নেশা তুই আমার Part:4

0
3505

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
#Part:4
?
“”ভালোবাসো আমায়?””
কথাটা বলেই ভাইয়ার চোখে তাকালাম উত্তর খোঁজার চেষ্টায়।কিন্তু আরমান ভাই আমার সব চেষ্টায় জল ঢেলে আমায় বিছানার ওপর ছুড়ে ফেলে বলল
“” বয়স কত তোর?এই বয়সেই প্রেম পিরিতির কথা ভাবিস লজ্জা করে না?আগে বড় হয়ে নে তারপর নাহয় এসব কথা বলতে আসিস।আর তার আগে হাতে মলম টা লাগিয়ে নে।””
“”এটাও তুমি নিজে লাগিয়ে দেবে না।মারার সময় তো নিজের হাতেই মেরেছিলে।””
“”চাকর নই তোর যে মলম লাগিয়ে দেব।ইচ্ছে হলে মলম লাগা না হলে ছুড়ে ফেলে দে।ডাফার কোথাকার।””
কথাটা বলেই গটগট করে রুম থেকে বেরিয়ে গেল আরমান ভাই।আমি অবাকের চরম সীমায়।কি এমন বললাম যার কারনে এতো রাগ দেখালো।তবে যাই হোক ভাইয়া আমায় এটা বলেনি যে ও আমায় ভালোবাসে না।বলেছে আমার বয়স হয়নি।কিন্তু আমি তো আঠারো প্লাস আর কতো বড় হতে হবে আমায়?আর যদি প্রেম করারই বয়স হয়নি তাহলে যে ও আমায় এই ভাবে যখন তখন চুমু খায় সেটার বয়স হয়েছে আমার?ধুর বাবা যতই ভাবছি ততই কনফিউশন।আর ভাববো না।তাতে যা হয় হোক।আমার কি হুহ?আমি তো জানি আরমান ভাই আমায় কতটা ভালোবাসে।শুধু সেটা মুখেই স্বীকার করেনা।আর আমি তো তার মুখ থেকে শোনার জন্য পাগল হয়ে আছি।ইসস যখন ভাইয়া আমায় ভালোবাসি বলবে তখন আমার অনুভুতি টা কেমন হবে ভাবতেই গা শিরশির করে উঠছে।উফস।
?
সকাল হতেই আমি আরমান ভাইয়ের ঘরে উঁকি মারা শুরু করলাম।একটু দেখে তো নেই কি করছে এই লোকটা।তার ঘরের দরজা খুলে মাথা ভেতরে নিয়ে উকি মারলাম।কিন্তু একি আরমান ভাই কোথায়।পুরো রুমে কোথাও নেই।হতাশ হয়ে যখন চলে আসব তখনই দেখলাম ভাইয়া ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো।হাতের টাওয়ালটা দিয়ে মাথার চুল গুলো ঝারছে।খালি বুক একটা কাচা হলুদ গ্যাবাডিং এর প্যান্ট পড়া অবস্থায় রয়েছে।ইসস গোসল করার পর একটা লোককে বুঝি এতো সুন্দর লাগে।আমি তো জানতাম এই সৌন্দর্যটা শুধু মেয়েদের জন্য।কিন্তু আজ আরমান ভাই কে দেখে সেই ভুল টাও ভেঙে গেল।ভাইয়ার মাসালওয়ালা বডি…ইচ্ছে করছে একটু ছুঁয়ে দেখি।এ আমার সপ্ন নয় তো।একমাত্র সপ্নের রাজকুমার ই এতটা সুন্দর হতে পারে।ভাইয়া ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে কাবার্ডের দিকে এগোতেই আমার মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি খেলে গেল।ভাইয়া কাবার্ড খুলতেই আমি তার হাতের নিজ দিয়ে গিয়ে সোজা তার সামনে দাড়ালাম।সামনে আরমান ভাই পেছনে খোলা কাবার্ড আর দুই দিকে উনার দুই হাত আমাকে তার বন্দিনী করে রেখেছে।নিজেকে তার বন্দিনী করতে পেরে সত্যিই আজ নিজের প্রতি ভীষন গর্বিত গর্বিত অনুভব হচ্ছে।
“”তুই?””
“”কেন অন্য কারো আসার কথা ছিল বুঝি?””
আমার কথা শুনে আরমান ভাই চোখ মুখ শক্ত করে আমার দিকে এক কদম এগিয়ে বলল
“”তুই আমার ঘরে কি করছিস””
“”এই এই কথায় কথায় এরকম আমার কাছে আসার বাহানা একদম খুঁজবে না বলে দিচ্ছি।””
আমার কথায় ভাইয়া ভ্রু আরো বেশি কুঁচকে গেল।
“”তুমি আমার অনেক ক্ষতি করেছ।””
“”আচ্ছা কি কি ক্ষতি করেছি শুনি””
দাঁতে দাঁত চেপে কথাটা বলতে আমি আমার ঠোঁট গলা আর হাত দেখিয়ে বললাম
“”দেখ কত কত জায়গায় ক্ষত করেছ তুমি আমার।ভীষণ ব্যথা হচ্ছে আমার।আর তাই আমাকে ব্যথা দেওয়ার অপরাধে আজ পানিশমেন্ট পেতেই হবে।””
“”হোয়াট?পানিশমেন্ট তাও আবার আমি?””
“”হ্যা তুমি।একটু দূরে গিয়ে দাঁড়াও।””
আরমান ভাইয়ের বুকে এক আঙুল রেখে তাঁকে একটু দুরে সরিয়ে দিয়ে আমি উল্টো ঘুরে কাবার্ডের কাপড় এদিক ওদিক করা শুরু করলাম।
“”কি করছিস কি মিতু তুই?আমার কাপড় চোপড় এইভাবে অগোছালো করছিস কেন?””
আমি ভাইয়ার কথায় কান না দিয়ে কাপড় অগোছালো করতে ব্যস্ত হয়ে রইলাম।প্রায় বেশ কিছুক্ষণ খোঁজার পর আমি একটা ফ্যাকাশে রঙের শার্ট হাতে ভাইয়ার দিকে ঘুরে দাড়ালাম।
“”আজ এই শার্টটা পরেই তুমি ভার্সিটি যাবে।আমার পছন্দের রঙ।””
“”তুই কোন জাতের চোখ নিয়ে ঘোরাফেরা করিস?এটাও কারো পছন্দের রঙ কি করে হতে পারে?””
“”আমি কিচ্ছু জানি না।তুমি এটা পরবে মানে এটাই পরবে।””
“”ইম্পোসিবল আমি এটা পরছি না।সর আমার সামনে থেকে।””
“”আচ্ছা কি করে না পড় আমিও দেখি।””
বলেই কাবার্ডের লকে লেগে থাকা চাবিটা ঘুরিয়ে কাবার্ড লক করে চাবি খুলে হাতে নিয়ে আরমান ভাইয়ের সামনে থেকে সরে এলাম।
“”এবার আপনি কি পরবেন হুম।এই শার্ট ছাড়া আপনার কাছে কোনো উপায় ও নেই।”
“”মিতু খুব বাড়াবাড়ি করছিস কিন্তু।চাবি দে আমাকে।””
“”না দেব না।””
“”মিতু স্টপ দেয়ার।চাবি আমায় নয়তো খুব খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু।””
“”যা হওয়ার হোক।আমি চাবি দেব না মানে দেব না।””
আরমান ভাই আমাকে ধরার চেষ্টা করছে কিন্তু আমি কখনো টেবিলের আড়ালে যাচ্ছে তো কখনো বিছানার আড়ালে।আমি জানি এই ঘরে থাকলে আমায় ধরা পরতেই হবে তাই আমি সুযোগ বুঝে ঘরে থেকে বের হওয়ার জন্য দরজার দিকে পা বাড়াতেই পেছন কেউ আমার হাতে হেচকা টানে সোজা পাশে দেওয়ালে চেপে ধরল।হঠাৎ এমন হওয়ায় আমি ভয় পেয়ে যাই।ভয়ের চোটে আপনা থেকেই দুই চোখ বন্ধ হয়ে আসে।কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজেকে সামলে পিটপিট করে চোখ খুলতেই দেখি আমি আরমান ভাইয়ের কবলে পরেছি।আরমান ভাই আমার দুই হাত দুই পাশে দেওয়াল চেপে ধরে আমার খুব কাছে এসে দাঁড়িয়ে আছে।বুঝলাম এবার আর রক্ষে নেই আমার।
“”বলেছিলাম দাঁড়াতে না নয়তো খুব খারাপ হয়ে যাবে।””
“”স…সরি।””
“”তোর সরি দিয়ে আমি কি করবো?””
বলেই আমার হাত থেকে চাবিটা নিয়ে নিল।
“”তোকে আমি পরে দেখে নেব।””
কথা বলেই আরমান ভাই আমাকে ছেড়ে কাবার্ডের দিকে যেতে লাগল।তখনই রুমের ভেতর দরজা খুলে কাউকে ঢুকতে দেখে আমি চমকে উঠলাম….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে