দু মুঠো বিকেল পর্ব-৯+১০+১১

0
1911

দু মুঠো বিকেল⛅♥
#পর্ব_৯
Writer-Afnan Lara
.
রিহাব রেডি হয়ে রুম থেকে বেরিয়ে রিমঝিমের দিকে এক নজর তাকিয়ে আবার নিজের কাজ মন দিতে দিতে বললো”আমি তমার সাথে কথা বলেছি! তমা এখন থেকে তোর সাথে ভার্সিটিতে যাবে,একই রিকশাতে,আসার সময় ও পথে ওর বাসার সামনে নেমে যাবে তারপর ঐ একই রিকশা ধরে তুই বাসায় ফিরবি
.
আর তামিম?
.
ওকে মা স্কুলে দিয়ে আসবে,আর নয়ত তোর সাথে রিকশায় তুলে নিস,তাহলেই হয়
.
আচ্ছা
.
রিহাব টেবিল থকে ব্রেড নিয়ে মুখে দিয়ে বেরিয়ে যেতে যেতে বললো”মা আমি আজ নাস্তা করবো না,সময় নাই!”
.
রিহাব কিছু মুখে দিয়ে যা
.
হ্যাঁ ব্রেড নিয়েছি,চিন্তা করো না
.
রিহাব নিচে নেমে নিজের বাইকে উঠে বসতেই ওপাশ থেকে কেউ একজন ওর বাইকে উঠে বসলো,তাও ওর কাঁধে হাত রেখে
রিহাব চমকে গিয়ে হেলমেট পড়া বাদ দিয়ে পিছন ফিরে তাকালো
আঁখি চোরের মতন একটা লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে ওর দিকে
.
তুই!!!নাম আমার বাইক থেকে
.
আঁখি কাঁদো কাঁদো মুখ করে বললো”যা হয়েছে আপনার আর আমার ভাইয়ার সাথে হয়েছে,তার রাগ আমার উপর দিয়ে ঝাড়েন ক্যান?”
.
তুই নাম নাহলে মেরে ভূত বানিয়ে দেবো
.
দিন,তাও নামবো না আমি
.
চাস কি তুই?
.
লং ড্রাইভে যাব,প্লিস প্লিস
.
কাল তোর মা আমাকে যা তা শুনালো এর পর তোদের বাসার দিকে তাকাতেও আমার ঘৃনা পায়
.
আমার দিকেও?
.
রিহাব বাইক থেকে নেমে আঁখির হাত ধরে টান দিয়ে বাইক থেকে নামিয়ে ফেললো তারপর এক চিৎকার করে বললো”এই স্পর্শ!!!”
.
আঁখি চোখ বড় করে হাত ছাড়াতে ছাড়াতে বললো”ভাইয়াকে ডাকতেছেন ক্যান!!!হাত ছাড়ুন,আর জীবনেও ডিস্টার্ব করবো না,প্রমিস”
.
তোর এরকম প্রেম প্রেম খেলা আজ আমি বাহির করবো
.
স্পর্শ রেডি হচ্ছিলো নিজের রুমে,রিহাবের এমন চিৎকার তার কানে আসতেই সে বারান্দায় এসে দেখলো রিহাব ওর বোনের হাত ধরে রাগী রাগী চোখে এদিকেই চেয়ে আছে
.
স্পর্শ ব্রু কুঁচকে বললো”আঁখি?তুই ওখানে কি করিস??আর রিহাব??তুমি আমার বোনের হাত এমন ধরে রেখেছো কেন?”
.
কেন ধরেছি???তোমার বোন দিনরাত আমার পিছনে লেগে থাকে,তোমাদের কি এসব ছাড়া আর কোনো কাজ নাই??
.
ততক্ষণে রোকসানা বেগম ও এসে হাজির হয়েছেন
রিহাব টাই টেনে ঠিক করে আঁখির হাত ছেড়ে দিয়ে বললো”মা বাবা এগুলা শিখিয়েছে??”
.
রোকসানা বেগম তো রেগে আগুন,হনহনিয়ে তিনি বাসার নিচে চলে এসে আঁখির গালে এক চড় মেরে দিয়ে টানতে টানতে নিয়ে গেলো ওকে
রিহাবের খারাপ লাগলো বিষয়টা,সে স্পর্শকে ডেকেছিলো,কিন্তু রোকসানা বেগম এসে এমন করবেন তা জানা ছিল না তার
আঁখিকে ওর রুমে ঢুকিয়ে মা এবার স্পর্শকে ডেকে আনলেন সোফার রুমে
.
স্পর্শ একবার মায়ের দিকে তাকাচ্ছে আবার আঁখির রুমের দিকে তাকাচ্ছে,আঁখি বিছানায় বসে বাচ্চাদের মতো কেঁদেই যাচ্ছে
.
এসব দেখার জন্য এতদিন বেঁচে ছিলাম আমি?? তোরা এক কাজ কর দুটোই মিলে আমাকে বিষ খাওয়ায় দে
.
মা প্লিস আমাকে ব্যাপারটা ক্লিয়ার করতে দাও
.
কি ক্লিয়ার করবি তুই?এ রিহাবের কত দেমাগ তা তো দেখলি?আমাকে পর্যন্ত অপমান করলো,আমি কাল ওর মা বাবাকে নিয়ে কথা বলেছিলাম বলে আজ আমাকে এটা নিয়ে খোঁটা দিলো,এরকম একটা বেয়াদব ছেলের জন্য কিনা আমার মেয়ে পাগল?আবার তার বোনের জন্য আমার ছেলে পাগল!!
তাই তো বলি ভাইবোন দুটোই সারাদিন ওপাশটায় কি করে
ব্যস অনেক হয়েছে!আঁখির এই সেমিস্টার শেষ হলেই আমি ওর সাথে আশিকের বিয়ে দিয়ে দেবো,আশিককে আমার অনেক পছন্দ হয় তাছাড়া ও নতুন নতুন জব ও নিয়েছে,বাসাও কাছে,এরে বিদায় করবো নাহলে কোনো কান্ড ঘটিয়ে ছাড়বো,মেয়ে হয়ে কিনা ছেলেদের পিছে ঘুরে?মান ইজ্জত কিছু আর রাখলো না!তওবা তওবা!!
.
মা প্লিস,আঁখিকে আমি বুঝিয়ে দেবো তুমি এত হাইপার হইও না
.
ঠিক আছে, আমি ঠাণ্ডা হলাম তাও আমার কথার এক পা ও নড়চড় হবে না,আমি আজই আশিকের মায়ের সাথে কথা বলে নিব
আর তুই তো কোনো কথা বলবি না,তোকে যদি আর একদিন আমি ঐ মেয়েটার দিকে তাকাতে দেখেছি তো আমি খাওয়া দাওয়া অফ করে দেবো মনে রাখিস!

রিহাবের চিৎকার চেঁচামেচিতে রিম আর মা এসে বারান্দায় দাঁড়িয়ে সবটা দেখছিলেন
মা তো রেগে আছেন অনেক,রিহাবকে ধমকিয়ে উপরে আসতে বললেন তিনি
.
এসব শিখিয়েছি তোকে??বড়দের সাথে এমন করে কথা বলে?সুন্দর করেও বলা যেতো,শুধু শুধু এখন তোর জন্য আঁখি মার খাচ্ছে
মেয়েটার কি খু্ঁত আছে??তোকে পাগলের মত ভালোবাসে এটা তার অপরাধ?
.
“তার অপরাধ হলো সে রোকসানা বেগমের মেয়ে এবং স্পর্শ ইসতিয়াকের বোন!”
কথাটা বলে রিহাব চলে গেলো অফিসের দিকে

স্পর্শ চুপচাপ তার বারান্দায় বসে আছে,আঁখির রুমের দরজা বন্ধ
আঁখিকে আমি দোষ দেবো না,কারণ আমি যেমনটা করছি ও তেমনটাই করছে,রিহাব একটা ভালো ছেলে,জব করে,ভালো ভাই ও বটে,ওকে নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই আমার
কিন্তু একটু বদমেজাজি, তবে আমার বোনকে ভালোবাসলে মন থেকেই বাসবে
কথা হলো মা রাজি না, রিহাব নিজেও রাজি না,সে আমার কারণে রাজি না,ধুর!
.
স্পর্শ রিমের বারান্দার দিকে এক নজর তাকালো,রিম ঠাসঠুস করে গাছে পানি দিয়ে মুখ বাঁকিয়ে চলে গেছে
তার মানে এতক্ষণ এখানেই ছিল?ওর সাথে কথা বলতে হবে,ওর ভাইকে ও মানাতে পারবে
.
রিম তৈরি হয়ে সোফায় বসে আছে,তমা আসলে ওর সাথে যাবে ভার্সিটিতে,তমা আসতে আসতে ১০/১৫মিনিট দেরি করেছে,তারপর রিম,তমা আর তামিম মিলে একটা রিকশায় উঠলো,,স্পর্শ বাইকে করে আসতেছে ওদের ফলো করতে করতে
.
কিরে রিম আজ স্পর্শ ভাইয়াকে দেখছি না যে?
.
রিম সামনের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বললো”ঐ যে কতক্ষণ বাদে বাদে বাইকের আওয়াজ পাচ্ছিস ওটা তারই বাইকের আওয়াজ”
.
হোয়াট!!!প্লিস রিকশাটা থামা,আমার খুব শখ ভাইয়ার সাথে একটু কথা বলবো
.
“তোকে আমার ভাইয়া পাঠিয়েছে ঐ স্পর্শর থেকে বাঁচার জন্য আর তুই কিনা তার কাছেই যেতে চাস??”
কথাটা বলে রিম রিকশা থামিয়ে তামিমকে স্কুলে দিয়ে এসে আবার রিকশায় উঠতে নিতেই তমা এক লাফে রিকশা থেকে নেমে গিয়ে পিছনের দিকে তাকালো,স্পর্শ ও সাথে সাথে বাইক থামিয়ে নিয়েছে
.
ঐ তো স্পর্শ ভাইয়া, হাই!!!!
.
রিম মাথায় হাত দিয়ে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে কোনো উপায় না পেয়ে রিকশায় উঠে বসে থাকলো
তমা দৌড়ে চলে গেছে স্পর্শর বাইকের দিকে
.
হাই ভাইয়া,আমি তমা,রিমঝিমের একটামাত্র কিউটি বেস্টি
.
স্পর্শ চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে বললো”জানি,ওর সাথে তোমাকে দেখেছি অনেক
তবে নাম জানতাম না,নাইস টু মিট ইউ”
.
ভাইয়া আপনাকে আমার অনেক ভাল্লাগে
.
তাই?তাহলে ভাইয়ার একটা কাজ করে দাও
.
কি?
.
স্পর্শ বাইকের চাবি ওর পিছনে বসে থাকা আশিকের হাতে ধরিয়ে দিয়ে নিজে নেমে গেলো তারপর তমাকে বললো”আশিকের সাথে লং ড্রাইভে যাও,আমাকে আর রিমকে একটু কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করতে দাও”
.
রিহাব ভাইয়া জানলে আমাকে ক্যালাবে
.
তুমি যদি আশিকের সাথে ঘুরতে যাও তাহলে এতে রিহাবের ও লাভ হবে
.
সেটা কি করে?
.
আশিক তমার হাত ধরে টেনে বাইকে বসাতে বসাতে বললো”সেটা নাহয় পথেই বুঝিয়ে দেবো কিউটি”
.
তমা তো আশিকের মুচকি হাসি দেখে ক্রাশ খেয়ে ব্যাকা হয়ে গেছে,তার মুখ দিয়ে কোনো কথা বের হচ্ছে না,স্পর্শ আশিকের দিকে তাকিয়ে চোখ মেরে চলে গেলো রিমের কাছে
.
“তুই এতক্ষণ সময় লাগালি কেন তমা?কি বললো ঐ লোকটা??”
কথাটা বলে রিমঝিম পাশে তাকাতেই দেখলো স্পর্শ ওর পাশে রিকশায় উঠে বসেছে ততক্ষণে
.
রিম এক চিৎকার করতে নিতেই স্পর্শ ওর মুখ চেপে ধরে বললো”আস্তে,আমি কথা বলা শেষ করে নেমে যাব,শুধু শান্ত হয়ে কথা শুনো আমার!”
স্পর্শ এবার রিমের মুখ থেকে হাত সরালো
.
“আপনার সাহস হলে কি করে আমার রিকশায় উঠার,নামুন বলছি!নাহলে আমি নামবো”
.
রিম নেমে যেতে নিতেই স্পর্শ রিমের হাত খিঁচিয়ে ধরে আটকে ফেললো
.
বললাম তো কথা শেষ করে নেমে যাব
.
রিম ব্রু কুঁচকে বললো”তমা কোথায়?”
.
আশিকের সাথে ঘুরতে গেছে
আচ্ছা! যা বলার ছিল তা বলতেছি,,তুমি রিহাবকে বুঝাবা আঁখির কথা বলে
.
রিম কিছুক্ষণ ভেবে বললো”আমি কেন বুঝাবো??ভাইয়া আঁখি আপুকে ভালোবাসে না,আমি তো আর জোর করতে পারি না”
.
কে বললো তোমাকে এটা??তুমি আসলে ভালোবাসা কি সেটাই জানে না
আজ যখন মা আঁখিকে চড় মেরে নিয়ে গিয়েছিলো রিহাবের চেহারা দেখেছিলে তুমি?কষ্টে ওর বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো জাস্ট
.
কিন্তু কেন,ভাইয়া নিজেই তো আপনার আম্মুকে ডেকে এনেছিলো
.
হুম সেটাই,তোমরা ভাইবোন একই ধাতুর,মানে ভিতরে ভিতরে অনেক মোহাব্বত করে বাট মুখে স্বীকার করতে গেলে তোমাদের মনে হয় টাকা দিতে হবে,ব্যাপারটা এরকম
.
ভাইয়াকে নিয়ে কথা বলছেন ভালো,আবার আমাকে খোঁচাচ্ছেন কি জন্যে?
.
আচ্ছা বাদ দাও,তোমার ভাইয়া আঁখিকে ভালোবাসে তাতে আমার কোনে সন্দেহ নেই,এখন তেমার কাজ হলো তোমার ভাইয়াকে বুঝানো
.
আপনি এসব করতেছেন যাতে ভাইয়ার আর আঁখি আপুর সেটিং হয়ে গেলে আপনার আমাকে ডিস্টার্ব করতে সুবিধা হয়ে যাক?
.
স্পর্শ কিছু না বলেই চুপচাপ রিমের চুলের বেনির শেষ অংশ ধরে এক টান মারলো,সজোরে
.
আহহ!
.
স্পর্শ রিমের চোখের দিকে চেয়ে বললো”যেটা করবো না বা করতেও চাই না সেটা কেন নিজে নিজে ক্যালকুলেট করতেছো?”
.
রিম আরেকদিকে মুখ নিয়ে হাত ভাঁজ করে বললো”ভাইয়া রাজি হবে না”
.
তুমি বলে তো দেখো,আঁখি আমার একটামাত্র বোন,ওর কষ্ট আমি সহ্য করতে পারবো না, আর তোমার ভাইয়া আমার সাথে কেমন বিহেভ করে তা তুমি জানো,তার পরেও তে ওকে মানতেছি আমি,তাহলে তোমার অমত কেন?
.
আমার অমত নাহ,আঁখি আপুকে আমিও পছন্দ করি কারণ উনি আমার ভাইয়াকে রিয়েল লাভ করে……….
.
রিম কথাটা শেষ করার আগেই স্পর্শ এমনভাবে ওর দিকে তাকালো,তার এমন চাহনি দেখে রিমঝিমের হাতের যত ছোট গুটিকয়েক পশম আছে সবগুলো দাঁড়িয়ে গেছে,গায়ে কাঁটা লেগে উঠলো ওর,গা কাঁপুনিও শুরু হয়ে গেছে,স্পর্শ মুচকি হেসে এখনও তাকিয়ে আছে রিমের দিকে
.
“রিকশা থামান!!!”
রিম নেমে গেলো রিকশা থেকে তারপর গাল ফুলিয়ে বললো”আর কখনও আমার পাশে বসার ও সাহস করবেন না আপনি,আপনাকে আমি পছন্দ করি না কখনও করবো ও নাহ”
.
স্পর্শ রিকশা ভাড়াটা দিতে দিতে বললো”সেটা নাহয় দেখা যাবে,এখন যে টাস্ক দিসি ওটা কমপ্লিট করে”
.
কথাটা শুনে রিম ভার্সিটিতে চলে গেলো সোজা,একটিবার তাকালো ও না,তার মাথায় ঘুরতেছে স্পর্শের সেই চাহনি
কি ডেঞ্জারাস, মানুষ ডেঞ্জারাস হতে পারে তা জানতাম,কিন্তু চাহনি যে ডেঞ্জারাস হতে পারে তা জানতাম না
গা কাঁপতেছে এখনও,এই লোকটা একটা অসহ্যকর!

রিম তমাকে ছাড়া কোনোমতে ক্লাস শেষ করে তামিমকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছে,ভেবে যাচ্ছে কি করে রিহাবকে মানাবে সে
.
রিহাব অফিসে কাজ করতে করতে বেশ ক্লান্ত আজ,তার উপর সকাল থেকে মেজাজ বিগড়ে আছে
তাই ব্রেক টাইমে সে এক কাপ কফি নিয়ে অফিসের সামনে কিছু দোকানপাটের কাছে দাঁড়িয়ে কলিগদের সাথে কথা বলছে অফিসেরই কিছু কাজ নিয়ে
হঠাৎ বোরকা পরা একটা মেয়ে এসে ওর সামনে দাঁড়ালো,চোখ দুটো দেখা যায় তার, ছলছল করছে সেগুলো
রিহাবের আর বুঝতে বাকি নেই এটা যে আঁখি
রিহাব আঁখিকে এসময়ে এখানে দেখে কিছু বলার আগেই আঁখি শক্ত করে ওকে জড়িয়ে ধরলো
৬/৭জন কলিগ ছিল রিহাবের,সবাই হা করে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে,রিহাবের হাত থেকে কফির ওয়ান টাইম গ্লাসটা নিচে পড়ে গেছে
রিহাব চুপ করে আছে,আঁখিকে সরানোর চেষ্টা করছে না সে
আঁখি কাঁদতেছে শুধু,রিহাব খালি শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে,পাশ থেকে অন্তিক বলে উঠলো”রিহাব??মেয়েটা এত কাঁদছে অন্তত ওর কান্না থামানোর চেষ্টাটা কর!
চলবে♥

দু মুঠো বিকেল⛅♥
#পর্ব_১০
Writer-Afnan Lara
.
অন্তিকের কথায় রিহাবের হুস ফিরে আসলো,সাথে সাথে আঁখিকে বুক থেকে সরিয়ে সে ওর হাত ধরে নিয়ে গেলো দোকানের সামনে থাকা গুটিকয়েক বেঞ্চের কাছে,তারপর ওকে ওখানে বসিয়ে ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসলো রিহাব
.
আঁখি চোখের জলের চোটে কিছুই বুঝলো না,দেখলো ও না,সে খালি কেঁদেই চলেছে
রিহাব আঁখির মুখ থেকে পর্দা উঠিয়ে ওর চোখ মুছে দিতে দিতে বললো”আই এম সরি”
.
সরি শুনে আঁখির চোখের পানি পড়া বন্ধ হয়ে গেছে সাথে সাথে,সে ভূত দেখার মতন মুখ করে তাকিয়ে আছে রিহাবের দিকে
রিহাব মন খারাপ করে বললো”আমি যদি জানতাম আমার ডাকাডাকিতে আন্টি এমন সিন ক্রিয়েট করবে,তোমার গায়ে হাত তুলবে তাহলে আমি এমনটা করতাম না,সরি ফর দ্যাট
.
আমি আপনাকে ভালোবাসি রিহাব
.
রিহাব চোখ তুলে তাকাতেই আঁখি ঢোক গিলে বললো”ভাইয়া”
.
হুম,বাট এটা পসিবল না,তোমার পরিবারকে আমি পছন্দ করি না,আর তোমার পরিবার ও আমাকে পছন্দ করে না
সো জলদি সব ভুলে যাও
.
আঁখি কপাল কুঁচকে বললো”ভুলে যাব মানে?হাতের মোয়া নাকি?এতটা বছর ধরে আপনাকে আমি এক তরফা ভালোবেসে এসেছি,আপনার মনে কি আমার প্রতি কোনো ফিলিংসই নেই?
.
না নেই,আমি তোমাকে নিয়ে ওসব ভাবিনি কখনও,চুপচাপ বাড়ি ফিরে যাও
.
আপনি জানেন মা আমার বিয়ে ঠিক করেছে?
.
তো?
.
তো কি আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি
.
কিহহহ!!
.
রিহাব এদিক ওদিকে তাকিয়ে আঁখির জামাকাপড়ের ব্যাগ খুঁজতে থাকলো
আঁখি চোখ মুছতে মুছতে বললো”আরে ব্যাগ কি এখানে বয়ে আনবো নাকি,ব্যাগ তো আমার দেবরের হাতে দিয়ে এসেছি!”
.
দেবর মানে!তামিম?
.
তো?আমার কি আর দেবর আছে নাকি
.
তামিম কি করে ব্যাগ বাসায় ঢুকাবে,বুঝলাম না
.
আরে আমি ব্যাগ নিয়ে বের হতেই দেখলাম তামিম হাতে ক্যাকটাসের কাঁটা নিয়ে রিনতির হাত ধরে ওর হাতে ফুটাচ্ছে,তো ওকে ঐ সময়ে আজাইরা পেয়ে ওর হাতে ব্যাগ ধরিয়ে দিয়ে ওরে আর রিনতিকে দুই প্যাকেট চকলেট দিলাম ঘুষ হিসেবে তারপর বললাম দুজনে মিলে ব্যাগটা আপনার রুমে পৌঁছে দিতে
.
কিহহহহহহ!তোমাকে এমন পাগলামো করতে বলেছে কে??এত বড় কান্ড ঘটালা আর আমাকে এখন বলতেছো??যাও বাসায় ফিরে যাও,আমি তোমার ব্যাগ পাঠিয়ে দেবো
.
আঁখি রিহাবের দিকে আঙ্গুল তুলে বললো”আমি থাকলে আপনার বাসাতে আপনার রুমে থাকবো,বেশির বকরবকর করলে মহল্লায় ছড়িয়ে দেবো আমি রিহাবের বাচ্চার মা হতে চলেছি
.
তুমি একটা পাগল!
.
রিহাব উঠে দাঁড়িয়ে রিমকে ফোন করলো,রিম কোমড়ে হাত দিয়ে তামিম আর রিনতির কাণ্ডকারখানা দেখছিলো
ওরা দুজন মিলে টেনে হিঁচড়ে একটা তালা দেওয়া ট্রলি ব্যাগ রিহাবের রুমে ঢুকাচ্ছে,কাউকে কিছু বলছে না কারণ দুজনের মুখেই ললিপপ
.
হ্যালো ভাইয়া বলো!
.
তামিম কোথায়?
.
তামিম আর রিনতি তো দেখি একটা ব্যাগ নিয়ে তোমার রুমের দিকে যাচ্ছে,দেড় ঘন্টা ধরে জাস্ট এক রুম গড়িয়ে ব্যাগটা মাত্র তোমার রুমে ঢুকালো,এমন ভাব ধরছে যেন ব্যাগের ভেতর পাথর রাখা,আমাকেও ধরতে দিচ্ছে না
.
রিহাব কপাল চাপড়িয়ে বললো”ওটা আঁখির ব্যাগ,তাড়াতাড়ি বের করে স্পর্শর হাতে দিয়ে বল রোকসানা আন্টি জানার আগেই যেন আঁখির রুমে আবার দিয়ে আসে
.
কিহ!আঁখি আপুর মানে বুঝলাম না
.
তোকে যেটা বললাম সেটা কর,আমি এদিক সামলাচ্ছি
.
আঁখি এগিয়ে এসে বললো”আমার ব্যাগ ফেরত পাঠাবেন তো ঠিক আছে,কিন্তু আমাকে কি করে ফেরত পাঠাবেন?আমি তো যাব না
.
তুমি যাবে না তোমার চামড়া যাবে
.
রিহাব আঁখির হাত মুঠো করে ধরে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে
.
এই কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন,আমি আর আমার বাসায় ফিরব না,হাত ছাড়ুন,আর আপনি আমাকে তুমি তুমি করে বলতেছেন কেন,বয়সে কত ছোট আপনার সেই হিসেব আছে?তুই বলতেন,তুই বলুন
.
চুপ!কেয়ামতের ভিতরে তুই তুকারি করতাম আমি! আমার আর কাজ নাই,যে বান্দর দুটোকে দায়িত্ব দিয়ে এসেছো ওরা ২ঘন্টার ভেতর তোমার ব্যাগ আমার রুমে বিছানার নিচে রেখে ফেলেছে
.
কার দেবর দেখতে হবে না

“ইস আমাকে ভাইয়া এটা কিসের দায়িত্ব দিলো,এখন কি বলে ডাকবো উনাকে?
স্পর্শ বলে ডাকি?
না না,এত বড় দামড়া ছেলেকে নাম ধরে ডাকাটা ঠিক হবে না,তাহলে স্পর্শ ভাইয়া ডাকবো??
না না সেটাও না,আমার মুখে ভাইয়া শুনে সেই মূহুর্তে আমাকে কাঁচা গিলে ফেলবে”
রিমঝিম বারান্দায় দাঁড়িয়ে ভাবতেছে স্পর্শকে এদিকে কি বলে ডাকবে
স্পর্শ সামনের একটা চায়ের দোকানে বসে রিপন আর আশিকের সাথে আড্ডা দিচ্ছে
.
স্পর্শ ভাই দেখো দেখো তোমার চাঁদ উঠেছে
.
স্পর্শ চায়ে চুমুক দিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখলো রিম হাত দিয়ে ওকে ইশারা করে ওদিকে ডাকছে
.
স্পর্শ হা করে তাকিয়ে থেকে বললো”রিপন আমাকে একটা চিমটি দে তো,দিনদুপুরে স্বপ্ন দেখছি নাহ তো?”
.
রিপন স্পর্শের হাতে একটা চিমটি কাটতেই স্পর্শ ব্যাথা পেয়ে তার হাত ঘষতে ঘষতে এগিয়ে গেলো সামনের দিকে
রিমের বারান্দার কাছে আসতেই রিম মুখটা বাঁকিয়ে আঁখির ট্রলি ব্যাগটা হাতে নিয়ে বললো”ক্যাচ!!”
.
স্পর্শ হকচকিয়ে ব্যাগটা ক্যাচ ধরলো তারপর সেটা নিচে রেখে বললো”এত ভারী কেন এই ব্যাগ,কার??আমাকে দিচ্ছো কেন?আমার সাথে পালানোর ইচ্ছা হলো বুঝি?”
.
মোটেও না!! জীবনেও না,এটা আপনার বোনের ব্যাগ,সে আপনার বাসা থেকে পালিয়ে এসেছে,এখন রিহাব ভাইয়ার অফিসে গেছে,আর রিহাব ভাইয়া আমাকে বলেছে আপনার হাতে আপুর ব্যাগটা ফেরত দিতে নাহলে হুদাই নিজ থেকে গিয়ে আপনার সাথে কথা বলার ইচ্ছা- টিচ্ছা নাই আমার কোনো
.
কিহ!তোমাকে না বললাম রিহাবকে বুঝাতে,সেটা না করে উল্টে বিরোধীতা করছো?
.
ভাইয়া এখন আঁখি আপুকে নিয়ে আসলে না হয় বুঝাবো,কিন্তু আঁখি আপু কি কান্ড ঘটাইলো সেটা যদি আপনার মা জানে তখন কি হবে ভেবে দেখেছেন?
.
সব গুলিয়ে যাচ্ছে,নিচে নামো
.
পারবো না
.
আমি আসি?
.
না না,আসতেছি,দাঁড়ান
.
রিম ওড়না মাথায় টেনে নিচে নেমে আসলো
স্পর্শ এগিয়ে এসে বললো”ব্যাগটা আপাতত আমি বাসায় নেবো ঠিক আছে বাট মা তো এখন সোফার রুমে,তখন দেখছিলাম আশিকের আম্মুর সাথে কথা বলছে,আর আমার মনে হয় না এত জলদি ফোনে কথা শেষ করবে,আর যদি সোফার রুমে নাও থেকে থাকে,এই ব্যাগ বয়ে নেওয়ার সময় মা যেখানেই থাকুক ঠিক ধরে ফেলবে
.
তো?আমি কি করবো.??আঁখি আপুকে আমি স্মার্ট মনে করতাম,কিন্তু এত বড় বোকামি কেন করলো,এখন কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে বেরিয়ে আসবে
.
ঠিক বলছো,এসব জানলে মা আজই আশিক আর ওর বিয়েটা করিয়ে ছাড়বে
.
এক মিনিট!! এক মিনিট!আশিক আর আঁখি আপুর?মানে আপনার সাথে যে নিরামিষ টাইপের একটা ছেলে থাকে সে?
.
হ্যাঁ সে
.
“তো সে তো নাকি কাল লং ড্রাইভে গিয়ে তমাকে ভালোবাসি ও বলে ফেলেছে,আসলে আপনারা ছেলেরা….”
রিম কথা শেষ করার আগেই স্পর্শ রিমের মুখ চেপে ধরে বাসার ভেতর নিয়ে লুকিয়ে পড়লো
.
রিম চোখ বড় বড় করে কিসব বলতে চাইছে কিন্তু পারছে না,স্পর্শের চোখ গেট পেরিয়ে তার রুমের বারান্দার দিকে
মা সেখানে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক চেয়ে ওকেই খুঁজতেছে
স্পর্শ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে রিমের মুখ থেকে হাত সরালো
রিম ততক্ষণে এক চড় বসিয়ে দিছে ওর গালে
স্পর্শর রাগ হলো খুব,হাত মুঠো করে সে চোখ বন্ধ করে রাখলো কিছুক্ষণ
.
শুধু আমাকে ছোঁয়ার বাহানা খুঁজেন আপনি,আপনার সাহস হলো কি করে আমাকে এভাবে চিপায় নিয়ে আসার তাও মুখ চেপে ধরে
.
স্পর্শ তার রাগটা এক সাইড করে রিমের দিকে তাকালো তারপর ওর দুহাত ধরে ঝাঁকিয়ে বললো”রিম ভুলে যেও না চড় মারার সেঞ্চুরি পূর্ন হয়ে আসতেছে,আর মাত্র ১০টা চড়!”
.
হাত ছাড়ুন,এসব কি ধরনের অসভ্যতামি!আমাকে টাচ করছেন কোন সাহসে?
.
তুমি যে কথায় কথায় আমাকে চড় মারো সেটা কোন সভ্যতা??
.
আপনি আমাকে এখানে কেন নিয়ে এসেছেন?আমার জায়গায় অন্য কোনো মেয়ে হলেও চড় মারতো
.
অন্য কোনো মেয়ে চড় মারলে সেটা আলাদা কথা,তুমি তো আমাকে চেনো,তোমার ধারনা আমি তোমাকে চিপায় এনেছি কিস করার জন্য?
.
রিম ভ্রু কুঁচকে বললো”আপনি এতসব ভাবেন?”
.
আমি ভাবি না,তুমি ভাবো অলওয়েজ, যখন তোমার সামনে দাঁড়াই তখন তুমি এসবই ভাবতে থাকে শুধু
.
হাত ছাড়ুন বলতেছি নাহলে চেঁচামেচি করবো,আমার বাসা কিন্তু দোতলায়
.
চেঁচাবি??চেঁচা!! দেখি তো তোর কত জোর
.
আআআআআপপপনি আমাকে তুই করে বলতেছেন কেন?
.
সেঞ্চুরি হতে চলেছে এই টুকু আগাম দাপট তো দেখাতেই হবে
.
রিমের চোখ কপালে,ঢোক গিলে বললো”হাত ছাড়ুন আমার,আমি কাঁদবো নাহলে”
.
স্পর্শ আরেকটু জোরে হাত চেপে ধরে বললো”কাঁদো না,মানা করছে কে,কাঁদো আর পারলে ১০টা চড় আজই মেরে দাও,তোমাকে আজ ছুঁতে মন চাচ্ছে খুব”
.
রিমের কাঁপুনি শুরু হয়ে গেছে,তোতলাতে তোতলাতে সে বললো”আমাকে তাহলে এখানে কিসের জন্য এনেছেন আপনি?”
.
শুনো!মা বারান্দায় দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক চেয়ে আমাকে খুঁজতেছিলো বলেই আমি লুকিয়ে পড়েছি,কারণ মা আমাকে বলেছেন তিনি যদি আর একদিন দেখে আমি তোমার দিকে তাকিয়ে আছি বা কথা বলছি সেদিন তিনি খাওয়া ছেড়ে দিবে,বুঝেছো???
.
রিম জিভে কামড় দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকলো
.
স্পর্শ রিমের নিচু হওয়া মুখটার দিকে চেয়ে ওর হাতে একটা চাপ দিয়ে কাছে টেনে এনে বললো”তোমার দেওয়া সব চড়ের পেছনের কারণটা সবসময় অপ্রাসঙ্গিক হয় ”
.
রিম অপরাধীর মতন মুখটা নিচু করে রেখেছে,আসলেই তো আজ পর্যন্ত যতবার চড় মেরেছে তার একটাতেও স্পর্শের দোষ ছিল না
রিম ভুল বুঝেই চড়টা মারে সবসময়
.
রিহাবের বাইকের আওয়াজ আসতেই স্পর্শ রিম দুজনেই দূরে সরে দাঁড়িয়ে পড়লো,দুজনের মাঝখানের দূরত্ব এখন হাফ কিলোর মতন
.
রিহাব এদিক ওদিক তাকিয়ে রিমের কাছে এসে বললো”ব্যাগটা ঐ স্পর্শকে দিয়েছিস?”
.
হুম
.
রিহাব আঁখির দিকে তাকিয়ে এক ধমক দিয়ে বললো”যা বাসায় যা,পাগলামো করার জায়গা পায় না,পালিয়ে পাশের বাসায় আসছে থাকতে,বেকুব কোথাকার!বের হ!।”
.
স্পর্শ চোখ রাঙিয়ে রিমকে ইশারা করলো রিহাবকে বুঝাতে
সে একটু দূরে টংয়ের সামনে টুলে বসে আছে
.
রিমঝিম রিহাবের সামনে এসে বললো”ভাইয়া,আঁখি আপু কিন্তু তোমাকে অনেক ভালেবাসে”
.
“যতই বাসুক,সে ঐ পরিবারের মেয়ে আর তাই ওকে আমি গ্রহণ করবো না”
কথাটা বলে রিহাব উপরের তলায় চলে গেলো
আঁখি কোমড়ে হাত দিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলো তারপর রিমের দিকে তাকিয়ে বললো”আমাকে মানবে না ওর ঘাড় মানবে,এরে তো এর মত করে মানাবো,রিম তোমাকে আমার হয়ে কাজ করে বকুনি খেতে হবে না,যা করার আমি করবো,বাই”
.
আঁখি মুখ বাঁকিয়ে চলে গেলো তার বাসার দিকে,স্পর্শ তখনই এক দৌড়ে রিমদের বাসার সামনে আসলো আবারও রিমকে দেখতে কিন্তু এসে দেখলো রিম উধাও,ভয়ে পালিয়েছে,কি হতো একটু দাঁড়িয়ে থাকলে?এই মেয়েটা সবসময় আমার থেকে পালিয়ে বেড়ায়,ভীতূ একটা”
.
রিহাব সোফায় বসে টাই খুলে একটু মাথাটা এলিয়ে দিতেই ওর সামনে এসে কেউ একজন দাঁড়ালো,বিষয়টা টের পেয়ে রিহাব মাথা তুলে তাকালো সামনে
মা কোমড়ে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন
.
কি?
.
আঁখি নাকি তার ব্যাগ তামিমকে দিয়ে তোর রুমে নেওয়াইছিল?
.
ওহ তাই নাকি?
.
তাই নাকি?তুই জানিস না?
.
নাহ তো!
.
তামিম যে বললো তুই রিমকে ফোন দিয়ে আবার বলেছিস ব্যাগটা বারান্দা দিয়ে ছুঁড়ে মারতে?
.
রিম দূরে দাঁড়িয়ে থেকে ইশারা ইঙ্গিতে জানালো সে মাকে কিছু বলেনি,তামিম সব গণ্ডগোল পাকিয়েছে
চলবে♥

দু মুঠো বিকেল⛅♥
#পর্ব_১১
Writer-Afnan Lara
.
মা শুনো! আঁখিকে আমি মানতে পারবো না,আমার অবস্থাটা তোমরা কেন বুঝতেছো না??
.
তোর অবস্থা বুঝি,আবার আঁখির অবস্থাও বুঝি
.
রিহাব সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো”আমাকে এসব থেকে মুক্তি দাও,প্লিস!”
কথাটা বলে রিহাব চলে গেলো তার রুমের দিকে

আঁখি চোরের মতন বাসায় ঢুকে একদম রোকসানা বেগমের সামনে গিয়ে পড়েছে শেষমেষ
.
রোকসানা বেগম চোখ বড় করে বললেন”কোথায় ছিলি তুই??”
.
ঐ আসলে!!টুম্পার বাসায় গিয়েছিলাম,ভাল লাগছিল না বলে
.
ভালো লাগছে না?তাহলে বিয়ে দিয়ে দিব তোকে তখন খুব ভাল্লাগবে
.
আঁখি ব্রু কুঁচকে তাকালো,,রোকসানা বেগম এক ধমক দিয়ে বললেন”২০মিনিটে রেডি হয়ে সোফার রুমের এ কোণায় বসে থাকবি চুপচাপ,আমি যে তোকে গোলাপি রঙের শাড়ী একটা দিসিলাম ওটা পরবি,কিছুক্ষন পর আশিক আর তার ফ্যামিলি আসবে তোকে দেখতে
.
মা প্লিস আমি বিয়ে করবো না,রিহাবকে ভুলে যাব তাও বিয়ে দিও না আমাকে
.
তোকে আমি খুব ভালো মতন চিনি,যেটা বলছি সেটা কর গিয়ে
.
আঁখি মন খারাপ করে তার রুমের দিকে চললো

এবার স্পর্শর পালা,সে ব্যাগটা হাতে নিয়ে চোরের মতন বাসায় ঢুকতেই রোকসানা বেগমের সামনে গিয়ে পড়লো
.
কিরে?তুই ব্যাগ নিয়ে কই গেছিলি??
.
স্পর্শ জিভ দিয়ে ঠোঁট জোড়া ভিজিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে বললো”ইয়ে আসলে ব্যাগটার চেইন নষ্ট হয়ে গেছিলো তো তাই ঠিক করাতে গেছিলাম”
.
ওহ,এটা তো মনে হয় আঁখির ব্যাগ
.
হুমম,আসলে ওর সামনে বিয়ে তো, ব্যাগটা কাজে লাগবে তাই ঠিক করে এনেছি
.
আচ্ছা দিয়ে আয় ওকে

রিহাব ছাদে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছে নির্বাক হয়ে
“আঁখির মধ্যে এমন কোনো খুঁত নেই যাতে কোনো ছেলে ওকে রিজেক্ট করতে পারে
বাট আমি অসহায়,আমি ওর পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে ওকে বিয়ে করতে পারবো না,আর ওর পরিবারকে আমি নিজেও পছন্দ করি না”
.
রিহাব মাথায় হাত দিয়ে চুল গুলো টেনে ডান পাশে তাকাতেই দেখলো ছাদের কোণায় আঁখি দাঁড়িয়ে আছে,পরনে ঘাড়ো গোলাপি রঙের সুতির শাড়ী,চুলগুলো বাতাসে উড়ছে বারবার,বাতাসের থামাথামি নেই আর চুলগুলোর ও উড়ার থামাথামি ও নাই
.
আঁখি ও আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে
রিহাব একটু এগিয়ে এসে বললো”নতুন জীবনের জন্য কঙ্গ্রেচুলেশন আঁখি”
.
আঁখি আকাশের থেকে চোখ সরিয়ে রিহাবের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো”ওকে তাহলে গুড বাই”
মূহুর্তেই আঁখি দুম করে নিচে পড়ে গেছে,ছাদের উপর শুয়ে আছে সে,হাতে রক্ত এসব দেখে রিহাবের চোখ কপালে
এই ছাদ থেকে ঐ ছাদে সে লাফ দিয়ে চলে এসে আঁখিকে কাছে টেনে নিয়ে বললো”আঁখি তাকাও আমার দিকে,কি হয়েছে তোমার,এটা কি করলে তুমি,আঁখি!!!
আঁখি তাকাও আমার দিকে,প্লিস!!”
রিহাবের আঁখির হাতের রক্ত দেখে পাগল হয়ে যাওয়ার মতন অবস্থা হয়েছে
সে কেঁদেই ফেলেছে শেষমেষ
.
আঁখি মাথা তুলে রিহাবের কপালে চুমু খেয়ে বললো”রিহাব আমি মরিনি,এক্টিং করছি”
.
রিহাব বোকার মতন তাকিয়ে আছে কান্না থামিয়ে
আঁখি রিহাবের গলা জড়িয়ে ধরে বললো”তোমাকে না পেয়ে আমি মরতে পারি??এই এক্টিং কাজ দেবে কিনা তাই টেস্ট করলাম,যা বুঝলাম হেবি কাজ দেবে”
.
আঁখি!!
.
রিহাব চোখের পানি মুছে রেগে বললো”তোমার হাতে রক্ত আর তুমি বলছে এটা এক্টিং?
.
এটা রক্ত না
.
টমেটে সস তো মনে হচ্ছে না,শুকিয়েই গেছে দেখছি,এটা কি?রক্তর মতন লাগছে
.
আলতা😜
.
তুমি এত শয়তানি শিখো কার থেকে??আমি তো পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম
.
আমাকে ভালোবাসেন সেটা তাহলে শেষমেষ প্রুভ করলেন
.
শাট আপ!ইমোশন নিয়ে খেলা ঠিক না,যাও বাসায়
.
আঁখি মুখ বাঁকিয়ে চলে গেলো বাসার দিকে,রিহাবের মুখে হাসি ফুটলো হঠাৎ,কেন তা সে নিজেই জানে না
.
আঁখি বাসায় ঢুকে এদিক ওদিক তাকালো তারপর দেখলো মা হাতে চুড়ি পরতে পরতে আসতেছেন এদিকেই
আঁখি জলদি করে বাসায় ঢুকে পড়ে দুম করে ফ্লোরে শুয়ে পড়লো
মা তো এক চিৎকার দিলেন,ঐ রুম থেকে স্পর্শ দৌড়ে আসলো
মা মাথায় হাত দিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছেন ততক্ষণে

এই রিহাব!ঐ বাড়ি থেকে এমন চিৎকার আসতেছে কেন??কি হয়েছে?
.
একশানের রিয়েকশান চলছে
.
মানে?
.
একটু পরেই বুঝবে
.
স্পর্শ ফোন নিলো এম্বুলেন্সে কল করতে তখনই আঁখি উঠে বসলো আবার
.
মা আর স্পর্শ অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে
আঁখি ভেঁংচি মেরে বললো”আমি রিহাবকেই বিয়ে করবো,এটা তো জাস্ট ট্রেইলার ছিল,জোর করলে সত্যি সত্যি হাত কাটবো”
.
রোকসানা বেগম রেগে গিয়ে আঁখিকে চড় মারতে যেতেই স্পর্শ আটকালো উনাকে
.
মা!তুমি রিহাবকে পছন্দ করো না কেন বলোতো?
.
তুই?তুই বলছিস এই কথাটা??যে ছেলে আমাকে খোঁচা দিয়ে কথা বলে,আমার ছেলেকে অপমান করে,গায়ে হাত তোলে তার সাথে আমি আমার মেয়ে জীবনেও বিয়ে দেবো না
.
মা, আমার সাথে তো খারাপ ব্যবহার করে নাই উনি
.
তুই চুপ থাক, এতই যখন দরদ তখন বেরিয়ে যা,আমি এখন থেকে জানবো আমার শুধু একটা ছেলে আছে,কোনো মেয়ে নেই
.
আঁখি ছলছল চোখে মায়ের দিকে তাকিয়ে থেকে উঠে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো
স্পর্শ ফোন পকেটে ঢুকিয়ে বেরিয়ে গেলো বাসা থেকে
রিম বারান্দাতে এসে কান পেতে শুনার চেষ্টা করছিল এরকম চিৎকার চেঁচামেচির কারণ কি হতে পারে
স্পর্শ নিচ দিয়ে এসে দেখলো রিম উকিবুকি দিচ্ছে ওদিকে
.
এই মেয়ে!!!!
.
রিম চমকে নিচে তাকাতেই দেখলো স্পর্শকে
.
তারপর ওকে না দেখার ভান করে রিম চলে যেতে নিতেই স্পর্শ আবারও ডাক দিলো ওকে
.
কি সমস্যা?
.
তোমার ভাইকে বুঝাতে পারো না?বুঝিয়ে বলো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসতে আমাদের বাসায়
.
ভাইয়া আমার কথা বুঝার চেষ্টা করছে না,আমি কি করবো?
.
আঁখি উল্টা পাল্টা কাজ করে বসলে তখন কি হবে?
.
রিম মহা চিন্তায় পড়ে গেছে,মাথায় হাত দিয়ে সে পায়চারি শুরু করে দিয়েছে ততক্ষণে
স্পর্শ মুচকি হেসে বললো”হইসে থাকক! এত চিন্তা করতে হবে না,আমি দেখি মৌচাকে ঢিল না মেরে কি করে মধু নিয়ে আনা যায়”
.
বুঝলাম না
.
বুঝবা না,তুমি তো অবুঝ শিশু,খালি আমি তোমার সামনে দাঁড়ালে তুমি আমাকে নিয়ে নেগেটিভ পজিটিভ ভাবো
.
আপনি কি বুঝাতে চাইছেন টা কি?
.
“কিছু না”
.
স্পর্শ বাইকে চড়ে চলে গেলো মূহুর্তেই
রিম পিছন ফিরতেই রিহাবকে দেখে ওর চোখ কপালে,রিহাব স্পর্শের চলে যাওয়া দেখে রিমের দিকে তাকিয়ে বললো”এই ছেলেটার সাথে কিসের কথা বলছিলি?”
.
ইয়ে মানে আঁখি আপুকে নিয়ে কথা বলছিলাম
.
ঠিক এই জন্য আমি বিয়েটা করতে চাচ্ছি না
আমি যদি আঁখিকে বিয়ে করি তারপর এই ছেলেটা তোকে ডিস্টার্ব করার একটা চুক্তিমত দলিল পেয়ে যাবে,তখন তাকে ধমক দিয়েও একটা কথা বলা যাবে না
আমি তোর কথা চিন্তা করে আঁখিকে বারবার ফিরিয়ে দিচ্ছি,কারন আমি জানি এই ছেলেটা তোর জন্য নয়
.
কিন্তু আঁখি আপু তো তোমার জন্য,সামান্য এই ব্যাপার চিন্তা করে তুমি আঁখি আপুকে কেন ফিরিয়ে দিচ্ছো??
.
রিহাব বারান্দার দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বললো”তামিমের হাতে একটা চিঠি দিয়ে ওর বাসায় পাঠিয়েছি আমি”
.
কিসের চিঠি?
.
আমি ঐ চিঠিতে লিখেছি আঁখি যদি সত্যি আমাকে ভালোবেসে থাকে তাহলে সে যেন ঐ পরিবারের সাথে সম্পর্ক চ্যুত করে আমার কাছে আসে,আমি ওকে সেই মূহুর্তে বিয়ে করবো
.
কিহহহ!এটা কি করছো তুমি,এটা একদমই ঠিক করো নি
.
তোর কি মনে হয় আঁখি আমার এই চিঠিটা দেখে ব্যাগ নিয়ে চলে আসবে?? ওর কাছে ওর পরিবার বেশি দেখিস
.
যদি সত্যি চলে আসে??
.
বললাম তো তাহলে বিয়ে করে নেবো

তামিম স্পর্শদের বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছে একটা ভাব নিয়ে
পরনে নীল রঙের টিশার্ট আর জিন্স,জিন্সের পকেটের ভেতর এক হাত ঢুকিয়ে রেখেছে সে,আরেক হাতে চিঠি,বহুত চেষ্টা করেও আগামাথা কিছুই বুঝে নাই চিঠির
এত বড় লাইন পড়া যায় নাকি??
.
এবার সে সিঁড়ি বেয়ে যাচ্ছে দোতলায়,তারপর দরজার কাছে এসে পা উঁচু করে কলিংবেলে চাপ দিলো সে
.
মিনিট দুয়েক পর আসমা এসে দরজা খুললো,সে তামিমের দিকে তাকিয়ে ভেঁংচি কেটে বললো”কিরে তুই এখানে কি করিস?তুই ঐ ঘরের পোলা না?যাগো লগে রোকসানা ম্যাডামের ঝগড়া হয়েছিলো?”
.
তামিম আসমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত একবার দেখে নিয়ে বললো”ঝগড়া??কিসের ঝগড়া??তুমি কে??”
.
কি জন্য আসছো সেটা কও,আমার বহুত কাম আছে
.
আঁখি আপুকে ডেকে দাও
.
উনি গোসল করতেছে,আমারে দাও কি দিবা
.
নাহ!!
.
তামিম ব্রু কুঁচকে বললো”তোমাকে কেন দিব??আমি আঁখি আপুকে দিব!”
.
এই ছেরা!বেশি কথা কইলে রোকসানা ম্যাডামরে ডাকমু
.
তামিম চোখ কপালে তুলে দরজার সামনে থাকা একটা ফুলের টবের পিছনে লুকিয়ে পড়ে বললো”তোমার কি কখনও কিছু ক্ষতি করছি আমি??ভয় দেখাও কেন?”
.
ম্যাডামমমমম
.
এই!চিল্লাও কেন?
.
আঁখি তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে মুছতে এসে বললো”কে এসে সে আসমা আপা?”
.
তামিম টবের পিছন থেকে লাফ দিয়ে বেরিয়ে এসে বললো”নাও ধরো,আমি যাই”
চিঠিটা দিয়ে তামিম এক দৌড়ে পালালো
.
আঁখি চিঠিটা খুলে দেখলো তাতে লিখা আছে-
আঁখি!!তুমি যদি আমার বউ হতে চাও তাহলে একেবারে আমার বাড়ি চলে আসো,চিরদিনের জন্য,কথা দিচ্ছি আমি তোমাকে সেই মূহুর্তে বিয়ে করবো
.
আঁখি চোখ বড় করে বললো”এটা কি!সত্যি??রিহাব দিয়েছে যখন নিশ্চয় এটা ফান নয়,সিরিয়াস হয়েই দিসে
কিন্তু আমি এখন কি করবো?”

দেখিছিস রিম??বলছি না?ও ওর মাকে বাঘের মতন ভয় পায়,ও আমার শর্তে রাজি হবে না
.
রিহাব এটা তুই ঠিক করিসনি একদম,ওরা তোকে আরও খারাপ ভাববে
.
মা!একবার ওদের চোখে খারাপ হয়ে গেছি,আর ভালো হয়েও লাভ হবে না,তাই আরও খারাপ হলাম
.
রিহাবের বাবা,আপনি অন্তত বুঝান ওকে
.
ওর লাইফ ওর ডিসিশান,আমি শুধু চাই আমার সম্মান যেন ক্ষুণ্ণ না হয় কোনোমতেই

রিম বারান্দার কাছে দাঁড়িয়ে স্পর্শের অপেক্ষা করছে,এত এত টেনসন সে নিতে পারছে না,তার এখন কি করা উচিত?
রিহাব ভাইয়া এটা একদম ঠিক করেনি,যা হয়েছে সব আমার দোষে আর এ লোকটার দোষে হয়েছে,উনাকে জানাবো আজ উনার দোষে উনারই পরিবারে আহাজারি শুরু হবে
.
স্পর্শ বাইকে করে আসার পথে আবার দেখলো রিমঝিম বারান্দায় দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক ঘুরে ফিরছে
.
কি হলো তোমার?আজ বারান্দা থেকে নড়ছো না কেন??নরমাল দিনে তো টেনে হিঁচড়েও তোমাকে বারান্দায় আনানো যায় না
.
শুনুন আপনার সাথে আমার কথা আছে,জলদি করে আপনার বারান্দায় আসুন,আমি নিচে যেতে পারবো না,সোফার রুমে ভাইয়া আর বাবা
.
ঠিক আছে!
.
স্পর্শ বাইক থেকে নেমে বাসায় ঢুকতেই দেখলো আঁখি সোফার এক কোণায় বসে আছে সেজেগুজে,হাতে একটা চিঠি নিয়ে নড়াচড়া করছে সে
.
কিরে তুই বিয়েতে রাজি?
.
আঁখি এক হাত দিয়ে চোখের পানি মুছে বললো”তোমার আর রিমঝিমের চ্যাপ্টার কমপ্লিট হতে গিয়ে আমি এদিক ওদিক সব দিক হারাতে বসেছি”
.
কথাটা স্পর্শর লাগলো,সে চুপচাপ তার রুমের বারান্দায় চলে আসলো
রিমঝিম একটু এগিয়ে এসে বললো”আপনি জানেন রিহাব ভাইয়া আঁখি আপুকে বলেছে উনি যদি রিহাব ভাইয়াকে চায় তাহলে যেন পরিবার ছেড়ে একেবারে চলে আসে,আর এটা কেন করেছে জানেন?”
.
আমার জন্য
.
হুম আপনার জন্য!আপনার সাথে ভাইয়ার চলে না বলে ভাইয়া আপনাকে পছন্দ করে না বলে আজ ভাইয়া আঁখি আপুকে এমন একটা শর্ত দিয়েছে
.
স্পর্শ মাথার চুলগুলো টেনে শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে বললো “তোর ভাইয়াকে ডাক”
.
কিহ,আমি আপনাকে কি বলছি আর আপনি কি বলতেছেন??
.
বললাম তোর ভাইয়াকে ডাক,সব বুঝাবো তোদের দুটোকে,ডাক ওরে,সাথে তোর বাপরেও ডাকিস
.
এটা কোন ধরনের ব্যবহার??
.
তুই ওদের ডাকবি নাকি আমি এই বারান্দা থেকে ঐ বারান্দায় চলে আসবো??
চলবে♥

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে