তুই আমারই থাকবি part-21

0
1876

#তুই_আমারই_থাকবি?
#Esrat_Jahan?
#Part_21
!
‘-আমি এতই অবাক হলাম যে,বলার বাইরে!ওপাশ থেকে সাদাফ ভাইয়া হ্যালো হ্যালো বলছেই!আমি বললাম,উনি কোথায়?
!
-আমার পাশে বসে আছে।
!
-তাহলে কান্না করে কেন?বুইড়া বয়সে ভীমরতি, যত্তসব!
!
-আরে বকো না।আমার জানের জিগার কান্নাকাটি করে চোখমুখ লাল করে ফেলেছে!সাদাফ ভাইয়া বলল,
!
-রাখেন,এসব ঢং।বাসায় আসতে বলুন উনাকে!
!
-ও তো বাসায় যেতেই চাচ্ছে।ইনফেক্ট নতুন অসুস্থ ওয়াইফ বাসায় রেখে ওর মন এখানে টিকছে না।
!
-তাহলে আসছে না কেন?
!
-আরে আন্টি নাকি ওকে তোমার অসুস্থতার জন্য বকাঝকা করেছে।এখন আন্টি যতক্ষণ ওকে বাসায় যেতে না বলবে ততক্ষণ ও যাবে না।ওর এতটাই আত্নসম্মান!আন্টি স্রেফ ওকে বাসায় যেতে মানা করে দিয়েছে!
!
-ওহ…এতই সেলফ -রেসপেক্ট যখন তখন আবার কান্নাকাটি করে কেন?লজ্জা করে না?
!
-আহ!তুমি বাচ্চা নাকি?বুঝো না?সাদাফ ভাইয়া বলল,
!
-আমি অবাক হয়ে বললাম,কী বুঝি না?
!
-উনি আমতাআমতা করে বললেন,কিছুনা।আচ্ছা রাখি!গুড নাইট বলেই ফোন কেটে দিলেন সাদাফ ভাইয়া।
!
আমিও ফোন রেখে দিয়ে ব্যলকুনিতে গেলাম।বুঝলাম না,গুন্ডা আবরারের প্রবলেম কী?আজব মানুষ। এতবড় গুন্ডামী দেখায় সে নাকি এখন মায়ের ভয়ে বাসায় আসতে পারছেনা।গিরগিটি একটা,জ্বালিয়ে খেলো।আমার এখন খুব ইচ্ছে করছে ওনার কান্নামাখা লাল ফেইস দেখতে!হাউ কিউট…….
!
!
!
পরিষ্কার আকাশ বিকেলের দিকে ছিলো। কিন্তু এই গভীর রাতে এখন সেটা বর্ষার মেঘলা আকাশ হয়ে গিয়েছে।আকাশে চাঁদ থাকলেও সেটা মেঘের ফাঁকে উকিঝুকি দিচ্ছে।চাঁদের আলো ছড়াচ্ছে খুব অল্প অল্প।শীতল বাতাসে গাছের পাতার শনশন শব্দ বেশ জোরালো। ব্যলকুনিতে বসে আছি।হাজারো ভাবনা মনে উঁকি দিচ্ছে।হাহ,,,পৃথিবী কত সুন্দর! এই ঠান্ডা হাওয়া শরীরে এক ধরণের পবিত্র শিহরণ বইয়ে দেয়।আমার কাছে মনে হয়,বেহেশতের বাতাস এমন অনুভূতি জাগানো!
!
মনে খালি রোমান্টিক ভাবনা আসছে।ভাবলাম একটা গান গাই,দরজাও তো ভেতর থেকে লাগানো। আর আমি ব্যলকুনিতে সো কেউ শুনবে না।যদিও মোটামুটি মধুর সুরেলা গলা আমার তাও আড়ালে গান গাইতেই ভালোবাসি!তো শুরু করি,,,,
!
‘কে আবার বাজায় বাঁশি,এ ভাঙ্গা কুঞ্জবনে?
হৃদি মোর উঠলো কাঁপি,চরণের সেই রণনে!
কোয়েলা ডাকলো আবার,যমুনায় লাগলো জোয়ার!
কে তুমি আনিলে জল ভরি,মোর দুই নয়নে?’
!
এটুকু গেয়ে নিজেই নিজেকে বললাম,বাহ!খুব সুন্দর গলা তোর।চাইলেই বিশ্বের নামকরা গায়িকা হতে পারবি।বাহ!বাহ!সবাই আসবে অটোগ্রাফ নিতে।আমি গাড়ি থেকে সিনেমাটিক স্টাইলে নামবো।আর আমার ভক্তরা লাইন করে দাঁড়িয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ওয়েট করবে।ওয়াও সো নাইস!বাট সবাইকে অটোগ্রাফ দিলেও এই গুন্ডা,ছিঁচকাদুনে আবরার আগুন চৌধুরীকে কখনোই অটোগ্রাফ দেব না।যত্তসব….উনার কথা মনে হতেই মুড অফ হয়ে গেলো।
!
বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম। আমার মুখের দিকে উনার সেই ক্রাশমার্কা বড় পিকচারটা যেন তাকিয়ে আছে।আমিও ভেংচি কেটে শুয়ে পড়লাম।তাও ছবিটা যেন বলছে,সোনাপোকা বউ আমার!এতরাতে কেউ ঘুমায়?দাঁড়াও ভুল যখন করেছ তখন নো অপশন। তোমাকে এর পানিশমেন্ট পেতেই হবে।আর এর শাস্তি হলো,আমি তোমার পেটের উপর ঘুমাবো!বলেই ডাঁটিয়াল হাসি হাসলেন উনি।আমার মনে এলো,
!
‘প্রাণ দিতে চাই,মন দিতে চাই
সবটুকু ধ্যান, সারাক্ষণ দিতে চাই,তোমাকে
—— ——–
স্বপ্ন সাজাই,নিজেকে হারাই
দুটি নয়নের ও…….. ‘
!
!
!
!
সকালবেলা।ঘুম থেকে উঠে উনাকে পাশে দেখতে না পেয়ে খুশিই হলাম।যা বন্ধুর বাসায় গিয়ে থাক।আমি এতদিন শান্তিতে কাটাই।এসব ভাবতেই মন ভালো হয়ে গেলো।যাইহোক,ফ্রেশ হয়ে ব্যলকুনিতে গেলাম।ফুলের গাছগুলোতে পানি দিলাম।টবে লাগানো বিভিন্নরকম ঘাসফুল, ক্যাকটাস, এ্যালোভেরা,গোলাপ আর অজানা নানা ফুল।ওগুলো বিদেশী ফুলগাছ।আবরার মিয়ার ফেভারিট ফুল, যত্ন না নিলে আস্ত কাচা খাবে আমায়,সাথে চিলি সস লাগিয়ে।কিন্তু এইভয়ে কাজ করছিনা আমি।গাছগাছালি আমি খুব ভালোবাসি,তাই করছি।
!
আজ ও সারাদিন সানাচাচী,মামানি,ভাইয়া, মামু ওদের সাথে কাটালাম।খুব মজা করে।আবরার মিয়াকে মামানি বাসায় আসতে না করায় উনি ওখানেই রইলেন।
!
তিনিদিন পর।রাতে রুমে সাউন্ডবক্সে গান লাগিয়ে একটু ড্যান্স করছিলাম।এমন সময় কে যেন পেছন থেকে এসে আমায় জড়িয়ে ধরলো। আমি অবাক হয়ে পেছনে তাকাতেই………’
!

চলবে……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে