দুষ্টু মেয়ের মিষ্টি সংসার পর্ব-০৬ | ভালোবাসার গল্প

0
2660

#গল্পঃ_দুষ্টু_মেয়ের_মিষ্টি_সংসার_
#লেখকঃ_Md_Aslam_Hossain_Shovo_(শুভ)
#পর্বঃ__৬_

√-রিতুঃ কক্সবাজার নিয়ে যাবে…

আমিঃ হায় আল্লাহ, এক দিনের মধ্যে আবার কক্সবাজার যাওয়া যায় নাকি? প্রস্তুতি লাগে না…

রিতুঃ আমি জানি না। আমি দূরে হানিমুনে যাবো তো যাবোই…

আমিঃ আচ্ছা নিয়ে যাবো, কিন্তু আমারও তাহলে শর্ত আছে…

রিতুঃ কি শর্ত বলো?

আমিঃ প্রথমে আমার চুল গুলো ছাড়তে হবে..

রিতুঃ হ্যা, ছেড়ে দিলাম।

~ বলে আমার চুল গুলো ছেড়ে দিলো ~

আমিঃ এবার তোমার হাত দুটো আমার হাতের মধ্যে দিতে হবে…

রিতুঃ এই দিলাম আমার হাত..

~ বলে হাত দুটো আমার হাতের মধ্যে রাখলো। আমি রিতুর হাত ধরে দিলাম আমার দিকে টান। রিতু এসে আমার বুকের উপর শুয়ে পড়লো। রিতুর মুখটা আমার মুখের খুব কাছে চলে এসেছে ~

আমিঃ এবার তোমায় বলতে হবে হঠাৎ করে হানিমুনে যাওয়ার ইচ্ছা হলো কেনো?

রিতুঃ আমিতো সেই ছোট বেলা থেকে শুনে আসছি বিয়ে হলে হানিমুনে যেতে হয়।

আমিঃ তাই বলে আজ হঠাৎ করে মনে পড়লো যে?

রিতুঃ ধুর, এতো প্রশ্ন করো না তো। নিয়ে যাবে কিনা তাই বলো..?

আমিঃ আচ্ছা চেষ্টা করবো। আগে বলো হানিমুনে গিয়ে কি কি করতে হয় যানো?

রিতুঃ হ্যা জানি তো..(হাসি দিয়ে)

আমিঃ কি কি করতে হয় বলো শুনি?

রিতুঃ অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গায় ঘুরতে হয়, অনেক কিছু খেতে হয়।

আমিঃ আর?

রিতুঃ তারপর অনেক কিছু শপিং করতে হয়।

আমিঃ আর?

রিতুঃ আর কি আবার, তারপর বাড়ি চলে আসতে হয়।

আমিঃ ওহ তোমার যেই গুলোতে লাভ, সেই গুলো করতে হয় ঠিক জানো। আমার লাভের সময় কিছু জানো না, একদম অবুঝ শিশু।

রিতুঃ মানে?

আমিঃ হানিমুনে গেলে যে রোমান্স করতে হয় তুমি বুঝি জানো না?

রিতুঃ লুচ্চা বদমাইশ পোলা…

আমিঃ হায় আল্লাহ, বউয়ের সাথে রোমান্স করবো এতে লুচ্চার কি হলো শুনি…

রিতুঃ সব সময় শুধু পঁচা কথা তাই না। তাই কখন যাচ্ছি হানিমুনে তাই বলো?

আমিঃ শর্ত আরো আছে তো…

রিতুঃ তাহলে বলো..

আমিঃ হানিমুনে যাবো ঠিক, কিন্তু কয়েকদিন পর। আর এই কয়েকদিন তুমি আমায় নিজ হাতে রান্না করে খাওয়াবে সাথে শাড়ি পড়া শিখে নিবে…

রিতুঃ হানিমুনের সাথে শাড়ির সম্পর্ক কি হলো?

আমিঃ অনেক বড় সম্পর্ক। তুমি বুঝবে না।

রিতুঃ কি সম্পর্ক বলো?

আমিঃ এই যে পিচ্চি ম্যাডাম, আপনি তো ঠিক মত শাড়ি পড়তে পারেন না। শাড়ি পড়লেও পরে শাড়ি একা একা খুলে পড়ে যায়। মাঝে মাঝে আমি তো আপনার পেট দেখে ফেলি, তাই আমি দেখলে তো সমস্যা নেই। যদি ঘুরতে গিয়ে শাড়ি পড়েন, আর আমার সাথে অন্য কেউ আপনার পেট দেখে ফেলে তাহলে বুঝি আমার ভালো লাগবে বলুন। আপনার পেট দেখার অধিকার শুধু আমার…(হাসি দিয়ে)

রিতুঃ যা দুষ্টু… (লজ্জা পেয়ে)

~ তারপর রিতুর সাথে এমনি গল্প করে দুইজন ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালের নাস্তা করে মামা বাড়ি থেকে আমাদের বাড়ি চলে আসলাম। এখন বসন্ত ঋতু থাকায় অনেক জায়গা থেকে পিকনিকে বাস যাচ্ছে, আমি সেই খোঁজ করতে লাগলাম। আর রিতু আমার পছন্দ মত রান্না করে খাওয়াতে লাগলো। এই ভাবে ১৫ দিন কেটে গেলো।

১৫ দিন পর এক জায়গায় খোঁজ পেলাম ৩ দিনের সফরে পিকনিকে যাচ্ছে, কিন্তু কক্সবাজার না, যাবে সিলেটে। ভাবলাম রিতুকে বলে দেখি সে কি বলে। একদিন সকাল বেলা রিতু আর আমি বসে আমার রুমে নাস্তা করছি। চিন্তা করলাম কথাটা এখনি বলি ~

আমিঃ পিচ্চি তোমার হানিমুনের মানে পিকনিকে যাওয়ার একটা গাড়ির খোঁজ পেয়েছি তো…

রিতুঃ সত্যি বলছো তুমি? (খুশি হয়ে)

আমিঃ একদম সত্যি।

রিতুঃ তাহলে কি আমি জামাকাপড় গুছিয়ে নিবো..?

আমিঃ আরে পিচ্চি, আগে পুরোটা শুনো তো…

রিতুঃ কি বলো?

আমিঃ কক্সবাজারের পিকনিকের গাড়ি পাই নাই। সিলেটের গাড়ির খোঁজ পেয়েছি।

রিতুঃ ওই তোমায় কি বলছি নাকি পিকনিকে যাবো? আমি বলছি হানিমুনে যাবো।

আমিঃ আরে পিচ্চি, একি তো হলো। সবাই পিকনিক করবে। আমরা হানিমুন করবো।

রিতুঃ তাহলে কি হানিমুন হবে?

আমিঃ হবে মানে, সাথে ছেলে মেয়ে সব হবে..(হাসি দিয়ে)

রিতুঃ সয়তান একটা। তাই সিলেট কোথায়?

আমিঃ মৌলভীবাজার জেলার পাশে।

রিতুঃ মৌলভীবাজার জেলা কোথায়?

আমিঃ তোমাকে চিনাতে গেলে আমি বুড়ো হয়ে যাবো। আগে যায়, তারপর সব দেখতে পারবে।

রিতুঃ তাহলে বলো কখন যাবে?

আমিঃ সামনের সপ্তাহে, মানে ৭ দিন পর।

রিতুঃ এখনো আরো সাত দিন। এই সাত দিন তাহলে আমি কি করবো?

আমিঃ মেয়েদের যে কাজ তাই করো। মুখে আটা ময়দা মাখাও তাহলে এই সাত দিন।

~ রিতু কয়েকটা ভেংচি কাটলো ~

আমিঃ ওই তোমার না কথা ছিলো শাড়ি পড়া শিখে নিবে এই গত কয়েকদিনের মধ্যে। কি শাড়ি পড়া কি পারো এখন?

রিতুঃ ইয়ে মানে…

আমিঃ তারমানে তুমি এখনো চেষ্টা করো নাই একবারো। যাও তাহলে আর যাওয়া হচ্ছে না।

রিতুঃ আচ্ছা তুমি রাগো না প্লিজ। আমি আজই চেষ্টা করবো।

আমিঃ মনে যেনো থাকে (রেগে)

~ তারপর নাস্তা শেষ করে রিতু রুম থেকে চলে গেলো। আমি বন্ধুদের সাথে দেখা করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলাম। দুপুরে নদী থেকে গোসল করে এলাম বন্ধুদের সাথে গিয়ে।

গোসল করে বাসায় এসে রুমে ঢুকা মাত্র দেখি রিতু একটা নীল রংয়ের শাড়ি কোমরে পেচিয়ে খাটের উপর আঁচল ফেলে মাজায় হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে। আমি রুমে ঢুকতেই রিতু আমায় দেখে তারাতাড়ি খাটের উপর থেকে শাড়ির আঁচল নিয়ে বুকে চেপে ধরলো। আমিও খুব লজ্জা পেয়েছি রিতুকে ওমন ভাবে হঠাৎ করে দেখায়। দ্রুত রুমের দরজা টেনে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলাম।

রুম থেকে বাইরে বের হয়ে হঠাৎ মাথায় এলো, বউ হলো আমার, তাহলে আমি লজ্জা পাচ্ছি কেনো! আমি দেখবো না তো কে দেখবে। এই ভেবে আবার দরজা খুলে রুমের মধ্যে ঢুকে গেলাম। গিয়ে দেখি রিতু আবার আঁচল নামিয়ে খাটের উপর রাখছে। আমায় দেখে আবার আঁচল উঠিয়ে বুকে নিলো ~

রিতুঃ ওই সয়তান, আবার আসলে কেনো? রুম থেকে বের হও তারাতাড়ি..

আমিঃ কেনো যাবো আমি! আমার বউকে আমি দেখবো।

রিতুঃ এখন রুম থেকে না বের হলে কিন্তু আম্মুকে ডাক দিবো বলে দিলাম।

আমিঃ সমস্যা নেই। জোরে করে ডাক দেও। বাড়ি তোমার দেবরও আছে, তুমি চিৎকার করে ডাক দিলে সেও কিন্তু দেখতে আসবে ভাবির কি হলো। তখন কি হবে বলো?

রিতুঃ তুমি তো খুব সয়তান। সময় বুঝে সুযোগ নিচ্ছো…

আমিঃ তা আর বলতে, হা হা । সুন্দরী বউতো আর এমনিতে সুযোগ দিবে না, তাই সময় বুঝে সুযোগ নিতে হচ্ছে।

রিতুঃ হয়েছে আর ঢং করতে হবে না। এবার রুম থেকে বের হও তো। আমি শাড়ি পড়বো।

আমিঃ পড়ো তাহলে। একটা শাড়ি পড়তে আর কতক্ষণ লাগে…

রিতুঃ দেখো না এটা কি কচুর শাড়ি। একপাশে গুঁজে দিলে আরেক পাশ খুলে পড়ে যাচ্ছে।

আমিঃ শাড়ি কচুর নাকি তুমি পড়তে পারো না।

রিতুঃ যায় হক, তুমি বের হও। আমি আবার চেষ্টা করবো।

আমিঃ আমি পড়িয়ে দিলে চলবে?

রিতুঃ তুমি আবার শাড়ি পড়াতে পারো নাকি?

আমিঃ না পাড়ার কি আছে। শাড়ি পড়ানো কি কোনো ব্যাপার হলো নাকি…

~ রিতু কপাল ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকালো ~

রিতুঃ এই পাড়ো মানে? এর আগে কয়টা মেয়ের শাড়ি পড়িয়ে দিয়েছো সত্যি করে বলো তো?

~ এই জন্য বউয়ের সাথে কোনো বিষয়ে আলোচনা করতে নেই। তারা পজিটিভ কে নেগেটিভ করতে একবারো ভাবে না ~

আমিঃ কি বলো তুমি রিতু, আমি কেনো অন্য মেয়েদের শাড়ি পড়াতে যাবো?

রিতুঃ তাহলে শাড়ি কিভাবে পড়ায় তুমি জানলে কিভাবে?

আমিঃ শাড়ি পড়ানো শিখতে আবার কাউকে শাড়ি পড়িয়ে অনুশীলন করতে হয় নাকি আগে?

রিতুঃ হুম লাগে তো…

আমিঃ তাই নাকি? আচ্ছা মদ খেলে কি হয়?

রিতুঃ মদ খেলে মানুষ মাতাল হয়ে যায়।

আমিঃ তুমি কখনো খেয়েছো?

রিতুঃ না তো। কিন্তু কেনো?

আমিঃ তুমি কখনো মদ খাও নাই, কিন্তু তুমি জানো তো যে মদ খেলে মানুষ মাতাল হয়। তেমনি আমিও কখনো শাড়ি পড়ায় নাই, কিন্তু তেমনি তোমার মত আমিও জানি কিভাবে শাড়ি পড়াতে বুঝলে.? (হাসি দিয়ে)

রিতুঃ তুমি আসলে সত্যি নাম্বার ওয়ান সয়তান (হাসি দিয়ে)

আমিঃ হয়েছে হয়েছে আর প্রশংসা করতে হবে না আমার। এবার চোখ বন্ধ করো, শাড়ি পড়িয়ে দিচ্ছি।

রিতুঃ আমি চোখ বন্ধ করবো কেনো? চোখ বন্ধ করবে তুমি…

আমিঃ চোখ বন্ধ করলে আমি শাড়ি কিভাবে পড়াবো বলো? তুমি বন্ধ করো তাহলে আর তোমার লজ্জা লাগবে না।

রিতুঃ আচ্ছা…

~ তারপর রিতু চোখ বন্ধ করলো। আমি রুমের দরজা ভিতর থেকে লক করে নিলাম। তারপর গিয়ে রিতু শাড়ির আঁচল শরীর থেকে খাটের উপর নামিয়ে রাখলাম। রিতুতো লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। চোখ বুঝে মুচকি মুচকি হাসি দিচ্ছে। রিতুর হাসি দেখে আমারও খুব হাসি পাচ্ছে।

আমিও শাড়ি পড়ানোর সময় ইচ্ছা করে বার বার রিতুর শরীর হাতের ছোঁয়া দিচ্ছি। রিতু আমার হাতের ছোঁয়া পেয়ে বার বার চোখ বুঝেই হাসি দিয়ে লাফ দিয়ে সরে যাচ্ছে। এমন কান্ড দেখে আমার কাছে দারুণ লাগছে, তাই সুযোগে সৎ ব্যবহার যাকে বলে তাই করে নিচ্ছি।

আমি নিজেই শাড়ির কুঁচি ঠিক করে গুঁজে দিলাম রিতুর কোমরে। পুরো শাড়ি ঠিক করে আঁচল উঠিয়ে দিলাম রিতুর কাঁধে ~

আমিঃ রিতু ম্যাডাম, আপনার শাড়ি পড়ানো শেষ।

~ রিতু চোখ খুলে ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো ~

আমিঃ কেমন হয়েছে বললে না তো?

রিতুঃ খুব সুন্দর হয়েছে তো। তুমি এই শাড়ি পড়ানো শিখলে কিভাবে শুনি?

আমিঃ তার মানে শাড়ি পড়ানো আমি শিখে গিয়েছি। এখন তো তাহলে বিয়ে করাই যায় (হাসি দিয়ে)

~ রিতু ভ্রু কুঁচকে আমার দিকে তাকালো ~

রিতুঃ বিয়ে করা যায় মানে? আরো বিয়ে করার ইচ্ছা আছে নাকি?

আমিঃ হুমম আছে তো, তোমার মত পিচ্চি আবার আনরোমান্টিক বউ যদি ঘরে থাকে তাহলে তো আরেকটা বিয়ে করাই উচিত। না পারি একটু ভালোবাসতে, না পারি একটু রোমান্স করতে।

রিতুঃ বুড়ো দাদুর এতো শখ কেনো শুনি পিচ্চি বউয়ের সাথে রোমান্স করতে হুম। রোমান্স ছাড়া কি ভালোবাসা যায় না?

আমিঃ না যায় না। আমি রোমান্স করবো…

রিতুঃ হি হি, যাও তাহলে আরেকটা বিয়ে করে নেও কোনো বুড়িকে।

আমিঃ পিচ্চি, আবার একটু চোখ বন্ধ করো।

রিতুঃ আবার কেনো?

আমিঃ চোখ বন্ধ করো তো। একটু বাদ আছে শাড়ি ঠিক করার।

~ রিতু চোখ বন্ধ করলো। আমি আবার হাটু গেরে বসে রিতুর পেট থেকে শাড়ি সরিয়ে রিতুর পেটে পাপ্পি দিয়ে ধরলাম। রিতু তো লাফ দিয়ে সরি গিয়ে আমার মাথার চুল দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে টেনে দাঁড় করালো আমাকে ।
সাথে “সয়তান” বলে সিনেমার নায়কদের মতো জোরে একটা ঘুসি দিলো আমার পেটে। ঘুসি খেয়ে তো আমার অবস্থা খারাপ। আমি দিলাম জোরে চিৎকার ~

আমিঃ ওমা গো, তোমার ছেলেকে মেরে ফেলছে গো…

~ মা রান্না ঘর থেকে দৌড়ে এসে আমাদের রুমের দরজায় ঠকঠক শব্দ করতে লাগলো। আমি খাটের উপর পেট ধরে বসে পড়লাম। রিতু গিয়ে দরজা খুলে দিলো। মা রুমের মধ্যে এসে আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ~

মাঃ পাজি ছেলে, আমি তো ভয় পায়ছি। এই তো তুই ঠিক আছিস, তাহলে ওই ভাবে চিৎকার করলি কেনো?

আমিঃ কোথায় আর আমি ঠিক আছি। তোমার আদরের বউমা আমায় পেটে ঘুসি দিয়েছে,…

মাঃ সত্যি কি রিতু তুই শুভর পেটে ঘুসি দিয়েছিস?

~ রিতু মাথা নেড়ে বললো, হুমম ~

মাঃ কেনো, কি কারনে?

~ রিতু চুপ করে আছে। রিতুর চুপ থাকা দেখে আমার খুব হাসি পাচ্ছে ~

আমিঃ কেনো আবার, ওর ঘারে তো পেত্নী আছে। ওই পেত্নীর সয়তানি বুদ্ধিতে এমন পাগলামি করে সব সময় সে।

~ রিতু আমার দিকে কপাল, ভ্রু কুঁচকে তাকালো ~

মাঃ ভালোই হয়েছে। তুই ও যেমন পাগল, তোর বউও হয়েছে তেমন পাগলী। এবার দুই জনই মারামারি কর, আমি গেলাম..

~ বলে মা রুম থেকে চলে গেলো। আমি রিতুর দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসি দিচ্ছি, আর রিতু রাগে মুখ লাল টমেটো বানাচ্ছে ~

আমিঃ কি হলো পিচ্চি, মায়ের কাছে বললে না কেনো?

রিতুঃ এইবার বলি নাই, এর পরের বার দুষ্টুমি করলে সত্যি বলে দিবো।

আমিঃ কি বলবে শুনি?

রিতুঃ তুমি যেই টুকু দুষ্টুমি করবে, তার থেকে বেশি বানিয়ে বানিয়ে বলবো।

আমিঃ তাই নাকি? পারবে বলতে তুমি, লজ্জা লাগবে না.?

রিতুঃ লাগলে লাগবে, তাও বলবো দেখো।

আমিঃ সত্যি?

রিতুঃ এক সত্যি, দুই সত্যি, তিন সত্যি…

আমিঃ আচ্ছা তাহলে দেখি কেমন সত্যি…

~ এই বলে রিতুর হাত ধরে এক টান দিয়ে কাছে এনে কোমর জরিয়ে ধরে খাটের উপর শুইয়ে দিলাম রিতুকে । আমি সরাসরি রিতুর উপর শুয়ে পড়লাম। রিতু ওর উপর থেকে আমাকে সরাতে হাত দিয়ে ঠেলতে লাগলো ~

আমিঃ এখন কি বলবে শুনি মায়ের কাছে?

রিতুঃ আমি বলে দিবো তুমি আমায় জোর করে জরিয়ে ধরছো..

আমিঃ তাই নাকি?

~ বলেই রিতুর ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিল করে দিলাম। রিতু আমার চুল গুলো টেনে ছিড়ে নিতে চাচ্ছে । দুই মিনিট পর রিতু শান্ত হয়ে গেলো। প্রায় ৫ মিনিট পর এক টানা কিস করে ছেড়ে দিলাম। রিতু আমাকে সরিয়ে দিয়ে খাট থেকে উঠে নিচে নেমে দাড়িয়ে শাড়ি ঠিক করতে লাগলো ~

আমিঃ কেমন লাগলো গো আমার পিচ্চি বউ? (হাসি দিয়ে)

~ রিতু রাগী ভাবে আমার চোখের দিকে তাকালো ~

রিতুঃ সয়তান, তুই আমাকে থু থু খাওয়ালি?

~ ও মোর খোদা, পিচ্চি বউ বলে কি এটা! খাওয়ালাম মিষ্টি, সে বলে থু থু ~

আমিঃ ওই পিচ্চি, এটা থু থু হবে কেনো? এটা তো মিষ্টি..

রিতুঃ মিষ্টি না ছাই, আমায় থু থু খাওয়ালি কেনো তুই? আমি এখনি আম্মাকে বলে দিবো…

~ বলে রিতু রুম থেকে দৌড় দিয়ে বের হয়ে গেলো। আজ মনে হয় মানসম্মান সব শেষ করে দিবে রিতু। আমিও তারাতাড়ি খাট থেকে উঠে রিতুকে আটকাতে পিছনে পিছনে দৌড় দিলাম।

রিতু এক দৌড়ে বড় ঘরে গিয়ে মায়ের সামনে বসে বললো, “আম্মা খেতে দেন আমায়”

যাক বাঁচা গেলো, পিচ্চির মাথায় একটু বুদ্ধি হয়েছে। না হলে তো মানসম্মান সব যেতো এখন। আমাকেও মা খেতে বসতে বললো। আমিও খেতে বসলাম। আমি, রিতু আর আমার ছোট ভাই খাচ্ছি, আর মা খাবার পরিবেশন করছে। কিছুক্ষণ পর মা রিতুকে বললো ~

মাঃ রিতু, শুভ বললো তোরা নাকি পিকনিকে সিলেট যাচ্ছিস ঘুরতে?

রিতুঃ আম্মা, আপনার ছেলের সাথে আমি যাবো না।

~ আমরা সবাই অবাক হয়ে রিতুর দিকে তাকালাম ~

মাঃ কেনো রে মা, আমার ছেলে কি করলো এমন?

রিতুঃ আপনার ছেলে অনেক পঁচা..

মাঃ পঁচা মানে?

রিতুঃ আপনার ছেলে সুযোগ পেলেই আমায় চুমু দিতে আছে শুধু..

~ আমিতো শুনে লজ্জায় শেষ। মা কোনো উত্তর না দিয়ে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে হেসে দিলো। আমার ছোট ভাই তো হাসতে শুরু করলো। রিতু রিতুর মত মাছের কাটা বেছে বেছে মাছ খেয়েই যাচ্ছে, আমায় যে কত বড় লজ্জায় ফেললো তার কোনো হুশই নেই তার। আমি মাথা নিচু করে চুপচাপ খাওয়া শেষ করে উঠে গেলাম।

আমি রুমে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর রিতু এলো। আমি শক্ত করে রিতুর হাত চেপে ধরলাম ~

আমিঃ ওই পিচ্চি, মায়ের সামনে ওগুলো কি বললে তুমি?

রিতুঃ তাও তো কম বলছি। তুমি যে আমায় থু থু খাওয়াইছো সেটা তো বলি নাই। এর পর কোনো দুষ্টুমি করলে সব বলে দিবো।

আমিঃ সুযোগ কিন্তু আমারও আসবে…

রিতুঃ হি হি, আমি তখনো আম্মাকে ডাক দিবো..

আমিঃ তুমি না হানিমুনে যাওয়ার জন্য পাগল, তাই তখন আম্মাকে কোথায় পাবে? তখন তো কোনো ছাড়াছাড়ি নেই।

রিতুঃ আচ্ছা দেখা যাবে…

আমিঃ তখন………………. (..#চলবে..)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে