কে পরিষ্কার করলো, কিভাবে হলো এমন! রাত আবার নামবে এই গ্রামে। গ্রামের লোকদের ভাগ্যে কী বিপদ অপেক্ষা করছে তা তারা কেউ জানে না।

এরপর প্রায় সাতদিন কেটে গেল। গ্রামের লোকেরা জঙ্গল থেকে সেই জন্তুটার আর কোনো হুংকার শুনতে পায়নি, না তার উপস্থিতির কোনো চিহ্ন পেয়েছে। তাদের জীবন ধীরে ধীরে আবার স্বাভাবিক হতে লাগলো।

অবাক করার বিষয় হচ্ছে এই সাত দিন ধরে যে সকিনাদের বাড়ির একটা ঘরে একজন অচেনা যুবক বসবাস করছে তা সকিনা ছাড়া আর কেউই জানে না। এমনকি তার অন্ধ পিতা হোসেন মিয়াও না। সেই ঘরের থেকে যুবক কখনই বের হয় না। সকিনা শুধু তিনবেলা লোকটাকে খাবার দিতে ঘরটাতে যায়। আশেপাশের লোকজনও তেমন তাদের বাড়িতে আসে না। সকিনার যে কয়জন বান্ধবী ছিল তারা ওর সাথে দেখা করতে আসলে খারাপ ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেয় সকিনা। ভাবে যুবককে দেখলে তারা সকলেই নিজেদের বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইবে। সে শুধু একা সব সময় লোকটার কাছে থাকতে চায়। রাতে বাবা ঘুমলেই সে চলে যায় লোকটার ঘরে। প্রায় সারারাত গল্প করে দুজনে। লোকটার কাছে তার জীবনের গল্প শোনে। নিজের গল্প বলে। লোকটা খুব আগ্রহ নিয়ে তার কাছে তার গ্রাম, গ্রামের মানুষের জীবনের বর্ণনা শোনে, তারা জঙ্গলে কেন যেতে চায় না , তাদের ভয় গুলো জানতে চায়, কিসের মোহ তাদের বেশি টানে তা নিয়ে আলোচনা করে।

একবার সকিনা লোকটাকে জিজ্ঞেস করেছিল এতদিন এখানে থাকা ঠিক হবে না, তুমি তোমার বাড়িতে ফিরে যাবে না! যুবক বলেছে তার শরীর বাইরে থেকে ঠিক লাগলেও ভেতর থেকে অনেক দুর্বল। যখন সে পুরোপুরি সুস্থ হবে সেদিন যাবে। আর সকিনাকে ছেড়ে যেতেও তার ইচ্ছা করে না। সকিনার খাবারের প্রশংসা করে। সকিনা লজ্জায় মুখ লাল করে ফেলে।

যুবক আরো বলে , তার গ্রামে তাকে ফিরে যেতে হলে প্রায় একদিন একরাত জঙ্গলের ভেতর দিয়ে চলতে হবে। সামনের পূর্ণিমার তিথিতেই সে রওনা হবে যদি সকিনা যেতে দেয়। এবং বলে এর ভেতর তার কথা গ্রামের কাউকেই না বলতে কেননা, গ্রামের মানুষেরা বিশ্বাস করে জঙ্গলের ওপারে যে গ্রাম আছে ওখানে পিশাচেরা বসবাস করে। তাকে পিশাচ ভেবে ক্ষতি করতে পারে সবাই। সকিনা এমনিতেও কাউকে বলতো না। এভাবেই চলতে থাকে।

আরো এক সপ্তাহ কেটে গেল। একদিন যুবকটি সকিনার কাছে জানতে চাইলো , তোমার বাবার চোখ অন্ধ হলো কী করে? সকিনা জানালো, হোসেন মিয়া একদিন ক্ষেতে কাজ করছিল। এমন সময় কয়েকটা পোকা নাকি তার দুই চোখে ঢুকে যায়। তার চোখ জ্বালা করতে থাকে। সে বাড়িতে চলে আসে। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ভয়ানক ফুলে যায় চোখজোড়া। অনেক ভেষজ ঔষধ, ঝাড়ফুঁক করেও কোনো কাজ হয়নি। তিনদিন চোখ অমন ফুলে থাকলো। তারপরে ফুলা ধীরে ধীরে কমে এলো। কিন্তু হোসেন মিয়ার চোখে আর দৃষ্টি ফিরে এলো না। হোসেন মিয়া ছাড়া সকিনার আর কোনো আত্মীয় বেঁচে নেই পৃথিবীতে। মায়ের, ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর কাহিনী তাকে শোনায়।

যুবকের মুখ দেখে বোঝা গেল যুবক কষ্ট পেয়েছে কথাগুলো শুনে। এরপরেই হাসিমুখে সে বলল, তোমার বাবার চোখ ভালো করার একটা উপায় আমার জানা আছে। সকিনা প্রায় লাফিয়ে উঠলো। যুবক বলল, ওই জঙ্গলে এমন একটা বড় মোটা ক্ষমতাবান গাছ আছে যেটার অসাধ্য কোনো কাজ নেই। সব রোগের ঔষধ আছে ওটার শিকড়ে। সেই গাছের শিকড়ের একটু রস তার বাবার চোখে দিলেই সে ঠিক হয়ে যাবে পুরোপুরি। সকিনা বিশ্বাস করতে চাইলো না প্রথমে। কিন্তু যুবক বলতে লাগলো সে নিজের চোখে কত মানুষকে ঠিক হতে দেখেছে তার গ্রামের। গাছটার কত ক্ষমতা! শুধু রোগের ঔষধ নয় ওই গাছটার কাছে চাইলে মুহূর্তেই ধন-দৌলত দিয়ে মানুষকে ধোনি করে দিতে পারে।

প্রথমে অবিশ্বাস করলেও ধীরে ধীরে তার মনে হলো লোকটা হয়তো সত্যি কথাই বলছে। কত অদ্ভুত জিনিস ইতো থাকতে পারে জঙ্গলে। অমন অদ্ভুত সাদা একটা জন্তুও যে ঐ জঙ্গলে থাকতে পারে তাও তো কেউ ভাবতে পারেনি। যুবকটি তাকে বলল, সে জঙ্গলের ওই গাছটা চেনে। এক রাতের মধ্যেই ওখানে গিয়ে শিকড় নিয়ে আসা সম্ভব। আজ পূর্ণিমা রাত , সকিনা যদি চায় ওকে সে ওই গাছটার কাছে নিয়ে যেতে পারে। সকিনা দ্বন্দ্বে পরে রইলো, লোকটা তাকে আশ্বাস দিল অনেক। বাবা আবার আগের মতো দেখতে পারবেন এটা ভেবেই সে পুলক অনুভব করছে। গ্রামের কেউই জানতে পারবে না তাদের যাওয়ার কথাটা। সকিনা সিদ্ধান্ত নিল আজ রাতেই জঙ্গলে যাবে এই যুবকের সাথে সে শিকড় জোগাড় করতে। মধ্যরাত হোসেন মিয়া সহ গ্রামের প্রায় সব লোক ঘুমিয়ে রয়েছেন। জোৎস্নার আলোয় সকিনা যুবকের পিছু পিছু গভীর জঙ্গলে প্রবেশ করলো।………………………………….
.
.
. . . . চলবে . . . .
.
.
লেখা: #Masud_Rana

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে