তুমি চাইলে যেতে পারো পর্ব-০৯+১০

0
825

গল্প:-#তুমি চাইলে যেতে পারো পর্ব:-(০৯+১০)
লিখা:-AL Mohammad Sourav

এখানে দাঁড়িয়ে কান্না না করে ভিতরে চলো তোমার জন্য অনেক বড় সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে বলেই সিমির হাত ধরে আল টেনে ভেতরে নিয়ে যাচ্ছে। সিমির চোখে অশ্রু জমে আছে আল তা দেখেও সিমির প্রতি কোনো মাঁয়াই করেনি। সিমি ভেতরে ঢুকে বুঝতে পারে আজ এখানে কারও বিয়ে হচ্ছে এমন সময় তাকিয়ে দেখে ওর বড় বোন শেলী রহমান কনে সেজে বসে আছে আর ঠিক তাঁর পাশে সুন্দর একটা ছেলে বর সেজে বসে আছে। সিমির চোখে এখনো অশ্রু আছে তখনি ওর বড় বোন দৌড়ে এসে সিমিকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিয়েছে। এক এক করে সিমির বাড়ীর সবাই এসেছে। সিমি তাঁর চোখের পানি মুছে নিয়েছে। আল আনোকে নিয়ে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছে। সিমির মা সিমিকে জড়িয়ে ধরে বলে।
সিমির মা:- তুই এমন ভাবে আমাদের ভুলে থাকতে পারলি? তখনি সিমির বড় বোন সিমির হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো। সিমি যাচ্ছে আল তাকিয়ে আছে। সিমি একবার পিছন ফিরে তাকিয়েছে আলের দিকে আল কিছুই বলেনি। সিমিকে একটা ঘরে নিয়ে ভেতর থেকে দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে বলে।
শেলী:- সিমি আমার মাথা ছুঁয়ে বল তুই কি নিজের ইচ্ছে ঐ ছেলেটাকে বিয়ে করেছিস নাকী বাবা তোকে কোনো প্রকার ভয় দেখিয়ে বিয়ে করতে বাধ্য করেছে?
সিমি:- আপু তুই কি যে বলিশ না। আমাকে কেউ জোঁড় করে কিছু করাতে পারছে বল! আমি নিজের ইচ্ছেতে বিয়ে করেছি। ছেলেটা খুব ভালো আর আমাকে পচন্ড ভালোবাসে।
শেলী:- সিমি তুই কেনো আমার সাথে মিথ্যা কথা বলতেছিস আমি তোর চোখ দেখে বুঝতে পারছি তোর সাথে অনেক বড় অন্যায় হয়ছে। তুই ওকে ডির্ভোস দিয়ে দিবি তোর জীবনটা কেনো নষ্ট করবি! দরকার হলে আমি তোর তখনি সিমি শেলীকে থামিয়ে দিয়ে বলে।
সিমি:- আপু কি বলছিস এসব আমি সত্যি অনেক সুখে আছি। আর তাছাড়া আল ছেলে হিসাবে খুব ভালো আমাকে অনেক ভালোবাসে। আচ্ছা তোর বিয়েটা কে ঠিকঠাক কে করেছ! আর এত কিছু আয়োজন কে করেছে?
শেলী:- তোর বর করেছে।
সিমি:- কি ওনি করেছে?
শেলী:- হ্যা! চারদিন আগে রাহাত মানে আমার যার সাথে বিয়ে হচ্ছে ওকে সাথে নিয়ে আমাদের বাড়ীতে আসে। আর সেদিন জানতে পারি তোর সাথে কি কি হয়ছে। তোর সাথে যা যা হয়ছে আল আমাকে আর মাকে সবকিছু বলেছে। যাবার সময় রাহাতকে দেখিয়ে আমাকে বলে আমার পছন্দ হয়ছে কি না? ছেলে তো সুন্দর আর মা বলে পছন্দ হয়ছে তার পরের দিন সকালে রাহাতের বাড়ীর সবাই এসে আমাকে আংটি পড়িয়ে দিয়ে যায়। আর ওদের ঠিকানা দিয়ে যায় ওদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য পরে মা নিজে সব খোঁজখবর নিয়েছে ওদের পরিবারের সম্পর্কে। সবাই ওনাদের অনেক ভালো বলেছে আর আজকেই বিয়ে। আমি অনেক রিকুয়েস্ট করার পর আল রাজি হয়ছে তোকে নিয়ে আসতে।
সিমি:- সত্যি বলছিস ওনি সবকিছু ম্যানেজ করেছে?
শেলী:- হ্যা সবকিছু তোর বর করেছে। তবে আমার মনে হয় ছেলেটা অনেক ভালো কিন্তু তাই বলে বিবাহিত একটা ছেলে আমার বোনের বর হবে অন্তঃত আমি মানতে পারছি না।
সিমি:- আপু আমরা অনেক কিছু মানতে পারি না কিন্তু সবকিছু মেনে নিতে হয়। সত্যি বলতে আল আমার স্বামী এইটা এখন সবাই জানে। আচ্ছা আপু বাড়ীর কেউ এই ব্যপারে তোকে কিছু বলেনি তো?
শেলী:- বাবা আর ওনার বোনেরা অনেক কিছু করতে চায়ছে কিন্তু আলের জন্য সবকিছু ভেস্তে গেছে।
সিমি:- ঠিক আছে এখন চল আমরা বাহিরে যাই সবাই কি মনে করবে বল?
শেলী:- ঠিক আছে চল। ওরা দুজনে বাহিরে এসেছে। আনোকে সিমির মা কোলে নিয়ে রাখছে আলকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। সিমি ওর মায়ের কাছে যেতেই ওর মা বলে।
সিমির মা:- আল আমাকে সব বলেছে আর আজ আমাদের মধ্যে যে সুখটা দেখছিস সবটা আলের জন্য হয়েছে। আমি জানি তোর জন্য আজ শেলীর বিয়েটা হচ্ছে তানা হলে কখনো সম্ভব হতো না।
সিমি:- মা যা কিছু হয়ছে সবকিছু ভালোর জন্য হয়ছে। তখনি একজন সিমির মাকে ডাক দিয়েছে আর ওনি আনোকে কোলে নিয়ে চলে গেছে। সিমির চোখ দুইটা আলকে খোঁজতেছে তখনি পিছন থেকে কেউ বলে।
সিমি কেমন আছো? সিমি পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। সিমি অবাক হয়ে গেছে আর কতদিন পরে দেখা ওর সাথে। তখনি ছেলেটা বলে। তুমি টাকার জন্য এক বাচ্চার বাবাকে বিয়ে করে নিলে! আমার ভালোবাসার একটুও দাম ছিলো না তোমার কাছে? তখনি সিমি কিছু না বলেই চলে যাচ্ছে তখন ছেলেটা আবার বলছে। তোমার জন্য অপেক্ষা করবো যদি ইচ্ছে হয় তাহলে চলে এসো তোমাকে নিয়ে দূরে কোথাও চলে যাবো। সিমি হাটার গতি বাড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে তখনি আলের সাথে ধাক্কা লেগেছে। আল পানি খেতে ছিলো তখনি হাত থেকে গ্লাসটা পড়ে গেছে। আল কিছুটা রেগে গিয়ে বলে।
আল:- কি হয়ছে তোমার এত তাঁড়া কিসের? কোথায় যাচ্ছো?
সিমি:- সরি সরি আমি ইচ্ছে করে করিনি বলেই আলের শরীরে পানিটা মুছে দিতেছে। তখনি সিমির হাতটা ধরে বলে।
আল:- কি করছো তুমি? তখনি চেয়ে দেখি সিমির মা তাকিয়ে আছে তখনি আল কথার ধরণ চেইঞ্জ হয়ে যায়। আল সিমির হাতটা ধরে সুন্দর করে চেয়ারে বসিয়ে আস্তে করে বলে একটু ঠান্ডা মাথা এখানে বসো। তোমার কোনো ক্ষতি করার বিন্দু পরিমান ইচ্ছে আমার নেই। আমার কিছু কাজ বাকী আছে সেই গুলি শেষ হলেই তুমি যেতে পারবে।
সিমি:- আচ্ছা এমন কেনো আপনি?
আল:- আমি এমনি! একটা মিথ্যা কথা বলবো?
সিমি:- আজ হঠাৎ করে আমার থেকে অনুমতি নিতেছেন ব্যপার কি? আপনি কি আমার প্রেমে পড়ছেন নাকী?
আল:- আমি প্রেমে পড়বো তোমার হাসালে তুমি! তোমার প্রেমে পড়ার কোনো ইচ্ছে নেই আমার। তখনি সিমির মা চলে গেছে আল নিজের মত করে সিমির থেকে দূরে চলে গেছে। আল তাঁর মনের কথাটা মনেই রেখে দিয়েছে সিমিকে আর বলেনি। এখন বিয়ের কার্জক্রম শুরু হয়ে গেছে। কিছুকক্ষণের মধ্যে শেলীর বিয়েটা হয়ে যায়। শেলী সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়। তখনি আল বলে আমি আনোকে নিয়ে গাড়ীতে অপেক্ষা করছি তুমি এসো। সিমি কিছু বলেনি সোজা ওর মায়ের কাছে গিয়ে বলে।
সিমি:- আজ আমি নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবো এখন আমার আর কোনো চিন্তা থাকবে না। মা তুমি নিজের খেয়াল রেখো আমি আসি।
সিমির মা:- মা তুই আমাকে ক্ষমা করে দিস আমি তোর জন্য কিছু করতে পারিনি। সবার জন্য আজ তুই তোর জীবনটাকে নষ্ট করে দিয়েছিস।
সিমি:- যা হয়ছে সবকিছু ভালো হয়ছে। মা আমার জন্য দুআ করো আমি যেনো খুব সুখে থাকি এই বলে সিমি চলে এসেছে। আল গাড়ীতে বসে আছে আনো পিছনের সিটে ঘুমিয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে সিমি আলের সাথে সামনের সিটে বসেছে। আল গাড়ীটা চালাচ্ছে সিমি মনে মনে ভাবছে আলকে একটা ধন্যবাদ দেওয়া যায় ওর বোনকে এত ভালো ঘরে বিয়ে দেওয়ার জন্য। তখনি আল বলে।
আল:- আমি জানি তুমি মনে মনে কি ভাবছো কিন্তু এসব কিছু আমি আমার মন থেকে করেছি। আমি যা করেছি সব নিজের জন্য করেছি। আমি তোমার কথা ভেবে কখনো এসব কিছু করিনি।
সিমি:- আপনি বুঝলেন কি করে আমি যে এসবকিছু ভাবতেছি। আল এখন চুপ করে আছে সিমি রেগে গিয়ে বলে। কি হলো এখন চুপ করে আছেন কেনো? আমি আপনাকে কিছু জিজ্ঞেস করেছি? তখন আল রহস্যজনক একটা হাসি দিয়ে বলে।
আল:- এতকিছু জেনে কি করবে কিছুদিন পড়ে তুমি চলে যাবে। আমি তোমাকে কিছু বলতে চাইনা আর জানাতে চাইনা। তুমি আমার জীবনে কোনো দিন থাকবে না আর আমিও তোমাকে রাখবো না। তোমাকে যেই কারণে বিয়ে করেছি তাঁর মধ্যে একটা কাজ কম্পিলিট আর মাত্র দুইটা কাজ বাকী আছে সেই গুলি খুব তাঁড়াতাড়ি শেষ করে আমি তোমাকে তোমার ঠিকানাতে পাঠিয়ে দিবো। যেখানে থাকলে তোমাকে মানাবে আর পচন্ড ভালোবাসবে সেখানে।
সিমি:- আপনি নিজের স্বার্থের জন্য সব করতে পারেন এইটা তো আমি বিয়ের পর থেকে বুঝে গেছি। কিন্তু আমার জন্য এতটা চিন্তা কোথা থেকে আসলো শুনি?
আল:- গাড়ী চালানোর সময় আমি কথা কম বলি আর তাছাড়া সময় হলে সব বুঝতে পারবে আমি কতটা স্বার্থপর। আল আর সিমি দুজনে চুপচাপ হয়ে গেছে। কেউ কোনো কথা বলেনি গাড়ীটা বাড়ীর সামনে এসে থামছে। সিমি আনোকে কোলে নিয়ে বাড়ীর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল চাপ দিয়েছে। লতা এসে দরজাটা খুলেছে সিমি ভিতরে গেছে লতা দরজা বন্ধ করতে ছিলো তখনি আলকে দেখে দরজা বন্ধ করেনি। আল ভিতরে ঢুকতেই আলের বাবা বলে।
বাবা:- আল তোর সাথে কিছু কথা ছিলো।
আল:- কোন ব্যাপারে কথা বলবেন?
বাবা:- আমি আর তোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা সবাই বাড়ী ছেড়ে চলে যাবো। আমাদের জন্য তুই অনেক করেছিস আমরা চাইনা তুই আমাদের জন্য আর কিছু করিস।
আল:- হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার মানে কি?
মা:- হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নিতে হয় আর আমরা যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েছি সেহেতু আমরা যাবই এই কথা বলে বাবা মা দুজনে চলে গেছে আল মন খারাপ করে ঘরে গেছে। মাথার চুল গুলি টেনে ধরে রাখছে এমন সময় সিমি ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে এসেছে। আলের এমন অবস্থা দেখে সিমি বলে।
সিমি:- আপনার কি শরীর খারাপ করছে নাকী মাথা ব্যথা করছে।
আল:- নাহ কিছুই করছে না বলে ওয়াশরুমে চলে গেছে। কিছুকক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে বের হওয়ার সাথে সাথে সিমি বলে।
সিমি:- আমার কিন্তু আরও একটা শর্ত বাকী আছে। আনোকে যদি আপনার কাছে রাখতে পারি তাহলে আপনি আমার দুইটা শর্ত পুরুণ করবেন মনে আছে?
আল:- বলে ফেলো কি করতে হবে?
সিমি:- মালা আবির নামে একটা ছেলেকে ভালোবাসে ওনারা সামনে শুক্রবার আসবে মালাকে দেখতে। আপনি নিজে থেকে সবাইকে এক সাথে রেখে বিয়েটা ঠিকঠাক করবেন। আর ঝিনুক আপুর শ্বশুর বাড়ীর সবার কাছে নিজে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে ঝিনুক আপুকে তাঁর শ্বশুর বাড়ীতে পাঠানোর ব্যবস্থা আপনি করবেন। এইটাই আমার দুই নাম্বার শর্ত? আল কিছুটা চুপচাপ বসে থেকে বলে।
আল:- মালা যে প্রেম করে তোমাকে কে বলছে?
সিমি:- মালা নিজেই বলেছে। আল আর কিছু বলেনি আনোর ডান পাশে শুয়ে পড়েছে তখনি সিমি বলে। কি হলো কিছু না বলে শুয়ে পড়েছেন কেনো? এবারও আল কিছু বলেনি। সিমি কিছুটা বিরক্ত হয়ে আনোর বাম পাশে শুয়ে পড়েছে।

সকালে সবাই নাস্তা করতেছে তখনি আল সবার উদ্দেশ্য করে বলে। আমার কিছু কথা আছে সবাই কথা গুলি শেষ হলে তারপর কথা বলিয়েন। সবাই চুপচাপ হয়ে আছে তখন আল বলতে আরম্ভ করেছে। আমি জানি আমার প্রতি সবার অনেক রাগ আছে এটা থাকার কথা। মা বাবা আপনারা সিদ্ধান্তটা যেটা নিয়েছেন সেটা আপনাদের একান্ত মতামত এখানে আমি জোঁড় করবো না। তবে কিছু কথা বলি। ঝিনুক আপুর শ্বশুর বাড়ীর সমস্যাটা আমি মিঠিয়ে দিবো আর ওনার স্বামীর সাথে যে সমস্যা আছে সেটাও। তবে এখন কথা হচ্ছে মালা আবির নামে একটা ছেলেকে ভালোবাসে। ছেলেটা শুক্রবার ওর পরিবার নিয়ে আসবে মালাকে দেখতে। এখন মালা যেহেতু বড় হয়েছে সেহেতু ওর বিয়ে দেওয়াটা আমারদের কর্তব্য। আমি বলি মালার বিয়েটা হয়ে গেলে আর আপু তাঁর শ্বশুর বাড়ীতে চলে গেলে তখন যার যেখানে ইচ্ছে সেখানে যাওয়া যাবে। এমন আছে আমি হয়তো দূরে কোথাও চলে যেতে পারি। আলের কথা শুনে সবাই ওর সাথে একতম হয়ছে। সিমি আলের দিকে তাকিয়ে আছে আল কিছু না বলে বেড়িয়ে গেছে। সবার খানা শেষ হয়ছে আজ অনেকদিন পর বাড়ীর সবার মন খুব ভালো। আল ঝিনুকের শ্বশুর বাড়ীতে গেছে সবাই আলের সাথে খুব বাজে ব্যবহার করছে। তখনি আল ঝিনুকের স্বামীকে বলে। আচ্ছা ভাইয়া আপনার সাথে যদি আমার মত হতো তাহলে কি করতেন? আপনি সবকিছু মেনে নিতেন? আল নিজের মত করে কিছু কথা বলেছে তখন ফিরুজ ভাই আলকে আশ্বাস দিয়েছে
ফিরুজ:- আমি তোমার আপুর সাথে সংসার করবো। যদি আমার পরিবার আমার বিরুদ্ধে চলে যায় তাও আমি ঝিনুকের সাথে সংসার করবো। সাহানা আর ফয়সাল সত্যি কাজটা খুব অন্যায় করেছে। তোমার সাথে সত্যি অনেক বড় অন্যায় হয়ছে।
আল:- ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। আর হাঁ আমাকে প্লিজ ক্ষমা করে দিন আমি সেদিন রাগের মাথায় যা করেছি সেইটা অন্যায় করেছি।
ফিরুজ:- আল যা হবার হয়ে গেছে তা নিয়ে এখন মন খারাপ করোনা আমি তোমাকে কথা দিলাম ঝিনুকে আমি আগামীকাল গিয়ে নিয়ে আসবো। যদি পরিবার মেনে না নেয় তাহলে ওকে নিয়ে আলাদা ভাবে বাসা ভাড়া করে থাকবো।
আল:- আলাদা থাকতে হবে না আপনি চাইলে আমাদের সাথে থাকতে পারেন যদি আপনি কিছু মনে না করেন। ফিরুজ ভাই রাজি হয়নি ওনি আলাদা বাসা ভাড়া করে থাকবে। তবে ফিরুজ ভাইয়ের মনটা খুব ভালো সত্যি আমার আপুর ভাগ্যটা খুব ভালো। আল সেখান থেকে বেড়িয়ে এসেছে। আল আজ অফিসে যায়নি বাড়ীতে এসেছে সিমি মালার সাথে বসে গল্প করছে আল কিছু বলেনি।
মালা:- ভাবি তুমি কিন্তু কখনো ভাইয়াকে ছেড়ে যাবে না।
সিমি:- ঠিক আছে তাই হবে। ( কে কাকে ছেড়ে যাবে সেইটা সময় বলে দিবে মনে মনে কথাটা ভাবছে) আচ্ছা মালা তুমি বসো আমি রুমে যায়। সিমি রুমে গিয়ে দেখে আল বারান্দায় মোবাইলে কথা বলছে সিমি কিছু না বলে বেড়িয়ে এসেছে।

আজ দুই দিন হলো আল সিমির সাথে তেমন কথা বলে না আর সিমিও আলের সাথে কথা বলে না। আজ শুক্রবার মালাকে দেখতে আবিরের পরিবারের সবাই এসেছে। বাড়ীটা সুন্দর করে গোচানো হয়ছে আলের মা সবকিছু নিজের হাতে রান্না করেছে। আবিরের বাবা মায়ের মালাকে পছন্দ হয়ছে ১৫দিন পড়ে বিয়ে দিনক্ষণ ঠিক করেছে। সবাই অনেক খুশি হয়েছে। আজ এক সাপ্তাহ হয়ে গেছে আল ঠিক আগের মত করে রাতে বাড়ীতে আসে না সারা দিনে একবার আসে তো আসেনা এসবকিছু সিমি ব্যপারটা ভালো চোখে নিচ্ছে না। সিমি ঘরে ঢুকে দেখে আল ঘরে আনোর সাথে দুষ্টমি করছে তখনি বলে।

সিমি:- আপনি আবার আগের মত শুরু করেছেন ব্যপারটা কি?
আল:- আমাকে এমন প্রশ্ন করার অধিকার তোমাকে কে দিয়েছে?
সিমি:- অধিকার কেউ কাওকে দেয়না কিছুছু সময় জোঁড় করে আদায় করে নিতে হয়।
আল:- ও তাই বুঝি?
সিমি:- হ্যা হ্যা তাই এখন বলেন এক সাপ্তাহ যাবৎ আপনি আগের মত করে কেনো করছেন? সামনে মালার বিয়ে আর আপনি যদি আগের মত করে করেন তাহলে তো সব শেষ হয়ে যাবে। তখনি সিমি একদম আলের কাছে গিয়ে ওর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে বলে। তাহলে কি আপনি আবার আগের মত নাইট ক্লাবে যেতে আরম্ভ করেছেন?
আল:- তুমি আমার কে? আর তুমি এত কিছু জেনে কি করবে? দুইদিন পরেই চলে যাবে আমার জীবন থেকে তাহলে আমি তোমার কাছে কয়ফত দিতে যাবো কেনো? তখনি সিমি রেগে গিয়ে বলে।
সিমি:- কারণ আমি বর্তমানে আপনার স্ত্রী আর একজন স্ত্রী হিসাবে সবকিছু জানার অধিকার আমার আছে। তখনি আল কিছুটা মুচকি হেসে সিমির একদম কাছে দাঁড়িয়ে গেছে। আল সিমির দিকে এক পা দুই পা করে যাচ্ছে আর সিমি পিছনে যাচ্ছে তখনি সিমি বলে এই আপনি আমার দিকে আসতেছেন কেনো?
আল:- তুমি একটু আগে বলেছো আমার স্ত্রী তোমার কথা মত আমি তোমার স্বামী আজ বড্ড ইচ্ছে করছে স্বামীর অধিকার আদায় করতে।
সিমি:- দেখুন ভালো হবে না আমি তো রাগের মাথায় বলেছি। আপনাকে আমি স্বামী হিসাবে এখনো মানি না।
আল:- নিজের মুখে বলেছো তুমি আমার স্ত্রী আর স্ত্রীর অধিকার থেকেই জানতে চেয়েছো তাই আগে আমি আমার স্বামীর অধিকার আদায় করি। তখনি সিমি গিয়ে দেওয়ালের সাথে আটকিয়ে গেছে। আল সিমির একদম।কাছে গেছে। সিমি বার বার আলকে বারণ করছে ঠিক তখনি আল সিমির দুইটা হাত ধরে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরেছে। সিমির নিশ্বাঃসের সাথে আলের নিশ্বাঃসের বারি খাচ্ছে এমন সময় আল নিজেকে সিমির আরও কাছে নিয়ে গেছে আর সিমির চোখ বন্ধ করে দিয়েছি।

চলবে…

গল্প:-#তুমি_চাইলে_যেতে_পারো (পর্ব:-১০)
লিখা:- AL Mohammad Sourav

সিমির দুই হাত দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে রাখছে। ওর নিশ্বাঃসের সাথে আলের নিশ্বাঃস মিলে যাচ্ছে এমন সময় আল আরও কাছে চলে এসেছে। সিমি চোখ বন্ধ করে দিয়েছে আল সিমির দিকে তাকিয়ে দেখে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে ওর কপালে। ঠোঁট গুলা হালকা নড়া চড়া করছে যেই সিমির ঠোঁটে আল ঠোঁট রাখতে যাবে ঠিক তখনি মনে হলো আরে আমি এটা কি করছি! নাহ আমার এইটা করা একদম ঠিক হবেনা বলেই আল সিমিকে ছেড়ে দিয়ে দূরে চলে গেছে। সিমি এখনো স্বাভাবিক হয়নি ও একটা ঘোরের মধ্যে রয়ছে কিছুকক্ষণ ঘোরের মধ্যে থাকার পর নিজের মধ্যে হুস ফিরে এসেছে। সিমি আলের দিকে লজ্জাই তাকাতে পারছে না তখনি আল বলে।
আল:- আমি তোমাকে ট্রায় করে দেখছিলাম তুমি অন্য সব মেয়েদের মত কি না কিন্তু আমার ধারণা ঠিক হয়ছে। তোমার মত মেয়েদের আমি খুব ভালো করে চিনি অল্পতে নিজের সবকিছু দিতে তৈরি হয়ে যাও। তখনি সিমি রেগে গিয়ে বলে।
সিমি:- দেখুন আপনি কিন্তু বেশী বলে ফেলতেছেন? আপনি যা ভাবছেন আমি মুটেও ঐরকম মেয়ে নয়। আপনি তো আমার দুইটা হাত এমন শক্ত ভাবে ধরেছেন আমি নড়াচরা করার শক্তি হারিয়ে ফেলছি। তখনি আল হেসে দিয়ে বলে।
আল:- দুই হাত ধরলে মানুষের নড়াচরা করা বন্ধ হয়ে যায়! সত্যি বলতে তুমি চেয়ে ছিলে আমি তোমার সাথে কিছু করি কিন্তু আমি জীবনেও তোমার মত মেয়ের সাথে কিছু করবো না। আর শুনো আজকের পর আমরা যখন একা থাকবো তখন কখনো স্ত্রী অধিকার প্রয়োগ করতে আসবে না। আমি তো তোমাকে কিছু দিনের জন্য এই বাড়ীতে রাখছি সময় হলে তোমাকে তোমার জায়গা মত ছেড়ে দিয়ে আসবো।
সিমি:- আমাকে আপনার কোথাও ছাড়তে হবে না আমি নিজেই আপনার জীবন থেকে দূরে বহু দূরে চলে যাবো। আপনি চাইলেও আমাকে খুঁজে পাবেন না।
আল:- আমার প্রয়োজন শেষ হলে তোমাকে খুঁজার আমার কোনো দরকার নেই। আর শুনো আনোর সামনে কখনো এমন ভাবে রেগে মেগে কথা বলবে না। আমি চাইনা আনোর উপরে এসবের কোনো প্রভাব পড়ে।
সিমি:- আপনাকেও আমি বলে রাখি আমাকে আর কখনো স্পর্শ করবেন না। আমাকে যদি কখনো স্পর্শ করেন তাহলে আমি নিজেকে শেষ করে দিবো বলে দিলাম। তখন আল কিছুটা হেসে বলে।
আল:- এমনিতেই তোমাকে স্পর্শ করার কোনো আগ্রোহ আমার নেই আর আজকের পর তো কোনো সময় হবে না বলেই আল ঘর থেকে বেড়িয়ে গেছে। সিমি ঘরে মন খারাপ করে বসে আছে তখনি মালা এসেছে।
মালা:- ভাবি আপনার মন খারাপ?
সিমি:- নাহ তো। তা মালা কিছু বলবে?
মালা:- ভাবি আবির চাচ্ছে আমি ওর সাথে একটু বেরুতাম। তুমি প্লিজ বাড়ীর সবাইকে একটু ম্যানেজ করবে?
সিমি:- আর মাত্র কিছু দিন পরেই তো আবিরের কাছে সারা জীবনের জন্য চলে যাবে। তাহলে এখন কেনো ঘুরতে যেতে বলছে?
মালা:- ও নাকী ব্যাচেলর পার্টি দিবে আমাকে যেতেই হবে বলছে। ভাবি প্লিজ তুমি একটু ম্যানেজ করো।
সিমি:- আচ্ছা তুমি যাও আমি দেখি ম্যানেজ করতে পারি কিনা।
মালা:- সত্যি ভাবি তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে বেষ্ট ভাবি। তুমি এসেছো বলেই আজ বাড়ীর সবাই খুব খুশিতে আছে। তবে আল ভাইয়া তোমাকে পচন্ড ভালোবাসে। ভাইয়া স্বহজে সবার কথা রাজি হয়না কিন্তু তুমি যা বলো তাই করে। কেমন ভালোবাসে সেটা তো আমি জানি মনে মনে কথাটা বলেছে।
সিমি:- ঠিক আছে আমি ম্যানেজ করেতেছি তখন মালা চলে গেছে। আনো ঘুমিয়ে পড়েছে সিমি একটু নিচে এসে দেখে আল সহ সবাই বসে কথা বলতেছে। সিমি এসে সবার সাথে বসেছে।
বাবা:- আল বিয়ের সব অনুষ্টান কমিনিউটি সেন্টারে করতে চেয়েছি তুই কি বলিস?
আল:- আপনাদের যেভাবে সুবিধা হয় সেভাবে করেন। তখনি সিমি বলে।
সিমি:- আমি বলিকি অনুষ্টানটা বাড়ীতে করলেই তো হয়। এত বড় বাড়ী থাকতে কেনো শুধু সেন্টারে যাবেন?
দাদী:- হ্যা জশিম আমার কাছে মনে হয় অনু্ষ্টান বাড়ীতে করলে ভালো হবে।
মা:- হ্যা তাই করলে ভালো হবে। সবার মতামতের উপর বৃত্তি করে মালার বিয়ের আয়োজন ওদের বাড়ীতে করার চিন্তা করেছে। আল কিছু না বলে উঠে যেতে ছিলো তখনি সিমি বলে।
সিমি:- দাদী আবির বলছিলো মালাকে একটু সন্ধার পর নিয়ে বেরুবে। আবির নাকী ব্যাচেলর পার্টি দিতেছে। এখন বার বার মালাকে ফোন করছে।
দাদী:- বিয়ের আগে হুব স্বামীর সাথে এত দেখাদেখি ভালো না যদিও মালা আর আবির দুজনে প্রেম করেছে। আজকাল ছেলে মেয়েদের মন যা চাই তাই করে। আমার মতে মালা এসব অনুষ্টানে না যাওয়াই ভালো। কিন্তু যেহেতু আবির যেতে বলছে সেহেতু যাওয়া দরকার। কিন্তু মালাকে নিয়ে যাবে কে? তখনি মালা বলে উঠে।
মালা:- আমার সাথে ভাবি যাবে! আমি গিয়ে আবিরের সাথে দেখা করেই চলে আসবো ভাবির সাথে।
সিমি:- আমি যাবো? নাহ নাহ মালা আমি যেতে পারবো না।
দাদী:- নাত বৌ তুমি যাও কেউ তোমাকে কিছু বলবে না। তখনি আল বলে উঠে।
আল:- সিমি তুমি এখুনি উপরে এসো! সিমি কোনো কথা না বলে সোজা উপরে দিকে যাচ্ছে আর সবাই চুপচাপ হয়ে গেছে। মালা মন খারাপ করে বসে আছে তখনি আবির ফোন করেছে মালা ফোন রিসিভ করতেই বলে।
আবির:- মালা তোমার বাড়ী থেকে রাজি হয়ছে?
মালা:- রাজি হয়ছে কিন্তু আমি যাবো কার সাথে! তুমি কি আমাকে এসে নিয়ে যেতে পারবে?
আবির:- ঠিক আছে আমি নিজে এসে তোমাকে নিয়ে যাবো তুমি রেডি হয়ে থেকো।
মালা:- ধন্যবাদ তোমাকে। মালা আর আবির দুজনে প্রেম করে আজ তিন বছর যাবৎ আবির মালাকে পচন্ড ভালোবাসে ওদের দুজনের ভালোবাসাটা খুবই প্রবিত্র আজ পর্যন্ত আবির মালাকে ছুয়ে দেখেনি। আবিরের একটাই কথা বিয়ের পড়ে মালাকে ছুঁয়ে দেখবে। মালাও আবিরকে যথেষ্ট সম্মান করে আর অনেক ভালোবাসে। এর মধ্যে সিমি ঘরে চলে গেছে তখনি আল বলে।
আল:- তোমাকে আমি যা করতে বলি তুমি তাঁর ওল্টো করা আরম্ভ করেছো? এই পরিবার আমার আমি ওদের সবাইকে খুব ভালো করে চিনি। আগ বাড়িয়ে আর যদি কোনো কথা বলতে গেছো তাহলে এর পরিনাম খুব খারাপ হবে।
সিমি:- আমি কি করেছি আর তেমন কি বলেছি যার জন্য আপনি আমাকে বকা জকা করছেন?
আল:- তুমি কি না করছো সেইটা বলো?
সিমি:- দেখুন কথা অর্ধেক পেটে রেখে কথা বললে আমি সেই কথার কোনো উত্তর দিবো না।
আল:- তোমাকে কে বলেছে বিয়ের অনুষ্টান বাড়ীতে করতে বলতে? তুমি জানো সবাই তোমার কথায় কি মনে করেছে?
সিমি:- আরে আমি তো ভালোর জন্য বলেছি।
আল:- তুমি যেইটা ভালোর জন্য বলবে সেইটা খারাপ হবে আমার জন্য। প্লিজ এরপর থেকে বাড়ীর কারো সামনে আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে যাবে না। তখনি আলেরর চোখ পড়েছে সিমির হাতের দিকে চেয়ে দেখে সিমির দুইটা হাতেই আঙ্গুলের ছাপ পড়ে আছে। তখনি আল তার ড্রয়ার থেকে একটা মলম বেড় করে খাটের উপরে রেখে বলে। মলমটা আছে লাগিয়ে নিও খুব তাঁড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে বলে বেড়িয়ে যেতে ছিলো তখনি সিমি বলে।
সিমি:- কারও দয়া আমার লাগবে না। তখন আল মলমটা নিয় ড্রয়ারে রেখে বাহিরে চলে গেছে। সিমি আলের এমন কান্ডে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। সিমি নিজে নিজে কিছুটা প্ল্যান করে আর সেই প্ল্যান গুলি কি করে বাস্তবে রূপান্তরিত করবে সেই চিন্তাতে মশগুল রয়েছে আর এদিকে আল তার মত করে প্ল্যান করে বসে আছে। আর মাত্র কয়টা দিন এরপর আল তার মাথার উপর থেকে সব ঝামেলা দূর করে দিবে। সিমিকেও তাঁর জায়গা মতে দিয়ে আসবে সবকিছু মুটামুটি কম্পিলিট আনোকে নিয়ে আল বেঁচে থাকার একটা প্ল্যান করে ফেলছে। দুজনে দুরকম চিন্তা নিয়ে ব্যস্ত আছে।

সন্ধা হয়ে গেছে মালা সেজে গুজে রেডি হয়ে আছে তখন আবির এসেছে মালাকে নিতে।
দাদী:- নাতীন জামাই আমার নাতনীকে যেমন ভাবে নিতেছো ঠিক তেমন ভাবে এনে দিয়ে যাবে।
আবির:- দাদী আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন আমার জীবন থাকতে মালার কিছু হবে না। আবির মালাকে নিয়ে বেড়িয়েছে। আজ প্রথম মালা আবিরের সাথে বাইকে বসেছে। মালার কাছে যতটা লজ্জা লাগছে তাঁর চাইতে বেশী লজ্জা পাচ্ছে আবির। মালাকে বার বার আবির লোকিং গ্লাস দিয়ে দেখে যাচ্ছে তখনি মালা বলে।
মালা:- সামনের দিকে তাকিয়ে বাইকটা চালাও। আমি সারাজীবন তোমার সাথে থাকবো যখন খুশি আমার দিকে তাকিয়ে থেকো আমি কোনো বাঁধা দিবো না। আবির কিছুটা লজ্জা কাটিয়ে বলে।
আবির:- তুমি আমার পাশে থাকলে আমার অন্য কিছু দেখতে ইচ্ছে করে না। আমি তোমাকে দেখে এমন হাজার জনম পার করে দিতে পারবো। মালা আর আবির দুজনে বাইকে করে ওদের গন্তব্যস্থান পৌঁছেছে। এদিকে আল আজকেও বাড়ী থেকে বেড়িয়ে যেতেছে তখনি আনো ডাক দিয়ে বলে।
আনো:- বাবাই আমি তোমার সাথে যাবো আমাকে নিয়ে যাবে? আল পিছনে তাকিয়ে দেখে সিমির কোলে আনো। আল দাঁড়িয়ে যায় আর আনোর কাছে এসে ওকে কোলে নিয়ে বলে।
আল:- বাবাই তো কোথাও যাবো না। বাবাই তো আজ তোমার সাথে থাকবো।
আনো:- সত্যি!
আল:- হ্যা। তখন আনো আলকে ছোট ছোট চুমু দিয়ে দিছে। আনোর সাথ দুষ্টমি করতে করত আল সিঁড়ি দিয়ে উপরে চলে গেছে সাথে মালাও। ঘরে ঢুকে কেউ কারো সাথে কোনো কথা বলেনি যার যার মত করে শুয়ে পড়েছে। আনোকে আল গল্প শুনাচ্ছে আর সিমি মনে মনে ভাবছে কোনো মতে মালার বিয়েটা হয়ে গেলেই আমি এই বাড়ী ছেড়ে চলে যাবো। দূরে কোথাও যেখানে গেলে কেউ আমাকে সিমি নামে ডাকবে না আমার নাম হবে অন্য একটা। এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেছে। আল আনোকে ঘুম পারিয়ে সে ঘুমিয়ে গেছে।

রাত একটার দিকে মালাকে আবির বাড়ীতে নামিয়ে দিয়ে সে চলে গেছে। আজ মালা অনেক খুশি আর আবিরও। মালা খুশি মনে ঘরে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে গেছে। আজকের মত দিনটা মালার জীবনে বেষ্ট দিন ছিলো। আর মাত্র দুই দিন পরেই আবিরকে নিজের করে পাবে সারাটা জীবনের জন্য। এসব চিন্তাতে কাটছে মালার দিনক্ষন। বিয়ের সব শপিং করা শেষ আজ রাতে গায়ের হুলুদের অনুষ্টান। সবার জন্য সবকিছু কেনা হয়ছে শুধু মাত্র সিমির জন্য কেউ কিছু কিনে নাই। সিমির মনটা খারাপ করে ঘরে এসেছে তখনি খাটের উপরে একটে শপিং ব্যাগ দেখে। শপিং ব্যাগটার কাছে যেতেই ওর মধ্যে লিখা সিমি রহমান। সিমি ব্যাগটা হাতে নিয়ে ওর ভেতরে দেখে একটা কফি কালার লেহেঙা আর একটা মিষ্টি কালার শাড়ী। সিমি তো মহা খুশি মনে মনে ভাবছে এই গুলি আল কিনে রাখছে তখনি আল ঘরে এসেছে আর সিমি বলে।
সিমি:- আমার জন্য এসব কিনার কি দরকার ছিলো?
আল:- তোমার জন্য কি সব কিনেছি? তখনি লেহেঙা আর শাড়ী দেখিয়ে বলে।
সিমি:- এই যে এসব কিছু।
আল:- আমার ঠেকা লাগছে তোমার জন্য এসব কিনবো? আমার হাতে এতটা বাজে সময় নেই আমি তোমার জন্য মার্কেটিং করজে শপিং মহলে গিয়ে ঘুরাঘুরি করবো। দেখি সরো আমার কাজ আছে বলেই একটা লেপটব হাতে নিয়ে বারান্দায় চলে গেছে।
সিমি:- আমি জানি আপনি আমার জন্য কিনেছেন! আপনি ছাড়া আমাকে এই বাড়ীতে কে কিনে দিবে? আল কিছুই বলেনি তখন সিমি ওয়াশরুমে গিয়ে মিষ্টি কালান শাড়ীটা পড়ে সাথে ম্যাচিং চুড়ি আর হালকা লিবিষ্টিক দিয়েছে। আজ ইচ্ছে করেই আলের সামনে বার বার যাচ্ছে কিন্তু আল একবারও তাকিয়ে দেখেনি। বরঞ্চ আল ঘর থেকেই বেড়িয়ে গেছে। সিমি অনেকটা কষ্ট পেয়েছে একবার তো তাকিয়ে দেখতে পারতো! তখনি মনে হলো আরে আমি এসব কি ভাবছি আমি তো সবকিছু ভুলে গেছি। নাহ তা কি করেরে হয় আমি যেই কাজটা করতে এখন এখানে রয়েছি সেই কাজটার প্রতি আমার মনোযোগ দিতে হবে। যাই একটু নিচে গিয়ে দেখি সবার কি অবস্থা বলে সিমি ঘর থেকে বেড়িয়ে কিছুটা পথ গেছে তখনি শাড়ীর সাথে পা লেগে পড়ে গেছে আর মাগো বলে এক চিৎকার দিয়ে আশে পাশে তাকিয়ে দেখে না কেউ নেই কিন্তু যেই পেছনে তাকিয়েছে তখনি চেয়ে দেখে আল দাঁড়িয়ে আছে তখনি সিমি বলে। এই আপনি কেমন মানুষ বলেন তো? আমি পড়ে যাচ্ছি তাও আপনি আমাকে ধরেলেন না?
আল:- ধরতে গেলে তোমাকে স্পর্শ করতে হবে। আর আমি তোমাকে স্পর্শ করলে তুমি নিজেকে শেষ করে দিবে। আমি চাইনা আমার জন্য কেউ নিজেকে শেষ করে দিক এই কথা বলে আল চলে এসেছে। আর সিমি বসে বসে বলছে ঠিক আছে আমিও এর প্রতিশোধ নিবো বলে উঠেছে তখনি পিছন থেকে একজ বলে উঠে।
তুমি আবার কিসের প্রতিশোধ নিবে তখনি সিমি তাকিয়ে দেখে আলের মা দাঁড়িয়ে আছে।

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে