তুমি আসবে বলে পর্ব-১২+১৩

0
1263

#গল্পের_নাম_তুমি_আসবে_বলে
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্বঃ১২
আমি দরজার দিকে তাকাতেই আমার কলিজার সব পানি শুকিয়ে যায় কারণ ফায়াজ ভাই তার দুহাত মুঠ করে দাড়িয়ে আছে।আমি শুকনো ঢোক গিলে প্রিয়া ভাবিকে বললাম,
~ভাবি,আমি বোরকাটা খুলে আসছি।
বলেই একপ্রকার দৌড়ে সেখান থেকে চলে আসি।সেখানে থাকা আমার জন্য ক্ষতিকর আমি রুমে এসে হাফ ছেড়ে বাঁচলাম বোরকা খুলে ফ্রেশ হয়ে নিচে যাবো তাই ওয়াশরুমে চলে গেলাম।
ফায়াজ বসে আছে তাসিফের একদম মুখোমুখি সবাই কথাতে ব্যস্ত কিন্তু ফায়াজ চুপচাপ বসে আছে।সে তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে শুধু তাসিফের দিকে তাকিয়ে আছে প্রিয়া ফায়াজকে দেখে বললো,
~ফায়াজ তুমি চুপচাপ কেন বসে আছো?
ফায়াজ হালকা হেসে বললো,
~ফিহার সাথে এতো কথা বলে এখন আর কারো সাথে কথা বলতে মন চাইছে না।
ফায়াজের এহেন কথায় তাসিফের মুখটা চুপসে বেলুন হয়ে গেলো তাসিফ ফায়াজের দিকে তাকাতেই দেখতে পায় ফায়াজ তার দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসছে।তাসিফ নড়েচড়ে বসে ফাহাদকে বললো,
~ফাহাদ আজ আমি আসি।
ফাহাদ বললো,
~না ভাইয়া কী বলছেন?আজ এখানেই থেকে যান।
তাসিফ বললেন,
~নাহ তোমাদের কষ্ট করতে হবে না আজ যাই আবার আসবো।
তাসিফ উঠতে যাবে তার আগেই ফায়াজের মা এসে বললেন,
~তাসিফ রাতের খাবার খেয়ে যাবে আমি কোনো কথা শুনছিনা।
তাসিফ বললো,
~আচ্ছা আন্টি আপনি যেহেতু বলছেন তাহলে খাওয়ার পরে চলে যাবো।

তাসিফের কথায় ফায়াজের মেজাজটা গরম হয়ে গেলো এতো আদ্যিখ্যাতা দেখানোর কী আছে?থাকতে মনচায় তো থাকবে এতো importance নেওয়ার কী আছে?যত্তসব ঢং এসব বিড়বিড় করছে তখনই প্রিয়া বললো,
~ফায়াজ,সবার জন্য আইসক্রিম নিয়ে আসতে পারবে?আসলে তোমার ভাই আনতে ভুল গেছে।
ফায়াজ বললো,
~আনছি।
বলেই সে তার মায়ের সামনে দাড়িয়ে ফিসফিস করে বললো,
~আমি যাচ্ছি আর আসছি তুমি ফিহাকে এই তাসিফের সাথে কথা বলতে দিবে না।নাহলে আমি কিন্তু এই ব্যাটাকে ছাড়বো না।
ছেলের কথায় ফায়াজের মা বললেন,
~ফিহা কথা বললে আমি কীভাবে আটকাবো আর তুই এমন গুন্ডাদের মতো কথা বলছিস কেন?যা এখান থেকে
শেষের কথাটা একটু জোরে বলায় সবাই ফায়াজের মায়ের দিকে তাকালেন ফায়াজ হেসে বললো,
~হ্যাঁ মা যাচ্ছি।
বলেই সে চলে গেলো রাস্তার উদ্দেশ্যে
আমি নিচে নেমে সোজা খালামণির কাছে চলে গেলাম সে রান্নাঘরে কাজ করছে আমিও তার সাহায্য করছি খালামণি বললেন,

~আমি একটু রুম থেকে আসছি তুই মুরগীটা একটু নাড়া দে।
বলেই সে আমার হাতে চামচ ধরিয়ে দিলেন আমি নাড়া দিতে লাগলাম।রান্নাঘরে চুলার তাপের কারণে ঘাম ঝড়তে শুরু করলো আমি ওড়না দিয়ে ঘাম মুছে মুরগী নাড়া দিয়ে আবার সালাতের জন্য টমেটো কাটতে লাগলাম তখনই কেউ পিছন থেকে শান্ত স্বরে বললেন,
~ওইসময় আমার সাথে কথা বলো নি কেন?
আমি টমেটো কাটা বন্ধ করে পিছন ফিরে দেখি তাসিফ দাড়িয়ে আছে তাকে দেখে অবাক হয়ে বললাম,
~আপনি রান্নাঘরে কী করছেন?
তাসিফ বললেন,
~প্রিয়া আর ফাহাদ রুমে গেছে তাই ভাবলাম তোমার খোঁজ করি।ওইসময় কথা কেন বললে না?
আমি আমতা আমতা করে টমেটো কাটতে কাটতে বললাম,
~খেয়াল করিনি বাহির থেকে এসেছিলাম তো তাই।
তাসিফ বললেন,
~আজ কোথাও যাওয়া হয়েছিল বুঝি।
আমি বললাম,
~হ্যাঁ।ফায়াজ ভাইয়ের সাথে গিয়েছিলাম।
তাসিফ বললেন,
~ভালোবাসো ফায়াজকে?
আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললাম,
~আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে প্রশ্ন করা আমার একদম পছন্দ না।
তাসিফ কিছু বলতে যাবে তার আগে খালামণি এসে পরলেন তাসিফ এক গ্লাস পানি নিয়ে সেখান থেকে চলে গেলেন।

তাসিফ রাতে খাওয়া দাওয়া করে চলে গেলেন আমরাও যে যার রুমে এসে শুয়ে পরলাম খালামণির সাথে অনেকক্ষন কথা বলে আমিও ঘুমিয়ে পরলাম।
রাত ১.১৫মিনিটে আমার ঘুম ভাঙ্গলো মোবাইলের ভাইব্রেশনে। আমি বালিশের নিচ হাতিয়ে নাম্বার না দেখে রিসিভ করে কানে ধরে বললাম,
~হ্যালো কে?
অপরপাশের ব্যক্তি ধমক দিয়ে বললেন,
~এই মেয়ে ফোনে কী আমার নাম্বারো সেভ করে রাখিসনি?
আমি ধমক খেয়ে উঠে বসলাম ঘুমের রেশ কেটে গেছে আমি বললাম,
~ফায়াজ ভাই এতো রাতে ফোন করেছেন কেন?
ফায়াজ ভাই বললেন,
~ছাদে আয় তাড়াতাড়ি তোর জন্য অপেক্ষা করছি।
বলেই খট করে ফোন রেখে দিলো আমাকে কিছু বলতে দিলো আমি বিরক্তি নিয়ে বিছানা থেকে নেমে ওড়না গায়ে জড়িয়ে পা টিপে টিপে রুম থেকে বের হয়ে সিড়ি বেয়ে উপরে চলে গেলাম ভাগ্যিস লাইট গুলো জ্বলছিল না হলে আমি শেষ হয়ে গেতাম।ছাদের গেট খোলা আমি তা দিয়ে ভিতরে ঢুকে দেখি ফায়াজ ভাই রেলিং ঘেষে আকাশ পাণে তাকিয়ে আছে।আমি ধীর পায়ে তার পাশে গিয়ে দাড়াতেই সে বললেন,
~ভয় করেছে আসতে এখানে?

আমি বললাম,
~তাহলে কী করবে? এতো রাতে তো আমি নাচতে নাচতে এখানে আসবো।
আমার কথা শুনে সে অট্টহাসিতে নিজেকে মাতিয়ে তুললো।আমি মুগ্ধ নয়নে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম তার হাসির শব্দ আমার কানে সুমধুর ধ্বনির মতো লাগছে।তার হাসিমাখা মুখ দেখে আমার ভিতর এক অন্য শিহরণ বয়ে যাচ্ছে আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে সে বললেন,
~কী হয়েছে?এভাবে কী দেখছো?
আমি তার প্রশ্নে হকচকিয়ে উঠলাম নিজেকে ঠিক করে বললাম,
~এতো রাতে কেন ডেকেছেন?
ফায়াজ ভাই বললেন,
~বিয়ে করবি না আমায়?
তার প্রশ্ন শুনে আমি তার দিকে তাকালাম সে হালকা হেসে বললেন,
~এই ছেলেটাকে একটুও ভালোবাসা যায় না?
তার এমন অসহায় ভাব সহ্য হচ্ছে না মন চাইছে জাপটে ধরে তাকে বলি ভালোবাসি ভালোবাসি। কিন্তু কেমন জানি জড়তা কাজ করছে এই জড়তা কীসের?
ফায়াজ ভাই বললেন,
~তোর হাতটা ধরি?
আমি কিছু বললাম না সে কাঁপা কাঁপা হাতে আমার হাতটা ধরে সে তার বুকের মাঝে ধরলেন। আমি চোখ করে ফেললাম এই অনুভূতির নাম টা কী ভালোবাসা। হ্যাঁ আমি ভালোবাসি তাকে অনেক ভালোবাসি।

আমি তার থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিলাম। ফায়াজ ভাই বললেন,
~কী হয়েছে?
আমি ছলছল চোখে তার দিকে তাকিয়ে বললাম,
~সহ্য হচ্ছে না।
ফায়াজ ভাই বললেন,
~আমাকে সহ্য হচ্ছে না।
আমি বললাম,
~এই অনুভূতি সহ্য হচ্ছে না।
ফায়াজ ভাই মুচকি হেসে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন।তার স্পর্শ পেয়ে আমার চোখ দিয়ে পানি এসে পরলো তাকে জড়িয়ে ধরলাম দুইহাত দিয়ে সে আমার কানে কানে বললেন,
~আজ থেকে ভাই বলা যাবে না।শুধু ফায়াজ আমি শুধু তোর ফায়াজ আর তুই আমার ফিহা।কাউকে আসতে দিবো না আমাদের মাঝে যে আসবে তার অস্বস্তিত আমি মিটিয়ে দিবো ফায়াজ হাসান তার ফিহাকে নিজের করে রাখবে।
তার কথা শুনে এতো খুশি লাগছে যার কোনো শেষ নেই।এই পাগল একরোখা মানুষটাকে ভালোবেসে ফেলেছি এই মানুষের পাগলামী গুলোকে ভালোবেসেছি।এতো সুখ সইবে তো তাকে কাছে পাবো তো আজীবন তাকে ছাড়া যে আমি অচল হয়ে পরবো।
ফায়াজ ফিহাকে জড়িয়ে ধরে বললো,
যদি আমি হাত বাড়িয়ে দেই তোমার পাণে
ধরবেতো আমার হাত
তোমায় নিয়ে পারি দিবো আমি জীবনের
সকল ধাপ
মৃত্যুর পর তোমায় পেতে চাই আমার সেই
অজানা পৃথিবীতে
থাকবে তো তুমি আমার অর্ধাঙ্গিনী হয়ে❤️❤️

চলবে

#গল্পের_নাম_তুমি_আসবে_বলে
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্বঃ১৩
সকালে ঘুম থেকে উঠতেই রাতের সব কথা মনে পরে গেলো।কাল রাতে ফায়াজ ভাই আমাকে রুম পর্যন্ত দিয়ে তারপর সে তার রুমে চলে যায়।আমি রুমে এসে চুপচাপ শুয়ে পরলাম কখন যে ঘুমিয়ে পরলাম তা খেয়াল করিনি।বিছানা থেকে উঠে ওড়না শরীরে জড়িয়ে বারান্দায় চলে গেলাম সকাল ১০টা খালামণি হয়তো রান্নাঘরে আমি বারান্দায় দাড়িয়ে এটাই ভাবছি যে ফায়াজ ভাইয়ের সামনে কী করে?লজ্জায় মাথাকাটা যাচ্ছে ও সরি এখন তো ফায়াজ ভাই বলা যাবে না শুধু ফায়াজ বলতে হবে। এসব ভাবছি হঠাৎ খালামণি রুমে এসে আমাকে বললেন,
~ফিহা,ফায়াজের না অনেক জ্বর ছেলেটা দিন দিন কেয়ারলেস হয়ে যাচ্ছে।
ফায়াজ ভাইয়ের জ্বর এসেছে শুনে আমার বুকটা ধক করে উঠলো আমি দৌড়ে খালামণির সামনে গিয়ে বললাম,
~কাল রাতেও তো ঠিক ছিলেন সে এখন কীভাবে জ্বর আসলো।
খালামণি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
~ওরে গাধী জ্বরতো যে কোনো সময় আসতে পারে।
আমি খালামণির কথা শুনে আসলেই বোকা হয়ে গেলাম তবুও কোনো কথা না বলে ওয়াশরুমে চলে গেলাম ফ্রেশ হতে। ফ্রেশ হয়ে বের হলাম তারপর বাহিরে চলে গেলাম ডাইনিং রুমে এসে দেখি খালামণি,প্রিয়া ভাবি আর ফাহাদ ভাই বসে আছে আমি গিয়ে চেয়ার টেনে বসে পরলান খালামণি বললেন,
~ফাহাদ তোর ভাইতো কিছুই খাবেনা বলে দিয়েছে। বলতো এখন কী করি?
আমি চট করে বললাম,
~আমি নিয়ে যাচ্ছি খাবার।
বলেই প্লেটে সব খাবার সাজিয়ে চলে আসলাম ফায়াজ ভাইয়ের রুমের সামনে।
অন্যদিকে ফিহার এতো কেয়ার দেখে ফায়াজের মা মুচকি মুচকি হাসছে ফাহাদ মায়ের হাসি দেখে বললো,
~মা হাসছো কেন?
ফায়াজের মা বললেন,
~তুই এতো জেনে কী করবি?প্রিয়া ওকে নাস্তা দেও।
বলেই সে রুমের দিকে চলে গেলেন।ফাহাদ প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,
~তুমি কিছু বুঝেছো?
প্রিয়া বললো,
~তুমি নাস্তা করো।

আমি ফায়াজ ভাইয়ের রুমের ভিতরে ঢুকে পরি রুম অন্ধকার হয়ে আছে পর্দার ফাক দিয়ে রোদের আলো পরায় একটু একটু আলো আসছে। আমি পা টিপে টিপে ট্রেটা টেবিলে উপরের রেখে বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখি ফায়াজ ভাই বিছানায় উপুর হয়ে শুয়ে আছে।শরীরে কোনো চাদর নেই না আছে শার্ট দেখেই রাগ লাগলো এই জ্বরে আবার খালি গায়ে শুয়ে আছে।আমি আস্তে আস্তে তার সামনে গিয়ে বসে পরলাম তার চুলগুলো আমার হাত দিয়ে ছুইয়ে দিলাম তার কপালে হাত দিয়ে দেখি পুরো গরম হয়ে আছে।আমি তাকে আস্তে করে ডাকতে লাগলাম
~ফায়াজ ভাই,উঠবেন না।নাস্তা করতে হবে তো
ফায়াজ ভাইয়ের কোনো হেলদোল নেই আমি আবার তাকে ডাকলাম এবার সে একটু নড়ে উঠলো।চোখ বন্ধ রেখেই বাচ্চাদের মতো বললেন,
~আমি খাবো না মা।পুরো মুখ আমার তিতা হয়ে আছে।বমি আসবে
তার এমন বাচ্চামো কথা শুনে হাসি আসলো।আমি মুখ টিপে হেসে বললাম,
~ফায়াজ ভাই, আমি ফিহা
ফায়াজ ভাই ভ্রুকুচকে বললেন,
~মা,তোমার কন্ঠ ফিহার মতো লাগছে কেন?
আমি এবার হো হো করে হেসে বললাম,
~ফায়াজ ভাই আমি খালামণি না ফিহা।চোখ খুলে দেখুন তো

সে চোখ খুলে ধপ করে উঠে বসলেন।তার এভাবে উঠে বসাতে আমি একটু বিচলিত হলাম কিন্তু পরক্ষনেই নিজেকে সামলে তাকে কঠিন গলায় বললাম,
~ফ্রেশ হয়ে এসে নাস্তা করবেন।কোনো কথা বলবেন না যদি আমার কথা না শুনেন তাহলে আমি আজই বাসায় চলে যাবো।
বলেই অন্যদিকে মুখ করে বসে রইলাম।ফায়াজ ভাই বললেন,
~তুই কী by any chance আমাকে blackmail করছিস?
আমি তার দিকে ঘুরে বললাম,
~যা ভাবার ভাবতে পারেন এতে আমার কোনো সমস্যা নেই।
ফায়াজ ভাই কিছু না বলে সেভাবেই বসে রইলেন কিছুক্ষন পর সে আমার কোলে মাথে রেখে বললেন,
~চুলগুলো একটু টেনে দে।
আমি আলতো হাতে চুল গুলো টেনে দিলাম।সে পরম আবেশে চোখ বন্ধ করে নিলেন
ফায়াজ ভাইকে নাস্তা করিয়ে ঔষধ খাইয়ে আমি রুমে এসে পরলাম তখনই আমার মোবাইল বেজে উঠে আমি মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি রুপা আপুর ফোন।আমি রিসিভ করতেই রুপা আপু খুবই ক্ষোভ নিয়ে বললো,
~তুই ফায়াজ ভাইয়ের বাসায় এখন পর্যন্ত কেন রয়েছিস?তুই সব জেনে বুঝেও কেন এমন করছিস?
এ কথাটি বলে সে কেঁদে উঠলেন তার কান্না শুনে অনেক খারাপ লাগছে আমি নিজেকে সামলে রুপা আপুকে বললাম,
~আপু,এসব কথা বলে কোনো লাভ নেই ফায়াজ ভাই তো আপনাকে ভালোবাসে না তাহলে এসব কেন করছেন?
রুপা আপু বললো,
~প্লিজ ফিহা তুই কেন বুঝিস না আমি অনেক চেষ্টা করেছি ভুলে যাওয়ার হয় না তো।
আমি বললাম,
~এই বিষয়ে আমি কিছুই জানি না এটা তোমার আর ফায়াজ ভাইয়ের ব্যাপার তার সাথে কথা বলতে পারেন।
বলেই খট করে ফোন রেখে দিলাম

দুপুরবেলা ফায়াজ ভাইকে খাইয়ে আমি রুমে এসে বিছানায় শুয়ে পরলাম।খালামণি এসে আমার পাশে শুয়ে পরলেন আর বললেন,
~ফিহা,তুই কী বাসায় চলে যেতে চাস?
আমি বললাম,
~আর কিছুদিন থাকি তোমার সাথে।
খালামণি হেসে বললেন,
~আমার বাড়িতে একেবারেই থেকে যা না?
আমি খালামণির কথা শুনে বললাম,
~মানে?
খালামণি বললেন,
~ফায়াজকে বিয়ে করবি?
খালামণির কথা শুনে উঠে বসলাম আর বললাম,
~কী বলছো?
আমার অনেক লজ্জা লাগছে কীভাবে দিবো এই প্রশ্নের জবাব।খালামণি আমার পাশে বসলেন আমার হাত ধরে বললেন,
~তোর মাকে আসতে বলে দিয়েছি তোর ভাই আর বাবাও আসবে।আগামীকাল তোর আর ফায়াজের বিয়ের তারিখ ঠিক করতে।
এসব শুনে আমি অবাক এতো কিছু কীভাবে হয়ে গেলো।আমি খালামণিকে জড়িয়ে ধরলাম খালামণি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
~আমার পাগলকে সামলিয়ে রাখিস মা।আর শোন এসব ব্যাপারে ফায়াজকে কিছু বলিস না ওর জন্য সারপ্রাইজ।
আমি বললাম,
~ঠিক আছে।
বিকেলবেলা ফায়াজ ভাই আমার রুমে আসলেন আমি আর প্রিয়া ভাবি বসে আড্ডা দিচ্ছি আড়চোখে তাকে একবার দেখে আবার কথায় মনোযোগ দিলাম। প্রিয়া ভাবি ফায়াজ ভাইকে দেখে বললেন,
~ফায়াজ তোমার জ্বর কমেছে?
ফায়াজ ভাই বললেন,
~কমেছে।
প্রিয়া ভাবি আমার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ মেরে বললেন,
~ফিহা আগামীকাল তো তুমি চলে যাবে সবাই আসছে তোমার বাসা থেকে।
আমি একবার ফায়াজ ভাইয়ের দিকে তাকালাম সে ভাবলেশহীন ভাবে দাড়িয়ে আছে মনে হচ্ছে তিনি কিছুই শুনেনি।আমি মুখ ছোট করে বললাম,
~হ্যাঁ
তখনই ফায়াজ ভাই বললেন,
~ভাবি,ভাই এসেছে আপানাকে ডেকেছে।
প্রিয়া ভাবি খুব দূর্ত সেখান থেকে চলে গেলেন

আমি মুখ ফুলিয়ে বসে থাকলাম ফায়াজ ভাই আমার গা ঘেষে বসে পরলেন জ্বরটা আসলেই কমেছে সে আমার কাছে ফিসফিস করে বললেন,
~এইবার যখন এই বাসায় আসবি আমার বউ হয়ে আসবি।আমার বউ
তার মুখে আমার বউ কথাটা শুনে অন্য এক অনুভূতি জেগে উঠলো।সে আমার নাকে হাত দিয়ে বললেন,
~ঠিক এই জায়গাটায় আমার জন্য নাকফুল পরবি।তোকে অনেক সুন্দর লাগবে ফিহা অনেক সুন্দর।
তার প্রতিটি কথা আমার কাছে মনোমুগ্ধকর সে আমার মনে এমন এক জায়গা জুড়ে আছে যা কেউ কোনোদিন করে নিতে পারে নি।সে আমার মন জুড়ে বসবাস করছে ইশশ এই অনুভূতিটা এতো সুন্দর কেন?যদি এই ভালোবাসার আগুনে না পুরতাম তাহলে হয়তো এই মিষ্টি অনুভূতি পেতাম না।আমি ফায়াজ ভাইয়ের দিকে তাকাতেই সে বললেন,
~#তুমি_আসবে_বলে আজ আমি এই নিশ্বাস গ্রহণ করছি।
তার একথা শুনে আমার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরে গেলো আমি তাকে জড়িয়ে ধরলাম সেও আমাকে পরম আবেশে তার বাহুডরে আবদ্ধ করলেন।

চলবে

(বিদ্রঃকেমন হয়েছে জানাবেন।ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading🤗🤗)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে