নেশা তুই আমার Part: 6

0
3203

#নেশা_তুই_আমার
#Mst.Mitu Rahman
#Part: 6

কলেজ থেকে বাড়ি ফিরেই জুঁই-বিথির সাথে আড্ডা দিতে বসেছি।আজ কিছুতেই এদের নিজের থেকে আলাদা করা যাবে না।ভাইয়ার হাত থেকে বাঁচতে হলে আজ এই দুই জমজ বোনদের ই আমার কাজে লাগাতে হবে।সেই বিকেল থেকে রাত অবধি একবারের জন্যেও নিজেকে ভীরের থেকে আলাদা করিনি। জুই বিথি মা বাবা ছায়া আরিফ সকলেই আজ আমার উপর প্রচন্ড বিরক্ত।কারন আমি কোনো কারন ছাড়াই কথা বলে যাচ্ছি।আমি কি বলছি আমি নিজেও জানিনা।শুধু জানি আজ যে করেই হোক আমায় ভাইয়ার হাতের শাস্তি থেকে বাঁচতে হবে।কিন্তু পুরো সময় টা এমন বকবক করে কাটিয়ে দিলেও রাতের বেলা ঠিকি আমায় আমার ঘরে ঢুকতে হলো।ঘরে ঢোকার সাথে সাথেই আমি দরজা ভালো করে বন্ধ করে দিলাম।যাতে ভাইয়া আর ঘরে না আসতে পারে।দরজার লক ভালো করে চেক করে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে পিছু ঘুরতেই বিছানার ওপর কাউকে দেখে চমকে উঠলাম।ঘরের ডিম লাইটের মৃদু আলোয় সবকিছুই আবছা আবছা।কিছুক্ষণের মধ্যেই এই আবছা আলোয় চোখ সয়ে এলে বিছানার ওপর ভালো করে চোখ বোলানোর চেষ্টা করতেই আমার চোখ চোড়ক গাছ।এ তো ভাইয়া।বিছানায় বসে দুই পা মাটিতে ছড়িয়ে রেখেছে।এই রে কাম সেরেছে।এখন কি করব?আরমান ভাই আমায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে নিজেই উঠে আমার দিকে এগোতে লাগল।ভাইয়া কে নিজের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে ভয়ে আমার বুক ধুকপুক ধুকপুক করা শুরু করে দিয়েছে।আমি নিশ্চিত আমার এই বুকের ধুকপুকানি ভাইয়ার কান অবধি পৌছচ্ছে।ভাইয়াকে আমার খুব কাছে আসতে দেখে নিজের অজান্তেই আমার পা পেছনের দিকে চলতে লাগল।পিছনে যেতে যেতেই আমার পিঠ দেওয়ালের সাথে ঠেকে গেল আর ভাইয়া আমার খুব কাছাকাছি চলে এলো।ভাইয়ার উষ্ণ শ্বাস আমার মুখের ওপর পরছে।এখন কী করব আমি।বুদ্ধি করে পাশ কাটিয়ে চলে আসার চেষ্টা করতেই ভাইয়া তার দুই হাত আমার দুই পাশের দেওয়ালে রাখল।আজ আমি আবার তার বন্দিনী হলাম।ভাইয়া এতো কাছে চলে আসায় আমার প্রায় দম বন্ধ কর অবস্থা।নিজের দম বন্ধ রাখার চেষ্টায় শ্বাসের ঘনত্ব আরো বেশি বেড়ে গেল।চোখ বন্ধ করে ভাইয়ার পরবর্তী পদক্ষেপের অপেক্ষা করতে লাগলাম।তখনই ভাইয়া তার মন কাড়া ভারী কন্ঠে বলে উঠল
“”কান ধর।””
কথাটা শুনেই আমি চট করে চোখ মেলে তাকালাম।
“”কি হলো আমার কথা কানে গেল না?””
“”আআসলে ভাইয়া….””
“”চুপচাপ কান ধর।””
বুঝলাম কান ধরা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।কলেজেও মাস্টারগিরি খাটাবে খাটাবে আবার বাড়িতেও খাটাবে অসহ্য।মনে মনে হাজার গালি দিতে দিতে আমি দুই হাতে কান ধরলাম।
এবার ভাইয়া গিয়ে আয়েশ করে বিছানার উপর বসতে বসতে বলল
“”এবার এক পা উপরে তোল।””
ল্যাও ঠ্যালা!কান ধরাতেই শেষ নয় এখন আবার পাও উপরে তুলতে হবে।আজ তো আমি গেছি।কেন যে ওই হারামিটাকে মারতে গেলাম কে জানি।আমি নিশ্চিত আজ আর পায়ের ব্যথায় রাতে আমার ঘুম হবে না।প্রায় দুই মিনিট এক পায়ে দাঁড়িয়ে থেকে আমার পা ধরে এসেছে।তার পরো জোড় করে আরো এক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর আর পারলাম না।বাধ্য হয়ে বাম পা ফেলে ডান না উপরে তুলে নিলাম।মানে পা এক্সচেঞ্জ করে নিলাম।আরে বাহ ভাইয়া তো কিছুই বুঝতে পারল না।অন্ধকারে হয়তো লক্ষ করেনি।আমার তো বেশ ভালোই হলো।প্রায় আধাঘন্টা ধরে কান ধরে এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছি।আর এই আধা ঘন্টায় আমি প্রায় পনের ষোল বারের মতো পা এক্সচেঞ্জ করেছি।আর ভাইয়া সেটা বুঝতেও পারেনি।ইস কি যে ভালো লাগছে।কি সুন্দর একটা শাস্তি।এমন শাস্তি পেলে তো আমি সারাজীবন অপরাধ করে যাবো হিহি।
আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মনে মনে প্রলাপ বকছি এমন সময় ভাইয়া কন্ঠ কানে এলো।
“”মিতু এদিকে আয়।””
আমিও কান ছেড়ে লাফাতে লাফাতে ভাইয়ার সামনে গিয়ে দাড়ালাম।
“”শাস্তি শেষ ভাইয়া?এইটুকু শাস্তিই ছিল বুঝি ?আমি তো আরো কিছুক্ষণ থাকতে পারতাম হুম।””
এবার ভাইয়া শোয়া থেকে উঠে বসে বলল
“”শাস্তি শেষ কোথায়?এখনো তো শুরুই করলাম না।””
ভাইয়ার কথায় আমি যেন আকাশ থেকে পরলাম।বলে কি এই লোকটা শাস্তি এখনো শুরু হয়ইনি তো আমায় এতক্ষন কান ধরিয়ে এক পায়ে দাঁড় করে রাখার কারন কি ছিল?
“”শশাস্তি শুরু হয়নি মানে?””
“”কয়বার পা বদলেছিস?””
“”তওবা তওবা আমি আর পা বদলেছি?কি যে বল না ভাইয়া?””
“”তাই নাকি কিন্তু আমি যে গুনলাম বিশ বার পা এক্সচেঞ্জ করেছিস।””
“”একদমই না আমি তো মাত্র ষোল বারই…..””
ইসস রে!!এ আমি কি বলে ফেললাম।মিতুরে তোর মাথায় সত্যিই গোবর ছাড়া আর কিছুই নেই।ধুর আস্ত গাঁধী একটা তুই।নিজেকে ইচ্ছে মতো গালাগালি করে চোখ পিটপিট করে ভাইয়ার দিকে তাকালাম। অন্ধকারে ও খুব ভালো করেই বুঝলাম ও আমার দিকে বাঁকা হেসে তাকিয়ে আছে।
“”আ আ স সরি ভাইয়া আসলে…””
কথা বলতে বলতে ভাইয়াকে উঠে আমার দিকে এগোতে দেখে আমার কথা গলার মধ্যেই আটকে গেল।কাঁপা কাঁপা গলায় কিছু বলতে যাবো তার আগেই ভাইয়ার আমার হাতে হেচকা টান মেরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল।এবার আমার প্রাণ যায় যায়।কি করব কিছুই মাথায় আসছে না।শুধু পরবর্তীতে কি হয় তা দেখা ছাড়া আমার কাছে আর কোনো উপায় নেই।ভাইয়া নিজের মুখ আমার দিকে এগোতেই আমি দু চোখ খিচে বন্ধ করে নিলাম।সাথে সাথে কানের ওপর ভাইয়ার উষ্ণ শ্বাস অনুভব করলাম।
“”এখন এই ষোল বার তুই নিজে থেকে আমার ঠোঁটে চুমু দিবি।””
ভাইয়ার ফিসফিস কণ্ঠটা যতটা না আমার হৃদস্পন্দন কাঁপিয়ে দিল তার থেকে বেশি চমক দিল ভাইয়ার বলা কথা টা।কি বলছে এসব ভাইয়া?আমি নিজে থেকে ভাইয়াকে চুমু..না না এটা অসম্ভব।আমি কিছুতেই পারবো।এটাও কোনো কথা হলো।আমি নিজে থেকে কি করে?না না এটা একেবারেই ইম্পোসিবল।আমি পারবো না।
আমার ভাবনার মাঝেই ভাইয়া আমাকে ছেড়ে বিছানায় গিয়ে বসে আহ্লাদি স্বরে বলল
“”দেখ মিতু যা করার তাড়াতাড়ি কর।বেশি ভাবতে যাসনা কারন তুই জানিস যদি আমি নিজে থেকে কিছু করি তবে সেটা তোর জন্য কতটা কষ্টকর হবে।””
“”ভাইয়া প্লিজ এমনটা করিস না।আমি পারবো না।””
“”যত কথা বলবি শাস্তি ততই ডাবল হবে।””
“”ভাইয়া প্লিজ।””
“”আর একটা কথা বললে বিশটা চুমু দিতে হবে।””
এবার আমি চুপ করে গেলাম।জানি ভাইয়ার সাথে কথা বলে কোনো লাভ নেই।সেই আমাকেই তার ভুগান্তর দিতে হবে।এখন মনে হচ্ছে কেন যে পা বদলাতে গেলাম।এখন তারও প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে।মনের মধ্যে অস্থিরতা টা বেড়ে চলেছে।অসস্থিতে গা জ্বলে পুরে কয়লা বনে যাচ্ছে।তারপর ও ধীর পায়ে ভাইয়ার দিকে এগোতে লাগলাম।ভাইয়ার থেকে একটু দুরত্ব বজায় রেখে দাড়ালাম।তারপর চোখ বন্ধ করে একটু ঝুঁকে ভাইয়ার ঠোঁটে আলতো ঠোঁট ছোঁয়ার সাথে সাথেই সরে দাড়ালাম।মূহুর্তেই বুকের ধুকপুকানিটা হাজার গুনে বেড়ে গেছে।চোখ বন্ধ করে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করে আবার তার ঠোঁটের দিকে এগোলাম।এবার আর একটা চুমু দিয়ে সরে এলাম না।নিজেকে শক্ত করে আরো একটা চুমু দিলাম।ধীরে ধীরে মনের সংকোচ বোধটা কাটতে লাগল।খুব সহজ ভাবেই যখন একের পর এক চুমু দিতে লাগলাম ঠিক তখনই আরমান ভাই আমার পেছনের চুল আঁকড়ে ধরে আমায় বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ও নিজে আমার ওপর আধশোয়া হয়ে আমার ঠোট নিজের দখলে নিয়ে নিল।ভাইয়াকে আটকানোর চেষ্টা করলে ভাইয়া একহাতে আমার হাত বিছানায় চেপে ধরল।এবার আমি বেকাবু হয়ে পরলাম।আর ভাইয়া নিজের মতো করে আমার ঠোঁটের ওপর তার শাসন চালাতে লাগল।
ভাইয়া যখন তার নেশায় নেশাগ্রস্ত তখনই দরজায় কেউ একটা নক করল।দরজার ধাক্কানোর শব্দে আমি চমকে উঠলাম।নিজেকে ভাইয়ার কবল থেকে ছেড়ানোর চেষ্টা করছি কিন্তু ভাইয়ার তাতে কোনো ভ্রূক্ষেপ হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।যেন দরজা ধাক্কানোর শব্দ তার কান অবধি পৌছয়ই নি।এদিকে দরজা ধাক্কানো টাও ক্রমাগত বেড়েই এবার মনে হচ্ছে আমি কেঁদেই দেব।কি রকম একটা অবস্থায় পরলাম আমি।একদিকে আরমান ভাই অন্যদিকে দরজার পেছনে আগন্তুক।না জানি দরজার পেছনে কে দাঁড়িয়ে আছে?আর যদি সে আমাকে আর ভাইয়াকে এক ঘরে দেখে নেয় তাহলে কেলেঙ্কারি টাই না হয়ে যাবে….
চলবে❤

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে