তুই আমারই থাকবি part-22

0
1950

#তুই_আমারই_থাকবি?
#Esrat_Jahan?
#Part_22
!
‘ কে যেন পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো।আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম।কিছুক্ষণ কেটে গেলো। আমি বুঝতে পারলাম কেউ নয়,স্বয়ং আবরার আগুন চৌধুরী! হঠাৎ কোথা থেকে উদয় হলো? ভাববার বিষয়!

-উনি যে জড়িয়ে ধরে চুলে মুখ গুজে দাঁড়িয়ে আছেন,তো আছেনই। নড়াচড়া বন্ধ করে আমাকেও দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।আমি তো সেই রাগে কাঁপছি।আসলে এজন্য রাগ করেছি না অন্য কারণে সেটা নিজের কাছেই আমি পরিষ্কার না।

-অবশ্য তিনদিন উনাকে না দেখে কেমন যেন লাগলো আমার।খুব মিস করেছি উনাকে।ক্রাশ বলে কথা।ক্রাশ খেলে যে বাঁশ খাওয়া বাধ্যতামূলক সেটা নতুন আবিষ্কার করলাম।উনাকে বরের চেয়ে ক্রাশই বেশী ভাবি আমি।

বেশ খানিকক্ষণ পর,

-কী করছেনটা কী?ছাড়ুন আমায়।একঘন্টা ধরে দাঁড়িয়েই আছেন আর আমার পা ব্যথা করছে।যত্তসব…বলেই উনার দিকে ফিরলাম।
!
-ওহহহ….নড়ো না।

-কেমন জড়ানো গলা উনার।আমার সন্দেহ হতেই ভালো করে উনার দিকে তাকালাম।কেমন উস্কুখুস্ক চুল,গায়ের শার্ট কুচকে আছে।হাফ প্যান্টের সাথে সু’ জুতো। চোখমুখের অবস্থা বেহাল।খোচাখোচা দাঁড়ি, লাল চোখ।গায়ে কড়া পারফিউমের গন্ধ!
!
-আমি সন্দেহী চোখে তাকিয়ে বললাম,কী?কিছু খেয়ে এসেছেন,মনে হয়?

-উনি বাচ্চাদের মতো হেসে বললেন,খেয়েছি তো!

-কী?

-মজার জিনিস।

-আমি রাগী চোখে বললাম,বলুন কী?

-জুসি জুসি ড্রিংক করেছি বলে ছোট ছোট চোখ করে তাকিয়ে রইলো।

-বুঝো কান্ড!ব্যাটা ড্রিংক করে মাতাল হয়ে এসে আমায় বলছে জুসি জুসি ড্রিংক করেছে!আজব। মতিগতি ঠিক নেই….

– তোমার ঠোঁট এত গোলাপি কেন?তুমি কি গোলাপ ফুল?এই গোলাপ ফুল বলো তো খুশবু আমার গাছগুলোতে পানি দিয়েছে কিনা ঠিকমতো? নইলে ওকে আছাড় মারবো…… না না আছাড় দিলে আম্মু আবার আমায় বকবে,ওর কাছ থেকে দূরে থাকতে বলবে… না আমি যাবো না।ও তো ছোট, তাই না?আমি ওর থেকে দূরে যাবো না…..বলে বিছানার একপাশে বসে কান্না করতে লাগলো।

-এই ঘটনায় আমি যতটা না অবাক হলাম তার চেয়েও বেশী কষ্ট পেলাম।উনাকে কেমন বিধস্ত দেখাচ্ছিলো।

-তিনদিনে অবশ্য উনাকে ভালোবেসে ফেলেছি।লাভ এট ফার্স্ট সাইট।ক্রাশ এখন আমার জামাই হয়ে গেলো। ব্যাটার মতিগতি দেখে তো মনে হয় আমাকে ভালোই বাসে!!

-ভাবনাতে ডুবে আছি,ঘোর কাটলো উনাকে উঠতে দেখে।অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি,উনি এলোমেলো পা ফেলছেন আর আমার দিকে এগুচ্ছেন।

-উনার চোখ আমার ঠোঁটের দিকে!এই মুহূর্তে তো আমার বুকে টর্নেডো বয়ে যাচ্ছে।কি করি, কি করি ভাবতে ভাবতেই উনি আমার কাছে চলে আসলেন।আমিও পিছাতে পিছাতে দেয়ালের শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেলাম।।

-উনি আমার ঠোঁটে কিস করতে যাবেন আর আমি অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলাম।উনার ঠোঁটের ছোয়া আমার চুলে লাগলো। উনি দুহাত দিয়ে দেয়াল আড়াল করে রেখেছেন।আর আমি উনাকে এক ধাক্কা দিয়ে চলে এলাম।

-খুব বাঁচা বেঁচে গিয়েছি।কি কপাল,ক্রাশ জামাই মাতাল হয়ে বাংলা সিনেমার সিন শুরু করেছে।….

-উনি আমার কাছে এসে জড়ানো গলায় বললেন,কী?গোলাপ ফুল, তুমি পচা।

-পচা না তোর কেল্লা।মনে মনে গালি দিলাম।বললাম,আপনি বাসায় কখন আসলেন?মামানিকে ডাকব?

-উনার নিজের প্রতি খেয়ালেই নেই।আমি কি বললাম শুনলই না।হাত দিয়ে আমার চুলগুলো ঠিক করতে করতে বললো,তুমি অনেক ভালো। আম্মু আমার উপর শুধু শুধু রাগ করে…

-আমি বললাম,ঘুমাবেন? ঘুমিয়ে পড়ুন!

-উনি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে নিজের মনে বকবক করছেন।বুঝলাম উনাকে পাত্তা দিয়ে লাভ নেই।নিজেকেই সব করতে হবে।

-যেই ভাবা সেই কাজ।আমি উনাকে বিছানার উপর বসালাম ধীরেধীরে।উনি তখনো আবোলতাবোল বকেই যাচ্ছে।উনার পায়ের দিকে তাকিয়েই আমার হাসি পেল।এতবড় ছেলে, হাফপ্যান্ট এর সাথে সু’জুতো পরে ড্রিংক করতে গিয়েছেন।হাসি পাচ্ছে প্রচুর।

-কুল খুশবু কুল।ইউ আর সো লাকি।শেষমেশ ক্রাশকে ভালোবেসে ফেললি।যা এখন পর্যন্ত তোর বান্ধুপি আনিকা ইবনাত পারেনি।নিজেই নিজেকে বাহবা দিলাম।প্রাউড ফিল করলাম।আনমনে হাসলাম।

উনি ততক্ষণে বিছানায় গা এলিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন।আমি উনার পা থেকে জুতো খুলে দিলাম।উনি বিছানায় শোয়াতে আমি সোফায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম।চোখগুলো লেগে গেল আর হঠাৎ করেই নিজেকে আবিষ্কার করলাম কারও কোলে।

-আবরার মিয়া ঘুম থেকে উঠে আমাকে কোলে নিয়ে কোথায় যাচ্ছে? কিছু বলতে যাবো দেখি উনি বিছানার একপাশে আমাকে নামিয়ে দিয়ে নিজে এসে আমার কোলে শুয়ে পড়লো। জড়ানো গলায় বলল,আমার চুলে বিলি কেটে দাও।

-আমি রেগে বললাম, দেব না।

-দাও না।

-বললাম না,দেব না।আমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে নিজের চুলে বিলি কাটাতে চাচ্ছেন কেন?আমি কি আপনার বাসার কাজের মেয়ে সখিনা?

একঝুড়ি বকবক করে তাকিয়ে দেখি ব্যাটা কুম্ভকর্ণ ঘুমুচ্ছে।কি জানি কি হলো,আমিও মুচকি হেসে উনার চুলে বিলি কাটতে লাগলাম।





পরেরদিন ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবাই একসাথে বসে নাস্তা করলেও উনি ছিলেন অনুপস্থিত। মিয়া এখনো ঘুমুচ্ছে।মামানি দু-তিনবার ডাকতে বললেও আমি মানা করলাম।ঘুমুচ্ছে যখন ঘুমুক।উনি তো আর জানেনা, উনার গুণধর ছোট ছেলে কাল রাতে ড্রিংক করে বাড়ি এসেছেন।যাইহোক…….

উনার ঘুম ভাঙ্গলো দুপুর তিনটায়।তখন আমি মামানির সাথে শপিংমলে।ইচ্ছেমতো শপিং করছি দুজন। হঠাৎ’

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে