তোমার নেশায় আসক্ত পর্ব-১২+১৩

0
1997

#তোমার_নেশায়_আসক্ত
#part:12
#Suraiya_Aayat

ভিতরে থাকা লোকটা আরুকে গাড়ির ভিতরে টেনে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে গাড়ি চালানো শুরু করে দিল ৷ ড্রাইভ সিটে বসে থাকা লোকটাকে আরু দেখে চিনতে পারল না , ওর গলা যেন আরো শুকিয়ে আসছে, না জানি লোকটা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে আর তার উদ্দেশ্যই বা কি কিছু জানে না ও ৷ আরু ইচ্ছামতো কিলঘুসি মারছে নিজেকে বাঁচানোর জন্য৷

আরূ: আপনি গাড়ি থামান, না হলে আমি কিন্তু এক্ষুনি গাড়ি থেকে ঝাঁপ দেবো বলে দিলাম ৷

লোকটা: সেই ভুলটা একদম ই করবেন না ৷

কথাটা বলতেই আরূ জোরে দুম করে আরো একটা কিল বসালে লোকটার কাঁধ বরাবর , লোকটার রীতিমতো খারাপ অবস্থা, প্রচন্ড ব্যথা পেয়েছে ৷

শেষমেষ না পেরে সিটের পাস থেকে ক্লোরোফর্মের বোতলটা নিয়ে আরুর মুখের সামনে স্প্রে করতে.ই কিছুক্ষণের মধ্যেই আরূ অজ্ঞান হয়ে গেল , আর তার সঙ্গে লোকটাও যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো ৷ এত কিল-ঘুসি লোকটাকে আরু মেরেছে তা সারা জীবনেও এত কিল-ঘুসি পাইনি সে ৷

|
|💖
|

চেয়ারে হাত-পা অবস্থায় আরূকে বেঁধে রেখেছে, চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার ৷

এতক্ষণে গায়ের ভিজে জামা কাপড় গুলোও প্রায় অর্ধেক শুকিয়ে এসেছে , কতক্ষণ যে ওখানে পার করল তার হিসাব নেই ৷ জ্ঞান ফিরতেই নিজেকে একটা অন্ধকার ঘরে আবিষ্কার করেছে ,জোরে জোরে চেঁচাতে লাগল আরূ ৷

হঠাৎ একটা গায়ের উপর দিয়ে আরশোলা যেতেই আরূ আরো বেশীকান্না করতে লাগলো ৷

আরূ: প্লীজ হেলপ , কেউ আমাকে বাঁচান ,আমি বাড়ি যাব , প্লিজ কেউ হেল্প করুন , আমি ওনার কাছে ফিরে যাবো , প্লিজ হেল্প বলে জোরে জোরে কাঁদতে লাগল৷

হঠাৎ কারও পায়ের আওয়াজ শুনে কান্নার মাত্রাটা যেন দ্বিগুন হয়ে গেল আরূর ৷

হঠাৎ মুখের উপরে আলো পড়তেই সামনে তাকাতেই চমকে গেল কারণ সামনে আরিস রয়েছে আর তার পাশে একজন আরিসের সমবয়সী ছেলে , তাকে অবশ্য আরূ কখনো দেখেনি তবে সেই ওকে এখানে এনেছে এটুকু মনে আছে ৷

তবে আরিসের হাতে ধারালো ছুরির টা দেখে আরুর প্রাণ যায় যায় অবস্থা ৷

আরূ : আপনি এসে গেছেন! প্লিজ এখান থেকে আমাকে নিয়ে যান , আর এই লোকটা আমাকে এখানে এনেছে , আপনি ওনাকে মারূন ধরে ৷ আর আমি আর কখনও আপনার কথার অবাধ্য হবো না প্লিজ আমাকে নিয়ে জান এখান থেকে ৷

আরিস আরূর কথার কোন উত্তর দিল না , জোরে জোরে ভয়ঙ্কর একটা হাসি দিতে লাগল তা শুনে আরূর প্রাণ যায় যায় অবস্থা , ও কিছুতেই বুঝতে পারছে না আরিশ কেন এমন পাগলামো করছে ৷ আর ওর সামনে আরূ বসে আছে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাও কেন আরিশ ওকে বাচাচ্ছেনা ?

আরূ ভয়ে ভয়ে: আপনি এভাবে হাসছেন কেন আর আপনার হাতে ছুরি কেন?

আরিশ এবার ধীর পায়ে ছুরিটা হাতে নিয়ে আরুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ৷ তারপর ও আরুর গলায় ছুরি ঠেকাতেই আরূ হাউ হাউ করে কেঁদে দিল ৷

আরূ: আমাকে মারবেন না প্লিজ , আপনি যা বলবেন আমি তাই করব তবে ছুরিটা হাত থেকে ফেলে দিন৷ আমার খুব ভয় করছে , আমি আপনার থেকে আপনার জীবন থেকে চলে যাব তবুও আমাকে মারবেন না প্লিজ ৷ কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো গলায় আটকে আসছে তা ও কে নিজেকে বাঁচানোর জন্য তো কথাগুলো বলতেই হবে , যদি এতে আরিশের ওর প্রতি মায়া হয় ৷

আরিশ ছুরিটা আরুর গলায় জোরে চেপে ধরল,ছুটি ধরা জায়গায় মাংসটা সামান্য কেটে গিয়ে একটু রক্ত গড়িয়ে পড়তেই আরূর চোখের জল যেন সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেল ৷

আরিশ: সাহস হয় কি করে তোমার আমার জীবন থেকে চলে যাওয়ার , কোন অধিকার নেই তোমার তা করার ৷ তোমাকে সারা জীবন আমার সাথেই থাকতে হবে , সে তুমি চাও আর না চাও, এই কথাটা আমাকে যদি আর দুবার বলেছ তবে আর আসত থাকবে না তুমি ৷

আরু : আমি আপনার সাথেই থাকবো , আমাকে প্লিজ ছাড়িয়ে দিন এখান থেকে, ৷

আরিশ আগের অবস্থান থেকেই বললো : আজকে তো তুমি শেষ বলে ছুরিটা আরেকটু জোরে চেপে ধরতেই আরূ অজ্ঞান হয়ে গেল তারপর কি হল ওর আর মনে নেই ৷

|
|💖
|

অর্ধেক রাতে নিজের উপর সামান্য কিছুটা ভারী ভারী বলে মনে হতেই আরূ চোখ খুললো তারপরে ও কোথায় সেটা যখন ও মনে করতে লাগলো তখনই মনে পড়ে গেল আরিস এর সেই ভয়ঙ্কর চেহারার কথা,
কথাটা ভাবতেই জোরে চেচিয়ে উঠল আরূ৷

আরিসের ঘুম ভেঙে গেল , ও হুড়মুড় করে উঠে পরল৷

আরিশ : কি হয়েছে আরূপাখি এমন করছ কেন?

আরিশ কে দেখে যেন আরূর ভয়টা দ্বিগুণ হতে লাগলো , আরিশকে ধাক্কা দিল সাথে সাথে ও নিচে পড়ে গেল ৷

আরু: ছোবেন না আপনি আমাকে , আপনি আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন ৷ কি ক্ষতি করেছি আমি আপনার যে আপনি এরকম করছেন আমার সাথে! আজ আমার যদি কিছু হয়ে যেত তাহলে ,?আর আমাকে এখানেই বা কে আনলো?

আরিশ হাতের উপর হাত রেখে দাঁড়িয়ে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলল: আমি এনেছি তোমাকে, এনি প্রবলেম !

আরূ: আমি আর এক মুহূর্তও এখানে থাকবো না এক্ষুনি চলে যাব ৷ বলে যেই দরজা খুলে বেরিয়ে যেতে যাবে তখনই খপ করে আরিশ আরূর হাত ধরে ফেলল৷

আরুশি : আপনি আমাকে ছাড়ুন , আমি আপনার সাথে থাকবো না আপনি আমার ক্ষতি চান ৷

আরিশ আরুশির হাত জড়িয়ে ধরে ওর সাথে মিশিয়ে নিল তারপরে গভীর আর শান্তকণ্ঠে আরুশিকে বলল : আই লাভ ইউ আরুপাখি ৷

আরূ আরিশ কে ধাক্কা মেরে : আপনি আমাকে ভালোবাসেন না , যদি বাঁসতেন তাহলে ছুরিটা ওভাবে আমার গলায় ধরতে পারতেন না ৷

আরিশ এবার আরুশিকে কোলে তুলে নিল ৷

আরিশ আরুকে নিয়ে ব্যালকনির দিকে এগিয়ে গেল আর সাথে একটা blanket নিল ৷

আরূশি : আপনি এবার আমাকে ব্যালকনি থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাই না ! আমাকে নামান, আমি আর এক মুহূর্তও আপনার সাথে থাকবো না ৷

বেলকুনিতে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসে আরুশিকে কোলে নিল আরিশ ৷

কি সবসময় পালানোর কথা বল হ্যাঁ ? জানো না আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি , আর তোমার মনে সন্দেহ থাকতেই পারে আমাকে নিয়ে, অবশ্যই আমি তা তোমাকে বলব ৷

আরুশি: আমি আপনার কোন মনগড়া কথা শুনতে চাই না আপনি আমাকে ছাড়ুন ৷

আরিশ ধমক দিতেই আরূ একদম চুপ হয়ে গেল,

আরিশ : এবার আমি যা বলবো তুমি শুধু শুনবে৷

আরিশ : তোমাকে যে কিডন্যাপ করে নিয়েছিল সে আর অন্য কেউ নয় ও হচ্ছে আর আমার ফ্রেন্ড আরাভ ৷ তোমাকে আমি বলেছিলাম যে কলেজে শেষে দাঁড়াতে কিন্তু তুমি কি করলে না, দাড়াওনি, আমাকে উপেক্ষা করে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাড়ি এসেছিলে ৷ খবরটা আমার কানে পৌঁছেছে ঠিকই তবে অফিসের একটা ইমপর্ট্যান্ট কাজ থাকার কারণে সঙ্গে সঙ্গে আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব ছিল না তাই আরাভের অফিস ছুটির সময় ওকে বললাম যে মাঝ রাস্তা থেকে তোমাকে যেন গাড়িতে তুলে নেয়, নিয়ে ওখানে তোমাকে বেঁধে রাখে , যতক্ষণ না আমি আসছি ততক্ষনে যেন তোমাকে না ছাড়ে ৷

আরোশী : এতে আপনার লাভ কি হল?

আরিস: এতকিছু করার কারন তোমাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য , আর এটা বোঝানোর জন্য যে আমি যা বলব সেই কথাটা যদি তুমি না শোন তবে প্রত্যেক পদে পদে তুমি বিপদে পরবে ৷ আর সব সময় তো তোমাকে রক্ষা করার জন্য আমি সেখানে থাকবো না তাই আমি যা বলব তার বাইরে গিয়ে এক পা-ও চলবে না তুমি ৷ তোমার অজান্তেই তোমার অনেক বিপদ আছে যা হয়তো তুমি জানোনা , তোমাকে আমি হারাতে দেব না কখনো নিজের থেকে ৷ (বলে ওকে বুকে জড়িয়ে নিল)

আরুশি চুপচাপই রইল শান্ত হয়ে কারন এত কিছু জিনিস আরিশ ভেবে করেছে তা ওর ধারণার বাইরে….

সেদিনের রাতটা ওভাবে আরিশের বুকেই কাটাল আরূ ৷

সকালে ব্রেকফাস্ট টেবিলে,,,,,,

আফজাল সাহেব : আরিশ আর একমাস পরেই তো্মার ফাইনাল exam , তা কী ডিসিশন নিলে? এরপর কি করবে আই মিন আমি বলতে চাইছিলাম যে আমার অফিস সামলাবে নাকি বিদেশে চলে যাবে?

আরিশ : সেরকম কোন প্ল্যান নেই তবে ইচ্ছা আছে যে বিদৈশে গিয়ে প্রফেসরি করার,৷ কলেজ থেকে যে ফাস্ট হবে তাকে সুযোগটা দেওয়া হবে এখন সবকিছুই ডিপেন্ড করছে রেজাল্টের উপর , দেখি কি হয় ৷

আরিসের মা: অফিসের এত কাজের প্রেসার তাছাড়া কলেজেও যেতে পারছিস না , সবকিছু ম্যানেজ করতে পারবি একা?

আরিশ একটা মুচকি হাসলো : আমি জানিনা ৷ আমি শুধু সময়ের অপেক্ষায় আছি ৷

সানা : ভাইয়া ধর তুই গোটা ইউনিভার্সিটি টপার হলি,আর হবিও আমি কেন সবাই জানে, তাহলে সে সুযোগ পাবি তুই ,তখন কি তুই চলে যাবি?

আরিস : ইচ্ছা তো আছে দেখি কি হয় ৷

সানা : তাহলে আরূর কি হবে ? আই মিন ওর পড়াশোনার ক্ষতি হয়ে যাব, তোর সঙ্গে যদি যায়৷

আরিস ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বাঁকা চোখে দেখে বলল: আমি কি একবারও বলেছি যে আমার সঙ্গে ওকে নেব ! আর তাছাড়া আমি ওকে নিয়ে যেতে চাইলে ও যাবে না তাই না আরুপাখি ?

আরোশী মাথা নিচু করে চুপ চাপ খাচ্ছে কোন কথা বলছে না, কিই বা বলবে ? ওর তো এখনও আরিশের প্রতি কোন অধিকারবোধ জন্মায়নি যে আরিশকে জোর গলায় বলবে যে আমি আপনার সঙ্গে যাব৷ অধিকার দেখালে বলত ৷

আরিশ : যার ইচ্ছা হবে যাবে , আর যার ইচ্ছা হবে যাবে না , বলে ব্রেকফাস্ট কমপ্লিট করে ঘরে চলে গেল…..

কিছুক্ষণ পরে ঘরে আসলো আরু দেখলো আররিস টাই পড়ছে ৷

আরিশ দেখল আরুশি কিছু বলল না , হয়তো আরিশের বলা কথাগুলোর কারনে কিছুটা হলেও খারাপ লেগেছে….

অনেকক্ষণ ধরে আরুশি চুপচাপ বসে আছে , কেউ কিছু বলছে না দেখে আরিশ নিস্তব্ধতা কাটিয়ে বলে উঠলো : আজকে তোমার ক্লাস নেই?

আরোশী শান্তকণ্ঠে : আছে ৷

আরিস : তাহলে এখনো রেডি হওনি কেন?

আরূশি : আমার আজকে যেতে ইচ্ছা করছে না তাই আমি যাব না ৷

আরিশ মনে মনে: কথাটা ম্যাডামের মনে লেগেছে দেখেছি , বেশ ভালো ৷
তুমি না চাইলেও যেতে হবে , আমি বলছি তুমি যাবে তো যাবে ৷

আরোশী বিরক্ত হয়ে : আমি বললাম তো যাব না আপনি কেন আমাকে জোর করছেন?

আরিস : যাবে তার কারণ প্রিন্সিপালের থেকে তুমি এক সপ্তাহের ছুটি নেবে সেই কারণে ৷

আরোশী অবাক হয়ে: প্রিন্সিপালের থেকে আমি কেন ছুটি নেব?

আরিশ : সেটা তোমার এখন না জানলেও চলবে, আগে রেডি হয়ে এস ৷

আরুশি: আমি যাব না বলেছি তো যাবো না দেখি আপনি কি করতে পারেন ৷ বলে মুখ গম্ভীর করে বসে রইল ৷

আরিশ : তাহলে এখন দেখছি আমাকেই ড্রেস চেঞ্জ করিয়ে দিতে হয় ৷

আরূ তাও আগের মতো করেই বশে আছে তা দেখে আরিশ খানিকটা অবাক হলো ৷

আরিশ: আসলে না আরুপাখি আমার এখন খুব রোমান্স রোমান্স পাচ্ছে , এসো এখন বাকি কাজটুকু সেরে ফেলি ,অফিসে পরেও যেতে পারব ৷

কথাটা শোনামাত্রই আরুশি আর এক মিনিটও দেরি করল না , একটা থ্রি-পিস নিয়ে ওয়াসরুমে ঢুকে গেল৷

আরিশ : শেষমেশ কাজ হয়েছে ৷

চলবে,,,,,,

#তোমার_নেশায়_আসক্ত
#part:13
#Suraiya_Aayat

আরিশ আরুকে কলেজে পৌছে দিচ্ছে আর সেখান থেকে ও অফিসে যাবে ৷ যেহেতু এক সপ্তার ছুটি নিতে হবে সেই কারণে সমস্ত কাজ আগে থেকেই করে রাখার চেষ্টা করছে…..

সানার আজকে একটা বার্থডে পার্টি আছে তাই সেখানে অ্যাটেন্ড করতে যাবে বলে কলেজে আসেনি, না হলে আজকে সানা আর আরু দুজনে একসঙ্গে আসত ৷ আরিশের সাথে আসার কোনো ইচ্ছা আরূর ছিল না ৷

গাড়ি আপন গতিতেই চলছে, কেউ কোনো সাড়া শব্দ করছে না ৷ সকাল থেকে আরূ বেশ চুপচাপ ৷.আরিশ ভেবেছিল যে আরূ হয়তো কৌতুহলী হয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করবে যে কেন এক সপ্তাহ ছুটি নিচ্ছে? ওরা কোথায় যাবে ? বা অন্য কোন ব্যাপার হয়েছে কী? কিন্তু সে সমস্ত কোন উত্তেজনাই আরূর মধ্যে নেই, বরং আরো যেন বেশি শান্ত হয়ে গেছে ৷
আরিশ যতদূর জানে আরূ অত্যন্ত শান্ত হলেও প্রাণোচ্ছল একটা মেয়ে , আনন্দটাকে সঠিক সময় ভাগ করে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে ও ৷ তবে কী সকালের বলা কথাটা কী খুব বেশি ইফেক্ট করেছে!

আরিশ গলা পরিষ্কার করে বলল: কালকে কটা কিল ঘুষি মেরেছিলে তুমি আরাভকে?

আরিশের কথা শুনে আরু আরিশের দিকে তাকালো৷

আরিশ : আরাভ আমাকে বলেছে তুমি ওকে অনেক কিল ঘুষি মেরেছ, বেচারা তো আজকে ব্যথায় উঠতেই পারছেনা ৷ আচ্ছা এতো কিল ঘুসি মারার কি দরকার ছিল ?

আরু শান্ত দৃষ্টি আরিশের উপর নিক্ষেপ করে আবার পুনরায় বাইরের দিকে তাকাল ৷ ছিটে ফোঁটা বৃষ্টি হচ্ছে,কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি মুখের উপর আছড়ে পড়তেই দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস নিল আরূ ,হয়তো একঘেয়েমি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে এই প্রকৃতির মাঝে থেকেই ৷
আরিশ শুধু আরুকে দেখছে কিন্তু আরুকে আটকাচ্ছে না কারণ আরূর বলা সেই কবিতা আরিশ এর অজানা হলেও আরুর প্রতি ওর অনুভূতিগুলোও ঠিক আরুর বলা সেই কবিতার মতোই ৷

কিছুক্ষণ বৃষ্টির পর আকাশটা পরিষ্কার হয়ে গিয়ে বৄষ্টিটা যেন কমে গেল ৷ আরূ তো এরকম একটা বৃষ্টিভেজা দিনই চেয়েছিল৷ হয়তো প্রকৃতিও আজকাল ওর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে সকলের মতই ৷ এই সমস্ত ভাবনা ওর মনে আসছে তবে কেন আসছে সে প্রশ্নের উত্তর হয়তোবা ওর এখনো জানা নেই ৷

আরাভের প্রসঙ্গ তুলল আরিশ জাতে আরূ একটু হলেও কথা বলে, কিন্তু আরূ যে এভাবে ওর ঈশারায় তিরটা আরিশের বুকে নিক্ষেপ করবে তা ভাবেনি আরিশ৷ কিছুটা হলেও অদ্ভুত লাগল ওর যে ব্যাপারটা নিয়ে আরূ কিছু বলল না….

কলেজের সামনে আসতেই গাড়িটা থামিয়ে দিল আরিশ ৷

দুজনেই গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়াল ৷

গাড়ি থেকে নামতেই আরু আরিশ এর দিকে না তাকিয়েই বলল : আপনার ফ্রেন্ড কে বলে দেবেন যে আমি আসলে বুঝতে পারিনি উনি এতটা ব্যাথা পাবেন ৷ আসলে একটা মেয়ের সম্মান তার কাছে অনেক বড় জিনিস , আর সেই সম্মানে কেউ আঘাত করতে চাইলে একটা মেয়ে তার প্রতিবাদ করবেই আর সেই মুহূর্তে আমিও তাই করার চেষ্টা করেছি , অনেক কিল ঘুষি মেরেছি নিজের আত্মরক্ষার জন্য, তখন হয়তো এগুলো আমার মাথাতেও আসেনি যে আপনি এত কিছু করতে পারেন ৷ তাই আপনার ফ্রেন্ড কে বলে দেবেন কালকের ব্যবহারের জন্য আমি খুব দুঃখিত৷ বলে আরু আরিশের দিকে একবারও না তাকিয়ে কলেজে ঢুকে গেল….

কথাগুলো শুনতে আরিশ এর বুকের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠল , অদ্ভুত এক কষ্ট ছিল আরুর বলা কথা গুলোর মধ্যে , তা যে অভিমান থেকে ও অরিস কে কথাগুলো বলেছে সেটা বুঝতে পারল আরিশ ৷

আরিশ এবার মনে মনে ভাবছে : সকাল বেলা কি আমার বলা কথাটা বড় বেশি ইফেক্ট পরেছে আরুপাখিকে?এত বেশি না বললেও কি পারতাম! তাছাড়া আমি তো ওটা মজা করেই বলেছিলাম তা আরুপাখি কেন বোঝেনা!
এটা বলে অফিসে চলে গেলো আরিশ ৷

|
|❤
|

অভ্র: আঙ্কেল যত তাড়াতাড়ি হোক আপনি আরূশিকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিন না হলে আমার কাজটা আটকে থাকবে, দূজনেই ফেসে যাব ৷মনে রাখবেন দু’জন ই কিন্তু সমান টাকা নিয়েছি ৷

ইমরান সাহেব: চিন্তা করোনা , আমি যখন বলেছি আরুকে তুমি পাবে তখন তুমি পাবে ৷ মাঝখানে ওই আরিশ বলে ছেলেটা এসে সব কিছু গন্ডগোল করে দিল ৷

অভ্র: আজকে ওর জন্য আমার এই অবস্থা, গায়ের ব্যথা এখনো যায় নি ৷ সেদিন শুধু আমি নেশার ঘোরে ছিলাম তাই না হলে ওখান থেকে ওকে বেচে ফিরতে দিতাম না ৷ একমাত্র পথের কাঁটা ও , একেবারে শেষ করে দিতাম ৷

ইমরান সাহেব: এসব কথা এখন তুমি ভাবতে যেওনা, আগে ভাবো কি করে আরূকে ওই ছেলেটার কাছ থেকে আনা যায় না হলে তোমার আমার দুজনের ই বিপদ ৷

অভ্র মনে মনে : আরু উনার নিজের মেয়ে তাও উনি নিজের মেয়েকে জেনে শুনে আমার হাতে তুলে দিচ্ছেন কেন? ব্যাপারটা কি! সেই কারণটা তো উনি আমাকে বলেননি ৷ সে যাই হোক আমার সঙ্গে তো উনিও রয়েছেন সেটাই বড় কথা ৷

ইমরান সাহেব: কি এত ভাবছো অভ্র? ভয় পেয়ে গেলে নাকি?

অভ্র: ভয় পাইনি আঙ্কেল , ভাবছিলাম যে আরু আপনার মেয়ে তাও আপনি আপনার নিজের মেয়েকে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন কারণটা কি আঙ্কেল?

ইমরান সাহেব :কারণ তো আছেই ৷ ওর জন্য আমি আমার বাবা সমস্ত প্রপার্টি থেকে বঞ্চিত হয়েছি৷

আরমান সাহেব : আমার বাবা বলেছিলেন যে তার মৃত্যুর আগে উনি ওনার সমস্ত প্রপার্টি আমার নামে করে দেবেন ৷ অমাকে না দিলেও আহান কেও সব দিলে প্রপার্টি সব আমাদেরই থাকতো, কিন্তু আমার বাবা আরুকে খুব ভালোবাসতেন তাই উনি উনার প্রপার্টির সমস্তটাই আরুর নামে করে দিয়েছেন যখন আরুর ছয় বছর বয়স তখনই দলিল তৌরি হয় ৷আর দলিলে লেখাই আছে 20 বছর হলে সবকিছু আরুর ৷ সেটা এখনো কেউ জানে না আমি ছাড়া ৷ তাই সব সম্পত্তি থেকে আমি তখন বঞ্চিত হয়েছি , আহান বা আরূ বা আরুর মা কেউই এই সমস্ত কথা জানেন না, তারপর থেকে আমার আরুর উপরে রাগ ৷ সব থেকে বড় কথা হলো আরূ আমার নিজের মেয়ে নয় , ওকে আমরা কুড়িয়ে এনে মানুষ করেছিলাম ৷ যখন আমি চাকরি সূত্রে ধানমন্ডিতে থাকতাম তখন আরূকে কুড়িয়ে পেয়েছিলাম আমরা আহান তখন খুব ছোট তাই বোঝার বয়স ছিল না ৷ আর অরুর মায়ের মেয়ের খুব শখ ছিল তাই উনি আরু কে ফেলে আসতে পারেননি, মায়ায় পড়ে গিয়েছিলেন ৷ 4 বছর পর আরুকে নিয়ে বাড়ি ফিরতেই বাবা ভাবলেন আরু হয়তো আমাদেরই মেয়ে ৷ আরুর প্রতি ওনার ভালবাসাটা আলাদাই ছিল, কিন্তু তাই বলে একটা বাইরের মেয়ের নামে এভাবে নিজের সব সম্পত্তি লিখে দেবেন তা মানতে পারিনি, সম্পত্তি আমাকে দেননি ৷ আর আহানও হয়েছে বাবার মত, সারাক্ষন আরূকে আগলে আগলে রাখে ৷

অভ্র : কিন্তু তাহলে তো ওকে ছেড়ে দিলে তো আপনি সব প্রোপার্টি থেকে বঞ্চিত হবেন !

আরমান সাহেব : দলিলে লেখাই আছে আরূর 20 বছর পূর্ণ হলেই এই সমস্ত প্রপার্টি আরুর নামে চলে যাবে , আর তখনই আরুর থেকে সব প্রোপার্টি আমি নিজের নামে করে নেব ৷
আরুর 20 বছর হতে আর কিছুদিন মাত্র বাকি আছে, ভেবেছিলাম আমার হাতের মুঠোয় সব , কিন্তু সব একটুর জন্য হাতছাড়া হয়ে গেল ৷

অভ্র:তাহলে আঙ্কেল আরুকে আপনাকে মেনে নিতে হবে এখন না হলে আপনি তো কোন প্রপার্টি পাবেন না , আর ও আপনার থেকে দূরে দূরে থাকলে কিছুই পাবেন না আপনি ৷ যে করেই হোক আরু কে এই বাড়িতে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করূন ৷

আরমান সাহেব: ঠিকই বলেছ, দেখছি কি করা যায়৷

|
|❤
|

আরিশ একটা ইম্পরট্যান্ট ফাইল চেক করছে তখনই দরজায় নক করতেই আরিস বলে উঠলো…

আরিশ: ইয়েস কাম ইন ৷

জেরিন: sir ল্যান্ডলাইনে আপনার কল এসেছে৷

আরিশ: কোথা থেকে?

জেরিন: নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ৷

আরিশ: কে ফোন করেছেন জানো?

জেরিন:বললেন যে কলেজের প্রিন্সিপাল ৷

আরিশ: ওকে তুমি যাও আমি দেখছি ৷

জেরিন : ওকে স্যার ৷ বাই দা ওয়ে স্যার কফি?

আরিশ : একটা ব্ল্যাক কফি আনো , উইথ আউট এনি সুগার ৷

জেরিন জানত যে আরিশ এই কফিই খাবে তাও একবার জিজ্ঞাসা করল আরিশ এর মুখ থেকে কথা শুনতে ৷ আরিশের কথাগুলো শুনতে খুবই ভালো লাগে জেরিনের ৷ আরিস এর উপর এক দফা ক্রাশ খেয়ে বসে আছে জেরিন তা আরিশের অজানা ৷

আরিশ মনে মনে: কলেজে কি কোন প্রবলেম হলো নাকি আরুপাখির কোন সমস্যা হয়েছে! যদি তাই হতো তাহলে আমাকে পার্সোনালি ফোন না করে ল্যান্ডলাইনে কেন ফোন করবে? এই সব ভেবে তাড়াতাড়ি করে প্রিন্সিপালের কাছে ফোন করল আরিশ৷

আরিশ: হ্যালো স্যার ৷ হাউ আর ইউ ৷

প্রিন্সিপাল : আই এম ফাইন আরিশ ৷ তুমি অনেকদিন তো কলেজে আসছো না শুনলাম sir রা বলছিলেন ৷ অফিসে জয়েন করেছ তাও শুনলাম ৷ আজকে কী একবার সময় হবে অফিসের পর কলেজে আসার?

আরিশ: অফ কোর্স অফ কোর্স ৷অফিস শেষে আমিও ভাবছিলাম আপনার সঙ্গে দেখা করবো , কিছু কথা ছিল আপনার সাথে ৷

প্রিন্সিপাল স্যার : ভেরি গুড ৷ আচ্ছা তাহলে তাড়াতাড়ি এসো ৷

আরিশ: ওকে স্যার ৷

আরিশ ফোনটা রাখল রেখে ভাবতে লাগল যে হঠাৎ প্রিন্সিপাল স্যার ওকে ডাকলেন কেন তা ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না আরিশ ৷

|
|❤
|

প্রিন্সিপালের রুমে,,,,,

আরিশ বসে আছে আর তার সঙ্গে পাশে বসে আছে আরূ , ওর মুখে কথা নেই, সেই সকাল এর মতোই নিশ্চুপ আর বিরাট অভিমানের ছায়া যেন রয়েছে ওর মুখে ৷

আরুশির দিকে একবার তাকিয়ে প্রিন্সিপালের দিকে আবার মনোযোগ দিল আরিশ ৷

আরিশ প্রিন্সিপালের দিকে তাকাতেই দেখলো প্রিন্সিপাল মুচকি মুচকি হাসছেন ৷ ওনার হাসি দেখে কিঞ্চিত লজ্জায় পড়ে গেল আরিশ, তার মানে এতক্ষণ উনি লক্ষ্য করেছেন ৷

আরিশ পরিস্থিতি সাম্লানর জন্য : আপনি কিছু বলছিলেন ৷

প্রিন্সিপাল স্যার : ও হ্যাঁ, যেটা বলতে চাইছিলাম, শুনলাম তুমি নাকি এক সপ্তাহের ছুটি নিচ্ছো ৷বাট সামনে তো তোমার এক্সাম ৷

আরিশ: দরকারে ছুটি নিতে হচ্ছে ৷

প্রিন্সিপাল স্যার : কাজটা কি খুব ইম্পর্টেন্ট?

আরিশ:একচুয়ালি কলকাতা তে একটা ইম্পর্টেন্ট মিটিং থাকার জন্য সেখানেই যেতে হচ্ছে ৷

প্রিন্সিপাল স্যার : আরুশি ও বললো যে এক সপ্তাহ ছুটি নেবে, ও না হয় ফার্স্ট ইয়ার , ওদের ছুটি নিতে সমস্যা নেই কিন্তু তোমার তো এবার পি.এইচ.ডি র ফাইনাল , একবার ভেবে দেখতে পারতে ৷

আরিশ মুচকি হেসে : চিন্তা করবেন না আমি ম্যানেজ করে নেব ৷ বিশ্বাস রাখতে পারেন , কলেজের নাম খারাপ করবো না ৷

প্রিন্সিপাল স্যার মুচকি হাসি দিয়ে: সে বিশ্বাসটুকু আছে আমার তোমার উপরে , সেই কারণে ছুটিটুকু দিচ্ছি তবে হ্যাঁ ঘুরে এসে যেন পড়াশোনায় মনটা থাকে৷

আরিশ: অবশ্যই স্যার ৷

প্রিন্সিপাল : কংগ্রাচুলেশন ৷

আরিস : ফর হোয়াট স্যার?

প্রিন্সিপাল স্যার : এইযে তুমি আর আরুশি বিয়ে করেছ সে নিউজটা শুনেই কংগ্রাচুলেশন দু’জনকেই৷

আরিশ : থ্যাঙ্ক ইউ স্যার, তবে আরু কিছু বলল না চুপচাপই রইল ৷

প্রিন্সিপাল স্যার : আরুশি যে চুপচাপ , কিছু বলছে না ৷

আরোশী কিন্তু কিন্তু করে : একচুয়ালি স্যার আমি আসছি আপনারা কথা বলুন ৷ বলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল ৷

প্রিন্সিপাল স্যার : মেয়েটা লজ্জা পেয়ে গেল আমার কথা শুনে, আমারই ভুল,ওর সামনে বলা উচিত হয়নি আমার এটা ৷

আরিশ: ইটস ওকে স্যার ৷

তারপরে স্যারের সঙ্গে টুকটাক কিছু কথা বলে বেরিয়ে আসলো আরিশ ঘর থেকে ৷আরুর অভিমানগুলো স্পষ্ট ফুটে উঠেছে সেটা প্রিন্সিপাল বুঝতে না পারলেও আরিশ ঠিকই বুঝতে পেরেছে…

আরিশ : তোমাকে কষ্ট পেতে দেবো না আরুপাখি, সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে বলে একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে প্রিন্সিপালের রুম থেকে বেরিয়ে আসতেই পিছন থেকে একটা মেয়েলি কন্ঠস্বর শুনে আরিশ থেমে গেল৷

মেঘা: আরিশ ভাইয়া কেমন আছো?

আরিশ : এই ভালো , তুমি কেমন আছো?

মেঘা : এইতো আলহামদুলিল্লাহ ভাইয়া ভালো আছি ৷ শুনলাম আপনার আর রাইসার বিয়ে পরের মাসে৷ আই মিন আপনার এক্সামের পর ৷

আরিশ অবাক হয়ে : তোমাকে এসব কে বলল?

মেঘা : কেন রাইসাই তো বলল যে আপনার সাথে নাকি ওর বিয়ে তাই ও বাংলাদেশ ব্যাক করছে ৷

আরিশ মনে মনে : এই মেয়ে বিদেশে থেকেও আমার পেছনে কলকাঠি নাড়ছে , আমাকে ঠিক ফাসিয়েই ছাড়বে আরুপাখির কাছে ৷

আরিস : একচুয়ালি তুমি যা ভাবছো সেটা নয়৷

মেঘা : থাক ভাইয়া আপনাকে আর বলতে হবে না বুঝতে পারছি আপনি লজ্জা পাচ্ছেন ৷

আরিস : না না, তুমি বুঝতে পারছ না আমি কি বুঝাতে চাইছি ৷

হআরিস অনেকবারই মেঘাকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও মেঘা এমন ঘাড়তেড়া যে ও রাইসা কথাটাকে বিশ্বাস করছে আর আরিশের টা নই৷

আরিশ মনে মনে : আচ্ছা মুশকিল , এই মেয়েকে আমি এখন কি করে বোঝাই ৷ এ কে বোঝানো আমার কাম্য নয় ৷

আরিস : আচ্ছা মেঘা আমি এখন আসি , আমার লেট হচ্ছে বলে তাড়াতাড়ি করে ওখান থেকে চলে গেল৷

তাড়াহুড়া করে গাড়িতে ড্রাইভিং সিটে বসতেই পাশে তাকিয়ে দেখল আরুশি নেই , পিছনের সিট টাও চেক করে দেখল যেম নাহ ওখানৈও আরুশি নেই তাহলে আরুশি কোথায় গেল ?

আরিশ রেগে গিয়ে :আজকেও কি বাড়ি চলে গেছে!আগের দিন এত কাণ্ড করার পর আজকেও মেয়েটার শিক্ষা হলো না , আমার কথার অবাধ্য হয়ে ঠিক চলে গেছে , আজকে বাড়িতে যাই তারপর মজা দেখাচ্ছি , আমার কথা না শোনার শাস্তি আজকে দেব ৷

এদিকে আরুশি আরিশের জন্য গাড়িতে অপেক্ষা করছে অনেকক্ষণ ধরে ৷আরিশ আসছে না দেখে আরু গাড়ি থেকে নেমে দেখল যে দূরে একটা মেয়ের সাথে কথা বলছে আরিশ , তাদের মধ্যে বেশ তর্ক-বিতর্ক চলছে দেখে আর সে ভাবলো হয়তো মেয়েটার সঙ্গে একান্তই কোন সম্পর্ক আছে তাই কোন ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে আর তাই জন্য এরকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ৷ দৃশ্যটা যেন কোনোভাবেই সহ্য হলো না আরুর,তাড়াতাড়ি করে ব্যাগ নিয়ে বাড়ির পথে হাটা দিল ৷

Suraiya Aayat
চলবে,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে