তুমি নামক অক্সিজেন পর্ব-২৩+২৪

0
1310

#তুমি_নামক_অক্সিজেন
#পর্ব_২৩
Tahrim Muntahana

আহিল খান একজায়গায় দাড়িয়ে এক্সারসাইজ করছে তার পাশেই অরনি। অরনি যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই সাগর সোহান সাহিল আধির ওদের কাজ করতে গেলো। ঝোপের আড়াল থেকে এ সব কিছু হৃদান ওরা দেখছে।

হাই জানু কেমন আছো তুমি -সাগর

ভাবি আজকে তোমাকে কি সুন্দর দেখাচ্ছে -সোহান

পুরাই আমার মতো ভাবী -সাহিল

হেই তোমাদের সাহস তো কম না আবার আমাকে ফলো করছো। এই অরনি রহমান কে ফলো করছো। এমন মার মারবো না -অরনি

হেই বেবী রাগ করছো কেন। আমি তোমাকে ভালোবাসি বুঝো না -সাগর

ওদের অভিনয় দেখে হৃদিতারা হাসতে হাসতে শেষ। কিন্তু সাগরের মুখে ভালোবাসি কথা শুনেই রিয়া তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে

কিহহ ভালোবাসে আজ হচ্ছে তোর। অন্যজনকে ভালোবাসি বলা হচ্ছে তোর মুখ যদি বেকা না করে দিয়েছি আমার নাম ও রিয়া চৌধুরী না

বলেই সাগরের দিকে যেতে নিবে পরশ আটকে দেয়
রিয়ুপাখি কি করছো আরে ও তো অভিনয় করছে। সত্যি সত্যি বলছে না তো। আর ভালোবাসি বলেছে ভুল কি বলেছে বন্ধু হিসেবে তো ভালোবাসে। কুল পাখি কুল _
পরশের কথা শুনে রিয়া শান্ত হয় বাকি সবাই মুখ টিপে হাসছে।

তোর ভালোবাসা ছুটাচ্ছি দাড়া। আমার পাপাকে বললে তোর চৌদ্দ গোষ্ঠিকে দেখে নিবে -অরনি

হাই আল্লাহ ভাই ভাবি আপনারে ভয় দেখাইতেছে। আল্লাহ রে আল্লাহ ভাই আপনার সামনে কেউ কথা বলতে পারে না সে আপনাকে ভয় দেখায় -আধির

বেশী সাহস বাড়ছে তাই না। এতদিন পেছনে ঘুরছি পাত্তা দিস নি। আজকে তোকে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করবো। দেখি তোর বাপ কি করে আমার -সাগর

এইতো ভাই আমাদের নিজের ফর্মে ফিরে এসেছে। পুরাই লুচ্চা ফর্ম -সোহান

সোহানের কথা শুনে অরনি ফিক করে হেসে দেয় আর সাগর সোহানের দিকে কটমট করে তাকায়। সোহান একটু ভয় পেয়ে যায়। সাগর খপ করে অরনির হাত ধরে ফেলে। আর একটা চোখ মারে। অরনি ও একটা চোখ মেরে কাজে লেগে পড়ে

এই বদমাশ ছাড় বলছি ছাড় আমি অন্য একজন কে ভালোবাসি তোকে কোনো দিন ও বিয়ে করবো না -অরনি

কিহহ কার এত বড় সাহস আমার ভালোবাসার দিকে নজর দিয়েছে -সাগর

ভাই ভাবি বুকিং চলে চলে যায় -সাহিল

চুপ যা বিয়াদপ অরনি শুধু আমার -সাগর

প্লিজ এমন করো না আমি একজনকে খুব ভালোবাসি বিশ্বাস করো তুমি আমাকে বিয়ে করলেও কোনো দিন সুখি হতে পারবে না -অরনি

সত্যি বলছো তুমি নাকি আমার থেকে বাঁচার জন্য বলছো -সাগর

না বিশ্বাস করো আমি সত্যি বলছি -অরনি

আচ্ছা তাহলে আমি দেখা করবো তার সাথে। চিন্তা করো না আমি তাকে মারবো না -সাগর

আববব না মানে সে তো আমাকে ভালোবাসে না এমনকি সে আমাকে দেখেই নি। সত্যি বলতে কি জানো আমি তাকে সরাসরি দেখেনি। ফোনে পিক দেখে ফিদা হয়ে গেছি প্রেমেও পড়ে গেছি -অরনি

হোয়াটটটটটট -সোহান

কে সে -সাগর

আহিল খান -অরনি

এতক্ষন আহিল ওদের কথায় শুনছিলো কান খাড়া করে কিন্তু ওদের বুঝতে দেয়নি। কেন জানি ওর ব্যাপারটা ভালো লাগছিলো। ওর নাম শুনার সাথে সাথে ও এইদিকে তাকালো।

হেই এ আমার নাম বললো কেন। নাকি আমাকে দেখে পটানোর চেষ্টা করছে। আরে আমি এসব কি ভাবছি আমাকে দেখবে কেমনে আমি তো হুডি পড়ে আছি। দেখতে হয় তো ব্যাপার টা

মনে মনে ভেবে আহিল অরনি কে দেখার জন্য এদিক ওদিক করতে লাগলো কিন্তু মুখ দেখতে পারছে না।

তাহলে তার আশা বাদ দিয়ে দাও। আজকেই বিয়ে হবে আমাদের চলো

বলেই সাগর অরনির হাত ধরে নিয়ে যেতে নিবে ওমনি অরনি আশে পাশে তাকানোর ভান করে আহিলকে দেখে বলে ওঠে

ওই ব্যাটা কালো হুডি দেখতে পাচ্ছেন না আমাকে কিডন্যাপ করছে আর আপনি দাড়িয়ে দাড়িয়ে মজা নিচ্ছেন

আহিল তো অরনির মুখ দেখে জাস্ট হা। ফর্সা ধবধবা মুখ ব্রাউন চুল চোখ গুলো একটু ছোট। অতিরিক্ত ফর্সা হওয়ায় ঠোঁট লাল। প্রথম দেখায় ক্রাশ খেয়ে গেছে। অরনির কথা না শুনেই ওর দিকে একধ্যানে তাকিয়ে আছে। আর সবাই বেশ মজা নিচ্ছে ব্যাপারটা। আরনি তো লজ্জায় মরে যাচ্ছে কিন্তু দেখাতেও পাচ্ছে না তাই ধ্যান ভাঙানোর জন্য চিল্লিয়ে উঠলো

ওই কালো হুডি কানে শুনতে পান না নাকি ভয় পাচ্ছেন ব্যাটা বডি তো মাশাআল্লাহ বানাইছেন তা সব উপরে উপরেই নাকি কাজে খাটানোর মতো

আহিলের ধ্যান ভেঙে অরনির কথা শুনে বেশ রাগ হলো তাই এগিয়ে গেল ওদের দিকে

কি হচ্ছে এখানে -আহিল

এই আপনি কানা নাকি এতক্ষণ তো দাড়িয়ে দাড়িয়ে অভিনয় দেখলেন ই এখন আবার জিজ্ঞেস করছেন কেন -অরনি

অভিনয় -আহিল

অরনির কথা শুনে সবাই টাসকি খেল। হায় হায় ধরা পড়ে যাবে নাকি। অরনি যখন বুঝলো ও কি বলে ফেলেছে তখন ফট করে আবার চিল্লিয়ে উঠে

আরে কালো হুডি আপনি আগে আমাকে বাঁচান। এই লুচ্চা গুলো থেকে -অরনি

এই হাত ছাড়েন। জোর করছেন কেন ওনাকে আপনারা। ভালোবাসা কি জোর করে পাওয়ার জিনিস। ফিলিংস না থাকলে জোর করে বিয়ে করে সংসার করবেন কেমনে। সে তো বলছে সে আমাকে ভালোবাসে -আহিল

হোয়াটটটটটটটটট আপনাকে ভালোবাসি মানে কখন বললাম আপনাকে ভালোবাসি আমি তো আমার জান প্রাণ কলিজা ময়না শালিক টিয়া হিরা মানিক পান্না আহিল কে ভালোবাসি। আমার আহিল আই লাভ ইউ আহিল -অরনি

আববব না মানে সেটাই। এই এই ছেলে হাত ছাড়ো বলছি -আহিল

ছাড়বো না কি করবেন -সোহান

আমি চাইলেই অনেক কিছু করতে পারি কিন্তু তোমাদের দেখে মনে হচ্ছে না যে তোমরা বখাটে। তাই এসব করো না। ওনার জায়গায় যদি তোমাদের বোন থাকতো তাহলে তোমরা সেটা মানতে পারতে। পারতেন না। আর সবারই একটা মন আছে। কেউ মনের বাহিরে কাজ করে না। মানছি আপনি উনাকে ভালোবাসেন কিন্তু উনি আপনাকে ভালোবাসে না তাই আমি বলবো আপনি নিজের জিবন অন্যদিক দিয়েই মুভ অন করুন। দেখবেন আপনি আপনার জিবনে যেমন ভালো আছেন তোমনি উনিও ভালো থাকবে

আহিলের কথা শুনে তো অরনি এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে। হৃদান হৃদিতা ওদেরও ভালো লেগেছে। সাগর ওরা পারেনা দৌড়ে পালায়। সাহিল সাগরের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলল

জিজু মুভ অন করো তাড়াতাড়ি ভাগো এখান থেকে না হয় একটা মাইর ও মাটিতে পরবে না

সাহিলের কথা শুনে সাগর গলা খাকারি দিয়ে অরনি হাত ছেড়ে দিয়ে সটান হয়ে দাড়ালো।

ভাই আপনি আমার চোখ খুলে দিয়েছেন। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আর অরনি তুমি ভালো থাকো অনেক জ্বালিয়েছি তোমায় পারলে ক্ষমা করো । আসি

সাগর বলেই উদাসীন হওয়ার ভান ধরে উল্টো হাটা ধরলো। অরনির বেশ হাসি পাচ্ছে এবার। মনে হচ্ছে না হাসলে এবার দম বন্দ হয়ে মারা যাবে।

ভাবি ও সরি না মানে আপু আপনি ভালো থাকবেন কিন্তু আর আপনি খুব ভালো সব কিছুই জোসস ছিলো -আধির

হ্যাঁ হ্যাঁ আপু ভালো থাকবেন আপনার কাহিল কে নিয়ে -সোহান

ওই বজ্জাত ব্যাটা তুই কাহিল বললি কেন আহিল বল আহিল। আমার আহিল

ওহ সরি আফা আহিল ই হবে -সোহান

সোহাও ওরাও হৃদিতাদের উল্টো পাশের ঝোপে গিয়ে আড়ি পাতলো।

এই মেয়ে আহিল খান কে ভালোবাসো বলছো দেখছো কোনো দিন -আহিল

আপনাকে কেন বলবো -অরনি

হেই আমি আমার প্রশ্নের উত্তরে প্রশ্ন করতে বলি নি উত্তর দিতে বলেছি -আহিল

এএএএএএএএএএএ আপনি আমাকে বকা দেন। আমি খেলবো না আমি নাচবো না আমি গাইবো না আমি খাবোও না

অরনির কথায় আহিল সহ বাকি সবাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছে। সাগর ওদের তো মাথায় হাত। প্লেন গেছে।

এই অরনি তো নিজের ফর্মে ফিরে এসেছে। এখন কথায় কথায় প্লেনের কথা বললে সব শেষ -হৃদান

আমি জানতাম এই অরনি ছাগলী এমন টাই করবে -সোহা

আহ চুপ করো তোমরা আমাদের ই কিছু করতে হবে পিয়ানি আপু যাও -হৃদিতা

আবব আমি গিয়ে কি করবো -পিয়ানি

যা করার তাই করবে যাও আপু -রিয়া

এই এই আমি যায় -রাইসা

নাহ তুই ভাংচাল করে দিবি -রাহি

না সত্যি এমন এক্টকিং করবো বুঝতেই পারবে না -রাইসা

না গো বউ তোমার যাইতে হবে না। ড্রামাকুইন আপনি সব ভাংচাল করবেন -পরশ

আহ ভাইয়া চুপ কর ভাবি তুমি যাও। দেখিয়ে দাও তোমার কারিশমা -নাশিন

এই তো আমার সোনা দেবর। তোমাকে এক টুক্কুস ভালোপাসা -রাইসা

হইছে যাও এখন -আনহা

রাইসা খুশিতে গদগদ হয়ে ছুটে গেল। অর সবাই অধির আগ্রহে দেখে চলছে সামনে কি হয়।

আরে আপু এতক্ষণ কই ছিলে তুমি? তোমাকে খুঁজে খুঁজে হয়রান আমরা -রাইসা

আর বলিস না বনু জানিস আজকে আবার ওই ঝামেলাটা এসেছিলো কিন্তু আমার আহিল আমাকে বাঁচিয়ে নিয়েছে -অরনি

হোয়াটটটট বাঁচালাম আমি ক্রেডিট পেল আহিল -আহিল

আমি যদি না বলতাম আহিলের কথা তাহলে ওরা যেত না। আর আপনি এমন হুডি পড়ে আছেন কেন বেকুবের মতো। খুলেন বলছি -অরনি

বলেই হুডির উপরের অংশ টান দিয়ে খুলতে যাবে তার আগেই আহিল একটু পেছনে সরে আসে আর অরনি টাল সামলাতে না পেরে আহিলের উপর পড়ে যায়। আকস্মিক এমন হওয়ায় আহিল ভরকে গিয়ে নিজেও অরনিকে নিয়ে নিচে পড়ে যায়। সাথে সাথে মাথা থেকে হুডির টুপিটাও খুলে যায়। অরনি হা করে আহিল কে দেখছে আর আহিল তো আবার ক্রাশ নামক বাঁশ টা খেয়ে গেল।
অরনির যখন হুশশ হলো চিৎকার করে উঠে গেল।

আহিল আপনি আমার সামনে। এতক্ষণ আপনি ছিলেন আপনি বলেননি কেন -অরনি

বলবো কেন -আহিল

আরে কি বলে আমি না আপনার প্রেমে পড়ে গেছি সত্যি সত্যি বলছি। কিন্তু ভালোবাসি কিনা জানিনা -অরনি

আমি যে ভালোবেসে ফেলেছি। লাভ এট ফাস্ট সাইট। আই কান্ট বিলিভ আহিল খান প্রেমে পড়েছে

অস্পষ্ট সুরে বলে উঠলো আহিল সামনের দুটো মানুষ কেউ কোনো কথা বুঝলো না।

এই আপু চল আজকে তোকে পাত্র পক্ষ দেখতে আসবে খেয়াল আছে। পাপা জানতে পারলে আর রক্ষে নেই -রাইসা

পাত্র পক্ষ দেখতে আসবে মানে -আহিল

এটাও বুঝেন না আপনি -রাইসা

কিসের পাত্র পক্ষ উনি না আমাকে ভালোবাসে -আহিল

ও ভালোবাসলেই কি হবে আপনি তো আর বাসেন না আর আপনার তো বিয়েও ঠিক হয়ে আছে -রাইসা

কথাটা শুনা মাত্রই আহিল চমকে উঠলো কি বলে এই মেয়ে

বিয়ে ঠিক হয়েছে মানে? আমার বিয়ের কথা আমি জানবো না পাগল তুমি -আহিল

জি না আপনি বাড়ি গিয়ে আপনার বাবাকে জিজ্ঞেস করে শুনে নিবেন কোনটা সঠিক। চলতো আপু দেরী হলে পাপা বকা দিবে -রাইসা

আহিল শুনুন না আমি না আপনার প্রেমে পড়ে গেছি ভালোবাসি কিনা জানিনা। জিবনে প্রথম ক্রাশ খাইছি। তাও কখন জানেন? আধাঘণ্টা আগে ফোনে ছবি দেখে -অরনি

অরনির কথায় আহিলের মাথা উপর মনে হো বাজ পড়লো। এই মেয়ে তো দেখছি পাগল করে ছাড়বে। অন্যদিকে হৃদিতা হৃদান ওরা আহিলের এক্সপ্রেশন দেখার জন্য বসে আছে।

আমাদের উচিত এখন মি খানকে সব বলে দেওয়া। উনাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে অরনি আপুকে বেশ লেগেছে তার কাছে -হৃদিতা

আমারো তাই মনে হচ্ছে -হৃদান

পরে বললে সিনক্রিয়েট করবে চলো সবাই এখনি বলবো -পরশ

ওরাও ওদের সামনে গিয়ে দাড়ালো। আহিল নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলো এতগুলো পা দেখে উপরে তাকাতেই বিষ্ময়ে ওর মুখ হা হয়ে গেল..

চলবে….?

#তুমি_নামক_অক্সিজেন
#পর্ব_২৪
Tahrim Muntahana

জগিং স্পটের একটু দূরেই একটা পার্কে হৃদান হৃদিতারা বসে আছে। আহিল কে কোনো সত্য এখন পযর্ন্ত জানানো হয়নি। তখন ওরা বলতেই যাচ্ছিলো মাঝপথে থেমে যায়।

ফ্লাসবেক

হেই দাড়াও তোমরা। আজকে বলা যাবে না। আমাদের হাতে যেহেতু ১০ দিনের মতো সময় আছেই সেহেতু আজকেই বলা বোকামো হবে। আমাদের ভুল বুঝতে পারে -হৃদিতা

হ্যাঁ হৃদপরী ঠিকি বলছে। আজকেই প্রথম দেখা আজকেই যদি মিথ্যে হয় তাহলে মাথা বিগড়ে যেতে পারে। আর রাগের মাথায় যদি জেদ করে বিয়ে করে তখন -হৃদান

না এ হতে পারে না আমি আমার গার্লফ্রেন্ডের বিয়ে খেতে পারবো না -পিয়াস

তোমার মাথা ফাটামু বলদের মতো কথা বলছে। এদিকে টেনশনে বাঁচিতে -রোহানি

আমারো মনে হচ্ছে ভাইয়া এখন বলা ঠিক হবে না -নাশিন

আগে অরনি কে ভালোবাসুক আজকে তো ভালো লেগেছে -সোহা

হ্যাঁ ভালোবাসার পর সব জানালে কিছু মনে করবে না -পিয়ানি

হুমম হৃদরাজ যাও ওদের নিয়ে আসো -হৃদিতা

হুমম ওকে হৃদপরী -হৃদান

হৃদান সোহা পিয়ানি তিনজনে এগিয়ে গেল ওদের দিকে। আহিল অরনিকে কিছু বলতে চাচ্ছিলো আবার কিসের একটা বাঁধার জন্য বলতে পারছে না। নিচের দিকে তাকিয়ে ভাবছে বলবে কি বলবে না। তখনি অনেকগুলো পা দেখে উপর দিকে তাকিয়ে হৃদান কে দেখে বিষ্ময়ে হা করে রইলো। হৃদান কে যে এইভাবে দেখবে ভাবতেই পারে নি।

অরনি এখানে কি হয়েছে দাড়িয়ে আছিস কেন? আর ইনিই বা কে? -হৃদান

আসলে হয়েছে টা কি -অরনি

ভুমিকা না করে সোজা বল -সোহা

আসলে একটা ছেলের কথা বলছিলাম না যে ডিস্টার্ব করে ওই বদলোক আজকেও এসেছিলো। আর ও হচ্ছে আহিল খান -অরনি

সাগরকে বদলোক বলতেই সাগর রেগে অরনির দিকে খাইয়া ফালামু লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে। আর রিয়ার খুব হাসি পাচ্ছিলো বলে দূরে গিয়ে কিছুক্ষণ হেসে এসেছে। পিয়ানি আর সোহা অরনির কথা শুনে অবাক হওয়ার ভান করে চিল্লিয়ে উঠে

কিহহহ এই আমাদের বাঁশ আহিল খান -পিয়ানি

হোয়াটটট কে বাঁশ -আহিল

আর বইলেন না ভাই আপনি হইলেন অরনির ক্রাশ আর আমাদের বাঁশ -সোহা

আহিলের ওদের কথা বুঝতে পারলো না হ্যাবলার মতো তাকিয়ে থাকলো। হৃদান বুঝতে পেয়ে হাত বাড়িয়ে দিলো

হাই আমি হৃদান চৌধুরী হৃদতান ইনড্রাস্ট্রিজের ওনার -হৃদান

মি চৌধুরী আপনাকে কে না চিনে বলুন। আপনি এখানে? চিনেন এই পাগল কে -আহিল

অরনি কে দেখিয়ে বলল। পাগল বলায় অরনি তো ক্ষেপে আগুন। সোহা আর পিয়ানি ফিক করে হেসে দিলো তা দেখে অরনির রাগ আরো বাড়লো। রাগে অরনি আহিল কে মারতে লাগলো

তোর এত বড় সাহস তুই আমাকে পাগল বলিস। তুই পাগল তোর বউ পাগল তোর চৌদ্দ গোষ্ঠী পাগল -অরনি

আহিল অরনির দুহাত ধরে আছে অরনি ছুটোছুটি করছে

আরে আরে এমন করছো কেন আচ্ছা যাও বাবা সরি। তুমি তো কিউট গুলুমুলু সুন্দর মেয়ে। যে তোমাকে পাগল বলবে সেই পাগল -আহিল

হয়েছে এখন চল অরনি। আর হ্যাঁ অরনি আমার ফ্রেন্ড। তো আসি। এই হলো আমার ভিজির্টি কার্ড কোনো দরকার হলে আসবেন -হৃদান

থ্যাংকস মি. চৌধুরী -আহিল

বর্তমান…

সাগর গাল ফুলিয়ে বসে আছে। আর সবাই এটাওটা বলে হাসাহাসি করছে।

অরনি তুই সত্যি পাগল। রাগ উঠলে তুই সবকিছু ভুলে যাস। যেভাবে মারতেছিলি মি আহিল কে তোকে যদি ঠাসসস করে একটা চড় বসিয়ে দিতো তখন -পিয়ানি

তখন আর কি হতো এক চড়েই দাঁত লেগে যেতো হাহাহা -সোহান

যা বলেছিস সোহান শেষে আমি প্রচার করতাম ক্রাশের হাতে চড় খেয়ে পার্কে অজ্ঞান হয়ে গেলো অরনি রহমান হাহাহা -সোহা

তবে রে আমাকে নিয়ে মজা করা হচ্ছে। কিন্তু আমাকে সে মারতেই পারতো না কারণ দেখেছিলি কিভাবে তাকিয়ে ছিলো -অরনি

ঠিক বলেছ আপু ড্যাবড্যাব করে তাকিয়েছিলো -রাহি

আচ্ছা শুনো কালকের প্লেন কি -রাইসা

কালকে কেন আজকে বিকেলের জন্য আরককটা প্লেন করি -আনহা

নাহ আমার এখান থেকে যেয়ে অফিস যেতে হবে। এখন যদি সব কাজ ফেলে রাখি সামনে বিয়ে তখন ঝামেলা হবে -হৃদান

হ্যাঁ আমাদের ও যেতে হবে। সব কাজ আগেই গুছিয়ে রাখতে হবে -পরশ

আচ্ছা তাহলে কালকে বিকেলে একটা প্লেন হবে -আধির

হুমমম কালকে ফাটাফাটি একটা প্লেন করতে হবে -রিয়া

এই সাগর তুই এমন চুপ করে আছিস কেন – সোহা

বেচারা নাগ করেচে -রাইসা

আমি বদলোক আমি লুচ্চা? আমি কথা বলবো না কারো সাথে হুমম। যার জন্য করা চুরি সেই কই চোর -সাগর

ওরে ওরে সাগু সোনা নাগ করেচে বুঝি। আচ্ছা সরি -অরনি

বউয়ের সাথেই এই পযর্ন্ত ঠিকঠাক রোমান্স করতে পারলাম না আমাকে লুচ্চা বানাইদিলো -সাগর

সাগরের কথা শুনে সবাই হো হো করে হেসে দিলো আর রিয়া কটমট চোখে তাকিয়ে আছে। হৃদিতা কিছু বলছে না। কি যেন ভাবছে

হৃদিপাখি কি হয়েছে তোমার -পরশ

চুপ করে আছো কেন হৃদিরানী আপসেট তুমি? -নাশিন

না ভাইয়া তেমন কিছু না -হৃদিতা

হৃদপরী কি হয়েছে বলো -হৃদান

কিছু হয়নি চলো বাসায় যাই -হৃদিতা

হ্যাঁ হ্যাঁ চলো চলো আমার খুব খিদে পেয়েছে -পিয়াস

খিদে তো পাবেই পেটুক কোথাকার -রোহানি

হেই রোহু তুমি আমাকে এইভাবে ইনসাল্ট করতে পারলে আমার একটা প্রেসটিজ আছে না -পিয়াস

তুই চুপ থাক হাদারাম। মাকে নিজের পছন্দের কথা বলতে পারে না আসছে প্রেসটিজ নিয়ে। এক নাম্বারের বলদ -রোহানি

আমাকে চ্যালেন্জ করছো এই পিয়াস আনাফ কে? আচ্ছা আজকে মাকে যদি না বলছি আমি আর মুখ ই দেখাবো না হুমম -পিয়াস

যাও যাও তোমাকে চেনা আছে -রোহানি

হয়েছে থাম তোরা এখন চল আমারো খুব খিদে পেয়েছে -রাহি

সবাই হাসিমজা করতে করতে যে যার বাসায় চলে গেলো। হৃদিতা রিয়া রাইসা রোহানি রাহি আধির সাহিল এসে নাস্তা করে ভার্সিটি চলে গেলো। আনহা নিজের কলেজে। পরশ নাশিন হৃদান সাগর সোহান যে যার অফিসে চলে গেলো। পিয়াস আজ কোথাও যাবে না মাকে পটানোর ফন্দি করেছে। পিয়াস কিছুক্ষণ ভেবে ওর মার কাছে গেলো

আম্মু আম্মু শোন না আম্মু

কি হয়েছে তোর? আসার পর থেকে আমার পিছে পিছে ঘুরছিস কেন?

শুনো না আম্মু তুমি তো আমার সোনা আম্মু তাইনা

এই তোর মতলব ভালো ঠেকছে না তো। যা বলবার আছে তাড়াতাড়ি বল আমার কাজ আছে

আবব আম্মু আমি একটা মেয়েকে খুব ভালোবাসি সেও আমাকে খুব ভালোবাসে। চার বছরের রিলেশন আমাদের। আম্মু তুমি প্লিজ রাগ করো তোমাকে বলবো বলবো করে বলা হয় নি

পিয়াস চোখ বন্ধ করে একদমে কথা বলে চোখ খুলতেই মায়ের আগুন চোখ দেখে শুকনো ঢুক গিলে যেই না দৌড় দিতে যাবে ওমনি কারো হাসির শব্দে থেমে গেলো। পেছনে তাকিয়ে দেখে ওর মা হাসছে। প্রাণবন্ত হাসি। পিয়াস বুঝে নিয়েছে তার মা রাগ করেনি।

তুই কি ভেবেছিস তুই প্রেম করবি আর আমি জানবো না

মানে

মানে তোমাকে মানে বুঝাচ্ছি। হতচ্ছাড়া কি সুন্দর মিষ্টি একটা মেয়ে তোর মতো গাধার প্রেমে কি করে পড়লো বলতো

তুমি জানো সব? চিনো রোহু কে

জি হ্যাঁ আমি আপনার রোহু কে চিনি। হৃদিতা না বললে তো চিনতাম ই না

মা তুমি রাগ করো নি তো

নারে বোকা ছেলে আমার তো খুব পছন্দ হয়েছে রোহানিকে। দেখতে কি মিষ্টি তেমনি ব্যবহার ও খুব সুন্দর। তার মধ্যে বাস্কেটবল খেলোয়াড়, দুষ্টু সব মিলিয়ে আমি যেমন আমার জন্য মেয়ে আর আমার ছেলের জন্য বউ চাইতাম ঠিক তেমনি পেয়েছি। তাই আমি খুব খুশি

সত্যি মা আই লাভ ইউ মা উম্মা

হয়েছে হয়েছে আর ডং দেখাতে হবে যা সর আমাকে কাজ করতে দে

কিন্তু মা ওর তো বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। আমি কিন্তু ওকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবো না

আরে পাগল ছেলে হৃদিতা মা আর হৃদান আছে তো ওরা সামলে নিবে সব। তুই চিন্তা করিস না আর তাও যদি তোর শশুড় না মানে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসবি দেখবো তার এত বাহাদুরি কই থাকে

ওহ মা তুমি আসলেই সুপার হিরো না হিরোইন। আমার সোনা মা। আমি যাই ওদের খবর টা দিয়ে আসি

পরশ চলে গেল ওর মা হালকা হেসে কাজ করতে লাগলো। দুপুরের কিছু সময় আগেই আজকে হৃদিতা দের ভার্সিটি ছুটি হয়ে গেছে। হৃদিতা আর রিয়া ঠিক করেছে আজ অফিসে যাবে লাঞ্চ করতে। রোহানিকে ওর বাবা তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে বলে ও হৃদিতাদের সাথে গেলো না আর সবাই ও যে যার বাড়ি চলে গেলো। যথারীতি হৃদিতা রিয়া বেরিয়ে পড়লো। বেশী সময় লাগবে না। রাহি আজকে গাড়ি নিয়ে আসেনি। বাসা থেকে রাগ করে চলে এসেছে। সব বান্ধুবীর বিয়ে হয়ে যাচ্ছে বলে রাহির বাবাও চাচ্ছে রাহিও বিয়ে টা করে ফেলুক। কিন্তু ও তো একজনের জন্য অপেক্ষা করে আছে। সেতো পরিষ্কার করে বলছেও না ভালোবাসে তাই অপেক্ষা করছে কবে বলবে। রাহি একটু শপিং এ যাবে আজকে তাই রিকশার জন্য অপেক্ষা করছে। কিছু সময় পর রিকশা পেতেই তাতে চেপে বসলো। ২০ মিনিটের মাথায় শপিং মলে পৌঁছে গেলো। প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে চলে আসবে তার আগেই সামনের দৃশ্য দেখে ওর পা আপনাআপনিই থেমে গেলো। নড়ার শক্তি টুকু পাচ্ছে না মনে হচ্ছে। তার সামনেই তার ভালোবাসার মানুষটা অন্য জনের হাত ধরে হাটছে আর হেসে হেসে কথা বলছে। চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। নিজেকে সংযত করে সোহান কে ফোন দিলো। রিং হয়ে কেটে গেল সোহান দেখেও ধরলো না। আবার দিলো ধরলো না। দেখেও ধরলো না। তিন বারের সময় ধরলো

হ্যালো সোহান কোথায় আপনি

আমি তো বাড়িতে। কেন কি হয়েছে রাহু

না এমনি আমি একটু শপিং মলে আসছিলাম কেনাকাটা করতে। মনে হলো আপনার মতো কাউকে দেখলাম একটা মেয়ের হাত ধরে ঘুরতে। আমারি মনের ভুল হবে হয়তো তাইনা। আপনি তো বাড়িতে যাই হোক এখন রাখছি বাই

রাহি ফোন কেটে দিয়ে আর এক মুহূর্তও দাড়ালো না বের হয়ে গেল। আর সোহান হতভম্ব হয়ে ফোনের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আশেপাশে তাকালো। নাহ নেই তো। সোহান ও আর থাকলো না বের হয়ে এলো শপিং মল থেকে। রাহি ওকে ভুল বুঝলো। রাহি সোজা বাড়ি এসে নিজের ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে অঝোরে কাঁদতে লাগলো। এত কষ্ট হচ্ছে কেন, ভালোবাসায় এত কষ্ট কেন।সেই কখন কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গেছে এর মধ্যে যে রাহির মা অনেকবার ডেকে গেছে শুনেই নি। শেষমেষ রাহির মা বুঝলো তা মেয়ে রাগ করেছে বিয়ের কথা বলায়। তাই রাহির বাবা কে বললো বিয়ের বিষয়ে কিছু না বলতে। মেয়ে যেমন থাকতে চায় থাকুক। বাবাও মেনে নিয়েছে বড্ড আদরের মেয়ে যে।

অন্যদিকে রিয়া হৃদিতা অফিসে ঢুকতেই সবাই সালাম দিয়ে কথা বললো। তাদের ভাইয়েরা এখন মিটিংয়ে আছে। কিন্তু হৃদিতার বেশ ক্ষিদে পেয়েছে। সকালে তাড়াহুড়ায় খেতে পারেনি। হৃদিতা খিদে পেলে বেশীক্ষণ না খেয়ে থাকলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। চোখ লাল হয়ে যায়। শরীর কাঁপতে থাকে। এখনো এমন হচ্ছে ওর কিন্তু রিয়াকে বুঝতে দিচ্ছে না। তাও রিয়া বুঝে গেলো। জলদি মিটিং রুমেই চলে গেলো। পরশ খুব ইমপরটেন্ট বিষয়ে মিটিং করছে। মধ্যে অন্য কারখানার মালিক ও আছে। আর পরশ ভেবেছে হৃদিতাদের ভার্সিটি দুটোই ছুটি দিবে,দেড় টায় মিটিং শেষ হলে অনায়াসেই যেতে পারবে।
মিটিং রুমে পরশ লেকচার দিচ্ছিলো তারপাশেই নাশিন ও পরশ কে সাহায্য করছিলো। মিটিং রুমের দরজায় গার্ড দাড়ানো আছে। হৃদিতা রিয়া ওদের দেখে তাড়াতাড়ি গেলো কারণ পরশ ডিস্টার্ব করতে বারণ করেছে।

মেম স্যার ইমপরটেন্ট মিটিয়ে আছে। ভেতরে কাউকে যেতে নিষেধ করেছে -গার্ড

এখন আপনার সাথে কথা বলার সময় নেই ভেতরে যেতে হবে -রিয়া

গার্ড কিছু বলতে যাবে তার আগেই হৃদিতা গার্ডের দিকে তাকাতেই গার্ড ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেলো। গার্ড মনে করেছে রেগে আছে কিন্ত আসলেই তা না হৃদিতার খিদে সহ্য করতে না পেরে চোখ লাল হয়ে গেছে। হৃদিতা আর রিয়া মিটিং রুমে প্রবেশ করলো। হটাৎ করে দরছার শব্দ হতেই সবাই বিরক্তিতে তাকালো, পরশ রেগে তাকাতেই তার বোনদের দেখতে পেতে হাসি দিতে গিয়েও থেমে গেলো।

ভাইয়ু হৃদিরানীর খুব খিদে পেয়েছে

রিয়ার কথা শুনে হৃদিতাকে ভালো করে দেখেই পরশের বুকটা ধক করে উঠলো। বোনের একটু কষ্টও সহ্য হয়না। নাশিন দৌড়ে বাইরে চলে গেলো বোনদের জন্য খাবার আনতে। পরশ ও দৌড়ে গিয়ে হৃদিতাকে কোলে তুলে নিজের চেয়ারে বসিয়ে দিয়ে রিয়াকে পাশের চেয়ারে বসতে বলে নিজেও চেয়ারে বসে হৃদিতার মাথা বুকে চেপে রেখেছে। তাড়াতাড়ি পানি খাইয়ে দিলো। এর মধ্যেই নাশিন খাবার নিয়ে হন্তদন্ত হয়ে প্রবেশ করলো। পরশ আগে হৃদিতাকে খাইয়ে দিতে লাগলো। হৃদিতার খাওয়া শেষ হতেই হৃদিতা একটু সুস্থ হলো। চোখ লাল কমে আসছে। তবুও শরীর দুর্বল লাগছে।টেবিলে মাথা এলিয়ে দিলো

ভাইয়ু রিয়া আর নাশু ভাইয়াকে খাইয়ে দিয়ে তুমি খাও আমি ঠিক আছি

হৃদিতার কথায় ওরা একটু স্বস্থি পেলো তারপর পরশ ওদের দুইজন কে খাইয়ে দিয়ে নিজেও খেয়ে নিলো। ম্যানেজার অনেক আগেই মিটিংয়ের সময় একটু পিছিয়ে দিয়ে ওনাদের লাঞ্চের ব্যবস্থা করেছে। পরশ খেয়ে উঠতে কেউ পাগলের মতো দৌড়ে মিটিং রুমে প্রবেশ করলো। মানুষ টাকে দেখে ওরা সবাই অবাকই হয়েছে বটে তারপর আবার এমন পাগল পাগল অবস্থা দেখে বুঝলোনা কি হয়েছে……

চলবে….?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে