তোকে চাই❤part:30

0
4187

তোকে চাই❤part:30
#writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤



রাস্তার পাশে দাড়িয়ে আছি,,হাত ভর্তি শপিং ব্যাগ,, আমি একা নই,,,ফুল ফ্যামিলি আজ শপিং এ বেরিয়েছি।।ব্যাপক মজা হচ্ছে,,তার সাথে আমার প্যারাময় জামাইয়ের প্যারাও আছে,,এদিকে যেয়ো না,,,ঠিক ভাবে হাটো,,,এখনি পড়ে যেতে,,,দৌড়াচ্ছো কেন??উফফ উফফ বিরক্তিকর,,,, আমি বাচ্চা নাকি??সবাই সামনে সামনে হাটঁছেন আমি আর শুভ্র পিছনে,,,,

দেখুন ফুচকার স্টল,,, চলুন ফুচকা খাবো,,,প্লিজ প্লিজ(হাত ধরে ঝাকিয়ে)

ছি,,,লুক এট হিজ হ্যান্ড,, কি বিশ্রী ভাবে হাত দিয়ে মাখাচ্ছে,,,,একদম খাবা না চলো,,,

প্লিজজ না?

নো তুমি খেলে বউমনিও খাবে,,পরে বেবির ক্ষতি হবে,,তুমি তাই চাচ্ছো??(ভ্রু কুচকে)

ওকে ফাইন(দাঁতে দাঁত চেপে)

আচ্ছা ওই ফুলগুলো নিবো,,রেড কালার ইজ মাই ফেবরিট।।সবগুলো লাল গোলাপ নিবো,,

এতোগুলো??(অবাক হয়ে)একশোরও বেশি হবে,,,

সো,,আমি নিবোই নিবো,,,

আচ্ছা তুমি দাঁড়াও আমি আন….

কে শুনে কার কথা,,রেড রোজ ইজ মাই ফেবরেট ফ্লাওয়ার,,,উনার কথায় পাত্তা না দিয়ে দিলাম ভৌ দৌড়।।উনার কথা শুনতে যাবো কেন হুহ??পিছন থেকে উনি ডেকেই চলেছেন,,,ডাকুক,, তাতে আমার কি?

রোদ প্লিজ দেখে,,,গাড়ি আছে,,প্লিজ রোদ থামো,,,রোদদদদ

উনার হাতে, ধরা পড়ার কোনো শখ নেই আমার,,ধরতে পারলে পুরো আস্ত চিবিয়ে খাবেন,,তবু উনার রিয়েকশনটা দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না,,,পিছনে তাকালাম,,, উনার চেহারায় একরাশ ভয়ের চিন্হ,,উনিও হঠাৎই দৌড়াতে লাগলেন কিন্তু ততোক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেলো।।।সামনে তাকাতেই প্রচন্ড ঝটকায় ছিটকে পড়লাম।।চোখদুটো বন্ধ হয়ে আসছে,,,বুঝতে পারছি রক্তে শরীর ভিজে যাচ্ছে,,,চারপাশটা ধীরে ধীরে ঝাপসা হয়ে আসছে,,চোখদুটো বুজার আগে কারো মুখ আমার চোখের সামনে ভেসে উঠলো,,হ্যা,, শুভ্র,,টলমলে চোখে কি যেনো বলে চলেছে ক্রমাগত,,,,তারপর কি হয়েছিলো জানি না,,,যখন চোখ খুলি তখন আমি হসপিটালের বেডে,,,,আমার চারপাশে সবাই দাড়িয়ে আছে,,শুধু শুভ্র নেই।।।কিন্তু মনটা উনাকেই খুজছিলো,,,কিন্তু আমার থাকা না থাকাতে হয়তো উনার যায়ই আসে না,, তাই এই অবস্থাতেও ফেলে চলে গেছেন আমায়,,,হুহ।।সবাই এক এক করে মাথায় হাত বুলিয়ে চোখের পানি মুছতে মুছতে বেরিয়ে গেলো,,,শুধু থেকে গেলো আপু আর মামানি।।।আপুর কাছে জানলাম সবাইকে টেনশনে ফেলে গত ২৪ ঘন্টা খুব আরামে শুয়ে ছিলাম,,ডক্টরের অবজারভেশনের লাস্ট আওয়ারে সেন্স ফিরেছে আমার।।।বাপরে,,হোয়াট আ ভাগ্য,,,টেনেটুনি বেঁচে গেলাম দেখি,,,কৌতূহল বশত আপুকে জিগ্যেস করেই ফেললাম,,,

উনি কোথায় আপু??

উনিটা কে??(ভ্রু কুচকে)

উফফ আপু,,তোমার দেবরের কথা বলছি,,,

ওহ,,,,তাকে তো পাগল বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছিস,,,এখন আবার খবর নেওয়া হচ্ছে,,হুম??(মুচকি হেসে)

মানে??কি বলছো এসব??

তোকে বলেছিলাম না রোদ??আমার ছেলেটা তোকে পাগলের মতো ভালোবাসে,,,,অনেস্টলি বলছি,,আজ তোর কিছু হয়ে গেলে,,আমার ছেলে সব ভেঙে চুরমার করে ফেলতো।।।(চোখের পানি মুছে)পাগল একটা,,,,

বনিতা না করে বলবা প্লিজ কি হয়েছে??আর উনিই বা কোথায়,,, ঠিক আছেন তো???

এবার বড্ড টেনশন লাগছে,,,,কাহিনীটা কি আসলে,,,তবে আপু আর মামানির কাছে সব শুনে আমি টুটালি নির্বাক,,,শুভ্রও এমন করতে পারে???ওদের কথা অনুসারে ঘটনাটা হলো এই,,,,

রোদের দিকে গাড়ি আসতে দেখেই ছুটে এসেছিলো শুভ্র বাট শেষ রক্ষা হলো না।।।নীলির মতো রোদকেও নিথর হয়ে পড়ে থাকতে দেখে বুকে মোচড় দিয়ে উঠলো তার।।দৌড়ে রোদকে জড়িয়ে ধরে চেচাতে লাগলো,,,কিন্তু ততক্ষণে রোদের চোখের পাতাও বুজে গেছে,,,
।।
রোদ,,এই রোদ??এই পিচ্চি??চ,,চোখ খুলো,,,প্লিজ কথা বলো।।।(কাঁপা গলায়)এই মেয়ে?? (চিৎকার করে)

শুভ্র??ওকে হসপিটালে নিতে হবে উঠা ওকে,,,

বাবা??দ,,,দেখো।কথা বলছে না,,ও কথা বলছে না।।।এমনিতে তো ধমকিয়েও থামাতে পারি না,,,আজ দেখো কথা বলতে বলছি তাও কথা বলছে না।।।বাবা তুমি একটু বলো না,,একটু কথা বলতে বলো,,,,আমি জাস্ট শুনবো।।

শুভ্র,,,পাগলামো করিস না,,,গেট আপ মাই সান।।।ও ঠিক হয়ে যাবে,,,,তাড়াতাড়ি হসপিটালে চল,,,

কি বলছো বাবা??ও ঠিক আছে,,একদম ঠিক আছে,,এই পিচ্চি??এই একটু বলো তুমি ঠিক আছো,,,বাবা,,প্লিজ ওকে বলো না কিছু বলতে প্লিজ বাবা,,, আমি শ্বাস নিতে পারছি না বাবা,,,ওকে উঠতে বলো তো,,,

শুভ্র??গেট আপ ম্যান,,,পাগল হয়ে গেলি,,,???

অভ্র আর শুভ্রর বাবা,,, শুভ্রকে কোনোরকম উঠিয়ে হসপিটাল পর্যন্ত এনেছে কিন্তু বিপত্তি দেখা দিয়েছে অপারেশন থিয়েটারের সামনে,,,শুভ্র কিছুতেই রোদকে অটিতে নিতে দেবে না,,,তার ধারনা ওই রুমে নিয়ে গেলে রোদ আর ফিরবে না,,,ওরা ওকে মেরে ফেলবে,,,তাকে অনেক বুঝিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না,,,তার এক কথা তার রোদ তার সাথেই থাকবে,,,কোথাও যাবে না ব্যস,,,

শুভ্র?কি পাগলামো করছিস??তুই বাচ্চা না,,,ডক্টরদের কাজ করতে দে,,,

না,,কেউ টাচ করবা না ওকে,,,,মা তুমি বুঝতে পারছো না,,,ওরা আমার রোদকে মেরে ফেলবে,,নীলিকেও মেরে ফেলছে,,,,রোদকেও মেরে ফেলবে,,,আমি আমার রোদকে ওদের কাছে দিবো না,,,কিছুতেই না।।।

শুভ্রর বাবা ছেলের পাগলামো হয়তো আর নিতে পারলেন না,,,অনেকক্ষণ থেকেই সহ্য করছেন এসব।।তাইতো শুভ্রর গালে জোড়ে সোড়ে একটা চড় বসিয়ে দিলেন।।।অনেক কষ্টে রোদকে অটিতে ঢুকানো হলো,,বাট শুভ্র কি এতো সহজে মানবে নাকি??কখনো না।।সে অটির দরজায় ক্রমাগত লাথি দিচ্ছে,,,তার উদ্দেশ্য অটির দরজা ভেঙে ফেলা এবং রোদকে উদ্ধার করা।।কেউ ওকে বাঁধা দিচ্ছে না,,,মূলত সবাই এতোই অবাক যে,, কি করবে তাই বুঝতেছে না।।রোদকে নিয়ে চিন্তা বাদ দিয়ে শুভ্রকে নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছে সবাই।।শুভ্রর মতো ছেলে এমন ধরনের পাগলামু করতে পারে কেউ চিন্তায় করতে পারে নি।।।

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

শুভ্র??বাবা শান্ত হো,,,ওখানে রোদ ভালো আছে,,

মিথ্যা,,সব মিথ্যা।।নীলির সময়ও তোমরা বলেছিলে নীলি ফিরবে কিন্তু ও ফিরে নি,,,,এবার রোদকেও নিতে চাও তোমরা,,,,দিবো না নিতে,,,আমার রোদের কিছু হলে সব শেষ করে ফেলবো আমি,,,,আই উইল ফিনিশ এব্রিথিং,,,এন্ড আই উইল ডু ইট,,,

শুভ্র??ভাই,, এমন করছিস কেন??স্বাভাবিক হো প্লিজ,,,

হ্যা শুভ্র ভাইয়া প্লিজ বোঝার চেষ্টা করুন,,,,সব ঠিক হয়ে যাবে,,,,(কাঁদতে কাঁদতে)

বউমনি?বউমনি তুমি বাবাকে বলো আমার রোদকে আমায় দিয়ে দিতে,,আমি আর কিচ্ছু করবো না,,,প্রমিজ,,,, প্লিজ বউমনি বলো না,,,ওরা রোদকে মেরে ফেলবে,,,রোদ হয়তো একা ভয় পাচ্ছে,,,

শুভ্র এসব পাগলামো বন্ধ কর,,,আমরা কেউ শত্রু নই তোর,,

মা,,তুমিও??এবারও আমায় একা করে দিবা??এবার আর বাঁচবো না মা,,,প্লিজজ এমনটা করো না তোমরা,,,সত্যি মরে যাবো।।।আমি শুধু রোদকে চাই, প্লিজ দিয়ে দাও।।আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি মা,,,একটু বাঁচতে দাও আমায়,,,প্লিজজ

তখনি ডক্টর বেরিয়ে আসে মুখে মুচকি হাসি,,

এইযে মিষ্টার আপনার রোদ একদম ঠিক আছে,,,একটু পরেই ওকে দেখতে পাবেন,,,,দরজা ভাঙার কোনো দরকার নেই আর,,,,,

ডক্টরের কথায় শুভ্র শান্ত হলো বলে মনে হলো না,,,সে রুমের ভিতর ক্রমাগত উঁকিঝুঁকি দিয়ে চলেছে,,

ডক্টর??আমার মেয়ে ঠিক আছে তো??কোনো ভয় নেই তে??

হ্যা এমনি ঠিক আছে,,,তবু ২৪ ঘন্টার মধ্যে সেন্স ফিরে গেলেই টেনশন ফ্রি হতে পারি,,,নয়তো কোমায় চলে যেতে পারেন।।মাথায় চোটটা একটু গাঢ় নয়তো এব্রিথিং ইজ অলরাইট।।

এই ২৪ ঘন্টা শুভ্র ডক্টর আর নার্সদের জ্বালিয়ে খেয়েছে,,,কেনো রোদ কথা বলছে না??তারা রোদের সাথে কি করেছে??ইনজেকশন কেন দিচ্ছে,,,তার রোদকে কোনো ইনজেকশন দেওয়া যাবে না,,,,,রোদের কাছে কোনো ডক্টর আর নার্স আসতে পারবে না,,,তার রোদের কাছে শুধু সেই থাকবে।।অবশেষে শুভ্রকেই ঘুমের ঔষধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে,,,সে এখন পাশের কেবিনে ঘুমাচ্ছে,,,


শুভ্র যে রোদের জন্য এমন পাগলামো করেছে তা রোদের বিশ্বাসই হচ্ছে না,,,আবার লজ্জাও লাগছে।।।ছি,,সবাই কি ভাবছে,,,

#চলবে,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে